(গণনা পুস্তক ২৫: ১-৫ এবং ৩১: ১৬-১৭)

 
1পরে ইস্রায়েল শিটীমে বাস করিল, আর লোকেরা মোয়াবের কন্যাদের সহিত ব্যভিচারে লিপ্ত হইল। 2সেই কন্যারা তাহাদিগকে আপনাদের দেব-প্রসাদ ভোজনের নিমন্ত্রণ করিল, এবং লোকেরা ভোজন করিয়া তাহাদের দেবগণের কাছে প্রণিপাত করিল। 3আর ইস্রায়েল বাল্‌-পিয়োর [দেবের] প্রতি আসক্ত হইতে লাগিল; অতএব ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল। 4সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি লোকদের সমস্ত অধ্যক্ষকে সঙ্গে লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে সূর্যের সম্মুখে উহাদিগকে টাঙ্গাইয়া দেও; তাহাতে ইস্রায়েলের উপর হইতে সদাপ্রভুর প্রচণ্ড ক্রোধ নিবৃত্ত হইবে। 5তখন মোশি ইস্রায়েলের বিচারকর্তৃগণকে কহিলেন, তোমরা প্রত্যেকে বাল-পিয়োরের প্রতি আসক্ত আপন আপন লোকদিগকে বধ কর।
6আর দেখ, মোশির ও ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীর সাক্ষাতে ইস্রায়েল-সন্তানদের মধ্যে এক পুরুষ আপন জ্ঞাতিগণের নিকটে এক মিদিয়নীয়া স্ত্রীকে আনিল, তৎকালে লোকেরা সমাগম-তাম্বুর দ্বারে রোদন করিতেছিল। 7তাহা দেখিয়া হারোণ যাজকের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস মণ্ডলীর মধ্য হইতে উঠিয়া হস্তে বর্শা লইলেন; 8আর সেই ইস্রায়েলীয় পুরুষের পশ্চাৎ পশ্চাৎ কুঠরিতে প্রবেশ করিয়া ঐ দুই জনকে, সেই ইস্রায়েলীয় পুরুষকে এবং পেট দিয়া সেই স্ত্রীকে, বিদ্ধ করিলেন; তাহাতে ইস্রায়েল-সন্তানগণ হইতে মহামারী নিবৃত্ত হইল। 9যাহারা ঐ মহামারীতে মরিয়াছিল, তাহারা চব্বিশ সহস্র লোক।
10পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 11লোকদের মধ্যে আমার পক্ষে অন্তর্জ্বালা প্রকাশ করাতে হারোণ যাজকের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস ইস্রায়েল সন্তানগণ হইতে আমার ক্রোধ নিবৃত্ত করিল; এই জন্য আমি অন্তর্জ্বালায় ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সংহার করিলাম না। 12অতএব তুমি এই কথা বল, দেখ, আমি তাহাকে আমার শান্তিকর নিয়ম দিয়াছি; 13তাহা তাহার পক্ষে ও তাহার ভাবী বংশের পক্ষে চিরস্থায়ী যাজকত্বের নিয়ম হইবে; কেননা সে আপন ঈশ্বরের পক্ষে অন্তর্জ্বালা প্রকাশ করিয়াছে, এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছে। 14ইস্রায়েলীয় যে পুরুষ ঐ মিদিয়নীয়া স্ত্রীর সহিত হত হইয়াছিল, তাহার নাম সিম্রি, সে সালূর পুত্র; সে শিমিয়োনীয়দের একজন পিতৃকুলাধ্যক্ষ ছিল। 15আর ঐ হতা মিদিয়নীয়া স্ত্রীর নাম কস্‌বী, সে সূরের কন্যা; ঐ সূর মিদিয়নের মধ্যে এক পিতৃকুলস্থ লোকদের অধ্যক্ষ ছিল।
16পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 17তুমি মিদিয়নীয়দিগকে ক্লেশ দেও ও আঘাত কর। 18কেননা পিয়োর বিষয়ক ছলে এবং সেই পিয়োরের জন্য মহামারীর দিবসে হতা তাহাদের আত্মীয়া কস্‌বী নাম্নী মিদিয়নীয়া অধ্যক্ষের কন্যা বিষয়ক ছলে তাহারা তোমাদিগকে প্রবঞ্চনা করিয়া ক্লেশ দিয়াছে।
 
