প্রশ্ন: ২৮২ : হস্তমৈথুন ছাড়তে পারছিনা ।

আশেকুর রহমান----15.04.2020 তারিখে প্রশ্ন করেছেন:

আস সালামুয়ালাইকুম।প্রচুর হস্থমৈথুন করি।তারপরে চিন্তা করি যে আজকে থেকে আর করবো না।পরে একদিন বা কিছুদিন ঠিক থাকতে পারি।তারপরে আবার এই পাপে লিপ্ত হই।আমার কোন রকম বদ অভ্যাহ নেই,কোন হারাম সম্পর্কে নেই,পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি।ইসলাম সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা রাখি। দ্বীনি ইলম অর্জন করতে চাই।কিন্তু এই একটা সমস্যার জন্য আমার জীবনটা কেমন যেন অশান্তির মধ্যে চলে গেছে।সব সময় অস্থির অস্থির লাগে,অন্তরটা ছট ফট করতে থাকে সব সময়।মনে কিছুতেই প্রশান্তি অনুভব করি না।আমি শয়তানের এই জাল থেকে বের হতে চাই।



উত্তর:
(১) তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করতে পাারেন

(২)অথবা, সালাতুদ দোহা বা চাশতের নামাজ নিয়মিত পড়ুন

(৩) অথবা, প্রতিবার এরূপ গোনাহ হয়ে গেলে কোন গরীবকে ২০ টাকা দিবেন, এবং তওবা করবেন, এরপর আবার যদি গোনাহ হয়ে যায়, তবে এবার ৪০ টাকা দিবেন এবং তওবা করবেন, এরপর যদি আবার গোনাহ হয়ে যায় এবার ৮০ টাকা দান করবেন এবং তওবা করবেন, এভাবে প্রতিবার গোনাহের পর টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দান খয়রাত করলে আল্লাহর মেহেরবানী লাভ করা যায়। এরূপ কয়েকবার চেষ্টা করুন, ইনশাআল্লাহ বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: ২৮১: করোনা ও ছোয়াচে রোগ সম্পর্কে হাদীস।

