প্রশ্ন: ২২৩ : মুনাজাত শেষে মুখে হাত মোছা যাবে কি ?

প্রশ্নঃ
আমাদের দেশে মুনাজাতের শেষে মুখমন্ডলে হাত মোছার একটা ব্যাপক প্রচলন আছে। আমি অনেক আরব হাফেজ আলেম শায়েখগণকে দেখি তাঁরা মুনাজাত শেষে সরাসরি হাত ছেড়ে দেন।
আসলে হাত মোছা বা ছেড়ে দেওয়া কোনটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
দুআ শেষে হাত চেহারায় মোছা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই চেহারায় হাত মোছাই হাদীস সম্মত। তবে না মুছলেও সমস্যা নেই।
عن عمر بن الخطاب، رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رفع يديه في الدعاء لم يحطهما حتى يمسح بهما وجهه
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করার সময় যখন তার উভয় হাত উঠাতেন, তিনি তা দিয়ে তার মুখমণ্ডল মর্দন না করা পর্যন্ত নামাতেন না। [সুনানে তিরমিজী-২/১৭৬, হাদীস নং-৩৩৮৬, মুসনাদে বাজ্জার-১/২৪৩, হাদীস নং-১১২৯, মুসতাদরাকে হাকেম-২/৭৪৮, হাদীস নং-১৯৬৭]
عبد الله بن عباس، ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ‏”‏ لا تستروا الجدر، من نظر في كتاب اخيه بغير اذنه فانما ينظر في النار، سلوا الله ببطون اكفكم ولا تسالوه بظهورها، فاذا فرغتم فامسحوا بها وجوهكم ‏”‏
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের ঘরের দেয়ালগুলো পর্দায় আবৃত করো না। যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে তার ভাইয়ের চিঠিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো, সে যেন জাহান্নামের আগুনের দিকে তাকালো। তোমরা হাতের পৃষ্ঠের দ্বারা নয় বরং হাতের তালুর দ্বারা আল্লাহর কাছে চাইবে। অতঃপর দু‘আ শেষে তোমাদের হাতের তালু দিয়ে নিজের চেহারা মুছবে। [সুনানে আবু দাউদ-১/২০৯, হাদীস নং-১৪৮৫, মুস্তাদরাকে হাকেম-২/৭৪৯, হাদীস নং-১৯৬৮, মুজামে কাবীর লিততাবারানী-১০/৩১৯, হাদীস নং-১০৭৭৯]
عن الزهرى قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يرفع يديه عند صدره فى الدعاء، ثم يمسح بهما وجهه (مصنف عبد الرزاق-2/247، رقم-3234
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com


বি:দ্র: তবে যেহেতু হাত মুখে মুছার পর হাত চুম্বন করা হাদীসে আসেনি, সেহেতু তা না করাই ভালো। 


প্রশ্ন: ২২২: নবীজী (স.)এর জানাযা কে পড়িয়েছেন?

ইসলাম ডেস্ক: ইবনে মাজাহ শরিফে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মঙ্গলবার সাহাবায়ে কেরাম রাসুলে কারিম সা.-এর গোসল ও কাফনের কাজ শেষ করেন। নবীজির দেহ মোবারক রওজার পাশে রাখেন। সাহাবারা দল দলে নবীজির কাছে আসতে থাকেন। কারও ইমামতিতে নয়; সবাই একা একা নামাজ ও দুরুদ শেষে বেরিয়ে যান। (ইবনে মাজাহ) অন্য কিতাবে আছে, রাসুল সা.-এর ইন্তেকাল এর আগে সাহাবিরা নবীজির দরবারে আসলেন। সাহাবাদের দেখে নবীজির চোখে বেদনার জল। নবীজি বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কাছে সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সঙ্গী হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকটে চলে এসেছে, আপনার ইন্তেকালের পর আপনাকে কে গোসল দিবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত মানে আমার পরিবারের সদস্যরা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন, কে আপনাকে কাফন পরাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনাকে কবরে নামাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনার জানাজা কে পড়াবে? তখন রাসুল সা.-এর চোখ বেয়ে বেদনার জল নেমে এলো। তিনি বললেন, তোমাদের নাবীর জানাজা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে জিবরাইল আমার জানাজা পড়বে। তারপর মিকাঈল ও ই¯্রাফিল ধারাবাহিকভাবে আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে। তারপরে তোমাদের পুরুষরা, নারীরা এবং শিশুরা আমার জন্য দোয়া ও সালাম পড়বে। অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে। (আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২, দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিলবায়হাককি) নবীজি সা.-এর জানাজা বিষয়ে আরো দীর্ঘ হাদিস পাওয়া যায় তিরিমিজি শরিফে। সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, আমি প্রথমে হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা. কে রাসুলে কারিম সা.-এর ইন্তেকালের সংবাদ দিই । তখন আবু বকর সিদ্দিক রা. আমাকে বললেন, তুমি আমার সঙ্গে ভেতরে আসো । সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, হজরত আবু বকর রা. যখন রাসুলের নিকট যেতে চাইলেন, তখন চারপাশে মানুষের প্রচন্ড- ভিড় । হজরত আবু বকর রা. লোকদের বললেন, তোমরা আমাকে সামান্য রাস্তা দাও ! লোকেরা ভেতরে যাওয়ার পথ করে দিল ! তিনি ভেতরে গেলেন, মাথা নুইয়ে কাছে গিয়ে নবীজি সা. কে দেখলেন । নবীজির পবিত্র কপালে হজরত আবু বকর রা. চুমু খেলেন । তারপর কোরআনের আয়াত পড়লেন, যার অর্থ হলো, নিশ্চয় তুমিও ইন্তেকাল করবে এবং তারাও ইন্তেকাল করবে । হজরত আবু বকর রা. বেরিয়ে এলে; লোকেরা জানতে চাইলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজি কি ইন্তেকাল করেছেন ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, হ্যা । তখন লোকেরা নবীজির ইন্তেকালের খবর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলো । তারপর সাহাবায়ে কেরাম হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজির কি জানাজার নামাজ পড়া হবে ? তিনি বললেন, হ্যা । জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, এভাবে যে, এক এক জামাত নবীজির ঘরে প্রবেশ করবে এবং জানাজা পড়ে বেরিয়ে আসবে । তারপর অন্য জামাত প্রবেশ করবে । সাহাবারা হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবীজিকে কি দাফন করা হবে ? তিনি বললেন, জি । জিজ্ঞাসা করা হল, কোথায় ? তিনি বললেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা নবীজির রূহ কবজ করেছেন সেখানেই । কেননা, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয় নবীজিকে এমন স্থানে মৃত্যু দান করেছেন যে স্থানটি উত্তম ও পবিত্র । সাহাবারা দৃঢ়ভাবে মেনে নিলেন হজরত আবু বকর রা.-এর কথা । হজরত আবু বকর রা. নিজেই নবীজির আহলে বায়াত তথা রাসুলের পরিবার ও বংশের মানুষদের ডেকে গোসল নির্দেশ দেন । (সূত্র : শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৯, ৩৯৭, শরফুল মুস্তফা, বর্ণনা নং-৮৫০, আল আনওয়ার ফি শামায়িলিন নাবিয়্যিল মুখতার, বর্ণনা নং-১২০৯) ইমাম শাফি রহ. এবং কাজি ইয়াজ রা. বলেন, নবীজি সা.-এর জানাজা পড়া হয়েছে । কিতাবুল উম্মু/ সিরাতে মস্তুফা/৩য় খ-: ২৩৫ পুনশ্চ : নবীজির জানাজা হয়েছে । সাহাবারা একা একা পড়েছেন । কেউ ইমামতি করেননি । তবে তাবাকাতে ইবনে সাদের বরাতে বলা হয়, হজরত আবু বকর ও ওমর রা. এক সঙ্গে নবীজি সা.-এর ঘরে উপস্থিত হন । নবীজির দেহ মোবরক সামনে রেখে নামাজ-সালাম ও দুরুদ পেশ করেন । দীর্ঘ দোয়ার সময় পেছনে সারিবদ্ধ সাহাবিরা আমিন আমিন বলেছেন । (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৫ম খ-: ২৬৫) ৮ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