 
 
 
1সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 2তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের জন্য মিদিয়নীয়দিগকে প্রতিফল দেও; তৎপরে তুমি আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইবে। 3তখন মোশি লোকদিগকে কহিলেন, তোমাদের কতক লোক যুদ্ধার্থে সজ্জিত হউক, সদাপ্রভুর জন্য মিদিয়নকে প্রতিফল দিতে মিদিয়নের বিরুদ্ধে যাত্রা করুক। 4তোমরা ইস্রায়েল-বংশসমূহের প্রত্যেক বংশ হইতে এক এক সহস্র লোক যুদ্ধে প্রেরণ করিবে। 5তাহাতে ইস্রায়েলের সহস্র-সহস্রের মধ্যে এক এক বংশ হইতে এক এক সহস্র মনোনীত হইলে যুদ্ধের জন্য বারো সহস্র লোক সজ্জিত হইল। 6এইরূপে মোশি এক এক বংশের এক এক সহস্র লোককে, এবং ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহসকে যুদ্ধে প্রেরণ করিলেন, এবং পবিত্র স্থানের পাত্র সকল ও রণবাদ্যের তূরী পীনহসের হস্তগত ছিল। 7পরে মোশির প্রতি সদাপ্রভুর দত্ত আজ্ঞা অনুসারে তাহারা মিদিয়নের সহিত যুদ্ধ করিল, ও সমস্ত পুরুষকে বধ করিল। 8আর তাহারা মিদিয়নের রাজগণকে তাহাদের অন্য নিহত লোকদের সহিত বধ করিল; ইবি, রেকম, সূর, হূর, ও রেবা, মিদিয়নের এই পাঁচ জন রাজাকে বধ করিল; বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকেও খড়্‌গ দ্বারা বধ করিল। 9আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ মিদিয়নের সকল স্ত্রীলোক ও বালক-বালিকাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া গেল, এবং তাহাদের সমস্ত পশু, সমস্ত মেষপাল ও সমস্ত সম্পত্তি লুটিয়া লইল; 10আর তাহাদের সমস্ত নিবাস-নগর ও সমস্ত ছাউনি পোড়াইয়া দিল। 11আর তাহারা লুন্ঠিত দ্রব্য এবং মনুষ্য কি পশু, সমস্ত ধৃত জীব সঙ্গে লইয়া চলিল। 12তাহারা যিরীহোর নিকটবর্তী যর্দনতীরস্থ মোয়াবের তলভূমিতে মোশির, ইলিয়াসর যাজকের ও ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলীর নিকটে বন্দিগণকে ও যুদ্ধে ধৃত জীবগণকে এবং লুন্ঠিত দ্রব্য সকল শিবিরে লইয়া গেল।
13আর মোশি, ইলিয়াসর যাজক ও মণ্ডলীর সমস্ত অধ্যক্ষ তাহাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে শিবিরের বাহিরে গেলেন। 14তখন যুদ্ধ হইতে প্রত্যাগত সেনাপতিদের, অর্থাৎ সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উপরে মোশি ক্রুদ্ধ হইলেন। 15মোশি তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি সমস্ত স্ত্রীলোককে জীবিত রাখিয়াছ?
 
