বালিশে বা তোষকে নাপাক লাগলে বা নাপাক সুষে নিলে পাক করার পদ্ধতি ।

 যদি তোষকে বীর্য লেগে যায় তাহলে ইসলামের বিধান হল, যদি তা শুধু উপরের আবরণে লেগে থাকে এবং ভিতরে প্রবেশ না করে, তাহলে তা ঘষে তুলে ফেললে বা অন্য কোনভাবে দূর করে দেয়া দ্বারা পাক হয়ে যাবে। অথবা তিন বার তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত করে দেয়ার দ্বারাও পাক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি তোশক নাপাকি ভেতরে খুব ভালোভাবে চুষে নেয়, তা হলে তা তিন বার ধৌত করতে হবে। এবং প্রতিবার ধৌত করার পর শুকাতে হবে। শুকানোর অর্থ হচ্ছে তার উপর হাত রাখলে যেন ভিজে না যায়। বা তার ওপর কিছু রাখলে তা ভিজবে না।

(শামি ১/৩৩২)
,
(তোষকের ভিতরে নাপাক গিয়েছে কিনা বুঝার জন্য কোনো উপায় না থাকলে গন্ধ শুকতে পারেন।)
,
যদি লেপ তোষকে পেশাব লাগে আর তা নিংড়ানো না যায় তবে তিনবার ভালোকরে পানি প্রবাহিত করে ধৌত করতে হবে। আর প্রত্যেকবার পানি প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দিবে যাতে সমস্ত পানি ঝরে যায়। এভাবে মোট তিনবার পানি প্রবাহের দ্বারা ধৌত করলে তা পাক হয়ে হবে।
হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

সংক্ষেপে সুদবিহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: কিভাবে ব্যাংক পরিচালনা করলে সুদবিহীন ব্যাংকিং হবে।


উত্তর: সবচেয়ে সহজ দুটি পদ্ধতি হলো : ১) গ্রাহক ব্যাংকে যে আমানত রাখবে, আপনি ব্যাংকের মালিক হিসেবে গ্রাহকের সেই টাকা দিয়ে হালাল ব্যবসা করবেন। গ্রাহক ও আপনার মধ্যে চুক্তি থাকবে, ব্যবসার লাভ বা লোকসানে গ্রাহক ও আপনি অংশীদার । যেমন: গ্রাহক ৬৫% এবং আপনি ৩৫% । লাভ হলে গ্রাহক ৬৫% পাবে, আবার লস হলেও গ্রাহকের আমানত থেকে ৬৫% কর্তন হবে। এইটা হালাল অংশীদারী ব্যবসা এবং এর মধ্যে বরকত রয়েছে।


২) আপনি যখন কাউকে লোন দিবেন, তখন সরাসরি তাকে টাকা দিবেন না, নিজে মাল কিনে দিবেন, শর্ত হলো এইটা কাগজে কলমে নয়, বরং, মাল আপনার হস্তগত হতে হবে, হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হবে, এবং এই মাল গ্রাহকের নিকট পৌছে দেবেন, তাকেও মাল হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হবে। এখন আপনি মাল ক্রয় করেছেন এক লক্ষ টাকা দিয়ে। গ্রাহকের নিকট কিস্তিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিক্রি করলেন এক লক্ষ দশ হাজার টাকায়। গ্রাহক এগারো মাসে প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা করে এই এক লক্ষ দশ হাজার টাকা পরিশোধ করবে। এইটাও সম্পূর্ণ হালাল । মূলত: এই দুটি পদ্ধতিই ইসলামের সাথে পরিপূর্ণ সামঞ্জস্যশীল।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অসদাচারণ - স্বামীর করণীয় ।

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে তুই তুকারি করে, আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, আমার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে, কিন্তু নামাজ ও পড়ে, পর্দাও করে। এমতাবস্থায় আমি স্ত্রী কে তালাক দিতে পারবো কি না।দয়া করে জানাবেন।


উত্তর : তালাক দিতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাসুল সা: বলেছেন, তালাক হচ্ছে নিকৃষ্টতম হালাল। আর স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসা যেইটিকে আধুনিক ভাষায় কেমিষ্ট্রি বলা হয় এইটা একটা জটিল বিষয়। বাইরের কোনো উত্তর দাতা স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সমাধান দিতে অক্ষম। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আপনি আপনার স্ত্রীকে কতটুকু ভালোবাসেন, আপনার স্ত্রী আপনাকে কতটুকু ভালোবাসে। তাকে ছাড়া আপনি চলতে পারবেন কিনা ? তার বিছানা আলাদা করে দিন। দেখুন আলাদা বিছানায় আপনার ঘুম আসে কিনা ? বা কয়দিন ঘুম আসে। আপনি তার বিছানা আলাদা করার পর, সে সংশোধিত হয় কিনা ? সে আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে, ঠিক এই কারণে তাকে তালাক দিতে চাচ্ছেন, নাকি অন্য কোনো কারণও আছে ? সে-ই কি আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে, নাকি আপনিও করেন ? আপনার সাথে তার খারাপ আচরণ করার জন্য আপনি নিজেও কি দায়ি কিনা বা আপনার পরিবার সন্তান বা অন্য কোনো কারণে তার মধ্যে বিরক্তিভাব সৃষ্টি হওয়ার কারণে সেই প্রভাব আপনার প্রতি তার আচরণে প্রকাশ পায় কিনা? সেই বিষয়গুলো বা আপনার নিজেকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছেন কিনা? দোষ কি তার একার ? নাকি আপনারও দোষ আছে ? সে যেহেতু নামাজ পড়ে এবং পর্দা করে, এইটা একটা বিরাট গুণ, এমন স্ত্রীও আছে যারা নামাজ না পড়ার কারণে এবং পর্দা না করার কারণে স্বামীকে জাহান্নামে নিয়ে ছাড়বে, আপনার স্ত্রী কি সেরকম ? এই বিষয়গুলো এবং এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আপনাকে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। স্বামীর সাথে সদাচারণের হাদীসগুলো তাকে শুনাবেন। তার সাথে সুন্দর আচরণ করুন। গৃহস্থালী কাজ একঘেয়েমি এবং বিরক্তিকর, এছাড়া মাহিলাদের মাসিক একটা অসুস্থতার সৃস্টি হয়, মনোবিজ্ঞানীদের মতে এই সময়ে মহিলাদের আচরণে কিছুটা অসংলগ্নতা ও বিরক্তিভাব প্রকাশ পেতে পারে। অতএব, তালাকই এসব বিষয়ের একমাত্র সমাধান নয়। বরং, এসব বিষয়ে হুট করে তালাকের কথা ভাবা একজন পুরুষের আত্মমর্যাদাহীনতার পরিচায়ক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো এইটা পুরুষত্বের অপমান এবং নিকৃষ্টতর হীনমন্যতা। ইসলামে তালাকের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এটা তো অনেক পরের ব্যাপার। এর পূর্বে স্ত্রীর বিছানা আলাদা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাকে বিভিন্ন মনীষীদের উপমা এবং কুরআন হাদীস থেকে বুঝানোর কথা বলা হয়েছে। পরিস্কার বলে দেওয়া হয়েছে : যদি তোমার স্ত্রীর কোনো বিষয় তোমার পছন্দ না হয়, তাহলে তার আরো অন্যান্য অনেক বিষয় আছে, যা তোমার পছন্দনীয়। অতএব, সেই দিক গুলো লক্ষ্য করে তার সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করো। ইসলামের এই উপদেশ গুলো তো আপনাকে মানতে হবে ।

সামাজিক ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না কেন ?

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: আমাদের সমাজে মানুষ মারা যাওয়ার পর গরু, ছাগল জবেহ করে খাওয়ানো হয়। অথচ এগুলো কুরআনে এবং হাদিসে নেই এমনকি রাসূল ( সা:) জীবনে এগুলো ছিল না, তাহলে আমাদের সমাজে এগুলো কেনো পালন করা হয় এবং সমাজের আলেমরা কেনো সাধারণ মানুষকে নিষেধ করেন না?

.
উত্তর : আসলে প্রধান তিনটি কারণে সমাজে ইসলামী পরিবর্তন মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
১)
প্রথমত মাদ্রাসা গুলো সাধারণ মানুষের দানের টাকায় চলে । তাই হয়তো আলেমগণ ইসলামী বিধি বিধান সমাজে এ্যাপ্লাই করার ব্যাপারে সাহাবাদের ন্যায় বা রাসুল সা: এর ন্যায় আপোষহীন হতে পারেন না বা কুফুরী পরিত্যাগ করার আহ্বানের ব্যাপারে কঠোর হতে পারেন না।
.
২)
দ্বিতীয়ত মসজিদের ইমামতি এবং খুতবা প্রদান এই প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিনিস চাকুরীর অন্তর্ভুক্ত। কমিটি অথবা মুসল্লীদের মতের বিরুদ্ধে ইমাম সাহেব কোনো কথা বললেই চাকুরী নট। সুতরাং, সমাজে ইসলামী জাগরণ এবং ইসলামী প্রাকটিস আসবে কিভাবে ? আমার মনে হয়, আলেম সমাজ যদি অন্যান্য ব্যবসা বা অন্য কোনো মাধ্যমে স্বাবলম্বী হন, তাহলে তারা সঠিক কথা বলার ব্যাপারে পরওয়া কম করবেন, এবং তাহলেই সমাজে কাংখিত ইসলামী পরিবর্তন আসা সম্ভব।
.
৩)
তৃতীয়ত যারা ওয়াজের ময়দানে আছেন, তাদেরকেও ওয়াজ কমিটির দেওয়া টাকার প্রতি নির্ভর করতে হয় (বা মোহতাজ থাকেন), ফলে কমিটির বেধে দেওয়া টপিক্স এবং বেধে দেওয়া ক্রাইটেরিয়ার মধ্যেই ওয়াজ সীমাবদ্ধ রাখতে হয়। মোট কথা ওয়াজ কমিটির খেয়াল খুশি অনুযায়ী ওয়াজ করতে হয়, বা কমিটিকে খুশি রাখতে হয়, ফলে ওয়াজের ময়দানে আসল সত্য চাপা পড়ে যায়। যদি আসল সত্য বলেন, হয়তো পরবর্তী বছরে আর দাওয়াত পাবেন না, অথবা, ওয়াজ চলাকালীনই ওয়াজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। অথবা কমিটি রাজী থাকলেও বক্তাকে জেলে যেতে হবে।