প্রশ্ন: ২২১ : টয়লেটে কি অযু করা যাবে?

উত্তর: বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে, হবে।

প্রশ্ন: ২২০ : আমরা জানি কুরান আল্লাহর পবিত্র বানী। পবিত্র অবস্থায় পড়তে হয়। কিন্ত কিছু কিছু সময় থাকে ওযু করা একটু কষ্ট হয় যেমন কেউ কোন কর্মক্ষেত্রে আছে বা কেউ ভ্রমণে আছে বা কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে বসে আছে সেই মুহুর্তে কুরান পড়তে চাইলে ওযু ছাড়া পড়া যাবে কি না?

উত্তর : কুরআন পড়ার জন্য অযু শর্ত নয়।

প্রশ্ন: ২১৯ : আমার কয়েক হাজার টাকা ঋণ আছে, আমার যা ইনকাম তা দিয়ে শোধ করতে কয়েক মাস লাগবে কিন্তু পাওনাদারদের আর এক মাসও মানানো যাচ্ছে না, এই মুহূর্তে আমার ব্যাংক থেকে সুদের টাকা তোলার জন্য অনেকেই বলতেছে । এই বিপদের মধ্যে আমার এই কাজটা করা কি ঠিক হবে?

উত্তর : না । আপনার যা সাধ্য আছে সে অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ করুন। যারা বেশী চাপাচাপি করছে তারা সুন্নতের খেলাপ করছে।

প্রশ্ন: ২১৮ : সর্বশেষ মৃত্যুবরণ কারী ব্যক্তি কবরে কতদিন থাকবে?

উত্তর : কোন কোন বর্ণনা অনুযায়ী চল্লিশ হাজার বছর। আসলে এতে কবর বাসীদের কিছু আসে যায় না। কারণ কবর থেকে ওঠার পর তাদের মনে হবে তারা কিছুক্ষণ আগে ঘুমিয়েছিল। এখন ঘুম থেকে জাগলো। (সুরা ইয়াসীন)

প্রশ্ন: ২১৭ : যদি কোন মহিলার স্বামী বিদেশ থাকে এবং বিদেশ থেকে মারা যায় তাহলে কি সেই নারীর ক্ষেত্রে ইদ্দত পালন করা লাগবে কিনা?

উত্তর: জ্বি ইদ্দত পালন করা লাগবে।

প্রশ্ন: ২১৬ : অজুর ফরজ কয়টি ও কি কি চার মাযহাবের ইমামদের মতামত সহ

অজুর ফরজ চারটি।
১. মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত সমস্ত মুখ ধৌত করা।
২. উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।
৩. মাথার চার ভাগের একভাগ মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনু -গিরাসহ ধৌত করা।
দাড়ি ঘন হলে তার গোড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরী নয়।
যদি এসব অঙ্গের কোন একটির নখ পরিমাণও শুকনা থাকে,তাহলে অজু শুদ্ধ হবেনা।
ইমাম আহমদ ও ইমাম শাফেই (রহ.) এর মতে নিয়ত করা এবং অজুর ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও ফরজ।
আর ইমাম মালেক (রহ.) এর মতে একের পর এক অর্থাৎ এক অঙ্গ শুকাতে না শুকাতে আরেক অঙ্গ ধোয়াও ফরজ।
ইমাম আহমদ (রহ.) এর মতে বিসমিল্লাহ বলা,কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়াও ফরজ। ইমাম মালেক ও আহমদ (রহ.) এর মতে সমস্ত মাথা মাসেহ করা ফরজ।

মালাবুদ্দা-মিনহু ৩০

প্রশ্ন: ২১৫ : জামাতে নামাজ না পড়ার শাস্তি কি ?

