আদি পুস্তক ১১: ২৯ এবং ১৭: ১৭

 
শেম বংশের বিবরণ
 
 
10শেম-এর বংশ বৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ শেম-এর একশো বছর বয়সে, প্লাবনের দুই বছর পরে আরফাকষাদের জন্ম হল। 11আরফাকষাদের জন্মের পরে শেম আরও পাঁচশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্রকন্যার জন্ম দিলেন। 12আরফাকষাদের পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে শেলাহ্-এর জন্ম হল। 13শেলাহ্-এর জন্মের পর আরফাকষাদ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 14শেলাহ্-এর ত্রিশ বছর বয়সে এবেরের জন্ম হল। 15এবেরের জন্মের পর শেলাহ্ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 16এবেরের চৌত্রিশ বছর বয়সে পেলেগের জন্ম হল। 17পেলেগের জন্মের পর এবের চারশো ত্রিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 18পেলেগের ত্রিশ বছর বয়সে রেয়ুর জন্ম হল। 19রেয়ুর জন্মের পর পেলেগ দুশো নয় বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 20রেয়ুর বত্রিশ বছর বয়সে সেরুগের জন্ম হল। 21সেরুগের জন্মের পর রেয়ূ দুশো সাত বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 22সেরুগের ত্রিশ বছর বয়সে নাহোরের জন্ম হল। 23নাহোরের জন্মের পর সেরুগ দুশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 24নাহোরের উনত্রিশ বছর বয়সে তেরাহ্-এর জন্ম হল।
25তেরাহের জন্মের পর নাহোর একশো উনিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন।
26তেরাহ্ সত্তর বছর বয়সে অব্রাম, নাহোর ও হারোণের জনক হলেন।
27তেরাহের বংশবৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ তেরাহ্ ছিলেন অব্রাম, নাহোর ও হারোণের পিতা। 28হারোণ লোটের পিতা। কিন্তু হারোণ তাঁর পিতা তেরাহ্ জীবিত থাকতেই নিজ জন্মস্থান কলদীয়দের দেশে উর নামক স্থানে প্রাণত্যাগ করেন।  
 
29অব্রাম ও নাহোর উভয়েই বিবাহিত ছিলেন। অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী ও নাহোরের স্ত্রীর নাম ছিল মিলকা। এই স্ত্রী ছিলেন হারোণের কন্যা। 30হারোণ ছিলেন মিল্‌কা ও ইসকার পিতা। সারী ছিলেন বন্ধ্যা, তাঁর কোন সন্তান ছিল না।
 
31তেরাহ্ তাঁর পুত্র অব্রাম ও হারোণের পুত্র ও তাঁর পৌত্র লোট এবং পুত্রবধূ অব্রামের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কনান দেশে যাওয়ার জন্য কলদীয়দের দেশের উর নামক স্থান থেকে যাত্রা করলেন। কিন্তু তাঁরা হারাণ পর্যন্ত এসে সেখানেই বসতি স্থাপন করলেন। 32পরে দুশো পাঁচ বছর বয়সে হারাণেই তেরাহ্-র মৃত্যু হল।
 
=====================
 


সুন্নত সংস্কারের প্রবর্তন
1অব্রামের নিরানব্বই বছর বয়সে প্রভু পরমেশ্বর তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি আমার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে জীবন যাপন কর এবং পূর্ণতা লাভ কর। 2আমি তোমার সঙ্গে এক সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হব এবং তোমার বংশকে বহুগুণে বর্ধিত করব।
অব্রাম তখন উপুড় হয়ে প্রণিপাত করলেন। 3ঈশ্বর তাঁকে বললেন, 4দেখ, তোমার সঙ্গে আমি সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি, সেই অনুযায়ী তুমি হবে বহুজাতির আদি পিতা। 5তোমার নাম আর অব্রাম (মহান পিতা) থাকবে না, তোমার নাম হবে অব্রাহাম। কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির আদি পিতা করব।রোমীয় 4:17 6আমি তোমাকে প্রজাবন্ত করব, তোমা থেকে উৎপন্ন করব বহু জাতি। নৃপতিরা জন্মাবে তোমার বংশে। 7তোমার সঙ্গে এবং পুরুষানুক্রমে তোমার বংশধরদের সঙ্গে আমি যে সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হব, তা হবে চিরস্থায়ী। আমি তোমার ঈশ্বর এবং তোমার বংশধরদেরও ঈশ্বর হব।লুক 1:55 8তুমি যে দেশে প্রবাস করছ, সেই সমগ্র কনান দেশের সত্ত্বাধিকার তোমাকে এবং তোমার বংশধরদের চিরকালের জন্য দান করব, আর আমিই হব তোমার ঈশ্বর।প্রেরিত 7:5
9ঈশ্বর অব্রাহামকে আরও বললেন, তুমি আমার সঙ্গে স্থাপিত সন্ধি চুক্তি পালন করবে, তোমার উত্তরপুরুষেরা পুরুষানুক্রমে তা পালন করবে। 10তোমার সঙ্গে এবং তোমার উত্তরপুরুষদের সঙ্গে আমার সন্ধিচুক্তির শর্ত হল এই: তোমাদের মধ্যে যারা পুরুষ তাদের প্রত্যেকের লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করতে হবে।প্রেরিত 7:8; রোমীয় 4:11 11তোমরা নিজেদের লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করবে, তা-ই হবে তোমাদের সঙ্গে আমার স্থাপিত সন্ধি চুক্তির নিদর্শন।
12পুরুষানুক্রমে তোমরা প্রত্যেক পুরুষ সন্তানের বয়স আটদিন হলে তার লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করবে। তোমাদের বংশের নয় এমন বিজাতীয় কেউ যদি তোমাদের পরিবারে জন্মগ্রহণ করে বা কাউকে যদি অর্থমূল্যে ক্রয় করা হয় তাহলে তাদেরও লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করবে। 13তোমাদের পরিবারে জাত অথবা মূল্যদ্বারা ক্রীত উভয়েরই লিঙ্গাগ্রচর্ম অবশ্যই ছেদন করবে। তোমাদের দেহে আমার সঙ্গে সন্ধি চুক্তির এই চিহ্ন চিরস্থায়ী সম্বন্ধের চিহ্ন হয়ে থাকবে। 14লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করা হয়নি এমন কোন পুরুষ স্বজাতিচ্যুত হবে, কারণ সে আমার সন্ধিচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
15ঈশ্বর অব্রাহামকে আরও বললেন, তুমি তোমার স্ত্রী সারীকে আর সারী বলে ডাকবে না। তার নাম হবে সারা17:15 সারা: রানী।। আমি তাকে আশীর্বাদ করব, সে হবে বহুজাতির আদিমাতা এবং তার থেকে উৎপন্ন হবে প্রজাকুলের নৃপতিবৃন্দ। 16অব্রাহাম তখন উপুড় হয়ে প্রণিপাত করলেন ও হাসলেন।  
 
17তিনি মনে মনে বললেন, একশো বছর বয়স যার, সেই বৃদ্ধের কি সন্তান হবে? নব্বই বছরের বৃদ্ধা সারা কি সন্তান প্রসব করবে? 
 
 18অব্রাহাম ঈশ্বরকে বললেন, তোমার অনুগ্রহে ইশ্মায়েলই বেঁচে থাকুক। 19ঈশ্বর বললেন, কিন্তু তোমার স্ত্রী সারা অবশ্যই পুত্রের জননী হবে, তুমি তার নাম রেখ ইসহাক17:19 ইসহাক: হাস্য/ ঈশ্বর হাসেন।। আমি তার সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন করব এবং তার ভাবী বংশধরদের সঙ্গে তা হবে চিরস্থায়ী সম্বন্ধ। 20ইশ্মায়েল সম্পর্কে তোমার নিবেদনও আমি গ্রাহ্য করলাম। আমি তাকেও আশীর্বাদ করব। তাকে আমি প্রজাবন্ত করব, তার বংশকে করব বহুগুণে বর্ধিত। তার বংশে বারোজন গোষ্ঠীপতি উৎপন্ন হবে এবং আমি তাকে এক বিরাট জাতিতে পরিণত করব। 21কিন্তু আগামী বছর এই সময়ে সারার যে পুত্র জন্মগ্রহণ করবে, সেই ইস্‌হাকের সঙ্গেই আমি আবদ্ধ হব এই সন্ধি চুক্তিতে। 22কথা শেষ করে ঈশ্বর অব্রাহামের কাছ থেকে অন্তর্হিত হলেন। অব্রাহাম ঈশ্বরের 23নির্দেশ অনুযায়ী সেই দিনই তাঁর পুত্র ইশ্মায়েল এবং তার সঙ্গে পরিবারে জাত এবং অর্থমূল্যে ক্রীত অব্রাহামের পরিবারে যত পুরুষ ছিল তাদের সকলেরই লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করলেন। 24লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদনের সময়ে অব্রাহামের বয়স হয়েছিল নিরানব্বই বছর, 25আর তাঁর পুত্র ইশ্মায়েলের বয়স ছিল তের বছর। 26একই দিনে অব্রাহাম ও তাঁর পুত্র ইশ্মায়েল উভয়ের লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করা হল। 27সেই সঙ্গে তাঁর পরিবারে জাত এবং বিজাতীয় লোকদের কাছ থেকে অর্থমূল্যে ক্রীত সমস্ত পুরুষেরও লিঙ্গাগ্রচর্ম ছেদন করা হল।

