আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই নামাজে সিজদার জন্য শুধু একটি দোয়াই শিখেছি। অথচ আমাদের রাসুল (সাঃ) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দোয়া সিজদার সময় পড়েছেন এবং শিখিয়েছেন। আসুন এই সহজ দোয়াগুলো আমরা শিখে নিই এবং ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দোয়াগুলো যেকোনো একটি করে বিভিন্ন সময়ে পড়ি, যাতে নামাজের অতি অভ্যস্ততার কারণে অমনোযোগিতা আমরা দূর করতে পারি। সেই সাথে কিছু সুন্নাহ জাগ্রত করতে পারি।
1. سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى.
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “সুবহানা রব্বিয়াল ‘আলা”
অর্থঃ আমার মহান সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। (তিনবার)
2. اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ, وَلَكَ أَسْلَمْتُ, سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ, وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ, تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা ‘আ-মানতু ওয়ালাকা ‘আসলামতু সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খলাক্কাহু ওয়াসাও ওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সাম‘আহু ওয়া বাসারাহু তাবারকাল্লাহু আহসানুল খ-লিক্কীন”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনারই জন্য সিজদা করেছি, আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, আপনার জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছি, আমার মুখমণ্ডল (আমার সমগ্র দেহ) সিজদায় অবনমিত সেই মহান সত্তার জন্য যিনি উহাকে সৃষ্টি করেছেন এবং উহার কর্ণ ও চক্ষু উদ্ভিন্ন করেছেন, মহিমান্বিত আল্লাহ সর্বোত্তম স্রষ্টা।
3. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ, دِقَّهُ وَجِلَّهُ, وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ, وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن أبي هريرة رضي الله عنه)
(حديث صحيح / رواه مسلم عن أبي هريرة رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মাগফিরলী যানবীকুল্লাহু, দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু, ওয়া আউওয়ালাহু ওয়াআ-খিরাহু ওয়া ‘আলানিয়াতা ওয়া সিররাহু”
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দাও, ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ, প্রকাশ্য এবং গোপন গুনাহ।
4. اللَّهُمَّ اِنِّىْ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ, وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ, أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن عائشة رضي الله عنها)
(حديث صحيح / رواه مسلم عن عائشة رضي الله عنها)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযু বিরিদাকা মিন সাখাতিকা, ওয়া বিমু’আ-ফাতিকা মিন ‘উক্কুবাতিকা ওয়া ‘আউযু বিকামিনকা, লা-উহসী সানা-আন ‘আলাইকা আনতা কামা আসনাইতা ‘আলা নাফসিকা”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই আপনার অসন্তুষ্টি হতে আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে, আপনার শাস্তি হতে আপনার ক্ষমার মাধ্যমে, আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই আপনার কহর অভিশাপ হতে। আপনার প্রশংসা গুণে শেষ করা যায় না; আপনি সেই প্রশংসার যোগ্য নিজের প্রশংসা যেরূপ তুমি নিজে করেছ।
5. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي خَطِيئَتِي وَجَهْلِي وَإِسْرَافِي فِي أَمْرِي, وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي جِدِّي وَهَزْلِي وَخَطَئِي وَعَمْدِي وَكُلُّ ذَلِكَ عِنْدِي, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَاقَدَّمْتُ وَمَاأَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ, أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.
(حديث صحيح/ رواه البخاري ومسلم عن أبي موسى الاشعري رضي الله عنه)
(حديث صحيح/ رواه البخاري ومسلم عن أبي موسى الاشعري رضي الله عنه)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলী খাতিয়াতী ওয়াজাহলী ওয়াসিররী ফী আমরী, ওয়ামা আনতা আ'লামু বিহী মিন্নী। আল্লাহুম্মাগফিরলী জাদ্দী ওয়াজাহলী ওয়াখাতায়ী ওয়া'আমদী ওয়াকুল্লু যালিকা ইনদী। আল্লাহুম্মাগফিরলী মাকাদ্দামতু ওয়ামা আক্বারতু ওয়ামা আরসালতু ওয়ামা আ'লানতু, আনতাল মুকাদ্দামু ওয়া' আনাতাল মুয়াক্বারু ওয়া'আনতা আলা কুল্লি সাইয়ীন কাদীর।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার ভুল ত্রুটি এবং আমার মূর্খতা, আমার কাজ কর্মে সীমা লংঘন এবং আমার পক্ষ হইতে সংঘঠিত সেই সব অপরাধ যাহা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন তা মাফ করিয়া দিন। হে আল্লাহ, গাম্ভীর্য গুনাহ, পরিহাস গুনাহ. ইচ্ছেকৃত গুনাহ ও অনিচ্ছাকৃত গুনাহ মাফ করিয়া দিন। সব ধরণের গুনাহ আমার রহিয়াছে। হে আল্লাহ, আমার সকল গুনাহ মাফ করিয়া দিন, যাহা আমি পূর্বে করিয়াছি, আর যাহা পরে করিয়াছি, আর যে গুনাহ আমি গোপনে করিয়াছি আর যাহা প্রকাশ্যে করিয়াছি, যাহা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। আপনিইতো যাহাকে ইচ্ছা অগ্রগামী করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা পশ্চাদগামী করেন এবং আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাশীল।
দুই সিজদার মাঝের বৈঠকের দোয়া
1. اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَعَافِنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي.