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ পড়ো নামাজিদের সঙ্গে।’ অর্থাৎ তোমারা জামাতসহকারে  নামাজ পড়ো। (সূরা বাকারা)।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ
خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
‘পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরন কর, সে দিন তাদেরকে সিজদা করতে বলা হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না। তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সিজদা করার জন্য আহ্বান জানানো হত। কিন্তু তারা সাড়া দিত না। (সূরা কালাম-৪২-৪৩)।
নবী কারীম সা. ইরশাদ করেন-  ‘জামাতের সঙ্গে নামাজে সাতাশ গুণ বেশি পূণ্য নিহিত রয়েছে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি)
তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘একা নামাজ পড়া অপেক্ষা দু’জনে জামাতে নামাজ পড়া উত্তম। দু’জন অপেক্ষা বহুজন মিলে জামাতে নামাজ পড়া আল্লাহর কাছে আরো বেশি পছন্দনীয় এবং উত্তম।’ (আবু দাউদ)।
তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়বে, সে অর্ধরাত বন্দেগির সওয়াব পাবে। যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়বে, পূর্ণ রাত বন্দেগি করার পূণ্য লাভ করবে।’ (তিরমিযি)।
এজন্য নবীজি (সা.) কখনো জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনো দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি।
এমন কী নবীজি (সা.) তো এতটুকুও বলেছে,  ‘আমার তো মনে চায় মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলব এবং কাউকে নামাজ পড়াতে বলব আর আমি আগুনের অঙ্গার নিয়ে যাব, যে আজান শুনার পরও মসজিদে জামাতে হাজির হওয়ার জন্য বের হয়নি- তার ঘর জ্বালিয়ে দিই।’ (বুখারি, মুসলিম)।
তিনি আরো বলেন- ‘কোথাও যদি তিনজন মানুষ থাকে, আর তারা যদি জামাতে নামাজ না পড়ে, তাহলে শয়তান তাদের ওপর বিজয়ী হয়ে যাবে। কাজেই তুমি জামাতে নামাজ পড়াকে কর্তব্য মনে করো।’  (নাসায়ি)
তিনি আরো বলেন- ‘সেই ব্যক্তির ওপর আল্লাহর অভিশাপ, যে আজান শুনেও জামাতে উপস্থিত হয় না।’ (মাজমাউজ্জাওয়াইদ)।
চিন্তার বিষয় হলো, নবীজি (সা.) যেখানে জামাতে অনুপস্থিত মুসাল্লির ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, সেখানে যে বেনামাজি, তার শাস্তি যে  কত ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়।
নবীকরীম (সা.) এর নিকট এক অন্ধ ব্যক্তি এসে বলল,  ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে মসজিদে পৌছে দেবে।
সে নবীজীর কাছে অনুমতি চাইল বাড়িতে নামাজ পড়ার জন্য। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর অন্ধ লোকটি চলে যেতে শুরু করলে রাসূল (সা.) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কী আজান শুনতে পাও?’ সে বলল? জ্বী- হাঁ, শুনতে পাই। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে জওয়াব দেবে। অর্থাৎ মসজিদে উপস্থিত হবে। (মুসলিম)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘কোনো মুমিন বান্দার পক্ষে আজান শুনেও জামাতে শামিল না হওয়ার চেয়ে গলিত সীসা কানে ঢেলে দেওয়া উত্তম। (কিতাবুস সালাহ)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেন, আজান শোনার পর বিনা ওযরে যে ব্যক্তি নামাজের জামাতে শরীক হয় না তার একাকী নামাজ পড়া কবুল হবে না। জানতে চাওয়া হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ওজর বলতে কী বুঝায়? তিনি বললেন, বিপদ অথবা রোগব্যাধি। (আবু দাউদ, ইবনেমাজাহ)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) আরো বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন (১) যে নেতাকে লোকেরা অপছন্দ করে, (২) যে নারী তার স্বামী অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় রাত যাপন করে, (৩) নামাজের আজান শ্রবণ করেও যে জামাতে শরীক হয় না। (হাকেম)।
হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘মসজিদের প্রতিবেশী লোকজনের নামাজ মসজিদ ব্যতিত সঠিক হবে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, মসজিদের প্রতিবেশী কারা? ‘যে বাড়ীতে আজান শুনতে পায়।’ (মুসানদে আহমাদ)।
হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন যে ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর দীদার লাভ করতে চায় সে যেন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক মতো আদায় করে।’ কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হিদায়াতের বিধানাবলি প্রবর্তন করে দিয়েছেন। আর এ নামাজগুলো হচ্ছে হিদায়াতের অন্যতম পন্থা। অনেকের মতো তোমরাও যদি নিজ গৃহে নামাজ পড়, তবে যেন নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর তোমরা যদি নবীর পথ ছেড়ে দাও, তাহলে পথভ্রষ্ট হবে। আমার জানা মতে, মুনাফিক বা অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ জামাতে শামিল হতে অবহেলা করে না। অথচ যে ব্যক্তি দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত আসে, অবশ্যই সে জামাতে নামাজের জন্যই আগমন করে।
হজরত ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, একবার হজরত ওমর (রা.) তার খেজুর বাগান পরিদর্শনে গেলেন। তিনি তখন জামাত ছুটে যাওয়ার কাফফারা স্বরুপ খেজুর বাগানটি সদকা করে দেন।
সংগ্রহে: আব্দুল রাফি আব্দুল্লাহ
ডেইলি বাংলাদেশ/আরএজে

প্রশ্ন: ২১৪ : বিতরের কাযা আদায় করা যাবে কি?

উত্তর:
-----------------------------
বিত্‌র নামায যথা সময়ে না পড়া হলে তা কাযা পড়া বিধেয়। মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিত্‌র না পড়ে ঘুমিয়ে যায় অথবা তা পড়তে ভুলে যায় সে ব্যক্তি যেন তা স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেয়।” (আহমাদ, মুসনাদ, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্‌),হাকেম, মুস্তাদরাক, জামে ৬৫৬২নং) তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি ঘুমিয়ে থেকে বিত্‌র না পড়তে পারে সে ব্যক্তি যেন ফজরের সময় তা পড়ে নেয়।” (তিরমিযী, সুনান, ইর: ৪২২, জামে ৬৫৬৩নং)
খোদ মহানবী (সাঃ)-এর কোন রাত্রে বিত্‌র না পড়ে ফজর হয়ে গেলে তখনই বিত্‌র পড়ে নিতেন। (আহমাদ, মুসনাদ ৬/২৪৩, বায়হাকী ১/৪৭৯, ত্বাবারানী, মু’জাম, মাজমাউয যাওয়াইদ,হাইষামী ২/২৪৬)
একদা এক ব্যক্তি মহানবীর দরবারে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! ফজর হয়ে গেছে অথচ আমি বিত্‌র পড়তে পারিনি।’ তিনি বললেন, “বিত্‌র তো রাত্রেই পড়তে হয়।” লোকটি পুনরায় বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! ফজর হয়ে গেছে অথচ আমি বিত্‌র পড়তে পারিনি।’ এবারে তিনি বললেন, “এখন পড়ে নাও।” (ত্বাবারানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৭১২নং)
এ হাদীস থেকে স্পষ্ট হয় যে, ফজর হয়ে গেলেও বিতর নামায বিতরের মতই কাযা পড়া যাবে। (সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৪/২৮৯ দ্র:)
মনে রাখবেন-তবে সেদিন সূর্যোদয়ের পরে বিতির পড়তে হলে চাশতের ওয়াক্তে ১২ রাকাত নামাজ চাশতের নিয়তে আদায় করে নিলেই যথেষ্ট হবে। কারো যদি ৩ রাকাত বিতির পরার অভ্যাস থাকে তবে ৪ রাকাত পরে নিবে জোর করে কারন সূর্যোদয়ের পরে বিতির পড়লে বিজোড় পড়া যাবে না।

প্রশ্ন: ২১৪ : তাশাহুদের বৈঠকে আঙ্গুল কখন কিভাবে উঠাবে?