খুজে খুজে হাদীস কয়টি বের করলাম। হালকা ভাবে নয়, খুব মনযোগ সহকারে সবকয়টি হাদীস পড়তে হবে, তাহলে ইনশা আল্লাহ ছোয়াচে রোগ ও মহামারী সম্বন্ধে আপনার ধারণা পরিস্কার হয়ে যাবে, ইনশা আল্লাহ।
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ عَدْو‘ى وَلاَ طِيَرَةَ وَالشُّؤْمُ فِي ثَلاَثٍ فِي الْمَرْأَةِ وَالدَّارِ وَالدَّابَّةِ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ছোঁয়াচে ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। অমঙ্গল তিন বস্তুর মধ্যে স্ত্রীলোক, গৃহ ও পশুতে। [১] [২০৯৯; মুসলিম ৩৯/৩৪, হাঃ ২২২৫, আহমাদ ৪৫৪৪, বুখারী ৫৭৫৩] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২২৯)
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ عَدْوَى وَلاَ هَامَةَ وَلاَ نَوْءَ وَلاَ صَفَرَ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই, পেঁচা সম্পর্কে যেসব কথা প্রচলিত তা সঠিক নয়, কোন নক্ষত্রের নির্দিষ্ট তারিখে আকাশের কোন স্থানে অবস্থান করলে বৃষ্টিপাত হয় এরূপ বিশ্বাসও ঠিক নয় এবং সফর মাসকে অশুভ মনে করবে না।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৯১২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ اغْتَسَلَ بَعْضُ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي جَفْنَةٍ فَأَرَادَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَتَوَضَّأَ مِنْهُ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ جُنُبًا ‏.‏ فَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ الْمَاءَ لاَ يُجْنِبُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكٍ وَالشَّافِعِيِّ ‏.‏
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন এক স্ত্রী একটি গামলাতে গোসল করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা থেকে ওযূ করতে চাইলেন। তিনি (স্ত্রী) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি নাপাক ছিলাম। তিনি বললেনঃ (নাপাক ব্যক্তির ছোঁয়ায়) পানি নাপাক হয় না (যদি তার হাতে ময়লা না থাকে)।
সহীহ। ইবনু মাজাহ-(৩৭০)
ফুটনোটঃ
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ । সুফিয়ান সাওরী, মালিক ও শাফিঈর এটাই মত (স্ত্রীলোকদের ওযূর অবশিষ্ট পানি দিয়ে পুরুষেরা ওযূ করতে পারে) ।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৬৫
হাদিসের মান: সহিহ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي حَيَّةَ أَبُو جَنَابٍ الْكَلْبِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏"‏ لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ الْبَعِيرَ يَكُونُ بِهِ الْجَرَبُ فَيُجْرِبُ الإِبِلَ كُلَّهَا قَالَ ‏"‏ ذَلِكُمُ الْقَدَرُ فَمَنْ أَجْرَبَ الأَوَّلَ ‏"‏ ‏.‏
(আবদুল্লাহ) বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ছোঁয়াচে বলতে কোন রোগ নেই, অশুভ লক্ষণ বলতে কিছুই নেই এবং হামাহ (পেঁচার ডাক) বলতে কিছুই নেই। তখন তার সামনে এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার কী মত যে, চর্মরোগে আক্রান্ত একটি উট সুস্থ উটের সংস্পর্শে এসে সকল উটকে আক্রান্ত করে? তিনি বলেন, এটাই তোমাদের তাকদীর। আচ্ছা প্রথম উটটিকে কে সংক্রামিত করেছিল? [৮৪]
তাহকীকঃ এটাই তোমাদের তাকদীর এ ব্যতীত সহীহ।
ফুটনোটঃ
[৮৪] আহমাদ ৪৭৬১, ৬৩৬৯। তাহক্বীক্ব আলবানী: এটাই তোমাদের তাকদীর এ কথা ব্যতীত সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহাহ ৭৮২, যঈফাহ ৪৮০৮। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন আবু হাইইয়াহ আবু জানাবীল কালবী সম্পর্কে ইয়াযিদ বিন হারুন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার মাঝে কোন সমস্যা নেই কিন্তু হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। ইবনু মাঈন অন্যত্র বলেন, তিনি দুর্বল।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৮৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ عَدْو‘ى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ وَفِرَّ مِنَ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنْ الأَسَدِ.
আফফান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
সালীম ইবনু হাইয়ান, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমন নেই, কুলক্ষণ বলে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের লক্ষণ নয়, সফর মাসের কোন অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাক।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭০৭
হাদিসের মান: সহিহ।
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ عُمَرَ خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ فَلَمَّا كَانَ بِسَرْغَ بَلَغَه“ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِالشَّأْمِ فَأَخْبَرَه“ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا سَمِعْتُمْ بِه„ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
