Showing posts with label Azan. Show all posts
Showing posts with label Azan. Show all posts

প্রশ্ন: ৪৪০ : আযান ও ইকামতের হুকুম কি ?

 আযান

বিশেষ যিকরের মাধ্যমে নামাজের সময় হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়া।

ইকামত

বিশেষ যিকরের মাধ্যমে নামাজ দাঁড়িয়েছে বলে ঘোষণা দেয়া।

আযান ও ইকামতের হুকুম

১- জামাতের সাথে নামাজজ আদায়ের ক্ষেত্রে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আযান ইকামত সুন্নতে মুআক্কাদা, নামাজ আদায়কারী মুসাফির হোক বা মুকিম; কেননা আযান ও ইকামত ইসলামের শাআয়ের বা নিদর্শনমালার মধ্যে দুটি নিদর্শন, তাই এ-দুটোকে বন্ধ করা বৈধ হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «যখন নামাজের সময় হবে তখন তোমাদের মধ্যে একজন যেন তোমাদের জন্য আযান দেয়। আর তোমাদের মধ্যে বয়সে যে বড় সে যেন ইমামতি করে।»
(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

২- জামাত ব্যতীত একা নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে আযান-ইকামত সুন্নত। উকবা ইবনে আমের রাযি. বলেন, «আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,«আল্লাহ তাআলা ওই মেষের রাখালকে দেখে আশ্চর্য হন যে পাহাড়ের চূড়ার একটি টিলায় নামাজের জন্য আযান দেয় ও নামাজ পড়ে। (এ-দৃশ্য দেখে আল্লাহ তাআলা বলেন, «তোমরা আমার এই বান্দার দিকে চেয়ে দেখ, সে আযান দেয়, নামাজ কায়েম করে এবং আমাকে ভয় পায়। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালাম।»।
(বর্ণনায় নাসায়ী)

আযানের হিকমত

১- নামাজের ওয়াক্ত হয়েছে বলে ঘোষণা এবং নামাজ অনুষ্ঠানের স্থান বিষয়ে জানান দেয়া।

২- জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া।

৩- যারা গাফেল তাদেরকে সজাগ করা এবং যারা ভুলে যায় তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া।

আযান কখন শরীয়তভুক্ত হয়েছে ও তার কারণ কি?

«আযান প্রথম হিজরীতে শরীয়তভুক্ত হয়েছে। আর এর কারণ হলো : নামাজের ওয়াক্ত প্রবেশ করেছে এ ব্যাপারে কোনো আলামত নির্ধারণের প্রয়োজন দেখা দিলে মুসলমানগণ পরস্পরে পরামর্শ করলেন। যখন রাত হলো, আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ স্বপ্নে দেখলেন যে, একব্যক্তি ঘন্টা বহন করে আছে। তিনি লোকটিকে বললেন, «তুমি কি এ ঘন্টাটি বিক্রি করবে?» লোকটি বলল, «তুমি এটা দিয়ে কি করবে?» আবদুল্লাহ বললেন, «নামাজের প্রতি আহবান জানাব।» লোকটি বলল,«আমি কি তোমাকে এর থেকেও উত্তম বিষয়ের কথা বলব না?» আবদুল্লাহ বললেন,«জ্বি বলবেন।» অতঃপর লোকটি তাকে আযান শেখালেন এরপর ইকামত শেখালেন। আবদুল্লাহ বলেন,«যখন সকাল হলো, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এলাম, স্বপ্ন বিষয়ে তাঁকে খবর দিলাম। শুনে তিনি বললেন,«এটা সত্য স্বপ্ন। তুমি বেলালের সাথে দাঁড়াও, তাঁকে এ-দায়িত্ব অর্পন করো, কেননা সে তোমার চাইতে অধিক সুন্দর আওয়াজের অধিকারী।»
(বর্ণনায় আবু দাউদ)

