Privacy Policy for namazer.hajar.masalah app package

Privacy Policy for quran.alquran.tafhimulquran.arabic.bangla.ovidhan app package

namazer.hajar.masalah Privacy Policy


PERSONAL INFORMATION WE COLLECT

When you use this app, we automatically collect certain information about your device, including information about your name, phone number, time zone, dates  are installed on your device. Additionally, as you use this app, we use your sd card as wel as your device storage, your device location, collect information about how you interact with the app. We refer to this automatically-collected information as - Device Information.

We collect your Device Information using the following technologies:

    -  Cookies - are data files that are placed on your device or computer and often include an anonymous unique identifier. For more information about cookies, and how to disable cookies, visit http://www.allaboutcookies.org.
    - Log files  - track actions occurring on the App, and collect data including your IP address, device type, Internet service provider, referring/exit pages, and date/time stamps.
    - Web beacons, tags, and pixels are electronic files used to record information about how you use the App.
    - Device location - as it is a finding driver app, we have to know your location, so that the driver who accepted your request can easily find you and provide the service where you want to go.
    - Device Service - we  use your device service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request. 
    - Device Messaging Service - we use your devices messaging service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request. 
    - Additionally when you make a request or attempt to make a request through the app, we collect certain information from you, including your name, location, place, addresses  and phone number.  We refer to this information as - request Information.
    

When we talk about - Personal Information- in this Privacy Policy, we are talking both about Device Information and request Informations.

HOW DO WE USE YOUR PERSONAL INFORMATION?

We use the request Information that we collect generally to fulfill any request placed through the App (including processing your location information, arranging drivers, and providing you with invoices and/or request confirmations).  Additionally, we use this request Information to:
    -Communicate with you;
    -Screen your request for potential risk or fraud; and
When in line with the preferences you have shared with us, provide you with information or advertising relating to our products or services.

We use the Device Information that we collect to help us screen for potential risk and fraud (in particular, your IP address), and more generally to improve and optimize our App (for example, by generating analytics about how our customers request and interact with the App, and to assess the success of our marketing and advertising campaigns).


SHARING YOUR PERSONAL INFORMATION

We share your Personal Information with third parties to help us use your Personal Information, as described above.  For example, we use Shopify to power our online store--you can read more about how Shopify uses your Personal Information here:  https://www.shopify.com/legal/privacy.  We also use Google Analytics to help us understand how our customers use the Site--you can read more about how Google uses your Personal Information here:  https://www.google.com/intl/en/policies/privacy/.  You can also opt-out of Google Analytics here:  https://tools.google.com/dlpage/gaoptout.

Finally, we may also share your Personal Information to comply with applicable laws and regulations, to respond to a subpoena, search warrant or other lawful request for information we receive, or to otherwise protect our rights.

BEHAVIOURAL ADVERTISING
As described above, we use your Personal Information to provide you with targeted advertisements or marketing communications we believe may be of interest to you.  For more information about how targeted advertising works, you can visit the Network Advertising Initiative’s (-NAI-) educational page at http://www.networkadvertising.org/understanding-online-advertising/how-does-it-work.

You can opt out of targeted advertising by:
[[
  INCLUDE OPT-OUT LINKS FROM WHICHEVER SERVICES BEING USED.
  COMMON LINKS INCLUDE:
    FACEBOOK - https://www.facebook.com/settings/?tab=ads
    GOOGLE - https://www.google.com/settings/ads/anonymous
    BING - https://advertise.bingads.microsoft.com/en-us/resources/policies/personalized-ads
]]

Additionally, you can opt out of some of these services by visiting the Digital Advertising Alliances opt-out portal at:  http://optout.aboutads.info/.

DO NOT TRACK
Please note that we do not alter our App data collection and use practices when we see a Do Not Track signal from your browser.

YOUR RIGHTS
If you are a European resident, you have the right to access personal information we hold about you and to ask that your personal information be corrected, updated, or deleted. If you would like to exercise this right, please contact us through the contact information below.

Additionally, if you are a European resident we note that we are processing your information in order to fulfill contracts we might have with you (for example if you make an order through the app), or otherwise to pursue our legitimate business interests listed above.  Additionally, please note that your information will be transferred outside of Europe, including to Canada and the United States.

DATA RETENTION
When you place a request through the app, we will maintain your Order Information for our records unless and until you ask us to delete this information.



Before you continue, you are asked to give the app those above permissions. IF YOU ARE NOT READY TO GIVE THIS APP THOSE ABOVE PERMISSIONS, WELL, SO, YOU MAY UNINSTALL THE APP FROM YOUR DEVICE.  

MINORS
The App is not intended for individuals under the age of 10.

CHANGES
We may update this privacy policy from time to time in order to reflect, for example, changes to our practices or for other operational, legal or regulatory reasons.

CONTACT US
For more information about our privacy practices, if you have questions, or if you would like to make a complaint, please contact us by e-mail at noorhossain888@gmail.com or by mail using the details provided below:

Shibchar, Madaripur, Bangladesh, Phone: +88-01879115953.
E-mail: noorhossainappupload@gmail.com

প্রশ্ন: ১৮৫ : সুদ খাওয়ার শাস্তি ।

মুফতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম : সুদকে আরবিতে রিবা, ইংরেজীতে Interest বলা হয়। একই জাতীয় বস্তু পরস্পর বিনিময়ের মাধ্যমে কমবেশী  আদান প্রদান করাকে পরিভাষায় সুদ বলে। হারাম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ বৃদ্ধির জঘন্যতম পন্থা হল সুদ। উহা শোষণের ধ্বংসাত্মক হাতিয়ার। তা এমন এক ব্যাধি যা ব্যক্তি ও সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। সাতটি আয়াতে এবং চল্লিশটি হাদীসে সুদের আলোচনা করা হয়েছে। সুদ দেশ ও জাতিকে জালের ন্যায় আবদ্ধ করে ফেলেছে। আমাদের অর্থনীতির চাকা যেন সুদ ছাড়া অচল।
সুদ হারাম : আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন- আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন (সূরা আল বাকারা- ২৭৫)।
সুদখোর  মাতাল হয়ে হাশরে উঠবে : আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন যারা সুদ খায় তারা ঐ ব্যক্তির ন্যায় (হাশরের ময়দানে) দাঁড়াবে, যাকে শয়তান র্স্পশ করে পাগল করে দেয়। এটা  এ জন্যে যে তারা বলে ক্রয়-বিক্রয় তো সুদেরই মত (সূরা আল বাকারা-২৭৫)।
সুদ হালাল জীবিকা গ্রহণের অন্তরায় : আল্লাহ তা’য়ালা চান মু’মিনগণ হালাল জীবিকা গ্রহণ করুক। তাই আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু সামগ্রী থেকে আহার্য গ্রহণ কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসেবে দান করেছি (সূরা: বাকার আয়াত: ১৭২)। অনত্র ইরশাদ করেছেন, হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার্য গ্রহণ কর এবং সৎকর্ম কর (সূরা: মু’মিনুন- ৫১)। সুদ হালাল উপায়ে জীবিকা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে। মানুষকে অসৎ পথে অর্থ উপার্জনে উদ্বুদ্ধ করে।
সুদখোরের বিরুদ্ধে আল্লাহর যুদ্ধ : আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন- অতঃপর তোমরা যদি তা (বকেয়া সুদ) না ছাড়, তবে জেনে রেখ এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধ। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। এতে তোমরা অত্যাচার করবে না এবং অত্যাচারিতও হবে না (সুরা আল বাকারা-২৭৯)।
সুদ খাওয়া মু’মিনের কাজ নয় : মু’মিন আদৌ সুদখোর হতে পারে না। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন- হে বিশ্বাসীগণ!  তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রাকৃত বিশ্বাসী হয়ে থাক (সূরা আল বাকারা-২৭৮)।
সুদখোর জাহান্নামী : সুদখোর চির জাহান্নামী হবে। আল্লাহ তা’য়ালার বাণী- আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে (সূরা আল বাকারা-২৭৫)।
সুদের দ্বারা মূলত সম্পদ বাড়ে না : সুদ খাওয়ার দ্বারা সম্পদ বৃদ্ধি পায় না; বরং কমে। আল্লাহর বাণী- আল্লাহ সুদকে কমিয়ে দেন এবং দান-খয়রাতকে বড়িয়ে দেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে পছন্দ করেন না (সূরা আল বাকারা-২৭৬)। আরো ইরশাদ করেন- তোমরা  যে সুদ দিয়ে থাক, যাতে মানুষের মালের সাথে মিশে তা বেড়ে যায়, আল্লাহর কাছে তা মোটেও বাড়ে না (সূরা রূম-৩৯)। হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স:) বলেন- সুদের অর্থ জমা করার পরিণাম হচ্ছে অসচ্ছলতা। অপর র্বণনায় রয়েছে সুদের অর্থ যতই অধিক হোক না কেন অবশেষে তার পরিণতি হয় অসচ্ছলতা (তারগীব ও তারহীব, ইবন মাজাহ, হাকিম)।
সুদখোর অভিশপ্ত : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (র) হতে বর্ণিত, নিশ্চয়ই মহা নবী (স) সুদখোর, সুদ দাতা, সুদী কারবারের সাক্ষী এবং সুদের চুক্তি লেখক সকলকে ভৎর্সনা করেছেন।
সুদের এক টাকা ছত্রিশবার ব্যভিচারের চেয়ে মারাত্মক : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হানযালা (গাসিলুল মালাইকা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন মহানবী (স) বলেছেন- কোন ব্যক্তির সুদের একটি টাকা খাওয়া তার ছত্রিশবার ব্যভিচার করা অপেক্ষাও জঘন্য অপরাধ (মুসনাদ আহমদ,মিশকাত- পৃ.২৪৫-২৪৬)।
সুদখোরের পেট হবে গৃহের ন্যায় : সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- মিরাজের সময় আমি এমন একদল লোকের নিকট পৌঁছলাম যাদের পেটগুলো ছিল গৃহের ন্যায় বড়। আর পেট গুলোর ভিতরে বহু সর্প বিদ্যমান যা বাইরে থেকে দৃশ্যমান। আমি বললাম, হে জিবরাঈল এরা কারা? তিনি বলেন- এরা হলো সুদখোর (মুসনাদ আহমদ, ইবন মাজাহ, মিশকাত-পৃ.২৪৬)
সুদের নিম্নতম গুনাহ স্বীয় মাকে বিবাহ করা : হযরত আবু হুরায়রা (র) থেকে বণিত, তিনি  বলেন-রাসুলুুল্লাহ (স) বলেছেন, সুদের রয়েছে সওর প্রকার গুনাহ। তন্মধ্যে সর্বনিম্ন গুনাহ হলো স্বীয় মাকে বিবাহ করা। (ইবন মাজাহ- হাদীস নং-২২৬৫)
সুদী নিজেকে আল্লাহর শাস্তির উপযুক্ত করে : মহানবী (স) বলেছেন- কোন সম্প্রদায়ে যখন সুদ ও ব্যভিচার প্রকাশ্যে ঘটতে থাকে তখন তারা নিজেদেরকে আল্লাহ তা’য়ালার আজাবের উপযুক্ত করে নেয় (মুসনাদ আহমদ- হাদীস নং-৩৬১৮)। হযরত আবু ইয়ালা ও হাকেম (র) হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, মহানবী (স) বলেছেন- যখন কোন জাতি ব্যভিচার ও সুদে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে ধ্বংস করার অনুমতি দেন।
সুদের ফলে পাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় : মহানবী (স) বলেছেন- কোন সমাজে সুদের প্রচলন বৃদ্ধি পেলে  সে সমাজে পাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় (বায্যায, ইবন মাজাহ, বায়হাকী, হাকেম)।
সুদখোর রক্তের নদীতে সাতাঁর কাটবে : রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- সুদখোর মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত রক্তে পরিপূর্ণ নদীতে সাতাঁর কেটে কেটে আযাব ভোগ করতে থাকবে এবং  তাকে পাথর ভক্ষণ করানো হবে। ঐ নদী হচ্ছে তার দুনিয়ার উপার্জিত হারাম সম্পদ, যার মধ্যে তাকে হাবুডুবু খেতে বাধ্য করা হবে (সহীহ আল বুখারী)। রাসূলুল্লাহ (সা) একদা স্বপ্নে দু’জন ফেরেশতার সাথে জান্নাত জাহান্নাম দেখেছেন, জাহান্নামে বিভিন্ন অপরাধীদেও শাস্তির ধরণ অবলোকন করেছেন। তিনি জনৈক ব্যক্তি রক্তের নদীতে সাতাঁর কাটছে, নদীর তীরে পাথর হাতে দাঁড়িয়ে আছে আরেকজন ব্যক্তি। লোকটি সাঁতার কাটতে কাটতে যখনই কিনারে আসছে, তখনই তীরে দন্ডায়মান লোকটি তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করছে। তখন সে পূর্বের স্থানে মাঝ নদীতে চলে যাচ্ছে। এভাবে সে নদী থেকে যখনই বের হতে চাচ্ছে, তখনই পাথর মেরে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নদীর মধ্যকার লোকটি হচ্ছে সুদখোর (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।
সুদখোর জান্নাতে প্রবেশ করবেনা : মহানবী (স) বলেছেন- চার ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করতে না দেয়া এবং জান্নাতের নিয়ামত ভোগ করতে না দেয়া আল্লাহ তা’য়ালা নিজের দায়িত্ব বলে মনে করেন। তারা হলো মদখোর, সুদখোর, ইয়াতীমের মাল আত্মসাতকারী ও পিতামাতার অবাধ্য সন্তান, যতক্ষণ না তারা তাওবাহ করে।
সর্বনাশা সাতটি গুনাহের মধ্যে একটি সুদ : মহানবী (স) বলেছেন- সাতটি গুনাহ হলো সর্বনাশা। তা হলো- ১. আল্লাহর সাথে শিরক করা। ২. যাদু করা। ৩. অন্যায়ভাবে হত্যা করা। ৪. সুদ খাওয়া। ৫. ইয়াতীমের মাল অন্যায় ভাবে ভক্ষণ করা। ৬. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা। ৭. পূত-পবিত্রা নারীর প্রতি ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ দেয়া (সহীহ বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং-৪৬)
সুদখোরের দোয়া কবুল হয় না : মহানবী (সা) বলেছেন- যে দীর্ঘ সফর করে এলুকেশ ও ধূলাময় পোশাক নিয়ে অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে আকাশের দিকে দু’হাত তুলে ডাকতে থাকে হে আমার প্রতিপালক! হে রব! অথচ সে ব্যক্তির পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের পোশাক পরিচ্ছদ হারাম পয়সায় সংগৃহীত, এমতাবস্থায় তার দোয়া কি করে হতে পারে? (সহীহ মুসলিম)। সুদ থেকে বেঁচে থাকা সকল মু’মিনের অপরিহার্য কর্তব্য। কারণ, সুদের পরিনাম অত্যন্ত ভয়াবহ ও ভয়ংকর। হে আল্লাহ! আমাদেরকে এ জঘন্য পাপ থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন।
লেখক : প্রধান মুফতি, আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফেনী।