‘উমার (রাঃ) সিরিয়া যাবার জন্য বের হলেন। এরপর তিনি ‘সারগ’ নামক স্থানে পৌছলে তাঁর কাছে খবর এল যে সিরিয়া এলাকায় মহামারী দেখা দিয়েছে। তখন ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) তাঁকে জানালেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন স্থানে এর বিস্তারের কথা শোন, তখন সে এলাকায় প্রবেশ করো না; আর যখন এর বিস্তার ঘটে, আর তোমরা সেখানে অবস্থান কর, তাহলে তা থেকে পালিয়ে যাওয়ার নিয়তে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২০৬)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৩০
হাদিসের মান: সহিহ
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نُعَيْمٍ الْمُجْمِرِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَدْخُلُ الْمَدِينَةَ المَسِيحُ وَلاَ الطَّاعُونُ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মদীনায় ঢুকতে পারবে না মাসীহ্ দাজ্জাল, আর না মহামারী।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২০৭)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৩১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ، بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُسَامَةَ بْنِ الْهَادِ اللَّيْثِيُّ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ غَطُّوا الإِنَاءَ وَأَوْكُوا السِّقَاءَ فَإِنَّ فِي السَّنَةِ لَيْلَةً يَنْزِلُ فِيهَا وَبَاءٌ لاَ يَمُرُّ بِإِنَاءٍ لَيْسَ عَلَيْهِ غِطَاءٌ أَوْ سِقَاءٍ لَيْسَ عَلَيْهِ وِكَاءٌ إِلاَّ نَزَلَ فِيهِ مِنْ ذَلِكَ الْوَبَاءِ ‏"‏ ‏.‏
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা বাসনগুলো আবৃত রাখবে এবং মশ্‌কসমূহের মুখ বেঁধে রাখবে। কারণ বছরে একটি এমন রাত আছে, যে রাতে মহামারী অবতীর্ণ হয়। যে কোন খোলা পাত্র এবং বন্ধকহীন মশ্‌কের উপর দিয়ে তা অতিবাহিত হয়, তাতেই সে মহামারী নেমে আসে। (ই.ফা.৫০৮৫, ই.সে. ৫০৯৫)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫১৫০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
أَبُو الْيَمَانِ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّهُ سَمِعَ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ يُحَدِّثُ سَعْدًا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ الْوَجَعَ فَقَالَ رِجْزٌ أَوْ عَذَابٌ عُذِّبَ بِهِ بَعْضُ الْأُمَمِ ثُمَّ بَقِيَ مِنْهُ بَقِيَّةٌ فَيَذْهَبُ الْمَرَّةَ وَيَأْتِي الْأُخْرَى فَمَنْ سَمِعَ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ يُقْدِمَنَّ عَلَيْهِ وَمَنْ كَانَ بِأَرْضٍ وَقَعَ بِهَا فَلاَ يَخْرُجْ فِرَارًا مِنْهُ
উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি সা‘দ (রাঃ)-কে বলেন - একদিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহামারী সম্পর্কে আলোচনার সময় বললেনঃ এ একটি শাস্তি, কতক জাতিকে এ দ্বারা শাস্তি দেয়া হয়েছে। তারপর এর কিছু অংশ বাকী রয়ে গেছে। তাই কখনো এ চলে যায় আবার কখনো তা ফিরে আসে। যখন কেউ কোন এলাকায় মহামারীর কথা শুনবে তখন যেন সে সেখানে না যায়। আর যে কেউ এমন এলাকায় থাকে যেখানে এর আক্রমণ ঘটেছে, তখন সে যেন সেখান থেকে পালিয়ে বের হয়ে না আসে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫০৩)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৯৭৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبِي الْعُمَيْسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعُودُهُ فَقَالَ قَائِلٌ مِنْ أَهْلِهِ إِنْ كُنَّا لَنَرْجُو أَنْ تَكُونَ وَفَاتُهُ قَتْلَ شَهَادَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ شَهَادَةٌ وَالْمَطْعُونُ شَهَادَةٌ وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهَادَةٌ - يَعْنِي الْحَامِلَ - وَالْغَرِقُ وَالْحَرِقُ وَالْمَجْنُوبُ - يَعْنِي ذَاتَ الْجَنْبِ - شَهَادَةٌ ‏"‏ ‏.‏
জাবর বিন আতীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে আসেন। জাবর (রাঃ) -এর পরিবারের কেউ বললো, আমরা আশা করতাম যে, সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যু বরণ করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাহলে আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা তো খুব কম হয়ে যাবে। আল্লাহর পথে নিহত হলে শহীদ, মহামারীতে নিহত হলে শহীদ, যে মহিলা গর্ভাবস্থায় মারা যায় সে শহীদ এবং পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে ও ক্ষয়রোগে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। [২৮০৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
ফুটনোটঃ
[২৮০৩] নাসায়ী ১৮৪৬, ৩১৯৪, আবূ দাউদ ৩১১১, আহমাদ ২৩২৪১, মুয়াত্তা মালেক ৫৫২, আল-আহকাম ৩৯-৪০ নং পৃষ্ঠা, আত-তালীকুর রাগীব ২/২০২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২৮০৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

