স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অসদাচারণ - স্বামীর করণীয় ।

 প্রশ্ন-বিস্তারিত: আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে তুই তুকারি করে, আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, আমার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে, কিন্তু নামাজ ও পড়ে, পর্দাও করে। এমতাবস্থায় আমি স্ত্রী কে তালাক দিতে পারবো কি না।দয়া করে জানাবেন।


উত্তর : তালাক দিতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাসুল সা: বলেছেন, তালাক হচ্ছে নিকৃষ্টতম হালাল। আর স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসা যেইটিকে আধুনিক ভাষায় কেমিষ্ট্রি বলা হয় এইটা একটা জটিল বিষয়। বাইরের কোনো উত্তর দাতা স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সমাধান দিতে অক্ষম। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আপনি আপনার স্ত্রীকে কতটুকু ভালোবাসেন, আপনার স্ত্রী আপনাকে কতটুকু ভালোবাসে। তাকে ছাড়া আপনি চলতে পারবেন কিনা ? তার বিছানা আলাদা করে দিন। দেখুন আলাদা বিছানায় আপনার ঘুম আসে কিনা ? বা কয়দিন ঘুম আসে। আপনি তার বিছানা আলাদা করার পর, সে সংশোধিত হয় কিনা ? সে আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে, ঠিক এই কারণে তাকে তালাক দিতে চাচ্ছেন, নাকি অন্য কোনো কারণও আছে ? সে-ই কি আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে, নাকি আপনিও করেন ? আপনার সাথে তার খারাপ আচরণ করার জন্য আপনি নিজেও কি দায়ি কিনা বা আপনার পরিবার সন্তান বা অন্য কোনো কারণে তার মধ্যে বিরক্তিভাব সৃষ্টি হওয়ার কারণে সেই প্রভাব আপনার প্রতি তার আচরণে প্রকাশ পায় কিনা? সেই বিষয়গুলো বা আপনার নিজেকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছেন কিনা? দোষ কি তার একার ? নাকি আপনারও দোষ আছে ? সে যেহেতু নামাজ পড়ে এবং পর্দা করে, এইটা একটা বিরাট গুণ, এমন স্ত্রীও আছে যারা নামাজ না পড়ার কারণে এবং পর্দা না করার কারণে স্বামীকে জাহান্নামে নিয়ে ছাড়বে, আপনার স্ত্রী কি সেরকম ? এই বিষয়গুলো এবং এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আপনাকে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। স্বামীর সাথে সদাচারণের হাদীসগুলো তাকে শুনাবেন। তার সাথে সুন্দর আচরণ করুন। গৃহস্থালী কাজ একঘেয়েমি এবং বিরক্তিকর, এছাড়া মাহিলাদের মাসিক একটা অসুস্থতার সৃস্টি হয়, মনোবিজ্ঞানীদের মতে এই সময়ে মহিলাদের আচরণে কিছুটা অসংলগ্নতা ও বিরক্তিভাব প্রকাশ পেতে পারে। অতএব, তালাকই এসব বিষয়ের একমাত্র সমাধান নয়। বরং, এসব বিষয়ে হুট করে তালাকের কথা ভাবা একজন পুরুষের আত্মমর্যাদাহীনতার পরিচায়ক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো এইটা পুরুষত্বের অপমান এবং নিকৃষ্টতর হীনমন্যতা। ইসলামে তালাকের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এটা তো অনেক পরের ব্যাপার। এর পূর্বে স্ত্রীর বিছানা আলাদা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাকে বিভিন্ন মনীষীদের উপমা এবং কুরআন হাদীস থেকে বুঝানোর কথা বলা হয়েছে। পরিস্কার বলে দেওয়া হয়েছে : যদি তোমার স্ত্রীর কোনো বিষয় তোমার পছন্দ না হয়, তাহলে তার আরো অন্যান্য অনেক বিষয় আছে, যা তোমার পছন্দনীয়। অতএব, সেই দিক গুলো লক্ষ্য করে তার সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করো। ইসলামের এই উপদেশ গুলো তো আপনাকে মানতে হবে ।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...