আযানের ফজিলত

১- আযানের আওয়াজ যাদের কাছে পৌঁছবে তাদের প্রত্যেকেই কিয়ামতের ময়দানে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, «মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যার কাছেই পৌঁছবে, হোক সে মানুষ, জিন অথবা অন্যকোনো জিনিস, সে কিয়ামতের ময়দানে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।» (বর্ণনায় বুখারী)

২- মানুষ যদি জানত এর মধ্যে কি ফজিলত রয়েছে, তবে তারা অবশ্যই এর জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হত। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «মানুষ যদি জানত আযান ও প্রথম কাতারের মধ্যে কি ফজিলত রয়েছে আর তারা লটারির আশ্রয় নেয়া ছাড়া তা পেত না, তবে তারা এর জন্য অবশ্যই লটারির আশ্রয় নিত।»(বর্ণনায় বুখারী)

আযান বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত

১-আযানদাতাকে মুসলমান, পুরুষ ও সজ্ঞানব্যক্তি হতে হবে।

২-আযানের শব্দমালায় তরতীব তথা ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

৩- আযানের শব্দমালার উচ্চারণে নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে হবে, অর্থাৎ একবাক্য উচ্চারণের পর অন্যবাক্য উচ্চারণে অতিরিক্ত দেরি করা যাবে না।

৪- নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশের পর আযান দিতে হবে।

আযানের সুন্নত

১- কেবলামুখী হয়ে আযান দেয়া।

২- ছোট-বড় উভয় নাপাকি থেকে আযানদাতাকে পবিত্র থাকা।

৩- হাইয়া আলাস্সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় ডানে ও বামে ফেরা।

৫- মুয়ায্যিনের দুই কানে দুই তর্জনী আঙ্গুল রাখা।

৬- মুয়ায্যিনকে সুন্দর আওয়াজসম্পন্ন হওয়া।

৭- সুর দিয়ে ধীরস্থিরতাসহ আযান দেয়া।

আযান ও ইকামত প্রদানের পদ্ধতি

আযান প্রদানের পদ্ধতি :

الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن محمداً رسول الله، أشهد أن محمداً رسول الله، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الفلاح، حَيَّ على الفلاح، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله

(বর্ণনায় মুসলিম)

ইকামত প্রদানের পদ্ধতি :

الله أكبر الله أكبر، الله أكبر الله أكبر، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن محمداً رسول الله، أشهد أن محمداً رسول الله، حيَّ على الصلاة، حيَّ على الصلاة، حَيَّ على الفلاح، حَيَّ على الفلاح، قد قامت الصلاة، قد قامت الصلاة، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله

আযান শ্রবণকারীর ক্ষেত্রে যা মুস্তাহাব

১- মুয়াজ্জিন যা বলে তা বলা, তবে হাইয়া আলাস্সালাহ এবং হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় لا حَوْل ولا قُوَّة إِلا بالله বলা।
(বর্ণনায় বুখারী)

২- আযানের পর বলা :

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إلا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِمُحَمَّد صلى الله عليه وسلمٍ رَسُولًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا.

«আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। আর মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। রব হিসেবে আল্লাহর প্রতি, রাসূল হিসেবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এবং দীন হিসেবে ইসলামের প্রতি আমি সন্তুষ্টচিত্ত।» (বর্ণনায় মুসলিম)

৩- আযানের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া। এরপর বলা :

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ.

«হে আল্লাহ, যিনি এই পরিপূর্ণ আহবান এবং কায়েমতব্য নামাজের রব! আপনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওয়াসিলা তথা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান ও মর্যাদা দান করুন এবং আপনি তাঁকে প্রেরণ করুন প্রশংসিত স্থানে যার ওয়াদা আপনি তাঁকে দিয়েছেন।» (বর্ণনায় আবু দাউদ)

৪- আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নিজের জন্য দুআ করা; কেননা এসময় দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।» (বর্ণনায় আহমদ)

আযান ও ইকমতের কিছু আহকাম

১. দুই নামাজ একসাথে জমা করে পড়লে আযান হবে একটা আর ইকামত হবে প্রতি নামাজের জন্য আলাদা আলাদা।

২. ইকামতের পর যদি নামাজ শুরু হতে দেরি হয় তবে পুনরায় ইকামত দেয়ার প্রয়োজন নেই।

৩. মুয়ায্যিনের উচিত আযানের শব্দমালা উচ্চারণে ভুল না করা। যেমন :

- «আল্লাহু আকবার»এর জায়গায় (آلله آكبر؟) «আ-আল্লাহু আকবার» বলা। যার অর্থ হবে, «আল্লাহ কি সবচেয়ে বড়?»