আদি পুস্তক ১১:২৬, ১১: ৭-৩২, ১১:২৯,


বাবেল-এ ভাষাভেদের কাহিনী
1সারা পৃথিবীতে তখন এক ভাষা প্রচলিত ছিল ও শব্দসংখ্যা ছিল সীমিত। 2মানব গোষ্ঠী পূর্বদিকে পরিভ্রমণ করতে করতে অবশেষে শিনিয়র দেশে সমতলভূমি দেখতে পেয়ে সেখানেই বসতি স্থাপন করল। 3পরে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, এস আমরা ইঁট তৈরী করে ভাল করে পোড়াই। এইভাবে তারা পাথরের বদলে ইঁট ও চূণ-সুরকির বদলে আলকাতরা সংগ্রহ করল। 4তারপর তারা বলল, এস এবার আমরা নিজেদের জন্য একটি নগর এবং আকাশ ছোঁয়া একটি মিনার তৈরী করে নিজেদের নাম প্রতিষ্ঠা করি, তা না হলে সারা পৃথিবীতে আমরা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ব।
5পরে প্রভু পরমেশ্বর মানব সন্তানদের দ্বারা নির্মিত নগর ও মিনার দেখার জন্য স্বর্গ থেকে নেমে এলেন। 6তিনি বললেন, দেখ, এরা সকলেই এক জাতি ও এক ভাষাভাষী। এটি তাদের কীর্তির সূচনা, এর পরে তারা যা কিছু করার সঙ্কল্প করবে তা থেকে তাদের নিবৃত্ত করা যাবে না। 7চল, আমরা নীচে গিয়ে ওদের ভাষার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করি যাতে ওরা একে অন্যের কথা বুঝতে না পারে। 8তখন প্রভু পরমেশ্বর তাদের সেখান থেকে সারা পৃথিবীতে বিক্ষিপ্ত করে দিলেন, ফলে তাদের নগর নির্মাণ স্থগিত হয়ে গেল। 9এইজন্যই সেই নগরের নাম হল বাবেল (বিভেদ)। কেননা সেখানে প্রভু পরমেশ্বর সারা পৃথিবীর ভাষায় বিভেদ সৃষ্টি করেছিলেন এবং সেখান থেকেই তিনি মানব-সন্তানদের সারা পৃথিবীতে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছিলেন।




শেম বংশের বিবরণ
10শেম-এর বংশ বৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ শেম-এর একশো বছর বয়সে, প্লাবনের দুই বছর পরে আরফাকষাদের জন্ম হল। 11আরফাকষাদের জন্মের পরে শেম আরও পাঁচশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্রকন্যার জন্ম দিলেন। 12আরফাকষাদের পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে শেলাহ্-এর জন্ম হল। 13শেলাহ্-এর জন্মের পর আরফাকষাদ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 14শেলাহ্-এর ত্রিশ বছর বয়সে এবেরের জন্ম হল। 15এবেরের জন্মের পর শেলাহ্ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 16এবেরের চৌত্রিশ বছর বয়সে পেলেগের জন্ম হল। 17পেলেগের জন্মের পর এবের চারশো ত্রিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 18পেলেগের ত্রিশ বছর বয়সে রেয়ুর জন্ম হল। 19রেয়ুর জন্মের পর পেলেগ দুশো নয় বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 20রেয়ুর বত্রিশ বছর বয়সে সেরুগের জন্ম হল। 21সেরুগের জন্মের পর রেয়ূ দুশো সাত বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 22সেরুগের ত্রিশ বছর বয়সে নাহোরের জন্ম হল। 23নাহোরের জন্মের পর সেরুগ দুশো বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন। 24নাহোরের উনত্রিশ বছর বয়সে তেরাহ্-এর জন্ম হল।
25তেরাহের জন্মের পর নাহোর একশো উনিশ বছর জীবিত থেকে আরও পুত্র কন্যার জন্ম দিলেন।
26তেরাহ্ সত্তর বছর বয়সে অব্রাম, নাহোর ও হারোণের জনক হলেন।

27তেরাহের বংশবৃত্তান্ত নিম্নরূপঃ তেরাহ্ ছিলেন অব্রাম, নাহোর ও হারোণের পিতা। 28হারোণ লোটের পিতা। কিন্তু হারোণ তাঁর পিতা তেরাহ্ জীবিত থাকতেই নিজ জন্মস্থান কলদীয়দের দেশে উর নামক স্থানে প্রাণত্যাগ করেন।

 29অব্রাম ও নাহোর উভয়েই বিবাহিত ছিলেন। অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী ও নাহোরের স্ত্রীর নাম ছিল মিলকা। এই স্ত্রী ছিলেন হারোণের কন্যা। 30হারোণ ছিলেন মিল্‌কা ও ইসকার পিতা। সারী ছিলেন বন্ধ্যা, তাঁর কোন সন্তান ছিল না।
 
31তেরাহ্ তাঁর পুত্র অব্রাম ও হারোণের পুত্র ও তাঁর পৌত্র লোট এবং পুত্রবধূ অব্রামের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কনান দেশে যাওয়ার জন্য কলদীয়দের দেশের উর নামক স্থান থেকে যাত্রা করলেন। কিন্তু তাঁরা হারাণ পর্যন্ত এসে সেখানেই বসতি স্থাপন করলেন। 32পরে দুশো পাঁচ বছর বয়সে হারাণেই তেরাহ্-র মৃত্যু হল।

আদি পুস্তকঃ১২ অধ্যায়

1প্রভু পরমেশ্বর অব্রামকে বললেন, তুমি নিজের দেশ, আত্মীয় স্বজন ও পৈতৃক নিবাস পরিত্যাগ করে আমি যে দেশ তোমাকে দেখাব সেই দেশে চল।প্রেরিত 7:2-3; হিব্রু 11:8

  2আমি তোমাকে মহান এক জাতির জনক করব এবং তোমাকে আশীর্বাদ করে তোমার নাম গৌরবান্বিত করব। 3আশীর্বাণী রূপে ব্যবহৃত হবে তোমার নাম। যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে তাদের আমি আশীর্বাদ করব, আর যারা তোমাকে অভিশাপ দেবে আমি তাকে করব শাপগ্রস্ত। আমি তোমাকে যেভাবে আশীর্বাদ করেছি, অনুরূপ আশীর্বাদ লাভের জন্য পৃথিবীর সকল জাতি বিনতি জানাবে।গালা 3:8
4প্রভু পরমেশ্বরের কথা অনুযায়ী অব্রাম যাত্রা করলেন। লোটও তাঁর সঙ্গে গেলেন। হারাণ থেকে যাত্রা করার সময় অব্রামের বয়স হয়েছিল পঁচাত্তর বছর। 5অব্রাম তাঁর স্ত্রী সারী, ভ্রাতুষ্পুত্র লোট ও হারাণে তাঁদের অর্জিত ধনসম্পদ এবং সংগৃহীত ক্রীতদাসদের সকলকে নিয়ে কনান দেশের দিকে যাত্রা করলেন এবং সেখানে গিয়ে পৌঁছালেন। 6সেই দেশে অব্রাম শেখেম নগরের তীর্থস্থান মোরের ওক বৃক্ষের কাছে উপস্থিত হলেন। সেই সময়ে কনানী জাতির লোকেরা সেই দেশে বাস করত। 7প্রভু পরমেশ্বর অব্রামের কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, তোমার বংশধরদের আমি এই দেশ দান করব। প্রভু পরমেশ্বরের আবির্ভাব সেখানে ঘটেছিল বলে অব্রাম সেখানে তাঁর উদ্দেশে একটি বেদী নির্মাণ করলেন।প্রেরিত 7:5; গালা 3:16
8পরে তিনি সেখান থেকে বেথেলের পূর্ব দিকে পার্বত্য অঞ্চলে গিয়ে পশ্চিমে বেথেল ও পূর্ব দিকে অয় নগরের মধ্যবর্তীস্থানে শিবির স্থাপন করলেন। তিনি সেখানেও প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে একটি বেদী প্রতিষ্ঠা করে তাঁর আরাধনা করলেন। 9পরে অব্রাম সেখান থেকে ক্রমশঃ কনানের দক্ষিণাংশ নেগেবের দিকে অগ্রসর হতে লাগলেন। 10কিছু দিন পরে সেই দেশে প্রবল দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে অব্রাম মিশর দেশে প্রবাসে চলে গেলেন।
মিশরে অব্রাম
11মিশরে প্রবেশ করার আগে অব্রাম তাঁর স্ত্রী সারীকে বললেন, নিঃসন্দেহে তুমি পরমা সুন্দরী। 12মিশরবাসীরা তোমাকে দেখলে তুমি আমার স্ত্রী বলেই আমাকে হত্যা করবে, কিন্তু তোমাকে তারা জীবিত রাখবে।
 13তাই তুমি বলো যে তুমি আমার বোন, তাহলে তারা আমার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে ও তোমার খাতিরে আমার প্রাণ রক্ষা হবে।আদি 20:2; 26:7 14অব্রাম মিশরে প্রবেশ করলে মিশরবাসীরা দেখল সারী পরমাসুন্দরী।
15ফারাও-এর অমাত্যবৃন্দ তাঁকে দেখে ফারাও-এর কাছে তাঁর প্রশংসা করলেন তখন সারীকে ফারাও-এর প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হল এবং 16তাঁর খাতিরে ফারাও অব্রামকে আদর আপ্যায়ন করলেন। অব্রাম তাঁর কাছ থেকে পেলেন ভেড়া, বলদ, গর্দভ-গর্দভী, দাসদাসী এবং উটের পাল। 17কিন্তু অব্রামের স্ত্রী সারীকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করার অপরাধে প্রভু পরমেশ্বর ফারাও এবং তাঁর পরিজনদের কঠিন ব্যধিতে আক্রান্ত করলেন। 18ফারাও তখন অব্রামকে ডেকে এনে বললেন, আপনি আমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করলেন কেন? উনি যে আপনার স্ত্রী সে কথা কেন বলেন নি? 19আপনার বোন বলে ওঁর পরিচয় কেন দিলেন? সেই জন্যই তো আমি ওঁকে পত্নীরূপে গ্রহণ করেছিলাম। আপনি এখনই আপনার স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান। 20ফারাও তাঁর লোকজনকে অব্রাম সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন এবং তারা অব্রামকে তাঁর স্ত্রী ও সমস্ত ধনসম্পদসহ বিদায় দিল।

আদপুস্তক ২: ৭-২৫

 
5প্রভু পরমেশ্বর যখন আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন তখন পৃথিবীতে কোন উদ্ভিদ ছিল না, প্রান্তরে তখনও উৎপন্ন হয়নি কোন তৃণলতা কারণ প্রভু পরমেশ্বর তখনও পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত করেননি এবং 6কৃষিকর্ম করার জন্য কোন মানুষও তখন ছিল না । ভূগর্ভ থেকে উৎসারিত জলধারায় সিঞ্চিত হত সমগ্র ধরাতল।  
 