উত্তর: 
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
নামাযী নামাযের মধ্যে যখন মৌখিকভাবে তাওহীদের সাক্ষ্য দেয় তখন তার আঙ্গুলও এই সাক্ষ্য দিবে। এজন্য আত্তাহিয়্যাতু পড়তে পড়তে যখন “আশহাদু আল্লা..ইলাহা” পর্যন্ত পৌছবে তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা দ্বারা গোলক/বৃত্ত বানাবে, এবং শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। “ইল্লাল্লাহ” বলার পর শাহাদত আঙ্গুলি নিচু করবে। তবে অন্য আঙ্গুলগুলো আপন অবস্থায় নামাযের শেষ পর্যন্ত থাকবে।
উল্লেখ্য যে,বৃদ্ধাঙ্গুলির নিকটতম আঙ্গুলকে শাহাদত আঙ্গুল বলা হয়।
ইশারা শেষ করে আঙ্গুল আর নড়াচড়া করবে না।
ﻓﺎﻟﻤﺮﺍﺩ ﻭﺿﻊ ﺍﻻﻛﻒ ﺛﻢ ﻗﺒﺾ ﺍﻻﺻﺎﺑﻊ ﺑﻌﺪ ﺫﻟﻚ ﻋﻨﺪ ﺍﻻﺷﺎﺭﺓ ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻤﺮﻭﻯ ﻋﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﻓﻰ ﻛﻴﻔﻴﺔ ﺍﻻﺷﺎﺭﺓ، ﻗﺎﻝ ﻳﻘﺒﺾ ﺧﻨﺼﺮﻩ ﻭﺍﻟﺘﻰ ﺗﻠﻴﻬﺎ ﻭﻳﺤﻠﻖ ﺍﻟﻮﺳﻄﻰ ﻭﺍﻻﺑﻬﺎﻡ ﻭﻳﻘﻴﻢ ﺍﻟﻤﺴﺒﺤﺔ ﻭﻛﺬﺍ ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﻳﻮﺳﻒ ﻓﻰ ﺍﻻﻣﺎﻟﻰ ‏( ﺍﻟﻰ ﺍﻥ ﻗﺎﻝ ‏) ﻭﺻﻔﺔ ﺍﻻﺷﺎﺭﺓ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﻠﻮﺍﻧﻰ ﺍﻧﻪ ﻳﺮﻓﻊ ﺍﻻﺻﺒﻊ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻨﻔﻰ ﻭﻳﻀﻌﻬﺎ ﻋﻨﺪ ﺍﻻﺛﺒﺎﺕ ﺍﺷﺎﺭﺓ ﺍﻟﻴﻬﻤﺎ، ‏( ﺣﻠﺒﻰ ﻛﺒﻴﺮ 328-
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻗُﺘَﻴْﺒَﺔُ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻟَﻴْﺚٌ ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺠْﻼَﻥَ ﺡ ﻗَﺎﻝَ ﻭَﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮِ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻰ ﺷَﻴْﺒَﺔَ - ﻭَﺍﻟﻠَّﻔْﻆُ ﻟَﻪُ - ﻗَﺎﻝَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺧَﺎﻟِﺪٍ ﺍﻷَﺣْﻤَﺮُ ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺠْﻼَﻥَ ﻋَﻦْ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﺇِﺫَﺍ ﻗَﻌَﺪَ ﻳَﺪْﻋُﻮ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻩِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻩِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻭَﺃَﺷَﺎﺭَ ﺑِﺈِﺻْﺒَﻌِﻪِ ﺍﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ ﻭَﻭَﺿَﻊَ ﺇِﺑْﻬَﺎﻣَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺻْﺒَﻌِﻪِ ﺍﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﻳُﻠْﻘِﻢُ ﻛَﻔَّﻪُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﺭُﻛْﺒَﺘَﻪُ .
হযরত আমের আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদ পড়ার জন্য বসতেন,তখন ডান হাতখানা ডান উরুর উপর এবং বাঁ হাতখানা বাঁ উরুর উপর রাখতেন। আর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। এ সময় তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলিকে মধ্যমার সাথে সংযুক্ত করতেন এবং বাঁ হাতের তালু [বাঁ] হাঁটুর উপর রাখতেন। {সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১৩৩৬, কিতাবুল মাসাজিদ, সহীহ ইবনে হিব্বান-৫/২৭০}
ﻭَﺣَﺪَّﺛَﻨِﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺭَﺍﻓِﻊٍ ﻭَﻋَﺒْﺪُ ﺑْﻦُ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ ﻗَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪٌ ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺭَﺍﻓِﻊٍ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺯَّﺍﻕِ ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻣَﻌْﻤَﺮٌ ﻋَﻦْ ﻋُﺒَﻴْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻋَﻦْ ﻧَﺎﻓِﻊٍ ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﻠَﺲَ ﻓِﻰ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘَﻴْﻪِ ﻭَﺭَﻓَﻊَ ﺇِﺻْﺒَﻌَﻪُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﺍﻟَّﺘِﻰ ﺗَﻠِﻰ ﺍﻹِﺑْﻬَﺎﻡَ ﻓَﺪَﻋَﺎ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘِﻪِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﺑَﺎﺳِﻄُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ নামায পড়ার সময় যখন বসতেন বৈঠক করতেন] তখন হাত দুইখানা দ্ইু হাঁটুর উপর রাখতেন। আর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববতী [শাহাদাত] আঙ্গুল উঠিয়ে ইশারা করতেন এবং বাঁ হাত বাঁ হাঁটুর উপর ছড়িয়ে রাখতেন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৩৩৭}
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﻗَﻌَﺪَ ﻓِﻰ ﺍﻟﺘَّﺸَﻬُّﺪِ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘِﻪِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻭَﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘِﻪِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻭَﻋَﻘَﺪَ ﺛَﻼَﺛَﺔً ﻭَﺧَﻤْﺴِﻴﻦَ ﻭَﺃَﺷَﺎﺭَ ﺑِﺎﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদের জন্য বসতেন, তখন বাম হাতকে রাখতেন বাম হাঁটুর উপর এবং ডান হাতখানা ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। আর [হাতের তালু ও আঙ্গুলসমূহ গুটিয়ে আরবী] তিপ্পান্ন সংখ্যার মত করে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। {সহীহ মুসলিম,হাদীস নং-১৩৩৮}
উল্লেখিত হাদীসমূহে শুধুমাত্র আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করার কথা এসেছে। আঙ্গুল নাড়ানোর কথা আসেনি। কিন্তু আঙ্গুল নাড়বে কি না? এ ব্যাপারে কোন স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। অন্য হাদীসে তাও স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। যেমন-
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢُ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﺍﻟْﻤِﺼِّﻴﺼِﻰُّ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﺠَّﺎﺝٌ ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺟُﺮَﻳْﺞٍ ﻋَﻦْ ﺯِﻳَﺎﺩٍ ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺠْﻼَﻥَ ﻋَﻦْ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﺃَﻧَّﻪُ ﺫَﻛَﺮَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺸِﻴﺮُ ﺑِﺄُﺻْﺒُﻌِﻪِ ﺇِﺫَﺍ ﺩَﻋَﺎ ﻭَﻻَ ﻳُﺤَﺮِّﻛُﻬَﺎ .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদ পড়তেন,তখন আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন, কিন্তু আঙ্গুল নাড়াতে থাকতেন না। {সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৯৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৯৯১, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-১৫৯৪}
হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসদের মন্তব্য
১-
ইমাম আব দাউদ উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করার পর কোন মন্তব্য করেননি। আর মুহাদ্দিসদের কাছে এটি প্রসিদ্ধ যে, ইমাম আবু দাউদ কোন হাদীস বর্ণনা করার পর তার ব্যাপারে কোন মন্তব্য না করার মানেই হল, উক্ত হাদীসটি তার কাছে সহীহ।