প্রশ্ন: ১৮৪ : দাজ্জালকে চেনার উপায় কি ?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম উম্মাহকে দাজ্জালের আনুগত্য না করার বা তাকে বিশ্বাস না করার জন্য সাবধান করে দিয়েছেন। তিনি দাজ্জালের শারীরিক বর্ণনা প্রদান করেছেন। যাতে মানুষ দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা ও আক্রমণে পতিত না হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাজ্জালের শারীরিক বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘দাজ্জাল লাল রঙ্গের একজন যুবক। তাঁর এক চোখ হবে টেরা। তার কপালে লেখা থাকবে ‘কাফির’। যা সকল মুসলিম পড়বে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দাজ্জালের শারীরিক বর্ণনার সুস্পষ্ট একটি হাদিস তুলে ধরা হলো-
হজরত উবাদা ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয় মাসিহুদ্দাজ্জাল একজন খাট মানুষ হবে। যার চলার সময় দু পায়ের অগ্রভাগ কাছাকাছি এবং গোড়ালি দূরে থাকবে। মাথার চুল হবে কোঁকড়ানো। এক চোখ টেরা হবে। চোখ সমান হবে, না হবে উঠা (উঁচু) আর না হবে বসা (নিচু)। যদি দাজ্জালকে চিনতে তোমাদের সমস্যা হয় তবে জেনে রাখ তোমাদের প্রতিপালক টেরা নয়। (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা কিয়ামাতের পূর্ব মুহূর্তে দাজ্জালের আগমনের সময়ে উম্মাতে মুসলিমাকে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ এবং বিশ্বনবির রিসালাতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফিক দান করুন। দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা মোকাবিলা করার ঈমানি শক্তি দান করুন। আমিন।

প্রশ্ন: ১৮৩ : যদি কুরআনএর কিছু বুঝে না আসে তাহলে আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিতে হবে? কুরান দারা দলিল দিন

সুরা আলে ইমরান : আয়াত নং : ৭ :
﴿هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ ۖ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ ۗ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ﴾
৭) তিনিই তোমাদের প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন ৷ এ কিতাবে দুই ধরনের আয়াত আছেঃ এক হচ্ছে, মুহ্কামাত, যেগুলো কিতাবের আসল বুনিয়াদ এবং দ্বিতীয় হচ্ছে, মুতাশাবিহাত৷ যাদের মনে বক্রতা আছে তারা ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সবসময় মুতাশাবিহাতের পিছনে লেগে থাকে এবং তার অর্থ করার চেষ্টা করে থাকে৷ অথচ সেগুলোর আসল অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না ৷ বিপরীত পক্ষে পরিপক্ক জ্ঞানের অধিকারীরা বলেঃ ‘‘আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, এসব আমাদের রবের পক্ষ থেকেই এসেছে’’ ৷ আর প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানবান লোকেরাই কোন বিষয় থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে৷ 
৫. মুহকাম পাকাপোক্ত জিনিসকে বলা হয়৷ এর বহুবচন 'মুহকামাত'৷ 'মুহকামাত আয়াত' বলতে এমন সব আয়াত বুঝায় যেগুলোর ভাষা একেবারেই সুস্পষ্ট, যেগুলোর অর্থ নির্ধারণ করার ব্যাপারে কোন প্রকার সংশয়-সন্দেহে অবকাশ থাকে না, যে শব্দগুলো দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য উপস্থাপন করে এবং যেগুলোর অর্থ বিকৃত করার সুযোগ লাভ করা বড়ই কঠিন৷ এ আয়াতগুলো 'কিতাবের আসল বুনিয়াদ' ৷ অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে এ আয়াতগুলো সেই উদ্দেশ্য পূর্ণ করে৷ এ আয়াতগুলোর মাধ্যমে দুনিয়াবাসীকে ইসলামের দিকে আহবান জানানো হয়েছে৷ এগুলোতেই শিক্ষা ও উপদেশের কথা বর্ণিত হয়েছে৷ ভ্রষ্টতার গলদ তুলে ধরে সত্য-সঠিক পথের চেহারা সুস্পষ্ট করা হয়েছে৷ দীনের মূলনীতি এবং আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত, চরিত্রনীতি,দায়িত্ব-কর্তব্য ও আদেশ-নিষেধের বিধান এ আয়াতগুলোতেই বর্ণিত হয়েছে৷ কাজেই কোন সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তি কোন্ পথে চলবে এবং
৬. 'মুতাশাবিহাত' অর্থ যেসব আয়াতের অর্থ গ্রহণে সন্দেহ-সংশয়ের ও বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে দেবার অবকাশ রয়েছে৷
বিশ্ব-জাহানের অন্তর্নিহিত সত্য ও তাৎপর্য, তার সূচনা ও পরিণতি, সেখানে মানুষের অবস্থান, মর্যাদা ও ভূমিকা এবং এ ধরনের আরো বিভিন্ন মৌলিক বিষয় সম্পর্কিত সর্বনিম্ন অপরিহার্য তথ্যাবলী মানুষকে সরবরাহ না করা পর্যন্ত মানুষের জীবন পথে চলার জন্য কোন পথনির্দেশ দেয়া যেতে পারে না, এটি একটি সর্বজন বিদিত সত্য৷ আবার একথাও সত্য, মানবিক ইন্দ্রিয়ানভুতির বাইরের বস্তু-বিষয়গুলো, যেগুলো মানবিক জ্ঞানের আওতায় কখনো আসেনি এবং আসতেও পারে না, যেগুলোকে সে কখনো দেখেনি, স্পর্শ করেনি এবং যেগুলোর স্বাদও গ্রহণ করেনি, সেগুলো বুঝাবার জন্য মানুষের ভাষার ভাণ্ডারে কোন শব্দও রচিত হয়নি এবং প্রত্যেক শ্রোতার মনে তাদের নির্ভুল ছবি অংকিত করার মতো কোন পরিচিত বর্ণনা পদ্ধতিও পাওয়া যায় না৷ কাজেই এ ধরনের বিষয় বুঝাবার জন্য এমন সব শব্দ ও বর্ণনা পদ্ধথিত অবলম্বন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যেগুলো প্রকৃত সত্যের সাথে নিকটতর সাদৃশ্যের অধিকারী অনুভবযোগ্য জিনিসগুলো বুঝাবার জন্য মানুষের ভাষায় পাওয়া যায়৷ এ জন্য অতি প্রাকৃতিক তথা মানবিক জ্ঞানের ঊর্ধের ও ইন্দ্রিয়াতীত বিষয়গুলো বুঝাবার জন্য কুরআন মজীদে এ ধরনের শব্দ ও ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে৷ যেসব আয়াতে এ ধরনের ভাষা ও শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোকেই 'মুতাশাবিহাত' বলা হয়৷
কিন্তু এ ভাষা ব্যবহারের ফলে মানুষ বড়জোর সত্যের কাছাকাছি পৌছতে পারে অথবা সত্যের অস্পষ্ট ধারণা তার মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে, এর বেশী নয়৷ এ ধরনের আয়াতের অর্থ নির্ণয়ের ও নির্দিষ্ট করনের জন্য যত বেশী চেষ্টা করা হবে তত বেশী সংশয়-সন্দেহ ও সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে৷ ফলে মানুষ প্রকৃত সত্যের নিকটতর হবার চাইতে বরং তার থেকে আরো দূরে সরে যাবে৷ কাজেই যারা সত্যসন্ধানী এবং আজেবাজে অর্থহীন বিষয়ের চর্চা করার মানসিকতা যাদের নেই, তারা 'মুতাশাবিহাত' থেকে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে অস্পষ্ট ধারণা লাভ করেই সন্তুষ্ট থাকে৷ এতটুকুন ধারণাই তাদের কাজ চালাবার জন্য যথেষ্ট হয়৷ তারপর তারা 'মুহ্‌কামাত' এর পেছনে নিজেদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে৷ কিন্তু যারা ফিত্‌নাবাজ অথবা বাজে কাজে সময় নষ্ট করতে অব্যস্ত, তাদের কাজই হয় মুতাশাবিহাতের আলোচনায় মশগুল থাকা এবং তার সাহায্যেই তারা পেছন দিয়ে সিঁদ কাটে৷
৭. এখানে এ অমূলক সন্দেহ করার কোন প্রশ্নই ওঠে না যে, মুতাশাবিহাতের সঠিক অর্থ যখন তারা জানে না তখন তারা তার ওপর কেমন করে ঈমান আনে? আসলে একজন সচেতন বিবেক-বুদ্ধির অধিকারী ব্যক্তির মনে মুতাশাবিহাত আয়াতগুলোর দূরবর্তী অসংগত বিশ্লেষন ও অস্পষ্ট বিকৃত ব্যাখার মাধ্যমে কুরআন আল্লাহর কিতাব হবার বিশ্বাস জন্মে না৷ এ বিশ্বাস জন্মে মুহকামাত আয়াতগুলো অধ্যায়নের মাধ্যমে৷ মুহকামাত আয়াতগুরোর মধ্যে চিন্তা-গবেষণা করার পর যখন তার মনে কুরআন আল্লাহর কিতবা হবার ব্যপারে পরিপূর্ণ নিশ্চিন্ততা আসে তখন মুতাশাবিহাত তার মনে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব ও সংশয় সৃষ্টিতে সক্ষম হয় না৷ তাদের যতটুকু সরল অর্থ সে অনুধাবন করতে সক্ষম হয় ততটুকুই গ্রহণ করে নেয় করার নামে উল্‌টা সিধা অর্থ করার পরিবর্তে সে আল্লাহর কালামের ওপর সামগ্রিকভাবে ঈমান এনে কাজের কথাগুলোর দিকে নিজে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয়৷