7প্রভু পরমেশ্বর তখন মাটি দিয়ে মানুষ2:7 মানুষ : ‘মানুষ’ ও ‘মাটি’- এই শব্দ দুটির অর্থবোধক হিব্রু শব্দ ‘আদাম’ ও ‘আদামা’ এবং ‘নর’ ও ‘নারী’ যথাক্রমে হিব্রু= ‘ঈশ’ ও ‘ঈশা’। গড়লেন এবং তার নাসিকায় আপন প্রশ্বাসে প্রাণবায়ু সঞ্চারিত করলেন । তখন মানুষ পরিণত হল এক সজীব সত্তায়।১ করি 15:45
 
8তারপর প্রভু পরমেশ্বর পূর্বদিকে, এদনে এক উদ্যান রচনা করে সেখানে তাঁর সৃষ্ট মানুষকে রাখলেন । 9প্রভু পরমেশ্বর ধরাপৃষ্ঠে সর্বপ্রকার সুখাদ্য উৎপাদক সুদৃশ্য বৃক্ষরাজি উৎপন্ন করলেন । সেই উদ্যানের মাঝখানে সৃষ্টি করলেন জীবন বৃক্ষ এবং সৎ ও অসৎ জ্ঞানদায়ী বৃক্ষ।প্রকা 2:7; 22:2,14 10উদ্যানে জলসেচের জন্য এদন থেকে প্রবাহিত হল একটি নদী সেখান থেকে বেরিয়ে সেই নদী চারটি ধারায় ভাগ হয়ে গেল । 11প্রথম নদীটির নাম পীশোন, এটি সমগ্র হবীলা দেশ বেষ্টন করে প্রবাহিত । এখানে সোনা পাওয়া যায় । 12এই দেশের সোনা উৎকৃষ্ট এবং এখানে গুগগুল ও গোমেদ মণি পাওয়া যায় । 13দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন, এটি সমগ্র কুশ দেশ বেষ্টন করে প্রবাহিত। 14তৃতীয় নদীর নাম হিদ্দেকল, (টাইগ্রিস) এটি আসিরিয়া দেশের পূর্বদিক দিয়ে প্রবাহিত। চতুর্থ নদীটির নাম ফরাৎ (ইউফ্রেটিস)।
 
15প্রভু পরমেশ্বর মানুষকে এদন উদ্যানে কৃষিকর্ম ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত করলেন। 16প্রভু পরমেশ্বর মানুষকে নির্দেশ দিলেন, তুমি এই উদ্যানের যে কোন ফল খেতে পার কিন্তু সৎ এবং অসৎ জ্ঞানদায়ী যে বৃক্ষটি রয়েছে, তার ফল খেও না। 17যেদিন সেই বৃক্ষের ফল তুমি খাবে, নিশ্চিত জেন, সেই দিনই হবে তোমার মৃত্যু। 18তারপর প্রভু পরমেশ্বর বললেন, মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তাকে তার যোগ্য এক সঙ্গিনী দেব।
19প্রভু পরমেশ্বর মৃত্তিকা থেকে ভূচর সকল পশু ও খেচর সকল পাখি সৃষ্টি করলেন এবং সেই মানুষটি2:19 মানুষটিঃ হিব্রু আদম শব্দের অর্থ মানুষ। প্রথম সৃষ্ট মানুষ এবং মানবজাতির আদি পিতার ব্যক্তিগত নাম হিসাবেও এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তাদের কি নাম রাখবেন, তা জানার জন্য তাদের তাঁর কাছে নিয়ে এলেন। তিনি যে প্রাণীর যে নাম রাখলেন, তার সেই নামই থাকল।
20তিনি প্রত্যেক গৃহপালিত পশু, পাখি ও বন্যপশুর নামকরণ করলেন কিন্তু মানুষের যোগ্য কোন সঙ্গিনী তাদের মধ্যে পাওয়া গেল না। 21তখন প্রভু পরমেশ্বর আদমকে ঘোর নিদ্রায় অভিভূত করলেন এবং নিদ্রিত অবস্থায় তাঁর পঞ্জর থেকে একখানি অস্থি খুলে নিয়ে মাংস দিয়ে সেই স্থান পূরণ করলেন। 22প্রভু পরমেশ্বর আদমের দেহ থেকে খুলে নেওয়া পঞ্জরাস্থি দ্বারা এক নারী সৃষ্টি করলেন এবং তাকে আদমের কাছে নিয়ে এলেন। 23আদম তখন বললেন,
এবার আমি পেলাম তাকে
যে আমার একান্ত আপন,
আমারই অস্থি থেকে যার উদ্ভব!
সম্ভূতা সে নরের সত্তা থেকে
নারী হবে তার নাম।
24এই কারণেই মানুষ তার পিতামাতাকে পরিত্যাগ করে স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয় এবং তারা দুজনে হয় একাঙ্গ।মথি 9:5; মার্ক 10:7-8; ১ করি 6:16; ইফি 5:31
25আদম ও তাঁর স্ত্রী ছিলেন উলঙ্গ। কিন্তু তখন তাঁদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না।

আদি পুস্তক : ৩

মানুষের অবাধ্যতা
 
1প্রভু পরমেশ্বরের সৃষ্ট ভূচর প্রাণীদের মধ্যে সর্প ছিল সবচেয়ে চতুর। সে নারীকে বলল, ঈশ্বর কি সত্যিই বলেছেন, ‘তোমরা এই উদ্যানের কোন ফল খেও না’?প্রকা 12:9; 20:2
 
2নারী সর্পকে বললেন, আমরা এই উদ্যানের সব গাছের ফল খেতে পারি, 3কিন্তু উদ্যানের মাঝখানে যে গাছ আছে, সেটি সম্পর্কে ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা তার ফল খাবে না, এমন কি ছোঁবেও না, তাহলে মরবে’।  
 
4সর্প নারীকে বলল, কক্ষণো মরবে না5ঈশ্বর জানেন, যেদিন তোমরা ঐ ফল খাবে, সেই দিনই তোমাদের চোখ খুলে যাবে এবং তোমরা সৎ ও অসৎ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করে ঈশ্বরের সমকক্ষ হবে ! 6নারী দেখলেন, বৃক্ষটি সুন্দর, ফলগুলিও লোভনীয় এবং জ্ঞানলাভের জন্য বাঞ্ছনীয়ও বটে। তিনি তখন ঐ গাছের ফল পেড়ে খেলেন এবং তাঁর স্বামীকেও দিলেন, আর তিনিও সেই ফল খেলন। 7তখন তাঁদের জ্ঞানোদয় হল। তাঁরা বুঝতে পারলেন যে তাঁরা উলঙ্গ। তাঁরা তখন ডুমুর গাছের পাতা জুড়ে নিজেদের আচ্ছাদন তৈরী করলেন।
 
8সেদিন সন্ধ্যায় প্রভু পরমেশ্বর উদ্যানে ভ্রমণ করছিলেন। তাঁর সাড়া পেয়ে তাঁরা গাছপালার আড়ালে লুকিয়ে পড়লেন। 9প্রভু পরমেশ্বর আদমকে ডেকে বললেন, তুমি কোথায়? 10আদম উত্তর দিলেন, উদ্যানে তোমার সাড়া পেয়ে আমি ভয়ে লুকিয়ে রয়েছি কারণ আমি উলঙ্গ। 11প্রভু পরমেশ্বর বললেন, তুমি যে উলঙ্গ সে কথা তোমাকে কে বলল? যে গাছের ফল খেতে আমি তোমাকে নিষেধ করেছিলাম, তুমি কি তার ফল খেয়েছ?  
 
12আদম বললেন, আমার সঙ্গিনীরূপে যে নারীকে তুমি দিয়েছ, সে-ই আমাকে ঐ গাছের ফল দিয়েছিল, তাই আমি খেয়েছি। 13তখন প্রভু পরমেশ্বর নারীকে বললেন, তুমি এ কি করেছ? নারী উত্তর দিলেন, সর্প আমাকে ভুলিয়েছিল, তাই আমি খেয়েছি।২ করি 11:3; ১ তিম 2:14
 
 
অবাধ্যতার ফল
14প্রভু পরমেশ্বর সর্পকে বললেন, তোমার এই কাজের জন্য গৃহপালিত ও বন্য প্রাণীকুলে, তুমিই হবে সর্বাধিক শাপগ্রস্ত। বুকে হাঁটবে তুমি, আজীবন ধূলিই হবে তোমার খাদ্য। 15তোমার ও নারীর মাঝে, তোমার বংশে ও নারীর বংশে আমি সৃষ্টি করব বিরোধ। সে তোমার মস্তক চূর্ণ করবে, আর তুমি দংশন করবে তার পাদমূলে।প্রকা 12:17
16নারীকে তিনি বললেন, আমি তোমার গর্ভযন্ত্রণা অতিশয় বৃদ্ধি করব, বেদনার্ত হয়ে তুমি সন্তান প্রসব করবে। স্বামীর প্রতি থাকবে তোমার আসক্তি এবং সে তোমার উপরে করবে কর্তৃত্ব।
17আর আদমকে প্রভু পরমেশ্বর বললেলন, ঐ গাছের ফল খেতে আমি তোমায় নিষেধ করেছিলাম, আমার নিষেধ না শুনে তুমি তোমার স্ত্রীর কথায সেই গাছের ফল খেয়েছ। সেইহেতু, তোমার পক্ষে ভূমি হল অভিশপ্ত, আজীবন কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে তোমাকে ভোগ করতে হবে এর ফসল।হিব্রু 6:8
18ভূমিতে তোমার জন্য হবে আগাছা আর কাঁটাঝোপ,
বুনো শাকসব্জী হবে তোমার খাদ্য।
19যতদিন না তুমি ফিরে যাবে মৃত্তিকা বক্ষে
ততদিন ঘর্মাক্ত কলেবরে তোমাকে করতে হবে অন্নসংস্থান।
মৃত্তিকা থেকে তোমার উৎপত্তি, ধূলিমাত্র তুমি,
ধূলিতেই করবে প্রত্যাবর্তন। পরে আদম তাঁর স্ত্রীর নাম রাখলেন হবা3:19 হবা- হিব্রু মূল শব্দ। এর অর্থ = অস্তিত্ব বা সত্তা ভূ ধাতু = হওয়া।
20কেননা তিনিই হলেন জীবিত সকল মানুষের মাতা। 21প্রভু পরমেশ্বর আদম ও তাঁর স্ত্রীর জন্য চামড়ার পোষাক তৈরী করে তাঁদের পরতে দিলেন।
এদন উদ্যান থেকে বহিষ্কার
22প্রভু পরমেশ্বর বললেন, মানুষ এখন শুভাশুভ জ্ঞান লাভ করে আমাদের মতই হয়েছে। এবার হয়তো কোনদিন সে জীবনবৃক্ষের দিকেও হাত বাড়াবে, তার ফল পেড়ে খাবে আর চিরজীবী হবে।প্রকা 22:14 23তাই প্রভু পরমেশ্বর আদমকে এদনের উদ্যান থেকে বহিষ্কার করে দিলেন এবং যে মাটি থেকে তার উৎপত্তি সেই মাটিতেই তাকে কৃষি কাজে নিয়োগ করলেন। 24এই ভাবে ঈশ্বর মানুষকে বিতাড়িত করলেন এবং জীবনবৃক্ষের পথে পাহারা দেওয়ার জন্য এদন উদ্যানের পূর্বদিকে স্বর্গদূতদের3:24 হিব্রুঃ করূবদের নিযুক্ত করলেন ও চারিদিকে ঘূর্ণায়মান জ্বলন্ত এক খড়্গ স্থাপন করলেন।