ইমাম নববী রহঃ বলেন- হাদীসটির সনদ সহীহ। {আলখুলাসা-১/৪২৮, আলমাজমূ-৩/৪৫৪}

মুহাদ্দিস আব্দুল হক শিবলী রহঃ বলেন- হাদীসটির সনদ সহীহ। {আলআহকামুস সুগরা-২৪৯}

ইবনে দাকীকুল ঈদ রহঃ বলেন- কতিপয় মুহাদ্দিসদের বক্তব্য অনুপাতে হাদীসটি সহীহ। {আলইলমাম ফি বিআহাদীসিল আহকাম-১/১৭৫}

আল্লামা ইবনুল মুলাক্কিন রহঃ বলেন- হাদীসটি সহীহ। {খুলাসাতুল বদরুল মুনীর-১/১৩৯, আলবাদরুল মুনীর-৪/১১, তুহফাতুল মুহতাজ-১/৩২৩}

শায়েখ হায়সামী রহঃ বলেন- সনদের রাবীগণ সিক্বা। {মাযমাউজ জাওয়ায়িদ-২/১৪৩}

ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন- হাদীসটি হাসান। {তাখরীজে মিশকাতুল মাসাবীহ-১/৪১১}
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

প্রশ্ন: ২১৩ : মাগরিব নামাজ একাকী পড়লে কেরাত চুপিচুপি পড়া যাবে কি?

প্রশ্ন

যোহরের নামায ও আসরের নামাযে ক্বিরাত চুপে চুপে পড়া, আর ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযে উচ্চস্বরে পড়ার সপক্ষে কুরআন-সুন্নাহর কী দলিল রয়েছে?
উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।
তোমার এই উচ্চাকাঙ্খার জন্য আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং এই বয়সে কুরআন-সুন্নাহ্‌র দলিল জানার আগ্রহ দেখে আমরা প্রীত হচ্ছি। আমরা আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করছি তিনি যেন, তোমাকে কাজে লাগান।
আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণ ও অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: "তোমাদের জন্য তথা যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌কে ও আখিরাতকে ভয় করে এবং আল্লাহ্‌কে বেশি বেশি স্মরণ করে তার জন্য রাসূলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ।[সূরা আহযাব, আয়াত: ২১]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায পড়"। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাযে, মাগরিব ও এশার নামাযের প্রথম দুই রাকাতে শব্দ করে তেলাওয়াত করতেন। আর বাকী নামাযে চুপে চুপে তেলাওয়াত করতেন।
উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করার দলিলসমূহের মধ্যে রয়েছে:
জুবাইর বিন মুতয়িম (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মাগরিবের নামাযে (সূরা) "তূর" তেলাওয়াত করতে শুনেছি।"[সহিহ বুখারী (৭৩৫) ও সহিহ মুসলিম (৪৬৩)]
আল-বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এশার নামাযে "ওয়াত ত্বীনি ওয়ায যাইতূন" পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠের তেলাওয়াত শুনিনি।"[সহিহ বুখারী (৭৩৩) ও সহিহ মুসলিম (৪৬৪)]
জ্বিনদের উপস্থিত হওয়া ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কুরআন শুনা প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস। সে হাদিসে রয়েছে: "তিনি তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করছিলেন। যখন তাদের কানে কুরআন পৌঁছল তখন তারা মনোযোগ দিয়ে কুরআন শুনল।"[সহিহ বুখারী (৭৩৯) ও সহিহ মুসলিম (৪৪৯)]
এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করতেন যাতে করে উপস্থিত লোকেরা শুনতে পায়।
আর যোহর ও আসরের নামাযে চুপে চুপে তেলাওয়াত করার সপক্ষে প্রমাণ হচ্ছে:
খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক লোক তাকে জিজ্ঞেস করল: রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি যোহর ও আসরের নামাযে ক্বিরাত পড়তেন? তিনি বলেন: হ্যাঁ। আমরা বললাম: আপনারা সেটা কিভাবে জানতেন? তিনি বললেন: তাঁর দাঁড়ির নড়াচড়া দেখে।"[সহিহ বুখারী (৭১৩)]
সুতরাং এর মাধ্যমে পরিস্কার হয়ে গেল যে, উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করার নামাযগুলোতে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করা এবং চুপেচুপে তেলাওয়াত করার নামাযগুলোতে চুপেচুপে তেলাওয়াত করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ্‌ (আদর্শ) এবং গোটা মুসলিম উম্মাহ্‌ এ ব্যাপারে একমত।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: "তিনি প্রত্যেক নামাযে তেলাওয়াত করতেন। তিনি যে নামাযগুলোতে আমাদেরকে শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে শুনিয়ে তেলাওয়াত করি। আর তিনি যে সব নামাযে আমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করতেন সে সব নামাযে আমরাও তোমাদেরকে না শুনিয়ে তেলাওয়াত করি।"[সহিহ বুখারী (৭৩৮) ও সহিহ মুসলিম (৩৯৬)]
ইমাম নববী বলেন: “সুন্নাহ্‌ হচ্ছে—ফজর, মাগরিব ও এশার দুই রাকাতে এবং জুমার নামাযে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করা। আর যোহর ও আসরের নামাযে এবং মাগরিবের তৃতীয় রাকাতে এবং এশার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে চুপেচুপে তেলাওয়াত করা। সুস্পষ্ট সহিহ হাদিসের সাথে মুসলিম উম্মাহর ইজমার ভিত্তিতে এসব বিধান সাব্যস্ত।”[আল-মাজমু (৩/৩৮৯) থেকে সমাপ্ত]
ইবনে কুদামা (রহঃ) বলেন:  
“যোহর ও আসরের নামাযে চুপেচুপে তেলাওয়াত করবে। মাগরিব ও এশার নামাযের প্রথম দুই রাকাতে এবং ফজরের নামাযের সব রাকাতে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করবে...। এর দলিল হচ্ছে—নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল। এটি পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে পরবর্তীদের প্রচারের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়েছে। অতএব, কেউ যদি চুপেচুপে পড়ার নামাযে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করে কিংবা উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করার নামাযে চুপেচুপে পড়ে তাহলে সে সুন্নাহ্‌র খিলাফ করল। কিন্তু তার নামায শুদ্ধ হবে।”[আল-মুগনি (২/২৭০) থেকে সমাপ্ত]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

প্রশ্ন: ২১২ : সুরা তওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া যাবে কি ?