এই তিনটি দুষ্টচক্রের কারণে সমাজে ইসলামী কাংখিত পরিবর্তন আসছে না। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা, তা হলো রাষ্ট্র যেই জিনিসকে প্রমোট করেনা, সেই জিনিস নিয়ে আপনার দাড়িয়ে থাকা বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা মুশকিল। তাই সবার আগে রাষ্ট্রীয় ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া মূলত কোনো উপায় নাই। মক্কা বনাম মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রথম গোড়া পত্তনের ঘটনা থেকেই বিষয়টি পরিস্কার বুঝা যায়।

বর্তমানে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংক ও সুদ ।

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: আমি একজন ব্যাংকার,ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করি,এখানে যে কাজ গুলো হয়,তা আমার কাছে সুদের মতই মনে হয়,তাহলে কি আমার ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করা ঠিক হবে।


উত্তর :

প্রথমত বিষয় হচ্ছে, মনে হওয়া এক জিনিস আর সত্যিকার অর্থেই কুরআন হাদীস অনুযায়ী কিনা তা আরেক জিনিস। কুরআন হাদীস এবং স্কলারদের সুদ ও ব্যাংকিং এর উপর লিখিত বই পুস্তক পড়বেন। যদি দেখেন, কুরআন হাদীস অনুযায়ী সুদ, তাহলে তো চাকুরী ছেড়ে দিতে হবে।


আর দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দেশীয় অর্থনীতি যদি সুদ ভিত্তিক হয়, তাহলে আসলে ১০০% সুদবিহীন ব্যাংক পরিচালনা করা মোটেও সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের সাথে সরাসরি সুদে জড়িত না হয়ে, যদি গ্রাহকদেরকে সুদ থেকে বাচিয়ে রাখার স্কীম গ্রহণ করা হয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের সাথে সুদী লেনদেন থেকে আগত সুদগুলো ব্যাংক যদি অন্য কোনো জনকল্যাণমুলক কাজে ব্যয় করে, মন্দের ভালো হিসেবে এবং সুদবিহীন ব্যাংকিং গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এইটি একটি পদক্ষেপ হতে পারে মাত্র। এটা সাময়িক। এ অবস্থায় সেখানে চাকুরী করা আপনার জন্য জায়েজ। বিষয়টি এমন, যেমন হযরত ইউসুফ আ: একটি অনৈসলামি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তার ব্যাক্তিগত সমস্যায় তার ভাই এর থলেতে পেয়ালা পাওয়ার অজুহাতে তার ভাইকে নিজের কাছে রেখে দিলেন। কারণ, তার নিজের শরীয়তে চুরি করার শাস্তি ছিল গোলাম বানিয়ে রাখা। অতএব, একটি ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়া পত্তনের সময় এমন অনেক বিষয় এর সাথে আপোষ করতে হয়, একদিনেই হুট করে একটি সমগ্র অর্থনীতি পরিবর্তন করে দেওয়া যায় না। যেমন, মদ হারাম হয়েছিল, অনেক পরে। এ বিষয় গুলো নিয়ে কিছু চিন্তা ভাবনা করা দরকার।

সকল নবীর উপরই কি নামাজ ফরজ ছিল ?

 নামায এমন একটি ইবাদত,যা “সকল” নবী-রাসূলগণ এবং তাঁদের উম্মাত পালন করতেন।

 যেমন কুরআনের সূরা মারইয়ামের ৫৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইসমাঈল আলাইহিস সালামের কথা উল্লেখ করেছেন এভাবে,

• “তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে নামায ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে পছন্দনীয় ছিলেন।”

তাছাড়া কুরআনের অন্যান্য অনেক আয়াত থেকেই প্রমাণিত হয় যে, পূর্ববর্তী নবীগণের উপরও নামাজ ফরজ ছিল। 

এখন প্রশ্ন হতে পারে, তাদের নামাজ কেমন ছিল ? 

এর উত্তর হচ্ছে, প্রথমত আমাদেরকে দ্বীন ও শরীয়ত - এ দুটি বিষয়ের পার্থক্য বুঝতে হবে। দ্বীন হচ্ছে মূলনীতি। প্রত্যেক নবীর দ্বীন একই ছিল। আর এই দ্বীনের সাথে নামাজ বিষয়টি জড়িত। কিন্তু, দ্বীন পালনের রীতিনীতি হচ্ছে শরীয়ত। এই শরীয়তের দিক থেকে নবীদের শরীয়ত ভিন্ন ছিল। তাই নামাজ পালনের শরীয়তী রীতি নীতি পূর্ববর্তী নবীদের ক্ষেত্রে কেমন ছিল তা আমাদের জানাটা যেমন জরুরী নয়, তেমনি  কোনো হাদীসে তা পরিস্কার ভাবে বলাও হয়নি। 
বরং, মুহাম্মদ সা: এর শরীয়তে নামাজ কেমন, কিভাবে পড়তে হবে, তা বিস্তারিত আমাদেরকে জানানো হয়েছে। 

যাকাত সংক্রান্ত কয়েকটি প্রশ্ন ।

ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার নিসাবের চেয়ে কম হলে এর সাথে টাকা পয়সা থাকলে যাকাত আসবে কি?

প্রশ্ন

From: মুহা. হাফিজুর রহমান
বিষয়ঃ নেসাবের কম স্বর্ণালংকারের যাকাত প্রসঙ্গে

আসসালামু আলাইকুম। নিম্নে বর্ণিত সূরতে মাসআলার সমাধান চাচ্ছি।
#কোন নারীর কাছে ৩/৪/৫/৬ ভরি (অর্থাৎ নেসাবের চেয়ে কম) স্বর্ণালংকার আছে। অন্য কোন ধন-সম্পদ বা টাকা পয়সা নেই। এমতাবস্থায় তার উপর যাকাত ফরজ হবে কি? উল্লেখ্য, নারীদের কাছে সাধারণত খুচরা কিছু টাকা পয়সা থাকে। এগুলোর সাথে স্বর্ণালংকার মিলালে রুপার নেসাব পূরণ হয়ে যায়।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত স্বর্ণের সাথে আর কোন টাকা পয়সা বা রৌপ্য না থাকলে যাকাত আসবে না।

কিন্তু সাধারণতঃ এমন হয় না। কিছু টাকা পয়সা থাকেই। তাই উপরোক্ত অবস্থায় উক্ত স্বর্ণের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলার রৌপ্যের মূল্য পরিমাণ হয়, তাহলে এর উপরও যাকাত আসবে।

যাকাতকে বোঝা মনে না করি। এর মাধ্যমে সম্পদ কমে না। বাহ্যিকভাবে কমে যায়, মনে হলেও আসলে কমে না। আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দান করেন।

তাই শরয়ী বিধান পালন করায় কৃপণতা করা উচিত হবে না।

উপযুক্ত যাকাত আদায় করে দিতে হবে।

فى الدر المختاروَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا دُونَ الْآخَرِ تَعَيَّنَ مَا يَبْلُغُ بِهِ، وَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا وَخُمُسًا وَبِالْآخَرِ أَقَلَّ قَوَّمَهُ بِالْأَنْفَعِ لِلْفَقِيرِ (رد المحتار، كتاب الزكاة، باب زكاة المال-3/229، وكذا فى الهداية-1/196، وكذا فى الهندية-1/179، وكذا فى التاتارخانية-2/237، وكذا فى المبسوط للسرخسى-2/191


عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن امرأة أتت رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعها ابنة لها وفي يد ابنتها مسكتان غليظتان من ذهب فقال لها ” أتعطين زكاة هذا ؟ ” قالت لا قال ” أيسرك أن يسورك الله بهما يوم القيامة سوارين من نار ؟ ” قال فخلعتهما فألقتهما إلى النبي صلى الله عليه و سلم وقالت هما لله عزوجل ولرسوله

অনুবাদ- আমর বিন শুয়াইব থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিন [দাদা] বলেনঃ এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূল সাঃ এর খিদমতে উপস্থিত হন। তার কন্যার হাতে মোটা দুই গাছি স্বর্ণের চুড়ি [কাঁকন] ছিল। তিনি [রাসূল সাঃ] তাকে বললেনঃ তোমরা কি এটার যাকাত আদায় কর? মহিলা বলেনঃ না। রাসূল সাঃ বলেনঃ তুমি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের কাঁকন পরিধান করান? রাবী বলেনঃ একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী করীম সাঃ এর সামনে রেখে দিয়ে বললঃ এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৭৭৯৯, সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-২২৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২০০৫}

عن عبد الله بن شداد بن الهاد أنه قال دخلنا على عائشة زوج النبي صلى الله عليه و سلم فقالت ” دخل علي رسول الله صلى الله عليه و سلم فرأى في يدي فتخات ( خواتيم كبار ) من ورق فقال ” ما هذا يا عائشة ” ؟ فقلت صنعتهن أتزين لك يارسول الله قال ” أتؤدين زكاتهن ؟ ” قلت لا أو ماشاء الله قال ” هو حسبك من النار “

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, আমরা রাসূল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়শা রাঃ এর খেদমতে উপস্থিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার তাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়শা! এটা কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উদ্দেশ্যে রূপচর্চা করার জন্য তা বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি এর যাকাত পরিশোদ করে থাক? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহ পাকে যা ইচ্ছে ছিল। রাসূল সাঃ বললেনঃ তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৫, সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১২৩৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৭৩৩৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৯৭৪, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১৪৩৭}

والله اعلم بالصواب

//////////////////////////======================/////////


বাড়া বাসার এডভান্সের যাকাত কার উপর আবশ্যক?

