কোরবানী কার উপর ফরজ

 প্রশ্ন : কোরবানি কার ওপর ফরজ? ওইভাবে হয়তো আয় নাই, কিন্তু ব্যাংকে কিছু টাকা জমা আছে। তার ওপর কি কোরবানি ফরজ?

উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, ফরজ এ বক্তব্য আসলে আলেমদের মধ্যে কেউ দেননি। আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে কোরবানি কি সুন্নাহ নাকি ওয়াজিব, এ নিয়ে।

একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, এটি সুন্নত, সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি অধিকাংশ আলেমের বক্তব্য। আরেকদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, কোরবানি ওয়াজিব। তিন থেকে চারজন ওলামায়ে কেরাম ছাড়া আর কেউ কোরবানিকে ওয়াজিব বলেননি।

শরিয়তে যাঁদের ওপর কোরবানি বাধ্যতামূলক হয় তাঁরা হলেন মুসলিম হওয়া, বিবেকসম্পন্ন হওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, এগুলো ঠিক থাকবে।

এর সঙ্গে আর একটি শর্ত যোগ হবে সেটি হলো, যে ব্যক্তি ওই দিন কোরবানির পশু জবাই করার সামর্থ্য রাখে, সেই ব্যক্তির ওপর কোরবানি আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি বলেছেন অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম।

কিন্তু যাঁরা ওয়াজিব বলেছেন, তাঁরা দুটি কঠিন শর্ত দিয়েছেন। একটি হচ্ছে, ওই ব্যক্তির নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে, যেই নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ হয়। অন্যটি হচ্ছে তাঁকে মুসাফির হওয়া যাবে না। এ দুটি শর্ত করে বলা হয়েছে কোরবানি ওয়াজিব।

এ দুটির একটি শর্তও যদি কোনো ব্যক্তি পূরণ করতে না পারে, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে না।

কিন্তু বিশুদ্ধ বক্তব্য হচ্ছে, রাসুল (সা.) যে হাদিস দিয়ে ওয়াজিবের দলিল দিয়েছেন সেটি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন কোরবানি করে।’ সামর্থ্যকে রাসুল (সা.) সাধারণ রেখে দিয়েছেন।

অন্য রেওয়াতের মধ্যে এসেছে, ‘সামর্থ্য থাকার পরও যদি সে কোরবানি না করে, তাহলে সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ এই হাদিস দিয়েই ওয়াজিবের দলিল দেওয়া হয়েছে। নবীজি (সা.) নেসাব পরিমাণ সম্পদের কথা মোটেও বলেননি, এটি না থাকলেও চলবে।

ব্যাংকে কোরবানি দেওয়ার মতো অর্থ যদি আপনার থাকে, তাহলে আপনি কোরবানি দিতে পারবেন।  

- বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানির হুকুম কী?

 


প্রশ্ন:

 বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানির হুকুম কী? এগুলো কাপড়ে বা গায়ে লাগলে ধোয়া ছাড়া নামায পড়া যাবে কী?

জবাব:

بسم الله الرحمن الرحيم

বৃষ্টিপাতের ফলে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানি পাক। শরীরে বা কাপড়ে লাগলে তা ধৌত করা ছাড়া নামায পড়া জায়েজ। কেননা এ থেকে বাঁচা অসম্ভব। তবে ধুয়ে নেয়া উত্তম।

কিন্তু যদি পানিতে স্পষ্ট নাপাক দেখা যায় বা নিশ্চিত নাপাক স্থানে পানি জমে, তবে সে পানি লাগলে তা ধোয়া ছাড়া নামায হবেনা।

فى رد المحتار- ( قَوْلُهُ : وَطِينُ شَارِعٍ ) مُبْتَدَأٌ خَبَرُهُ قَوْلُهُ : عَفْوٌ وَالشَّارِعُ الطَّرِيقُ ط .وَفِي الْفَيْضِ : طِينُ الشَّوَارِعِ عَفْوٌ وَإِنْ مَلَأَ الثَّوْبَ لِلضَّرُورَةِ وَلَوْ مُخْتَلِطًا بِالْعَذِرَاتِ وَتَجُوزُ الصَّلَاةُ مَعَهُ ……….. أَقُولُ : وَالْعَفْوُ مُقَيَّدٌ بِمَا إذَا لَمْ يَظْهَرْ فِيهِ أَثَرُ النَّجَاسَةِ كَمَا نَقَلَهُ فِي الْفَتْحِ عَنْ التَّجْنِيسِ .(رد المحتار-1/530-531

প্রামান্য গ্রন্থাবলী:

১. ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫৩০-৫৩১

২. ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪৩

৩. হেদায়া-১/৭৬

৪. আহসানুল ফাতওয়া-২/৮৩,১০১

৫. ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-৫/১২৮,২৭৩

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

নামাজে প্রতি রাকাতের শুরুতে বা প্রতি সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া।

 নামাজে প্রথম রাকাতে বিসমিল্লাহ তো পড়তেই হবে। এরপর  প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পূর্বে বিসমিল্লাহ পাঠ করা সুন্নাত। এবং সুরা তাওবা ছাড়া অন্যান্য সুরার শুরুতেও বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নাত । তবে যদি কেউ না পাঠ করে তাহলেও অসুবিধা নাই। 


===================

জবাব: প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য ছোট তিন আয়াত বা যেকোনো সূরা পাঠের আগে চুপিচুপি বিসমিল্লাহ পাঠ ইমাম মুহাম্মাদ রহ.  এর মতে সুন্নাত। এটা ইমাম ও একা নামাযি ব্যক্তির জন্য সুন্নাত।(আল-মাউসুআ আল-ফিকহিয়্যা ৮/৮৭)

ফাতাওয়া আল্ লাজনাহ আদ্দাইমাহ (৬/৩৭৮)-তে এসেছে,

دلَّت السنَّة الثابتة أنه ﷺ يقرأ البسملة في الصلاة قبل الفاتحة وقبل غيرها من السوَر ، ما عدا سورة التوبة

রাসুলুল্লাহ ﷺ নামাযে সূরা ফাতিহার আগে এবং সূরা তাওবা ছাড়া অন্যান্য সুরার আগে বিসমিল্লাহ পড়তেন; এটা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী


=====================


প্রশ্ন : নামাজে প্রতিটি সূরা পড়ার পূর্বেই কি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়তে হবে বা এটা পড়া কি ফরজ?

উত্তর : সূরা আল ফাতেহা যখন আপনি তিলাওয়াত করবেন, তখন বিসমিল্লাহ পড়বেন। এটাই হলো সুন্নাহ। কেউ কেউ এটাকে বাধ্যতামূলক বলেছেন। যেহেতু কোরআনুল কারিমে সূরা আল ফাতেহার অন্যতম প্রথম আয়াত হচ্ছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। এই মাসআলার মধ্যে আলেমদের দ্বিমত থাকলেও বিশুদ্ধ দিক হচ্ছে এটি সূরা ফাতেহার আয়াত। তাই অধিকাংশ তাহকিক মাহকিক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, সূরা ফাতেহার শুরুতেই বিসমিল্লাহ পরেই তার পর শুরু করব। অবশ্য আবু মোহাম্মদ বাক্কি রাহমাতুল্লা আলাইর যে রেওয়াত রয়েছে, সে রেওয়াতের মধ্যে কিন্তু এটাকে আয়াতই উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কিন্তু কোনো অপশন নেই যে সূরা ফাতেহার আগে বিসমিল্লাহ পড়বে না, এ ধরনের কোনো অপশন নেই। বাকি অন্য যে সূরাগুলো রয়েছে, সেগুলোর শুরুতেই বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নাহ। এটি ওই বিসমিল্লাহ যে লেখা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন লেখার জন্য।

তাই সে ক্ষেত্রে কেউ যদি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে, তাহলে তিনি সুন্নাহ ঘোষণা করলেন। আর যদি না পড়েন, এতেও কোনো অসুবিধা নেই। যেহেতু এটি ওই সূরার আয়াত বা অংশ নয়।


-- বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

খতনা করার হুকুম কী? কত বছর বয়সে খতনা করানো উত্তম?