(তাফহীমুল কুরআন ) 

প্রশ্ন: ১৮২ : উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়েয কি ?

পরিষ্কার-পরিছন্নতা, পবিত্রতা অর্জনের অন্য উপায় হচ্ছে গোসল। পবিত্রতা ঈমানের অন্যতম একটি অঙ্গ। বর্তমান পরিবর্তিত জীবনে মানুষের সমাজিক, সাংস্কৃতিক জীবনেও পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে।
আধুনিক যুগের ছোয়ায় এসে মানুষের মধ্যে দেখা গেছে বাথরুমে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার প্রবণতা। বর্তমানে এটি মানুষের মধ্যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
কিন্তু ইসলাম কি বলে, আদো কি বিবস্ত্র হয়ে অজু বা গোসল করা যায় কিনা।
এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা যায়, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাথরুমে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করা উচিত নয়। এ বিষয়ে হাদিসে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। যে কারণে আমাদের সকলকে পরিহার করা উচিত।
হাদীস শরীফে এসেছে, লজ্জা করার ব্যপারে মানুষের চেয়ে আল্লাহ তাআলাই বেশি হকদার। তাই গোসলের সময় পুরোপুরি উলঙ্গ হয়ে যাওয়া অনুত্তম।
এক হাদিসে বলা হয়েছে, মুয়াবিয়া বিন হাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি তোমার স্ত্রী ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে তোমার লজ্জাস্থান সর্বদা হেফাজত করো (অর্থাৎ ঢেকে রাখো)।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি কোনো ব্যক্তি কোথাও একাকী থাকে! (তখনো কি তা ঢেকে রাখতে হবে?)।’ তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, কেননা আল্লাহকে অধিক লজ্জা করা উচিত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৬৯)
তবে যদি অন্য কারো দেখার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে প্রয়োজনে পাকা গোসল খানায় বা বাথরুমে বিবস্ত্র অবস্থায় গোসল করা জায়েজ। গোসলখানায় চতুষ্পার্শ্বে দেওয়াল থাকা জরুরি। ছাদ না থাকলে সমস্যা নেই। তবে প্রয়োজন ছাড়া এভাবে গোসল করা অনুচিত।
তবে স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে গোসল করার কথা হাদিসে এসেছে।
এ বিষয়ে মহানবী (সা.) তাঁর স্ত্রী মাইমুনা (রা.) ও আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে একত্রে গোসল করেছেন। এটি সহিহ বুখারি ও মুসলিম দ্বারা প্রমাণিত। এ বিষয়ে কেউ কেউ মুসা (আ.)-এর বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার ঘটনাও প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। (দেখুন : বুখারি, হাদিস : ৩৪০৪)।
সব মিলে কথা হচ্ছে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়েজ আছে তবে এটা একেবারে অনুত্তম কাজ, সুন্নতের পরিপন্থী। আল্লাহর রাসুল সা: কখনো এরকম করেনি। মোস্তাহাব ও উত্তম হল লুঙ্গি ইত্যাদি বেঁধে গোসল করা ও মেয়েরা নিচে পায়জামা বা উড়না সাদৃশ্য ও বুকে গামছা সদৃশ্য কিছু রাখবে।
কেননা আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ লজ্জাশীল ও পর্দাকারীদের পছন্দ করেন। তাই তোমাদের কেউ যখন গোসল করে তখন সে যেন পর্দা করে নেয়। (তাহতাবী)

উলঙ্গ হয়ে গোসল করা অনুচিত। ফুকাহায়ে কেরাম উলঙ্গ হয়ে গোসল করাকে মাকরুহ বলেছেন। তবে উলঙ্গ হয়ে গোসল করার সময় যদি গোসলের ফরজগুলো পালন করা হয় তাহলে ফরজ গোসল সম্পন্ন এবং শুদ্ধ হয়ে যাবে।  এবং এ গোসলের পরে নতুন করে ওযু করারও কোনো প্রয়োজন নেই। বরং গোসলের পরে ওযু করাই অনুচিত। ফুকাহায়ে কেরাম গোসলের পরে ওযু করাকে মাকরুহ বলেছেন। গোসলের পূর্বে ওযু করার কথা এসেছে; শেষে নয়।


প্রশ্ন : গোসল করলে কি উযূ সম্পন্ন হয়ে যায় নাকি গোসলের পর আবার নতুন করে উযূ করতে হবে?

উত্তর : গোসল করার দ্বারা উযূ হয়ে যায়। গোসল করার পূর্বে উযূ করা হোক বা না হোক। কেননা গোসলের মধ্যে উযূর অঙ্গগুলো ধৌত হয়ে যায়। তবে গোসলের পূর্বে উযূ করা সুন্নাত। আর গোসলের মাধ্যমে উযূর অঙ্গসমূহ সম্পূর্ণ ভিজে যাওয়া সত্ত্বেও গোসলের পর আবার উযূ করা মাকরূহ। সুনানে তিরমিযী; হাদীস ১০৭, রদ্দুল মুহতার ১/২৯৪, মাসাইলে উযূ; পৃষ্ঠা ৩৭, মাসাইলে গোসল; পৃষ্ঠা ৪৮।

প্রশ্ন: ১৮১ : ইসলামে পর্দার বিধান কখন থেকে শুরু হয় ?

(১) আল্লামা ইবনে কাসীর এবং “নায়লুল আওতার” গ্রন্থকার” বলেন, পঞ্চম হিজরীতে ৬২৭ খ্রিস্টাব্দে পর্দা ফরয হয়েছে।
(২) তাফসীরে রুহুল মায়ানীতে উল্লেখ আছে, তৃতীয় হিজরীতে ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে পর্দা ফরয হয়েছে।।

(৩)  যষ্ঠ হিজরীতে মুসলমানদের জন্য পর্দার বিধান
কার্যকর হয়। কেননা, উক্ত হিজরীতে বনী মুস্তালিক যুদ্ধ্যে, 
সর্বপ্রথম পর্দাবিশিষ্ট হাওদা বা আসন, হযরত আয়েশা (রা) এর
জন্য করা হয়েছিল, যা ইফকের ঘটনা নামে পরিচিত।

(৪) পর্দার বিধান ৩য় হিজরী মতান্তরে ৫ম হিজরীতে নাযিল হয়।

প্রশ্ন: ১৮০ : যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম ।


আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বংশ পরম্পরায় মানব প্রজন্মকে দুনিয়ায় টিকিয়ে রেখে দুনিয়াকে আবাদ রাখার জন্য বিবাহ বন্ধনকে বৈধ করেছেন। এটাকে আল্লাহ তাআলার একটা গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও সিস্টেম। এ ছাড়া বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন গঠন করা নবীদেরও সুন্নত।

আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً    الرعد: ٣٨
অর্থাৎ, নিশ্চয় আপনার পুর্বে অনেক রাসুলকে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি। (সুরা রা'দ ৩৮)