 16দেখ, বিলিয়মের পরামর্শে তাহারাই পিয়োর দেবের বিষয়ে ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সদাপ্রভুর বিপরীতে সত্যলঙ্ঘন করাইয়াছিল, তন্নিমিত্তই সদাপ্রভুর মণ্ডলীতে মহামারী হইয়াছিল। 17অতএব তোমরা এখন বালক-বালিকাদের মধ্যে সমস্ত বালককে বধ কর, এবং শয়নে পুরুষের পরিচয়প্রাপ্ত সমস্ত স্ত্রীলোককেও বধ কর;  
 
18কিন্তু যে বালিকারা শয়নে পুরুষের পরিচয় পায় নাই, তাহাদিগকে আপনাদের জন্য জীবিত রাখ। 19আর তোমরা সাত দিন শিবিরের বাহিরে ছাউনি করিয়া থাক; তোমরা যত লোক মনুষ্যহত্যা করিয়াছ, ও হত লোককে স্পর্শ করিয়াছ, সকলে তৃতীয় দিবসে ও সপ্তম দিবসে আপনাদিগকে ও আপন আপন বন্দিগণকে শুচি কর; 20আর যাবতীয় বস্ত্র, চর্ম নির্মিত যাবতীয় বস্তু, ছাগলোম নির্মিত যাবতীয় বস্তু ও কাষ্ঠ নির্মিত যাবতীয় বস্তুর বিষয়ে আপনাদিগকে শুচি কর।
21আর যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, ইলিয়াসর যাজক সেই যোদ্ধাদিগকে কহিলেন, সদাপ্রভু কর্তৃক মোশিকে দত্ত ব্যবস্থার এই বিধি; 22কেবল স্বর্ণ, রৌপ্য, পিত্তল, লৌহ, রাঙ্গ ও সীসা প্রভৃতি 23যে সকল দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয় না, সেই সকল অগ্নির মধ্য দিয়া চালাইবে, তাহাতে তাহা শুচি হইবে; তথাপি তাহা শুচিকরণ জলে শুচি করিতে হইবে; কিন্তু যে যে দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয়, তাহা তোমরা জলের মধ্য দিয়া চালাইবে। 24আর সপ্তম দিবসে তোমরা আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিবে; তাহাতে শুচি হইবে; পরে শিবিরে প্রবেশ করিবে।
25পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 26তুমি ও ইলিয়াসর যাজক এবং মণ্ডলীর পিতৃকুলপতিগণ যুদ্ধে ধৃত জীবগণের, অর্থাৎ বন্দি মনুষ্যদের ও পশুদের সংখ্যা গ্রহণ কর। 27আর যুদ্ধে ধৃত সেই জীবগণকে দুই অংশ করিয়া, যে যোদ্ধারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের ও সমস্ত মণ্ডলীর মধ্যে বিভাগ কর। 28আর যুদ্ধে গমনকারী যোদ্ধাদের নিকট হইতে সদাপ্রভুর নিমিত্তে কর গ্রহণ কর; মনুষ্য, গরু, গর্দভ ও মেষ, এই সকলের মধ্যে প্রতি পাঁচ শত জীবের মধ্য হইতে এক জীব, 29তাহাদের অর্ধাংশ হইতে লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে উত্তোলনীয় উপহার বলিয়া ইলিয়াসর যাজককে দেও। 30আর তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের অর্ধাংশের বিভাগ হইতে মনুষ্য, গরু, গর্দভ ও মেষাদি সমস্ত পশুর প্রতি পঞ্চাশ জীব হইতে এক এক জীব লও, এবং সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দেও। 31মোশিকে সদাপ্রভু যেমন আজ্ঞা করিলেন, মোশি ও ইলীয়াসর যাজক সেইরূপ করিলেন। 