লেবীয় ১৩:৪৫-৪৬

 
 
1প্রভু পরমেশ্বর মোশি ও হারোণকে বললেন, 2যদি কোন ব্যক্তির গাত্রচর্মে কোন স্ফীতি, উদ্ভেদ বা কোন দাগ দেখা দেয় এবং তা তার দেহে কুষ্ঠরোগের মত দাগ সৃষ্টি করে তাহলে সেই ব্যক্তিকে পুরোহিত হারোণ কিম্বা তার পুরোহিত-পুত্রদের কারও কাছে নিয়ে যেতে হবে। 3পুরোহিত তার দেহের সেই দাগ পরীক্ষা করে দেখবে। যদি আক্রান্ত স্থানের লোম সাদা হয় এবং সেই দাগ গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর হয় তাহলে তা কুষ্ঠক্ষত। পুরোহিত তা দেখার পর সেই ব্যক্তিকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে।
4তার শরীরে দাগ যদি সাদা হয় কিন্তু গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর না হয় এবং ক্ষতস্থানের লোম যদি সাদা না হয়ে থাকে তাহলে সেই চর্মরোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 5সপ্তম দিনে পুরোহিত তাকে আবার পরীক্ষা করবে। যদি সে দেখে যে ক্ষত একই রকম আছে, গাত্রচর্মে ছড়িয়ে পড়েনি, তাহলে পুরোহিত তাকে আরও সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 6সপ্তম দিনে পুরোহিত তাকে আবার পরীক্ষা করে দেখবে। যদি আক্রান্ত স্থান বিবর্ণ হয় এবং গাত্রচর্মের ক্ষত আর ছড়িয়ে না পড়ে, তাহলে পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে। সেই ক্ষত একপ্রকার উদ্ভেদ মাত্র। সেই ব্যক্তি তার পরিধেয় বস্ত্র ধুয়ে ফেলার পর শুচি হবে। 7কিন্তু শুচিকরণের জন্য পুরোহিতকে দেখানোর পর যদি তার দেহে সেই উদ্ভেদ বিস্তার লাভ করে তাহলে আবার তাকে পুরোহিতের দ্বারা পরীক্ষা করাতে হবে। 8পুরোহিত পরীক্ষা করে যদি দেখে সেই উদ্ভেদ তার দেহে বিস্তার লাভ করেছে তাহলে সে তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে। সেই উদ্ভেদ কুষ্ঠরোগের। 9কোন ব্যক্তির দেহে কুষ্ঠরোগের মত দাগ হলে তাকে পুরোহিতের কাছে নিয়ে যেতে হবে। 10পুরোহিত তাকে পরীক্ষা করে দেখবে। যদি তার গাত্রচর্মের কোন স্থান স্ফীত ও শ্বেতবর্ণ হয়ে থাকে এবং সেখানকার লোম সাদা হয় ও স্ফীত স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে, 11তবে তা হচ্ছে তার দেহের পুরাতন চর্মরোগ। পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে কিন্তু পৃথক করবে না, কারণ সে অশুচি। 12সারা দেহে চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়লে, পুরোহিত যদি দেখে যে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মাথা থেকে পা পর্যন্ত চর্মরোগ ছেয়ে গেছে, 13তাহলে পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে। তার সর্বাঙ্গই সাদা, তাই সে শুচি। 14কিন্তু তার দেহে ক্ষত সৃষ্টি হলে সে অশুচি হবে। 15পুরোহিত তার ক্ষত পরীক্ষা করে তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে। সেই ক্ষত অশুচি কারণ তা কুষ্ঠ। 16সেই ক্ষত ভাল হয়ে আবার যদি সাদা হয়ে যায়, তখন তাকে পুরোহিতদের কাছে যেতে হবে। পুরোহিত তাকে পরীক্ষা করে দেখবে। 17যদি তার ক্ষত সাদা হয়ে থাকে তবে পুরোহিত সেই রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে শুচি বলে ঘোষণা করবে । সেই ব্যক্তি শুচি।
18দেহের কোথাও ফোড়া হয়ে ভাল হয়ে যাওয়ার পর যদি ফোড়ার জায়গায় সাদা কোন স্ফীতি কিম্বা সাদা বা গোলাপী রং-এর দাগ হয়, 19তবে পুরোহিতকে তা দেখাতে হবে। 20পুরোহিত তা পরীক্ষা করে দেখবে, যদি আক্রান্ত স্থান গাত্রচর্মের থেকে গভীর হয়ে থাকে এবং সেখানকার লোম সাদা হয় তবে পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে। তা ফোড়া থেকে জাত কুষ্ঠ ব্যাধি। 21কিন্তু পুরোহিত যদি আক্রান্ত স্থানে লোম না দেখে এবং গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর মনে না হয় এবং যদি সেই দাগ বিবর্ণ হয় তাহলে পুরোহিত তাকে সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 22সেই দাগ যদি ছড়িয়ে না পড়ে, তাহলে পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে, কারণ সেটি ক্ষত। 23কিন্তু যদি সেই দাগ একই জায়গায় সীমিত থাকে, ছড়িয়ে না পড়ে তবে তা ফোড়ার দাগ। পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে।
24যদি কারও দেহ আগুনে পুড়ে যায় এবং পোড়া জায়গার ক্ষতে সাদা কিম্বা গোলাপী দাগ হয় তবে পুরোহিত তা পরীক্ষা করে দেখবে। 25সেই জায়গার লোম যদি সাদা হয় এবং দাগ যদি গাত্রচর্ম থেকে গভীর হয় তবে তা অগ্নিদাহ থেকে উদ্ভূত কুষ্ঠব্যাধি। অতএব পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে, কারণ তা কুষ্ঠরোগের ক্ষত। 26কিন্তু পুরোহিত যদি দেখে সেই জায়গার লোম সাদা নয় ও দাগ গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর নয়, কিন্তু বিবর্ণ তাহলে পুরোহিত তাকে সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 27সপ্তম দিনে পুরোহিত তাকে আবার পরীক্ষা করবে, যদি ঐ দাগ বেড়ে যায় তাহলে পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে, কারণ তা কুষ্ঠরোগের ক্ষত। 28যদি দাগ যেমন ছিল তেমনই থাকে, বেড়ে না যায়, কিন্তু বিবর্ণ হয়, তাহলে তা দগ্ধস্থানের, স্ফীতি মাত্র। পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে। কারণ তা আগুনে পোড়া ক্ষতের দাগ।
29কোন পুরুষ বা নারীর মাথায় অথবা চিবুকে ক্ষত হলে পুরোহিত সেই ক্ষত পরীক্ষা করবে। 30যদি তা গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর হয় এবং তার উপরে মামড়ি ও হলুদ রঙের লোম থাকে তাহলে পুরোহিত তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে। কারণ তা মাথা ও চিবুকের চর্মরোগ। 31পুরোহিত সেই ক্ষত পরীক্ষা করে যদি দেখে তা গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর নয় এবং তার উপরে কালো রঙের লোম না থাকে তাহলে পুরোহিত তাকে সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 32পরে সপ্তম দিনে পুরোহিত আবার সেই ক্ষত পরীক্ষা করবে। যদি সেই ক্ষত না বাড়ে ও তাতে হলুদ লোম না গজায় এবং সেই ক্ষত গাত্রচর্মের চেয়ে গভীর না হয়, 33তবে তাকে চুল ও দাড়ি কামিয়ে ফেলতে হবে, কিন্তু ক্ষতস্থান কামানো চলবে না। তারপর পুরোহিত সেই ক্ষতদুষ্ট ব্যক্তিকে আরও সাতদিন পৃথক করে রাখবে। 34সপ্তম দিনে পুরোহিত সেই ক্ষত আবার পরীক্ষা করবে। যদি সেই ক্ষত আর না বাড়ে ও গাত্রচর্মের থেকে গভীর না হয় তাহলে পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে এবং সেই ব্যক্তি তার পরণের কাপড়চোপড় ধুয়ে ফেলে শুচি হবে। 35কিন্তু শুচি হওয়ার পর যদি তার দেহে সেই ক্ষত ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পুরোহিত তাকে পরীক্ষা করবে। 36যদি তার ক্ষত বেড়ে গিয়ে থাকে, তাহলে পুরোহিতকে আর হলুদ লোম খুঁজে দেখতে হবে না। সেই ব্যক্তি অশুচি হয়েছে। 37কিন্তু পুরোহিত যদি দেখে ক্ষত আর বাড়েনি বরং তার উপরে কালো লোম গজিয়েছে তাহলে বুঝতে হবে ক্ষত আরোগ্য হয়েছে এবং সে শুচি হয়েছে। পুরোহিত তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে।
38যদি কোন পুরুষ বা নারীর দেহের বিভিন্ন স্থানে দাগ হয়, অর্থাৎ, সাদা দাগ দেখা দেয় তাহলে পুরোহিত তা পরীক্ষা করে দেখবে। 39যদি চামড়ার উপরকার দাগ বিবর্ণ সাদা হয় তবে তা চামড়ার উপরে নির্দোষ ছুলির দাগ। সে শুচি।
40যদি কোন ব্যক্তির মাথায় চুল উঠে যায়, তবে তাকে অশুচি বলা যাবে না। 41যদি কোন ব্যক্তির মাথার সামনের বা পিছনের দিকের চুল উঠে যায়, সেটি তার মস্তকের কেশহীনতা মাত্র। সে শুচি। 42কিন্তু যদি মাথা বা কপালে গোলাপী কিম্বা সাদা দাগ হয় তবে বুঝতে হবে সেটি মাথার বা কপালের কুষ্ঠ। 43পুরোহিত তাকে পরীক্ষা করবে। যদি গাত্রচর্মের কুষ্ঠের মত টাক পড়া মাথার কিম্বা কপালে গোলাপী বা সাদা ক্ষত হয়, তবে সে কুষ্ঠরোগগ্রস্ত, অশুচি। 44পুরোহিত তাকে অবশ্যই অশুচি বলে ঘোষণা করবে, কারণ তার মাথায় কুষ্ঠ হয়েছে। 
 