الله أكبار তথা কে লম্বা করে উচ্চারণ করা।

الله وأكبر (আল্লাহু ওয়াকবার) বলা।

৪. নামাজের ইকামত হয়ে গেলে কোনো নফল নামাজ শুরু করা বৈধ নয়। আর যদি ইতঃমধ্যেই নফল নামাজ শুরু করে দিয়ে থাকে তাহলে যদি সামান্য অংশ বাকি থাকে তবে পরিপূর্ণ করে নেবে। এর অন্যথা হলে সালাম ব্যতীতই নামাজ ছেড়ে দিয়ে ইমামের সাথে ফরয নামাজে ইকতেদা করবে।

৫. ভালো-মন্দ যাচাই করতে পারে এমন শিশুর আযান শুদ্ধ হবে।

৬- ঘুম অথবা ভুলে যাওয়ার কারণে কাযা হয়ে যাওয়া নামাজ আদায়ের জন্য আযান-ইকামত শুদ্ধ। একবার সাহাবায়ে কেরাম নিদ্রারত অবস্থায় সূর্য ওঠে গেলে «রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাল রাযি. কে আযান দিতে বলেন। এরপর সবাই অজু করেন ও দু»রাকাত ফজরের সুন্নত আদায় করেন। এরপর তিনি বিলাল রাযি. কে ইকামত দেয়ার নির্দেশ দেন এবং সাহাবায়ে কেরামদেরকে নিয়ে ফজরের ফরয নামাজ আদায় করেন।»(বর্ণনায় আবু দাউদ)

যা উচিত নয়

১- এমনভাবে অতিরিক্ত সুর সংযোজন অথবা গানের সুরে আযান দেয়া উচিত নয় যার ফলে অক্ষর ও জের-যবর-পেশ ইত্যাদিতে কমবেশ হয়ে যায়।

২- আযানের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর উঁচু স্বরে দরুদ পড়া।

৩- «কাদ কামিতিস্সালাত» শোনার সময় «আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামা» (আল্লাহ তা কায়েম দায়েম রাখুন) বলা উচিত নয়। বরং এ-ক্ষেত্রে সরাসরি «কাদকাতিস্সালাত»-ই বলতে হবে।

৭- যে ব্যক্তি আযানের সময় মসজিদে থাকবে সে আযানের পর ওযর ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হবে না। আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, «রাসূূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এই বলে নির্দেশ দিয়েছেন যে, যখন তোমরা মসজিদে থাকবে আর নামাজের আযান দেয়া হবে, তখন তোমাদের কেউ যেন নামাজ আদায় না করে মসজিদ থেকে বের না হয়।»(বর্ণনায় আহমদ)ফজরের আযান

১- ফজরের আযানের সাথে,لصلاة خيرمن النوم) দুইবার বলতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,«...যদি ফজরের নামাজ হয়, তবে (আযানের সময়) বলবে

২- الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ، الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ


-------------

মূল লিংক 

প্রশ্ন: ৩৭৪ : আজান ছাড়া মসজিদে জামাত পড়লে তা আদায় হবে কী?

 


প্রশ্ন

কোন মসজিদে এশার আযান দিতে ভুলে গেলে নামাজ হবে কি।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

ভুলে হলে সমস্যা নেই। কিন্তু ইচ্ছেকৃত আজান ছাড়া মসজিদে আজান ছাড়া নামায পড়া মাকরূহ। কিন্তু নামায হয়ে যাবে।

وَيُكْرَهُ أَدَاءُ الْمَكْتُوبَةِ بِالْجَمَاعَةِ فِي الْمَسْجِدِ بِغَيْرِ أَذَانٍ وَإِقَامَةٍ. كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الباب الثانى فى الاذان-1/54

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

প্রশ্ন: ৩৬৭ : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো আজান দেননি কেন ?



পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে আজানের মাধ্যমে মানুষকে নামাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে সাক্ষ্য দেওয়া হয় আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসুল (সা.)-এর রিসালাতের। তাই আজানকে ইসলামের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়। ইসলামের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও করণীয় রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে বাস্তবায়ন করে সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-কে শেখালেও তিনি কখনো আজান দিয়েছেন বলে প্রমাণিত নয়।

মহানবী (সা.) কেন আজান দেননি সে বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। তবে ইসলামের প্রাজ্ঞজনরা এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন নানাভাবে। আবার তাঁদের অনেকেই এমন প্রশ্নকে বাহুল্য অবহিত করে তার উত্তর দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।

যাঁরা এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁদের কয়েকজনের মতামত এখানে তুলে ধরা হলো। বেশির ভাগ আলেম রাসুলে আকরাম (সা.)-এর আজান না দেওয়ার কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘আজানে মানুষকে নামাজ ও কল্যাণের পথে আহ্বান জানানো হয়। আর রাসুল (সা.)-এর আহ্বান আদেশতুল্য ও অবশ্যপালনীয়। সুতরাং তিনি আজান দিলে সব শ্রোতার ওপর কল্যাণ তথা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর সব নির্দেশনা সাধারণভাবে মান্য করা ওয়াজিব হয়ে যেত। এতে আহ্বান উপেক্ষা করার জন্য অপরাধী হয়ে যেত অনেকেই। আর হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যারা অস্বীকার করল। তাঁরা (সাহাবিরা) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, অস্বীকারকারী কে? তিনি বলেন, যে আমার আনুগত্য করল সে জান্নাতে প্রবেশ করল। আর যে আমার অবাধ্য হলো সে অস্বীকার করল।’

আবার কেউ কেউ বলেন, মহানবী (সা.) যদি বলেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।’ তাহলে কারো কারো ধারণা হতে পারে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো নবীর ব্যাপারে মুহাম্মদ (সা.) সাক্ষ্য দিচ্ছেন। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) যদি আজান দেন, তাহলে তা উম্মতের ওপর ফরজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

কোনো কোনো মুহাদ্দিস বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম হলেন দায়িত্ব গ্রহণকারী আর মুয়াজ্জিন হলেন সংরক্ষক।’ (মুসনাদে আহমাদ)

এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন। যেহেতু মুহাম্মদ (সা.) ইমামতি করতেন, তাই তিনি আজান দিতেন না। তা ছাড়া ইমামতির দায়িত্ব মুসলিম উম্মাহর অভিভাবক হিসেবে তাঁর জন্য নির্ধারিত ছিল। একই কারণে হজরত খোলাফায়ে রাশেদিন (রা.)সহ ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মনীষী ও রাষ্ট্রনেতারা আজান দেননি। কিন্তু তাঁরা ইমামতি করেছেন।

তবে তাঁরা আজান না দেওয়ায় মুয়াজ্জিনের মর্যাদা ও অবস্থানের ব্যাপারে ভুল ধারণার শিকার হওয়ার সুযোগ নেই। কেননা সহিহ হাদিস দ্বারা মুয়াজ্জিনের সম্মান ও মর্যাদা প্রমাণিত। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনের ঘাড় হবে সবচেয়ে উঁচু।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৮৭)

শায়খ ইজ্জুদ্দিন বিন আবদুস সালাম বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো কাজ করলে সাধারণত তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতেন। যেহেতু সার্বিক দায়িত্ব পালনের পর নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত আজান দেওয়া বাস্তবতাবিরোধী ছিল, তাই রাসুল (সা.) আজান দেননি।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...