বিশ্বনবী মুহাম্মদ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  আমাদের আদর্শ। আমাদের জীবনে আমরা কোন কাজ কিভাবে করব রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেটি দেখিয়ে দিয়ে গেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছে:
عن أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُولُ جَاءَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ إِلَى بُيُوتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا أُخْبِرُوا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوهَا فَقَالُوا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُومُ الدَّهْرَ وَلَا أُفْطِرُ وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ أَنْتُمْ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللَّهِ إِنِّي لَأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীদের বাড়ীতে তিনজন লোক আসল। তারা রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এর ইবাদাত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করল-তার ইবাদাত কেমন ছিল? তারা রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এর ইবাদাত সম্পর্কে  তাদেরকে জানালে তারা সেটাকে খুবই কম মনে করলেন। তারা বললেন: কোথায় নবী (মর্যাদার দিক থেকে) আর কোথায় আমরা?  কারণ, আল্লাহ তাআলা নবীজী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এর পুর্ব ও পরবর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের একজন বলল: আমি এখন থেকে সর্বদা সারারাত নামাজ পড়ব। দ্বিতীয়জন বলল: আমি এখন থেকে আজীবন (সাওমে দাহর) রোজা রাখতে থাকব। রোজা ভাঙ্গবো না। তৃতীয়জন বলল: আমি নারী সংগ থেকে দূরে থাকব আজীবন, বিবাহ করব না কখনো। অতঃপর রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  তাদের কাছে এসে বললেন: তোমরা এমন সব কথা বলছিলে! জেনে রাখ! আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের থেকে আল্লাহকে অনেক বেশী ভয় করি। এতদসত্ত্বেও আমি রোজা রাখি আবার রোজা ছেড়ে দিই, নামাজ পড়ি, ঘুমাই এবং বিবাহ করি। যে ব্যক্তি আমার এ সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে সে আমার উম্মত নয়। (বুখারী )
রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন:
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاء
হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যে সামর্থবান সে যেন বিবাহ করে। কেননা, তা তার দৃষ্টি নিম্নগামী রাখতে ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করায় সহায়ক হয়। আর যে বিবাহের সামর্থ রাখে না, সে যেন (তার পরিবর্তে) রোজা রাখে। কেননা, তা তার জন্য ঢালস্বরূপ (অনেক অপরাধ হতে রক্ষা করে)। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, দারেমী, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ)

এবার আসুন! আমরা দেখে নিই কাদেরকে বিবাহ করা বৈধ এবং কাদেরকে বিবাহ করা বৈধ নয়।

আল্লাহ তায়ালা এ সম্বন্ধে কুরআন মজীদে বলেন:


অর্থাৎ, তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা,কন্যা, বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে, দুধমাতা, দুধ বোন, শাশুড়ী, দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এমন স্ত্রীর অন্য ঘরের যে কন্যা তোমার লালন পালনে আছে; যদি তাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত না হয় তাহলে, তাকে বিবাহ করাতে দোষ নেই। এ ছাড়া তোমাদের ঐরসজাত পুত্রের স্ত্রী, ও একত্রে দুই সহদরা বোনকে বিবাহাধীনে রাখা। তবে, আয়াত নাযিলের পুর্বে যা হয়ে গেছে তা আলাদা। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর (শরীয়ত সম্মত পন্থায় প্রাপ্ত) ক্রীতদাসী ব্যতিত বিবাহিতা (যে অন্যের বিবাহাধীনে আছে) মহিলাদেরকেও তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। এদের বাইরে যে কোন (মুসলিম বা আহলে কিতাব) মহিলাকে তোমাদের জন্য বিবাহ করা বৈধ করা হয়েছে। এটা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট। (সুরা নিসা: ২৩-২৪)


যে সমস্ত মহিলাদেরকে বিবাহ করা হারাম তাদেরকে দু'টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

• স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ মহিলা : তারা তিন শ্রেণীর।

ক.বংশগত কারণে নিষিদ্ধ: তারা হচ্ছেন- ১. মাতা
২. দাদী
৩. নানী
৪. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে যত নিচেই যাক না কেন।
৫. আপন বোন, বৈমাত্রেয় বোন ও বৈপিত্রেয় বোন।
৬. নিজের ফুফু, পিতা, মাতা, দাদা, দাদী, নানা ও নানীর ফুফু।
৭. নিজের খালা, পিতা, মাতা, দাদা, দাদী, নানা ও নানীর খালা।
৮. আপন ভাই, বৈমাত্রেয় ভাই ও বৈপিত্রেয় ভাই ও তাদের অধঃতন ছেলেদের কন্যা।
৯. আপন বোন, বৈমাত্রেয় বোন ও বৈপিত্রেয় বোন ও তাদের অধঃতন মেয়েদের কন্যা।

খ. দুগ্ধ সম্বন্ধীয় কারণে নিষিদ্ধ:

বংশগত কারণে যাদেরকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ দুগ্ধ সম্বন্ধের কারণেও তারা নিষিদ্ধ। তবে, শর্ত হচ্ছে-

গ. বৈবাহিক সম্বন্ধের কারণে নিষিদ্ধ: ১. পিতা, দাদা ও নানা (যতই উপরে যাক না কেন) যাদেরকে বিবাহ করেছেন।
২. কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা না হোক উক্ত পুরুষের পুত্র-পোত্র বা প্রপোত্রের সাথে মহিলার বিবাহ নিষিদ্ধ।
৩. কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা না হোক উক্ত পুরুষের পিতা-দাদা বা নানার সাথে মহিলার বিবাহ নিষিদ্ধ।
৪. শাশুড়ী। মহিলার সাথে বিবাহ হলেই তার মাতা ও দাদী বা নানী হারাম হয়ে যাবে। দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা না হোক।
৫. স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেই তার কন্যা, তার পুত্রের কন্যা ইত্যদি হারাম হয়ে যাবে।

 সাময়িক ভাবে নিষিদ্ধ মহিলা:

সাময়িক কারণে কখনো কখনো মহিলাকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ হয়ে থাকে। উক্ত কারণ দূর হয়ে গেলে তাকে বিবাহ করা বৈধ হবে।

১. কোন মহিলাকে বিবাহ করলেই তার আপন বোন, ফুফু, খালাকে বিবাহ করা হারাম গণ্য হবে। তবে, তাকে যখন তালাক দিয়ে দেবে কিংবা, স্বামী মারা যাবে এবং সে ইদ্দত শেষ করবে, তখন তাকে সে বিবাহ করতে পারবে।
২. যে মহিলা অন্যের বিবাহাধীনে ছিল। তাকে স্বামী তালাক দিয়েছে কিংবা মারা গেছে এবং সে ইদ্দত পালন করছে; এমতাবস্থায় তাকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ। ইদ্দত শেষ হয়ে গেলেই বিবাহ করতে পারবে।

অনেকে জিজ্ঞাসা করে থাকেন যে,খালাতো,মামাতো,ফুফাতো বা চাচাতো বোনকে বিবাহ করা যাবে কিনা?

তার উত্তর হচ্ছে- আসলে আল্লাহ তায়ালা উপরোক্ত আয়াতে যাদের সাথে বিবাহ করা নিষিদ্ধ সকলের কথাই বলে দিয়েছেন। খালাতো,মামাতো,ফুফাতো বা চাচাতো বোন তাদের মধ্যকার কেউ নন। অতএব, তাদেরকে বিবাহ করা বৈধ।

এমনকি, চাচা মারা গেলে বা তালাক দিয়ে দিলে চাচীকে বিবাহ করার বৈধতাও ইসলাম দিয়েছে। তবে, তাদেরকে বিবাহ করবেন কি করবেন না সেটা আপনার ইচ্ছা।