 45কুষ্ঠব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তির পরণে ছিন্নবসন থাকবে এবং তার মাথার চুল অবিন্যস্ত থাকবে। সে তার ওষ্ঠ আবৃত করে রাখবে এবং ‘ অশুচি, অশুচি’ বলে চীৎকার করবে। 46যতদিন তার দেহে ক্ষত থাকবে ততদিন সে অশৌচ অবস্থায় থাকবে, কারণ সে অশুচি। সে একা থাকবে এবং লোকালয়ের বাইরে তাকে বাস করতে হবে।
 
47কোন পশম বা রেশমী বস্ত্রে যদি সাদা ছোপ বা দাগ পড়ে, 48পশম কিম্বা রেশম নির্মিত বস্ত্রের টানা কিম্বা পোড়েনে, অথবা চামড়ায় বা চামড়ার তৈরী কোন দ্রব্যে এই রকম দাগ হয়, 49কাপড়ের টানা কিম্বা পোড়েনে, কিম্বা চামড়ার তৈরী কোন জিনিষে যদি ফিকে সবুজ বা লাল কোন দাগ হয় তবে সেটি হবে ছত্রাকের13:49 ছত্রাক: হিব্রু ভাষায় ‘কুষ্ঠরোগ’ শব্দটির জন্যও একই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আক্রমণ। পুরোহিতকে তা দেখাতে হবে। 50পুরোহিত সেই দাগ পরীক্ষা করে দেখবে এবং সেই বস্তুটি সাতদিন আটক করে রাখবে। 51সপ্তম দিনে পুরোহিত আবার সেই বস্তুটি পরীক্ষা করবে। যদি বস্তুটির টানা কিম্বা পোড়েনে, কিম্বা চামড়া ও চামড়ার তৈরী কোন জিনিসের দাগ বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে তা মারাত্মক ধরণের ছত্রাক। সেই বস্তু অশুচি। 52অতএব পশম কিম্বা রেশমী সুতোয় তৈরী কোন বস্ত্রের টানা কিম্বা পোড়েনে, অথবা চামড়ার তৈরী কোন দ্রব্যে যদি এই রকম কোন দাগ হয় তবে পুরোহিত তা পুড়িয়ে ফেলবে। কারণ তা মারাত্মক ছত্রাক রোগে আক্রান্ত। সেটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। 53কিন্তু পুরোহিত যদি পরীক্ষা করে দেখে বস্ত্রের টানা কিম্বা পোড়েনে বা চামড়ার তৈরী কোন দ্রব্যের সেই দাগ আর ছড়িয়ে পড়ে নি, 54তাহলে পুরোহিত সেই জিনিষটা ধুয়ে ফেলার নির্দেশ দেবে এবং আর‍ও সাতদিন তা আলাদা করে রাখবে। 55বস্তুটি ধোয়ার পর পুরোহিত আবার সেই দাগ পরীক্ষা করে দেখবে, যদি সেই দাগের বং বদলে না যায়, তাহলে দাগ বেড়ে না গেলেও বুঝতে হবে তা অশুচি। সেই দাগ বস্তুটির সোজা বা উল্টো-যেদিকেই হোক না কেন, তোমরা সেটি পুড়িয়ে ফেলবে। 56কিন্তু ধোয়ার পর পুরোহিত যদি দেখে সেই দাগ বিবর্ণ হয়েছে, তাহলে সে ঐ বস্ত্রের টানা বা পোড়েন থেকে কিম্বা চামড়া থেকে ঐ অংশটুকু ছিঁড়ে ফেলবে। 57তার পরেও যদি সেই বস্ত্রের টানা কিম্বা পোড়েনে বা চামড়ার তৈরী কোন জিনিসে ঐ দাগ আবার দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে তা সংক্রামক ছত্রাক। এই রকম দাগ যা কিছুতে থাকবে, সেসব পুড়িয়ে ফেলবে। 58আর যে বস্ত্র কিম্বা যে বস্ত্রের টানা কিম্বা পোড়েনে অথবা চামড়ার কোন দ্রব্য ধোয়ার পর যদি সেই দাগ উঠে যায় তাহলে দ্বিতীয়বার সেই বস্তুটি ধুয়ে ফেলবে, তখন সেটি শুচি হবে। 59পশম কিম্বা রেশমী সুতোয় তৈরী বস্ত্রের টানা ও পোড়েনে অথবা চামড়ার তৈরী কোন পাত্রের ছত্রাক এবং শৌচাশৌচ নির্ধারণের জন্য এই বিধি দেওয়া হল।

গণনা পুস্তক ১৮: ১-৭

গণনা পুস্তক ১৮: ১-৭


পুরোহিত ও লেবীয়দের দায়িত্ব ও আচরণ বিধি
 
1প্রভু পরমেশ্বর হারোণকে বললেন, তুমি, তোমার পুত্রেরা এবং তোমার পিতৃকুলের লোকজন সকলে মিলে পবিত্র পীঠস্থানের দোষত্রুটির দায়দায়িত্ব বহন করবে এবং তুমি ও তোমার পুত্রেরা পৌরোহিত্যের ত্রুটির জন্য দায়ী হবে।
 
 2যে শিবিরে চুক্তিসিন্দুক থাকে তার সম্মুখে তুমি ও তোমার পুত্রেরা যখন যাবে তখন লেবীয়দের, পিতৃকুল সম্পর্কে যারা তোমার জ্ঞাতি, তাদের সঙ্গে নেবে। পরিচর্যার কাজে তারা তোমাকে সাহায্য করবে।  
 
3তারা তোমার নির্দেশ পালনের জন্য প্রস্তুত থাকবে এবং শিবিরের অন্যান্য করণীয় কাজ করবে। কিন্তু তারা পবিত্র স্থানের তৈজসপত্রের কাছে কিম্বা বেদীর কাছে যাবে না, তাহলে তারা এবং সেইসঙ্গে তুমিও মারা পড়বে।
 
 4তারা তোমার সঙ্গে থেকে সম্মিলন শিবিরের যাবতীয় কাজকর্ম করবে। অনধিকারী কোন লোক তোমাদের কাছে যাবে না। 5তার জন্য তোমরা নিজেরাই পবিত্রস্থানের ও বেদীর যাবতীয় কাজকর্ম করবে যেন ইসরায়েলীদের প্রতি পুনরায় এইভাবে রোষ বর্ধিত না হয়।  
 
6ইসরায়েলীদের মধ্যে থেকে আমি তোমাদের জ্ঞাতি লেবীয়দের গ্রহণ করেছি। সম্মিলন শিবিরের পরিচর্যার জন্য তারা তোমাদের পক্ষে প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে নিবেদিত অর্ঘ্য।  
 
7কিন্তু বেদীমূলে ও পর্দার অভ্যন্তরে পুরোহিতরূপে তোমাদের করণীয় যা কিছু আছে, তা শুধু তুমি ও তোমার পুত্রেরাই করবে। এ দায়িত্ব তোমাদের। এই পৌরোহিত্যের অধিকার আমি তোমাদের উপহার স্বরূপ দিয়েছি। অনধিকারী কোন লোক এই কাজ করতে গেলে তার মৃত্যুদণ্ড হবে।
 