প্রশ্ন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহ

জনাব,

মাননীয় মুফতী সাহেবান (দা. বা.)

বিষয়. যাকাত।

জনাব,

যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমার চাচার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, যা একটি ভাড়াকৃত (দোকান) ঘরে অবস্থিত। যে ঘরটি ভাড়া নেয়ার সময় ঘরের মালিক চাচার কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমান (৪/৫ লাখ) টাকা অগ্রীম হিসেবে গ্রহন করে, এবং চুক্তি এরূপ হয় যে, মেয়াদ (৩/৪/৫ বছর) শেষ হওয়ার পর ভাড়াটিয়া (আমার চাচা) অগ্রীমের পূর্ন টাকা ফেরত পাবেন। এই সময় টাকাটা জামানতের মত থাকবে। আর মাসিক ভাড়া নিয়ম মত প্রতি মাসে পরিশোধ করবেন। এমতাবস্থায় উক্ত অগ্রীমের টাকার মুল মালিক যদিও আমার চাচা, কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তা ব্যবহারের কোন সুযোগই চাচার নেই। বরং ঘরের মালিক তার নিজ প্রয়োজনে বা ব্যবসায় ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন। (অগ্রীম গ্রহন করার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য সাধারনতঃ এটাই হয়ে থাকে, উক্ত টাকা থেকে লাভবান হওয়া।)

অতএব,

আপনাদের নিকট বিনীত প্রশ্ন হলো, উক্ত মেয়াদের সময়ে অগ্রীমের টাকার যাকাত কে আদায় করবে ? আমার চাচা নাকি ঘরের মালিক ?

দলীল চতুষ্টয়ের আলোকে বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে উত্তর প্রদান করে দ্বীনের উপর সঠিক আমল করার সুযোগ দানে আপনাদের সুমর্জি ও দোয়া কামনা করছি।

নিবেদক

মহানগর  প্রজেক্ট, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

এ মাসআলাটি আসলে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য বিষয়। প্রথমত পরিস্কার হতে হবে ভাড়াদাতা উক্ত টাকাটি কী হিসেবে নিচ্ছেন? আর তিনি কী হিসেবে উক্ত টাকা খরচ করছেন? উক্ত টাকাটি খরচ করা তার জন্য জায়েজ কি না?

যদি ধরা হয় যে, উক্ত টাকাটি ভাড়াদাতা জামানাত হিসেবে নিচ্ছেন। তাহলে উক্ত টাকাটি ভাড়াদাতার কাছে আমানত। আর আমানতের বস্তুতে হস্তক্ষেপ করা তথা ব্যয় করা জায়েজ নয়। সে হিসেবে উক্ত টাকার মালিক মূলত ভাড়াটিয়া থেকে যান। তাই প্রতি বছর উক্ত টাকার উপর যাকাত ভাড়াটিয়ারই দিতে হবে।

যেহেতু উক্ত টাকা ভাড়াদাতা নিয়ে খরচ করে ফেলেন। তাই এটি আমানত হতে পারে না। তাছাড়া আমানতের বস্তু আমানতদারের বিনা ইচ্ছেয় ধ্বংস হয়ে গেলে এর জরিমানা দিতে হয় না। অথচ বিষয়টি এখানে এমন নয়। কারণ কোন কারণে উক্ত টাকা ভাড়াদাতার কাছ থেকে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেলেও ভাড়াদাতাকে উক্ত টাকা পরিশোধ করে দিতে ভাড়াদাতা বাধ্য। তাই এটি আমানতের হুকুমে হতে পারে না।

যদি রেহেন তথা বন্ধকি সম্পদ বলা হয়, তবুও একই হুকুম দাঁড়াচ্ছে। কারণ বন্ধককৃত বস্তুও বন্ধক গ্রহিতার কাছে আমানতই থাকে। অথচ এখানে আমানতের হুকুম প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। যেহেতু উক্ত টাকাটি বন্ধক গ্রহিতা নিজস্ব প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে।

আর যদি ঋণ ধরা হয়। তাহলেও চুক্তিটি বৈধ হচ্ছে না। কারণ ঋণের বিনিময়ে কারো থেকে উপকার অর্জন করাও সুদ। তাই ঋণ ধরেও এ চুক্তিটিকে জায়েজের আওতায় আনা সম্ভব নয়।

তবে এক্ষেত্রে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করলে উক্ত চুক্তিটি জায়েজের আওতাভুক্ত হয়। সেটি হল, দীর্ঘ মেয়াদী ভাড়া চুক্তি সম্পাদন। অর্থাৎ ভাড়া চুক্তি সম্পাদনের সময় প্রতি মাসের নির্দিষ্ট ভাড়ার কথা উল্লেখ করা হবে। তারপর সামনে আগত মাসের ভাড়া অগ্রীম পরিশোধ করার নামে উক্ত অতিরিক্ত টাকা প্রদান করা হবে। প্রতি মাসে ভাড়াটিয়া নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করতে থাকবে। আর যে মাসে উক্ত স্থান থেকে ভাড়াটিয়া চলে যাবে তার কয়েক মাস আগে থেকে ভাড়াদাতার কাছে জমাকৃত উক্ত টাকা থেকে ভাড়া পরিশোধ করে নেয়া হবে। আর যদি কোন অর্থ তারপরও বেঁচে যায়, তাহলে মালিক তা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।

যদি এ সুরত অবলম্বন করা হয়, তাহলে উক্ত চুক্তিটি এবং অতিরিক্ত টাকা প্রদানটি একটি জায়েজ চুক্তি হবে। তাই উক্ত অতিরিক্ত টাকাটির মালিক হয়ে যাবে বাড়ির মালিক। এতে মৌলিকভাবে ভাড়াটিয়ার কোন মালিকানা বাকি থাকবে না। যেহেতু ভাড়াটিয়া উক্ত টাকার মালিক থাকছে না, তাই তার উপর উক্ত টাকার যাকাত আবশ্যক হওয়ার প্রশ্নই আসে না। পক্ষান্তরে যেহেতু বাড়ির মালিক উক্ত টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, তাই উক্ত টাকা খরচ করা তার জন্য জায়েজ হবে। সেই সাথে উক্ত টাকার যাকাতও তার উপর আবশ্যক হবে। {জাদীদ ফিক্বহী মাসায়েল-১/১৪৭-১৪৮, মালে হারাম আওর উসকে মাসারেফ ওয়া আহকাম-৮৫}

وكان من كبار علماء سمرقند إنه لا يحل له أن ينتفع بشيء منه بوجه من الوجوه وإن أذن له الراهن ، لأنه أذن له في الربا لأنه يستوفي دينه كاملا فتبقى له المنفعة فضلا ، فتكون ربا وهذا أمر عظيم (رد المحتار، كتاب الرهن-10/82، طحطاوى على الدر، كتاب الرهن—4/236، مجمع الأنهر، كتاب الرهن-4/273

كل قرض جر نفعا فهو حرام، قال الشامى – اى اذا كان مشروطا (رد المحتار- كتاب البيوع، باب المرابحة، فصل فى القرض-7/295)

وَأَمَّا زَكَاةُ الْأُجْرَةِ الْمُعَجَّلَةِ عَنْ سِنِينَ فِي الْإِجَارَةِ الطَّوِيلَةِ الَّتِي يَفْعَلُهَا بَعْضُ النَّاسِ عُقُودًا وَيَشْتَرِطُونَ الْخِيَارَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي رَأْسِ كُلِّ شَهْرٍ فَتَجِبُ عَلَى الْآجِرِ لِأَنَّهُ مَلَكَهَا بِالْقَبْضِ وَعِنْدَ الِانْفِسَاخِ لَا يَجِبُ عَلَيْهِ رَدُّ عَيْنِ الْمَقْبُوضِ بَلْ قَدْرُهُ فَكَانَ كَدَيْنٍ لَحِقَهُ بَعْدَ الْحَوْلِ (فتح القدير- كتاب الزكاة، 2/174

والله اعلم بالصواب



////////////////////////////====================///////////////////


কোন সম্পদে যাকাত আবশ্যক? আসবাব-গাড়ি ও জমির উপর যাকাত আবশ্যক হয়?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

যার ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ নেই তাকে যাকাত ফেতরা দেয়া যায়। কিন্তু ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত ‘ টা কী?

০১.এক জনের কম দামি বা অতি দামি আসবাব পত্র আছে। এর কোনটা প্রতিদিন ব্যবহার করছে, কোনটা কেবল মেহমান আসলে আবার কোনটা ঘরে সৌন্দর্যের জন্যই কেবল। এদের কোনটা প্রয়োজনের অতিরিক্ত?

০২. জমির মালিকের কী পরিমাণ জমিকে প্রয়োজনীয় ধরা হবে?

০৩. একজনের একটি দামি গাড়ি আছে। এটা ভাড়া দিয়ে সে পরিবার চালায়। সেটা তার কাছে তো প্রয়োজনীয়।

উত্তর

وعيلكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার তিনটি প্রশ্নের উত্তর বুঝতে হলে আপনার প্রথমে জানতে হবে যে, যাকাত কোন সম্পদে আবশ্যক হয়?

