ইসলামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বৈধ কাজ তালাক। বৈবাহিক সম্পর্ক যেন ছিন্ন না হয়, এজন্য সকল প্রকার চেষ্টা চালাতে নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম।
কিন্তু কখনো কখনো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলে উভয়ের একত্রে জীবন যাপন অত্যন্ত কষ্টকর ও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই রকম অবস্থায় বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করাই উভয়ের জন্য কল্যাণকর মনে হয়। এজন্য ইসলামি শরিয়ত তালাক বৈধ করেছে।
বিয়ের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পাদিত চুক্তি ছিন্ন করার নাম তালাক। এর সর্বোত্তম পদ্ধতি এই যে, দু’টি শর্তের ভিত্তিতে কেবলমাত্র একটি তালাক দেবে- (১) নারীর পবিত্রতা অবস্থায় । (২) স্বামী-স্ত্রীকে এমন পবিত্র সময়ে তালাক দেবে যার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেনি। শুধুমাত্র এক তালাক দিলে ইদ্দতের সময় কালের ভেতরে রাজআতও করা যাবে। অর্থাৎ কোনো ধরণের বিয়ে ছাড়াই স্বামী স্ত্রী’র সম্পর্ক পুনরায় বহাল করা যাবে। আর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিবাহ করতে চাইলে বিবাহও করতে পারবে। এছাড়া ইদ্দত শেষ হওয়ার পর নারী অন্য কোনো পুরুষকেও বিবাহ করতে পারবে। মোটকথা হলো, এই জাতীয় তালাক হওয়ার পর বৈবাহিক সম্পর্ক পুনরায় বহাল রাখাও সম্ভব এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার পর নারী অন্য যে কোনো পুরুষকে বিবাহ করারও অধিকার থাকবে। সারকথা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মীমাংসার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলে এবং তালাক দেয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় না থাকলে শুধুমাত্র এক তালাক দেবে। যেন ভুল অনুভব করার পর ইদ্দতের সময়কালে ফিরিয়ে নেয়া এবং ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় বিয়ের রাস্তা খোলা থাকবে। একসঙ্গে তিন তালাক দেয়া থেকে সম্পূর্ণ বেঁচে থাকতে হবে। কেননা তিন তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া বা পুনরায় বিয়ে করার পথ বাহ্যিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
তালাকের অধিকার স্বামীর:
সৃষ্টিগত ও স্বভাবগত কারণেই পুরুষের মধ্যে নারীর তুলনায় চিন্তা-ভাবনা এবং ধৈর্য-সহনশীলতার শক্তি বেশি থাকে। পাশাপাশি শারীরিক গঠন, স্বভাব, শক্তি ও যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা যে শক্তি ও বড় বড় কাজ করার যোগ্যতা পুরুষকে দিয়েছেন তা নারীকে দেননি। এজন্যই নেতৃত্বের কাজ সঠিকভাবে একজন পুরুষই আঞ্জাম দিতে পারে। এ বিষয়ে নিজের জ্ঞান দ্বারা সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিবর্তে যিনি এদের দু’জনকেই সৃষ্টি করেছেন, সেই সত্তাকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন, তিনি কী বলেন।
সৃষ্টিগত ও স্বভাবগত কারণেই পুরুষের মধ্যে নারীর তুলনায় চিন্তা-ভাবনা এবং ধৈর্য-সহনশীলতার শক্তি বেশি থাকে। পাশাপাশি শারীরিক গঠন, স্বভাব, শক্তি ও যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা যে শক্তি ও বড় বড় কাজ করার যোগ্যতা পুরুষকে দিয়েছেন তা নারীকে দেননি। এজন্যই নেতৃত্বের কাজ সঠিকভাবে একজন পুরুষই আঞ্জাম দিতে পারে। এ বিষয়ে নিজের জ্ঞান দ্বারা সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিবর্তে যিনি এদের দু’জনকেই সৃষ্টি করেছেন, সেই সত্তাকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন, তিনি কী বলেন।