32যোদ্ধাগণ কর্তৃক লুণ্ঠিত বস্তু সকল ছাড়া ঐ ধৃত জীবসমূহ ছয় লক্ষ পঁচাত্তর সহস্র মেষ, 33ও বাহাত্তর সহস্র গরু, 34একষট্টি সহস্র গর্দভ, 35আর বত্রিশ সহস্র মনুষ্য, অর্থাৎ শয়নে পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্ত স্ত্রীলোক ছিল। 36তাহাতে যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের প্রাপ্য অর্ধাংশের সংখ্যা হইল তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ; 37সেই মেষ হইতে সদাপ্রভুর লভ্য কর হইল ছয়শত পঁচাত্তরটি মেষ। 38আর গরু ছিল ছত্রিশ সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বাহাত্তরটি। 39আর গর্দভ ছিল ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল একষট্টিটি। 40আর মনুষ্য ছিল ষোল সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বত্রিশটি প্রাণী। 41সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আজ্ঞা করিলেন, তদনুসারে মোশি সেই কর অর্থাৎ সদাপ্রভুর উত্তোলনীয় উপহার যাজক ইলিয়াসরকে দিলেন। 42আর মোশি যে অর্ধাংশ যোদ্ধাদের নিকট হইতে লইয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণকে দিয়াছিলেন, 43মণ্ডলীর সেই অর্ধাংশ সংখ্যাতে তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ, 44ছত্রিশ সহস্র গরু, 45ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত গর্দভ, 46ও ষোল সহস্র মনুষ্য ছিল। 47পরে মোশি ইস্রায়েল-সন্তানগণের সেই অর্ধাংশ হইতে মনুষ্যের ও পশুর মধ্যে প্রতি পঞ্চাশ জীব হইতে এক জীব লইয়া সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দিলেন, যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আজ্ঞা করিলেন।
48পরে সৈন্যসাহস্রের উপরে কর্তৃত্বকারী সহস্রপতিরা ও শতপতিরা মোশির নিকটে আসিলেন; 49আর তাঁহারা মোশিকে কহিলেন, আপনার এই দাসগণ আমাদের অধীন যোদ্ধাদের সংখ্যা গ্রহণ করিয়াছে, আমাদের মধ্যে একজনও কমে নাই। 50আর আমরা প্রতিজন স্বর্ণাভরণ, নূপুর, বলয়, অঙ্গুরীয়, কুণ্ডল ও হার, এই যে সকল পাইয়াছি, তাহা হইতে সদাপ্রভুর সম্মুখে আমাদের প্রাণের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার আনিয়াছি। 51তখন মোশি ও ইলিয়াসর যাজক তাঁহাদের হইতে সেই স্বর্ণ, শিল্পীকৃত আভরণ, লইলেন। 52আর সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিবেদিত, সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উত্তোলনীয় উপহারের সমস্ত স্বর্ণ ষোল সহস্র সাত শত পঞ্চাশ শেকল পরিমিত হইল। 53যোদ্ধারা প্রত্যেকেই আপনাদের নিমিত্ত লুন্ঠিত দ্রব্য লইয়াছিল। 54পরে মোশি ও ইলিয়াসর যাজক সহস্রপতিদের ও শতপতিদের নিকট হইতে সেই স্বর্ণ গ্রহণ করিলেন, এবং সদাপ্রভুর সম্মুখে ইস্রায়েল-সন্তানগণের স্মরণার্থক চিহ্নরূপে তাহা সমাগম-তাম্বুতে আনিলেন।
 