প্রশ্ন: ২৮০ : শবেবরাত সম্পর্কে আলোচনা ।

শবে বরাতের ইবাদত (রাতের নামাজ-দোয়া ও দিনের রোজা) একান্তই একটি নফল বিষয়। কিন্তু এলিট বকধার্মিকদের একটি শ্রেণী (লানতুল্লাহি আলাইহিম) এটিকে বিদয়াত বলে প্রমাণ করার জন্য আদাজল খেয়ে নেমেছে। তাদের বিপরীতে আরেকটি শ্রেণী এটিকে সুন্নত/ওয়াজিবের স্তরে নিয়ে যাচ্ছে।
---
আমি উভয় দল থেকে মুক্ত। এরকম কেউ আমার ফ্যান হয়ে থাকলে দয়া করে সরে যান। আমি সকল বকধার্মিককে প্রচন্ডভাবে ঘৃণা করি।


****************************************************************************************************

১৩জন ছাহাবী থেকে বর্ণিত শবে বরাত সম্পর্কিত ১৪টি গ্রহণযোগ্য হাদীছ
*****
শবে বরাত ليلة البراءة (গুনাহ থেকে মুক্তি/ক্ষমা লাভের রাত) সম্পর্কে 'অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্কর' সম্প্রদায়ের সালাফী ও তাদের অনুগামী আহলে حادث হাদেছ শায়খদের যে যাই বলুক না কেন, এটি একটি প্রমাণিত সত্য যে, ১২ জনের অধিক ছাহাবী থেকে ১৫টিরও বেশি সনদযুক্ত مُسند হাদীছগ্রন্তে শবে বরাতের ফজিলত (শ্রেষ্ঠত্ব) সম্পর্কিত ২০টির অধিক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। সনদ বিচারে এসবের কিছু মকবুল (গ্রহণযোগ্য) দুর্বল হলেও কয়েকটি সবল। তাছাড়া নফল বা ফযীলতের আমলে দুর্বল হাদীস গ্রহনযোগ্য। একই সাথে এটাও প্রমাণিত সত্য যে, সালাফে সালেহীনের অনেকে এ রাতে নফল ইবাদত করেছেন। বিষয়টি সালাফীদের মরহুম শায়খ شيخ (ফার্সীতে পীর) ছাহেব ইবনে তাইমিয়া ও বিখ্যাত হাম্বলী আলেম ইবনে রজবও স্বীকার করেছেন। ইবনে তাইমিয়ার ফতোয়া সমষ্টির ২৩তম খন্ডের ১৩২ নম্বর পৃষ্টায় বলা হয়েছেঃ
«وأما ليلة النصف فقد روي في فضلها أحاديث وآثار ونقل عن طائفة من السلف أنهم كانوا يصلون فيها، فصلاة الرجل فيها وحده قد تقدمه فيه سلف وله فيه حجة فلا ينكر مثل هذا»
"তবে শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদীছ ও আছার (ছাহাবা ও তাবেয়ীদের কথা) বর্ণিত হয়েছে। সালাফের একটি জামায়াত এ রাতে নফল নামাজ পড়তেন বলেও বর্ণিত হয়েছে। অতএব, এ রাতে কারো জামায়াতবিহীন নফল নামাজ আদায়ে তার জন্য পূর্বসুরীদের আমল বিদ্যমান রয়েছে এবং এটা তার জন্য দলীল বটে। তাই এ ধরণের কাজ অস্বীকার করা যায় না।"
-
ইবনে রজবের লতায়েফুল মাআরিফের ১৬১ নম্বর পৃষ্টায় বলা হয়েছেঃ
«وليلة النصف من شعبان كان التابعون من أهل الشام كخالد بن معدان ومكحول ولقمان بن عامر وغيرهم يعظمونها ويجتهدون فيها في العبادة، وعنهم أخذ الناس فضلها وتعظيمها»
"শবে বরাতের রাতকে খালেদ বিন মা'দান, মাকহূল ও লোকমান বিন আমেরসহ শামের অন্যান্য তাবেয়ীগণ সম্মান জানাতেন এবং এতে ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ করতেন। লোকজন শবে বরাতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও এর ফজিলত তাদের কাছ থেকেই গ্রহণ করেছেন।"
-
নীচে আমি বিস্তারিত সূত্রসহ শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণিত এক ডজনের বেশি হাদীছ উল্লেখ করবো। সূত্রগ্রন্থের সাথে ব্রাকেডে যে নম্বরগুলো দেয়া হবে, সেগুলো সংশ্লিষ্ট হাদীছের নম্বর।
-
০১. হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হবে, তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোজা রাখবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে খাছ রহমত নাজিল করেন। অতঃপর ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন মুছিবগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন৷" সুনানে ইবনে মাজা (১৩৮৮) ও দাইলামীর মুসনদুল ফিরদাউস (১০০৭)
-
০২. হযরত উছমান বিন আবুল আছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হয়, তখন আকাশ থেকে একজন ঘোষক ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। তো এ রাতে সবাইকে তার প্রার্থিত বিষয় দান করা হয়। তবে ব্যভিচারী ও মুশরিককে নয়।" বাইহাকীর শোআবুল ঈমান (৩৮৩৬) ও খরায়েতীর মাসাইয়ুল আখলাক (৪৯০)
-
০৩. হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হয়, তখন আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। তবে হিংসুক ও মুশরিককে নয়।" বাজ্জারসূত্রে কাশফুল আসতার (২০৪৫) ও খতীবের তারীখে বাগদাদ (১৪/২৮৫)
-
০৪. হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হয়, তখন আল্লাহ কলবের (ছাগল পালনের জন্য প্রসিদ্ধ একটি গোত্র) ছাগলদের পশমের চেয়ে অধিক বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন।" সুনানে তিরমিযী (৭৩৯), সুনানে ইবনে মাজা (১৩৮৯), মুসনদে আহমদ (২৬০৬০), মুসনদে আবদে ইবনে হুমাইদ (১৫০৯), বাইহাকীর শোআবুল ঈমান (৩৮২৪)
-
০৫. হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত, নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হয়, তখন আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে বিশেষ রহমত নাজিল করেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। তবে হিংসুক ও মুশরিককে নয়।" মুসনদে বাজ্জার (৮০) ও বাইহাকীর শোআবুল ঈমান (৩৮২৭)
