প্রশ্ন: ২৪০ : আমার কাপড় টাকনুর উপরে থাকে কিন্তু অপর দিকে নাভির নিচে থকলে কি গোনাহ হবে?

পুরুষের সতর হচ্ছে নাভী হ’তে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত (ছহীহ জামেউছ ছাগীর হা/৫৫৮৩ইরওয়াউল গালীল হা/২৭১)। তাই নাভী ও হাঁটু সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং নাভীর নিচ থেকে হাঁটুর উপর সতর (আলমুগনী /৪১৪নববীআলমাজমূ‘ /১৭৩)। এ অংশ সর্বদা ঢেকে রাখা ওয়াজিব। আর নাভীর নীচে কাপড় পরে অন্য কাপড় দ্বারা ঢেকে দিলেও তা সতর ঢাকা হিসাবেই গণ্য হবে।

প্রশ্ন: ২৩৯ : নামাজরত অবস্থায় হাচি ও হাই আসলে কি করনীয়

প্রশ্ন: নামাজ রত অবস্থায় হাঁচি আসলে 'আলহামদু লিল্লাহ' আর হাই আসলে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বা ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়ত্বানির রাজীম’ পাঠ করা জায়েয কি?
উত্তর:
💠 নামাজ রত অবস্থায় হাঁচি আসলে অধিক বিশুদ্ধ মতে 'আলহামদু লিল্লাহ' পাঠ করা জায়েজ আছে।
এ ব্যাপারে হাদিস হল:
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ: الحَمْدُ لِلَّهِ
“তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে।”
(সহিহুল বুখারী, হাদিস নং-৬২২৪)
এখানে সাধারণভাবে যে কোনো সময় হাঁচি আসলে ‘আল হামদু লিল্লাহ’ পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। তবে বিশেষভাবে সালাত রত অবস্থায় আল হামদুলিল্লাহ পাঠ করার কথা নিম্নোক্ত হাদিসদ্বারা প্রমাণিত:
রিফাআ ইবনে রাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন: আমি একবার রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সালাত করছিলাম। তখন আমার হাঁচি এলো। আমি বললামঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى
“আল্লাহর জন্য পবিত্র ও বরকতময় অনেক অনেক প্রশংসা-যেভাবে প্রশংসা করলে আমাদের প্রতিপালক পছন্দ করবেন এবং সন্তুষ্ট হবেন।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষে ফিরে বললেন: সালাতে কে কথা বলছিল?
কিন্তু কেউ উত্তর দিলেন না।
দ্বিতীয়বার তিনি বললেনঃ সালাতে কে কথা বলছিল? কিন্তু কেউ উত্তর দিলেন না।
পরে তৃতীয়বার তিনি বললেনঃ সালাতে কে কথা বলছিল?
তখন রিফাআ ইবনু রাফি ইবনু আফরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি কথা বলছিলাম।
তিনি বললেনঃ কী বলছিলে?
তিনি বললেন, আমি বলছিলামঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ
"সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, ত্রিশেরও অধিক ফেরেশতা দৌড়ে এসেছেন কে আগে এর সওয়াব উঠিয়ে নিতে পারন।" (সহিহ আবু দাউদ ৭৪৭, মিশকাত ৯৯২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪০৪ [আল মাদানী প্রকাশনী])
এই বিষয়ে আনাস, ওয়াইল ইবনু হুজর ও আমির ইবনু রাবীআ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।
ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি নফল সালাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
(সূনান তিরমিজী (ইফাঃ) / অধ্যায়ঃ ২/ সালাত (নামায) (كتاب الصلاة) পরিচ্ছদঃ সালাতে হাঁচি আসলে করণীয়)
তবে মুহাক্কিক আলমগণ বলেন, যে কোনো সালাতেই হাঁচি আসলে আল হামদুলিল্লাহ পাঠ করা যাবে-চাই তা ফরয, সুন্নত বা নফল যাই হোক না কেন। এ পক্ষেই মত ব্যক্ত করেছেন, অধিকাংশ সাহাবী, তাবেঈ এবং ইমাম মালেক, শাফেঈ, আহমদ প্রমুখ ইমামগণ।
তবে তা চুপি স্বরে অথবা এমনভাবে পড়া উচিৎ যে, সে যেন নিজের কানে শুনতে পায়। কিন্তু জামাআতে সালাত পড়ার সময় এতটা উঁচু আওয়াজে বলবে না যে, অন্যান্য মুসল্লিদের সালাতে ব্যাঘাত ঘটে।
🔰 তবে সালাতরত অবস্থায় হাঁচির জবাব দেওয়া জায়েয নেই। এ ব্যাপারে আলেমদের কোনো দ্বিমত নেই।
ইমাম নববী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
"সালাত রত অবস্থায় কেউ হাঁচির জবাব দিলে তার সালাত ভঙ্গ হয়ে যাবে।"
💠 হাই উঠলে কি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা...‘আঊযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম’ পাঠ করা মোস্তাহাব?
হাই উঠলে করণীয় হল, মুখে হাত দিয়ে হাই প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা। অন্যথায় মুখগহ্বর দিয়ে শয়তান ভিতরে প্রবেশ করে। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
إِذَا تَثَاوَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيُمْسِكْ بِيَدِهِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ ‏"‏ ‏
"যদি তোমাদের কেউ হাই তোলে তবে সে যেন তাঁর মুখের উপর হাত রেখে তাকে প্রতিহত করে। কেননা এ সময় শয়তান (মুখ দিয়ে) প্রবেশ করে।"
(সহীহ মুসলিম হাদিস নম্বরঃ [7222]) অন্য বর্ণনায় এসেছে, হাই প্রতিরোধ না করলে শয়তান হাসে।
কিন্তু এ সময় "লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ" অথবা "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজিম" পাঠ করা সম্পর্কে কোনো হাদিস আছে বলে জানা নেই-সালাতের মধ্যে হোক অথবা বাইরে হোক।
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটিকে এ বিষয় জিজ্ঞেস করা হলে তারা উত্তর দেন:
"لا نعلم ما يدل على شرعية الاستعاذة عند التثاؤب لا في الصلاة ولا في خارجها"
“আমরা এমন কিছু জানি না, যা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হাই উঠলে আউযুবিল্লাহ পাঠ করা শরিয়ত সম্মত-সলাতের মধ্যে হোক অথবা সালাতের বাইরে হোক।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৬/৩৮৩)
আল্লাহু আলাম।
----------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল মাদানি
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, KSA