 প্রশ্ন : খতনা করার হুকুম কী? কত বছর বয়সে খতনা করানো উত্তম? আমাদের এলাকায় এক লোক নতুন মুসলমান হয়েছে। তার বয়স ৩৫। তার খতনার বিধান কী? অনেকে ছেলের খতনা করিয়ে লোকজনকে দাওয়াত করে খাওয়ায় এটা কেমন? এ ধরনের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা যাবে কী? অনুগ্রহ করে জানালে কৃতজ্ঞ হব। 


উত্তর : খতনা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি শিআরে ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা নবীগণের সুন্নত) পাঁচটি : খতনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের পশম উঠানো, মোঁচ ছোট করা এবং নখ কাটা। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬২৯৭] শারীরিকভাবে শক্ত-সামর্থ্যবান হওয়ার পরই সুবিধাজনক সময় ছেলের খতনা করিয়ে দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব। আর কোনো কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে যদি খতনা না করা হয় অথবা বয়স্ক হওয়ার পর কেউ ইসলাম গ্রহণ করে তাহলেও তার খতনা করা জরুরি। অতএব প্রশ্নোক্ত নবমুসলিমকেও খতনা করে নিতে হবে। ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন ইসলাম গ্রহণ করত তখন সে বড় হলেও তাকে খতনা করার আদেশ করা হত। [আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস : ১২৫২] খতনার উত্তম সময়ের ব্যাপারে ফকীহগণ বলেন, শিশুর শারীরিক উপযুক্ততা ও তার বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌঁছার আগেই বা এর মাঝামাঝি সময়ে যেমন, ৭-১০ বছর বা অনুর্ধ্ব ১২ বছরের মধ্যে করে নেওয়া উত্তম। আর খতনা উপলক্ষ্যে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রমাণ নেই। তাছাড়া বর্তমানে যে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই বর্জনীয়। এছাড়া এতে গান-বাদ্য ইত্যাদি শরীয়তবিরোধী কোনো কিছু থাকলে তা তো সম্পূর্ণ নাজায়েয হবে। [ফাতহুল বারী ১১/৯২, ৯/৫০৩, ১০/৩৫৫, ৪/৪১৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫১-৭৫২, ৬/২৮২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১৩২; আলবাহরুর রায়েক ৭/৯৫-৯৬] গ্রন্থনা ও সম্পদানা : মাওলানা মিরাজ রহমান সৌজন্যে : মাসিক আল-কাউসার


লিংক

How To Make Android Color Coded Tajweed Alquran

 মজার কোডিং 

.

আচ্ছা আসেন, আজকে একটু কোডিং নিয়ে আলোচনা করি। 

.

কুরআনের আয়াত গুলো কালার কোডেড তাজবীদ দেখার জন্য চিন্তায় ছিলাম।  অনেক গুলো অক্ষরের মধ্যে মাঝে মাঝে একটি অক্ষর ভিন্ন রঙ্গের বানানো খুব বেশী কঠিন কিছু না। কিন্তু পুরো কুরআনে এই কাজ করা যথেষ্ট কঠিন।   পরবর্তীতে খোজ পেলাম  api.alqruanCloud এবং GlobalQuran ওয়েব সাইট  কালার কোডেড তাজবীদ এর এপিয়াই তৈরী করে রেখেছে।  এখন দেখুন  আপনি যখন ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি আয়াত রঙিন তাজবীদ অক্ষর সহ তাদের কাছে রিকোয়েস্ট করবেন তার লিংকটা এরকম :

  http://api.alquran.cloud/ayah/24:35/quran-tajweed  

  - এখানে ২৪ নং সুরার ৩৫ নং আয়াত চাওয়া হয়েছে।  যদি সুরা ফাতিহার ১ নং আয়াত অর্থাৎ বিসমিল্লাহ আয়াতটি চান তাহলে লিংক হলো :

  http://api.alquran.cloud/ayah/1:1/quran-tajweed  

 ইচ্ছে করলে উপরের  লিংকে একটু কষ্ট করে  ক্লিক করে মজা দেখতে পারেন। আয়াতটির মূল চেহারা দেখলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন।  আপনি কল করার পর তাদের কাছ থেকে বিসমিল্লাহ কালার কোডেড আয়াত হিসেবে যা পাবেন তা হলো  এই : 

"\u0628\u0650\u0633\u0652\u0645\u0650 [h:1[\u0671]\u0644\u0644\u0651\u064e\u0647\u0650 [h:2[\u0671][l[\u0644]\u0631\u0651\u064e\u062d\u0652\u0645\u064e[n[\u0640\u0670]\u0646\u0650 [h:3[\u0671][l[\u0644]\u0631\u0651\u064e\u062d[p[\u0650\u064a]\u0645\u0650"

উপরের লেখা গুলোতে বিসমিল্লাহ পুরো আয়াতটি রঙিন তাজবীদে লেখা আছে।  এখন এই লেখাটিকে দুই ভাবে হিউম্যান রিডেবল করা যাবে । দুই ভাবে বললাম এই জন্য যে, একভাবে গিটহাব এ দেখানো হয়েছে। আর একভাবে আমি নিজে তৈরী করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। 

গিটহাবে যে সিস্টেম দেখানে হয়েছে, তা হলো :  php (parser) > Css Script > html  

আর আমি তাফহীম এ্যাপে যেভাবে করেছি :  jsonParser > Replace Method ( Make Html String  ) > Html to Text 

এই দুটির মধ্যে পার্থক্য হলো গিটহাব এর পদ্ধতিতে যেহেতু  পিএইচপি এবং সিএসএস আছে, তাই কুরআনের আয়াতগুলো মূল কুরআন অধ্যয়নে দেখানো সম্ভব নয়, আলাদা স্থানে (এ্যাকটিভিটিতে দেখাতে হবে), যেমনটি গ্রীন টেক এ্যাপের ক্ষেত্রে করা হয়েছে,  কিন্তু,   আলহামদুলিল্লাহ আমার পদ্ধতিতে   মূল কুরআন অধ্যয়ন স্ক্রীণেই কুরআন অনুবাদের সাথেই  এ্যারাবিক রঙিন  লেখাটি  দেখানো সম্ভব। 

এখন আসেন উপরের বিসমিল্লাহ আয়াতটি এপিআই থেকে পাওয়ার পর আমরা একে জেসন পার্সার এর মাধ্যমে হিউম্যান রিডেবল তৈরী করলাম । জেসন পার্সার কোড নিম্নরূপ : 

jsonObject = new JSONObject(mainString);

JSONObject object = jsonObject.getJSONObject("data");

String text = object.getString("text");

এই পার্সার এর মাধ্যমে বিসমিল্লাহ রঙিন  আয়াতটির হিউম্যান রিডেবল চেহারা দাড়ালো  নিম্নরূপ : 

"بِسْمِ [h:1[ٱ]للَّهِ [h:2[ٱ][l[ل]رَّحْمَ[n[ـٰ]نِ [h:3[ٱ][l[ل]رَّح[p[ِي]م

এখানে খেয়াল করে দেখেন উপরোল্লিখিত ভাবে যারা পুরো কুরআন কে লিখেছেন / টাইপ করেছেন এবং সবার জন্য উন্মুক্ত এপিআই করে দিয়েছেন তারা কতটুকু পরিশ্রম করেছেন। ভাবা যায় ? 

এখন বিসমিল্লাহ আয়াতটি এ্যাপের মধ্যে রঙিন অক্ষরে দেখানোর জন্য আমরা যে জাভা মেথডটি তৈরী করেছি তা হচ্ছে টেক্সট এর রিপ্লেস ফাংশনের মাধ্যমে তৈরী করা । জাভা মেথডটি নিম্নরূপ : 


public static String replaceText (String text){


        return    text.replaceAll("\\d+", "")

                .replace(":", "")

                .replace("[h[","<font color = '#CAAE1C'>" )

                .replace("[s[","<font color = '#069ECF'>" )

                .replace("[l[","<font color = '#11E6CE'>" )

                .replace("[n[","<font color = '#00ff00'>" )

                .replace("[p[","<font color = '#B97BE4'>" )

                .replace("[m[","<font color = '#AC215F'>" )

                .replace("[q[","<font color = '#788ACC'>" )

                .replace("[o[","<font color = '#A6791D'>" )

                .replace("[c[","<font color = '#D500B7'>" )

                .replace("[f[","<font color = '#CA57DA'>" )

                .replace("[w[","<font color = '#D53333'>" )

                .replace("[i[","<font color = '#4CAF50'>" )

                .replace("[a[","<font color = '#169777'>" )

                .replace("[u[","<font color = '#169200'>" )

                .replace("[d[","<font color = '#FF4081'>" )

                .replace("[b[","<font color = '#A7FFE3'>" )

                .replace("[g[","<font color = '#FF0000'>" )

                .replace("]","</font>" );

    }

এই মেথডটি চালিয়ে দিয়ে বিসমিল্লাহ আয়াতটি যেভাবে পেলাম তা নিম্নরূপ : 


 بِسْمِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font>للَّهِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font><font color = '#11E6CE'>ل</font>رَّحْمَ<font color = '#00ff00'>ـٰ</font>نِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font><font color = '#11E6CE'>ل</font>رَّح<font color = '#B97BE4'>ِي</font>مِ,

 

 এইটা আসলে একটা Html String , এটাই সর্বশেষ রূপ। এরপর এ্যাপে কালার কোডেড তাজবীদ (রঙিন অক্ষরের ) বিসমিল্লাহ দেখানোর জন্য আমরা জাভার যে মেথডটি ব্যবহার করেছি তাহলো সেট টেক্সট উইথ এইচটিএমএল ফরমেট : 

 textView.setText(Html.fromHtml(bismillahText)); 