প্রশ্ন : ১৭৯ : পর্দা ।

আলহামদুলিল্লাহ পর্দাকে অত্যাবশ্যক জ্ঞান করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম কন্যা-জায়া-জননীরা পর্দা করেনও বটে। এখন ভাবনার বিষয় হলো, অধিকাংশ মা-বোন যে পর্দা রক্ষা করেন, কিংবা যে পোশাকে নিজেকে পর্দাশীল ভাবেন তা কি শরিয়তের কাম্য পদ্ধতিতেই হয়? শরিয়তের রূপরেখার বিচারে তা কতটুকু মানোত্তীর্ণ? যেনতেনভাবে, মনের চাহিদা মতো আসলে পর্দা হয় না। বিস্ময়কর শোনালেও সত্য, হিজাব পরেও আপনি বেপর্দা নারীদের মধ্যে শামিল হতে পারেন। বর্তমান সময়ে পর্দা মনে করে করা কিছু বেপর্দার নমুনা তুলে ধরা হলো :- ১. একেবারে সরু তথা আঁটশাট পোশাক পরে তার সাথে হিজাব পরিধান করা। ২. টাইটফিট জিন্স কিংবা অন্য কোনো টাইটফিট প্যান্টের সঙ্গে বুটিকের কাজ করা আকর্ষণীয় স্কার্ফ মাথায় জড়িয়ে। ৩. ডিজাইন করা লেহেঙ্গার সঙ্গে পাতলা ফিনফিনে স্কার্ফ মাথায় জড়িয়ে। ৪. আপনার উন্মুক্ত বাহুদ্বয় এবং অনাবৃত পদযুগলের কারণে। ৫. আপনার অলংকার শোভিত নিমন্ত্রণমূলক পদবিক্ষেপের পরিণামে। ৬. মোহনীয় দৃষ্টি, সুরেলা কণ্ঠ এবং কাঁচভাঙ্গা হাসি দিয়ে। ৭. আপনার সুরভিত ঘ্রাণ, সুউচ্চ হিল এবং অনুরণিত শব্দ দিয়ে। ৮. চেহারায় সৌন্দর্য ও মনোমুগ্ধকর বর্ণের সুদীপ্ত আভা ছড়িয়ে। কারণ, হিজাব কোনো প্রতীক নয়। ফ্যাশনের উপকরণ কিংবা সৌন্দর্য বর্ধনের সামগ্রীও নয়। এ এক অবশ্য পালনীয় বিধান। আল্লাহ এ হিজাব ফরজ করেছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর ওপর। এর প্রবর্তক আমরা কেউ নই; খোদ পুরুষ-নারীর স্রষ্টা মাবুদ আল্লাহ মহানই এই বিধানের প্রবর্তক। অতএব এ বিষয়ে আমরা ভিন্ন মত দিতে পারি না। পারি না নতুন কিছু আবিষ্কার করতে। পারি না এর কোনো বিকল্প উদ্ভাবন করতে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٖ وَلَا مُؤۡمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمۡرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلۡخِيَرَةُ مِنۡ أَمۡرِهِمۡۗ وَمَن يَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَٰلٗا مُّبِينٗا ٣٦ # الاحزاب: ٣٦ ‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার (ইচ্ছা) করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে’। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত : ৩৬] সত্যি বলতে হিজাব বা পর্দা ফরজ হওয়া সম্পর্কে এত বেশি আয়াত ও হাদিস উল্লেখিত হয়েছে এবং এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও রূপরেখা সম্পর্কে এত বাণী ও বক্তব্য বিদ্যমান যে এ নিয়ে নতুন করে কিছু ভাবা ও প্রচারের যৌক্তিকতা নেই। মাহরাম ছাড়া সবার সাথেই পর্দা করতে হবে আল্লাহ তাআলা মুসলিম নারীর সম্মানার্থে এবং দুষ্ট লোকের অশিষ্ট আচরণ থেকে তার মর্যাদা রক্ষার্থে পর্দা ফরজ করেছেন। পর্দা যেমন পুরুষদের রক্ষা করে নারীর ফিতনা থেকে তেমনি নারীকেও নানা কষ্টদায়ক ব্যাপার থেকে রক্ষা করে । ইসলামে প্রতিটি মুসলিম নারীর জন্য বেগানা পুরুষের সামনে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করা জরুরী। তারা হলেন মাহরাম ব্যতীত বাকি সবাই। আর মাহরামগণ হলেন : ১. পিতা। ২. দাদা। ৩. স্বামীর পিতা তথা শ্বশুর। ৪. স্বামীর সন্তান তথা বৈমাত্রেয় পুত্র। ৫. নিজের পুত্র। ৬. ভাই। ৮. ভাইপো। ৯. বোনপো। ১০ চাচা-জ্যাঠা। ১১. মামা। দুধ পানজনিত মাহরামগণ যেমন পবিত্র কোরানে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, وَقُل لِّلۡمُؤۡمِنَٰتِ يَغۡضُضۡنَ مِنۡ أَبۡصَٰرِهِنَّ وَيَحۡفَظۡنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَاۖ وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوۡ ءَابَآئِهِنَّ أَوۡ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآئِهِنَّ أَوۡ أَبۡنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوۡ إِخۡوَٰنِهِنَّ أَوۡ بَنِيٓ إِخۡوَٰنِهِنَّ أَوۡ بَنِيٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوۡ نِسَآئِهِنَّ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيۡرِ أُوْلِي ٱلۡإِرۡبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفۡلِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يَظۡهَرُواْ عَلَىٰ عَوۡرَٰتِ ٱلنِّسَآءِۖ وَلَا يَضۡرِبۡنَ بِأَرۡجُلِهِنَّ لِيُعۡلَمَ مَا يُخۡفِينَ مِن زِينَتِهِنَّۚ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١ #النور: ٣١ ‘আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করবে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার’। {সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩১} যেখানেই কোনো বেগানা পুরুষ থাকবে সেখানে শরিয়ত সম্মত হিজাবের আটটি শর্তের কোনোটি লঙ্ঘন করা হারাম। কেননা অনেক মহিলা ঘরের বাইরে হিজাব পরেন ঠিকই কিন্তু তারা নিজেদের নিকটাত্মীয় গাইরে মাহরামের এর সামনে কোনো কোনো শর্ত লঙ্ঘন করেন। যেমন চাচাতো বা মামাতো ভাইদের সামনে মাথা ঢাকেন ঠিক কিন্তু তাদের সামনে অন্যদের মতো পুরোপুরি পর্দা করেন না। এতে করে তারা সুস্পষ্ট গুনাহ ও হারামে লিপ্ত হন। শরিয়ত সম্মত হিজাব কী? হে আমার মুসলিম বোন, আপনি কি জানেন শরিয়ত সম্মত হিজাব কী? হিজাব কেমন হতে হবে এবং এর শর্তাবলি কী? আর এ ব্যাপারে আপনার অজ্ঞতায় ক্ষতিই বা কী? আপনি কি হিজাব নিয়ে ভেবে দেখেছন, কে একে ফরজ করেছেন আল্লাহ মহান? কি পরিমান পর্দা ফরজ করেছেন? আর তা হওয়া চাই কেমন? হ্যা, আমি বিশ্বাস করতে চাই আপনি এ ব্যাপারে অজ্ঞ নন। আপনি কেন অজ্ঞ থাকবেন যেখানে আপনাকে দেখি চাকরিক্ষেত্রে সফল পরিচালিকা, শিক্ষিকা, অধ্যাপিকা, প্রধান শিক্ষিকা, নিয়ন্ত্রক থেকে নিয়ে ডাক্তার আর নার্স হতে। আপনাকে দেখি মেধাবী অফিসার, জনপ্রিয় লেখক, অকুতোভয় সাংবাদিক থেকে নিয়ে দুরন্ত সব পেশার কত কিছুই না হতে। দেখি মা, বোন, কন্যা ও স্ত্রী হিসেবে অসামান্য ভূমিকা রাখতে। হজরত আবূ উযাইনা ছাদফী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «خَيْرُ نِسَائِكُمُ الْوَدُودُ الْوَلُودُ الْمُوَاتِيَةُ الْمُوَاسِيَةُ، إِذَا اتَّقَيْنَ اللهَ، وَشَرُّ نِسَائِكُمُ الْمُتَبَرِّجَاتُ الْمُتَخَيِلَّاتُ وَهُنَّ الْمُنَافِقَاتُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْهُنَّ، إِلَّا مِثْلُ الْغُرَابِ الْأَعْصَمِ» ‘তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে তারাই সর্বোত্তম যারা আল্লাহকে ভয় করার পাশাপাশি স্বামীকে ভক্তি করে, অধিক সন্তান জন্ম দেয় এবং (স্বামীর দুঃখে তার প্রতি) সমব্যথী ও সহানুভূতিশীল হয়। পক্ষান্তরে তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে সবচে মন্দ তারাই, যারা বেপর্দা হয়ে দম্ভ ভরে চলে। এরাই হলো মুনাফিক। এরা জান্নাতে প্রবেশ করবে কেবল লাল ঠোঁট ও পা বিশিষ্ট কাকদের মতো। (অর্থাৎ এমন বৈশিষ্ট্যের কাক যেমন সংখ্যায় অনেক কম তেমনি তারা কম সংখ্যক জান্নাতে প্রবেশ করবে।) [বাইহাকি : ১৩৪৭৮] হজরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا، قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ، وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا» ‘জাহান্নামবাসী দুটি দল রয়েছে। যাদেরকে আমি এখনো দেখিনি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।’ [মুসলিম : ২১২৮] হাদিসে উল্লেখিত ‘পোশাক পরেও উলঙ্গ’–এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, এমন সংক্ষিপ্ত পোশাক যা নারীর আবরণীয় অংশ ঢাকতে যথেষ্ট নয়। এমন পাতলা পোশাক যা ভেদ করে সহজেই নারীর ত্বক দেখা যায়। এমনকি টাইট কাপড় যা ভেদ করে ত্বক দেখা যায় না বটে তবে তা নারীর আকর্ষণীয় অবয়বকে পরিস্ফূট করে দেয়। এসব পোশাক নারীরা কেবল তার সামনেই পরতে পারেন যার সামনে নিজের গোপন সৌন্দর্য তুলে ধরার অনুমতি রয়েছে। বলাবাহুল্য তিনি হলেন একমাত্র স্বামী। কেননা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো পর্দা নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, وَٱلَّذِينَ هُمۡ لِفُرُوجِهِمۡ حَٰفِظُونَ ٥ إِلَّا عَلَىٰٓ أَزۡوَٰجِهِمۡ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُهُمۡ فَإِنَّهُمۡ غَيۡرُ مَلُومِينَ ٦ فَمَنِ ٱبۡتَغَىٰ وَرَآءَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡعَادُونَ ٧ #المؤمنون: ٥، ٧ ‘আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাজতকারী। তবে তাদের স্ত্রী ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে তারা ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ {সূরা আল-মু’মিনূন, আয়াত : ৫-৭} উল্লেখিত শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনু তাইমিয়া (রহ.) বলেন, অর্থাৎ এমন পোশাক পরিধান করে যা তাকে পুরোপুরি আবৃত করে না। ফলে কাপড় পরলেও মূলত সে উলঙ্গই থেকে যায়। যেমন ওই নারী যে কি-না এমন পাতলা কাপড় পরে যা তার কোমল ত্বক দৃশ্যমান করে কিংবা এমন আঁটশাট বস্ত্র গায়ে জড়ায় যা তার শরীরের বাহু, নিতম্ব প্রভৃতির ভাঁজগুলোকে পরিষ্কার ফুটিয়ে তোলে। নারীর পোশাক সেটিই যা তার আপাদমস্তক ঢেকে ফেলে। দেহের কোনো অংশই প্রকাশ করে না। পুরু ও প্রশস্ত হওয়ায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকারও সুদৃশ্য করে না। [মাজুমূ ফাতাওয়া : ২২/১৪৬] উল্লেখিত আলোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট, বর্তমানে অসংখ্য নারী এমন আছে, যারা পর্দার নামে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরিধান করে থাকে, বাস্তবে তা পর্দা নয়। বর্তমান বাজারে পর্দার নামে এমন সব কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়, যা প্রাথমিক অবস্থায় বিরোধিতা করা হয়েছিল। অথচ এ গুলো নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শন ও আকর্ষণ তৈরি করা ছাড়া আর কিছুই নয়। ব্যবসায়ীরা তাদের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য এ ধরনের পোশাক বাজারে ছাড়ে। যেমন কোন এক কবি বলেন, ‘মনে রাখবে, তুমি যে ধরনের পর্দা ব্যবহার করছ, তাকে শরিয়ত সম্মত পর্দা বলা হতে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবে, যে পর্দা করলে আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুষ্টি লাভ হয়। যে ব্যক্তি তোমার এ ধরনের আমলকে ধন্যবাদ দেয়, তোমাকে সত্যিকার উপদেশ না দেয়, তাদের কথা দ্বারা ধোঁকা পড়া হতে তোমাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সাবধান! তুমি ধোঁকায় পড়ে এ ধরনের কথা বলা থেকে বেঁচে থাক, ‘আমি সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীদের থেকে উন্নত’। কারণ, তুমি যে অবস্থার মধ্যে আছ, তা কোন আদর্শ হতে পারে না। তাও অমতো যেমনটি সৌন্দর্য প্রদর্শন করা অমতো। আর জাহান্নামের বিভিন্ন স্তর আছে যেমনি-ভাবে জান্নাতের বিভিন্ন ক্লাস আছে। তোমার করনীয় হল, তুমি সে মহিলাদের অনুকরণ করবে যারা প্রকৃত পর্দা অবলম্বন করে এবং পর্দার যাবতীয় শর্তাবলীসহ যথাযথ পর্দা পালন করে।’ গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

প্রশ্ন: ১৭৮ : মাসবুকের নামাজ । কোন ব্যক্তি যদি জুমার নামাজ এবং ঈদের নামাজ কোন কারণবশত এক রাকাত না পায় তাহলে ওই এক রাকাত কিভাবে পড়বে? বিস্তারিত বুঝিয়ে জানালে অনেক খুশি হব।

উত্তর: ঈদের ও  জুমার নামাজে এক রাকায়াত না পেলে করনীয় :

নামাজের জামাতে যে ব্যক্তির শুরুতে এক বা তার অধিক রাকাত ছুটে যায়, তাকে 'মাসবুক' বলা হয়। মাসবুক ব্যক্তি ইমামকে যে অবস্থায় পাবে, ওই অবস্থায়ই ইমামের সঙ্গে নামাজে শরিক হয়ে যাবে এবং যথারীতি নামাজ আদায় করবে। যদি সে জুমআর নামাজের  প্রথম রাকাতের রুকুতে শরিক হতে না পারে, এর মানে হলো সে প্রথম রাকাত পেলনা, এক্ষেত্রে সে ইমামের সঙ্গে বাকি একরাকাত  নামাজ আদায় করে শেষ বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়াতু পড়ে চুপ করে বসে থাকবে। এরপর ইমামের উভয় দিকে সালাম ফেরানোর পর সে তার ছুটে যাওয়া রাকাত যথানিয়মে আদায় করে নেবে । আর ঈদের নামাজের ক্ষেত্রে  ছুটে যাওয়া  এক রাকাতের জন্য দাড়িয়ে প্রথমে অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিয়ে নেবে , এরপর যথারীতি একরাকায়াত নামাজ  আদায় করে বসে আত্তাহিয়্যাতু ও দরূদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন। 


প্রশ্ন: ১৭৭ : মানুষ মারা যাওয়ার পর তার আমলনামা চালু থাকে নাকি বন্ধ হয়ে যায় ?

