গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলামিক দলগুলোর কাজ করা কি জায়েজ ?

 প্রশ্ন:  ইসলামে গনতন্ত্র জায়েজ নেই,,তবে কেন অনেক ইসলামি দল গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতেছে যেমনঃবাংলাদেশ জামায়াত ইসলামি।


উত্তর: কুরআনের আয়াত - ওয়া শাইউর হুম ফিল আমরি - আল্লাহর বিধিবিধান এর ব্যাপারে তাদের সাথে পরামর্শ করো। - এ আয়াতটি ইসলামী গণতন্ত্রের ভিত্তি। তবে, ইসলামে ঢালাও গণতন্ত্র নয়, বরং, নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্র রয়েছে। এদেশের মানুষ ইসলাম চায় না কুফুরী চায় - এ মতামত দেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। যদি ইসলাম চায় তাহলে সেই মত ব্যক্ত করার অধিকার তাদের রয়েছে। ঠিক এই দৃষ্টিকোণ থেকেই প্রচলিত গণতন্ত্রের এ অংশটির জন্যই ইসলামী দলগুলো গণতান্ত্রিক উপায়ে চেষ্টা করে থাকে। দেখুন, মক্কার মানুষ ইসলাম চায়নি, তাই সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়নি, রাসুল সা: হিজরত করেছেন। কিন্তু মদীনার মানুষ ইসলাম চেয়েছে, তাই সেখানে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতএব, ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে কি হবে না, এটার রায় জনগণ দিবে। জনগণ সত:স্ফুর্ত ভাবে যদি ইসলাম চায়, তাহলে তো কোনো কথা নেই। ইসলাম প্রতিষ্ঠত হবে। তবে, কোথাও যদি ক্ষমতা বা বিপ্লবের মাধ্যমে হয়, সেটা দ্বিতীয় পদক্ষেপ। কিন্তু প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে, জনগণের কাছে ইসলাম পেশ করতে হবে, এবং তাদেরকে বাছাই করার স্বাধীনতা বা মতামত পেশ করার স্বাধীনতা দিতে হবে। আর এজন্যই ইসলামী দলগুলো গণতান্ত্রিক পন্থায় কাজ করে থাকে। আর এটা শুধু জায়েজই নয়, বরং, রাসুল সা: এর প্রাথমিক কাজ দ্বারা প্রমাণিত ।

খুতবা শুনা কি ওয়াজিব ?

 ১।  জুম’আর খুতবা শুনা ওয়াজিব : 


প্রশ্ন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

মুহতারাম, নিচের প্রশ্নের কুরআন ও হাদীসের দলীল-সূত্র সহ দিলে একটি ফেতনা থেকে রেহাই পাওয়া যেত।

প্রশ্নঃ (১) জুমা ও ঈদের নামাজে খুতবা শোনা ওয়াজিব” এ কথার দলীল কি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

খুৎবা শুনা আবশ্যক হওয়া মর্মে অনেক প্রমাণ আছে। এর মাঝে দু’টি উপস্থাপন করছি। হাদীসের গ্রন্থগুলোর সালাত অধ্যায় ভাল করে অধ্যয়ন করলে আপনি আরো প্রমাণ নিজেই বের করে নিতে পারবেন।


أن أبا هريرة أخبره أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال إذا قلت لصاحبك يوم الجمعة أنصت والإمام يخطب فقد لغوت (صحيح البخارى-كتاب الجمعة، باب الإنصات يوم الجمعة والإمام يخطب، رقم الحديث-892

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বলেন-রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন তুমি তোমার পাশের জনকে জুমআর দিন বল-চুপ থাক এমতাবস্থায় যে, ইমাম সাহেব খুতবা দিচ্ছে, তাহলে তুমি অযথা কাজ করলে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৮৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০০৫}

عَنْ جَابِرٍ قَالَ: دَخَلَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ الْمَسْجِدَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَجَلَسَ إِلَى جَنْبِهِ أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ أَوْ كَلَّمَهُ بِشَيْءٍ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ أُبَيٌّ، فَظَنَّ ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّهَا مَوْجِدَةٌ، فَلَمَّا انْفَتَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ صَلَاتِهِ، قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: يَا أُبَيُّ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرُدَّ عَلَيَّ؟ قَالَ: إِنَّكَ لَمْ تَحْضُرْ مَعَنَا الْجُمُعَةَ، قَالَ: لِمَ؟ قَالَ: تَكَلَّمْتَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَامَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَدَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ أُبَيٌّ أَطِعْ أُبَيًّا»

হযরত জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ মসজিদে প্রবেশ করলেন এমতাবস্থায় যে, রাসুল সাঃ খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি হযরত উবাই বিন কাব রাঃ এর পাশে এসে বসলেন। বসে উবাইকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেন বা কোন বিষয়ে কথা বললেন। কিন্তু উবাই তার কথার কোন প্রতিউত্তর করলেন না। তখন ইবনে মাসঊদ রাঃ মনে করলেন তিনি হয়তো তার উপর রাগাম্বিত। তারপর যখন রাসূল সাঃ নামায শেষ করে চলে গেলেন। তখন ইবনে মাসঊদ বললেন, হে উবাই! আমার কথা জবাব দিতে তোমাকে বাঁধা দিল কে? তিনি বললেন, তুমি আমাদের সাথে জুমআর নামাযে উপস্থিত হওনি। ইবনে মাসঊদ রাঃ বললেন, তো? উবাই রাঃ বললেন, তুমি কথা বলছিলে আর রাসূল সাঃ তো তখন খুতবা দিচ্ছিলেন। [তাই কথার জবাব দেইনি]

একথা শুনে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ দাড়িয়ে গেলেন। ছুটে গেলেন রাসূল সাঃ এর কাছে। জানালেন পুরো বিষয়টি। তখন রাসূল সাঃ বললেন, উবাই ঠিক কথাই বলেছে। তুমি এ বিষয়ে উবাই এর কথাকে মেনে নাও। [মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-১৭৯৯]

এ হাদীসটি সহীহ।

এছাড়া আরো অনেক হাদীস আছে, যা প্রমাণ করে ইমামের খুতবাদানকালে কথা বলা, নামায পড়া নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সে সময় কথা না বলে খুতবা মনযোগ সহকারে শুনতে হয়।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।


তবে, কারো কারো মতে: 

২।  ঈদের খুতবা শুনা সুন্নাত : 


ঈদের খুতবা শোনা কি ওয়াজিব

ঈদের খুতবায় উপস্থিত হওয়ার সঠিক বিধান হচ্ছে যে, তা সুন্নাত।

আবদুল্লাহ ইবনে সায়িব রাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে ঈদে উপস্থিত হলাম; অতঃপর তিনি সালাত সম্পন্ন করে বললেন, আমি খুতবা প্রদান করব; তাই যে খুতবা শোনার জন্য বসতে চাইবে সে বসুক, আর যে চলে যেতে চায়, সে চলে যাক।

আবু দাউদ আলএ. হা/১১৫৫ হাদীসটিকে ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...