কুল কায়েনাতের স্রষ্টা মহান রাব্বুল আলামিন কোরআনে কারিমে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বিষয়টির সমাধান পেশ করেছেন, ‘পুরুষদের জন্য নারীদের ওপর মর্যাদা রয়েছে’ (সূরা বাকারাহ-২২৮)। ‘পুরুষগণ নারীদের ওপর কর্তৃত্বশীল’ (সূরা নিসা-৩৪)। এই আয়াতগুলোর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন যে, যৌথ জীবন পরিচালনায় নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার কেবল পুরুষেরই থাকবে। যদিও পুরুষের জন্য উচিৎ যে, নারীকেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে শামিল করবে। এ জন্যই ইসলামি শরিয়ত তালাক প্রদানের অধিকার পুরুষদেরকে দিয়েছে।
খোলা তালাক:
ইসলামি শরিয়ত তালাকের অধিকার পুরুষকে দিলেও নারীদেরকে কেবল বাধ্য ও অপারগ বানিয়ে রাখেনি। কেননা স্বামী যদি স্ত্রীর সকল প্রাপ্য অধিকার যথাযথভাবে আদায় না করে অথবা নারী কোনো কারণে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখতে না চায় তাহলে ইসলামি শরিয়ত নারীকে এই অধিকার দিয়েছে যে, স্বামীর কাছে তালাক দাবি করবে। নারী যদি বাস্তবেই মজলুম হয়, তাহলে স্বামীর শরয়ি দায়িত্ব হলো তার অধিকার আদায় করবে অথবা নারীর দাবি অনুযায়ী তাকে তালাক দিয়ে দেবে। চাই কোনো কিছুর বিনিময়ে হোক বা বিনিময় ছাড়া। কিন্তু স্বামী যদি তালাক দিতে অস্বীকার করে তাহলে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শরয়ি আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে। যাতে বিষয়টি সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি ঘটে। অন্যথায় বিচারক স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। এভাবেই আদালতের মাধ্যমে তালাক হয়ে যাবে। এবং নারী ইদ্দত পালনের পর অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারবে। ‘খোলা’র এই পদ্ধতিতে তালাকে বায়েনা পতিত হয়। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যদি পুনরায় এক সঙ্গে থাকার ইচ্ছা করে তাহলে স্বামী বিবাহ ছাড়া পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারবে না। বরং তাদের মাঝে পুনরায় বিবাহ হতে হবে। যার জন্য উভয় পক্ষের অনুমতির প্রয়োজন।
ইসলামি শরিয়ত তালাকের অধিকার পুরুষকে দিলেও নারীদেরকে কেবল বাধ্য ও অপারগ বানিয়ে রাখেনি। কেননা স্বামী যদি স্ত্রীর সকল প্রাপ্য অধিকার যথাযথভাবে আদায় না করে অথবা নারী কোনো কারণে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখতে না চায় তাহলে ইসলামি শরিয়ত নারীকে এই অধিকার দিয়েছে যে, স্বামীর কাছে তালাক দাবি করবে। নারী যদি বাস্তবেই মজলুম হয়, তাহলে স্বামীর শরয়ি দায়িত্ব হলো তার অধিকার আদায় করবে অথবা নারীর দাবি অনুযায়ী তাকে তালাক দিয়ে দেবে। চাই কোনো কিছুর বিনিময়ে হোক বা বিনিময় ছাড়া। কিন্তু স্বামী যদি তালাক দিতে অস্বীকার করে তাহলে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শরয়ি আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে। যাতে বিষয়টি সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি ঘটে। অন্যথায় বিচারক স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। এভাবেই আদালতের মাধ্যমে তালাক হয়ে যাবে। এবং নারী ইদ্দত পালনের পর অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারবে। ‘খোলা’র এই পদ্ধতিতে তালাকে বায়েনা পতিত হয়। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যদি পুনরায় এক সঙ্গে থাকার ইচ্ছা করে তাহলে স্বামী বিবাহ ছাড়া পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারবে না। বরং তাদের মাঝে পুনরায় বিবাহ হতে হবে। যার জন্য উভয় পক্ষের অনুমতির প্রয়োজন।
তালাকের প্রকার সমূহ:
সাধারণভাবে তালাক তিন প্রকার হয়ে থাকে। ১. তালাকে রজয়ি । ২. তালাকে বায়েন। ৩. তালাকে মুগাল্লাজা।
সাধারণভাবে তালাক তিন প্রকার হয়ে থাকে। ১. তালাকে রজয়ি । ২. তালাকে বায়েন। ৩. তালাকে মুগাল্লাজা।
তালাকে রিজয়ি:
স্পষ্ট শব্দে স্ত্রীকে এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার নাম তালাকে রিজয়ি। উদাহরণ স্বরূপ স্বামী-স্ত্রীকে বলবে, আমি তোমাকে তালাক দিয়েছি। এটা এমন একটি তালাক, যার মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয় না। ইদ্দত পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকে। ইদ্দতের সময়কালে স্বামী যদি চায় যে, তালাক থেকে ফিরে আসবে তাহলে এ নারীকে বিবাহ ছাড়াই পুনরায় স্ত্রী বানাতে পারবে। মনে রাখতে হবে যে, তালাক ফিরিয়ে নেয়ার জন্য শরিয়তে স্ত্রী’র সম্মতি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
স্পষ্ট শব্দে স্ত্রীকে এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার নাম তালাকে রিজয়ি। উদাহরণ স্বরূপ স্বামী-স্ত্রীকে বলবে, আমি তোমাকে তালাক দিয়েছি। এটা এমন একটি তালাক, যার মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয় না। ইদ্দত পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকে। ইদ্দতের সময়কালে স্বামী যদি চায় যে, তালাক থেকে ফিরে আসবে তাহলে এ নারীকে বিবাহ ছাড়াই পুনরায় স্ত্রী বানাতে পারবে। মনে রাখতে হবে যে, তালাক ফিরিয়ে নেয়ার জন্য শরিয়তে স্ত্রী’র সম্মতি গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
তালাকে বায়েন:
তালাকের অর্থ স্পষ্টভাবে বুঝায় না এমন শব্দে তালাক দেয়ার নাম তালাকে বায়েন। উদাহরণ স্বরূপ, স্বামী তার স্ত্রীকে বলবে, তুমি বাপের বাড়ি চলে যাও। আমি তোমকে ছেড়ে দিয়েছি। এ জাতীয় শব্দে ওই সময় তালাক হবে, যখন স্বামী এই শব্দ দ্বারা তালাকের নিয়ত করবে, অন্যথায় নয়। এ জাতীয় শব্দ দ্বারা তালাকে বায়েন পতিত হয়। অর্থাৎ বিবাহ বন্ধন তৎক্ষণাৎ শেষ হয়ে যায়। এখন কেবল বিবাহের মাধ্যমেই স্বামী-স্ত্রী একজন অপর জনের জন্য হালাল হতে পারে।
তালাকের অর্থ স্পষ্টভাবে বুঝায় না এমন শব্দে তালাক দেয়ার নাম তালাকে বায়েন। উদাহরণ স্বরূপ, স্বামী তার স্ত্রীকে বলবে, তুমি বাপের বাড়ি চলে যাও। আমি তোমকে ছেড়ে দিয়েছি। এ জাতীয় শব্দে ওই সময় তালাক হবে, যখন স্বামী এই শব্দ দ্বারা তালাকের নিয়ত করবে, অন্যথায় নয়। এ জাতীয় শব্দ দ্বারা তালাকে বায়েন পতিত হয়। অর্থাৎ বিবাহ বন্ধন তৎক্ষণাৎ শেষ হয়ে যায়। এখন কেবল বিবাহের মাধ্যমেই স্বামী-স্ত্রী একজন অপর জনের জন্য হালাল হতে পারে।
তালাকে মুগাল্লাজা:
একসঙ্গে অথবা পৃথক পৃথক তিন তালাক দেয়ার নাম তালাকে মুগাল্লাজা। চাই একই মজলিসে দিক অথবা একই পবিত্রতায় দিক। এ অবস্থায় স্বামীরও ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার থাকে না। এবং স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিবাহও করতে পারে না। তবে নারী যদি নিজের ইচ্ছায় অপর কোনো পুরুষকে যথা নিয়মে বিয়ে করে এবং দু’জনের সহবাসও হয় অত:পর দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু হয়ে গেল অথবা দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দিয়ে দিল, এই নারী দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুর ইদ্দত পালনের পর প্রথম স্বামীকে পুনরায় বিবাহ করতে পারবে। এই বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কালামে সূরায়ে বাকারার ২৩০ নম্বর আয়াতে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, ‘অত:পর যদি স্বামী (তৃতীয়) তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে ওই (তালাকপ্রাপ্তা) নারী তার জন্য ওই সময় পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ অন্য কোনো নারীকে বিবাহ না করে। হ্যাঁ, যদি (দ্বিতীয় স্বামীও) তাকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের কোনো অসুবিধা নেই যে, একজন অপর জনের নিকট (নতুনভাবে বিবাহ করে) পুনরায় ফিরে আসবে। এই শর্তে যে, তাদের এই প্রবল ধারণা হবে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখবে।’ এই পদ্ধতিকে হালালাহ বলে। যার উল্লেখ কোরআনে কারিমে রয়েছে। এই পদ্ধতিটি সঠিক হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। (ক) দ্বিতীয় বিবাহটি সঠিক নিয়মে হতে হবে। (খ) দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সহবাস হতে হবে। (গ) দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তালাক দিতে হবে অথবা মৃত্যু বরণ করতে হবে। (ঘ) দ্বিতীয় ইদ্দতও সমাপ্ত হতে হবে। এটাও জানা উচিৎ যে, হালালার শর্তে বিয়ে করা হারাম।