মানুষের জীবনের দু’টি অধ্যায়, একটি দুনিয়ার জীবন অপরটি আখেরাতের জীবন। দুনিয়ার জীবনে যা আমল করবে তার প্রতিদান আখেরাতের জীবনে পাবে। যে দুনিয়ায় ভালো কাজ করবে, সে আখেরাতে এর উত্তম প্রতিদান পাবে, আর যে মন্দ কাজ করবে সেও এর বদলা পাবে।

আমরা জানি, মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার আমল করার কোনো ক্ষমতা থাকে না। তার সব আমল থেকে যায়। কিন্তু এমন কিছু আমল রয়েছে যেগুলো দুনিয়ার জীবনে করলে মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তি কবরেও সে আমলের সওয়াব পেতে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে হয়েছে, আমিই তো মৃতকে জীবিত করি, আর লিখে রাখি যা তারা অগ্রে প্রেরণ করে এবং যা পিছনে রেখে যায়। আর প্রতিটি বস্তুকেই আমি সুষ্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষণ করে রেখেছি। -সূরা ইয়াসিন : ১২

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১. সদকায়ে জারিয়া,  ২. এমন জ্ঞান (ইলম)- যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ও ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দোয়া করে।– সহিহ মুসলিম : ৪৩১০

যেসব আমলের সাওয়াব মৃত্যুর পরও জারি থাকবে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :

জ্ঞান শিক্ষা দেয়া : এমন ইলম (জ্ঞান) শিক্ষা দেয়া যা মানুষের জন্য উপকারী এবং কল্যাণকর। যে ইলম মানুষকে হেদায়েতের দিকে নিয়ে যায়। মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয় এবং জান্নাতের পথে চলতে নির্দেশ করে। এ ধরনের ইলম শিক্ষা দেয়ার কারণে মৃত ব্যক্তি কবরে এর সওয়াব পাবেন। কোরআন, হাদিস, তাওহিদ, আথেরাত, হালাল-হারাম, বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা দেয়া, মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান শিক্ষা দেয়া এবং দুনিয়া পরিচালনা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দেয়া এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মানুষকে কোনো ইলম শিক্ষা দিবে, সে ওই ইলম অনুযায়ী আমলকারীর সমতুল্য প্রতিদান পাবে; অথচ আমলকারীর প্রতিদানে কোন কমতি হবে না।- ইবনে মাজা

সু-সন্তান রেখে যাওয়া : সু-সন্তান বলতে ঈমানদার সন্তান রেখে যাওয়া। যারা মাতা-পিতা বেঁচে থাকা অবস্থায় তাদের অনুগত যেমনটি ছিল, তাদের মৃত্যুর পরও তারা মাতা-পিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আবু উমামাতা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর ৪টি আমলের সওয়াব অব্যাহত থাকে- ১. যে ইসলামি রাষ্ট্রের সীমান্ত পাহারা দিল তার সওয়াব, ২. ভালো কাজ চালু করার ফলে তাকে যারা অনুসরণ করল তার সওয়াব, ৩. যে ব্যক্তি এমন সদকা করলো, যা প্রবাহমান থাকে তার সওয়াব, ও ৪. এমন নেক সন্তান রেখে যাওয়া- যে তার জন্য দোয়া করে। -মুসনাদ আহমাদ : ২২২৪৭

মসজিদ নির্মাণ ও কোরআনে কারিম বিতরণ করা : কোরআনে কারিমে মসজিদকে হেদায়েতের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে,  হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ তৈরি করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করবেন। -সহিহ মুসলিম : ১২১৮

অনুরূপভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোরআনে কারিম কোনো মসজিদ, মাদরাসা বা কোনো প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করে, ওয়াকফ করে এবং সেগুলো পড়ে তবে তার সওয়াবের একটি অংশ সে পাবে। অন্য এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর কবরে ৭টি আমলের সওয়াব অব্যাহত থাকে- ১. যে ইলম শিক্ষা দিল, ২. যে পানি প্রবাহিত করল, ৩. কূপ খনন করল, ৪. খেজুর গাছ লাগালো (গাছ রোপন),  ৫. মসজিদ তৈরি করল, ৬. কোরআনে কারিম বিতরণ করল ও ৭. এমন নেক সন্তান রেখে গেল- যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। -মুসনাদুল বাজ্জার :৭২৮৯

গাছ লাগানো : হজরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলিম যদি কোনো বৃক্ষরোপণ করে, আর তা থেকে কোনো ফল ব্যক্তি খায় তবে সেটি তার জন্য সদকা, কোনো হিংস্র প্রাণী খেলেও তা তার জন্য সদকা, যদি কেউ চুরি করে খায় তাও তার জন্য সদকা, কোনো পাখিও খায় তাও তার জন্য সেটি সদকা। এমনকি যদি কেউ তা কেটে ফেলে তাও সেটি তার জন্য সদকা। -সহিহ মুসলিম : ৪০৫০

এছাড়া অভাবগ্রস্তদের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়া, খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা, সীমান্ত রক্ষা করা, প্রবাহিত পানির ব্যবস্থা করা, আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া দ্বীনী কিতাবাদী রচনা করা।

মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যে মানুষকে হেদায়েতের দিকে আহ্বান করবে, এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সওয়াব তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদের সওয়াব থেকে কোনো কমতি হবে না। -সহিহ মুসলিম : ৬৯৮০

প্রশ্ন: ১৭৬ : বৃদ্ধ ও প্রবীনদের অধিকার ।

প্রবীণদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা মুসলমানদের রীতি ও ঐতিহ্য। প্রবীণদের প্রতি সম্মানসূচক ব্যবহার সমাজে শৃঙ্খলা ও আদর-শান্তির পরিবেশ বজিয়ে রাখে।

প্রবীণদের শ্রদ্ধা এবং নবীনদের স্নেহ করা হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। হাদিসে রাসুল (সা.) এ সম্পর্কে বলেন, ‘যারা ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের সম্মান করে না তারা আমার দলের অন্তর্ভুক্ত নয়।’
​মর্যাদাবান ব্যক্তিকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া উচিত। এটা মহানবীর শিক্ষা। এক হাদিসে হযরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষের সঙ্গে তাদের পদমর্যাদা অনুযা‍য়ী আচরণ করো।’ (আবু দাউদ)
বাস্তবিকবাবে পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবীণদের অবদান অপরিসীম। পরিবারের গঠন, উন্নয়ন ও সমাজের কল্যাণে কর্মময় জীবন ব্যয় করে—একসময়ে তারা বার্ধক্যে উপনীত হন। তখন প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণ ও সুরক্ষা করা সমাজের আবশ্যিক কর্তব্য। কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রতি সেবাযত্ন ও সুযোগ-সুবিধার গুরুত্ব নেহাত কম।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের এক তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখের মতো প্রবীণ রয়েছেন। তাদের মধ্যে শতকরা ৮৮ ভাগ প্রবীণের কোনো না কোনো সন্তান পরিবারের বাইরে থাকেন। শতকরা ২০ জন হয় একাকী পরিবার-পরিজনহীন অথবা কেবল স্বামী-স্ত্রী মিলে বসবাস করেন। শতকরা ৫৯ জন প্রবীণ নারী বিধবা এবং ছেলে-সন্তানের মা। তারা ছেলে-সন্তানের সঙ্গে থাকেন না। নানা দুরবস্থার মধ্য দিয়ে তাদের জীবন কাটে। (তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৬ আগস্ট, ২০১৪)
অন্যদিকে সন্তানরা বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে প্রাপ্য মর্যাদা না দেওয়ার ফলে পারিবারিক শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে ও পরিবারপ্রথা হুমকির মুখে পড়ছে। বিভিন্ন ধরনের সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
অথচ পবিত্র কোরআনে (সন্তানদের শিক্ষামূলক) বলা হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করেছ, তার জন্য এবং যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো।’ (স‍ুরা আহকাফ, আয়াত: ১৫)
প্রসঙ্গত, আমাদের সমাজে একটি বিষয় ইদানিং মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে। সেটা হলো, বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা। অথচ সন্তানেরা বেশ সামর্থ্যবান ও বিত্তশালী। প্রবীণেরা বৃদ্ধাশ্রমে যদিও খাওয়া-পরা সবকিছুই সঠিকভাবে পেয়ে থাকেন, কিন্তু নিজের আপনজনদের ছেড়ে একাকিত্ব জীবন যে কত কষ্ট ও বিষাদের তা বলাইবাহুল্য। অথচ ইসলামের বিধানে প্রবীণেরা ভালোবাসা, সেবাযত্ন ও শ্রদ্ধা পাওয়ার অত্যাধিক যোগ্য ও অধিকারী।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমি মানুষকে পিতা-মাতার প্রতি সদাচারণের নির্দেশ দিয়েছি।’ (সুরা লোকমান: ১৪)
আবু উমামা (রাযি.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, সন্তানের ওপর পিতা-মাতার দায়িত্ব কী? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা উভয়েই তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নাম। (ইবনে মাজাহ, পৃষ্ঠা নং: ২৬০)