যাকাত আবশ্যক হয়, মোট ৪টি বস্তুর উপরে। যথা-

১-স্বর্ণ।

২-রৌপ্য।

৩-ব্যবসায়ীক পণ্য।

৪-নগদ অর্থ।

এছাড়া বাকি সম্পদ যতই হোক না কেন, এর উপর যাকাত আসে না।

সুতরাং ঘরের আসবাবপত্র যত দামীই হোক না কেন এসবের উপর যাকাত আবশ্যক হবে না।

আর যে জমির ফসল দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে, বা এর ফসল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে বা এমনিতেই পড়ে আছে, এমন জমির উপরও যাকাত আবশ্যক হয় না।

এছাড়া ভাড়ায় দেয়া দামী গাড়ির উপরও যাকাত আবশ্যক হয় না। কারণ, এটি ব্যবসায়ীক পণ্য নয়, বরং ব্যবসা করার যন্ত্র। আর মনে রাখতে হবে, পণ্যের উপর যাকাত আসে, ব্যবসায়ীক যন্ত্রের উপর যাকাত আসে না।

دليلنا لأن الزكاة عبارة عن النماء وذلك من المال النامى على التفسير الذى ذكرناه وهو أن يكون معدا للإستمناء وذلك بالإعداد للإسامة فى المواشى والتجارة فى اموال التجارة (بدائع الصنائع-2/92)

ليس فيما يشترى للتجمل والزينة من خادم ومتاع ولؤلؤ وجوهر وفلوس للنفقة شئ (تاتارخانية-3/173، رقم-4031)

وليس فى دور السكنى وثياب البتدن أثاث المنازل ودواب الركوب وعيد الخدمة وسلاح الاستعمال زكاة لأنها مشغولة بالحاجة الأصلية وليست بنامية أيضا وعلى هذا كتب العلم لأهلها (هداية-1/186)

لو لم يكن من اهلها وليست هى للتجارة لا يجب فيها الزكاة أيضا، وإن كثرت لعدم النماء (حاشية هداية-1/186، رقم الحاشية-18)

لأن الاجوب فى الكل باعتبار التجارة يعنى أن سبب وجوب الزكاة ملك النصاب النامى والنماء أما بالإسامة أو بالتجارة (عناية، كتاب الزكاة، باب زكاة المال، فصل فى العروض، قديم-2/222، جديد-2/229)

النماء إما تحقيق يكون بالتوالد والتناسل والتجارات أو تقديرى يكون بالتمكن من الاستمناء بان يكون فى يده أو يد نائبه لأن السبب هو المال النامى فلا بد منه تحقيقا أو تقديرا (مجمع الأنهر، كتاب الزكاة-1/286ـ 1/193

والله اعلم بالصواب


//////////////////////===================/////////////////////

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামিয়া ঢাকা।


মূল লিংক








 

রক্ত কি নাপাকীর অন্তর্ভুক্ত?

রক্ত কয়েক প্রকার যথা-

১। হায়েযের রক্ত: এটা সর্বসম্মতিক্রমে নাপাক। এটা নাপাক হওয়ার দলীল পূর্বে আলোচিত হয়েছে।

২। মানুষের রক্ত:[1] এটা পাক বা নাপাক হওয়ার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। ফিক্বহী মাযহাবের অনুসারীদের নিকট এ কথাই প্রসিদ্ধ যে, রক্ত অপবিত্র। এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন দলীল নেই। তবে কুরআনের আয়াত দ্বারা এটা (রক্ত) হারাম করা হয়েছে।

আল্লাহ্‌র বাণী:

﴿قُلْ لَا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنْزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ﴾

আপনি বলে দিন: যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের গোশত ব্যতীত, নিশ্চয় তা অপবিত্র । (সূরা আল-আনআম :১৪৫)

রক্ত হারাম হওয়ার কারণে তা নাপাক হওয়াকেও আবশ্যক করে বলে তারা মনে করেন, যেমনটি তারা মদের ব্যাপারে মনে করে থাকেন। এর প্রকৃত ব্যাপারটি গোপন নয়। কিন্তু একাধিক বিদ্বানের বর্ণনা মতে, এটা (রক্ত) নাপাক হওয়ার উপর ইজমা হয়েছে। এ ব্যাপারে সামনে আলোচনা হবে।

অপরদিকে পরবর্তী মুজতাহিদগণ, তথা ইমাম শাওকানী, সিদ্দীক খান, আলবানী ও ইবনে উসাইমীন বলেন: (মানুষের) রক্ত পবিত্র। কেননা এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন ইজমা সাব্যাস্ত হয় নি। তারা নিম্নোক্তভাবে দলীল দিয়ে থাকেন।

(১) প্রত্যেক বস্ত্তই মূলতঃ পবিত্র; যতক্ষণ না তা নাপাক হওয়ার দলীল প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানাবী (ﷺ) হায়েযের রক্ত ব্যতীত মানুষের শরীরের বিভিন্ন ক্ষত-বিক্ষত স্থান থেকে অধিক রক্ত ঝরার পরও তা ধৌত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। যদি রক্ত নাপাক হতো, তাহলে মহানাবী (ﷺ) তার প্রয়োজনীয় বিধানের কথা অবশ্যই বর্ণনা করতেন।

(২) মুসলমানেরা তাদের ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় সালাত আদায় করতেন। অথচ তাদের শরীর থেকে এত রক্ত ঝরত যে তা সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। আর তা ধৌত করার নির্দেশ মহানাবী (ﷺ) এর পক্ষ থেকে কেউ বর্ণনা করেন নি এবং এটাও বর্ণিত হয় নি যে, তারা এ থেকে ব্যাপকভাবে সতর্ক থাকতেন।

হাসান বলেন: مَا زَالَ المُسْلِمُونَ يُصَلُّونَ فِي جِرَاحَاتِهِمْ অর্থাৎ:‘‘মুসলমানেরা সর্বদাই তাদের শরীর ক্ষত-বিক্ষত বা যখম থাকা অবস্থায় সালাত আদায় করতেন’’।[2]

আনসার সাহাবীর ব্যাপারে বর্ণিত হাদীস। যিনি রাতে সালাত আদায় করেছিলেন। এমতাবস্থায় এক মুশরিক তাকে একটি তীর নিক্ষেপ করল। ফলে তিনি আঘাত প্রাপ্ত হলেন, অতঃপর তিনি তা খুলে ফেললেন। এমনকি মুশরিক ব্যক্তি তাকে তিনটি তীর নিক্ষেপ করল। তারপর এ ভাবেই তিনি রুকু সাজদা করে, সমস্ত সালাত শেষ করলেন। আর তার শরীর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল।[3]


আলবানী (রাহি.) বলেন,[4] এ হাদীসটি মারফূ হাদীসের হুকুমে। কেননা রাসূল (ﷺ) এ ব্যাপারে জানতেন না এমন ধারণা করা অনেক দূরের ব্যাপার। যদি অধিক রক্ত নাপাক হতো তাহলে মহানাবী (ﷺ) তা বর্ণনা করতেন। কেননা উসূল শাস্ত্রের নিয়ম হলো, কোন বিষয় প্রয়োজনের সময় ছাড়া পরে বর্ণনা করা বৈধ নয়। যদি ধরে নেয়া হয় যে, মহানাবী (ﷺ) এর কাছে এটা গোপন ছিল, তাহলে বলা হবে যে, আল্লাহ্‌র কাছে কিভাবে তা গোপন থাকতে পারে, যার কাছে আসমান জমিনের কোন কিছুই গোপন থাকে না। যদি রক্ত ওযূ ভঙ্গের কারণ হতো বা নাপাক হতো, তাহলে অবশ্যই মহানাবী (ﷺ) এর উপর তা ওহী করা হতো। এটা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে। বিষয়টি অস্পষ্ট নয়।

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর শাহাদাতের ঘটনায় বর্ণিত হাদীস- صَلَّى عُمَرُ وَجُرْحُهُ يَثْعَبُ دَمًا অর্থাৎ: অতঃপর উমার (রাঃ) সালাত আদায় করলেন অথচ তাঁর যখম হতে তখন রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল।[5]

(৩) সা‘দ ইবনে মু’আয (রাঃ) এর মৃত্যুর ঘটনায় বর্ণিত আয়িশা (রা.) এর হাদীস। তিনি বলেন:

لَمَّا أُصِيبَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ يَوْمَ الْخَنْدَقِ، رَمَاهُ رَجُلٌ فِي الْأَكْحَلِ فَضَرَبَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ خَيْمَةً فِي الْمَسْجِدِ لِيَعُودَهُ مِنْ قَرِيبٍ (سنن أبي داود).......... فبينما هو ذات ليلة إذ تفجر كلمه فسال الدم من جرحه حتى دخل خباء إلى جنبه فقال الله أهل الخباء يا أهل الخباء ما هذا الذي يأتينا من قبلكم ؟ فنظروا فإذا سعد قد انفجر كلمه والدم له هدير فمات [ المعجم الكبير - الطبراني ]

অর্থাৎ: যখন সা‘দ ইব্ন মু‘আয (রাঃ) খন্দকের যুদ্ধে জনৈক ব্যক্তির তীরের আঘাতে আহত হয়েছিলেন, যা তার হাতের শিরায় বিদ্ধ হয়েছিল, তখন রাসুলুল­াহ (ﷺ) তার জন্য মাসজিদে (নাববীতে) একটা তাবু খাটিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি নিকট থেকে বার বার তার দেখাশুনা করতে পারেন।

