শিশুদের শিক্ষায় করনীয়

 

শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষা : কঠোরতা নয়, কোমলতাই আসল পন্থা

মাওলানা মুহাম্মদ আনসারুল্লাহ হাসান

ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শৈশব-কৈশরই হচ্ছে শিক্ষার ভিত্তিকাল। স্বচ্ছ মেধা, সুস্থ বুদ্ধি, সরল চিন্তা ও স্পষ্ট মনোযোগের কারণে শিশুরা সহজেই সবকিছু আয়ত্ত করতে পারে। সঙ্গত কারণেই তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতিও অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম।

এখানে মনে রাখা উচিত, শরীয়তের দৃষ্টিতে শিশুদের পরিচয়, তারা গায়রে মুকাল্লাফ তথা দায়ভার ও জবাবদিহিতা থেকে মুক্ত। তারা শারীরিকভাবে যেমন দুর্বল তেমনি মানসিকভাবেও  কোমল। তাই তাদের সাথে কোমল ও নরম আচরণ করতে হবে। তাদেরকে শিক্ষাদান করতে হবে মায়ের স্নেহ-মমতা দিয়ে। এক্ষেত্রে ডাঁট-ধমক ও কঠোরতা  পরিহার করে নম্রতা ও কোমলতা অবলম্বন করতে হবে। যে নম্রতা ও কোমলতার আচরণ করতেন মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবার সাথে করতেন। আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. হতে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসের শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে হঠকারী ও কঠোরতাকারীরূপে প্রেরণ করেননি; বরং সহজ-কোমল আচরণকারী শিক্ষকরূপে প্রেরণ করেছেন।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৭৮

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম গাযালী রাহ. বলেন, এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, শিক্ষার্থীর ভুল-ত্রুটিগুলো যথাসম্ভব কোমলতা ও উদারতার সাথে সংশোধন করতে হবে এবং দয়া ও করুণার পন্থা অবলম্বন করতে হবে। ধমক ও ভৎর্সনা নয়।-আর রাসূলুল মুয়াল্লিম, পৃ. ১১

খতীবে বাগদাদীখ্যাত ইমাম আবু বকর আহমদ ইবনে আলী রাহ. শিক্ষকের আদাব সম্পর্কিত আলোচনায় বলেন, শিক্ষকের উচিত, ভুলকারীর ভুলগুলো কোমলভাবে ও নরম ভাষায় বলে দেওয়া, কঠোর আচরণ ও রুক্ষ ভাষার মাধ্যমে নয়।-আলফকীহ ওয়াল মুতাফাককিহ ২/২৮৪

তিনি তার এ বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণস্বরূপ অনেক হাদীস উল্লেখ করেছেন। তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করছি।

১. হযরত মুআবিয়া ইবনে হাকাম রা. বর্ণনা করেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে নামাযরত ছিলাম। হঠাৎ এক ব্যক্তি (নামাযের মধ্যে) হাঁচি দিল। প্রতিউত্তরে আমি ইয়ারহামুকাল্লাহ বললাম। লোকজন তখন আমার দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে। আমি বলে উঠলাম, আপনাদের কী হয়েছে? আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছেন কেন? লোকজন তাদের উরুতে হাত চাপড়িয়ে আমাকে শান্ত ও চুপ হতে ইঙ্গিত করল। আমি চুপ হয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করলেন। আমার পিতামাতা তার প্রতি উৎসর্গিত হোন, তার মতো এত উত্তম ও সুন্দর শিক্ষাদানকারী কোনো শিক্ষক তার পূর্বেও কাউকে দেখিনি এবং তার পরেও দেখিনি। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে না প্রহার করলেন, না তিরস্কার করলেন, না ধমক দিলেন; তিনি বললেন, আমাদের এই নামায মানষের কথাবার্তার উপযোগী নয়। (অর্থাৎ নামাযে এ ধরনের কথা বলা যায় না।) বরং এ  তো হল তাসবীহ, তাকবীর ও তেলাওয়াতে কুরআন।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৩৭; আবু দাউদ, হাদীস : ৯৩০

২. হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতাকে ভালবাসেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬০২৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২১৬৫

মুসলিম শরীফের অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হে আয়েশা! আল্লাহ তাআলা নম্র ব্যবহারকারী। তিনি নম্রতা পছন্দ করেন। তিনি নম্রতার জন্য এমন কিছু দান করেন, যা কঠোরতার জন্য দান করেন না।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৫৯৩

৩. হযরত জারীর রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৫৯০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪৮০৭

৪. হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোমলতা যে কোনো বিষয়কে সৌন্দর্যমন্ডিত করে। আর কোনো বিষয় থেকে কোমলতা দূর হয়ে গেলে তাকে কলুষিত করে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৫৯৪

ইমাম মুহিউদ্দীন নববী রাহ. শিক্ষকের আদাব সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনায় বলেন, শিক্ষকের উচিত, তার ছাত্রের সাথে নরম ব্যবহার করা, তার প্রতি সদয় হওয়া। তার কোনো ভুল হলে বা অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রকাশ পেলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা। বিশেষত শিশু-কিশোরদের বেলায়।

তিনিও এ বিষয়ে অনেক হাদীস উল্লেখ করেছেন। একটি হাদীস এই- হযরত আবু সায়ীদ খুদরী রা. বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মানুষ তোমাদের অনুসারী হবে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন দ্বীন শেখার জন্য তোমাদের নিকট আগমন করবে। যখন তারা আগমন করবে, তোমরা তাদের হিতকাঙ্খী হবে এবং তাদেরকে সদুপদেশ দিবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ২৬৫০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৪৯; (আততিবয়ান পৃ. ৫৬-৫৭)

রাগান্বিত অবস্থায় শিশুদের প্রহার করা অন্যায় স্বভাব-প্রকৃতির কারণেই শিশুরা অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম। তাই শিশুদের শিক্ষাদান খুবই কঠিন। শান্ত-শিষ্টতার চেয়ে চপলতা ও চঞ্চলতাই তাদের মধ্যে প্রবল। ফলে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করাও বেশ কষ্টকর। কখনো কখনো পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে, শিক্ষকের মধ্যে ক্রোধের ভাব সৃষ্টি হয়ে যায় এবং প্রহার করার অবস্থা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। এ সময় শাস্তি দিবে না; বরং  নীরব-নিশ্চুপ থেকে নিজের রাগ দূর করবে। তারপর করণীয় ঠিক করবে। এটাই ইসলামের শ্বাশ্বত শিক্ষা ও ধর্মীয় নির্দেশনা।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা শিক্ষাদান কর, সহজ ও কোমল আচরণ কর; কঠোর আচরণ করো না। যখন তুমি রাগান্বিত হবে তখন চুপ থাক। যখন তুমি রাগান্বিত হবে তখন চুপ থাক। যখন তুমি রাগান্বিত হবে তখন চুপ থাক (এ কথা তিনবার বললেন)।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৫৫৬, ২১৩৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৫৮৮৮; মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১৫২, ১৫৩; মুসনাদে আবু দাউদ ত্বয়ালিসী, হাদীস : ২৬০৮; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস : ২৪৫,

আল-আদাবুল মুফরাদের অন্য বর্ণনায় আছে, তোমরা শিক্ষাদান কর এবং সহজ-কোমল আচরণ কর এ কথা তিনবার বলা হয়েছে।-হাদীস : ১৩২০

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন জিনিস আমাকে আল্লাহর গযব থেকে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, তুমি রাগ করো না।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৬৩৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ২৯৬

রাসূলের জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত,  এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেন, তুমি রাগ করো না। লোকটি বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা বলার পর আমি চিন্তা করে দেখলাম, ক্রোধই হল সকল অনিষ্টর মূল।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩১৭১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ২০২৮৬;

শিশুদেরকে বা অন্য  কাউকে প্রহার করা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করবে কিয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।-আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস : ১৮৬, মুসনাদে বাযযার, হাদীস-৩৪৫৪, তাবারানী, হাদীস-১৪৬৮