সূরা আত-তাওবাহ: অনুশোচনা
সূরা আত-তওবাহ পবিত্র কুরআন শরীফের ৯ম সূরা। এই সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৯টি। আরবি তওবা অর্থ ক্ষমা। একে সূরা তওবা বলা হয়, কারণ এতে মুসলমানদের তওবা কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। সূরাটির অন্য নাম হলো বারা'আত - একে বারা'আত বলা হয় কারণ, এতে কাফিরদের তথা অবিশ্বাসীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্ব-মুক্তির উল্লেখ আছে।
পবিত্র কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা রয়েছে। তার মধ্যে সূরা তাওবাহ ছাড়া বাকি ১১৩টি সূরার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ রয়েছে। কিন্তু সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ নেই।
সূরা আত-তাওবাহ -তে ‘বিসমিল্লাহ’ না থাকার কারণ:
পবিত্র কুরআন শরীফের বিভিন্ন অংশ ২৩ বছরের দীর্ঘ পরিসরে অবতীর্ণ হয়েছিল। কখনও একটি পূর্ণাঙ্গ সূরাও ভেঙে ভেঙে অবতীর্ণ হতো। হযরত জিব্রাইল (আ:) তা কোথায় বসাতে হবে, তা বলে দিতেন। একটি সূরা সমাপ্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় সূরা শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ নাযিল হতো। এর থেকে বুঝা যেত যে, একটি সূরা শেষ হলো, অতঃপর অপর সূরা শুরু হলো। কুরআন মাজীদের সকল সূরার বেলায় এ নীতি-বলবৎ থাকে।
কিন্তু সাধারণ নিয়ম মতে তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ নাযিল হয়নি, আর রসূলুল্লাহ (স.) তা লিখে নেয়ার জন্য ওহী লেখকদের নির্দেশও দেন-নি এবং এই সূরা কোন সূরার অংশ তাও বলেননি। এই অবস্থায় রসূলুল্লাহ (স:) ইন্তেকাল করেন।
তাই মাসহাফ-ই ওসমানীতেও (তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমান (রা.) কর্তৃক প্রকাশিত কুরআন) সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখা হয়নি। সূরা আনফাল এই সূরার পূর্বে অবতীর্ণ হওয়ায় সূরা তাওবাহকে সূরা আনফলের পরে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এবং আয়াত সংখ্যা বেশি হওয়ায় আনফলের সাথে অন্তর্ভুক্ত না করে তওবাকে আলাদা করে স্থান দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞ 'আলেমদের বক্তব্য হলো, যেহেতু অবতরণের সময় সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ ছিল না, তাই সূরা তাওবাহ আনফালের সাথে পড়লে এর পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়তে হবে না, অন্যথায় পড়তে হবে।

(উত্তর দানে : আবদুল বাতেন) 

প্রশ্ন: ২১১: নামাজে সতর কতটুকু ঢাকতে হবে?হাতের কুনুই খোলা রাখলে কি নামাজ হবে?আমি টিসার্ট পরে নামাজ পড়ি এতে হাতের কুনুই খোলা থাকে, এতে কি নামাজ যথাযথ হবে?

নামাজে সতর ঢাকা প্রসঙ্গে:
মুফতি মাহমুদ হাসান
==================

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম একটি শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। মহিলাদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কবজি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরূহ হবে-
(ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১০৬)। ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তাহলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় নামাজ নষ্ট হবে না।
যদি একাধিক জায়গায় সামান্য করে খোলা থাকে, তাহলে এর সমষ্টি ছোট একটি অঙ্গের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ হলেও নামাজ হবে না- (রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৯, তাবয়ীনুল হাক্বায়েক্ব ১/৯৭)।
মহিলাদের চুলও সতরের অন্তর্ভুক্ত, একটি চুলের এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে গেলেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে- (তাবয়ীনুল হাক্বায়েক্ব ১/৯৭)।
অনুরূপ এত পাতলা পোশাক, যাতে বাইরে থেকে ভেতরের অঙ্গগুলোর রং দেখা যায় তা দিয়েও নামাজ শুদ্ধ হবে না- (রদ্দুল মুহতার ১/৩৮১)।
জীবজন্তুর স্পষ্ট ছবিবিশিষ্ট কাপড়ে নামাজ পড়া মাকরূহ। (হেদায়া ১/১২২)
অনেক পুরুষ নামাজের আগের তাঁদের টাখনুর কাপড় ওপরে উঠিয়ে নেন, এটি অত্যন্ত জরুরি বিষয়। একটি হাদিসে এসেছে, 'টাখনুর নিচের কাপড় পরিধানকারীর নামাজ কবুল হয় না।' তবে তা শুধু নামাজের সময়ের আমল নয়, যদিও নামাজের সময় এর গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়।
বরং পুরুষের লুঙ্গি-পায়জামা ইত্যাদি নামাজের ভেতরে-বাইরে সর্বদা টাখনুর উপর কাপড় পরিধান অপরিহার্য। হাদিস শরিফে এর প্রতি ভীষণ ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে- (সুনানে আবী দাউদ হাঃ ৬৩৮, বোখারি হাঃ ৫৭৮৭)। কেউ কেউ প্যান্ট এত নিচে পরিধান করেন যে সতরের অংশবিশেষ খুলে যায়, তাতে নিজের নামাজের তো ক্ষতি হচ্ছেই, অন্যদেরও অসুবিধা হয়।
লেখক : ফতোয়া সংকলন প্রকল্পের গবেষক
============================

প্রশ্ন : নামাজের সময় মেয়েদের সতর কী হবে?