(حديث حسن / رواه الترمذي وابو داود عن ابن عباس رضي الله عنهما)
(حديث حسن / رواه الترمذي وابو داود عن ابن عباس رضي الله عنهما)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াফিনী ওয়াহদিনী ওয়ারজুকানী।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমাকে মাফ করিয়া দিন, আমার উপর অনুগ্রহ করুন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং আমাকে জীবিকা দান করুন।
তেলাোয়াতে সেজদার দোয়া
1. سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى.
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)
(حديث صحيح/ رواه مسلم و ابو داود عن حذيفة رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “সুবহানা রব্বিয়াল ‘আলা”
অর্থঃ আমার মহান সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। (তিনবার)
2. اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ, وَلَكَ أَسْلَمْتُ, سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ, وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ, تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ.
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
(حديث صحيح / رواه مسلم عن علي رضي الله عنه)
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা ‘আ-মানতু ওয়ালাকা ‘আসলামতু সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খলাক্কাহু ওয়াসাও ওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সাম‘আহু ওয়া বাসারাহু তাবারকাল্লাহু আহসানুল খ-লিক্কীন”
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনারই জন্য সিজদা করেছি, আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, আপনার জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছি, আমার মুখমণ্ডল (আমার সমগ্র দেহ) সিজদায় অবনমিত সেই মহান সত্তার জন্য যিনি উহাকে সৃষ্টি করেছেন এবং উহার কর্ণ ও চক্ষু উদ্ভিন্ন করেছেন, মহিমান্বিত আল্লাহ সর্বোত্তম স্রষ্টা।
3. اللَّهُمَّ اكْتُبْ لِي بِهَا عِنْدَكَ أَجْرًا, وَضَعْ عَنِّي بِهَا وِزْرًا, وَاجْعَلْهَا لِي عِنْدَكَ ذُخْرًا وَتَقَبَّلْهَا مِنِّي كَمَا تَقَبَّلْتَهَا مِنْ عَبْدِكَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم.
(حديث حسن/ رواه الترمذي والحاكم عن ابن عباس رضي الله عنهما)
(حديث حسن/ رواه الترمذي والحاكم عن ابن عباس رضي الله عنهما)
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আকতুবলী বিহা ইনদাকা আজারা, ওয়াদা' আন্নী বিহা বিজরা, ওয়াজ'আরহা লী ইনদাকা যুথরা, ওয়াতাকাব্বালহা মিন্নী কামা তাকাব্বালতাহা মিন আবদিকা দাউদ আলাইহিস সালামা।
অর্থঃ হে আল্লাহ, এই সিজদার সাওয়াব আপনার নিকট লিখিয়া রাখুন, আর এর দ্ধারা আমার পাপের বোঝা আমার উপর থেকে নামিয়ে দিন, এটাকে আমার জন্য আপনার নিকট পুঁজি বানিয়ে রাথুন, আর উহাকে আমার নিকট হইতে কবুল করিয়া নিন, যেমন কবুল করিয়াছেন আপনার বান্দা দাউদ (আ:) হইতে।
সিজদার ফযিলাত:
আবুহুরাইরা (রা:) হইতে বর্ণিত নবী করীম (স:) বলিয়াছেন, যখন আদম সন্তান সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করিয়া সিজদা করিয়া লয়, তখন শয়তান কাঁদিতে কাঁদিতে একপাশে সরিয়া যায় এবং বলে, হায় আফসোস, আদম সন্তানকে সিজদা করার হুকম করা হইয়াছে, আর সে সিজদা করিয়া জান্নাতের উপযুক্ত হইয়া গিয়াছে। আর আমাকে সিজদা করার হুকম করা হইয়াছে কিন্তু সিজদা করিতে অস্বীকার করিয়া জাহান্নামের উপযুক্ত হইয়াছি। (সহীহ মুসলিম) অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল (স:) বলেছেন, ‘তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশী বেশী সিজদা করবে। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ [সহীহ মুসলিম]
No comments:
Post a Comment