প্রশ্ন: ২৩৮: কোথায় কোথায় সালাম দেয়া যায়

উত্তর দেখুন 

প্রশ্ন: ২৩৭ : অজুর দোয়া

অজুর পূর্বে কি দোয়া করতে হয়। বিস্তারিত দেখুন :  এখানে 


আরো দেখুন : এখানে 

প্রশ্ন: ২৩৬ : তালাক প্রদান করার সঠিক পদ্ধতি ।

ইসলামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বৈধ কাজ তালাক। বৈবাহিক সম্পর্ক যেন ছিন্ন না হয়, এজন্য সকল প্রকার চেষ্টা চালাতে নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। 
কিন্তু কখনো কখনো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলে উভয়ের একত্রে জীবন যাপন অত্যন্ত কষ্টকর ও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই রকম অবস্থায় বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করাই উভয়ের জন্য কল্যাণকর মনে হয়। এজন্য ইসলামি শরিয়ত তালাক বৈধ করেছে। 
বিয়ের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পাদিত চুক্তি ছিন্ন করার নাম তালাক। এর সর্বোত্তম পদ্ধতি এই যে, দু’টি শর্তের ভিত্তিতে কেবলমাত্র একটি তালাক দেবে- (১) নারীর পবিত্রতা অবস্থায় । (২) স্বামী-স্ত্রীকে এমন পবিত্র সময়ে তালাক দেবে যার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেনি। শুধুমাত্র এক তালাক দিলে ইদ্দতের সময় কালের ভেতরে রাজআতও করা যাবে। অর্থাৎ কোনো ধরণের বিয়ে ছাড়াই স্বামী স্ত্রী’র সম্পর্ক পুনরায় বহাল করা যাবে। আর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিবাহ করতে চাইলে বিবাহও করতে পারবে। এছাড়া ইদ্দত শেষ হওয়ার পর নারী অন্য কোনো পুরুষকেও বিবাহ করতে পারবে। মোটকথা হলো, এই জাতীয় তালাক হওয়ার পর বৈবাহিক সম্পর্ক পুনরায় বহাল রাখাও সম্ভব এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার পর নারী অন্য যে কোনো পুরুষকে বিবাহ করারও অধিকার থাকবে। সারকথা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মীমাংসার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলে এবং তালাক দেয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় না থাকলে শুধুমাত্র এক তালাক দেবে। যেন ভুল অনুভব করার পর ইদ্দতের সময়কালে ফিরিয়ে নেয়া এবং ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় বিয়ের রাস্তা খোলা থাকবে। একসঙ্গে তিন তালাক দেয়া থেকে সম্পূর্ণ বেঁচে থাকতে হবে। কেননা তিন তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া বা পুনরায় বিয়ে করার পথ বাহ্যিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। 
তালাকের অধিকার স্বামীর: 
সৃষ্টিগত ও স্বভাবগত কারণেই পুরুষের মধ্যে নারীর তুলনায় চিন্তা-ভাবনা এবং ধৈর্য-সহনশীলতার শক্তি বেশি থাকে। পাশাপাশি শারীরিক গঠন, স্বভাব, শক্তি ও যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা যে শক্তি ও বড় বড় কাজ করার যোগ্যতা পুরুষকে দিয়েছেন তা নারীকে দেননি। এজন্যই নেতৃত্বের কাজ সঠিকভাবে একজন পুরুষই আঞ্জাম দিতে পারে। এ বিষয়ে নিজের জ্ঞান দ্বারা সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিবর্তে যিনি এদের দু’জনকেই সৃষ্টি করেছেন, সেই সত্তাকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন, তিনি কী বলেন। 
কুল কায়েনাতের স্রষ্টা মহান রাব্বুল আলামিন কোরআনে কারিমে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বিষয়টির সমাধান পেশ করেছেন, ‘পুরুষদের জন্য নারীদের ওপর মর্যাদা রয়েছে’ (সূরা বাকারাহ-২২৮)। ‘পুরুষগণ নারীদের ওপর কর্তৃত্বশীল’ (সূরা নিসা-৩৪)। এই আয়াতগুলোর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন যে, যৌথ জীবন পরিচালনায় নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার কেবল পুরুষেরই থাকবে। যদিও পুরুষের জন্য উচিৎ যে, নারীকেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে শামিল করবে। এ জন্যই ইসলামি শরিয়ত তালাক প্রদানের অধিকার পুরুষদেরকে দিয়েছে।
খোলা তালাক:
ইসলামি শরিয়ত তালাকের অধিকার পুরুষকে দিলেও নারীদেরকে কেবল বাধ্য ও অপারগ বানিয়ে রাখেনি। কেননা স্বামী যদি স্ত্রীর সকল প্রাপ্য অধিকার যথাযথভাবে আদায় না করে অথবা নারী কোনো কারণে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখতে না চায় তাহলে ইসলামি শরিয়ত নারীকে এই  অধিকার দিয়েছে যে, স্বামীর কাছে তালাক দাবি করবে। নারী যদি বাস্তবেই মজলুম হয়, তাহলে স্বামীর শরয়ি দায়িত্ব হলো তার অধিকার আদায় করবে অথবা নারীর দাবি অনুযায়ী তাকে তালাক দিয়ে দেবে। চাই কোনো কিছুর বিনিময়ে হোক বা বিনিময় ছাড়া। কিন্তু স্বামী যদি তালাক দিতে অস্বীকার করে তাহলে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শরয়ি আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে। যাতে বিষয়টি সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি ঘটে। অন্যথায় বিচারক স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। এভাবেই আদালতের মাধ্যমে তালাক হয়ে যাবে। এবং নারী ইদ্দত পালনের পর অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারবে। ‘খোলা’র এই পদ্ধতিতে তালাকে বায়েনা পতিত হয়। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যদি পুনরায় এক সঙ্গে থাকার ইচ্ছা করে তাহলে স্বামী বিবাহ ছাড়া পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারবে না। বরং তাদের মাঝে পুনরায় বিবাহ হতে হবে। যার জন্য উভয় পক্ষের অনুমতির প্রয়োজন। 
তালাকের প্রকার সমূহ:
সাধারণভাবে তালাক তিন প্রকার হয়ে থাকে। ১. তালাকে রজয়ি । ২. তালাকে বায়েন। ৩. তালাকে মুগাল্লাজা। 
তালাকে রিজয়ি:
স্পষ্ট শব্দে স্ত্রীকে এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার নাম তালাকে রিজয়ি। উদাহরণ স্বরূপ স্বামী-স্ত্রীকে বলবে, আমি তোমাকে তালাক দিয়েছি। এটা এমন একটি তালাক, যার মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয় না। ইদ্দত পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকে। ইদ্দতের সময়কালে স্বামী যদি চায় যে, তালাক থেকে ফিরে আসবে তাহলে এ নারীকে বিবাহ ছাড়াই পুনরায় স্ত্রী বানাতে পারবে। মনে রাখতে হবে যে, তালাক ফিরিয়ে নেয়ার  জন্য শরিয়তে স্ত্রী’র সম্মতি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই। 
তালাকে বায়েন:
তালাকের অর্থ স্পষ্টভাবে বুঝায় না এমন শব্দে তালাক দেয়ার নাম তালাকে বায়েন। উদাহরণ স্বরূপ, স্বামী তার স্ত্রীকে বলবে, তুমি বাপের বাড়ি চলে যাও। আমি তোমকে ছেড়ে দিয়েছি। এ জাতীয় শব্দে ওই সময় তালাক হবে, যখন স্বামী এই শব্দ দ্বারা তালাকের নিয়ত করবে, অন্যথায় নয়। এ জাতীয় শব্দ দ্বারা তালাকে বায়েন পতিত হয়। অর্থাৎ বিবাহ বন্ধন তৎক্ষণাৎ শেষ হয়ে যায়। এখন কেবল বিবাহের মাধ্যমেই স্বামী-স্ত্রী একজন অপর জনের জন্য হালাল হতে পারে। 
তালাকে মুগাল্লাজা:
একসঙ্গে অথবা পৃথক পৃথক তিন তালাক দেয়ার নাম তালাকে মুগাল্লাজা। চাই একই মজলিসে দিক অথবা একই পবিত্রতায় দিক। এ অবস্থায় স্বামীরও ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার থাকে না। এবং স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিবাহও করতে পারে না। তবে নারী যদি নিজের ইচ্ছায় অপর কোনো পুরুষকে যথা নিয়মে বিয়ে করে এবং দু’জনের সহবাসও হয় অত:পর দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু হয়ে গেল অথবা দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দিয়ে দিল, এই নারী দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুর ইদ্দত পালনের পর প্রথম স্বামীকে পুনরায় বিবাহ করতে পারবে। এই বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কালামে সূরায়ে বাকারার ২৩০ নম্বর আয়াতে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, ‘অত:পর যদি স্বামী (তৃতীয়) তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে ওই (তালাকপ্রাপ্তা) নারী তার জন্য ওই সময় পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ অন্য কোনো নারীকে বিবাহ না করে। হ্যাঁ, যদি (দ্বিতীয় স্বামীও) তাকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের কোনো অসুবিধা নেই যে, একজন অপর জনের নিকট (নতুনভাবে বিবাহ করে) পুনরায় ফিরে আসবে। এই শর্তে যে, তাদের এই প্রবল ধারণা হবে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখবে।’ এই পদ্ধতিকে হালালাহ বলে। যার উল্লেখ কোরআনে কারিমে রয়েছে। এই পদ্ধতিটি সঠিক হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। (ক) দ্বিতীয় বিবাহটি সঠিক নিয়মে হতে হবে। (খ) দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সহবাস হতে হবে। (গ) দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তালাক দিতে হবে অথবা মৃত্যু বরণ করতে হবে। (ঘ) দ্বিতীয় ইদ্দতও সমাপ্ত হতে হবে। এটাও জানা উচিৎ যে, হালালার শর্তে বিয়ে করা হারাম। 
ইসলামি শিক্ষার দাবি এই যে, বিবাহ সারা জীবনের জন্য হয়। তা ছিন্ন করা ও শেষ করার সুযোগই যেন না আসে। কেননা এ সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রভাব কেবল স্বামী-স্ত্রীর ওপরই পড়ে না, বরং সন্তানের জীবন ধ্বংস এবং ক্ষেত্র বিশেষ দুই পরিবার বা দুই বংশের ঝগড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর দ্বারা পুরো সমাজ প্রভাবিত হয়। এই জন্য ইসলামি শরিয়ত স্বামী-স্ত্রী উভয়কে এই নির্দেশনা দিয়েছে। যার ওপর আমল করার দ্বারা সম্পর্ক অনেক মজবুত ও সুদৃঢ় হবে। যদি স্বামী-স্ত্রী’র মাঝে মতবিরোধ দেখা যায়, তাহলে সর্বপ্রথম তাদের দু’জনে মিলে এই বিরোধ দূর করা উচিৎ। যদি স্ত্রীর পক্ষ থেকে এমন কোনো বিষয় সামনে আসে, যা স্বামীর মেজাজ পরিপন্থি, সে ক্ষেত্রে স্বামীকে আদেশ দেয়া হয়েছে, সে যেন বুঝিয়ে সুঝিয়ে এবং ধমক শাসনের দ্বারা কাজ নেয়। দ্বিতীয়ত স্বামীকে এও বলা হয়েছে যে, স্ত্রীকে কেবল চাকরানি বা খাদেমাও মনে করবে না। বরং স্ত্রী হিসেবে তার বেশ কিছু অধিকারও রয়েছে। যেগুলো আদায় করা শরিয়তের দৃষ্টিতে অধিক জরুরি। এই সকল অধিকারের মধ্যে রয়েছে তাদের খোরপোষ ও বাসস্থানের সুন্দর ব্যবস্থা। তেমনি তাদের নিরাপত্তা, মনোরঞ্জন ও আরাম আয়েশের প্রতি খেয়াল রাখাও জরুরি। এই জন্যই আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন ‘তোমাদের মধ্যে সবচে’ উত্তম মানুষ সেই, যে তার পরিবারের দৃষ্টিতে উত্তম।’ স্পষ্ট কথা তাদের দৃষ্টিতে সেই উত্তম হবে, যে তাদের অধিকার যথাযথ ভাবে আদায় করবে। 