হাদিসের সারমর্ম হচ্ছে, তাদের আনুগত্য ও সেবাযত্ন জান্নাতে নিয়ে যায় এবং তাদের সঙ্গে অসৎ আচরণ ও তাদের অসন্তুষ্টি জাহান্নামে পৌঁছে দেয়।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, পিতা-মাতার সন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতা-মাতার অসন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিহিত। (তিরমিজি, হাদিস নং: ২/১২)
অন্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করেন, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কাজ কোনটি? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সময় মতো নামাজ পড়া। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, এরপর কোনো কাজটি সর্বাধিক প্রিয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। (বুখারি, হাদিস নং: ১/৭৬)
এ হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয়, দ্বীনের অন্যতম স্তম্ভ নামাজের পরে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কাজ হলো পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা।
অনেকে ধারণা করে থাকে, পিতা-মাতার আনুগত্য ও সদ্ব্যবহারের জন্য তাদের অত্যন্ত নেককার ও সৎ ব্যক্তি হতে হবে, এমন ধারণা আদৌ ঠিক নয়। এমনকি যদি কারো পিতা-মাতা অমুসলিম হয়, তাহলে তাদের সঙ্গেও সদ্ব্যবহার করার জন্য ইসলাম জোর নির্দেশ দিয়েছে।

এ ব্যাপারে ইমাম বুখারি (রহ.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। আসমা বিনতে আবু বকর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার মা অমুসলিম অবস্থায় আমার নিকট আসলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার মা আমার নিকট দেখা করতে আসেন, আমি কি তার সঙ্গে সদাচরণ করতে পারবো? রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ! তার সঙ্গে অবশ্যই সদ্ব্যবহার করো। (বুখারি হাদিস নং: ২/৮৮৪)

ইসলামে পিতা-মাতার খেদমত-সেবা ও তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহারের গুরুত্ব এতো বেশি যে, জিহাদ বা সংগ্রাম ফরজে কেফায়ার স্তরে থাকা পর্যন্ত পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়া সন্তানের জন্য জিহাদে অংশ গ্রহণ করা জায়েয নয়।

বুখারি শরিফে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, একজন ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলেন, আমি জিহাদে অংশ গ্রহণ করতে চাই, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার পিতা-মাতা জীবিত কী আছেন? সে বললো, হ্যাঁ! রাস‍ূল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি পিতা-মাতার সেবাযত্নে আত্মনিয়োগ করো। (বুখারি, হাদিস নং: ৮৮৩)
পুরো জীবন-যৌবন ব্যয় করে যারা সন্তানের ভবিষ্যত গড়েন, তাদের অনেকেই এক কালে ভীষণ একা ও অপাঙক্তেয় হয়ে পড়েন। সন্তানের অবহেলা, অবজ্ঞা ও অযত্ন তাদের চরম কষ্টে ফেলে দেয়। বিষাদক্লিষ্টতা ও দুঃখভরা মনে দিনমান অতিবাহিত করতে হয়।
অথচ ইসলামের শিক্ষা হলো, সন্তানের অসহায়ত্বের সময় যেভাবে পিতা-মাতা তাকে স্নেহভরে সযত্নে প্রতিপালন করেছেন, পিতা-মাতার অসহায়ত্ব বা বৃদ্ধাবস্থায় তাদের সেভাবে লালন-পালন করা সন্তানের অবশ্য কর্তব্য।
এ মহৎ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা অমানবিক, ইসলাম ও সভ্যতাবিবর্জিত কাজ। যারা এমন কাজ করে তাদের কোথাও ক্ষমা নেই। এমন কাজের কারণে পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে, আর দুনিয়াতেও নিজের বার্ধক্যাবস্থায় আরো চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ইসলাম পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন ও সর্বস্তরের প্রবীণদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তাদের অসহায়ত্বের সময় সেবাযত্ন করার তাগিদ দিয়েছে। একজন সুস্থ বিবেক ও মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন মানুষ তার বৃদ্ধ পিতা-মাতা এবং তার আত্মীয়-পরিজন ও অন্যান্য প্রবীণদের কখনো অবহেলা বা উপেক্ষা করতে পারে না। তাই আসুন, সব প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হই।

প্রশ্ন: ১৭৫ : মহান আল্লাহর কি কোন আকার আছে যেমন তিনি বলেন যে আমি সব জায়গায় আছি।

উত্তর : মহান আল্লাহর জন্য যে ধরণের আকার থাকা তার জন্য শোভনীয় ও প্রযোজ্য, তার সে আকারই আছে। তবে আমাদের তা বোধগম্য নয়। মহান আল্লাহ সব জায়গায় আছেন এর মানে হচ্ছে তার জ্ঞান সব জায়গায় পরিব্যপ্ত। আল্লাহর জ্ঞানের অগোচরে কিছুই নেই।

প্রশ্ন: ১৭৪ : বিবাহ ও ঋণ সংক্রান্ত ।

প্রশ্ন: আমি একজন যুবক, বর্তমান এই ফেতনার যুগে নিজের ইমান এবং চরিত্র ও যৌবন কে হেফাজত করার জন্য,বিশেষ করে নারীর ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য,নিজের আমলনামা কে গুনাহ মুক্ত রাখতে , ঈমান কে পরিপূর্ণ করার বিবাহ নামক বৈধ পন্থা অবলম্বন করতে চাই,বিবাহ করা আমার ওপর ওয়াজিব হয়ে আছে,কারন বিবাহ দূত করতে না পারলে গুনাহ লিপ্ত হওয়ার সম্ভবনা আছে,সুন্নত তরীকায় বিবাহ করার মত সচচলতা মোটামুটি তাওফিক আছে, কিন্তু আমার পরিবারের ৩ লক্ষ টাকা ঋন আছে, আমার বড ভাইয়ের ওনেক টাকা ঋন আছে, আমি চাকরি করি আমার কোনো ঝন নেই, আমার বড ভাই ও চাকরি করে,এখন আমার বাবা মা বলতেছে ঋণগুলো পরিশোধ করে তারপর বিয়ে করতে, এখন আমার কি করা প্রয়োজন,আমি কি বিলম্ব করে বিয়ে করব,.?????


উত্তর: আপনার বিবাহের প্রয়োজন এ বিষয়টা কোন মুরুব্বীর মাধ্যমে আপনার মা বাবাকে বোঝান। যদি তারা রাজী না হয় তাহলে আপনি নিজেই বিবাহ করে ফেলুন।

প্রশ্ন: ১৭৩ : সাফা ও মারওয়া পাহাড় ।



আল্লাহ তায়ালার অনন্য নিদর্শনসমূহের মধ্যে সাফা-মারওয়া অন্যতম। হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য এখানে দৌড়ানো আবশ্যক। সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের সাঈ-তে রয়েছে সুনির্দিষ্ট স্থান, নিয়ম ও পদ্ধতি।


‘সাঈ’ শব্দের অর্থ হলো দৌড়ানো। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে বিশেষ পদ্ধতিতে সাতবার দৌড়ানোকে সাঈ বলে। ‘সাঈ’ হলো হজের রোকন। হজ ও ওমরায় ‘সাঈ’ করা ওয়াজিব। সাফা ও মারাওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে নির্ধারিত নিয়মে সাঈ করতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া (পাহাড় দুটি) আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কাবাগৃহে হজ এবং ওমরা সম্পন্ন করে; তার জন্য এ (পাহাড়) দুটি প্রদক্ষিণ (সাঈ) করলে কোনো পাপ নেই।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৮)




‘সাঈ’ পায়ে হেঁটে সম্পন্ন করতে হয়। হেঁটে সাঈ করতে অপারগ হলে বাহনের সাহায্যেও আদায় করা যায়। তবে বিনা ওজরে বাহন ব্যবহার করলে দম বা কুরবানি ওয়াজিব হয়। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে দৌড়ানোই হলো সাঈ-এর রোকন। সাফা ও মারওয়া পাহাড় ব্যতীত এদিক-ওদিক অথবা অন্য কোথাও দৌড়ালে ‘সাঈ’ আদায় হবে না।


সাঈ’র ইতিহাস : ইসলামের ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আল্লাহর আদেশে তাঁর স্ত্রী হজরত হাজেরা ও শিশুপুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে অল্প কিছু খাদ্যদ্রব্যসহ পবিত্র কাবা ঘর সংলগ্ন সাফা ও মারওয়ার কাছে মরুভূমিতে রেখে আসেন।


তাদের খাবার ও পানি শেষ হয়ে যাওয়ার পর হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে রেখে হজরত হাজেরা পানির জন্য কিংবা কোনো কাফেলার সন্ধানে সাফা থেকে মারওয়া এবং মারওয়া থেকে সাফায় ৭বার আসা-যাওয়া (দৌড়াদৌড়ি) করেন।


প্রথমে তিনি আশ-পাশের এলাকা দেখার জন্য সাফা পাহাড়ে উঠেন। সেখান থেকে কোনো দিকে কোনো কিছু না দেখার পর তিনি পার্শ্ববর্তী মারওয়া পাহাড়ে উঠেন।


পাহাড়ের চূড়া থেকে তিনি হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে দেখতে পেতেন। কিন্তু যখনই দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে আসতেন, সেখান থেকে তাকে দেখা সম্ভব ছিল না; ফলে তিনি পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে তিনি একটু দ্রুতগতিতে ছুটতেন।


এ দৌড়াদৌড়ি আল্লাহ তাআলার পছন্দ হয়ে যায়। যা তিনি মুসলিম উম্মাহর জন্য কুরআনে আয়াতে তাঁর নির্দশন হিসেবে উল্লেখ করেন। ফলে সাফা মারওয়ায় সাঈ বা দৌড়ানো হজ ও ওমরার রোকন হিসেবে সাব্যস্ত হয়।


‘সাঈ’ করার সময় পুরুষ হাজীদের জন্য এই স্থানটুকু দ্রুত (কিছুটা হাল্কা দৌড়ের মতো) পার হতে হবে। যার দুই প্রান্তে সবুজ বাতি দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়া আছে। তবে মহিলাদের দৌড়াতে হয় না; কারণ হজরত হাজেরার দৌড়ানোর বদৌলতে এবং তাঁর সম্মানে আল্লাহ তাআলা কেয়ামত পর্যন্ত সব মহিলার জন্য দ্রুত চলাকে মওকুফ ও মুলতবি করে দিয়েছেন।






উইকিপিডিয়া থেকে :






সাফা ও মারওয়া (আরবি: الصفا‎‎ Aṣ-Ṣafā, المروة al-Marwah) সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত দুটি ছোট পাহাড়। এই পাহাড়দ্বয় হজ্জউমরার সাথে সম্পর্কিত। হজ্জ ও উমরার অংশ হিসেবে এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাত বার আসা যাওয়া করতে হয়।




পরিচ্ছেদসমূহ


১ইতিহাস
২স্থান
৩সায়ি
৪তথ্যসূত্র

ইতিহাস:


ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, ইবরাহিম (আ) আল্লাহর আদেশে তার স্ত্রী হাজেরা (আ) ও শিশুপুত্র ইসমাইল (আ) কে অল্প কিছু খাদ্যদ্রব্যসহ সাফা ও মারওয়ার কাছে মরুভূমিতে রেখে আসেন। তাদের খাবার ও পানি শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাজেরা পানির জন্য এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাতবার যাওয়া আসা করেন। এসময় তিনি ইসমাইল (আ) কে রেখে যান।