8প্রভু পরমেশ্বর হারোণকে বললেন, দেখ, আমি আমার উদ্দেশে ইসরায়েলীদের নিবেদিত সমস্ত পবিত্র অর্ঘ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তোমাকে দিলাম। এ সবই তোমার ও তোমার সন্তানদের প্রাপ্য অংশ হিসাবে চিরস্থায়ী স্বত্বে তোমাদের দান করলাম। 9হোমের জন্য নির্দিষ্ট মহাপবিত্র নৈবেদ্যের যে অংশ তোমার প্রাপ্য, তা হচ্ছে এই: আমার উদ্দেশে ইসরায়েলীদের স্বেচ্ছায় নিবেদিত সমস্ত অর্ঘ্য, সর্বপ্রকার ভক্ষ্য নৈবেদ্য, প্রায়শ্চিত্ত ও অপরাধমোচনের বলি। এ সমস্তই তুমি ও তোমার সন্তানেরা মহাপবিত্র বলে গণ্য করবে। 10মহাপবিত্র বস্তু জ্ঞানে তুমি তা ভক্ষণ করবে, পুরুষেরাই শুধু সেগুলি ভক্ষণ করতে পারবে এবং তুমি এই সমস্ত দ্রব্য পবিত্র বলে গণ্য করবে।
11আর এ গুলিও হবে তোমার প্রাপ্য: ইসরায়েলীরা আমার উদ্দেশে যে বিশেষ অর্ঘ্য নিবেদন করবে, সবই হবে তোমার। সে সবই আমি তোমাকে ও তোমার পুত্রকন্যাদের চিরকালীন প্রাপ্য স্বরূপ দিলাম। তোমার পরিবারের সকল শুচি ব্যক্তিই তা ভক্ষণ করতে পারবে।
12ইসরয়েলীরা প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে তাদের তেল, দ্রাক্ষারস ও শস্যের যে সেরা অংশ দান করে তা সবই আমি তোমাকে দিলাম। 13তাদের দেশে উৎপন্ন সব রকম ফলের অগ্রিমাংশ যা তারা প্রভু পরমেশ্বরের সম্মুখে নিয়ে আসে, তা সবই হবে তোমার পরিবারের শুচি ব্যক্তিরা তা গ্রহণ করতে পারবে। 14ইসরায়েলীরা প্রভুর উদ্দেশে একান্তভাবে যে সব বস্তু উৎসর্গ করবে, সবই হবে তোমার।লেবীয় 27:28 15মানুষের হোক বা পশুরাই হোক প্রথম গর্ভের সন্তান বলে যাদের প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে, তারাও হবে তোমার। কিন্তু মানুষের প্রথম সন্তানকে তুমি অবশ্যই পণের বিনিময়ে মুক্তি দেবে। অশুচি পশুর প্রথম গর্ভজাত শাবককেও তুমি পণের বিনিময়ে মুক্তি দেবে। 16একমাস বয়স হলে তুমি সেটিকে পবিত্র পীঠস্থানের শেকেলের মান অনুযায়ী পাঁচ শেকেল রূপোর বিনিময়ে মুক্তি দেবে। (বিশ গেরায় এক শেকেল হয়।) 17কিন্তু গরু ভেড়া কিংবা ছাগলের প্রথম গর্ভজাত শাবককে তুমি পণের বিনিময়ে মুক্তি দেবে না, সেগুলি শুচি। তুমি তাদের রক্ত বেদীর উপরে ছিটিয়ে দেবে এবং তাদের মেদ প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে সুরভি নৈবেদ্যরূপে হোমানলে আহুতি দেবে। 18কিন্তু আমার উদ্দেশে নিবেদিত পাঁজর এবং ডান পা যেমন তোমার প্রাপ্য তেমনই এ গুলির মাংসও হবে তোমাদের প্রাপ্য। 19ইসরায়েলীরা প্রভু পরমেশ্বরের সম্মুখে যে সব বস্তু পবিত্র অর্ঘ্যরূপে বিশেষভাবে নিবেদন করে, তা সবই আমি তোমাকে ও তোমার পুত্রকন্যাদের চিরকালীন প্রাপ্য সরূপ দান করলাম। লবণ সংক্রান্ত বিধি অনুসারে প্রভু পরমেশ্বরের সঙ্গে তোমার ও তোমার বংশধরদের যে সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এ-ই হবে তার চিরস্থায়ী শর্ত। 20প্রভু পরমেশ্বর হারোণকে আরও বললেন, ইসরায়েলীদের ভূসম্পত্তিতে তোমার কোন অধিকার থাকবে না, তাদের সম্পত্তির কোন অংশ তুমি পাবে না। ইসরায়েল কুলে আমিই তোমার অংশ ও উত্তরাধিকার।

যাত্রা পুস্তক ৩২: ১-৬

1পাহাড় থেকে মোশির নেমে আসতে দেরী হচ্ছে দেখে ইসরায়েলীরা জোট বেঁধে হারোণের কাছে গিয়ে বলল, আপনি আমাদের জন্য একজন দেবতা তৈরী করে দিন, যিনি আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবেন, কারণ মোশি, যিনি আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁর কি হয়েছে আমরা জানি না।প্রেরিত 7:40 2হারোণ তাদের বললেন, তোমাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের কানে যে সোনার মাকড়িগুলো রয়েছে সেগুলি খুলে আমার কাছে নিয়ে এস। 3ইসরায়েলীরা সকলেই তখন সোনার মাকড়িগুলো খুলে হারোণের কাছে নিয়ে এল। 4তিনি তাদের কাছ থেকে ঐগুলো নিয়ে ছাঁচে ঢালাই করে, একটি সোনার গোবৎস তৈরী করলেন। লোকে তখন বলতে লাগল, হে ইসরায়েলকুল! ইনিই হচ্ছেন তোমাদের দেবতা যিনি মিশর থেকে উদ্ধার করে এনেছেন।১ রাজা 12:28; প্রেরিত 7:41 5এই সব দেখে হারোণ সেই মূর্তির সামনে একটি বেদী নির্মাণ করে দিলেন এবং ঘোষণা করলেন, আগামী কাল প্রভু পরমেশ্বরের সম্মানে উৎসব হবে।
 6পরের দিন ইসরায়েলীরা ভোরে উঠে হোম, স্বস্ত্যয়ন ও বলি উৎসর্গ করল। তারপর তারা পানাহার ও উচ্ছৃঙ্খল আনন্দে উন্মত্ত হয়ে উঠল।১ করি 10:7
7প্রভু পরমেশ্বর তখন মোশিকে বললেন, তুমি শীঘ্র ফিরে যাও, তুমি যাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে এনেছ তারা দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়েছে। 8এই অল্প সময়ের মধ্যেই তারা আমার নির্দেশিত পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে। তারা ছাঁচে ঢালাই করে একটি গোবৎসের প্রতিমূর্তি নির্মাণ করে পূজা করেছে ও তার কাছে বলি উৎসর্গ করেছে। তারা বলেছে, হে ইসরায়েলকুল! ইনিই হচ্ছেন তোমাদের দেবতা যিনি মিশর থেকে তোমাদের উদ্ধার করে এনেছেন। 9প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, আমি এই লোকদের চিনি, এরা অত্যন্ত অবাধ্য এক জাতি 10সুতরাং তুমি বাধা দিও না, ওদের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ এখন প্রজ্বলিত হবে, ওদের আমি ধ্বংস করব, কিন্তু তোমাকে ভিত্তি করে আমি উৎপন্ন করব মহান এক জাতি।
11মোশি তখন তাঁর আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বরের কাছে বিনতি করে বললেন, মহাপরাক্রম ও বাহুবলে যে প্রজাদের তুমি মিশর থেকে উদ্ধার করে এনেছ, তাদের বিরুদ্ধে কেন প্রজ্বলিত হবে তোমার ক্রোধ?গণনা 14:13-19 12মিশরীরা কেন একথা বলার সুযোগ পাবে যে ওদের অনিষ্ট করার জন্য, পার্বত্য অঞ্চলে এনে ওদের ধ্বংস করার জন্য, ধরাপৃষ্ঠ থেকে ওদের বিলুপ্ত করার অসৎ উদ্দেশে প্রভু পরমেশ্বর ওদের বার করে এনেছিলেন? তোমার ভয়ঙ্কর ক্রোধ সংবরণ কর প্রভু পরমেশ্বর। তোমার প্রজাদের অনিষ্ট করার সঙ্কল্প পরিবর্তন কর। 13তোমার দাস অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও ইসরায়েলের কথা স্মরণ কর। তাঁদের তুমি নিজ নামে শপথ করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে, আকাশের নক্ষত্ররাজির মত তুমি তাঁদের বংশবৃদ্ধি করবে। তাঁদের বংশধরদের তুমি তোমার প্রতিশ্রুত এই দেশ দেবে। এই দেশে তাদের স্বত্বাধিকার হবে চিরস্থায়ী।আদি 22:16-17; 17:8 14এই কথার পর প্রভু পরমেশ্বর তাঁর সঙ্কল্প পরিবর্তন করলেন। তাঁর প্রজাদের অনিষ্ট সাধন থেকে নিবৃত্ত হলেন। 15মোশি তখন বিদায় নিলেন এবং দশ অনুশাসন খোদিত প্রস্তর ফলক দুটি সঙ্গে নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে এলেন। প্রস্তর ফলক দুটির সামনে ও পিছনে দুদিকেই লেখা ছিল। 16ঈশ্বর স্বয়ং এই ফলক দুটি তৈরী করেছিলেন এবং এগুলির উপরে উৎকীর্ণ ছিল তাঁরই হস্তাক্ষর।
17যিহোশূয় জনতার চীৎকার ও হৈ চৈ শুনে মোশিকে বললেন, শিবিরে যুদ্ধের কোলাহল শোনা যাচ্ছে। 18কিন্তু মোশি বললেনঃ
এ তো নয় বীরের রণহুঙ্কার,
কিম্বা পরাজিতের আর্তনাদ,
আমি যে শুনছি সঙ্গীতের সুললিত তান!
19শিবিরের কাছাকাছি এসে মোশি সেই গোবৎসের মূর্তি ও তার সামনে ইসরায়েলীদের উদ্দাম নৃত্য দেখতে পেলেন। এই দেখে তিনি প্রচণ্ড ক্রোধে হাতের ফলক দুটি ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। পাহাড়তলিতে পড়ে সে দুটি ভেঙ্গে গেল। 20তারপর মোশি তাদের গোবৎসের মূর্তিটি নিয়ে আগুণে গলিয়ে, ভেঙ্গে গুঁড়ো করে জলের উপর ছড়িয়ে দিলেন। তারপর সেই জল তিনি ইসরায়েলীদের সকলকে খাওয়ালেন।
21তিনি হারোণকে জিজ্ঞাসা করলেন, এই লোকগুলি তোমার কি করেছিল যে তুমি তাদের এই মহাপাপে লিপ্ত করলে? 22হারোণ বললেন, তুমি আমার উপর রাগ করো না, তুমি তো জান এদের প্রবৃত্তি কত খারাপ! 23এরা আমাকে বলল, আমাদের পরিচালনা করার জন্য একজন দেবতা তৈরী করে দিন, কারণ মিশর থেকে যিনি আমাদের উদ্ধার করে এনেছিলেন সেই মোশির খবর আমরা কিছুই জানি না। 24আমি তাদের বললাম, তোমাদের মধ্যে যার যা সোনাদানা আছে, এনে আমাকে দাও। তারা সেগুলি আমাকে এনে দিলে আমি সেসব আগুনে গলিয়ে এই গোবৎসের মূর্তিটি তৈরী করে দিলাম।
25মোশি দেখলেন ইসরায়েলীরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে গেছে। শত্রুপরিবেষ্টিত পরিবেশে হারোণই তাদের এই স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। 26তিনি তখন শিবির সন্নিবেশের প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে বললেন, প্রভু পরমেশ্বরের পক্ষে যারা আছ তারা আমার কাছে এস। তখন লেবির বংশধরেরা সকলে এসে তাঁর পাশে দাঁড়াল।  