প্রশ্ন: ২৩৫ : একজন নারী কখন তালাক দিতে পারে ।



স্ত্রী কখন তালাক দিতে পারে : 

মুসলিম আইনানুযায়ী বিয়ের মাধ্যমে নারীর মর্যাদা, অধিকার সংরক্ষিত হয়। মুসলিম আইনে পুরুষের মতো নারীরও রয়েছে সমাজে অধিকার ও মর্যাদা। মুসলিম আইনে বিয়ে এমনই একটি বিষয় যার মাধ্যমে নারী ও পুরুষের অধিকার রক্ষিত হয়।

একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হলো বিয়ে। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ে, তালাক, ভরণপোষণ, যৌতুক ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচিত হয়। বিয়ের মাধ্যমেই নারী-পুরষের সম্পর্কের বৈধতা পায়। আইনানুযায়ী বিয়ে একটি দেওয়ানি চুক্তি। বিয়ে যেমন বৈধ। মুসলিম আইন তালাককেও তেমনি বৈধতা দিয়েছে।

স্ত্রী কি তালাক দিতে পারেন?
কাবিন নামায় স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। এ ক্ষমতা শর্তযুক্তও হতে পারে। স্ত্রী অর্পিত ক্ষমতা বলে স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এছাড়াও বেশ কয়েকটি কারণে স্ত্রী স্বেচ্ছায় স্বামীকে তালাক দিতে পারেন।

আদালতের মাধ্যমে স্ত্রীর তালাক দেওয়া ক্ষমতা:
যদি বিয়ের কাবিননামায় স্ত্রীকে তালাকের কোনো ক্ষমতা অর্পন করা না হয়, তবে স্ত্রী আদালতের অনুমতি নিয়ে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারেন।

স্ত্রী যেসব কারণে তালাক দেওয়ার অধিকার অর্জন করে:
- স্বামী যদি চার বছর নিরুদ্দেশ থাকেন।
- স্বামী যদি দুই বছর ভরণপোষণ না দেন।
-স্বামী যদি আইনের লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় বিবাহ করেন।
- স্বামী যদি সাত বছর বা এর বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন
- স্বামী যদি যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া তিন বছর বৈবাহিক দায়িত্ব পালন না করেন।
- স্বামী যদি পুরুষত্বহীন থাকেন।
- স্বামী যদি দুই বছর অপ্রকৃতিস্থ বা মারাত্মক ব্যাধিতে ভোগেন।
- নাবালিকা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয়ে থাকলে সাবালিকা হওয়ার পর স্ত্রী যদি তা অস্বীকার করেন।
- স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ বা নির্যাতন করলে।

পরকীয়া করলে স্ত্রী কি তার স্বামীকে তালাক দিতে পারেন?
হ্যা, স্বামী যদি অন্য নারীর সাথে মেলামেশা করেন বা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তবে স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এছাড়াও শারীরকি ও মানসিক নির্যাতন, নৈতিকতাবিরোধী জীবনযাপন, স্ত্রীর সম্পত্তির বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান, স্ত্রীর ধর্মীয় চর্চায় বাধা প্রদান ইত্যাদি কারণে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন।

তালাক সম্পর্কিত কিছু ভুল ত্রুটি : 