অপর এক হাদীসে বলা হয়েছে, হঠাৎ এক রাতে তার যখমটি ফেটে গিয়ে রক্ত প্রবাহিত হলো, এমনকি তার পার্শ্ববর্তী তাবুতে রক্ত প্রবাহিত হলো, ফলে তাবুর মধ্যে যারা অবস্থান করছিলেন, তারা বললেন, হে তাবুবাসী তোমাদের তাবুতে এগুলো কি আসছে! এরপর তারা দেখল যে, সা‘দ (রাঃ) এর যখম ফেটে তিনি রক্তশূন্য হয়ে পড়েছেন। ফলে তিনি মারা যান।[6]

আমার বক্তব্য: মহানাবী (ﷺ) তার উপর পানি ঢেলে দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন এমনটি বর্ণিত হয় নি। অথচ তিনি মাসজিদে ছিলেন। যেমনটি তিনি জনৈক বেদুঈন লোকের পেশাব করার বেলায় তার উপর পানি ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

(৪) ইবনে রুশদ মাছের রক্তের ব্যাপারে আলিমদের মতভেদের কথা উল্লেখ করে বলেন: তাদের মতভেদের কারণ হল, মৃত মাছের ব্যাপারে। যারা মৃত মাছকে ‘মৃত প্রাণী বিশেষ হারাম’ এর আওতায় মনে করেন, তারা তার রক্তকেও অনুরূপ হারাম মনে করেন।

আর যারা মৃত মাছকে সার্বজনীন হারামের বহির্ভূত মনে করেন, তারা তার রক্তকেও মাছের উপর অনুমান বা কিয়াস করে হালাল মনে করেন।

উত্তরে আমরা বলব যে, তারা মৃত মানুষকে পবিত্র বলে থাকেন। তাহলে তাদের কায়দা অনুযায়ী মৃত মানুষের রক্তও পবিত্র!

এজন্য শেষভাগে ইবনে রুশদ বলেছেন, নাস বা দলীল শুধু হায়েযের রক্তকেই নাপাক বলে প্রমাণ করে। এটা ব্যতীত অন্য রক্ত তার মৌলিকতার উপর বহাল থাকবে। তথা তা পবিত্র। আর এ ব্যাপারটিতে সকল বিতর্ককারী ঐকমত্য পোষণ করেছেন। সুতরাং দলীলের উপযোগী নস বা প্রমাণাদী ছাড়া তা পবিত্রতার হুকুম থেকে বহির্ভূত করা যাবে না।


যদি বলা হয় মানুষের রক্তকে হায়েযের রক্তের সাথে কিয়াস বা অনুমান করা যায় কি না? আর হায়েযের রক্ততো নাপাক।

তাহলে উত্তরে আমরা বলব, এটা قياس مع الفارق (বিচ্ছিন্ন জিনিসের সঙ্গে কিয়াস) হয়ে গেল। হায়েযের রক্ত হলো, নারীদের প্রকৃতি বা জন্মগত স্বভাব। মহানাবী (ﷺ) বলেন: إِنَّ هَذَا شَيْءٌ كَتَبَهُ اللهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ অর্থাৎ: এটা এমন একটা ব্যাপার যা আল্লাহ্‌ তা‘আলা সকল আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।[7]

মহানাবী (ﷺ) ইসেত্মহাযার ব্যাপারে বলেন: إنه دم عِرْق অর্থাৎ: এটা শিরা নির্গত রক্ত।[8] তদুপরি, হায়েযের রক্ত হয় গাঢ়, দুর্গন্ধময় এবং তা বিশ্রী গন্ধ করে। তা পেশাব পায়খানার মতই। এটা দুই রাস্তা ব্যতীত অন্য কোথাও থেকে নির্গত রক্ত নয়।


৩। যে প্রাণীর গোশত খাওয়া হয় তার রক্ত:

এ বিষয়ের আলোচনা মানুষের রক্তের ব্যাপারে পূর্বে যে আলোচনা করা হয়েছে তদ্রূপ। কেননা এটা নাপাক হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীল নেই। সুতরাং তা মৌলিক দিক থেকে নাপাকী মুক্ত হওয়ার দাবীদার। নিম্নোক্ত বাণী দ্বারাও তা পবিত্র হওয়ার দলীলকে শক্তিশালী করে। যেমন ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, তিনি বলেন:

كَانَ يُصَلِّي عِنْدَ الْبَيْتِ وَأَبُو جَهْلٍ وَأَصْحَابٌ لَهُ جُلُوسٌ إِذْ قَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْض أيكم يقوم إلى جزور آل فلان فيعمد إلى فرثها ودمها وسلاها فيجيء به ثم يمهله حتى إذا سجد وضعه بين كتفيه فانبعث أشقاهم فلما سجد رسول الله عليه الصلاة والسلام وضعه بين كتفيه وثبت النبي عليه الصلاة والسلام ساجدا فضحكوا

একবার রাসুলুল্লাহ কা‘বা ঘরের নিকট দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। এমন সময় আবূ জাহল তার সাথীদের নিয়ে সেখানে বসে ছিল। অতঃপর তারা একে অপরে বলতে লাগল, তোমাদের এমন কে আছে যে অমুক গোত্রের উট যবেহ করার স্থান পর্যন্ত যেতে রাযী? সেখান থেকে গোবর, রক্ত ও গর্ভাশয় নিয়ে এসে অপেক্ষায় থাকবে। যখন এ ব্যক্তি সাজদায় যাবে, তখন এগুলো তার দুই কাঁধের মাঝখানে রেখে দেবে। এ কাজের জন্য তাদের চরম হতভাগা ব্যক্তি (‘উকবা) উঠে দাঁড়াল ( এবং তা নিয়ে আসলো)। যখন রাসুলুল্লাহ সাজদায় গেলেন তখন সে তার দু‘কাঁধের মাঝখানে সেগুলো রেখে দিল। নাবী সাজদায় স্থির হয়ে গেলেন। এতে তারা হাসাহাসি করতে লাগল.......।[9]

যদি উটের রক্ত নাপাক হতো, তাহলে মহানাবী (ﷺ) অবশ্য তার কাপড় খুলে ফেলতেন অথবা সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকতেন।

ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে:

« أن ابن مسعود صلى وعلى بطنه فرث ودم من جزور نحرهاولم يتوضأ»

একদা ইবনে মাসউদ (রাঃ) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় তার পেটের উপর উট যবেহ করা রক্ত ও গোবর বা অনুরূপ কিছু ছিল। অথচ তিনি এ জন্য ওযূ করেন নি।[10]

যদিও অত্র আসারটি প্রাণীর রক্ত পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে দলীল হওয়ার ক্ষেত্রে বিতর্কিত। কেননা ইবনে মাসউদ সালাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শরীর ও কাপড় পাক হওয়াকে শর্ত মনে করেন না। তিনি এটাকে মুস্তাহাব মনে করেন।

আমার বক্তব্য: যদি রক্ত নাপাক হওয়ার ব্যাপারে ইজমা সাব্যাস্ত হয়, তাহলে পরবর্তীদের দলীলের দিকে আমরা ভ্রূক্ষেপ করব না। আর যদি ইজমা সাব্যাস্ত না হয়, তাহলে প্রকৃতপক্ষে রক্ত পবিত্র। এ সমস্ত দলীলাদীর প্রয়োজন নেই। যদিও আমার নিকট দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ রক্ত পবিত্র হওয়ার অভিমতটিই পছন্দনীয় ছিল। কিন্তু এখন আমার কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, এ মাসআলার ব্যাপারে ইজমা সাব্যাস্ত আছে। অনেক বিদ্বানই এর ইজমা হওয়ার কথাটি বর্ণনা করেছেন। এর বিপরীত প্রমাণিত হয় নি। এ ইজমার বর্ণনাগুলোর মধ্যে উচ্চমানের বর্ণনা হলো, ইমাম আহমাদ (রাহি.) এর বর্ণনা, অতঃপর ইবনে হাযম (রাহি.) এর বর্ণনা। (তবে যারা ধারণা করেন যে, আহমাদের মাযহাব হলো ‘রক্ত পবিত্র’ তাদের এ কথা সম্পূর্ণ বিপরীত।) এ ব্যাপারে আমি যতটুক জেনেছি তা হলো,

ইবনুল কাইয়্যিম ইগাসাতুল লুহফান গ্রন্থে (১/৪২০) বলেন: ইমাম আহমাদকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার দৃষ্টিতে কি রক্ত ও বমি সমান? উত্তরে তিনি বলেন: না, রক্তের ব্যাপারে কেউ মতভেদ করেন নি। তিনি পুনরায় বলেন: বমি, নাকের ময়লা ও পুঁজ আমার কাছে রক্তের চেয়ে শিথিল।

ইবনে হাযম মারাতিবুল ইজমা গ্রন্থে বলেন: আলিমগণ রক্ত নাজাসাত বা নাপাক হওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

অনুরূপভাবে হাফেজ ফাতাহ গ্রন্থে (১/৪২০) এ ঐকমত্যের কথা উল্লেখ করেছেন। ইবনু আব্দুল বার তামহীদ গ্রন্থে (২২/২৩০) বলেন: সব রক্তের হুকুম হায়েযের রক্তের হুকুমের মত। তবে অল্প রক্ত হলে তা উক্ত হুকুমের বহির্ভূত হবে তথা তা পবিত্র হবে। কেননা আল্লাহ্‌ তা‘আলা রক্ত নাপাক হওয়ার জন্য প্রবহমান হওয়াকে শর্ত করেছেন। আর যখন রক্ত প্রবহমান হবে তখন তা رجس তথা নাপাক হবে। এ ব্যাপারে মুসলমানদের ইজমা রয়েছে যে, প্রবহমান রক্ত رجس বা নাপাক। ইবনুল আরাবী আহকামুল কুরআনে (১/৭৯) বলেন: আলিমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, রক্ত হারাম এবং নাপাক। তা খাওয়া যায় না এবং এর মাধ্যমে উপকার গ্রহণও করা যায় না। আল্লাহ্‌ তা‘আলা এখানে রক্তকে মুত্বলাক বা সাধারণ ভাবে উল্লেখ করেছেন। আর সূরা আন‘আম এর মধ্যে তা مسفوح (প্রবহমান) শব্দের সাথে مقيد (নির্দিষ্ট) করেছেন। আলিমগণ এখানে সর্বসম্মতভাবে مطلق (সাধারণ) কে مقيد (নির্দিষ্ট) এর উপর ব্যবহার করেছেন।