27তিনি তাঁদের বললেন, ইসরায়েলের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বরের আদেশ এই: তোমরা সকলে তরবারি হাতে শিবির সন্নিবেশের মধ্যে গিয়ে প্রত্যেকটি শিবির আক্রমণ কর এবং তোমাদের ভাই, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের হত্যা কর। 28লেবির বংশধরেরা মোশির নির্দেশ পালন করল। ফলে সেদিন প্রায় তিন হাজার লোক নিহত হল।  

29মোশি তাদের বললেন, তোমরা আজ নিজেদের সন্তান ও ভাইদের বিপক্ষে গিয়ে প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে নিজেদের সম্পূর্ণ ভাবে উৎসর্গ করেছ। এই জন্য প্রভু পরমেশ্বর আজ তোমাদের আশীর্বাদ করবেন।
 
30পরের দিন মোশি ইসরায়েলীদের বললেন, তোমরা মহাপাপ করেছ। তবে আমি এখন প্রভু পরমেশ্বরের কাছে যাব এবং হয়তো তোমাদের পাপের ক্ষমা চেযে নিতে পারব। 31মোশি প্রভু পরমেশ্বরের কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, এই লোকেরা মহাপাপ করেছে। তারা সোনার বিগ্রহ তৈরী করেছে।  

32কিন্তু হে প্রভু, তুমি এদের ক্ষমা কর। যদি না কর তাহলে দয়া করে তোমার লেখা পুস্তক থেকে আমার নাম মুছে দাও।গীত 69:28; প্রকা 3:5 33প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, আমি শুধু তারই নাম আমার পুস্তক থেকে বাদ দেব।


 34তুমি এখন যাও এবং যে স্থান আমি নির্দিষ্ট করে দিয়েছি, সেখানে এই লোকদের নিয়ে যাও। আমার স্বর্গদূত তোমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। আমার নির্ধারিত বিচারদিনে আমি এদের পাপের দণ্ডবিধান করব। 35ইসরায়েলীরা হারোণের তৈরী স্বর্ণ গোবৎসের পূজা করেছিল বলে প্রভু পরমেশ্বর তাদের মহামারী পাঠিয়ে দণ্ড দিলেন।

Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L. © The Bible Society of India - 2016.

যাত্রা পুস্তক ৩:২২

যাত্রা পুস্তক ৩:২২
13মোশি তখন ঈশ্বরকে বললেন, আমি ইসরায়েলীদের কাছে গিয়ে যখন বলব, তোমাদের পূর্বপুরুষদের আরাধ্য ঈশ্বর আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন, তখন তারা যদি জিজ্ঞাসা করে, তার নাম কি?— আমি তখন তাদের কি বলব?যাত্রা 6:2-3 14ঈশ্বর মোশিকে বললেন, আমি ‘ইয়াহ্ওয়েহ্’, সেই নিত্যসত্তা3:14 শাস্ত্রের এই বিশেষ পদটিতে ইসরায়েলীদের উপাস্য ঈশ্বরের ব্যক্তিগত নামের মর্মার্থ বিবৃত করা হয়েছে। মূল হিব্রু শব্দ ‘ইয়াহ্ওয়েহ্’ (যার প্রচলিত ইংরেজী উচ্চারণ ‘জিহোবা’) একটি ক্রিয়াপদের সংক্ষিপ্ত রূপ। কোন স্বরচিহ্ন ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যঞ্জনবর্ণ সহযোগে সাধারণতঃ শব্দটি লিখিত হয়। ‘হায়াহ্’- এই হিব্রু ধাতু থেকে ঐ শব্দটির উৎপত্তি এবং এর দ্বারা ঈশ্বরের শুধু শাশ্বত অস্তিত্ব নয় বরং সদাপরিবর্তনশীল জগতের ইতিহাসে তাঁর চির সক্রিয় ভূমিকা ও উপস্থিতিই সূচীত হয়। বর্তমান সংস্করণে এর পূর্বতন অনুবাদ ‘আছি’ বা ‘আমি যে সেই আছি’ ইত্যাদির পরিবর্তে হিব্রু ‘হায়াহ্’ ধাতু থেকে উদ্ভূত শব্দের সমার্থক শব্দ ‘নিত্যসত্তা’ ব্যবহার করা হয়েছে।। ইসরায়েলীদের তুমি বলবে, সেই নিত্যসত্তা ইয়াহ্ওয়েহ্ আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন।প্রকা 1:4,8 15ঈশ্বর মোশিকে আর‍ও বললেন, তুমি ইসরায়েলীদের বলবে যে তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। এ-ই আমার শাশ্বত নাম, এই নামেই পুরুষানুক্রমে পরিচিত হব আমি। 16তুমি গিয়ে ইসরায়েলীদের নেতৃবৃন্দকে একত্র করে বল, তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের আরাধ্য ঈশ্বর, প্রভু পরমেশ্বর আমাকে দর্শন দিয়ে বলেছেন, আমার কৃপাদৃষ্টি লাভ করেছ তোমরা, মিশরীরা তোমাদের যে দশা করেছে তা আমি দেখেছি। 17মিশরের দুর্দশা থেকে উদ্ধার করে আমি তোমাদের কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবুষীয়দের দেশে নিয়ে যাব। সুজলা, সুফলা, প্রাচুর্যে উচ্ছল সেই দেশ। 18তারা তোমার কথা শুনবে, আর তুমি ইসরায়েলী নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে মিশররাজের কাছে যাবে। তাকে বলবে, ইসরায়েলীদের আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বর আমাদের আমাদের দর্শন দিয়েছেন, অতএব আমাদের অনুমতি দিন যেন আমরা তিন দিনের পথ অতিক্রম করে প্রান্তরে গিয়ে আমাদের আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করতে পারি। 19আমি জানি যে মিশর রাজকে বাধ্য করা না হলে সে আমাদের যেতে দেবে না। 20আমি আমার অলৌকিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে মিশরীদের শাস্তি বিধান করলে পর মিশররাজ তোমাদের যেতে দেবে। 21আমার অনুগ্রহে ইসরায়েলীরা মিশরীদের প্রীতিভাজন হয়ে উঠবে এবং এদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তাদের শূন্য হাতে যেতে হবে না।যাত্রা 12:35-36
22প্রত্যেক নারী তার মিশরী প্রতিবেশিনী এবং তার পরিবারে বাস করে এমন অন্য মিশরী রমণীর কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার এবং সাজ পোষাক চেয়ে নেবে। সেগুলি তোমরা তোমাদের পুত্রকন্যাদের পরাবে। আর এই ভাবেই তোমরা মিশরীদের ধনসম্পদ নিয়ে যাবে।
================================================
(10) প্রথম সন্তানের মৃত্যু
1প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, আমি আরও একবার ফারাও এবং মিশরীদের বিরুদ্ধে আঘাত হানব, তার পরে সে তোমাদের মুক্তি দেবে। সেই সময় সে তোমাদের সকলকে এখান থেকে তাড়িয়ে দেবে। 2তুমি এখন ইস্‌রায়েলীদের বল যে প্রত্যেক পুরুষ ও নারী যেন তার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার চেয়ে নেয়। 3প্রভু পরমেশ্বরের অনুগ্রহে ইসরায়েলীরা মিশরীদের প্রীতিভাজন হয়ে উঠল। ফারাও-এর পারিষদবর্গ ও দেশবাসী সকলের কাছেই মোশি একজন মহান ব্যক্তিরূপে পরিচিত হলেন।
4মোশি ফারাও-এর দরবারে গিয়ে ঘোষণা করলেন, প্রভু পরমেশ্বর বলেছেন, নিশীথরাত্রে আমি মিশরীদের বিরুদ্ধে অভিযান করব, 5আর তার ফল মিশরের সমস্ত প্রথমজাত সন্তান মারা যাবে। ফারাও-এর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র থেকে শুরু করে যাঁতা পেষাই করে যে ক্রীতদাসী, তারও প্রথম সন্তান পর্যন্ত সকলেই মারা যাবে। পশুপালের মধ্যে প্রথমজাত পশুগুলিও মরে যাবে। 6সারা মিশরে হাহাকার ও কান্নাকাটির এমন রোল উঠবে যা আগে কখনও হয়নি এবং পরেও কোনকালে হবে না। 7কিন্তু ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে একটি কুকুরও ডাকবে না, তাদের মানুষ কিংবা পশু কারোই কোন ক্ষতি হবে না। আর এতেই তোমরা জানবে যে প্রভু পরমেশ্বর মিশরী ও ইসরায়েলীদের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করেছেন। 8তখন আপনার এই অমাত্যবর্গ সকলেই এসে আমার কাছে প্রণিপাত করে বলবে, আপনি আপনার সমস্ত লোকজনকে নিয়ে এ দেশ ছেড়ে চলে যান। তারপর আমি চলে যাব। এই কথা বলে মোশি সক্রোধে ফারাও-এর দরবার ছেড়ে চলে গেলেন।
9প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, ফারাও তোমাদের কথা শুনবে না, তাই আমাকে মিশরে আরও কিছু অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে হবে। 10মোশি ও হারোণ ফারাও-এর সামনে প্রভুর অলৌকিক ক্ষমতার নিদর্শনগুলি দেখালেন, কিন্তু প্রভু পরমেশ্বর ফারাও-এর হৃদয় কঠিন করে দেওয়ায় তিনি ইসরায়েলীদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুমতি দিলেন না।