তালাক সম্পর্কিত কিছু ভুলত্রুটি

এ সংখ্যায় শুধু এ বিষয়ে আলোচনা করাই মুনাসিব মনে হল। একটি কথা তো বারবার লেখা হয়েছে, ওলামা-মাশায়েখও আলোচনা করে থাকেন যে, অতীব প্রয়োজন (যা শরীয়তে ওজর বলে গণ্য) ছাড়া স্বামীর জন্য যেমন তালাক দেওয়া জায়েয নয় তেমনি স্ত্রীর জন্যও তালাক চাওয়া দুরস্ত নয়। তালাকের পথ খোলা রাখা হয়েছে শুধু অতীব প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য। বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে আমাদের এতদাঞ্চলে কোনো পরিবারে তালাকের ঘটনা যে কত ফাসাদ-বিশৃঙ্খলা, জুলুম-অত্যাচার এবং ঝগড়া-বিবাদের কারণ হয় তা আর বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। তালাক প্রদানের ক্ষমতাকে শরীয়তের নির্ধারিত নীতিমালার বাইরে ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে আল্লাহর বিধানের সাথে বালখিল্যতার শামিল।
এজন্য কেউ দাম্পত্য জীবনে পা রাখার চেষ্টা করলে তার অপরিহার্য কর্তব্য হবে, বিয়ের আগেই দাম্পত্য জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় মাসআলাগুলোর সাথে  তালাকের বিধানসমূহ জেনে নেওয়া।
তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কেউ এই ক্ষমতার অপব্যবহার করলে কিংবা ভুল পন্থায় তা প্রয়োগ করলে সে একদিকে যেমন গুনাহগার হবে অন্যদিকে তালাকও কার্যকর হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি বিবেচক স্বামীর দায়িত্ব হল, তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে সতর্কতার সাথে বিরত থাকা।
অবশ্য অতীব প্রয়োজনে তালাক প্রদানে বাধ্য হলে স্ত্রীর পবিত্র অবস্থায় শুধু এক তালাক দিয়ে ক্ষান্ত হওয়া উচিত। এভাবে বলবে যে, তোমাকে তালাক দিলাম। তালাকের সাথে বায়েন শব্দ কিংবা ৩ সংখ্যা ব্যবহার করবে না। কেউ বায়েন শব্দ বলে ফেললে (চাই তা এক বা দুই তালাক হোক না কেন) নতুন করে শরীয়তসম্মত পন্থায় বিবাহ দোহরানো ছাড়া স্ত্রীর সাথে পুনরায় মিলনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
অনুরূপভাবে তিন তালাক দিয়ে ফেললে-একই মজলিসে পৃথক পৃথকভাবে তিন তালাক দেওয়া হোক কিংবা একই শব্দে তিন তালাক দেওয়া হোক- যেমন বলল, তোমাকে তিন তালাক দিলাম। অথবা আগে কখনো দুই তালাক দিয়েছিল আর এখন শুধু এক তালাক দিল। সর্বমোট তিন তালাক দেওয়া হল। যেকোনো উপায়ে তিন তালাক দেওয়া হলে বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় শুধু মৌখিকভাবে স্ত্রীকে বিবাহে ফিরিয়ে আনার যেমন কোনো সুযোগ থাকে না তেমনি নতুন করে বিবাহ দোহরানোর মাধ্যমেও ফিরিয়ে নেওয়ার পথ খোলা থাকে না।
একসাথে তিন তালাক দেওয়া কিংবা বিভিন্ন সময় তালাক দিতে দিতে তিন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া একটি জঘণ্য অপরাধ ও ঘৃণিত কাজ। আল্লাহ তাআলা এর শাস্তি হিসেবে এই বিধান দিয়েছেন যে, তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পুনরায় একসাথে বসবাস করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর অন্যত্র তার বিয়ে হওয়া এবং সে স্বামীর সাথে তার মিলন হওয়া অপরিহার্য। এরপর কোনো কারণে সে তালাকপ্রাপ্তা হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে ইদ্দত পালনের পর এরা দুজন পরস্পর সম্মত হলে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। 
এজন্য শরীয়ত আগেই সাবধান করে দিয়েছে যে, প্রথমত তালাকের কথা
চিন্তাও করবে না। তবে অতীব প্রয়োজনে কখনো তালাক প্রদানের প্রয়োজন হলে শুধু সাদামাটা তালাক দাও, শুধু এক তালাক। যেন উভয়ের জন্যই নতুন করে চিন্তা-ভাবনার সুযোগ থাকে এবং পুনরায় ফিরে আসার পথ খোলা থাকে। এরপর আবারো কোনো সমস্যা দেখা দিলে এভাবেই শুধু এক তালাক দিবে। এখনও ফিরে আসার পথ খোলা থাকবে।
কিন্তু এরপর যদি আবার কখনো শুধু এক তালাকই দেওয়া হয় এবং সব মিলে তিন তালাক হয়ে যায় এ অবস্থায় আর তাকে ফিরিয়ে আনারও সুযোগ থাকবে না, নতুন করে বিয়ে করার বৈধতাও বাকি থাকবে না।
আজকাল স্বামী-স্ত্রী তালাকের বিধান জানা ও সে অনুযায়ী আমল করার পরিবর্তে নিজেদের মনে এমনসব ভুল ও বানোয়াট মাসআলা স্থির করে রাখে যে, আল্লাহ মাফ করুন।
১. তিন তালাক ছাড়া কি তালাক হয় না
যেমন, কেউ মনে করে যে, শুধু এক বা দুই তালাক দেওয়ার দ্বারা তো তালাকই হয় না। তালাকের জন্য একসাথে তিন তালাক দেওয়াকে তারা অপরিহার্য মনে করে।
মনে রাখবেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তালাক দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি হল, শুধু এক তালাক দেওয়া। পরবর্তীতে আবারও প্রয়োজন হলে শুধু এক তালাকই দিবে। এরচেয়ে বেশি দিবে না। কিন্তু তিন তালাক দিয়ে ফেললে তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক বহাল রাখার সকল পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
একই মজলিসে কিংবা একই শব্দে তিন তালাক দেওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ। কিন্তু কেউ এমনটি করলে তালাক কার্যকর হবে এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে।
২. তালাকের সাথে কি বায়েন শব্দ ব্যবহার করা জরুরি
অনেকে মনে করে, শুধু তালাক বললে তালাক হয় না; বরং তালাকের সাথে বায়েন শব্দও যোগ করা অত্যাবশ্যক।
এটিও ভুল ধারণা। শুধু তালাক শব্দ দ্বারাই তালাক হয়ে যায়। এর সাথে বায়েন শব্দ যোগ করার কোনো প্রয়োজন নেই। উপরন্তু এ শব্দের সংযোজন নাজায়েয। তবে কেউ যদি এক তালাক বায়েন বা দুই তালাক বায়েন দেয় তবে সে মৌখিকভাবে রুজু করার (পুনরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার) পথ বন্ধ করে দিল। এখন শুধু একটি পথই খোলা আছে। আর তা হল, নতুনভাবে শরীয়তসম্মত পন্থায় বিবাহ দোহরানো। অথচ শুধু তালাক বললে এক তালাক বা দুই তালাক পর্যন্ত মৌখিক রুজুর পথ খোলা থাকে। এজন্য স্বামীর উচিত, যত উত্তেজিতই হোক না কেন, কোনো অবস্থাতেই যেন তিন তালাক না দেয়। এমনকি তা কখনো মুখেও না আনে। অথচ অনেকে তো তিন তালাক দেওয়ার পরও পৃথকভাবে বায়েন শব্দ যোগ করেন। যেন সব কটি তালাক দেওয়ার পরও তার মন ভরল না। না হলে তিন তালাক দেওয়ার পর আর কী বাকি থাকে যে, বায়েন শব্দ বলতে হবে?!
মনে রাখবেন, তিন তালাক দেওয়াই এক গুনাহ, এরপর বায়েন শব্দ যোগ করে সে আরো বেশি গুনাহগার হল।
৩. একসাথে তিন তালাক দিলে কি তালাক হয় না
অনেকে এই ভুল ধারণাও প্রচার করে রেখেছে যে, একসাথে তিন তালাক দেওয়া হলে তালাক হয় না কিংবা শুধু এক তালাক হয়।
এটিও একটি মারাত্মক ভুল। একসাথে তিন তালাক দেওয়া জায়েয না হলেও কেউ যদি এই নাজায়েয কাজ করে তাহলে তার স্ত্রীর উপর তিন তালাক ঠিকই পতিত হয়। এক্ষেত্রে তার মৌখিকভাবে রুজু করার অধিকার অবশিষ্ট থাকে না। এমনকি নতুন করে বিবাহ দোহরিয়ে নেওয়ার দ্বারাও তারা একে অপরের জন্য হালাল হতে পারে না। তাই সকল স্বামীরই কর্তব্য, প্রথম থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা। মুখ দিয়ে কখনো তিন তালাক কিংবা তালাক, তালাক, তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। আর আগেই দুই তালাক দিয়ে থাকলে এখন আর তৃতীয় তালাকের চিন্তাও না করা।
৪. গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে কি তালাক পতিত হয় না
অনেকে এই মাসআলা বানিয়ে রেখেছে যে, গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়া হলে তা কার্যকর হয় না। এটিও সম্পূর্ণ অবাস্তব কথা। গর্ভাবস্থায় হোক বা অন্য যেকোনো অবস্থাই হোক তালাক দেওয়া হলে তা পতিত হয়ে যায়। এজন্য সঠিক মাসআলা শেখা সকলের দায়িত্ব। অজ্ঞতার ধোকায় থাকার কারণে হারাম কখনো হালাল হতে পারে না।
৫. তালাক পতিত হওয়ার জন্য কি সাক্ষীর উপস্থিতি জরুরি
অনেকের ধারণা, স্বামী তালাকের সময় কোনো সাক্ষী না রাখলে তালাক পতিত হয় না। আগেরটার মতো এটাও মানুষের মনগড়া মাসআলা। কোন মূর্খ এই কথা বলেছে জানা নেই। সাক্ষীর প্রয়োজন তো হয় বিবাহের সময়। তালাক পতিত হওয়ার জন্য এক বা একাধিক কোনো সাক্ষীরই প্রয়োজন নেই। স্বামী যদি রাতের অন্ধকারে একা একা বসে তালাক দেয় তাহলেও তালাক হয়ে যায়।
৬. রাগের অবস্থায় তালাক দিলে কি তালাক হয় না
তালাক তো দেওয়াই হয় রাগ হয়ে। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়? আসলে তো এমনই হওয়া উচিত ছিল যে, যদি বাস্তবসম্মত ও অনিবার্য প্রয়োজনে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয় তাহলে বড়দের সঙ্গে পরামর্শ করে একে অন্যের কল্যাণকামী হয়ে বুঝে-শুনে, সঠিক মাসআলা জেনে নিয়ে মাসআলা অনুযায়ী তালাক প্রদানের মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
 কিন্তু আফসোস! অধিকাংশ মানুষ মাসআলা জানার চেষ্টাও করে না, আর না তাদের মধ্যে এই সুবুদ্ধি আছে যে, বড়দের সাথে পরামর্শ করবে, চিন্তা-ভাবনা করবে। নিজের ইচ্ছাবিরোধী কোনো কিছু পেলেই রাগের বশে তালাক দিয়ে ফেলে। আর তা এক বা দুইটি নয়; এক নিঃশ্বাসে তিন তালাক।
যখন রাগ প্রশমিত হয় তখন অনুতপ্ত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের কথা বানাতে থাকে। বলে, আমি রাগের মাথায় বলে ফেলেছি, তালাক দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। এসব লোকের জেনে রাখা উচিত যে, তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কোনো ইবাদত নয় যে, এর জন্য নিয়ত করতে হবে। নিয়ত থাক বা না থাক সর্বাবস্থায় তালাক শব্দ বলে ফেললে বা কাগজে লিখে দিলেই তালাক হয়ে যায়। তেমনিভাবে রাগের অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়, এমনকি হাস্যরস বা ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিলেও তা পতিত হয়ে যায়।
অবশ্য কেউ যদি প্রচন্ড রেগে যায় ও রাগের ফলে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আর এ অবস্থায় সে কী বলেছে তার কিছুই মনে না থাকে তাহলে ঐ অবস্থার তালাক কার্যকর হবে না।
শেষকথা এই যে, দাম্পত্য জীবন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অনেক বড় ও বিশেষ একটি নেয়ামত। স্বামী-স্ত্রী সকলের কর্তব্য, এই নেয়ামতের যথাযথ মূল্যায়ন করা এবং একে অপরের সকল অধিকার আদায় করা। স্ত্রীর জন্য উচিত নয়, কথায় কথায় স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া। আবার স্বামীর জন্যও জায়েয নয় আল্লাহ তাআলার দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করা।
বিয়ে, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের সকল বিধান ও মাসআলা শিক্ষা করা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য জরুরি। বিশেষ করে স্বামীর কর্তব্য হল, তালাকের মাসআলা ও এর পরিণতি সম্পর্কে অবগত না হয়ে মুখে কখনো তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। আর যদি কোনো কারণে তালাক দেয় এবং এমনভাবে দেয় যে, এখন আর তাদের একসাথে থাকা শরীয়তে বৈধ নয় তাহলে তাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। বিভিন্ন টাল-বাহানা, অজুহাতের আশ্রয় নিয়ে কিংবা ভুল কথার উপর ভিত্তি করে অথবা মূল ঘটনা গোপন রেখে একসাথে বাস না করা উচিত। বিয়ে শুধু একটি সময়ের বিষয় নয়, সারা জীবনের বিষয়।
বাস্তবেই যদি তালাক হয়ে যায় এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় এরপরও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসাথে বাস করে তাহলে তা হবে কবীরা গুনাহ এবং উভয়েই যেন ব্যভিচারের গুনাহয় লিপ্ত।
আল্লাহ তাআলা সকলকে হেফাযত করুন এবং তাকওয়া ও পবিত্রতা দান করুন। আমীন। 