উত্তর : মেয়েরা টাখনুর নিচ পর্যন্ত কাপড় পরবেন। কিন্তু পায়ের পাতা ঢাকতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। পায়ের পাতা ঢাকতে হলে তো মোজা পরতে হবে, আর মোজা পরে নামাজ পড়তে হবে, এ ধরনের কোনো সহিহ বর্ণনা রাসুল (সা.) দেননি।

তবে কেউ চাইলে মোজা পরতে পারেন। এককথায়, শাড়ি হোক বা কামিজ, মেয়েরা টাখনুর নিচ পর্যন্ত ঢাকবেন; কিন্তু পায়ের পাতা ঢাকার আবশ্যক নেই।

- ড. মুহাম্মদ মতিউল ইসলাম।


প্রশ্ন: ২১০: নামাজে খুশু খুযু সৃষ্টির উপায়।

১। নামাজ রত অবস্থায় আল্লাহর ধ্যানে থাকবেন ।

২। পরকালকে স্মরণ করবেন। হাশরের ময়দানে আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে জবাবদিহি করতে হবে এই দৃশ্য মনে মনে কল্পনা করবেন।

৩। নামাজে যা পড়ছেন, তার অর্থ শিখে নেবেন, এবং নামাজ পড়ার সময় অর্থের দিকে খেয়াল রাখবেন।

প্রশ্ন: ২০৭ : ইসলামে কি গণতন্ত্র জায়েয ?

উত্তর : ইসলামে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র জায়েজ, শুধু জায়েজই নয়, বরং জরুরী এবং ফরজ।

দলিল : সুরা আলে ইমরানের ১৫৯ নং আয়াত :

(হে রাসূল!) আল্লাহর পক্ষ থেকে এ এক অনুগ্রহ যে, তুমি তাদের প্রতি দয়ার্দ্রচিত্ত হয়েছ। যদি তুমি রুক্ষ মেজাজ ও কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে তবে অবশ্যই তারা তোমার চারপাশ থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা কর এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কাজের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে পরামর্শ কর, অতঃপর যখন তুমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর তখন আল্লাহর ওপর নির্ভর কর ; (কেননা,) আল্লাহ তাঁর ওপর নির্ভরকারীদের ভালবাসেন।

এ আয়াতে দেখুন স্পষ্ট ভাষায় ‍উল্লেখ আছে “এবং কাজের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে পরামর্শ কর।’ 

সুতরাং ইসলামে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র ফরজ। 

Privacy Policy for BORAC DRIVER APP

Privacy Policy for BORAC DRIVER APP

App Package nazim.borac.driver  Privacy Policy

nazim.borac.driver Privacy Policy

This Privacy Policy describes how your personal information is collected, used, and shared when you use this app - package name: nazim.borac.driver (the app).

PERSONAL INFORMATION WE COLLECT

When you use this app, we automatically collect certain information about your device, including information about your name, phone number, time zone, dates  are installed on your device. Additionally, as you use this app, we use your sd card as wel as your device storage, your device location, collect information about how you interact with the app. We refer to this automatically-collected information as - Device Information.

We collect your Device Information using the following technologies:

    -  Cookies - are data files that are placed on your device or computer and often include an anonymous unique identifier. For more information about cookies, and how to disable cookies, visit http://www.allaboutcookies.org.
    - Log files  - track actions occurring on the App, and collect data including your IP address, device type, Internet service provider, referring/exit pages, and date/time stamps.
    - Web beacons, tags, and pixels are electronic files used to record information about how you use the App.
    - Device location - as it is a finding driver app, we have to know your location, so that the driver who accepted your request can easily find you and provide the service where you want to go.
    - Device Service - we  use your device service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request.
    - Device Messaging Service - we use your devices messaging service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request.
    - Additionally when you make a request or attempt to make a request through the app, we collect certain information from you, including your name, location, place, addresses  and phone number.  We refer to this information as - request Information.
   

When we talk about - Personal Information- in this Privacy Policy, we are talking both about Device Information and request Informations.

HOW DO WE USE YOUR PERSONAL INFORMATION?

We use the request Information that we collect generally to fulfill any request placed through the App (including processing your location information, arranging drivers, and providing you with invoices and/or request confirmations).  Additionally, we use this request Information to:
  
    -Communicate with you;
    -Screen your request for potential risk or fraud; and
When in line with the preferences you have shared with us, provide you with information or advertising relating to our products or services.

We use the Device Information that we collect to help us screen for potential risk and fraud (in particular, your IP address), and more generally to improve and optimize our App (for example, by generating analytics about how our customers request and interact with the App, and to assess the success of our marketing and advertising campaigns).


SHARING YOUR PERSONAL INFORMATION


We share your Personal Information with third parties to help us use your Personal Information, as described above.  For example, we use Shopify to power our online store--you can read more about how Shopify uses your Personal Information here:  https://www.shopify.com/legal/privacy.  We also use Google Analytics to help us understand how our customers use the Site--you can read more about how Google uses your Personal Information here:  https://www.google.com/intl/en/policies/privacy/.  You can also opt-out of Google Analytics here:  https://tools.google.com/dlpage/gaoptout.

Finally, we may also share your Personal Information to comply with applicable laws and regulations, to respond to a subpoena, search warrant or other lawful request for information we receive, or to otherwise protect our rights.

BEHAVIOURAL ADVERTISING
As described above, we use your Personal Information to provide you with targeted advertisements or marketing communications we believe may be of interest to you.  For more information about how targeted advertising works, you can visit the Network Advertising Initiative’s (-NAI-) educational page at http://www.networkadvertising.org/understanding-online-advertising/how-does-it-work.

You can opt out of targeted advertising by:
[[
  INCLUDE OPT-OUT LINKS FROM WHICHEVER SERVICES BEING USED.
  COMMON LINKS INCLUDE:
    FACEBOOK - https://www.facebook.com/settings/?tab=ads
    GOOGLE - https://www.google.com/settings/ads/anonymous
    BING - https://advertise.bingads.microsoft.com/en-us/resources/policies/personalized-ads
]]

Additionally, you can opt-out of some of these services by visiting the Digital Advertising Alliances opt-out portal at http://optout.aboutads.info/.

DO NOT TRACK
Please note that we do not alter our App data collection and use practices when we see a Do Not Track signal from your browser.

YOUR RIGHTS
If you are a European resident, you have the right to access personal information we hold about you and to ask that your personal information be corrected, updated, or deleted. If you would like to exercise this right, please contact us through the contact information below.

Additionally, if you are a European resident we note that we are processing your information in order to fulfill contracts we might have with you (for example if you make an order through the app), or otherwise to pursue our legitimate business interests listed above.  Additionally, please note that your information will be transferred outside of Europe, including to Canada and the United States.

DATA RETENTION
When you place a request through the app, we will maintain your Order Information for our records unless and until you ask us to delete this information.

APP PERMISSIONS :

As the App provides you the finding driver service we need you to give this app the following permissions, otherwise the app not working. Besides, It is your wish whether you give the app the following permissions or not :

uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_FINE_LOCATION" 
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_COARSE_LOCATION" 
uses-permission android:name="android.permission.INTERNET" 
uses-permission android:name="android.permission.READ_EXTERNAL_STORAGE" 
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_NETWORK_STATE" 

uses-permission android:name="android.permission.SYSTEM_ALERT_WINDOW" 
uses-permission android:name="android.permission.CALL_PHONE" 
uses-permission android:name="android.permission.DISABLE_KEYGUARD"
uses-permission android:name="android.permission.WAKE_LOCK" 

Before you continue, you are asked to give the app those above permissions. IF YOU ARE NOT READY TO GIVE THIS APP THOSE ABOVE PERMISSIONS, WELL, SO, YOU MAY UNINSTALL THE APP FROM YOUR DEVICE. 