এ সম্পর্কে হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. বলেন, কখনো রাগান্বিত অবস্থায় শিশুকে প্রহার করবে না। পিতা ও উস্তাদ উভয়ের জন্যই এ কথা। এ সময় চুপ থাকবে। যখন ক্রোধ দূর হয়ে যাবে তখন ভেবেচিন্তে শাস্তি দিবে। এতে শাস্তির মাত্রা ঠিক থাকবে।  সীমালঙ্ঘন হবে না। কিন্তু যদি রাগান্বিত অবস্থায় মারতে আরম্ভ কর, তাহলে এক থাপ্পড়ের জায়গায় দশ থাপ্পড় দিয়ে ফেলবে। এর কারণে একে তো গুনাহ হল। কেননা, প্রয়োজনের অধিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত এতে শিশুর ক্ষতি হবে। কেননা, সকল বিষয়ই মাত্রা অতিক্রম করলে ক্ষতি হয়ে যায়। তৃতীয়ত এর জন্য পরে অনুতাপ করতে হবে। তাই তিনি বলেছেন, ক্রুব্ধ অবস্থায় শাস্তি দিবে না।

মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. বলেছেন, শিশুদেরকে প্রহার করা খুবই ভয়াবহ। অন্যান্য গুনাহ তো তওবার মাধ্যমে মাফ হতে পারে। কিন্তু শিশুদের উপর জুলুম করা হলে এর ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা এটা হচ্ছে বান্দার হক। আর বান্দার হক শুধু তওবার দ্বারা মাফ হয় না। যে পর্যন্ত না যার হক নষ্ট করা হয়েছে সে মাফ করে। এদিকে যার উপর জুলুম করা হয়েছে সে হচ্ছে নাবালেগ। নাবালেগের ক্ষমা শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য এ অপরাধের মাফ পাওয়া খুবই জটিল। আর তাই শিশুদেরকে প্রহার করা এবং তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করার বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত।-ইসলাহী মাজালিস, মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী। 

আল্লামা ইবনে খালদূন ছাত্রদের প্রহার ও কঠোরতাকে ক্ষতিকর আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, খুব স্মরণ রাখবেন। শিক্ষা-দীক্ষার ক্ষেত্রে প্রহার করা এবং ডাঁট-ধমক দেওয়া শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটা উস্তাদের অযোগ্যতা ও ভুল শিক্ষা পদ্ধতির নমুনা। প্রহার করার ফলে শিশুদের মনে শিক্ষকের কঠোরতার প্রভাব বিরাজ করে। তাদের মন-মানসিকতায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং তারা লেখাপড়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। কঠোরতা তাদেরকে অধঃপতনমুখী করে তোলে। অনেক সময় তাদের মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, প্রহার ও কঠোরতার কারণে শিশুদের মাঝে মিথ্যা বলা ও দুষ্কর্মের মানসিকতা সৃষ্টি হয়। তাদের আত্মমর্যাদাবোধ ও উচ্চ চেতনা দূর হয়ে যায়। শিক্ষকের মারধর থেকে বাঁচার জন্য তারা নানা অপকৌশল, মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে। পরবর্তীতে এই সকল ত্রুটি তাদের মধ্যে বদ্ধমূল হয়ে যায়। উত্তম চরিত্র ও সুন্দর মানসিকতার পরিবর্তে অসৎ চরিত্র ও অনৈতিকতার ভিত রচিত হয়।

এসব ধর্মীয় দিক-নির্দেশনা ও নীতি নৈতিকতার বিষয়টি বাদ দিলেও শিশুদের প্রহারের অশুভ প্রতিক্রিয়া হয় বহুরূপী ও বহুমুখী। প্রথমত যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত সুনামের সাথে তার শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে আসছে মারধরের দু-একটি ঘটনাই তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য যথেষ্ট।

দ্বিতীয়ত দ্বীনী শিক্ষা-দীক্ষার প্রতি বিরূপ মানসিকতার সৃষ্টি হয়। অনেক দ্বীনদার মুসলিম পরিবারেও এ অভিযোগ শোনা যায় যে, বাচ্চারা মাদরাসায় যেতে চায় না শিক্ষকের মারধর ও কঠোরতার কারণে। তৃতীয়ত, বাইরে মাদরাসার শিক্ষকদের ব্যাপারে দুর্নাম রটে যায় যে, তারা সবাই ছাত্রদের প্রহার করে। দুয়েকজনের অজ্ঞতামূলক আচরণের কারণে গোটা শিক্ষক সমাজকে দুর্নাম বহন করতে হয়।

