ফরজ গোসল না করে কোনো কাজ করা যাবে কি?

 

ফরজ গোসল না করে কোনো কাজ করা যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–২১: সহবাসের পর গোসল না করে সবধরণের কাজ করা যাবে কী?— আব্দুল্লাহ : susannamerwin@gmail.com

জবাব: সহবাসের পর ফরজ গোসল না করে নামায, তাওয়াফ, কুরআন তেলাওয়াত ও স্পর্শ করা এবং মসজিদে গমণ করা ছাড়া অন্যান্য সবধরণের কাজ করা যাবে।

আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে মদিনার কোন এক পথে রাসূল -এর দেখা হল। আবু হুরায়রা রাযি. তখন জানাবাতের (গোসল ফরজ) অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে নাপাক মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হুরায়রা রাযি. গোসল করে এলেন। পুনরায় সাক্ষাৎ হলে রাসূল  জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রা ! কোথায় ছিলে? আবু হুরায়রা রাযি. বললেন, আমি জানাবাতের অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করি নি। নবীজী  বললেন, سبحان الله ، إن المسلم لا ينجس সুবাহানাল্লাহ্! মু’মিন নাপাক হয় না।  (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৯)

তবে অন্যান্য কাজ একেবারে নিষেধ না হলেও কোনো কাজ করার আগে গোপনাঙ্গ ধুয়ে নেয়া ও অজু করে করে নেয়ার কথা একাধিক হাদীসে এসেছে। যেমন-

عن عائشة قالت : كان رسول الله ﷺ إذا كان جنباً فأراد أن يأكل أو ينام توضأ وضوءه للصلاة

আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল  জানাবাতের (গোসল ফরজ) অবস্থায় পানাহার কিংবা ঘুমানোর ইচ্ছা করলে নামাজের অজুর মত অজু করে নিতেন। ( সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫)

উল্লেখ্য, ফরজ গোসল বিলম্বিত হওয়ার কারণে যদি নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে আপনাকে গোনাহগার হতে হবে। আপনার তীব্র লজ্জা এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য কোনো ওজর নয়; যার কারণে নামায আদায়ে এ বিলম্ব করা যেতে পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

সবসময় সাদা স্রাব বের হলে নামাজ কিভাবে পড়বে

 প্রশ্ন                                                                                                         

আমার সবসময় সাদা স্রাব বের হতেই থাকে প্রত্যেকবার নামাজের সময় কাপড় পরিবর্তন করে নতুনভাবে অজু করে নামাজ পড়ি কিন্তু নামাজের মাঝেও স্রাব বের হয়ে কাপড় নষ্ট হয়ে যায় প্রশ্ন হলোআমি কিভাবে নামাজ পড়ব?

উত্তর                                                                                                       

بسم الله الرحمٰن الرحيمحامدا و مصليا و مسلما

যেহেতু আপনার সবসময় স্রাব বের হতেই থাকে, ফরজ নামাজ পড়া যায়- এতটুকু সময় যেহেতু আপনি পান না, তাই শরিয়তের দৃষ্টিতে আপনি ইস্তেহাজাগ্রস্ত ও মাজুর। এক্ষেত্রে আপনার করণীয় হল, আপনি প্রতি ওয়াক্তের ফরজ নামাজের জন্য অজু করবেন এবং কাপড়ের যে অংশে স্রাব লেগেছে তা ধুয়ে নিবেন।

ঐ অজু দিয়ে ঐ ওয়াক্তের মাঝে যত ইচ্ছা ফরজ ও নফল নামাজ আপনি পড়তে পারবেন (তবে অজু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ পাওয়া গেলে অজুটি ভেঙ্গে যাবে)। এ সময় স্রাব বের হতে থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেলে আপনার অজু ভেঙ্গে যাবে। পরবর্তী ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অজু করে নিতে হবে।

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي الْمُسْتَحَاضَةِ ‏‏ تَدَعُ الصَّلاَةَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا الَّتِي كَانَتْ تَحِيضُ فِيهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتَتَوَضَّأُ عِنْدَ كُلِّ صَلاَةٍ وَتَصُومُ وَتُصَلِّي

‘আদী ইবনে সাবিত (রহ.) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ইস্তিহাযার রোগিণী সম্পর্কে বলেন, ইতোপূর্বে সে যে কয়দিন ঋতুবতী থাকত ততদিন নামাজ ছেড়ে দেবে; অতঃপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক নামাজের ওয়াক্তে নতুন করে অজু করবে এবং রোজা রাখবে ও নামাজ আদায় করবে।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ১২৬]

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন:

ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী

সূত্রhttp://www.drkhalilurrahman.com/6136/article-details.html

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...