প্রথমে তিনি আশেপাশের এলাকা দেখার জন্য সাফা পাহাড়ে উঠেন। তিনি কোনো কাফেলার সন্ধান পাওয়ার আশায় ছিলেন যাতে তাদের কাছ থেকে সামান্য পানি চেয়ে পিপাসা মেটানো যায়। কিছু না দেখার পর তিনি পার্শ্ববর্তী মারওয়া পাহাড়ে উঠেন। মূলত, মরুভুমিতে মরিচিকা দেখে পানির আশায় তিনি দৌড়ে যান। বারবার তার দৃষ্টিভ্রম হয় এবং সামান্য পানি পাওয়ার আশায় এভাবে সাতবার চলাচলের পর ফিরে এসে তিনি দেখতে পান যে ক্রন্দনরত শিশু ইসমাইল (আ) এর পায়ের আঘাতে মাটি ফেটে পানির ধারা বের হচ্ছে। মূলত, ফেরেশতা হযরত জিবরাইল (আ) এর আঘাতে এই পানির ধারাটি সৃষ্টি হয়। বিবি হাজেরা এই ঝর্ণা পাথর দিয়ে বেধে দেন। এরপর থেকে এটি জমজম কুয়া নামে পরিচিত হয়।

স্থান:


কাবা মসজিদুল হারামে অবস্থিত। সাফা পাহাড় এর থেকে প্রায় ১০০ মি (৩৩০ ফুট) দূরে অবস্থিত। মারওয়া কাবা থেকে ৩৫০ মি (১১৫০ ফুট) দূরে অবস্থিত। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০০ মি (৯৮০ ফুট)। সাতবার আসা যাওয়া করার পর মোটামুটি ২.১ কিমি (১.৩ মাইল) দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। পাহাড়দ্বয় ও মধ্যবর্তী পথ বর্তমানে দীর্ঘ গ্যালারির মধ্যে অবস্থিত এবং মসজিদের অংশ।
সায়ি:


হজ্জউমরার সময় এই দুই পাহাড়ের মধ্যে সাতবার আশা যাওয়া করতে হয়। একে সায়ি বলে। এটি হজ্জ ও উমরার অবশ্য পালনীয় বিধান।

প্রশ্ন: ১৭২ : সিজদার দোয়া সমূহ ।

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই নামাজে সিজদার জন্য শুধু একটি দোয়াই শিখেছি। অথচ আমাদের রাসুল (সাঃ) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দোয়া সিজদার সময় পড়েছেন এবং শিখিয়েছেন। আসুন এই সহজ দোয়াগুলো আমরা শিখে নিই এবং ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দোয়াগুলো যেকোনো একটি করে বিভিন্ন সময়ে পড়ি, যাতে নামাজের অতি অভ্যস্ততার কারণে অমনোযোগিতা আমরা দূর করতে পারি। সেই সাথে কিছু সুন্নাহ জাগ্রত করতে পারি।
1. سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى.
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “সুবহানা রব্বিয়াল ‘আলা”
অর্থঃ আমার মহান সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। (তিনবার)
2. اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ, وَلَكَ أَسْلَمْتُ, سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ, وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ, تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা ‘আ-মানতু ওয়ালাকা ‘আসলামতু সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খলাক্কাহু ওয়াসাও ওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সাম‘আহু ওয়া বাসারাহু তাবারকাল্লাহু আহসানুল খ-লিক্কীন”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনারই জন্য সিজদা করেছি, আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, আপনার জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছি, আমার মুখমণ্ডল (আমার সমগ্র দেহ) সিজদায় অবনমিত সেই মহান সত্তার জন্য যিনি উহাকে সৃষ্টি করেছেন এবং উহার কর্ণ ও চক্ষু উদ্ভিন্ন করেছেন, মহিমান্বিত আল্লাহ সর্বোত্তম স্রষ্টা।
3. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ, دِقَّهُ وَجِلَّهُ, وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ, وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن أبي هريرة رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মাগফিরলী যানবীকুল্লাহু, দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু, ওয়া আউওয়ালাহু ওয়াআ-খিরাহু ওয়া ‘আলানিয়াতা ওয়া সিররাহু”
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দাও, ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ, প্রকাশ্য এবং গোপন গুনাহ।
4. اللَّهُمَّ اِنِّىْ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ, وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ, أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن عائشة رضي الله عنها)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযু বিরিদাকা মিন সাখাতিকা, ওয়া বিমু’আ-ফাতিকা মিন ‘উক্কুবাতিকা ওয়া ‘আউযু বিকামিনকা, লা-উহসী সানা-আন ‘আলাইকা আনতা কামা আসনাইতা ‘আলা নাফসিকা”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই আপনার অসন্তুষ্টি হতে আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে, আপনার শাস্তি হতে আপনার ক্ষমার মাধ্যমে, আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই আপনার কহর অভিশাপ হতে। আপনার প্রশংসা গুণে শেষ করা যায় না; আপনি সেই প্রশংসার যোগ্য নিজের প্রশংসা যেরূপ তুমি নিজে করেছ।
5. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي خَطِيئَتِي وَجَهْلِي وَإِسْرَافِي فِي أَمْرِي, وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي جِدِّي وَهَزْلِي وَخَطَئِي وَعَمْدِي وَكُلُّ ذَلِكَ عِنْدِي, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَاقَدَّمْتُ وَمَاأَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ, أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.
(حديث صحيح/ رواه البخاري ومسلم عن أبي موسى الاشعري رضي الله عنه)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলী খাতিয়াতী ওয়াজাহলী ওয়াসিররী ফী আমরী, ওয়ামা আনতা আ'লামু বিহী মিন্নী। আল্লাহুম্মাগফিরলী জাদ্দী ওয়াজাহলী ওয়াখাতায়ী ওয়া'আমদী ওয়াকুল্লু যালিকা ইনদী। আল্লাহুম্মাগফিরলী মাকাদ্দামতু ওয়ামা আক্বারতু ওয়ামা আরসালতু ওয়ামা আ'লানতু, আনতাল মুকাদ্দামু ওয়া' আনাতাল মুয়াক্বারু ওয়া'আনতা আলা কুল্লি সাইয়ীন কাদীর।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার ভুল ত্রুটি এবং আমার মূর্খতা, আমার কাজ কর্মে সীমা লংঘন এবং আমার পক্ষ হইতে সংঘঠিত সেই সব অপরাধ যাহা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন তা মাফ করিয়া দিন। হে আল্লাহ, গাম্ভীর্য গুনাহ, পরিহাস গুনাহ. ইচ্ছেকৃত গুনাহ ও অনিচ্ছাকৃত গুনাহ মাফ করিয়া দিন। সব ধরণের গুনাহ আমার রহিয়াছে। হে আল্লাহ, আমার সকল গুনাহ মাফ করিয়া দিন, যাহা আমি পূর্বে করিয়াছি, আর যাহা পরে করিয়াছি, আর যে গুনাহ আমি গোপনে করিয়াছি আর যাহা প্রকাশ্যে করিয়াছি, যাহা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। আপনিইতো যাহাকে ইচ্ছা অগ্রগামী করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা পশ্চাদগামী করেন এবং আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাশীল।

দুই সিজদার মাঝের বৈঠকের দোয়া
1. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَعَافِنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي.
(حديث حسن / رواه الترمذي وابو داود عن ابن عباس رضي الله عنهما)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াফিনী ওয়াহদিনী ওয়ারজুকানী।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমাকে মাফ করিয়া দিন, আমার উপর অনুগ্রহ করুন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং আমাকে জীবিকা দান করুন।

তেলাোয়াতে সেজদার দোয়া
1. سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى.
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)

উচ্চারণ: “সুবহানা রব্বিয়াল ‘আলা”
অর্থঃ আমার মহান সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। (তিনবার)
2. اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ, وَلَكَ أَسْلَمْتُ, سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ, وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ, تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা ‘আ-মানতু ওয়ালাকা ‘আসলামতু সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খলাক্কাহু ওয়াসাও ওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সাম‘আহু ওয়া বাসারাহু তাবারকাল্লাহু আহসানুল খ-লিক্কীন”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনারই জন্য সিজদা করেছি, আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, আপনার জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছি, আমার মুখমণ্ডল (আমার সমগ্র দেহ) সিজদায় অবনমিত সেই মহান সত্তার জন্য যিনি উহাকে সৃষ্টি করেছেন এবং উহার কর্ণ ও চক্ষু উদ্ভিন্ন করেছেন, মহিমান্বিত আল্লাহ সর্বোত্তম স্রষ্টা।
3. اللَّهُمَّ اكْتُبْ لِي بِهَا عِنْدَكَ أَجْرًا, وَضَعْ عَنِّي بِهَا وِزْرًا, وَاجْعَلْهَا لِي عِنْدَكَ ذُخْرًا وَتَقَبَّلْهَا مِنِّي كَمَا تَقَبَّلْتَهَا مِنْ عَبْدِكَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم.
(حديث حسن/ رواه الترمذي والحاكم عن ابن عباس رضي الله عنهما)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আকতুবলী বিহা ইনদাকা আজারা, ওয়াদা' আন্নী বিহা বিজরা, ওয়াজ'আরহা লী ইনদাকা যুথরা, ওয়াতাকাব্বালহা মিন্নী কামা তাকাব্বালতাহা মিন আবদিকা দাউদ আলাইহিস সালামা।
অর্থঃ হে আল্লাহ, এই সিজদার সাওয়াব আপনার নিকট লিখিয়া রাখুন, আর এর দ্ধারা আমার পাপের বোঝা আমার উপর থেকে নামিয়ে দিন, এটাকে আমার জন্য আপনার নিকট পুঁজি বানিয়ে রাথুন, আর উহাকে আমার নিকট হইতে কবুল করিয়া নিন, যেমন কবুল করিয়াছেন আপনার বান্দা দাউদ (আ:) হইতে।

সিজদার ফযিলাত:
আবুহুরাইরা (রা:) হইতে বর্ণিত নবী করীম (স:) বলিয়াছেন, যখন আদম সন্তান সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করিয়া সিজদা করিয়া লয়, তখন শয়তান কাঁদিতে কাঁদিতে একপাশে সরিয়া যায় এবং বলে, হায় আফসোস, আদম সন্তানকে সিজদা করার হুকম করা হইয়াছে, আর সে সিজদা করিয়া জান্নাতের উপযুক্ত হইয়া গিয়াছে। আর আমাকে সিজদা করার হুকম করা হইয়াছে কিন্তু সিজদা করিতে অস্বীকার করিয়া জাহান্নামের উপযুক্ত হইয়াছি। (সহীহ মুসলিম) অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল (স:) বলেছেন, ‘তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশী বেশী সিজদা করবে। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ [সহীহ মুসলিম]

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...