একদিকে জাগতিক শিক্ষার জন্য দুনিয়াবী লোকেরা শিক্ষা ব্যবস্থায় নানা পরিবর্তন নিয়ে শিশু-কিশোরদের সামনে উপস্থিত হচ্ছে এবং ইসলামের দেওয়া উন্নত চরিত্র ও মহৎ আচরণ, কোমল ও বিনম্র ভাষায় কথা বলে তাদেরকে জাগতিক শিক্ষার সুফল দেখাচ্ছে, অন্যদিকে দ্বীনী শিক্ষার সঙ্গে জড়িত দু-একজন ব্যক্তি ইসলামী দিক-নির্দেশনা ও শিক্ষার সুন্দর বৈশিষ্ট্য, উলামায়ে কেরামের মহৎ গুণাবলী পরিত্যাগ করে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষা অত্যন্ত নাজুক বিষয়। এ জন্য উপযুক্ত শিক্ষক-প্রশিক্ষণ কর্মশালা চালু করা এবং তাতে অংশ গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের জন্য এ বিষয়ের প্রাচীন ও আধুনিক কিছু বইপত্র অধ্যয়ন করাও জরুরী। ইনশাআল্লাহ এ বিষয়ে আগামীতেও কিছু লেখার ইচ্ছা আছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন। 

মূল লিংক : https://www.alkawsar.com/bn/article/588/


সর্ব প্রথম কলম সৃষ্টি করা হয়েছে এটা কি সঠিক

 কলম কি সর্বপ্রথম সৃষ্টি?

আল্লাহ পাক রব্বুল আ’লামীন সর্ব প্রথম কি সৃষ্টি করেছেন এটা আলোচনার মূল বিষয়ঃ

যেমন হযরত উবাদা ইবনে ছামিতرضي الله عنه থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে,

“নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা সর্বপ্রথম ‘কলম’ সৃষ্টি করেছেন।অতঃপর কলমকে বললেন,লিখ।কলম বললঃ হে প্রভূ! কি লিখবো? আল্লাহ বললেনঃ লিখ ইতিপূর্বে যা হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত যা কিছু হবে।“

রেফারেন্সঃ

★মুসনাদে আবু দাউদ তায়লাসীঃ হাদিসঃ ৫৭৮নং

★মুসনাদে ইবনে জা’দঃ হাদিস নংঃ ৩৪৪৪

★মুসনাদে আহমদঃ হাদিস নংঃ ২২৭০৭

★তিরমিযী শরীফঃ হাদিস নংঃ ২১৫৫।সনদ সহীহ।




এই হাদিসের প্রথম অংশটি দ্বারা বুঝা যায় প্রথম সৃষ্টি হচ্ছে ‘কলম’।কিন্তু শেষ অংশটি দ্বারা বুঝা যায় “কলম” প্রথম সৃষ্টি নয়। কারণ হাদিসটির শেষে” আল্লাহ তাআলা বললেন: লিখ ইতিপূর্বে যা হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত যা কিছু হবে।”

এই এবারত দ্বারা বুঝা যায়, কলম সৃষ্টির পূর্বেও অনেক কিছু ছিল।কারণ এখানে ( ‘মা কানা’ ) দ্বারা অতীতকালের ঘটনা বুঝায়।

এখানে ‘কলম’ প্রথম সৃষ্টি যা কলমের সম্মানার্থে বলা হয়েছে, মূলত প্রথম সৃষ্টি ‘কলম’ নয়।

আর আমাদের দেশের কিছু মানুষ আছে,যারা হাদিসের প্রথম অংশ দিয়ে মানুষকে বোঝায় ,দেখ প্রথম সৃষ্টি কলম।অথচ হাদিসের পরের অংশ পড়লেই বুঝা যায় প্রথম সৃষ্টি কলম নয়।