আদিপুস্তক ১৩:১০

1পরে অব্রাম ও তাঁহার স্ত্রী সমস্ত সম্পত্তি লইয়া লোটের সঙ্গে মিসর হইতে [কনান দেশের] দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রা করিলেন। 2অব্রাম পশুধনে ও স্বর্ণ রৌপ্যে অতিশয় ধনবান ছিলেন। 3পরে তিনি দক্ষিণ হইতে বৈথেলের দিকে যাইতে যাইতে বৈথেলের ও অয়ের মধ্যবর্তী যে স্থানে পূর্বে তাঁহার তাম্বু স্থাপিত ছিল, 4সেই স্থানে আপনার পূর্বনির্মিত যজ্ঞবেদির নিকটে উপস্থিত হইলেন; তথায় অব্রাম সদাপ্রভুর নামে ডাকিলেন। 5আর অব্রামের সহযাত্রী লোটেরও অনেক গো-মেষাদি এবং তাম্বু ছিল। 6আর সেই দেশে একত্র বাস সমেপাষ্য হইল না, কেননা তাঁহাদের প্রচুর সম্পত্তি থাকাতে তাঁহারা একত্র বাস করিতে পারিলেন না। 7আর অব্রামের পশুপালকদের ও লোটের পশুপালকদের মধ্যে বিবাদ হইল। তৎকালে সেই দেশে কনানীয়েরা ও পরিষীয়েরা বসতি করিত। 8তাহাতে অব্রাম লোটকে কহিলেন, বিনয় করি, তোমাতে ও আমাতে এবং তোমার পশুপালকগণে ও আমার পশুপালকগণে বিবাদ না হউক; কেননা আমরা পরস্পর জ্ঞাতি। 9তোমার সম্মুখে কি সমস্ত দেশ নাই? বিনয় করি, আমা হইতে পৃথক হও; হয়, তুমি বামে যাও, আমি দক্ষিণে যাই; নয়, তুমি দক্ষিণে যাও, আমি বামে যাই।
10তখন লোট চক্ষু তুলিয়া দেখিলেন, যর্দনের সমস্ত অঞ্চল সোয়র পর্যন্ত সর্বত্র সজল, সদাপ্রভুর উদ্যানের ন্যায়, মিসর দেশের ন্যায়, কেননা তৎকালে সদাপ্রভু সদোম ও ঘমোরা বিনষ্ট করেন নাই। 11অতএব লোট আপনার নিমিত্ত যর্দনের সমস্ত অঞ্চল মনোনীত করিয়া পূর্বদিকে প্রস্থান করিলেন; এইরূপে তাঁহারা পরস্পর পৃথক হইলেন। 12অব্রাম কনান দেশে থাকিলেন, এবং লোট সেই অঞ্চলস্থিত নগরসমূহের মধ্যে থাকিয়া সদোমের নিকট পর্যন্ত তাম্বু স্থাপন করিতে লাগিলেন। 13সদোমের লোকেরা অতি দুষ্ট ও সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে অতি পাপিষ্ঠ ছিল।
14অব্রাম হইতে লোট পৃথক হইলে পর সদাপ্রভু অব্রামকে কহিলেন, চক্ষু তুলিয়া এই যে স্থানে তুমি আছ, এই স্থান হইতে উত্তর-দক্ষিণে ও পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টিপাত কর; 15কেননা এই যে সমস্ত দেশ তুমি দেখিতে পাইতেছ, ইহা আমি তোমাকে ও যুগে যুগে তোমার বংশকে দিব। 16আর পৃথিবীস্থ ধূলির ন্যায় তোমার বংশ বৃদ্ধি করিব; কেহ যদি পৃথিবীর ধূলি গণিতে পারে, তবে তোমার বংশও গণা যাইবে। 17উঠ, এই দেশের দৈর্ঘ্যপ্রস্থে পর্যটন কর, কেননা আমি তোমাকেই ইহা দিব।
18তখন অব্রাম তাম্বু তুলিয়া হিব্রোণে স্থিত মম্রির এলোন বনের নিকটে গিয়া বাস করিলেন, এবং সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিলেন।