 এই শেষ লাইন কোডটির ফলেই আমরা রঙিন হরফে আয়াতগুলো দেখতে পাবো।  এখন প্রশ্ন হতে পারে এপিআই থেকে একটা আয়াত বা সুরা কল করার জন্য তো এ্যাপের অনলাইন হওয়া প্রয়োজন। জ্বি ঠিক বলেছেন। আসলে যা করেছি তা হলো, ম্যানুয়ালি ব্রাউজারে  লিংক দিয়ে এপিয়াই কল করে পুরো একটি সুরা ডাউনলোড করেছি। এরপর অনলাইন জেসন পার্সার এর মাধ্যমে সুরাটিকে হিউম্যান রিডেবল ফরমেট তৈরী করেছি। এরপর  প্রতিটি আয়াতের সাথে সুরা নাম্বার, আয়াত নাম্বার, রুকু নাম্বার, পারা নাম্বার ইত্যাদি যোগ করেছি।  এরপর আয়াতগুলো দিয়ে তথা পুরো কুরআনের  একটি এসকিউলাইট (sQlite) ডাটাবেজ তৈরী করেছি। এরপর এ্যাপের মধ্যে এই সিস্টেম করেছি যে,  অন ডিমান্ড পুরো ডাটাবেজটি একসাথে ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে এবং যেখানে কুরআন অধ্যয়ন করা হয়, ঠিক সেই স্থানেই পূর্বের ডাটাবেজ এর  কালো আয়াত এর পরিবর্তে নতুন রঙিন ডাটাবেজ  এর রঙিন আয়াত দেখাবে। আলহামদুলিল্লাহ। 

উল্লেখ্য যে, পুরো ডাটাবেইজ টি মাত্র চার এমবিরও কম। 

 তো এই হলো রঙিন আয়াত / কালার কোডেড তাজবীদ এ্যান্ড্রয়েডে প্রদর্শনের সিস্টেম। হয়তো অনেক কঠিন মনে হচ্ছে, আসলে আলহামদুলিল্লাহ বিষয়টা অনেক সোজা।  আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গিটহাব এর দেখানো পদ্ধতির পিএইচপি স্ক্রীপ্ট এবং জাভা স্ক্রীপ্ট বাইপাস করে শুধুমাত্র  জেসন পার্সার ও   জাভার মাধ্যমে এত সহজে যে এই জিনিসটা এ্যান্ড্রয়েডে প্রদর্শন করনো যাবে, এই বুদ্ধিটা আসলে মহান আল্লাহই দয়া করে আমাকে দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, অবনত মস্তকে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। বিশ্বাস করুন, এখানে আমার নিজের কোনই কৃতিত্ব নাই। সব কৃতিত্বই একমাত্র মহান আল্লাহর। 

 আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।





খাসি অথবা বলদ কুরবানী করা ।

 " খাসী ও বলদ কুরবানি নিয়া-ফেত্নাবাজীদের বিব্রান্তি নিরসনে পড়ুন ও শেয়ার করুন"