দরূদ শরীফ পড়লে কি ধরণের গুণাহ মাফ হয়

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: একজন গুনাগার পাপি ব্যাক্তি যার দোয়া মন্দ কাজের ফলে কবুল হয়না, এমন ব্যক্তি যদি নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর দরূদ পাঠ করে তবে কি সে দরূদ পাঠের নিশ্চত ফজিলত লাভ করবে?(যেমন তার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষন হওয়া,গুনাহ মিটে যাওয়া ইত্যাদি)


উত্তর : দেখুন মন্দ কাজ, গুনাহ এগুলোর কিছু স্তর আছে, যেমন: নামাজ রোজা হজ্জ ইত্যাদি আল্লাহর হক, আবার অন্য ক্ষেত্রে আছে বান্দার হক্ব। দরূদ যতই পড়ুক, দোয়া যতই করুক, অন্যের সম্পদ আত্মসাতের গুনাহ মাফ হবেনা, বা বান্দার হক্ব মাফ হবেনা। এছাড়া দৈনন্দিন ছগিরা গুনাহ দরুদ শরীফ পড়লে মাফ হবে। কিন্তু ফরজ নামাজ আদায় না করে বা কবীরা গুণাহ করলে, তা মফের জন্য তওবা শর্ত, শুধু দরূদ শরীফ দ্বারা তা মাফ হবেনা। সুতরাং, কবীরা গুনাহ এবং বান্দার হক্ব নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া ছোট খাটো ছগিরা গুণাহ, দরূদ শরীফ পড়লে মাফ হয়ে যাবে।

গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে তা কার্যকরী হবে কি ?

 অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে তালাক

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। এ ক্ষেত্রে ৯০ দিন এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার মধ্যে যেদিনটি পরে হবে সেদিন থেকে তালাক কার্যকর হবে৷
অর্থাৎ স্ত্রী গর্ভবতী হলে, সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। তবে মনে রাখতে হবে এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রী পূর্ণ ভরণপোষণ পেতে আইনত হকদার।  

সন্তানের দায়ভার 

তালাকের পর সন্তান মায়ের কাছে থাকবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে সন্তান ৭ বছর পর্যন্ত এবং মেয়ে সন্তান বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে৷ তবে তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব বাবা বহন করবে৷


এক সাথে তিন তালাক দিলে তা তিন তালাক হবে নাকি এক তালাক হিসেবে গণ্য হবে, এ নিয়ে মতভেদ আছে। বেশীর ভাগ আলেমের মতে এক সাথে তিন তালাক দিলে তা তিন তালাক হিসেবেই কার্যকর হবে, তবে, কোনো কোনো আলেমের মতে এক সাথে তিন তালাক দিলে তা এক তালাক হিসেবেই গন্য হবে, কেননা, এক তুহুরে একটির বেশী তালাক দেওয়া যায়না। 


===========================


প্রশ্ন

জনৈক পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে বলল: 'তোকে তালাক'। তখন স্ত্রী তাকে গালি দিল। গালি খেয়ে স্বামী তার পেটে লাথি মারল ও ধাক্কা দিল। এতে করে স্ত্রী সিঁড়ি থেকে পড়ে গেল এবং পাঁচ মাসের সন্তান প্রসব করে দিল। পরবর্তীতে স্বামী অনুতপ্ত হল এবং শশুর বাড়ীতে গিয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে চাইল। ঐ মহিলার বাবা আমার সাথে পরামর্শ করলে আমি তাকে বললাম: আমি আপনার জিজ্ঞাসার ব্যাপারে কোন একজন আলেমকে ফতোয়া জিজ্ঞেস করব। কেননা হতে পারে গর্ভস্থিত সন্তান প্রসব হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে হুকুম কি হবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ।

আলেমগণের ইজমা (সর্বসম্মত অভিমত) হচ্ছে- গর্ভবতী তালাকপ্রাপ্তা নারীর ইদ্দত হচ্ছে­- সন্তান প্রসব। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলছেন: "আর গর্ভবতীদের ইদ্দত হল তাদের সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।"[সূরা তালাক, আয়াত: ৪]