তালাক দেওয়ার অধিকার ইসলামে শুধু স্বামীকেই দেওয়া হয়েছে। স্ত্রীর হাতে এ জন্য দেওয়া হয়নি যে নারীদের স্বভাবে সাধারণত তাড়াহুড়া প্রবণতাটা একটু বেশি। তাই তাদের ক্ষমতা দিলে ছোটখাটো বিষয়েও তাড়াহুড়া করে তালাক দেওয়ার আশঙ্কাটা বেশি। তাই বেশি পরিমাণে বিবাহবিচ্ছেদ রোধেই ইসলাম নারীদের তালাকের ক্ষমতা দেয়নি। মনে রাখতে হবে, ইসলাম নারীকে তালাকের অধিকার দেয়নি, কিন্তু তালাকের যে মূল উদ্দেশ্য বিবাহবিচ্ছেদ, তার অধিকার দিয়েছে। অর্থাৎ কোনো কারণে নারী চাইলে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। ইসলামে নারীদের আটকে রাখা হয়নি, বরং তারাও প্রয়োজনে যথাবিহিত নিয়মে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারে। যথা :
ক. বিবাহের আগেই স্ত্রী এ শর্ত দিতে পারবে যে আমাকে ‘তালাক’ (বিবাহবিচ্ছেদ) দেওয়ার অধিকার দিতে হবে। তখন স্বামী থেকে প্রাপ্ত অধিকারবলে স্ত্রী প্রয়োজনে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারবে, যা আমাদের দেশের কাবিননামার ১৮ নম্বর ধারায় উল্লেখ থাকে। (দেখুন : ফাতহুল কাদির : ৩/৪২৭)
খ. যদি বিবাহের সময় শর্ত না-ও দিয়ে থাকে, তার পরও স্ত্রী স্বামী থেকে আপসের ভিত্তিতে এমনকি প্রয়োজনে বিনিময়ের মাধ্যমেও তালাক নিতে পারবে। এটাকে ‘খোলা তালাক’ বলা হয়। (দেখুন : সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৭৩)
গ. ওই পদ্ধতিদ্বয় ছাড়াও স্বামী নপুংসক, পাগল, অস্বাভাবিক ক্রোধসম্পন্ন হলে কোনোক্রমেই মনের মিল না হলে বা নিখোঁজ হয়ে গেলে অথবা যেকোনো কঠিন সমস্যায় পতিত হলে স্ত্রী বিচারকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারবে। (শরহুস সগির, দরদির : ২/৭৪৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৬/২৫২)