বিষয়ঃ- খাসী দ্বারা কোরবানী করার শরয়ী বিশ্লেষণ।
লেখকঃ- মুফতী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল রেজভী, হানাফী, ক্বাদেরী।
খাসীর পরিচয়
===========
প্রথমে আমরা খাসী অর্থে ব্যবহৃত শব্দ গুলোর প্রতি লক্ষ্য করব। আর এ অর্থে ব্যবহৃত শব্দগুলো হলোঃ- خَصِیُّ (খাসীয়্যিয়ুন), مَوْجُوءُ (মাওজুউন) مَجْبُوْب (মাজবুবুন)।
★ خَصِیُّ (খাসীয়্যিয়ুন) শব্দটি اَلْخِصَاءُ “আল-খিসাউ” শব্দ থেকে গঠিত। আর “আল খিসাউ” অর্থ হলো- খাসী করা। (আল কাউসার,১৭৭ পৃষ্ঠা)
[]=> এক লক্ষ পচিশ হাজার শব্দার্থ সম্বলিত ফিরোজুল লুগাত এর ৫৯১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেঃ- “খাসী ঐ প্রানীকে বলা হয় যার অন্ডকোষ বের করা হয়েছে।
[]=> সদরুশ শরীয়ত আল্লামা মুফতী আমজাদ আলী আ’যমী রেজভী হানাফী (রাদ্বীয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বলেনঃ- “(খাসী) অর্থাৎ যার অন্ডকোষ পৃথক করা হয়েছে। (বাহারে শরীয়ত, ১৫ তম খন্ড, ৬৮৯ পৃষ্ঠা)
★ مَجْبُوْبٌ (মাজবুবুন) শব্দটি “جِبَابُ বা جَبٌّ (জিবাবুন বা জাব্বুন) থেকে গঠিত। যার অর্থ অন্ডকোষ কেটে বের করা। (আল কাউসার, ১৫৪ পৃষ্ঠা)
[]=> আলা হযরত কেবলার ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়ার ৮ম খন্ড ৪৬৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, المجبوب العاجز عن الجماع অর্থাৎ, মাজবুব হল যৌন সঙ্গম থেকে অক্ষম। আর যে প্রাণী যৌন সঙ্গম থেকে অক্ষম তাকেই খাসী বলা হয়।
★ مَوْجُوْءٌ (মাওজুউন) শব্দটি وِجَاءٌ (বিজাউন) অথবা وَجْاْ (ওজাউন) থেকে গঠিত। وِخَاءٌ বা وَجْاٌ অর্থ হলঃ- অন্ডকোষ থেতলে দিয়ে খাসী করা। (আল কাউসার,৫৮৭ পৃষ্ঠা)
[]=> আবু হানিফাতাচ্ছানী (যুগের দ্বিতীয় আবু হানিফা) আল্লামা শায়খ জাইনুদ্দীন ইবনে নজীম (রাদ্বীয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বলেনঃ-
الموجوء المخصی من الوجء وهو ان يضرب عروق الخصيۃ بشیء.
অর্থাৎ, (মাওজুউন) হলো খাসী। অর্থাৎ, কোন যন্ত্রের দ্বারা অন্ডকোষের রগসমূহ থেতলে দেয়া হয়েছে এমন প্রাণী। (বাহরুর রায়েক, ৮ম খন্ড, ১৭৬ পৃষ্ঠা) এখানেও আমরা জানতে পারলাম খাসীকৃত প্রাণীকেই (মাওজুউন) বলা হয়।
এছাড়াও ★ ইমাম আলাউদ্দিন আবু বকর বিন মাসউদ আল কাসানী হানাফী (রাদ্বীয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার লিখিত কিতাব, “বাদাঈ-উস-সানাঈ ৫ম খন্ড, ৮০ পৃষ্ঠায়, ★ আবু দাউদ শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্হ আওনুল মাবুদ, ৭ম খন্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠায়, ★ হিদায়া কিতাবের ৪৪৮ নং পৃষ্ঠা ৩নং পাদটিকায় ঐ (মাওজুউন) অর্থ অন্ডকোষ থেতলিয়ে দেওয়া, কিংবা দুইটি অন্ডকোষ টেনে বের করা, অথবা লোহার যন্ত্রদিয়ে অন্ডকোষের রগসমূহ কেটে দেওয়া হয়েছে এমন প্রানীকে (মাওজুউন) তথা খাসী বলা হয়।
সম্মানিত পাঠক! উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, অন্ডকোষ কর্তিত, বা অন্ডকোষ থেতলিত, অথবা অন্ডকোষের রগসমূহ কর্তিত পশুকেই খাসী বলা হয়। সুতরাং যারা বলেন যে আরব দেশে পাঠাকেই খাসী বলা হয়, আমি আপনাদেরকে বলবো দয়া করে আপনারা উপরোক্ত কিতাবগুলো এবং উল্লেখিত অভিধানগুলো ছাড়াও অন্যান্য অভিধানগুলো দেখুন। আর প্রকৃত সত্য বিষয়টি প্রচার করে সাধারণ মু’মিন মুসলমানদেরকে বিভ্রান্তির কবল থেকে হেফাজত করুন। মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবীবের উসিলায় আমাদের সকলকে সত্য গ্রহন করার তাওফিক দান করুন।(আমিন)
হালাল পশুকে খাসী করার বিধান
=======================
সম্মানিত পাঠক! সর্বস্তরের মুজতাহিদগণের ঐক্যমত হলো হালাল পশুকে খাসী করা জায়েয। এ পর্বে আমি ঐ মহান ব্যক্তির মতামত দ্বারাই শুরু করছি যিনির পরিচয়ে আমরা হলাম রেজভী। আর তিনি হলেন ১৪ শত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, ইমামে আহলে সুন্নাত, ইমাম আহমদ রেজা খাঁন আলাইহির রাহমাতুর রাহমান।
১ নং দলিল,
আলা হযরত কিবলার শাহকার গ্রন্হ ফাতাওয়া-ই-রেজভীয়া যা হানাফী মাযহাবের সকল ফাতাওয়া গ্রন্হের সারাংশ, যা ১২ খন্ড (বর্তমান ৩০ খন্ড) উক্ত কিতাবের ৮ম খন্ডের ৪৬৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
وفی الهنديۃ عن الخلاصۃ يجوز المجبوب العاجز عن الجماع
(পশুকে) যৌন সঙ্গম থেকে অক্ষম করে দেয়া জায়েয। উক্ত কথাটি হিন্দিয়া কিতাবের মধ্যে খোলাসা থেকে আনা হয়েছে। “উক্ত ইবারতের সার কথা হল পশুকে খাসী করা জায়েয।”
২ নং দলিল,
আলা হযরতের নিকট একটি প্রশ্ন আর আলা হযরতের জবাবঃ-
মাস’আলাঃ- ওলামা-ই-দ্বীন এ মাস’আলার ব্যাপারে কি বলেন যে, ষাড় এবং বকরাকে খাসী করা জায়েয আছে কিনা? বিস্তারিত বর্ণনা করুন প্রতিদান দেওয়া হবে।
উত্তরঃ- সর্বসম্মতিক্রমে জায়েয। এর মধ্যে উপকার রয়েছে। খাসীর গোশত উত্তম হয়। খাসী এবং বলদ পরিশ্রম বেশি সহ্য করতে পারে। প্রকৃত পক্ষে পশুকে খাসী করার মধ্যে যদি বাস্তবিকই কোন উপকার অথবা ক্ষতিদূরিকরণ উদ্দেশ্য হয় তাহলে সাধারণ ভাবে হালাল। যদিও গোশত খাওয়া অযোগ্য প্রাণী হয়। যেমন, বিড়াল ইত্যাদি। নতুবা হারাম। এ মূল নিতির ভিত্তিতে আমাদের উলামায়ে কেরাম ঘোড়াকেও খাসী করা জায়েয বলেছেন। যখন ক্ষতি দূরিকরণ উদ্দেশ্য হয়, যদিও বা কেউ কেউ নিষেধ করে থাকেন। (আহকামে শরীয়ত, ৩য় খন্ড,২৩৬ ও ২৩৭ পৃষ্ঠা)
৩ নং দলিল,
তিনি আরো বলেনঃ- হ্যা মানুষকে খাসী করা সর্বসম্মতিক্রমে একেবারেই হারাম। দুররুল মুখতারে বর্ণিত আছে- চতুষ্পদ জন্তু এমনকি বিড়ালকেও খাসী করা জায়েয আছে। আর মানুষকে খাসী করা হারাম। কেউ কেউ বলেছেন ঘোড়াকে খাসী করার মধ্যে যদি উপকার থাকে তবে হালাল অন্যথায় হারাম। (আহকামে শরিয়ত, ৩ খন্ড, ২৩৭ পৃষ্ঠা।)
৪ নং দলিল,
১২দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ মুহিউদ্দিন আওরঙ্গজেব বাদশাহ আলমগীর কর্তৃক প্রায় সাতশত মুজতাহিদ দ্বারা লিখিত ফাতাওয়া-ই-আলমগীরীতে উল্লেখ রয়েছে-
خصاء بنی ادم حرام بالاتفاق واماخصاء الفرس فقد ذكر شمس الاٸمة الحلوانی فی شرحه لابأس به عند اصحابنا وذكر شيخ الاسلام فی شرحه انه حرام واما فی غيره من البهاٸم فلابأس به اذا كان فيه منفعۃ واذا لم يكن فيه منفعۃ او دفع ضرر فهو حرام كذا فی الذخريۃ-
অর্থাৎ, আদম সন্তানের খাসী করা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। সামসুল আইম্মা হালয়ানী তার শারাহ এর মধ্যে বলেন আমাদের আসহাবের মতে ঘোড়াকে খাসী করার মধ্যে কোন ক্ষতি নেই। আর শায়খুল ইসলাম তার শরাহ এর মধ্যে হারাম বলে উল্লেখ করেছেন। ঘোড়া ব্যতীত অন্যান্য পশুকে খাসী করার মধ্যে যদি কোন উপকার থাকে তবে খাসী করতে কোন ক্ষতি নেই। আর যদি কোন উপকার বা ক্ষতি দূরীকরণ উদ্দেশ্য না হয় তবে হারাম। (ফাতাওয়া-ই-আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ৩৫৭ পৃষ্ঠা।)
৫ নং দলিল,
৫ম তবকার মুজতাহিদ আবুল হাসান আহমদ বিন আবু বকর মুহাম্মদ বিন আহমদ বিন জাফর বিন হামদান আল বাগদাদী আল কুদুরী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেনঃ-
ولابأس بخصاء البهاٸم
অর্থাৎ, চতুষ্পদ প্রাণীকে খাসী করণে কোন ক্ষতি নেই। (মুখতাসারুল কুদুরী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা)
৬ নং দলিল,
শায়খুল ইসলাম বোরহান উদ্দিন আবুল হাসান আলী ইবনে আবু বকর আল ফারগানী আল মুরগীনানী আল হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেনঃ-
ولابأس بخصاء البهاٸم
অর্থাৎ, চতুষ্পদ প্রানীকে খাসী করণে কোন ক্ষতি নেই। (আল হিদায়া, ২য় খন্ড, ৪৭৪ পৃষ্ঠা)
৭ নং দলিল,
তাফসীরে জালালাইন ৭৮ পৃষ্ঠা ১৯ নং পাদটিকায় সূরা নিসার ১১৯ নং আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে-
كره انس خصاء الغنم وجوزه الجمهور لان فيه غرضا ظاهرا
অর্থাৎ, হযরত আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) ছাগলকে খাসী করা অপছন্দ করেছেন। আর জমহুর তথা অধিকাংশ উলামা-ই-কেরাম জায়েয বলেছেন। কেননা এতে প্রকাশ্য উদ্দেশ্য রয়েছে।
৮ নং দলিল,
اخرج عبد الرزاق و عبدبن حميد وابن جرير عن سبيل انه سمع شهربن حوشب قرا هذه الايۃ فليغيرن خلق اﷲ قال الخصاء منه فامرت ابا التياج فسأل الحسن عن خصاء الغنم قال لابأس به-
অর্থাৎ, হযরত আব্দুর রাজ্জাক, আবদ ইবনে হুমাইদ ও ইবনে জারীর হযরত শাবীল থেকে বর্ণনা করেন তিনি শাহর বিন শাবীলকে فليغيرن خلق اﷲ (অত:পর তারা আল্লাহ’র সৃষ্টিকে পরিবর্তন করবে) আয়াতটি পড়তে শুনেছেন। তিনি বলেন, এখানে খাসী করন বুঝানো হয়েছে। অত:পর আমি তিয়াজকে আদেশ করলাম অত:পর তিনি হাসানকে খাসী করন সম্পর্কে প্রশ্ন করলেনঃ- তিনি বলেন তাতে কোন ক্ষতি নেই। (তাফসীরে দুররুল মানছুর ২য় খন্ড, ২৪৬ পৃষ্ঠা।)
৯ নং দলিল,