========================

যাত্রা পুস্তক  ১২:৩৫-৩৬


প্রথমজাত সন্তানদের মৃত্যু
29সেই দিন মধ্যরাত্রে প্রভু পরমেশ্বর মিশররাজ ফারাও-এর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র থেকে আরম্ভ করে কারাগারের কয়েদীর জ্যেষ্ঠ সন্তান পর্যন্ত মিশরের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে সংহার করলেন। প্রথমজাত পশুগুলিও মারা গেল। 30ফারাও ও তাঁর পারিষদবর্গ এবং মিশরীরা সকলেই বাকী রাত জেগে কাটাল। সারা মিশরে তীব্র ক্রন্দনরোল উঠল, কারণ দেশে এমন একটি পরিবার ছিল না যেখানে কেউ মারা যায়নি।
31সেই রাত্রেই ফারাও মোশি ও হারোণকে ডেকে এনে বললেন, ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে তোমরা শিগ্‌গির আমার প্রজাদের কাছ থেকে চলে যাও। তোমরা যেমন চেয়েছিলে সেই ভাবেই গিয়ে প্রভু পরমেশ্বরের আরাধনা কর। 32তোমাদের কথামত গরু-ভেড়ার পালও সঙ্গে নিয়ে যাও, আর আমার জন্য প্রভু পরমেশ্বরের করুণা ভিক্ষা কর।
33ইসরায়েলীরা যাতে তাড়াতাড়ি দেশ ছেড়ে চলে যায় সেই জন্য মিশরীরা তাদের খুব পীড়াপীড়ি করতে লাগল। তারা বলল, তা না হলে আমরা সকলেই মারা পড়ব। 34ইসরায়েলীরা তখন ময়দায় খামির না মিশিয়েই ময়দা শুদ্ধ বাসন চাদরে জড়িয়ে কাঁধে তুলে নিল।
 
 35তারা মোশির কথা মত মিশরীদের কাছ থেকে সোনারূপার অলঙ্কার ও কাপড়চোপড় আগেই চেয়ে নিয়েছিল।যাত্রা 3:21-22 36প্রভু পরমেশ্বর ইসরায়েলীদের জন্য মিশরীদের মনে প্রীতির সঞ্চার করেছিলেন, তাই তারা যা চেয়েছিল মিশরীরা তাদের সবই দিয়েছিল। এ ভাবেই তারা মিশরীদের ধনসম্পদ হস্তগত করল।

১-রাজাবলী ১৬-২৪

 
 
 
8এহুদার বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের ছাব্বিশ বছরের সময় বাশার ছেলে এলা ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হলেন। তিনি তির্সায় দু’বছর রাজত্ব করেছিলেন।  
 
9সিম্রি নামে তাঁর একজন সেনাপতি তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এলার যত রথ ছিল তার অর্ধেকের ভার ছিল সিম্রির উপর। এলা এই সময় অর্সার ঘরে মাতাল হবার জন্য মদানো রস খাচ্ছিলেন। এই অর্সার উপর তির্সার রাজবাড়ীর তদারকের ভার ছিল। 10এহুদার বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের সাতাশ বছরের সময় সিম্রি সেই ঘরে ঢুকে এলাকে হত্যা করলেন। তারপর তিনি এলার জায়গায় বাদশাহ্‌ হলেন।
 
11সিংহাসনে বসে রাজত্বের শুরুতেই সিম্রি বাশার বংশের সবাইকে হত্যা করলেন। আত্মীয়-বন্ধু কোন পুরুষকেই তিনি বাঁচিয়ে রাখলেন না।  
 
12নবী যেহূর মধ্য দিয়ে মাবুদ বাশার বিরুদ্ধে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারে সিম্রি বাশার বংশের সবাইকে ধ্বংস করে দিলেন। 13এর কারণ হল, বাশা ও তাঁর ছেলে এলা নিজেরা অনেক গুনাহ্‌ করেছিলেন এবং ইসরাইলকে দিয়েও গুনাহ্‌ করিয়েছিলেন। তাঁরা অসার প্রতিমা দিয়ে ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌কে রাগিয়ে তুলেছিলেন। 14এলার অন্যান্য কাজ, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন তা “ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
 
 
==================================
 
ইসরাইলের বাদশাহ্‌ সিম্রি
 
 
15এহুদার বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের সাতাশ বছরের সময় সিম্রি তির্সায় সাত দিন রাজত্ব করেছিলেন। সেই সময় ইসরাইলীয় সৈন্যদল ফিলিস্তিনীদের গিব্বথোন ঘেরাও করে ছিল।  
16ইসরাইলীয়রা ছাউনির মধ্যে যখন শুনতে পেল যে, সিম্রি বাদশাহ্‌র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করেছেন তখন সেই দিনই তারা ছাউনির মধ্যে প্রধান সেনাপতি অম্রিকে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ বলে ঘোষণা করল।  
 
17তখন অম্রি ও তাঁর সংগে সমস্ত ইসরাইলীয়রা গিব্বথোন থেকে সরে এসে তির্সা ঘেরাও করল।  
 
18শহরটা অধিকার করা হয়ে গেছে দেখে সিম্রি রাজবাড়ীর কেল্লায় গেলেন এবং আগুন লাগিয়ে গোটা রাজবাড়ী পুড়িয়ে দিলেন। সেই সময় তিনি নিজেও পুড়ে মরলেন।  
 
19তাঁর গুনাহের জন্যই তাঁকে মরতে হল, কারণ মাবুদের চোখে যা খারাপ তিনি তা-ই করতেন। তিনি ইয়ারাবিমের মত চলতেন, অর্থাৎ ইয়ারাবিম ইসরাইলীয়দের দিয়ে যেমন গুনাহ্‌ করিয়েছিলেন তিনিও তা-ই করেছিলেন। 20সিম্রির অন্যান্য কাজ এবং তাঁর বিদ্রোহের কথা “ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
 
======================
 
ইসরাইলের বাদশাহ্‌ অম্রি
 
21এর পর বনি-ইসরাইলরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেল। তাদের অর্ধেক লোক চাইল গীনতের ছেলে তিব্‌নিকে বাদশাহ্‌ করতে আর বাকী অর্ধেক চাইল অম্রিকে বাদশাহ্‌ করতে। 22কিন্তু অম্রির পক্ষের লোকেরা গীনতের ছেলে তিব্‌নির পক্ষের লোকদের হারিয়ে দিল। এতে তিব্‌নি মারা গেল আর অম্রি বাদশাহ্‌ হলেন।
23এহুদার বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের একত্রিশ বছরের সময় অম্রি ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হলেন। তিনি বারো বছর রাজত্ব করেছিলেন, তার মধ্যে ছয় বছর রাজত্ব করেছিলেন তির্সায়। 24তিনি আটাত্তর কেজি রূপা দিয়ে সামেরের কাছ থেকে সামেরিয়া পাহাড়টা কিনলেন এবং পাহাড়ের উপরে একটা শহর তৈরী করলেন 
 
এবং পাহাড়টার আগেকার মালিক সামেরের নাম অনুসারে শহরটার নাম রাখলেন সামেরিয়া।
 
25অম্রি মাবুদের চোখে যা খারাপ তা-ই করতেন এবং তাঁর আগে যাঁরা বাদশাহ্‌ ছিলেন তাঁদের সকলের চেয়ে তিনি বেশী গুনাহ্‌ করতেন। 26তিনি সম্পূর্ণভাবে নবাটের ছেলে ইয়ারাবিমের মত চলতেন, অর্থাৎ ইয়ারাবিম যেমন ইসরাইলীয়দের দিয়ে গুনাহ্‌ করিয়েছিলেন অম্রিও তা-ই করেছিলেন। তাতে ইসরাইলীয়রা অসার প্রতিমা দিয়ে তাদের মাবুদ আল্লাহ্‌কে রাগিয়ে তুলেছিল।
27অম্রির অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা “ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে। 28পরে অম্রি তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন এবং তাঁকে সামেরিয়ায় দাফন করা হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে আহাব বাদশাহ্‌ হলেন।
 
 
=========================
ইসরাইলের বাদশাহ্‌ আহাব
29এহুদার বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের আটত্রিশ বছরের সময় অম্রির ছেলে আহাব ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হলেন। তিনি বাইশ বছর সামেরিয়ায় থেকে ইসরাইলের উপর রাজত্ব করেছিলেন। 30অম্রির ছেলে আহাব মাবুদের চোখে যা খারাপ তা-ই করতেন, এমন কি, তাঁর আগে যাঁরা বাদশাহ্‌ ছিলেন তাঁদের সকলের চেয়ে আরও বেশী করে তা করতেন। 31নবাটের ছেলে ইয়ারাবিম যে সব গুনাহ্‌ করেছিলেন সেগুলোকে তিনি সামান্য ব্যাপার বলে মনে করতেন। কেবল তা-ই নয়, তিনি সিডনীয়দের বাদশাহ্‌ ইৎবালের মেয়ে ঈষেবলকে বিয়ে করলেন এবং বাল-দেবতার সেবা ও পূজা করতে লাগলেন। 32তিনি সামেরিয়াতে বাল-দেবতার জন্য যে মন্দির তৈরী করেছিলেন সেখানে তার জন্য একটা বেদী তৈরী করলেন। 33তিনি একটা আশেরা-খুঁটিও তৈরী করলেন এবং তাঁর আগে ইসরাইলীয়দের সমস্ত বাদশাহ্‌রা ইসরাইলীয়দের মাবুদ আল্লাহ্‌কে যতটা রাগিয়েছিলেন তিনি তাঁর কাজের দ্বারা তাঁকে আরও বেশী রাগালেন।
 
34আহাবের সময়ে বেথেলীয় হীয়েল জেরিকো শহরটা আবার তৈরী করলেন। নূনের ছেলে ইউসার মধ্য দিয়ে মাবুদের কালাম অনুসারে সেই শহরের ভিত্তি গাঁথার জন্য হীয়েলের বড় ছেলে অবীরামকে প্রাণ দিতে হল এবং তার সদর দরজা লাগাবার জন্য তার ছোট ছেলে সগূবকে প্রাণ দিতে হল।
 
 

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...