MINORS
The App is not intended for individuals under the age of 10.

CHANGES
We may update this privacy policy from time to time in order to reflect, for example, changes to our practices or for other operational, legal or regulatory reasons.

CONTACT US
For more information about our privacy practices, if you have questions, or if you would like to make a complaint, please contact us by e-mail at noorhossain888@gmail.com or by mail using the details provided below:

Chittagong, Bangladesh, Phone: +88-01776785485.
E-mail: ctgfaisal367@gmail.com

Privacy Policy for BORAC APP

App Package nazim.borac.rider  Privacy Policy

nazim.borac.rider Privacy Policy

This Privacy Policy describes how your personal information is collected, used, and shared when you use this app - package name: nazim.borac.rider  (the app).

PERSONAL INFORMATION WE COLLECT

When you use this app, we automatically collect certain information about your device, including information about your name, phone number, time zone, dates  are installed on your device. Additionally, as you use this app, we use your sd card as wel as your device storage, your device location, collect information about how you interact with the app. We refer to this automatically-collected information as - Device Information.

We collect your Device Information using the following technologies:

    -  Cookies - are data files that are placed on your device or computer and often include an anonymous unique identifier. For more information about cookies, and how to disable cookies, visit http://www.allaboutcookies.org.
    - Log files  - track actions occurring on the App, and collect data including your IP address, device type, Internet service provider, referring/exit pages, and date/time stamps.
    - Web beacons, tags, and pixels are electronic files used to record information about how you use the App.
    - Device location - as it is a finding driver app, we have to know your location, so that the driver who accepted your request can easily find you and provide the service where you want to go.
    - Device Service - we  use your device service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request.
    - Device Messaging Service - we use your devices messaging service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request.
    - Additionally when you make a request or attempt to make a request through the app, we collect certain information from you, including your name, location, place, addresses  and phone number.  We refer to this information as - request Information.
   

When we talk about - Personal Information- in this Privacy Policy, we are talking both about Device Information and request Informations.

HOW DO WE USE YOUR PERSONAL INFORMATION?

We use the request Information that we collect generally to fulfill any request placed through the App (including processing your location information, arranging drivers, and providing you with invoices and/or request confirmations).  Additionally, we use this request Information to:
  
    -Communicate with you;
    -Screen your request for potential risk or fraud; and
When in line with the preferences you have shared with us, provide you with information or advertising relating to our products or services.

We use the Device Information that we collect to help us screen for potential risk and fraud (in particular, your IP address), and more generally to improve and optimize our App (for example, by generating analytics about how our customers request and interact with the App, and to assess the success of our marketing and advertising campaigns).


SHARING YOUR PERSONAL INFORMATION


We share your Personal Information with third parties to help us use your Personal Information, as described above.  For example, we use Shopify to power our online store--you can read more about how Shopify uses your Personal Information here:  https://www.shopify.com/legal/privacy.  We also use Google Analytics to help us understand how our customers use the Site--you can read more about how Google uses your Personal Information here:  https://www.google.com/intl/en/policies/privacy/.  You can also opt-out of Google Analytics here:  https://tools.google.com/dlpage/gaoptout.

Finally, we may also share your Personal Information to comply with applicable laws and regulations, to respond to a subpoena, search warrant or other lawful request for information we receive, or to otherwise protect our rights.

BEHAVIOURAL ADVERTISING
As described above, we use your Personal Information to provide you with targeted advertisements or marketing communications we believe may be of interest to you.  For more information about how targeted advertising works, you can visit the Network Advertising Initiative’s (-NAI-) educational page at http://www.networkadvertising.org/understanding-online-advertising/how-does-it-work.

You can opt out of targeted advertising by:
[[
  INCLUDE OPT-OUT LINKS FROM WHICHEVER SERVICES BEING USED.
  COMMON LINKS INCLUDE:
    FACEBOOK - https://www.facebook.com/settings/?tab=ads
    GOOGLE - https://www.google.com/settings/ads/anonymous
    BING - https://advertise.bingads.microsoft.com/en-us/resources/policies/personalized-ads
]]

Additionally, you can opt-out of some of these services by visiting the Digital Advertising Alliances opt-out portal at http://optout.aboutads.info/.

DO NOT TRACK
Please note that we do not alter our App data collection and use practices when we see a Do Not Track signal from your browser.

YOUR RIGHTS
If you are a European resident, you have the right to access personal information we hold about you and to ask that your personal information be corrected, updated, or deleted. If you would like to exercise this right, please contact us through the contact information below.

Additionally, if you are a European resident we note that we are processing your information in order to fulfill contracts we might have with you (for example if you make an order through the app), or otherwise to pursue our legitimate business interests listed above.  Additionally, please note that your information will be transferred outside of Europe, including to Canada and the United States.

DATA RETENTION
When you place a request through the app, we will maintain your Order Information for our records unless and until you ask us to delete this information.

APP PERMISSIONS :

As the App provides you the finding driver service we need you to give this app the following permissions, otherwise the app not working. Besides, It is your wish whether you give the app the following permissions or not :
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_FINE_LOCATION" 
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_COARSE_LOCATION" 
uses-permission android:name="android.permission.INTERNET" 
uses-permission android:name="android.permission.READ_EXTERNAL_STORAGE" 
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_NETWORK_STATE" 
uses-permission android:name="android.permission.ACCESS_WIFI_STATE" 
uses-permission android:name="android.permission.CALL_PHONE" 
uses-permission android:name="android.permission.DISABLE_KEYGUARD" 
uses-permission android:name="android.permission.WAKE_LOCK" 
uses-permission android:name="android.permission.GET_TASKS" 
uses-permission android:name="android.permission.READ_PHONE_STATE" 
Before you continue, you are asked to give the app those above permissions. IF YOU ARE NOT READY TO GIVE THIS APP THOSE ABOVE PERMISSIONS, WELL, SO, YOU MAY UNINSTALL THE APP FROM YOUR DEVICE. 

MINORS
The App is not intended for individuals under the age of 10.

CHANGES
We may update this privacy policy from time to time in order to reflect, for example, changes to our practices or for other operational, legal or regulatory reasons.

CONTACT US
For more information about our privacy practices, if you have questions, or if you would like to make a complaint, please contact us by e-mail at noorhossain888@gmail.com or by mail using the details provided below:

Chittagong, Bangladesh, Phone: +88-01776785485.
E-mail: ctgfaisal367@gmail.com

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...