ইমাম নাববী (রাহি:) মাজমু গ্রন্থে (২/৫৭৬) বলেন: দলীলসমূহ প্রকাশ্যভাবে রক্ত নাপাক হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করে। মুসলমানদের মধ্যে কেউ এ ব্যাপারে মতভেদ করেছেন বলে আমার জানা নেই। তবে হাবী গ্রন্থকার কতিপয় উক্তিকারী থেকে বর্ণনা করে বলেন: রক্ত পবিত্র। কিন্তু এ সমস্ত উক্তিকারীগণকে ইজমা ও ইখতিলাফকারী আলিমদের মধ্যে গণ্য করা হয় না।

আমি বলি (আবূ মালিক): উপরের আলোচনা থেকে আমার কাছে যা স্পষ্ট হচ্ছে তা হলো: ইজমা সাব্যাস্ত থাকার কারণে রক্ত অপবিত্র। তবে ইমাম আহমাদ (রাহি.) এর চেয়ে যদি আর কোন বড় মাপের ইমামের কাছ থেকে সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে রক্ত পবিত্র হওয়ার মতামতটি প্রাধান্য পাবে। আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

[1] তাফসীরে কুরতুবী (২/২২১), মাজমূ (২/৫১১), মুহালস্না (১/১০২), কাফী (১/১১০), বিদায়াতুল মুজতাহীদ, সায়লুল জিরার (১/৩১), শারহুল মুমতে (১/৩৭৬), সিলসিলাতুছ সহীহাহ ও তামামুল মিন্নাহ পৃঃ ৫০।

[2] সনদ সহীহ, ইমাম বুখারী ময়ালস্নাক্ব সূত্রে বর্ণনা করেছেন ১/৩৩৬, ইবনে আবি শায়বা সহীহ সনদে মাওসূল সূত্রে বর্ণনা করেছেন, যেমনটি ফাতহুল বারীতে বর্ণিত হয়েছে (১/৩৩৭)।

[3] সহীহ; ইমাম বুখারী মুয়ালস্নাক্ব সূত্রে বর্ণনা করেছেন ১/৩৩৬, অহমাদ মাওসূল সূত্রে বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি সহীহ।

[4] তামামুল মিন্নাহ (৫১,৫২)

[5] সহীহ; মালিক (৮২), মালিক থেকে বাইহাকী বর্ণনা করেছেন (১/৩৫৭) ও অন্যান্যরা, এর সনদ সহীহ।

[6] সহীহ; আবুদাউদ মুখতাসারভাবে বর্ণনা করেছেন (৩১০০), তবারানী ফিল কাবীর (৬/৭)।

[7] বুখারী হা/ ২৯৪; মুসলিম হা/ ১২১১

[8] বুখারী হা/ ৩২৭; মুসলিম হা/ ৩৩৩

[9] বুখারী হা/ ২৪০; মুসলিম হা/ ১৭৯৪

[10] মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ১/২৫ পৃঃ; ইবনে আবী শায়বা ১/৩৯২



//============================================//




রক্ত কাপড়ে লাগলে তা ধৌত করার হুকুম কী?

প্রশ্ন

Assalamu Alaikum warahmatullah….
Redwan Hussain Rahat
Patharghata,Barguna.
প্রশ্নঃ ক্ষত স্থান থেকে গড়িয়ে পড়া রক্ত কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে কি? নাপাক হলে সেক্ষেত্রে কাপড় পাক করার জন্য শুধু রক্তমাখা অংশটুকু ধৌত করলেই হবে কি? গড়িয়ে পড়া ব্যতীত ক্ষত স্থান থেকে বের হওয়া রক্ত বা পুজ কাপড়ে লাগলে তার হুকুম কি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

একটি মূলনীতি বুঝলে এ মাসআলাটি বুঝা সহজ। সেটি হল, শরীরের ভেতর থেকে যে বস্তু বের হলে অজু ভেঙ্গে যায়, সেটি নাপাক। তা পরিস্কার করা ছাড়া কাপড় পবিত্র হবে না।

সে হিসেবে রক্ত বা পূঁজ যতক্ষণ না ক্ষতস্থান থেকে বেরিয়ে গড়িয়ে পড়া সমতূল্য হয়, ততক্ষণ অজু ভাঙ্গে না। মানে উক্ত রক্ত বা পূঁজ নাপাকীর হুকুমে আসবে না। যখনি তা গড়িয়ে পড়ার পরিমাণ হয়ে যাবে, তখনি সেটি নাপাকীর হুকুমে চলে আসবে।

উপরোক্ত মূলনীতি বুঝলে আপনি নিজেই আপনার প্রশ্নের হুকুমটি বের করে নিতে পারবেন।

আর কোথাও নাপাক লাগলে উক্ত নাপাক দূরিভূত করলেই স্থানটি পবিত্র হয়ে যায়। পুরো স্থান বা কাপড় ধৌত করার প্রয়োজন নেই।

عن الحسن: انه كان لا يرى الوضوء من الدم الا ما كان سائلا (مصنف ابن ابى شيبة1/127، رقم الحديث-1459)

قال العينى فى عمدة القارى: واسناده صحيح وهو مذهب الحنفية (عمدة القارى-3/51)

وذكر ايضا عن الحسن انه قال: ما زال المسلمون يصلون فى جراحتهم، (ذكر الإمام البخارى معلقا) كما قال: وعصر ابن عمر بثرة فخرج منها الدم، لم يتوضأ، وبزق ابن ابى اوفى دما فمضى فى صلاته، (صحيح البخارى، كتاب الوضوء، باب من لم ير الوضوء الا من المخرجين من القبل والدبر)

انظر فتح البارى-1/281، تحفة الاحوذى-1/244)

قال صاحب تنوير الابصار العلامة التمرتاشى: وينقضه خروج نجس منه الى ما يطهر

وقال صاحب الدر المختار العلامة الحصكفى: ثُمَّ الْمُرَادُ بِالْخُرُوجِ مِنْ السَّبِيلَيْنِ مُجَرَّدُ الظُّهُورِ وَفِي غَيْرِهِمَا عَيْنُ السَّيَلَانِ وَلَوْ بِالْقُوَّةِ، لِمَا قَالُوا: لَوْ مَسَحَ الدَّمَ كُلَّمَا خَرَجَ وَلَوْ تَرَكَهُ لَسَالَ نَقَضَ وَإِلَّا لَا، كَمَا لَوْ سَالَ فِي بَاطِنِ عَيْنٍ أَوْ جُرْحٍ أَوْ ذَكَرٍ وَلَمْ يَخْرُجْ، وَكَدَمْعٍ وَعَرَقٍ إلَّا عَرَقُ مُدْمِنِ الْخَمْرِ فَنَاقِضٌ عَلَى مَا سَيَذْكُرُهُ الْمُصَنِّفُ،

وقال ابن عابدين الشامى- (قَوْلُهُ: كَمَا لَوْ سَالَ) تَشْبِيهٌ فِي عَدَمِ النَّقْضِ، لِأَنَّهُ فِي هَذِهِ الْمَوَاضِعِ لَا يَلْحَقُهُ حُكْمُ التَّطْهِيرِ كَمَا قَدَّمْنَاهُ الخ (قَوْلُهُ: وَلَمْ يَخْرُجْ) أَيْ لَمْ يَسِلْ.

أَقُولُ: وَفِي السِّرَاجِ عَنْ الْيَنَابِيعِ: الدَّمُ السَّائِلُ عَلَى الْجِرَاحَةِ إذَا لَمْ يَتَجَاوَزْ. قَالَ بَعْضُهُمْ: هُوَ طَاهِرٌ حَتَّى لَوْ صَلَّى رَجُلٌ بِجَنْبِهِ وَأَصَابَهُ مِنْهُ أَكْثَرُ مِنْ قَدْرِ الدِّرْهَمِ جَازَتْ صَلَاتُهُ وَبِهَذَا أَخَذَ الْكَرْخِيُّ وَهُوَ الْأَظْهَرُ. (رد المحتار، كتال الطهارة-1/260-263، زكريا)

فى رد المحتار: ففى النجاسة المرئية زوال عين النجس، وفى غير  المرئية والحدث غسل فقط، وفى الحدث الأصغر غسل ومسح- (رد المحتار، كتاب الطهارة، 1/198

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com




//===========================================//


আসসালামুআলাইকুম,

শরীর থেকে বের হওয়া কতটুকু রক্ত নাপাক?

 সামান্য দুই,এক ফোঁটা বের হলেও কি তা নাপাক?

ব্রণ গালালে সামান্য একটু বের হয়;সেই রক্ত কি নাপাক ?

সেই রক্ত জামায় লাগলে কি জামা নাপাক হয়ে যাবে?



ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
নাজাসতে গালিজাহসে সম্পর্কে বলা হয়,
 كل ما يخرج من بدن الإنسان مما يوجب خروجه الوضوء أو الغسل فهو مغلظ كالغائط والبول والمني والمذي والودي والقيح والصديد والقيء إذا ملأ الفم. كذا في البحر الرائق.
وكذا دم الحيض والنفاس والاستحاضة هكذا في السراج الوهاج وكذلك بول الصغير والصغيرة أكلا أو لا. كذا في الاختيار شرح المختار 
وكذلك الخمر والدم المسفوح ولحم الميتة وبول ما لا يؤكل والروث وأخثاء البقر والعذرة ونجو الكلب وخرء الدجاج والبط والإوز نجس نجاسة غليظة هكذا في فتاوى قاضي خان 
وكذا خرء السباع والسنور والفأرة. هكذا في السراج الوهاج بول الهرة والفأرة إذا أصاب الثوب قال بعضهم: يفسد إذا زاد على قدر الدرهم وهو الظاهر. هكذا في فتاوى قاضي خان والخلاصة خرء الحية وبولها نجس نجاسة غليظة وكذا خرء العلق. كذا في التتارخانية ودم الحلمة والوزغة نجس إذا كان سائلا. كذا في الظهيرية فإذا أصاب الثوب أكثر من قدر الدرهم يمنع جواز الصلاة. كذا في المحيط.
ভাবার্থঃ-ঐ সমস্ত জিনিষ যা মানুষের শরীর থেকে বের হয়ে ওজু গোসলকে ওয়াজিব করে দেয়।তা হল নাজাসতে গালিজাহ,যেমনঃ- পায়খানা,পেশাব,বীর্য, মযি(বীর্যের পূর্বে যা বাহির হয়),ওদি(প্রস্রাবের সময় যা বাহির হয়)ফুঁজ,বমি যখন তা মুখভড়ে হয়,(বাহরুর রায়েক)এবং আরো ও নাজাসতে গালিজাহ হল যথাক্রমে-হায়েয ও নেফাসের রক্ত,ছোট্ট বালক/বালিকার  প্রস্রাব তারা আহার করুক বা না করুক।মদ,প্রবাহিত রক্ত,মৃত জানোয়ারের গোসত,ঐ সমস্ত প্রাণীর প্রস্রাব ও গোবর যাদের গোস্ত ভক্ষণ হারাম।গরুর গোবর,কুকুরের বিষ্টা, মোরগ এবং হাস ও পানী হাসের বিষ্ঠা। হিংস প্রাণীর বিষ্টা,বিড়ালের বিষ্টা,ইদুরের বিষ্টা।বিড়াল এবং ইদুরের প্রস্রাব যদি কাপড়ে লাগে তবে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,যদি তা এক দিরহামের বেশী হয় তবে পবিত্র।আর কিছুসংখ্যক না করেন।সাপের বিষ্টা,ও প্রস্রাব।জোকের বিষ্টা।আঠালো ও টিকটিকির রক্ত যদি তা প্রবাহিত হয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৬)
নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি)পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে।যদিও তা ধৌত করা জরুরী যদি সময়-সুযোগ থাকে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রক্ত কম হোক বা বেশী হোক সবই নাপাক। এক ফোটা রক্তও নাপাক। এখন প্রশ্ন হল, কতটুকু রক্ত লাগলে কাপড় বা শরীর নাপাক হবে, এবং নামায পড়া যাবে না? উক্ত প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে, এক দিরহাম পরিমাণ রক্ত লাগলে কাপড় বা শরীর নাপাক হবে, উক্ত কাপড় বা শরীর দ্বারা নামায পড়া যাবে না। । এর চেয়ে কম হলে ক্ষমাযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। কাপড় বা শরীরে উক্ত রক্ত নিয়ে নামায পড়া যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)





//////////====================================////////////////


কিছুদিন আগে আমার নিজের শরীরের রক্ত (নখের নিচ থেকে বের হয়েছিল, নখ কাটার কারণে) আমার জুব্বাতে লেগে যায়। এখন কি পুরো জুব্বা ধুয়ে দিতে হবে না কি যেখানে রক্ত লেগেছে সেখানে ধুইলেই হবে? এটা নিশ্চিত যে রক্তের দাগটা উঠবে না, দাগ থেকেই যাবে। এমতাবস্থায় করণীয় কী?


জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 



শরীয়তের বিধান হলো  কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রতিবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধৌত করার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে, তাতে কোনো দোষ নেই, পাক হয়ে যাবে।

নাপাক কাপড় পাক করা সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ    
আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ রয়েছে,

وإزالتها إن كانت مرئية بإزالة عينها وأثرها إن كانت شيئا يزول أثره ولا يعتبر فيه العدد. كذا في المحيط فلو زالت عينها بمرة اكتفى بها ولو لم تزل بثلاثة تغسل إلى أن تزول، كذا في السراجية.

দৃশ্যমান নাজাসত কে সম্ভব হলে তার আছর সহ দূর করলেই(কাপড় বা শরীর) পবিত্র হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে দৌত করার সংখ্যা গ্রহণযোগ্য নয় (মুহিত)

যদি একবার দৌত করার দ্বারা নাজাসত দূর হয়ে যায় তাহলে সে দৌত্যকর্ম টিই তা পবিত্র হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।তবে যদি তিনবার দৌত করার দ্বারা নাজাসত দূর না হয় তাহলে সে পর্যন্তই দৌত করতে হবে যে পর্যন্ত না নাজাসত দূর হচ্ছে।

وإن كانت شيئا لا يزول أثره إلا بمشقة بأن يحتاج في إزالته إلى شيء آخر سوى الماء كالصابون لا يكلف بإزالته. هكذا في التبيين وكذا لا يكلف بالماء المغلي بالنار. هكذا في السراج الوهاج.

আর যদি নাজাসতের আছর এমন হয় যে,কষ্ট করা ব্যতীত তা দূর হবে না তথা এটা দূর করতে পানি ব্যতীত ভিন্ন জিনিষের মুখাপেক্ষী হতে হয়। যেমন সাবান ইত্যাদি।তাহলে এমতাবস্থায় আছর দূর করার হুকুম দেওয়া হবে না।
(তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব)

এবং গরম পানি দ্বারা আছর দূর করারও হুকুম প্রদান করা হবে না।(আস-সিরাজুল ওয়াহ্হাজ)

إلي أن قال ...............وإن كانت غير مرئية يغسلها ثلاث مرات. كذا في المحيط ويشترط العصر في كل مرة فيما ينعصر ويبالغ في المرة الثالثة حتى لو عصر بعده لا يسيل منه الماء

(অতঃপর এক পর্যায়ে বলা হয়)
নজাসত যদি অদৃশ্যমান হয় তাহলে তিনবার দৌত করতে হবে।(মুহিত)প্রতিবার দৌত করার সময় কাপড় ইদ্যাদি নিংড়ানো শর্ত।বিশেষ করে তৃতীয়বার এমনভাবে নিংড়াতে হবে যে, এরপর যদি কেউ আবার নিংড়াতে চায় তাহলে এত্থেকে পানি ঝড়ানো যাবে না।(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/৪১-৪২)

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة

অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করতে হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে। অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩)

নাপাক কাপড় পরে গোসল করার ক্ষেত্রে যদি বেশি পরিমাণ পানি কাপড়ের উপর ঢালা হয় এবং কাপড় ভালোভাবে কচলে ধোয়া হয় যার ফলে কাপড় থেকে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় তাহলে এর দ্বারা কাপড়টি পাক হয়ে যাবে। আর দৃশ্যমান কোনো নাপাকি থাকলে ঐ নাপাকি কচলে ধুয়ে দূর করে নিলে কাপড় পাক হয়ে যাবে। 
আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৩৩; শরহুল মুনইয়া ১৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৮; আননাহরুল ফায়েক ১/১৫০।

আরো জানুনঃ 

★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে জুব্বার যেই স্থানে উক্ত রক্ত লেগেছে,সেই স্থান ৩ বারা ভালো ভাবে ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
তাহলেই পাক হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে রক্তের দাগ থেকে গেলেও কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)





 

জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ।

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ পড়ো নামাজিদের সঙ্গে।’ অর্থাৎ তোমারা জামাতসহকারে  নামাজ পড়ো। (সূরা বাকারা)।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,

يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ

خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ

‘পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরন কর, সে দিন তাদেরকে সিজদা করতে বলা হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না। তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সিজদা করার জন্য আহ্বান জানানো হত। কিন্তু তারা সাড়া দিত না। (সূরা কালাম-৪২-৪৩)।

নবী কারীম সা. ইরশাদ করেন-  ‘জামাতের সঙ্গে নামাজে সাতাশ গুণ বেশি পূণ্য নিহিত রয়েছে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি)

তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘একা নামাজ পড়া অপেক্ষা দু’জনে জামাতে নামাজ পড়া উত্তম। দু’জন অপেক্ষা বহুজন মিলে জামাতে নামাজ পড়া আল্লাহর কাছে আরো বেশি পছন্দনীয় এবং উত্তম।’ (আবু দাউদ)।

তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়বে, সে অর্ধরাত বন্দেগির সওয়াব পাবে। যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়বে, পূর্ণ রাত বন্দেগি করার পূণ্য লাভ করবে।’ (তিরমিযি)।

এজন্য নবীজি (সা.) কখনো জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনো দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি।

এমন কী নবীজি (সা.) তো এতটুকুও বলেছে,  ‘আমার তো মনে চায় মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলব এবং কাউকে নামাজ পড়াতে বলব আর আমি আগুনের অঙ্গার নিয়ে যাব, যে আজান শুনার পরও মসজিদে জামাতে হাজির হওয়ার জন্য বের হয়নি- তার ঘর জ্বালিয়ে দিই।’ (বুখারি, মুসলিম)।

