প্রশ্ন: ২১২ : সুরা তওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া যাবে কি ?

সূরা আত-তাওবাহ: অনুশোচনা
সূরা আত-তওবাহ পবিত্র কুরআন শরীফের ৯ম সূরা। এই সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৯টি। আরবি তওবা অর্থ ক্ষমা। একে সূরা তওবা বলা হয়, কারণ এতে মুসলমানদের তওবা কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। সূরাটির অন্য নাম হলো বারা'আত - একে বারা'আত বলা হয় কারণ, এতে কাফিরদের তথা অবিশ্বাসীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্ব-মুক্তির উল্লেখ আছে।
পবিত্র কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা রয়েছে। তার মধ্যে সূরা তাওবাহ ছাড়া বাকি ১১৩টি সূরার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ রয়েছে। কিন্তু সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ নেই।
সূরা আত-তাওবাহ -তে ‘বিসমিল্লাহ’ না থাকার কারণ:
পবিত্র কুরআন শরীফের বিভিন্ন অংশ ২৩ বছরের দীর্ঘ পরিসরে অবতীর্ণ হয়েছিল। কখনও একটি পূর্ণাঙ্গ সূরাও ভেঙে ভেঙে অবতীর্ণ হতো। হযরত জিব্রাইল (আ:) তা কোথায় বসাতে হবে, তা বলে দিতেন। একটি সূরা সমাপ্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় সূরা শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ নাযিল হতো। এর থেকে বুঝা যেত যে, একটি সূরা শেষ হলো, অতঃপর অপর সূরা শুরু হলো। কুরআন মাজীদের সকল সূরার বেলায় এ নীতি-বলবৎ থাকে।
কিন্তু সাধারণ নিয়ম মতে তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ নাযিল হয়নি, আর রসূলুল্লাহ (স.) তা লিখে নেয়ার জন্য ওহী লেখকদের নির্দেশও দেন-নি এবং এই সূরা কোন সূরার অংশ তাও বলেননি। এই অবস্থায় রসূলুল্লাহ (স:) ইন্তেকাল করেন।
তাই মাসহাফ-ই ওসমানীতেও (তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমান (রা.) কর্তৃক প্রকাশিত কুরআন) সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখা হয়নি। সূরা আনফাল এই সূরার পূর্বে অবতীর্ণ হওয়ায় সূরা তাওবাহকে সূরা আনফলের পরে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এবং আয়াত সংখ্যা বেশি হওয়ায় আনফলের সাথে অন্তর্ভুক্ত না করে তওবাকে আলাদা করে স্থান দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞ 'আলেমদের বক্তব্য হলো, যেহেতু অবতরণের সময় সূরা তাওবাহ’র শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ ছিল না, তাই সূরা তাওবাহ আনফালের সাথে পড়লে এর পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়তে হবে না, অন্যথায় পড়তে হবে।

(উত্তর দানে : আবদুল বাতেন) 

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...