-
০৬. হযরত আবু মূসা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে আল্লাহ পাক দুনিয়াবাসীর প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেন। তবে হিংসুক ও মুশরিককে নয়।" সুনানে ইবনে মাজা (১৩৯০)। উল্লেখ্য, সালাফীগুরু শায়খ আলবানী নাকি তাঁর সিলসিলা ছহীহাতে (১১৪৪) এ হাদীছকে ছহীহ বলে দাবি করেছেন।
-
০৭. হযরত আবু ثعلبة ছা'লাবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দেন। অতঃপর তিনি মুমিনদের ক্ষমা করে দেন এবং কাফিরদের অবকাশ দেন। আর হিংসা না ছাড়া পর্যন্ত হিংসুকদের বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখেন।" তবরানীর মুজমে কবীর (২২/২২৪) ও মুজমে ইবনে কানে (১/১৬০)
-
০৮. হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আল্লাহ পাক প্রতিবছর একবার কা'বা শরীফের প্রতি বিশেষভাবে তাকান। আর সে সময়টা হচ্ছে অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে। আর ওই সময় কা'বার প্রতি মুমিনের হ্রদয় অনুরাগী হয়ে উঠে।" দাইলামীর মুসনদুল ফিরদাউস (৫৩৯)
-
০৯. হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "পাঁচ রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় না। ১. রজবের প্রথম রাত, ২. অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত), ৩. জুমার রাত, ৪. ঈদুল ফিতরের রাত ও ৫. ঈদুল আজহার রাত।" মুছন্নফে আবদুর রজ্জাক (৭৯২৭) ও বাইহাকীর শোআবুল ঈমান।
-
১০. হযরত হযরত আবু উমামা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, "পাঁচ রাতে আল্লাহর কাছে বান্দার দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় না। ১. রজবের প্রথম রাত, ২. অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত), ৩. জুমার রাত, ৪. ঈদুল ফিতরের রাত ও ৫. ঈদুল আজহার রাত।" দাইলামীর মুসনদুল ফিরদাউস (২৯৭৫) ও ইবনে আসাকিরের তারীখে দেমেশক (১০/৪০৮)
-
১১. হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে মদখোরের মুখ থেকে নির্গত 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' ছাড়া অন্য সকলের 'লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ আল্লাহর কাছে কবূল হয়ে যায়।" দাইলামীর মুসনদুল ফিরদাউস (৭৮৩৭)
-
১২. হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে আল্লাহ পাক তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেন। তবে হিংসুক ও মুশরিককে নয়।" ছহীহ ইবনে হিব্বান (৫৬৬৫), বাইহাকীর শোআবুল ঈমান (৬৬২৮) ও তবরানীর মু'জমে কবীর (২০/১০৮)
-
১৩. হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতে আল্লাহ পাক তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দেন। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেন। তবে হিংসুক ও আত্মহত্যাকারীকে নয়।" মুসনদে আহমদ (৬৬৪২)
-
১৪. হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা হুযুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে রাতযাপন করছিলাম। মধ্যরাতে আমি উনাকে বিছানায় না পেয়ে মনে করলাম, তিনি হয়তো অন্য কোন স্ত্রী কক্ষে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে (মসজিদে নববীর নিকটস্থ বিখ্যাত কবরস্থান) পেলাম। সেখানে তিনি উম্মতের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছিলেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় কক্ষে ফিরে এলে তিনিও ফিরে এলেন এবং বললেন, "তুমি কি মনে করেছো যে, আল্লাহ ও আল্লাহর রসূল তোমাকে তোমার অধিকার বঞ্চিত করবেন?" আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! না। আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন স্ত্রীর কক্ষে তাশরীফ নিয়েছেন। তখন রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা'বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে খাছ রহমত নাজিল করেন। অতঃপর তিনি কলব গোত্রের ছাগলর গায়ে যত পশম রয়েছে, তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।" সুনানে ইবনে মাজা (১৩৮৯), মুসনদে আহমদ (২৬০৬০), বাইহাকীর শোআবুল ঈমান (৩৮২৪)
*
সত্য হলো, শবে বরাতসহ যেকোনো বিষয়ের বিশেষত্ব ও ফযীলত প্রমাণের জন্য ১৪টি নয়; একটি হাদীছই যথেষ্ট।
*
পুনশ্চঃ এক ভদ্রলোক বলিলেন, শবে বরাতে ইবাদতের সব হাদীস জঈফ৷ তাই এ রাতে ইবাদত পরিত্যাজ্য৷
উত্তরে আমি লিখিলামঃ ভদ্র লোক সহীহ-জঈফের নীতিমালাটা কোন্ সহীহ হাদীসে পাইয়াছেন, সেটির সূত্রটা কি উল্লেখ করিবেন? যদি করিতে না পারেন, তাহা হইলে তিনি কোন্ বাবার তাকলীদ করিয়া শবে বরাত সম্পর্কে এমন কথা ছড়াইতেছেন?
---
আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত আমাদেরকে তাঁর ক্ষমাপ্রাপ্ত বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং হিংসা, গৌরব ও অহঙ্কারের মত আত্মঘাতী রোগসমূহ থেকে মুক্ত রাখুন।
-
আবুল হুসাইন আলেগাজী
সবুজবাগ, উপশহর, সিলেট।