তাফসীরে ফায়জুর রহমান ৫ম পারা ২৭৭ পৃষ্ঠায় সূরা নিসার ১১৯ নং আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- অর্থাৎ, এ আয়াতাংশের সাধারণ হুকুম দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষ অথবা পশু কোন কিছুকেই খাসী করা যাবে না। কিন্তু ফোকাহা-ই-কেরাম প্রয়োজনে পশুকে খাসী করা জায়েয বলেছেন। কিন্তু আদম সন্তানদের মধ্যে পুরুষকে খাসী করা সর্বাবস্থায় হারাম।
অনুরূপভাবে তাফসীরে বায়জভী শরীফের ৭ম খন্ড, ৩০৪ ও ৩০৫ পৃষ্ঠায়, তাফসীরে রুহুল মায়ানী ৫ম খন্ড, ২০৬ পৃষ্ঠায় এবং তাফসীরে রুহুল বায়ান ২য় খন্ড, ৩৩৪ পৃষ্ঠায় সূরা নিসার উক্ত আয়াতাংশের তাফসীরে বলা হয়েছে যে, ফোকাহা-ই-কেরাম প্রয়োজনে পশুকে খাসী করার বৈধতার স্বীকৃতি দিয়েছেন। সম্মানিত পাঠক মন্ডলী! উপরুক্ত দলিল ভিত্তিক আলোচনার দ্বারা আমরা সুস্পষ্ঠভাবে বুঝতে পারলাম যে, সাধারণ ভাবে পশুকে খাসী করা হারাম কিন্তু ফোকাহায়ে কেরামের সর্বসম্মত ঐক্যমত হলো প্রয়োজনে পশুকে খাসী করা বৈধ। কেননা এতে প্রকাশ্য উদ্দেশ্য রয়েছে। আর এ উদ্দেশ্যের ব্যাখ্যা আ’লা হযরত কেবলা তার আহকামে শরীয়তের মধ্যে বর্ণনা করেছেন। যা আমরা আলোচ্য বিষয়ের ২ নং দলিলে লক্ষ্য করেছি।
★ হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে সত্য বুঝার এবং গ্রহন করার তৌফিক দান করুন। আমিন বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন।
খাসী দ্বারা কোরবানী করার বিধান
========================
উট, গরু, ছাগল এবং এগুলোর অধিন সকল প্রকার প্রাণীর নর, মাদী এবং খাসী দ্বারা কোরবানী করা জায়েয। এ বিষয়ে সদরুশ শরীয়ত আল্লামা মুফতী আমজাদ আলী আ’যমী রেজভী হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বাহরে শরীয়তের ১৫ তম খন্ডের ৬৮৯ পৃষ্ঠায় বলেনঃ-
نراور مادہ خصی اور غیر خصی سب کاایک حکم ہے یعنی سب کی قربانی ہو سکتی ہے
অর্থাৎ, নর এবং মাদী, খাসী এবং খাসী নয় এমন সকল পশুর একই বিধান। অর্থাৎ এমন সকল পশুর কোরবানীই জায়েয হবে।
পবিত্র হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত খাসী কোরবানী করা সুন্নাতে মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু স্বয়ং হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাসী কোরবানী করেছেন সেহেতু সর্বযোগের ও সর্বস্তরের মুজতাহিদ গণের রায় হল, যদি বাহ্যিক দৃষ্টিতে খাসীর মধ্যে আইব বা ত্রুটি দেখা যায় মূলতঃ শরীয়তের দৃষ্টিতে ইহা কোন আইব বা ত্রুটি নয় বরং তা হল কামাল পরিপূর্ণতা। কেননা খাসীর গোশত অধিক সুস্বাদু। তাই সমস্ত মুহাদ্দিসীন ও মুজতাহীদগণের ঐক্যমত হল খাসী কোরবানী করা আফজল বা উত্তম নিম্নে দলিল ভিত্তিক আলোচনা করা হল-
হাদিস শরীফ দ্বারা খাসী কোরবানীর প্রমাণ
==============================
১ নং দলিল,
عن جابر رضی الله تعالی عنه قال ذبح النبی صلی الله علیه وسلم یوم الذبح کبشین اقرنین املحین موجوئین۔
অর্থাৎ, হযরত জাবির (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদা কালো মিশ্রিত রঙ্গের শিং বিশিষ্ট দু’টি খাসী ছাগল কোরবানী ঈদের দিন জবেহ করেছেন।
রেফারেন্সঃ- ১) আবু দাউদ শরীফ, ৩৮৬ পৃষ্ঠা।
২) মিশকাত শরীফ, ২২৮ পৃষ্ঠা।
২ নং দলিল,
حدثنا محمدبن یحی ثنا عبد الرزاق ابن سفیان الثوری عبد الله بن محمد بن عقیل عن ابی سلمة عن عاٸشة و عن ابی هریرة ان رسول الله صلی الله علیه وسلم کان اذا اراد ان یضحی اشتری کبشین عظیمین سمینین اقرنین املحین موجوأین فذبح احدهما عن امته لمن شهد لله بالتوحید و شهد له بالبلاغ و ذبح الاخر عن محمد وعن ال محمد صلی الله علیه وسلم۔
অর্থাৎ, হযরত আয়েশা সিদ্দিকা ও হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোরবানীর ইচ্ছা করতেন তখন দু’টি মোটা তাজা, গোশতযুক্ত, শিং যুক্ত, সাদা কালো মিশ্রিত রঙ্গের ও খাসীকৃত দুম্বা (মেষ) ক্রয় করতেন। অত:পর এর একটি আপন উম্মতের যারা আল্লাহ’র তাওহীদের স্বাক্ষী দেয় এবং তার নবুওয়াতের প্রচারের স্বাক্ষী দেয়, তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার পরিবার বর্গের পক্ষ থেকে কোরবানী করতেন।
রেফারেন্সঃ- ইবনু মাজাহ শরীফ, ২২৫ পৃষ্ঠা।
শরহুল হাদিস দ্বারা খাসী কোরবানীর প্রমাণ
==============================
৩ নং দলিল
১০ ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) রচিত কিতাব মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ এর মধ্যে হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর বর্ণিত হাদিস মাওজুয়াআইনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেনঃ-
فی شرح السنة کره بعض اهل العلم الموجوٸة لنقصان العضو و الاصح انه غیر مکروه الان الخصاء یزید اللحم طیبا و الان ذالک العضو لایٶکل۔
অর্থাৎ, শরহে সুন্নাহ নামক কিতাবে উল্লেখ রয়েছে বাহ্যিক ত্রুটির কারণে কোন কোন আহলে এলেম খাসী কোরবানী অপছন্দ করেছেন। আর অধিক বিশুদ্ধ অভিমত হল খাসী কোরবানী মাকরুহ বিহীন জায়েয। কেননা নিশ্চয়ই খাসীর গোশত অধিক এবং উত্তম হয় (আর যে অঙ্গটা কেটে ফেলে দেওয়া হয়) উহা খাওয়ার যোগ্য নহে।
রেফারেন্স :- মিরকাত শরহে মিশকাত ৩য় খন্ড, ৫১৩ পৃষ্ঠা।
উপরুক্ত দলিল দ্বারা প্রমাণিত হলো খাসীর মধ্যে বাহ্যিক দৃষ্টিতে (নুকসা) বা ত্রুটি পরিলক্ষিত হলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা কোন ত্রুটি বলে গণ্য নহে বরং তা কামাল বা পরিপূর্ণতাই।
৪ নং দলিল,
১১ দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) “মাওজুআইনের” ব্যাখ্যায় বলেনঃ- যদি বলা হয় যে, কিছু অঙ্গ কমে যাওয়ায় খাসী ত্রুটি যুক্ত হবে যেহেতু কান কাটা ও শিং ভাঙ্গা হওয়ার কারণে কোরবানী জায়েয হয় না সেহেতু খাসী ত্রুটি যুক্ত হওয়ার পরেও কি করে কোরবানী যায়েজ হবে? উত্তর হলো, খাসী করার কারণে প্রাণীর মধ্যে বাহ্যিক ত্রুটি দেখা গেলেও প্রকৃতপক্ষে শরীয়তের দৃষ্টিতে এটাই পরিপূর্নতা। কেননা খাসীর গোশত উত্তম, সুস্বাদু এবং খাসীর মূল্যও অনেক বেশি হয়ে থাকে।
রেফারেন্সঃ- আশয়াতুল লুমআত ফার্সী ১ম খন্ড ৬১০ পৃষ্ঠা।
আশয়াতুল লুমআত উর্দু ২য় খন্ড, ৬৮৯ পৃষ্ঠা।
৫ নং দলিল,
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সেরতাজ হাকিমুল উম্মত আল্লামা মুফতী আহমদ ইয়ারখান নঈমী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) মিরআতুল মানাযীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ এর মধ্যে প্রখ্যাত সাহাবী হযরত জাবের (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস শরীফে “মাওজুআইন” এর ব্যাখ্যায় বলেনঃ-
اس حديث سے معلوم ہواکہ خصی قربانی جاتزہے کہ خصی ہونا عیب نہيں بلکہ کمال ہے کہ خصی کا گوشت اعلی ہوتا ہے يوں ہی خصی بتل خصی بھیے کی بھی قربانی درست ہے۔
অর্থাৎ, এ হাদিস শরীফ দ্বারা বুঝা গেল যে, খাসীকৃত পশুর কোরবানী জায়েয। কেননা পশু খাসীকৃত হওয়া কোন দোষের নয় বরং পরিপূর্ণতা। কারন খাসীর গোশত উন্নত মানের হয়। অনুরূপ খাসীকৃত বলদ ও মহিষের কোরবানীও দুরস্ত আছে।
রেফারেন্সঃ- মিরআত শরহে মিশকাত ২য় খন্ড ৩৭১ পৃষ্ঠা।
৬ নং দলিল
সহীহ আবু দাউদ শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ আওনুল মাবুদ শরহে আবু দাউদ শরীফে উল্লেখ রয়েছেঃ-
قال الخطابی وفی هذا دلیل علی ان الخصی فی الضحایا غیر مکروه وقد کرهه بعض اهل العل لنقص العضو وهذا النقص لیس بعیب لان الخصاء یزید اللحم طیبا و ینفی فیه الزهومة و سوء الراٸحة۔
অর্থাৎ, খাত্তাবী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন, আর এতেই দলিল রয়েছে যে, নিশ্চয়ই কোরবানীর ব্যাপারে খাসী মাকরূহ নয় যদিও কোন কোন আলেম বাহ্যিক দৃষ্টিতে খাসীর মধ্যে ত্রুটি দেখে খাসী কোরবানী করা অপছন্দ করেছেন। অথচ এ বাহ্যিক ত্রুটি (শরীয়তের দৃষ্টিতে) কোন আইব বা ত্রুটির মধ্যে গণ্য নয়, কেননা খাসীকৃত পশুর গোশত অধিক সুস্বাদু ও দুর্গন্ধমুক্ত এবং এর দ্বারা গরীব মিসকীন উপকৃত হয়।
রেফারেন্সঃ- আওনুল মাবুদ শরহে আবু দাউদ, ৭ম খন্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠা।
ফাত্বওয়ার কিতাব দ্বারা খাসী কোরবানীর প্রমাণ
=================================
চতুর্দশ শতাব্দির মুজাদ্দিদ ইমামে আহলে সুন্নাত আযীমুল বারাকাত, আযীমুল মারতাবাত, হামীয়ে সুন্নাত, মাহীয়ে বিদআত, পরওয়ানায়ে শাময়ে রিসালাত মুসলীম উম্মার জাগরণকারী হযরাতুল আল্লামা, মাওলানা, আল হাফিজ, আল-ক্বারী আশ শাহ ইমাম আহমদ রেজা খান (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) “আল আত্বাইয়ান নাবুবিয়্যাহ ফিল ফাত্বওয়া-ই-রেজভীয়া” এর মধ্যে দুইটি প্রশ্নের উত্তরে খাসী কোরবানী করা উত্তম বলেছেন। পাঠকগণের সুবিধার্থে প্রশ্ন দুইটি সহ উপস্থাপন করলাম।
৭ নং দলিল,
جناب مولانا صاحب بعد سلام علیک کے واضح ہوکہ بقر عید کی قربانی میں بکر خصی جاٸز ہے یا نہیں؟