যাত্রা পুস্তক ৪: ১-১৭

1মোশি উত্তরে কহিলেন, কিন্তু দেখুন, তাহারা আমাকে বিশ্বাস করিবে না, ও আমার রবে মনোযোগ করিবে না, কেননা তাহারা বলিবে, সদাপ্রভু তোমাকে দর্শন দেন নাই। 2তখন সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তোমার হস্তে ওখানি কি? তিনি বলিলেন, যষ্টি। তখন তিনি কহিলেন, উহা ভূমিতে ফেল। 3পরে মোশি ভূমিতে ফেলিলে তাহা সর্প হইল; আর মোশি তাহার সম্মুখ হইতে পলায়ন করিলেন। 4তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, “হস্ত বিস্তার করিয়া উহার লেজ ধর,” তাহাতে তিনি হস্ত বিস্তার করিয়া ধরিলে উহা তাঁহার হস্তে যষ্টি হইল- 5“যেন তাহারা বিশ্বাস করে যে, সদাপ্রভু, তাহাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর তোমাকে দর্শন দিয়াছেন।”
6পরে সদাপ্রভু তাঁহাকে আরও কহিলেন, তুমি তোমার হস্ত বক্ষঃস্থলে দেও; তিনি বক্ষস্থলে হস্ত দিলেন; পরে তাহা বাহির করিলে দেখ, তাঁহার হস্ত হিমের ন্যায় কুষ্ঠযুক্ত হইয়াছে। 7পরে তিনি কহিলেন, “তোমার হস্ত আবার বক্ষঃস্থলে দাও”। তিনি আবার বক্ষঃস্থলে হস্ত দিলেন, পরে বক্ষঃস্থল হইতে হস্ত বাহির করিলে দেখ, তাহা পুনরায় তাঁহার মাংসের ন্যায় হইল। 8‘তাহারা যদি তোমাকে বিশ্বাস না করে, এবং ঐ প্রথম চিহ্নেও মনোযোগ না করে, তবে দ্বিতীয় চিহ্নে বিশ্বাস করিবে। 9আর এই দুই চিহ্নেও যদি বিশ্বাস না করে ও তোমার রবে মনোযোগ না করে, তবে তুমি নদীর কিছু জল লইয়া শুষ্ক ভূমিতে ঢালিয়া দিও; তাহাতে তুমি নদী হইতে যে জল তুলিবে, তাহা শুষ্ক ভূমিতে রক্ত হইয়া যাইবে।’
10পরে মোশি সদাপ্রভুকে কহিলেন, হায় প্রভু! আমি বাক্‌পটু নহি, ইহার পূর্বেও ছিলাম না, বা এই দাসের সহিত তোমার আলাপ করিবার পরেও নহি; কারণ আমি জড়মুখ জড়জিহ্বা। 11সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, মনুষ্যের মুখ কে নির্মাণ করিয়াছে? আর বোবা, বধির, চক্ষুষমান বা অন্ধকে কে নির্মাণ করে? আমি সদাপ্রভুই কি করি না? 12এখন তুমি যাও; আমি তোমার মুখের সহবর্তী হইব, ও কি বলিতে হইবে, তোমাকে জানাইব। 13তিনি কহিলেন, হে আমার প্রভু, বিনয় করি, যাহার হাতে পাঠাইতে চাও, পাঠাও। 14তখন মোশির প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল; তিনি কহিলেন, তোমার ভ্রাতা লেবীয় হারোণ কি নাই? আমি জানি, সে সুবক্তা; আরও দেখ, সে তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেছে; তোমাকে দেখিয়া হৃষ্টচিত্ত হইবে। 15তুমি তাহাকে বলিবে, ও তাহার মুখে বাক্য দিবে; এবং আমি তোমার মুখের ও তাহার মুখের সহবর্তী হইব, ও কি করিতে হইবে, তোমাদিগকে জানাইব। 16তোমার পরিবর্তে সে লোকদের কাছে বক্তা হইবে; ফলতঃ সে তোমার মুখস্বরূপ হইবে, এবং তুমি তাহার ঈশ্বরস্বরূপ হইবে। 17আর তুমি এই যষ্টি হস্তে লইবে, ইহা দ্বারাই তোমাকে সেই সকল চিহ্ন-কার্য করিতে হইবে।
 
 

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...