ইসলামে তালাকের অবস্থান
ইসলামী শরিয়তে অতি প্রয়োজনে তালাকের অবকাশ থাকলেও বিষয়টি অপছন্দনীয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপ্রিয় হালাল বস্তু হচ্ছে তালাক।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২১৭৭)
তাই নারী-পুরুষ উভয়ের কর্তব্য তালাক থেকে দূরে থাকা। তালাক দেওয়ার ক্ষমতা যেহেতু পুরুষের, তাই পুরুষকে ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যাপারে খুবই সংযমী হতে হবে। অন্যদিকে নারীর ব্যাপারেও হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে নারী স্বামীর কাছে বিনা কারণে তালাক প্রার্থনা করে, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২০৫৫)
সম্প্রতি পরকীয়ার বিস্তারে যেমন পুরুষের অপরাধ আছে, তেমনি আছে নারীরও। দেখা যাচ্ছে, এক নারীর দ্বারাই অন্য নারীর সংসার ভাঙছে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর এই বাণী খুবই প্রাসঙ্গিক—‘কোনো নারী যেন তার বোনের (অপর নারীর) অংশ নিজের পাত্রে নেওয়ার জন্য তালাকের আবেদন না করে। সে নিজে পছন্দ মোতাবেক বিবাহ করুক, কেননা তার ভাগ্যে যা লেখা আছে সে তা-ই পাবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬০০)
তাই প্রত্যেকের কর্তব্য, নিজের পাতে যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা। অন্যের পাতের জিনিস নিজের পাতে নিয়ে নেওয়ার মতো লোভী মানসিকতা কোনো ভদ্র মানুষের হতে পারে না। উপরন্তু যখন ওই নারীটিও একজন নারী।

দাম্পত্য সম্পর্কের দৃঢ়তায় ইসলামের দিকনির্দেশনা
যেসব কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়, সেগুলো দূর করার জন্য কোরআন-হাদিসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে।
প্রথমত, বিবাহের আগে একে অন্যকে ভালোভাবে দেখে নেবে, যাতে বুঝে-শুনেই বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং কোনো ধরনের দৈহিক ত্রুটির কারণেই যেন সম্পর্ক ছিন্ন করার উপক্রম না হয়।
দ্বিতীয়ত, শুধু একে অন্যের দোষ-ত্রুটির দিকেই দেখবে না, বরং তার মধ্যে যেসব ভালো গুণ বিদ্যমান সেগুলোর দিকে তাকিয়ে অপছন্দের দিকগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তাকে তোমার অপছন্দও হয়, তবু তুমি যা অপছন্দ করছ আল্লাহ তাতে সীমাহীন কল্যাণ দিয়ে দেবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৯)
এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুমিন পুরুষ মুমিন নারীর ওপর রুষ্ট হবে না, কেননা যদি তার কোনো কাজ খারাপ মনে হয়, তাহলে তার এমন গুণও থাকবে, যার ওপর সে সন্তুষ্ট হতে পারবে।’ (মুসলিম হাদিস : ১৪৬৯)

প্রশ্ন: ২৩৪ : তালাক সংঘটিত হওয়ার জায়েজ কারণ সমূহ।

তালাক শব্দের অর্থ 'বিচ্ছিন্ন', ত্যাগ করা ইত্যাদি। ইসলাম ধর্মে আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদকে তালাক বলা হয়। স্বামী সর্বাবস্থায় তালাক দিতে পারেন। স্ত্রী শুধুমাত্র তখনই তালাক দিতে পারবেন, যদি বিয়ের সময় এর লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়।পরিভাষায় তালাক অর্থ "বিবাহের বাঁধন তুলিয়া ও খুলিয়া দেওয়া, বা বিবাহের শক্ত বাঁধন খুলিয়া দেওয়া "স্বামী তার স্ত্রীর সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া।
জীবনে চুড়ান্ত বিপর্যয় থেকে স্বামী স্ত্রী উভয়কে রক্ষার জন্য ইসলামে তালাকের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যখন চরমভাবে বিরোধ দেখা দেয়,পরস্পর মিলে মিশে স্বামী স্ত্রী হিসেবে শান্তিপূর্ণ ও মাধুর্য মন্ডিত জীবন যাপন যখন একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়,পারস্পারিক সম্পর্ক যখন হয়েপড়ে তিক্ত,বিষক্ত,একজনের মন যখন অপরজন থেকে এমন ভাবে বিমূখ হয়ে যায় যে,তাদের শুভ মিলনের আর কোন সম্ভাবনা থাকেনা; ঠিক তখনই এই চূড়ান্ত পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে। তালাক হচ্ছে নিরুপায়ের উপায়। স্বামী স্ত্রী পরস্পরকে বেঁধে রাখার শেষ চেষ্টাও যখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তখন বিবাহ নামকছে, সেখানে তালাক ঘোষণার কোন পদ্ধতি বলা হয়নি। মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা হয়েছে- "কোন পুরুষ তাহার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাহিলে তাহাকে মুসলিম আইনে অনুমোদিত যে কোন পদ্ধতিতে ঘোষণার পরই তিনি তাহার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন এ মর্মে চেয়ারম্যানকে লিখিত ভাবে নোটিশ প্রদান করবেন এবং স্ত্রীকেও উহার নকল দিবেন" অর্থাৎ তালাক প্রদান বা ঘোষণার ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তের প্রবর্তিত পদ্ধতিই হচ্ছে মুসলিম পারিবারিক আইনের পদ্ধতি। তাই শরীয়ত প্রবর্তিত তালাক সংক্রান্ত বিধানাবলি ভালভাবে জানা ও বুঝা খুবই জরুরী। বিশেষ করে নিকাহ রেজিস্ট্রারদের এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী।

তালাকের উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

তালাক প্রদানের উদ্দেশ্য হল অন্যায়,জুলুম ও নিদারুন কষ্ট,জ্বালাতন ও উৎপীড়ন ইত্যাদি অশান্তি হতে মুক্তি লাভ করা। প্রকৃতপক্ষে ইসলামে তালাক প্রদানের যে উদ্দেশ্য তা হল স্বামী স্ত্রী উভয়ের মধ্যে যে সকল অশান্তি সৃষ্টিকারী কারণ সমুহ রয়েছে তা হতে সংশোধনের চেষ্টা করা বা দুর করা।

তালাক সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি[সম্পাদনা]

তালাক শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নবী তালাক সম্পর্কে বলেছেন তালাক অপেক্ষা ঘৃনার জিনিস আল্লাহ তায়ালা আর সৃষ্টি করেন নি হযরত আলী হতে বর্ণিত নিম্নোক্ত বাণী হতে তালাকের ভয়াভহতা উপলদ্ধি করা যায়।তোমরা বিয়ে কর কিন্তু তালাক দিয়োনা কেননা, তালাক দিলে তার দরুন আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে।