আলেমগণ এ মর্মেও ইজমা করেছেন যে, যদি কোন নারী এমন কিছু প্রসব করে যার আকৃতি মানুষের আকৃতি বুঝা যায় এর দ্বারাও সে নারীর ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে।[আল-মুগনি (১১/২২৯)] গর্ভস্থিত ভ্রূণের আকৃতি গঠন শুরু হয় ৮০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভ্রূণের বয়স ৯০ দিন পূর্ণ হলে।

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে যে নারী তার পাঁচ মাসের ভ্রূণ প্রসব করেছেন সকল আলেমের মতানুযায়ী তার ইদ্দত শেষ। সুতরাং ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার স্বামী তাকে আর ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখেন না।

কিন্তু, স্বামী যদি চান তাহলে নতুন একটি আকদ (বিয়ের চুক্তি) করতে পারেন। সেক্ষেত্রে মহিলার সম্মতি, অভিভাবকের উপস্থিতি, দুইজন সাক্ষী ও মোহরানা নির্ধারণ করতে হবে।

আর অপরিপক্ক ভ্রূণ নষ্ট করার কারণ হওয়ার প্রেক্ষিতে এই পুরুষের উপর দুইটি বিষয় আবশ্যক হবে:

এক: ভুলক্রমে হত্যার কাফ্‌ফারা আবশ্যক। আর তা হল- একজন মুমিন দাস আযাদ করা। যদি দাস না পাওয়া যায় তাহলে লাগাতর দুইমাস রোযা রাখা। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: "কেউ যদি কোন ঈমানদার লোককে ভুলক্রমে হত্যা করে তাহলে তাকে একজন ঈমানদার দাস মুক্ত করতে হবে এবং নিহতের পরিবারকে রক্তমূল্য পরিশোধ করতে হবে, তবে তারা মাফ করে দিলে ভিন্ন কথা"। এরপর তিনি বলেন: "যে তা পাবে না তাকে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পাপমুক্তি কামনায় অবিরাম দুই মাস রোযা রাখতে হবে। আল্লাহ্‌ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।"[সূরা নিসা, আয়াত: ৯২]

দুই: ভ্রূণের রক্তমূল্য (মায়ের রক্তমূল্যের ১০ ভাগের একভাগ। মুসলিম নারীর রক্তমূল্য হচ্ছে ৫০টি উট। বর্তমানে সৌদি রিয়ালে এর মূল ধরা হয় ৬০ হাজার রিয়াল) পরিশোধ করতে হবে। তাই পিতার উপর আবশ্যক হল ৬ হাজার রিয়াল কিংবা এর সমপরিমাণ অন্য মুদ্রা এই ভ্রূণের ওয়ারিসগণকে পরিশোধ করা। ওয়ারিশগণের মাঝে এই অর্থ এমনভাবে বণ্টন করা হবে যেন এই ভ্রূণ তাদেরকে রেখে মারা গেছে। পিতা এই অর্থ থেকে কোন কিছু পাবে না। কেননা কোন হত্যাকারী নিহতের সম্পত্তির ওয়ারিশ হয় না। ইবনে কুদামা বলেন: "যদি ভ্রূণ হত্যাকারী অপরাধীটি পিতা হয় কিংবা ভ্রূণের ওয়ারিশদের মধ্য থেকে অন্য কেউ হয় তাহলে হত্যাকারীর উপর গুর্‌রাহ (একটি দাস কিংবা দাসী আযাদ করা। যার মূল্য হচ্ছে- পাঁচটি উট। ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৬ হাজার সৌদি রিয়াল) আবশ্যক হবে। সে ব্যক্তি এই ভ্রূণ থেকে কোন কিছু উত্তরাধিকার হিসেবে পাবে না। এবং একটি গোলাম আযাদ করবে। এটি যুহরি, শাফেয়ি ও অন্যান্য আলেমগণের অভিমত। সমাপ্ত।[আল-মুগনি (১২/৮১)]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ। আমাদের নবী মুহাম্মদ-এর উপর আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।

ইমাম মুসল্লি থেকে উঁচু স্থানে দাঁড়ালে নামায হবে কি?