الجواب: خصی قربانی افضل ہے اور اس میں ثواب زیادہ ہے۔
মাস’আলাঃ- জনাব মাওলানা সাহেব, সালামবাদ আরজ, কোরবানী ঈদে খাসীকৃত ছাগল কোরবানী করা কি জায়েয?
উত্তরঃ- খাসী কোরবানী উত্তম এবং এতে অধিক সাওয়াব রয়েছে।
রেফারেন্সঃ- ফাত্বওয়া-ই-রেজভীয়া ৮ম খন্ড, ৪৪২ পৃষ্ঠা।
৮ নং দলিল,
کیا فرما تے ہیں علماۓ دین اس مسٸلہ میں کہ بکر ے دوطرح خصی کۓ جاتے ہیں ایک یہ کہ رگیں کوٹ دی جاٸیں اس میں کوٸ عضوکم نہیں ہوتا دوسرے یہ کہ آلت تراش کر پھیک دی جاتی ہے اس صورت میں ایک عضو کم ہوگیا، ایسے خصی بھی قربانی جاٸز ہے یا نہیں؟ بعض لوگ بوجہ مذکور مما نعت کرتی ہیں بینوا اتوجروا۔
الجواب: جاٸز ہے کہ اس کی کمی سے جانور میں عیب نہیں اتا بلکہ وصف بڑھ جا تا ہے کہ خصی کا گوشت بہ نسبت محل کے زیادہ اچھا ہوتا ہے۔
মাস’আলাঃ- ওলামা-ই-দ্বীন কি বলেন- এ মাস’আলার ব্যাপারে যে, বকরা ছাগলকে দু’ভাবে খাসী করা হয়ে থাকে, (১) রগ কেটে দিয়ে। এতে কোন অঙ্গ কমে যায় না; (২) কোন যন্ত্রের দ্বারা অন্ডকোষ কেটে ফেলে দেয়া হয়। এ অবস্থায় এক অঙ্গ কমে যায়। এ দু’প্রকার খাসী দ্বারা কোরবানী করা জায়েয কিনা? কোন কোন লোক উল্লেখিত কারণে খাসী কোরবানী নিষেধ করে থাকেন। বিস্তারিত বর্ণনা করুন, প্রতিদান দেয়া হবে।
উত্তরঃ- জায়েয। কারণ অন্ডকোষ কমতির দ্বারা প্রাণীর মধ্যে কোন ত্রুটি আসেনা। বরং তার গুন বেড়ে যায়। কেননা খাসীর গোশত পাঠার তুলনায় অধিক উত্তম হয়ে থাকে।
রেফারেন্সঃ- ফাতাওয়া-ই-রেজভীয়াহ, ৮ম খন্ড ৪৬৮ পৃষ্ঠা।
৯ নং দলিল,
যুগের দ্বিতীয় আবু হানিফা আশ শায়খ যাইন উদ্দিন ইবনে নাজীম (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব বাহরুর রাইক শরহু কানযিদ দাকাইক এ উল্লেখ করেন-
والخصی وعن ابی حنیفة رحمة الله تعلی هو اولی لان لحمه اطیب وقد صح انه علیه الصلوة والسلام ضحی بکبشین املحین موجوٸین۔
অর্থাৎ, হযরত ইমাম আ’যম আবু হানিফা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণিত, খাসী কোরবানী করা উত্তম। কেননা নিশ্চয় খাসীর গোশত অধিক সুস্বাদু। আর তিনি সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে, নিশ্চয় রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদা কালো মিশ্রিত রঙ্গের দু’টি খাসী কোরবানী করেছেন।
রেফারেন্সঃ- রাহরুর রাইক শরহু কানযিদ দাকইক, ৮ম খন্ড, ১৭৬ পৃষ্ঠা।
১০ নং দলিল,
১২০০ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ মুহিউদ্দিন আওরঙ্গজেব বাদশাহ আলমগীর যিনি প্রায় সাতশত মুজতাহিদ দ্বারা ফাত্বওয়া-ই-আলমগীরী লিখিয়েছেন।(সুবহানাল্লাহ) #আমরা এখন খাসী কোরবানী সম্পর্কে ঐ প্রামণটি দেখব যা একযোগে এক বৈঠকে সাতশত মুজতাহিদ ঐক্যমত পোষণ করেছেন; আর তা হলো-
والخصی افضل من الفحل لانه اطیب لحما کذا فی المحیط۔
অর্থাৎ, পাঠা থেকে খাসী কোরবানী উত্তম। কেননা খাসীর গোশত অধিক সুস্বাদু।
রেফারেন্সঃ- ফাত্বওয়া-ই-আলমগীরী, ৪র্থ খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা।
১১ নং দলিল,
মালাকুল ওলাম নামে খ্যাত ইমাম আলা উদ্দিন আবু বকর বিন মাসউদ আল কাসানী আল হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর লিখিত বিশ্ব নন্দিত কিতাব ”বাদাঈ-উস-সানাঈ”তে উল্লেখ করেন-
روی عن ابی حنیفة رحمة الله تعالی فانه روی عنه انه سٸل عن التصحیة بالخصی فقال ما زاد فی لحمه انفع مما ذهب من خصیتیه۔
অর্থাৎ, ইমামে আ’যম হযরত আবু হানিফা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তাকে খাসী দ্বারা কোরবানী করা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যে পশুর দু’টি অন্ডকোষ কেটে বের করা হয়েছে এমন পশুর গোশত বেশী বিধায় তা দ্বারা অধিক উপকার সাধিত হয়।
রেফারেন্সঃ- বাদাঈ-উস-সানাঈ, ৫ম খন্ড, ৮০ পৃষ্ঠা।
১২ নং দলিল,
হানাফী মাযহাবের তৃতীয় তবকার মুজতাহিদ আল্লামা কাজী খান (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর বিশ্ববিখ্যাত কিতাব ফাত্বওয়া-ই-কাজী খান এর মধ্যে উল্লেখ আছে-
والانثی من الابل والبقر افضل من الذکر المعز افضل وکذا الذکر من الضأن اذا کان موجوٸا ای خصیا۔
অর্থাৎ, কোরবানীর ক্ষেত্রে উট থেকে উষ্ট্রী এবং ষাড় থেকে গাভী উত্তম। আর ছাগল এবং দুম্বা তখনি উত্তম হবে যখন তা খাসী হবে।
রেফারেন্সঃ- ফাত্বওয়া-ই-কাজী খান ৪র্থ খন্ড, ৩৩১ পৃষ্ঠা।
১৩ নং দলিল,
শারেহুল বোখারী আল্লামা আইনী হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর বিশ্বখ্যাত কিতাব “আল বিনাইয়া ফি-শারহিল হিদায়া” তে উল্লেখ করেছেন-
والخصی بالجر ای ویجوز ان یضحی بالخصی و هو منزوع الخصیتین ﴿لان لحمها اطیب﴾ وان لحمه اوجه علی ما لا یخفی ﴿وقد صح انخفاض ان النبی صلی الله علیه وسلم ضحی بکبشین املحین موجوٸین۔
অর্থাৎ, খাসী দ্বারা কোরবানী জায়েয। আর খাসী হল যার অন্ডকোষ দুটি টেনে বের করা হয়েছে। নিশ্চয় খাসীর গোশত অতি উত্তম। এতে কোন সন্দেহ নাই। আর সহীহ হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, নিশ্চয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদা-কালো মিশ্রিত রঙ্গের দু’টি খাসীকৃত ছাগল দ্বারা কোরবানী করেছেন।
রেফারেন্সঃ- আল বিনাইয়া ফি-শারহিল হিদায়া, ১১ তম খন্ড, ৪৪ পৃষ্ঠা।
১৪ নং দলিল,
সদরুশ শরীয়ত খলীফায়ে আ’লা হযরত আল্লামা মুফতী আমজাদ আলী আ’যমী রেজভী হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর রচিত বাহারে শরীয়তের মধ্যে রয়েছে-
بکری بکرے سے افضل ہے مگر خصی بکرا بکری سے افضل ہے۔
অর্থাৎ, নর ছাগল থেলে মাদী ছাগল থেকে উত্তম। কিন্তু খাসী নর ও মাদী থেকেও উত্তম।
রেফারেন্সঃ- বাহারে শরীয়ত, ১৫ তম খন্ড ৬৮৯ পৃষ্ঠা।
১৫ নং দলিল,
৬ষ্ঠ তবকার মুজতাহিদ আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেনঃ-
تجوز التضحیة المجبوب العاجز عن الجماع
অর্থাৎ, মাযবুব (অন্ডকোষ কর্তিত) যে পশু সঙ্গমে অক্ষম এমন পশুদ্বারা কোরবানী করা জায়েয।
১৬ নং দলিল,
পঞ্চম তবকার মুজতাহিদ আল্লামা আবুল হোসাইন আহমদ বিন আবু বকর আল বাগদাদী আল কুদুরী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন-
الخصی جاٸز فی الهدی لان ذلک یسمنه و یطیب لحمه کذا فی الجوهرة۔
অর্থাৎ, খাসী কোরবানী জয়েয। কেননা উহা মোটা তাজা হয় এবং গোশত হয় সুস্বাদু। অনুরূপ বর্ণনা জাওহিরা কিতাবেও রয়েছে।
রেফারেন্সঃ- কুদুরি, ৬৮ পৃষ্ঠা।
১৭ নং দলিল,
আল্লামা ছানা উল্লাহ পানিপথী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন- খাসী, শিং ভাঙ্গা (তবে মূলোৎপাটিত নয়) যে প্রাণীর শিং বিলকুল নেই, এমন পাগল প্রাণী যা ঘাস পানি খায়, চর্ম রোগাক্রান্ত তবে মোটাতাজা, যে প্রাণীর কতেক দাত নাই তবে খাদ্য গ্রহনে সক্ষম, যে প্রাণীর অধিকাংশ দাত আছে, যে প্রাণীর লেজ বা কানের অধিকাংশ আছে, যে প্রাণীর পায়ের খুর নেই তবে চলাফেরা করতে পারে, যে প্রাণীর কান জন্মগত ভাবেই ছোট এই সমস্ত প্রাণী দ্বারা কোরবানী করা বৈধ।
রেফারেন্সঃ- মালা-বুদ্দা মিনহু-১৪৬ পৃষ্ঠা।
১৮ নং দলিল,
পঞ্চম তবকার মুজতাহিদ শায়খুল ইসলাম বোরহান উদ্দিন আবুল হাসান আলী ইবনে আবু বকর আল ফারগানী আল মুরগীনানী আল হানাফী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর রচিত বিশ্ব বিখ্যাত আল হিদায়া কিতাবের মধ্যে রয়েছে-
والخصی لان لحمها اطیب قد صح ان النبی صلی الله علیه وسلم ضحی بکبشین املحین موجوٸین۔
অর্থাৎ, খাসী দ্বারা কোরবানী জায়েয। কেননা খাসীর গোশত অধিক উত্তম। সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদা-কালো মিশ্রিত রঙ্গের দু’টি খাসী কোরবানী করেছেন।
রেফারেন্সঃ- হেদায়া মায়া দিরায়া, ২য় খন্ড, ৪৪৮ পৃষ্ঠা।
উপরোক্ত দলিল ভিত্তিক আলোচনার দ্বারা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়ে গেলো যে, খাসীকৃত পশুর দ্বারা কোরবানী করা শুধু জায়েযই নয় বরং অতি উত্তম। কেননা স্বয়ং হুজুর কারীম রউফুর রাহীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাত মোবারকে খাসী কোরবানী করেছেন। যা সহীহ হাদিস বলে হানাফী মাযহাবের সকল মুহাদ্দিস ও মুজতাহিদগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন।
“সুতরাং শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী হালালকে হারাম জানা আর হারামকে হালাল জানা কুফুরী” অতএব যারা খাসী কোরবানীকে হারাম বলে ফাত্বওয়া দিয়ে থাকেন তাদের চিন্তা করা উচিত তাদের এই ফাত্বওয়া কার উপর প্রস্তাবে।
আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে সত্য গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন ছুম্মা আমিন বিজাহে নাবীয়্যিল কারীম আলাইহিস সালাতু ওয়াত তাসলীম।
সংগ্রহে-মনিরুল ইসলাম
কামিল ফিকহ
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া,চট্টগ্রাম৷

