যাত্রা পুস্তক ৩:২২
13মোশি
তখন ঈশ্বরকে বললেন, আমি ইসরায়েলীদের কাছে গিয়ে যখন বলব, তোমাদের
পূর্বপুরুষদের আরাধ্য ঈশ্বর আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন, তখন তারা যদি
জিজ্ঞাসা করে, তার নাম কি?— আমি তখন তাদের কি বলব?যাত্রা 6:2-3 14ঈশ্বর মোশিকে বললেন, আমি ‘ইয়াহ্ওয়েহ্’, সেই নিত্যসত্তা3:14 শাস্ত্রের
এই বিশেষ পদটিতে ইসরায়েলীদের উপাস্য ঈশ্বরের ব্যক্তিগত নামের মর্মার্থ
বিবৃত করা হয়েছে। মূল হিব্রু শব্দ ‘ইয়াহ্ওয়েহ্’ (যার প্রচলিত ইংরেজী
উচ্চারণ ‘জিহোবা’) একটি ক্রিয়াপদের সংক্ষিপ্ত রূপ। কোন স্বরচিহ্ন ছাড়াই
শুধুমাত্র ব্যঞ্জনবর্ণ সহযোগে সাধারণতঃ শব্দটি লিখিত হয়। ‘হায়াহ্’- এই
হিব্রু ধাতু থেকে ঐ শব্দটির উৎপত্তি এবং এর দ্বারা ঈশ্বরের শুধু শাশ্বত
অস্তিত্ব নয় বরং সদাপরিবর্তনশীল জগতের ইতিহাসে তাঁর চির সক্রিয় ভূমিকা ও
উপস্থিতিই সূচীত হয়। বর্তমান সংস্করণে এর পূর্বতন অনুবাদ ‘আছি’ বা ‘আমি যে
সেই আছি’ ইত্যাদির পরিবর্তে হিব্রু ‘হায়াহ্’ ধাতু থেকে উদ্ভূত শব্দের
সমার্থক শব্দ ‘নিত্যসত্তা’ ব্যবহার করা হয়েছে।। ইসরায়েলীদের তুমি বলবে, সেই নিত্যসত্তা ইয়াহ্ওয়েহ্ আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন।প্রকা 1:4,8 15ঈশ্বর
মোশিকে আরও বললেন, তুমি ইসরায়েলীদের বলবে যে তোমাদের পিতৃপুরুষ
অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর আমাকে তোমাদের
কাছে পাঠিয়েছেন। এ-ই আমার শাশ্বত নাম, এই নামেই পুরুষানুক্রমে পরিচিত হব
আমি। 16তুমি
গিয়ে ইসরায়েলীদের নেতৃবৃন্দকে একত্র করে বল, তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম,
ইস্হাক ও যাকোবের আরাধ্য ঈশ্বর, প্রভু পরমেশ্বর আমাকে দর্শন দিয়ে
বলেছেন, আমার কৃপাদৃষ্টি লাভ করেছ তোমরা, মিশরীরা তোমাদের যে দশা করেছে
তা আমি দেখেছি। 17মিশরের
দুর্দশা থেকে উদ্ধার করে আমি তোমাদের কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়,
হিব্বীয় ও যিবুষীয়দের দেশে নিয়ে যাব। সুজলা, সুফলা, প্রাচুর্যে উচ্ছল সেই
দেশ। 18তারা
তোমার কথা শুনবে, আর তুমি ইসরায়েলী নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে মিশররাজের
কাছে যাবে। তাকে বলবে, ইসরায়েলীদের আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বর আমাদের আমাদের
দর্শন দিয়েছেন, অতএব আমাদের অনুমতি দিন যেন আমরা তিন দিনের পথ অতিক্রম করে
প্রান্তরে গিয়ে আমাদের আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করতে
পারি। 19আমি জানি যে মিশর রাজকে বাধ্য করা না হলে সে আমাদের যেতে দেবে না। 20আমি আমার অলৌকিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে মিশরীদের শাস্তি বিধান করলে পর মিশররাজ তোমাদের যেতে দেবে। 21আমার অনুগ্রহে ইসরায়েলীরা মিশরীদের প্রীতিভাজন হয়ে উঠবে এবং এদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তাদের শূন্য হাতে যেতে হবে না।যাত্রা 12:35-36
22প্রত্যেক
নারী তার মিশরী প্রতিবেশিনী এবং তার পরিবারে বাস করে এমন অন্য মিশরী রমণীর
কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার এবং সাজ পোষাক চেয়ে নেবে। সেগুলি তোমরা
তোমাদের পুত্রকন্যাদের পরাবে। আর এই ভাবেই তোমরা মিশরীদের ধনসম্পদ নিয়ে
যাবে।
================================================
(10) প্রথম সন্তানের মৃত্যু
1প্রভু
পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, আমি আরও একবার ফারাও এবং মিশরীদের বিরুদ্ধে আঘাত
হানব, তার পরে সে তোমাদের মুক্তি দেবে। সেই সময় সে তোমাদের সকলকে এখান