প্রশ্ন: ২৭৯: আয়াাতুল কুরসীর উচ্চারণ ও অর্থ ।

শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার আয়াত:

আয়াতুল কুরসি পবিত্র কোরআনের সূরা আল বাকারার ২৫৫নং আয়াত। 

 হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, সূরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। [মুসতাদরাকে হাকিম]। তাই এখনই পবিত্র আয়তুল কুরসীটি মুখস্থ করে নিন।
উচ্চারণঃ‬ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বিয়্যুম লা তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিছছামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্। মান যাল্লাযী ইয়াস ফায়ু ইন দাহু ইল্লা বি ইজনিহি ইয়া লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খল ফাহুম ওয়ালা ইউ হিতুনা বিশাই ইম্ মিন ইল্ মিহি ইল্লা বিমা সাআ ওয়াসিয়া কুরসিইউ হুস ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলিয়্যূল আজীম।
‪অর্থ‬: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়।
তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।


ফজিলতঃ‬
জান্নাতের দরজা: আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল নুরে মুজাসসাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। [নাসায়ী]
হজরত আলী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে,প্রতিবেশির ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনানে বায়হাকী]
মর্যাদাসম্পন্ন মহান আয়াত: আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ রা. রাসূল সা.-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা. ! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল সা. বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী। [নাসায়ী]
উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন: আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। [সহীহ মুসলিম]
২৭ জুলাই,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর

প্রশ্ন: ২৭৮ : কোন সাহাবীর নাম কুরআনে এসেছে ।

শুধুমাত্র একজন সাহাবী (রাযি.) এর নাম পবিত্র কালামে উল্লিখিত হয়েছে। তাঁর নাম হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা (রাযিঃ)। সূরা আহযাব-এর ৩৭ নং আয়াতে উদ্ধৃত হয়েছেন তিনি।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...