একসঙ্গে অথবা পৃথক পৃথক তিন তালাক দেয়ার নাম তালাকে মুগাল্লাজা। চাই একই মজলিসে দিক অথবা একই পবিত্রতায় দিক। এ অবস্থায় স্বামীরও ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার থাকে না। এবং স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিবাহও করতে পারে না। তবে নারী যদি নিজের ইচ্ছায় অপর কোনো পুরুষকে যথা নিয়মে বিয়ে করে এবং দু’জনের সহবাসও হয় অত:পর দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু হয়ে গেল অথবা দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দিয়ে দিল, এই নারী দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুর ইদ্দত পালনের পর প্রথম স্বামীকে পুনরায় বিবাহ করতে পারবে। এই বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কালামে সূরায়ে বাকারার ২৩০ নম্বর আয়াতে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, ‘অত:পর যদি স্বামী (তৃতীয়) তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে ওই (তালাকপ্রাপ্তা) নারী তার জন্য ওই সময় পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ অন্য কোনো নারীকে বিবাহ না করে। হ্যাঁ, যদি (দ্বিতীয় স্বামীও) তাকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের কোনো অসুবিধা নেই যে, একজন অপর জনের নিকট (নতুনভাবে বিবাহ করে) পুনরায় ফিরে আসবে। এই শর্তে যে, তাদের এই প্রবল ধারণা হবে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখবে।’ এই পদ্ধতিকে হালালাহ বলে। যার উল্লেখ কোরআনে কারিমে রয়েছে। এই পদ্ধতিটি সঠিক হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। (ক) দ্বিতীয় বিবাহটি সঠিক নিয়মে হতে হবে। (খ) দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সহবাস হতে হবে। (গ) দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তালাক দিতে হবে অথবা মৃত্যু বরণ করতে হবে। (ঘ) দ্বিতীয় ইদ্দতও সমাপ্ত হতে হবে। এটাও জানা উচিৎ যে, হালালার শর্তে বিয়ে করা হারাম।
ইসলামি শিক্ষার দাবি এই যে, বিবাহ সারা জীবনের জন্য হয়। তা ছিন্ন করা ও শেষ করার সুযোগই যেন না আসে। কেননা এ সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রভাব কেবল স্বামী-স্ত্রীর ওপরই পড়ে না, বরং সন্তানের জীবন ধ্বংস এবং ক্ষেত্র বিশেষ দুই পরিবার বা দুই বংশের ঝগড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর দ্বারা পুরো সমাজ প্রভাবিত হয়। এই জন্য ইসলামি শরিয়ত স্বামী-স্ত্রী উভয়কে এই নির্দেশনা দিয়েছে। যার ওপর আমল করার দ্বারা সম্পর্ক অনেক মজবুত ও সুদৃঢ় হবে। যদি স্বামী-স্ত্রী’র মাঝে মতবিরোধ দেখা যায়, তাহলে সর্বপ্রথম তাদের দু’জনে মিলে এই বিরোধ দূর করা উচিৎ। যদি স্ত্রীর পক্ষ থেকে এমন কোনো বিষয় সামনে আসে, যা স্বামীর মেজাজ পরিপন্থি, সে ক্ষেত্রে স্বামীকে আদেশ দেয়া হয়েছে, সে যেন বুঝিয়ে সুঝিয়ে এবং ধমক শাসনের দ্বারা কাজ নেয়। দ্বিতীয়ত স্বামীকে এও বলা হয়েছে যে, স্ত্রীকে কেবল চাকরানি বা খাদেমাও মনে করবে না। বরং স্ত্রী হিসেবে তার বেশ কিছু অধিকারও রয়েছে। যেগুলো আদায় করা শরিয়তের দৃষ্টিতে অধিক জরুরি। এই সকল অধিকারের মধ্যে রয়েছে তাদের খোরপোষ ও বাসস্থানের সুন্দর ব্যবস্থা। তেমনি তাদের নিরাপত্তা, মনোরঞ্জন ও আরাম আয়েশের প্রতি খেয়াল রাখাও জরুরি। এই জন্যই আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন ‘তোমাদের মধ্যে সবচে’ উত্তম মানুষ সেই, যে তার পরিবারের দৃষ্টিতে উত্তম।’ স্পষ্ট কথা তাদের দৃষ্টিতে সেই উত্তম হবে, যে তাদের অধিকার যথাযথ ভাবে আদায় করবে।
No comments:
Post a Comment