থেকে তাড়িয়ে দেবে। 2তুমি এখন ইস্রায়েলীদের বল যে প্রত্যেক পুরুষ ও নারী যেন তার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার চেয়ে নেয়। 3প্রভু
পরমেশ্বরের অনুগ্রহে ইসরায়েলীরা মিশরীদের প্রীতিভাজন হয়ে উঠল। ফারাও-এর
পারিষদবর্গ ও দেশবাসী সকলের কাছেই মোশি একজন মহান ব্যক্তিরূপে পরিচিত
হলেন।
4মোশি ফারাও-এর দরবারে গিয়ে ঘোষণা করলেন, প্রভু পরমেশ্বর বলেছেন, নিশীথরাত্রে আমি মিশরীদের বিরুদ্ধে অভিযান করব, 5আর
তার ফল মিশরের সমস্ত প্রথমজাত সন্তান মারা যাবে। ফারাও-এর সিংহাসনের
উত্তরাধিকারী তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র থেকে শুরু করে যাঁতা পেষাই করে যে
ক্রীতদাসী, তারও প্রথম সন্তান পর্যন্ত সকলেই মারা যাবে। পশুপালের মধ্যে
প্রথমজাত পশুগুলিও মরে যাবে। 6সারা মিশরে হাহাকার ও কান্নাকাটির এমন রোল উঠবে যা আগে কখনও হয়নি এবং পরেও কোনকালে হবে না। 7কিন্তু
ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে একটি কুকুরও ডাকবে না, তাদের মানুষ কিংবা পশু কারোই
কোন ক্ষতি হবে না। আর এতেই তোমরা জানবে যে প্রভু পরমেশ্বর মিশরী ও
ইসরায়েলীদের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করেছেন। 8তখন
আপনার এই অমাত্যবর্গ সকলেই এসে আমার কাছে প্রণিপাত করে বলবে, আপনি আপনার
সমস্ত লোকজনকে নিয়ে এ দেশ ছেড়ে চলে যান। তারপর আমি চলে যাব। এই কথা বলে
মোশি সক্রোধে ফারাও-এর দরবার ছেড়ে চলে গেলেন।
9প্রভু পরমেশ্বর মোশিকে বললেন, ফারাও তোমাদের কথা শুনবে না, তাই আমাকে মিশরে আরও কিছু অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে হবে। 10মোশি
ও হারোণ ফারাও-এর সামনে প্রভুর অলৌকিক ক্ষমতার নিদর্শনগুলি দেখালেন,
কিন্তু প্রভু পরমেশ্বর ফারাও-এর হৃদয় কঠিন করে দেওয়ায় তিনি ইসরায়েলীদের দেশ
ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুমতি দিলেন না।
========================
যাত্রা পুস্তক ১২:৩৫-৩৬
========================
যাত্রা পুস্তক ১২:৩৫-৩৬
প্রথমজাত সন্তানদের মৃত্যু
29সেই
দিন মধ্যরাত্রে প্রভু পরমেশ্বর মিশররাজ ফারাও-এর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী
তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র থেকে আরম্ভ করে কারাগারের কয়েদীর জ্যেষ্ঠ সন্তান পর্যন্ত
মিশরের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে সংহার করলেন। প্রথমজাত পশুগুলিও মারা গেল।
30ফারাও
ও তাঁর পারিষদবর্গ এবং মিশরীরা সকলেই বাকী রাত জেগে কাটাল। সারা মিশরে
তীব্র ক্রন্দনরোল উঠল, কারণ দেশে এমন একটি পরিবার ছিল না যেখানে কেউ মারা
যায়নি।
31সেই
রাত্রেই ফারাও মোশি ও হারোণকে ডেকে এনে বললেন, ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে
তোমরা শিগ্গির আমার প্রজাদের কাছ থেকে চলে যাও। তোমরা যেমন চেয়েছিলে সেই
ভাবেই গিয়ে প্রভু পরমেশ্বরের আরাধনা কর। 32তোমাদের কথামত গরু-ভেড়ার পালও সঙ্গে নিয়ে যাও, আর আমার জন্য প্রভু পরমেশ্বরের করুণা ভিক্ষা কর।
33ইসরায়েলীরা
যাতে তাড়াতাড়ি দেশ ছেড়ে চলে যায় সেই জন্য মিশরীরা তাদের খুব পীড়াপীড়ি করতে
লাগল। তারা বলল, তা না হলে আমরা সকলেই মারা পড়ব। 34ইসরায়েলীরা তখন ময়দায় খামির না মিশিয়েই ময়দা শুদ্ধ বাসন চাদরে জড়িয়ে কাঁধে তুলে নিল।
35তারা মোশির কথা মত মিশরীদের কাছ থেকে সোনারূপার অলঙ্কার ও কাপড়চোপড় আগেই চেয়ে নিয়েছিল।যাত্রা 3:21-22 36প্রভু
পরমেশ্বর ইসরায়েলীদের জন্য মিশরীদের মনে প্রীতির সঞ্চার করেছিলেন, তাই
তারা যা চেয়েছিল মিশরীরা তাদের সবই দিয়েছিল। এ ভাবেই তারা মিশরীদের ধনসম্পদ
হস্তগত করল।
No comments:
Post a Comment