তালাক প্রদানের পূর্বে করনীয়[সম্পাদনা]

দাম্পত্য জীবনে স্বামী স্ত্রী'র মধ্যে বিবাধ-বিরোধ মনোমালিন্য দেখা দিতেই পারে। স্বামী স্ত্রীর মাঝে এ ধরনের বিরোধ দেখা দিলে তাদের জন্য নসীহত রয়েছে যে আর তাহলে প্রত্যেকেই যেন অপরের ব্যাপারে নিজের মধ্যে ধৈর্য্য ও সহ্য শক্তি রক্ষা করে অপরের কোন কিছু অপছন্দনীয় হলে তা ঘৃনা হলেও সে যেন দাম্পত্য জীবন রক্ষার সার্থে তা অকপটে বরদাশত করতে চেষ্টা করে। এর পরেও যদি দাম্পত্য জীবন সংরক্ষন করতে ব্যার্থ হয় তবে সে সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন "তোমরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন বিরোধ মনোমালিন্য হয়েছে বলে ভয় কর তাহলে তোমরা স্বামীর পরিবারের থেকে একজন বিচারক এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন বিচারক পাঠাও। তারা দু'জন যদি বাস্তবিকই অবস্থার সংশোধন করতে চায় তাহলে আল্লাহ তাদের সেজন্য তওফীক দান করবেন এবং তার সংশোধন করে স্বমী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে মিল মিশ করার চেষ্টা করবেন। আর যদি মিলমিশ অসম্ভব বলে মনে করেন তবে তাদের মধ্যেবিচ্ছেদের ব্যাবস্থা করবেন।
মুসলিম পারিবারিক আইনে বিরোধ মিমাংসার জন্য এবং স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আপোস করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান বা সালিসী পরিষদের উপর। তিনি উভয় পক্ষকে নটিশের মাধ্যমে উপস্তিত করার জন্য বলবেন। কোন পক্ষ যদি হাজির না হয় তবে তাকে হাজির করার ক্ষমতা তার নেই। স্বামী-স্ত্রী উভয় পক্ষের মধ্যে আপোস মীমাংসা করার চেষ্টা করা ছাড়া চেয়ারম্যানের আর কোন দ্বায়িত্ব নেই। তালাক কার্যকর অথবা অকার্যকর কোনটাই করার এখতিয়ার চেয়ারম্যানের নেই।

প্রকার[সম্পাদনা]

ক্ষমতা বা এখতিয়ার গত দিক দিয়ে তালাক পাঁচ প্রকারঃ- (১)তালাকে সুন্নাত (২) তালাকে বাদী (৩)তালাকে তাফবীজ (৪)তালাকে মোবারত ও (৫)খোলা তালাক।
কার্যকর হওয়ার দিক দিয়ে তালাক প্রধানত দুই প্রকারঃ- (১) তালাকে রেজী ও (২)তালাকে বাইন
তালাকে বাইন আবার দুই প্রকারঃ- (১)বাইনে সগির ও (২) বাইনে কবির।
মর্যাদা ও অবস্থানের দিক থেকে তালাক চার প্রকারঃ- (১)হারাম (২)মাকরুহ (৩)মুস্তাহাব ও (৪)ওয়াজিব
(ক)তালাকে হাসানঃ- তালাকে হাসানা তাকে বলে,যে তুহুরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সহবাস,যায়েজ অবস্থা কিংবা গর্ভাবস্থা নেই। উলালেখিত অবস্থা সমুহ নেই এমন তুহুর অবস্থায় শুধু মাত্র এক তালাক দিয়ে ইদ্দত পূর্ণ হতে দেওয়া। অর্থাৎ তিন তুহুর অতিক্রম করলে তালাকটি কার্যকর হয়ে যায়। এমতাবস্থায় স্ত্রী ইচ্ছা করলে অন্য যে কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে কিংবা তালাক প্রপ্তা স্ত্রী ইচ্ছা করলে এবং স্বামী চাইলে তারা পুনঃ বিবাহে আবদ্ধ হতে পারে। এই ধরনের তালককে বলা হয় তালাকে আহসান।
"(খ) তালাকে হাসানঃ-" হাসান তালাক হলো প্রত্যেক তুহুরে একটি করে তালাক দিবে। এই নিয়মে তিন তুহুরে তিন তালাক দেওয়ার নিয়ম কে তালাকে হাসান বলে। তালাকে হাসান দিলে অর্থাৎ তিন তুহুরে তিন তালেক দিলে সেই স্ত্রী তার স্বামীর জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যাবে। সে তার স্বামীর নিকট রেজাত বা পূন বিবাহে আসতে পারবেনা। তবে স্ত্রীর যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ হয় এবং দ্বিতীয় স্বামী যদি কোন দৈবাত কারণে তালাক দেয় অধবা মৃত্যু বরণ করে তবে ইচ্ছা করলে পূর্বের স্বামীর সহিত বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হতে পারবে।
"(গ) তালােক েবদীঃ-" বিদায়াত তালাক হলো কোন ব্যক্তি একসাথে তিন তালাক দিয়ে দেওয়া বা হায়েয অবস্থায় তিন তালাক দেওয়া অথবা যে তুহুরে সহবাস করেছে সেই তুহুরে তিন তালাক দেওয়া। উল্লেখিত যে কোন প্রকারে তালাক দেওয়া হউক না কেন তালাক দাতা গুনাহগার হবে গর্ভাবস্থা প্রকাশ পাইনি এমন সন্দেহ জনক অবস্থায় তিন তালাক প্রদান করাও বিদায়াত বা হারাম। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ তালাক অনুষ্টিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক আইন অথবা শরীয়ত প্রবর্তিত পদ্ধতি কোনটাই অনুসরণ করা হচ্ছেনা। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে চেয়ারম্যান,মেম্বার বা কোন গণ্য মান্য ব্যক্তি তালাকের নোটিশ সহি বা স্বাক্ষর করলেই তালাক হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। তারা তালাকের ঘোষণা দেন না, আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় তালাকের নোটিশে লিখা হয় এক তালাক,দুই তালাক, তিন তালাক ও বাইন তালাক। এমন ধরনের তালাক প্রকাশ্য তালাকে বিদয়ীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং যারা এধরনের তালাক অনুষ্ঠিত করিয়া থাকেন তারা সবাই গুনাহ্গার হবেন।
ক্ষমতা বা এখতিয়ার গত দিক দিয়ে তালাক পাঁচ প্রকারঃ-

ইদ্দত কাল[সম্পাদনা]

ইসলামে তালাকের পর একজন মহিলাকে ইদ্দত পালন করতে হয়।সেই (ইদ্দত কালীন) সময়ের মধ্যে একজন মুসলীম নারীর পুন:বিবাহ ইসলামে নিষিদ্ধ। একজন মুসলীম নারীর জন্য ইদ্দত দুই প্রকার বা ভাগে ভাগ করা সম্ভব।
১)তালাকের পর ২)স্বামীর মৃত্যুর পর
প্রথমত তালাকের পর, একজন মুসলীম নারীকে তার তালাকের পর ৯০ দিন বা তিন চন্দ্রমাস অপেক্ষা করতে হবে ।এই ৯০ দিন হচ্ছে ইদ্দত কালীন সময়।

তালাকের পর পুনর্বিবাহ[সম্পাদনা]