তিনি আরো বলেন- ‘কোথাও যদি তিনজন মানুষ থাকে, আর তারা যদি জামাতে নামাজ না পড়ে, তাহলে শয়তান তাদের ওপর বিজয়ী হয়ে যাবে। কাজেই তুমি জামাতে নামাজ পড়াকে কর্তব্য মনে করো।’  (নাসায়ি)

তিনি আরো বলেন- ‘সেই ব্যক্তির ওপর আল্লাহর অভিশাপ, যে আজান শুনেও জামাতে উপস্থিত হয় না।’ (মাজমাউজ্জাওয়াইদ)।

চিন্তার বিষয় হলো, নবীজি (সা.) যেখানে জামাতে অনুপস্থিত মুসাল্লির ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, সেখানে যে বেনামাজি, তার শাস্তি যে  কত ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়।

নবীকরীম (সা.) এর নিকট এক অন্ধ ব্যক্তি এসে বলল,  ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে মসজিদে পৌছে দেবে।

সে নবীজীর কাছে অনুমতি চাইল বাড়িতে নামাজ পড়ার জন্য। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর অন্ধ লোকটি চলে যেতে শুরু করলে রাসূল (সা.) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কী আজান শুনতে পাও?’ সে বলল? জ্বী- হাঁ, শুনতে পাই। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে জওয়াব দেবে। অর্থাৎ মসজিদে উপস্থিত হবে। (মুসলিম)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘কোনো মুমিন বান্দার পক্ষে আজান শুনেও জামাতে শামিল না হওয়ার চেয়ে গলিত সীসা কানে ঢেলে দেওয়া উত্তম। (কিতাবুস সালাহ)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেন, আজান শোনার পর বিনা ওযরে যে ব্যক্তি নামাজের জামাতে শরীক হয় না তার একাকী নামাজ পড়া কবুল হবে না। জানতে চাওয়া হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ওজর বলতে কী বুঝায়? তিনি বললেন, বিপদ অথবা রোগব্যাধি। (আবু দাউদ, ইবনেমাজাহ)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) আরো বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন (১) যে নেতাকে লোকেরা অপছন্দ করে, (২) যে নারী তার স্বামী অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় রাত যাপন করে, (৩) নামাজের আজান শ্রবণ করেও যে জামাতে শরীক হয় না। (হাকেম)।

হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘মসজিদের প্রতিবেশী লোকজনের নামাজ মসজিদ ব্যতিত সঠিক হবে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, মসজিদের প্রতিবেশী কারা? ‘যে বাড়ীতে আজান শুনতে পায়।’ (মুসানদে আহমাদ)।

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন যে ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর দীদার লাভ করতে চায় সে যেন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক মতো আদায় করে।’ কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হিদায়াতের বিধানাবলি প্রবর্তন করে দিয়েছেন। আর এ নামাজগুলো হচ্ছে হিদায়াতের অন্যতম পন্থা। অনেকের মতো তোমরাও যদি নিজ গৃহে নামাজ পড়, তবে যেন নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর তোমরা যদি নবীর পথ ছেড়ে দাও, তাহলে পথভ্রষ্ট হবে। আমার জানা মতে, মুনাফিক বা অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ জামাতে শামিল হতে অবহেলা করে না। অথচ যে ব্যক্তি দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত আসে, অবশ্যই সে জামাতে নামাজের জন্যই আগমন করে।

হজরত ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, একবার হজরত ওমর (রা.) তার খেজুর বাগান পরিদর্শনে গেলেন। তিনি তখন জামাত ছুটে যাওয়ার কাফফারা স্বরুপ খেজুর বাগানটি সদকা করে দেন।

সংগ্রহে: আব্দুল রাফি আব্দুল্লাহ

আল্লাহকে খোদা বলা জায়েজ আছে কি ?

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: আল্লাহকে খোদা বলা জায়েজ আছে কি না দেখা গেছে অনেক বই কিংবা ইসলামিক সংগীতে খোদা ভাষাটা ব্যবহার করা হয়


উত্তর : আসলে পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষা আল্লাহরই সৃষ্টি। আল্লাহর অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে, সেসব নাম ধরে তোমরা তাকে ডাকো। এখন, মনে করেন, আল্লাহ রাহমানুর রাহীম। এখন বাংলায় কিন্তু আমরা বলি, আল্লাহ দয়ালু। এখানে গুণবাচক নামের ট্রান্সলেট হয়ে গেল। এইটা কি নাজায়েজ ? না, এইটা নাজায়েজ নয়, বরং, সঠিক, বুঝার জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে জরুরী। তদ্রুপ খোদা শব্দটা দ্বারা যদি ঐ একই বিষয় বুঝানো হয়ে থাকে, যা আল্লাহ শব্দ দ্বারা বুঝানো হয়, বা আল্লাহর গুণবাচক বিশেষণ হয়, তাহলে তো জায়েজ আছে। ঠিক এই অর্থেই পৃথীবীর অন্যান্য ভাষায়ও এই পৃথিবীর একমাত্র সৃষ্টিকর্তার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট ভাষাভাষীদের বুঝানোর জন্য তাদের ভাষায় ঐ শব্দটির অনুরূপ যে শব্দ আছে তা বলা যাবে, কোনো অসুবিধা নাই। এটা ঐ ভাষাভাষীদের বুঝার সার্থে। তবে, অবশ্যই আল্লাহ বলা সর্বোত্তম। তবে, তাদের ভাষায় ঐ শব্দটা বলা রুখসত পর্যায়ে পড়বে। যেমন, তাদের জন্য বললেন, এই পৃথিবীর গড একজনই, তিনি হচ্ছেন আল্লাহ, এই বিশ্বজাহানের ভগবান একজনই, দেবতা একজনই, খোদা একজনই, আর তিনি হচ্ছেন আল্লাহ। একজন আরবী ভাষাভাষী বললো, এই পৃথিবীর রব একজনই, ইলাহ একজনই, তিনি হচ্ছেন আল্লাহ।

রূহ কি ?

রুহ্ কি ? 


  সর্ব প্রথম আমরা জেনে নেই রুহ সম্পর্কে কোরআনের একটি আয়াত। “তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিনঃ রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।” (সুরা বনিইসরাইল- ৮৫) 


নবী কারিম (সা.) সবসময়ই জনগণের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতেন এবং তিনি প্রশ্নের যথার্থ উত্তর দিয়ে মানুষের জ্ঞানের চাহিদা মেটাতেন। প্রশ্নকারীরা রাসূলে খোদাকে মানুষের ‘রূহ’ সম্পর্কে প্রশ্ন করতো যে ‘রুহ’ জিনিসটা আসলে কী বা কেমন? কিংবা প্রশ্ন করতো যেই ফেরেশতা কুরআন অবতীর্ণ করার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, সেই ফেরেশতা কীভাবে নবীজীর ওপর ওহী নাযিল করতেন?। এর জবাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীজীকে বললেনঃ প্রশ্নকারীদের ঐসব প্রশ্নের জবাবে বলুন! ‘রূহ’ বস্তুগত কিংবা অনুভবগ্রাহ্য কোনো জিনিস নয় যে তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারবে। বরং রূহ সম্পূর্ণ অবস্তুগত একটি জিনিস যা আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেছেন। এবং রূহ কী বা কেমন তা তোমাদের উপলব্ধি ক্ষমতার বাইরে। এই বিশ্বভূবনের সত্যাসত্য সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান খুবই সীমিত এবং উপলব্ধি ক্ষমতাও যৎসামান্য। তোমরা ভেব না যে তোমরা সবকিছুই জানো কিংবা জানতে সক্ষম। পবিত্র কোরানে অন্তত বিশবার রুহ শব্দটা এসেছে। কিন্তু রুহ শব্দটা মহান আল্লাহ তিনটি প্রসঙ্গে ব্যবহার করেছেন। প্রথমত ‘রূহ’ হলো সেই অলৌকিক বস্তু যা মানুষের ভেতর ফুঁ দিয়ে প্রাণের সঞ্চার করা হয়। দ্বিতীয়ত ‘রূহ’ শব্দটি ওহীর দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা হযরত জিব্রাইল (আ.) এর প্রসঙ্গে এসেছে। তৃতীয়ত ‘রূহ’ শব্দটি এসেছে স্বয়ং কুরআন এবং আল্লাহর ওহী সম্পর্কে, যেই ওহী রাসূলে খোদার ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল। আর এই তিনটি প্রসঙ্গই উল্লেখিত আয়াতের তাৎপর্য। এই একটি আয়াত দ্বারা আল্লাহ সবগুলো আয়াতের সারমর্মকে বুঝিয়েছেন। রুহ যে আল্লাহর আদেশ ঘটিত, তা আর নতুন করে বলার অবকাশ রাখেনা। কারন, আল্লাহ রুহ ফুকে দিয়ে নিঃপ্রানকে প্রানবন্ধো করেন এটা আল্লাহর আদেশ মাত্র। জিবরাইল আঃ ওহি নিয়ে রাসুলের কাছে আসে এটাও আল্লাহর আদেশ মাত্র। পুরো মানবজাতির উপর অবতীর্ন আল্লাহর বাণী সেটাও আল্লাহর আদেশ মাত্র। তাই একটি কথায় আল্লাহ প্রকাশ করেছেন যে, রুহ আমার আদেশ মাত্র। শেষান্তে আল্লাহ বলেছেন, এবিষয়ে তোমাদের সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে। এটা মহান আল্লাহ এই পৃথিবীর কাফের মুশরেকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন। তাইতো তারা সত্যকে দেখেও দেখেনা বুঝেও বুঝেনা। 

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...