শরীরের অবাঞ্চিত লোম ও পায়ুপথের লোম পরিস্কার করা ।

 প্রশ্ন : 

মলমূত্রত্যাগের স্থানকেও খুর দ্বারা পরিস্কার করতে হবে!..এইটা করলে যখন নতুন ভাবে লোম উঠে তখন খুবই কষ্ট হয়।যদি লোম গুলো না চেচে যতদূর সম্ভব ছোটো করি জায়েজ হবে কি?কারণ ওখানে চুল কাটা খুবই কঠিন কাজ আসে পাশে কেটে  ও যেতে পারে,আর যদিও কেটে দেই তাহলে যখন নতুন করে চুল উঠবে তখন মারাত্বক খোচা লাগে যা সাধারণ চলা ফেরা নামাজ ইত্যাদি বিষয়ে ভীষণ সমস্যা সৃষ্টি করে।


জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  নাভীর নীচের অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা হলো :

পায়ের পাতার উপর ভর করে বসা অবস্থায় নাভী থেকে চার পাঁচ আঙ্গুল পরিমাণ নীচে যে ভাঁজ বা রেখা সৃষ্টি হয় সেখান থেকেই অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা শুরু। ঐ ভাঁজ থেকে দুই উরু পর্যন্ত ডান বামের লোম, গোপনাঙ্গের চার পাশের লোম, অণ্ডকোষ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত উদগত লোম এবং প্রয়োজনে মলদ্বারের আশ-পাশের লোম অবাঞ্ছিত লোমের অন্তর্ভুক্ত।

সাহাবী আনাস রাযি. বলেন,

وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ، وَنَتْفِ الإِبِطِ، وَحَلْقِ الْعَانَةِ، أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ يَوْماً.

অর্থাৎ, গোঁফ ছোট রাখা , নখ কাঁটা, বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নিচের লোম চেঁছে ফেলার জন্যে আমাদেরকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যেন, আমরা তা করতে চল্লিশ দিনের অধিক দেরী না করি। (মুসলিম ২৫৮)

আরো জানুনঃ 

পায়ুপথের আশেপাশের অবাঞ্ছিত লোম পুরুষরা ব্লেড/খুর দিয়ে পরিষ্কার করতে অসুবিধা হলে লোমনাশক ক্রীম বা তরল পদার্থ দিয়ে সেই লোম পরিষ্কার করা যাবে। এতে কোন অসুবিধা নেই।
,
★প্রশ্নে যেসব সমস্যার কথা বলা হয়েছে,সেই সমস্যার আলোকে কেহ যদি সেটা ব্লেড বা খুর ব্যবহার না করে,তলল পদার্থ ব্যবহার করে,এটিও কোনো সমস্যা নয়,আবার কেহ যদি শুধু যতদূর সম্ভব ছোটো করে,তাও জায়েজ হবে। 
তবে পরিস্কার রাখতে হবে। 
,
কেউ যদি কাঁচি দ্বারা ছোট করে রাখে, তাহলে জায়েয হবে, তবে উত্তম হবে না।
فإن أزال شعره بغير الحديد لا يكون على وجه السنة
যদি কেউ চেঁছে না ফেলে অন্য কোনভাবে পরিষ্কার করে তাহলে তা সুন্নাহ অনুযায়ী হবে না। (কিতাবুন নাওয়াযিল ১৫/৫৪৭)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)


