প্রশ্ন : ১১০ : মানুষের উপ নাম ধরে ডাকা,গীবত করা,খোটা দিয়ে কথা বলা ইত্যাদি সম্পর্কে সূরার নাম ও আয়াত সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাই।

সুরা হুজুরাত : 


﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
১০) মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই ৷ অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে দাও৷ ১৮ আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করা হবে৷  
১৮. এ আয়াতটি দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানকে এক বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে ৷ দুনিয়ার অন্য কোন আদর্শ বা মত ও পথের অনুসারীদের মধ্যে এমন কোন ভ্রাতৃত্ব বন্ধন পাওয়া যায় না যা মুসলমানদের মধ্যে পাওয়া যায় ৷ এটাও এ আয়াতের বরকতে সাধিত হয়েছে ৷ এ নির্দেশের দাবী ও গুরুত্বসমূহ কি, বহুসংখ্যক হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বর্ণনা করেছেন ৷ ঐ সব হাদীসের আলোকে এ আয়াতের আসল লক্ষ ও উদ্দেশ্য বোধগম্য হতে পারে ৷
হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার থেকে তিনটি বিষয়ে, "বাইয়াত" নিয়েছেন ৷ এক, নামায কায়েম করবো ৷ দুই, যাকাত আদায় করতে থাকবো ৷ তিন, মুসলমানদের কল্যাণ কামনা করবো ৷ ( বুখারী -কিতাবুল ঈমান ৷ ) ৷
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী, এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী ৷ ( বুখারী-কিতাবুল ঈমান) ৷ মুসনাদে আহমাদে হযরত সাঈদ ইবনে মালেক ও তার পিতা থেকে অনুরূপ বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন ৷
হযরত আবু হুরাইরা ( রা) বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের জান, মাল ও ইজ্জত হারাম" ( মুসলিম -কিতাবুল বিরর, ওয়াসসিলাহ, তিরমিযী-আবুওয়াবুল বিরর ওয়াসসিলাহ) ৷
হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রা) ও হযরত আবু হুরাইরা ( রা) বলেন, নবী ( সা) বলেছেনঃ এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই ৷ সে তার ওপরে জুলুম করে না, তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করে না ৷ কোন ব্যক্তির জন্য তার কোন মুসলমান ভাইকে হেয় ও ক্ষুদ্র জ্ঞান করার মত অপকর্ম আর নাই ৷ ( মুসনাদে আহমাদ) ৷
হযরত সাহল ইবনে সা'দ সায়েদী নবীর ( সা) এ হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, ঈমানদরদের সাথে একজন ঈমানদারের সম্পর্ক ঠিক তেমন যেমন দেহের সাথে মাথার সম্পর্ক ৷ সে ঈমানদারদের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট, ঠিক অনুভব করে যেমন মাথা দেহের প্রতিটি অংশের ব্যথা অনুভব করে ৷ ( মুসনাদে আহমাদ) অপর একটি হাদীসে এ বিষয়বস্তু প্রায় অনুরূপ বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে ৷ উক্ত হাদীসে নবী ( সা) বলেছেনঃ পারস্পরিক ভালবাসা, সুসম্পর্ক এবং একে অপরের দয়ামায়া ও স্নেহের ব্যাপারে মু'মিনগণ একটি দেহের মত ৷ দেহের যে অংগেই কষ্ট হোক না কেন তাতে গোটা দেহ জ্বর ও অনিদ্রায় ভুগতে থাকে ৷ ( বুখারীও মুসলিম) ৷
আরো একটি হাদীসে নবীর ( সা) এ বাণীটি উদ্ধৃত হয়েছে যে, মু'মিনগণ পরস্পরের জন্য একই প্রাচীরের ইঁটের মত একে অপরের থেকে শক্তি লাভ করে থাকে ৷ ( বুখারী, কিতাবুল আদব, তিরমিযী-কিতাবুল বিরর-ওয়াস সিলাহ ৷ )