১৯৬১ সালের পূর্বে বাংলাদেশে নিয়ম ছিল যে, তালাকের পর স্বামী ও স্ত্রী পুনর্বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে তবে তা শর্তসাপেক্ষ। শর্তটি এই যে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে অন্য কারো সঙ্গে শরিয়া অনুসরণপূর্বক যথাযথভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে এবং নতুন স্বামী তালাক প্রদানের পর আগের স্বামীর সঙ্গে পুনর্বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ দ্বারা উক্ত শর্তটি রহিত করে দেওয়া হয়েছে । অর্থাৎ তালাকের পর স্বামী ও স্ত্রী যদি পুনরায় একত্রে থাকতে চায় তবে তাদের নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে অন্য কারো সঙ্গে শরিয়া অনুসরণপূর্বক যথাযথভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে না।

তালাকের প্রবণতা[সম্পাদনা]

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবে দেখা যায় বাংলাদেশে পুরুষদের চেয়ে নারীদের মধ্যেই তালাক প্রবণতা বেশি।[১] কারন পিতৃতান্ত্রিক সমাজে বর্তমানে নারী মুখবুজে সব অন্যায় অত্যাচার সহ্য করেন না। প্রতিবাদ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1.  "পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি তালাক দিচ্ছেন"। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০০৯

প্রশ্ন: ২৩৩ : একই বৈঠকে একসাথে তিন তালাক দিলে কি তিন তালাক পতিত হবে? নাকি এক তালাক হবে?

প্রশ্ন: একই বৈঠকে একসাথে তিন তালাক দিলে কি তিন তালাক পতিত হবে? নাকি এক তালাক হবে?

উত্তর:

সুনান আবু দাউদ :: তালাক অধ্যায় ১৩
হাদিস ২১৯৭
হুমায়দ ইবন মাস‘আদা--মুজাহিদ (র) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবন আববাস (র) - এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হয়ে বলে যে, সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করেছে। তখন তিনি চুপ করে থাকেন, যাতে আমার মনে হয়, তিনি ( ইবন অববাস) তাকে ঐ স্ত্রী পুনরায় গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিবেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলেন, তোমাদের কেউ যেন এখান থেকে গমণপূরবক আহ্মকের মত কাজ না করে এবং বলে, হে ইবন আববাস! আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেনঃ ‘‘ আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ কে ভয় করে, তার জন্য পরিত্রাণের কোন পথ দেখছি না। তুমি তোমার রবের নাফরমানী করেছ এবং তোমার স্ত্রীকে তোমার নিকট হতে পৃথক করে দিয়েছ। অথচ আল্লাহ্ তা‘আলার নির্দেশঃ ‘‘ হে নবী! যখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিবে, তখন তাদের ইদ্দতের মধ্যে তাদের তালাক দিবে।’’
আবূ দাঊদ , শু‘বা, আইউব, ইবন জুরায়জ ও আ‘মাশ প্রমুখ রাবীগণ - সকলেই ইবন আববাস (রা) হতে উক্ত হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন যে, তিনি এটাকে তিন তালাক হিসাবে গ্রহণ করেছেন। ইমাম আবূ দাঊদ (র) বলেন, হাম্মাদ ইবন যায়িদ --ইবন আববাস (রা) হতে বর্ণনা করেন যে, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে একই সাথে তিন তালাক প্রদান করবে তাতে এক তালাকই হবে। Grade: Sahih (Al-Albani)

=========================

এক সাথে তিন তালাক দিলে তা তিন তালাক হবে নাকি এক তালাক হিসেবে গণ্য হবে, এ নিয়ে মতভেদ আছে। বেশীর ভাগ আলেমের মতে এক সাথে তিন তালাক দিলে তা তিন তালাক হিসেবেই কার্যকর হবে, তবে, কোনো কোনো আলেমের মতে এক সাথে তিন তালাক দিলে তা এক তালাক হিসেবেই গন্য হবে, কেননা, এক তুহুরে একটির বেশী তালাক দেওয়া যায়না।  তাদের মতে কুরআনে বলা হয়েছে, তালাক হলো দুইবার , এরপর হয় রাখবে না হয় বিদায় করে দিবে। আর এই দুই তালাকও দুই তুহুরে দিতে হবে। 

==========================





প্রশ্ন: ২৩২ : নারীদের সাবধানতার জন্য হাদীস।

ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [মহিলাদেরকে সম্বোধন করে] বললেন,
‘‘হে মহিলা সকল! তোমরা সাদকাহ-খয়রাত করতে থাক ও অধিকমাত্রায় ইস্তিগফার কর। কারণ আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসীরূপে দেখলাম।’’ একজন মহিলা নিবেদন করল, ‘আমাদের অধিকাংশ জাহান্নামী হওয়ার কারণ কি? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ‘‘তোমরা অভিশাপ বেশি কর এবং নিজ স্বামীর অকৃতজ্ঞতা কর। বুদ্ধি ও ধর্মে অপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিচক্ষণ ব্যক্তির উপর তোমাদের চাইতে আর কাউকে বেশি প্রভাব খাটাতে দেখিনি।’’ মহিলাটি আবার নিবেদন করল, ‘বুদ্ধি ও ধর্মের ক্ষেত্রে অপূর্ণতা কি?’ তিনি বললেন, ‘‘দু’জন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্য সমতুল্য। আর [প্রসবোত্তর খুন ও মাসিক আসার] দিনগুলিতে মহিলা নামায পড়া বন্ধ রাখে।’’ (মুসলিম) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৩০৪, ১৪৬২, মুসলিম ৭৯, ৮০, নাসায়ী ১৫৭৬, ১৫৭৯, আবূ দাউদ ৪৬৭৯, ইবনু মাজাহ ১২৮৮, ৪০০৩, আহমাদ ৫৩২১, ১০৯২২, ১০৯৮৮, ১১১১৫ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়। (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের বেশির ভাগই নারীজাতি; (কারণ) তারা কুফরী করে। জিজ্ঞেস করা হল, ‘তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করে?’ তিনি বললেনঃ ‘তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং অকৃতজ্ঞ হয়।’ তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, ‘আমি কক্ষণো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি।’
(বুখারি-৪৩১,৭৪৮,১০৫২,৩২০২,৫১৯৭; মুসলিম ৮/১ হাঃ ৮৮৪, আহমাদ ৩০৬৪) ( প্রকাশনীঃ ২৮,ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৮)

প্রশ্ন: ২৩১ : নামাজে মনযোগ রাখার উপায়।


হাশরের ময়দানে একটি সিজদা করার আদেশ করা হবে। যারা নামাজ পড়তো তারা সিজদা করতে সক্ষম হবে, এবং যারা নামাজ পড়তো না তারা সিজদা করতে পারবেনা। মনে করবেন, আল্লাহর আদেশে হাশরের ময়দানে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন। হাশরের ময়দানের একপাশে জাহান্নাম আছে, একপাশে জান্নাত আছে। একটু পরেই হিসাব নিকাশ হবে। এই কথাগুলো অনুভবে রাখলে ইনশাআল্লাহ নামাজে মনযোগ থাকবে।

এ ছাড়াও :

(১) নামাজে যা কিছু পড়ছেন তার বাংলা অর্থ শিখে নেবেন। আরবীতে পড়ার সময় বাংলা অর্থের দিকে খেয়াল করবেন।

(২) মনে করবেন এটাই আপনার শেষ নামাজ ।

(৩) খেয়াল রাখবেন আপনি আল্লাহর সামনে আছেন এবং আল্লাহ আপনাকে দেখছেন। আপনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা দিচ্ছেন। আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে আছেন।

(৪) নিজের কবরের কথা খেয়াল করবেন।

(৫) নিজের মৃত্যুর কথা স্মরণ করবেন।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...