 


প্রশ্ন

মুফতী সাহেরেব কাছে আমার জানার বিষয় হল, যদি ইমাম যেখানে দাঁড়িয়েছে সেটি মুক্তাদীদের কাতার থেকে দুই হাত উঁচু হয়, তাহলে এভাবে জামাত করে নামায পড়া যাবে কি?

আমাদের এলাকায় মাহফিলের সময় এমনটি করা হয়ে থাকে। ইমাম সাহেব স্টেজের উপর দাঁড়ান, আর মুক্তাদীগণ নিচে দাঁড়ায়। স্টেজ কয়েক হাত উঁচু হয়ে থাকে।

এভাবে নামায আদায় করা কতটুকু সহীহ?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

মুক্তাদী থেকে এক হাত উঁচুতে দাড়াতে পারে। এর চেয়ে বেশি উঁচুতে দাঁড়ালে উক্ত নামায মাকরূহে তাহরীমী হবে।

সুতরাং এক হাতের চেয়ে উঁচু স্টেজে ইমাম আর মুক্তাদী সব নিচে দাড়িয়ে নামায পড়লে তা মাকরূহ হবে।

তবে এক্ষেত্রে যদি উপরে ইমামের সাথে কিছু মুসল্লি থাকে, তাহলে নামায মাকরূহ ছাড়াই শুদ্ধ হবে।

عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِيِّ، حَدَّثَنِي رَجُلٌ، أَنَّهُ كَانَ مَعَ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ بِالْمَدَائِنِ فَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَتَقَدَّمَ عَمَّارٌ وَقَامَ عَلَى دُكَّانٍ يُصَلِّي وَالنَّاسُ أَسْفَلَ مِنْهُ، فَتَقَدَّمَ حُذَيْفَةُ فَأَخَذَ عَلَى يَدَيْهِ فَاتَّبَعَهُ عَمَّارٌ، حَتَّى أَنْزَلَهُ حُذَيْفَةُ فَلَمَّا فَرَغَ عَمَّارٌ مِنْ صَلَاتِهِ قَالَ لَهُ حُذَيْفَةُ: أَلَمْ تَسْمَعْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا أَمَّ الرَّجُلُ الْقَوْمَ فَلَا يَقُمْ فِي مَكَانٍ أَرْفَعَ مِنْ مَقَامِهِمْ» أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ؟، قَالَ عَمَّارٌ: «لِذَلِكَ اتَّبَعْتُكَ حِينَ أَخَذْتَ عَلَى يَدَيَّ

আদী ইবনু ছাবেত (রাঃ) জনৈক ব্যক্তির সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, একদা আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ) -র সাথে মাদায়েনে ছিলেন। নামাযের জন্য ইকামত দেয়া হলে আম্মার (রাঃ) একটি দোকানের উপর (উঁচু স্থানে) দাঁড়িয়ে নামাযে ইমামতি করতে যান, মুকতাদীরা নিচু স্থানে দন্ডায়মান ছিলেন।  হুযায়ফা (রাঃ) অগ্রসর হয়ে আম্মার (রাঃ)-র হাত ধরে তাকে নীচে নামিয়ে আনেন। আম্মার (রাঃ) নামায শেষ করলে হুযায়ফা (রাঃ) তাকে বলেন, আপনি কি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেননিঃ যখন কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের ইমামতি করবে, সে যেন সমাগত মুসল্লী হতে কোন উঁচু স্থানে দন্ডায়মান না হয়? তখন আম্মার (রাঃ) বলেন, ঐ সময় হাদীছটি আমার স্মরণে আসায় আমি আপনার হস্ত ধারণের অনুসরণ করে নীচে নেমে আসি। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫৯৮]

وقدر الارتفاع بذراع ولابأس بما دونه، وقيل ما يقع به الإمتياز وهو الأوجه (الدر المختار مع رد المحتار-2/415)

وقيل بمقدار الذراع اعتبارا بالسترة وعليه الاعتماد، كذا فى التبيين وفى غاية البيان هو الصحيح كذا فى البحر الرائق (الفتاوى الهندية-1/108، جديد-1/168)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...