=======================


এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :-

যৌনাঙ্গের লোম পরিস্কার করার বিধান :-
ইসলামে পুরুষ এবং মহিলার গোপনাঙ্গের চুল কাটার বিধান স্বভাবজাত সুন্নাত। ইবনু বায (রঃ) এটা সুন্নাতের মুআক্কাদাহ বা ওয়াজিব।(ফাতাওয়াল নূর আলাদ দারব লিইবনে বায-৯/২৫৬)

স্বভাবজাত সুন্নাত :- স্বভাবজাত সুন্নাত হলো এমন রীতি যা সম্পাদন করলে এর সম্পাদনকারী এমন ফিতরাতের সাথে বিশেষিত হবেন যে ফিতরাতের উপর আল্লাহ্‌ তার বান্দাদের সৃষ্টি করেছেন এবং এর উপর ভিত্তি করে তার হাশর-নাশর হবে। আল্লাহ্‌ তাদেরকে এর জন্য ভালবাসবেন। যেন তারা এর মাধ্যমে পূর্ণগুণের অধিকারী হতে পারে এবং আকৃতিগতভাবে মর্যাদা পায়। এ ব্যাপারে ইসলামী শরীয়াত একমত যে, এটা একটি প্রাচীন সুন্নাত যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন। এটি স্বভাবজাত বিষয়, যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন। (নাইলুল আওতার-১/১০৯)
স্বভাবজাত রীতি অনুসরণের মাধ্যমে দ্বীনই ও দুনিয়াবী অনেক কল্যাণ রয়েছে। যেমন: এর ফলে সমুদয় দৈহিক গঠন সুন্দর থাকে এবং শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নণ থাকে। (উম্মদাতুল কারী-২২/৪৫)

স্বভাবজাত সুন্নাত সমূহ :- عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: " عَشْرٌ مِنَ الْفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ، وَاسْتِنْشَاقُ الْمَاءِ، وَقَصُّ الْأَظْفَارِ، وَغَسْلُ الْبَرَاجِمِ، وَنَتْفُ الْإِبِطِ، وَحَلْقُ الْعَانَةِ، وَانْتِقَاصُ الْمَاءِ " قَالَ زَكَرِيَّا: قَالَ مُصْعَبٌ: وَنَسِيتُ الْعَاشِرَةَ إِلَّا أَنْ تَكُونَ الْمَضْمَضَةَ অর্থাৎ - আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: ১০ টি বিষয় স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। গোঁফ খাটো করা, দাঁড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেয়া, নখ কাটা, অঙ্গের গিরাসমূহ ঘষে মেজে ধৌত করা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা, নাভীর নীচের পশম পরিষ্কার করা, মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ব্যবহার করা তথা ইসতিনজা করা। যাকারিয়া বলেন, মাস‘আব বলেছেন: আমি দশ নম্বরটি ভুলে গেছি। সম্ভবতঃ তা হলো কুলি করা।( মুসলিম হা/ ২৬১ আবূ দাউদ হা/৫২, ইবনে মাজাহ হা/২৯৩)
অপর হাদিসে পাঁচটি বলা হয়েছে - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ قَالَ: الْفِطْرَةُ خَمْسٌ: الِاخْتِتَانُ، وَالِاسْتِحْدَادُ، وَقَصُّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمُ الْأَظْفَارِ، وَنَتْفُ الْإِبْطِ অর্থাৎ - আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন: স্বভাবজাত বিষয় ৫ টি। খাতনা করা, নাভীর নীচের লোম পরিষ্কার করা, গোঁফ খাটো করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা।(বুখারী হা/৫৮৯১, মুসলিম হা/২৫৭)

যৌনাঙ্গের লোম পরিস্কার করা :-
লোম পরিস্কার করার পরিসীমা :-
নাভীর নিচের(العانة ) বা যৌনাঙ্গের কোন যায়গা উদ্দেশ্য? এ নিয়ে কয়েকটি মত;
(ক) ইমাম নাওয়াবী (রঃ) বলেন, شعر العانة(যৌনাঙ্গের লোম) হল- পুরুষাঙ্গের উপর ও তার আশপাশের লোম। অনুরুপভাবে মহিলাদের যোনির উপর ও তার আশপাশের লোম। (শারহুন নাওয়াবী আলা মুসলিম-৩/১৪৮)
(খ) আবুল আব্বাস ইবনু শুরাইজ হতে বর্ণিত আছে- যৌনাঙ্গের লোমসহ পায়ুপথের আশপাশের লোম কাটা মুস্তাহাব্ব।
(গ) দাক্বীকুল ঈদ বলেন, পুরুষাঙ্গের ও যোনির উপরের অংশের লোম।
(ঘ) কেউ বলেছেন, যেখানে লোম গজায় সেই যায়গাকে العانة বলা হয়েছে। তাই পায়ুপথের লোম কাটা উত্তম ও মুস্তাহাব্ব।(পরের তিনটি মতই পাবেন; আওনুল মা'বূদ-১/৫৪)

যা দিয়ে যৌনাঙ্গের লোম পরিস্কার করতে হবে :- যে কোন উপকরণ দিয়ে পরিস্কার করা যায়। নারী-পুরুষ যে কেউ 'লোম নাশক' মেডিসিন বা ক্রীম (রিমোভাল ক্রীম) ব্যবহার করতে পারবে।(ফাতাওয়া নূর আলাদ দারব লিইবনে বায-৯/২৫৬)
ইমাম নাওয়াবী বলেন, চাঁছা, কাটা, ছাটা ও উপড়িয়ে ফেলা বৈধ। (শারহুন নাওয়াবী আলা মুসলিম-৩/১৪৮)
তবে সর্বাধিক উপযুক্ত পন্থা হল- বেল্ট ব্যবহার করা। এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নাই। আবার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ত্বকের কোমলতা রক্ষা করে। হাদিসে লোহা তথা বেল্ট ব্যবহারের কথাই আছে।

সময় :- عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «وَقَّتَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَلْقَ الْعَانَةِ، وَتَقْلِيمَ الْأَظْفَارِ، وَقَصَّ الشَّارِبِ، وَنَتْفَ الْإِبِطِ، أَرْبَعِينَ يَوْمًا مَرَّةً অর্থাৎ - আনাস বিন মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) আমাদের জন্য গোঁফ খাটো করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা ও নাভীর নীচের পশম পরিষ্কার করার জন্য নির্দিষ্ট সীমারেখা বেঁধে দিয়েছেন, আমরা যেন তা চলিস্নশ রাতের বেশি ছেড়ে না রাখি। (মুসলিম হা/২৫৭, আবূ দাউদ হা/৪২০০)
অবশ্যই অনেকেই বলে থাকে, চল্লিশের বেশি সময় অতিক্রম করলে স্বলাত হবে না। কিন্তু একথা ঠিক নয়। স্বলাত হবে। কিন্তু উচিত নয় বা বৈধ নয় চল্লিশ দিনের বেশি ছেড়ে রাখা।(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমাহ-১/৫/১৪৪)

নক, গোঁফ এবং বগলের লোম :-
নক সর্বোচ্চ চল্লিশ দিনের আগেই কাটতে হবে। তবে কেউ চাইলে সপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক বা যে কোন সময় কাটতে পারবে। কিন্তু চল্লিশ দিনের বেশি রাখা যাবে না। নক বড় রাখা বেজাতিদের কাজ। এতে নারী পুরুষ সমান।
গোঁফ খাটো করতে হবে। একেবারে চাঁছা বা উপড়িয়ে ফেলা বা অনেক দিন ছেড়ে রাখা বৈধ নয়। এটা শুধু পুরুষদের জন্যই।
বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলতে হবে। তবে কাটাও বৈধ।(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমাহ-১/৫/১৯১, আল-ফাতাওয়াল হিন্দীয়াহ-৫/৩৫৮)
দাক্বীকুল ঈদ বলেন, বগলের লোম যে কোন উপকরণ দিয়ে অপসারণ করা যায়।
কারও কারও মতে, চাঁছাও যাবে। যেহেতু উদ্দেশ্য হল পরিচ্ছন্নতা। (আওনুল মা'বূদ-১/৫৪)
তবে উপড়িয়ে ফেলার উপকার হল - হাত জমা থাকায় বগলে একপ্রকার দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। উপড়িয়ে ফেলায় ময়লা ও ঘাম কম হবে এবং লোমের গোড়ার দুর্গন্ধসহ উঠে আসবে। কিন্তু কাটলে দুর্গন্ধ থেকেই যায়। এতে নারী-পুরুষ সমান।
ইসলামের সকল বিধিবিধান রুচি ও স্বাস্থ্য সম্মত। ইসলাম আপনাকে সবসময়ই সঠিক পথ দেখাবে তা যতই গোপন ও ব্যক্তিগত হোক না কেন।


Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...