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
১১) হে ১৯ ঈমানদারগণ, পুরুষরা যেন অন্য পুরুষদের বিদ্রূপ না করে৷ হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম৷ আর মহিলারাও যেন অন্য মহিলাদের বিদ্রূপ না করে৷ হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম৷ ২০ তোমরা একে অপরকে বিদ্রূপ করো না৷ ২১ এবং পরস্পরকে খারাপ নামে ডেকো না৷ ২২ ঈমান গ্রহণের পর গোনাহর কাজে প্রসিদ্ধ লাভ করা অত্যন্ত জঘন্য ব্যাপার৷ ২৩ যারা এ আচরণ পরিত্যাগ করেনি তারাই জালেম৷  
১৯. পূর্বের দু'টি আয়াতে মুসলমানদর পারস্পরিক লড়াই জরুরী নির্দেশনা দেয়ার পর ঈমানদারদেরকে এ অনুভূতি দেয়া হয়েছিল যে, ইসলদেমের পবিত্রতম সম্পর্কের ভিত্তিতে তারা একে অপরের ভাই এবং আল্লাহর ভয়েই তাদেরকে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক রাখার চেষ্টা করা উচিত ৷ এখন পরবর্তী দু'টি আয়াতে এমন সব বড় বড় অন্যায়ের পথ রুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যা সাধারণত লোকদের পরস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় ৷ একে অপরের ইজ্জতের ওপর হামলা , একে অপরেকে মনোকষ্ট দেয়া, একে অপরের প্রতি খারাপ ধারণা পোষন করা, এবং একে অপরের দোষ-ক্রুটি তালাশ করা পারস্পরিক শত্রুতা সৃষ্টির এগুলোই মূল কারণ ৷ এসব কারণ অন্যান্য কারনের সাথে মিশে বড় বড় ফিতনার সৃষ্টি করে ৷ এ ক্ষেত্রে পরবর্তী আয়াতসমূহে যেসব নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তার যেসব ব্যাখ্যা হাদিসসমূহে পাওয়া যায় তার ভিত্তিতে মানহানি ( Law of Libel) সম্পর্কিত বিস্তারিত আইন-বিধান রচনা করা যেতে পারে ৷ পাশ্চাত্যের মানহানি সম্পর্কিত আইন এ ক্ষেত্রে এতটাই অসম্পূর্ণ যে, এ আইনের অধীনে কেউ মানহানীর অভিযোগ পেশ করে নিজের মার্যাদা আরো কিছু খুইয়ে আসে ৷ পক্ষান্তরে ইসলামী আইন প্রত্যেক ব্যক্তির এমন একটি মৌলিক মর্যদার স্বীকৃতি দেয় যার ওপর কোন আক্রমণ চালানোর অধিকার কারো নেই ৷ এ ক্ষেত্রে হামলা বাস্তবতা ভিক্তিক হোক বা না হোক এবং যার ওপর আক্রমণ করা হয়, জনসমক্ষে তার কোন সুপরিচিত মর্যাদা থাক বা না থাক তাতে কিছু যায় আসে না ৷ এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে অপমান করেছে শুধু এতটুকু বিষযই তাকে অপরাধী প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট ৷ তবে এ অপমান করার যদি কোন শরীয়াতসম্মত বৈধতা থাকে তাহলে ভিন্ন কথা ৷ 
২০. বিদ্রূপ করার অর্থ কেবল কথার দ্বারা হাসি-তামাসা করাই নয় ৷ বরং কারো কোন কাজের অভিনয় করা, তার প্রতি ইংগিত করা, তার কথা, কাজ, চেহারা বা পোশাক নিয়ে হাসাহাসি করা অথবা তার কোন ত্রুটি বা দোষের দিকে এমনভাবে দৃষ্টি আকর্ষন করা যাতে অন্যদের হাসি পায় ৷ এ সবই হাসি -তামাসার অন্তুরভুক্ত ৷ মূল নিষিদ্ধ বিষয় হলো কেউ যেন কোনভাবেই কাউকে উপহাস ও হাসি -তামাসার লক্ষ না বানায় ৷ কারণ, এ ধরনে হাসি-তামাসা ও ঠাট্রা-বিদ্রূপের পেছনে নিশ্চিতভাবে নিজের বড়ত্ব প্রদর্শন এবং অপরের অপমানিত করা ও হেয় করে দেখানোর মনোবৃত্তি কার্যকর ৷ যা নৈতিকভাবে অত্যন্ত দোষনীয় ৷ তাছাড়া এভাবে অন্যের মনোকষ্ট হয় যার কারণে সমাজে বিপর্যয় ও বিশৃংখলা দেখা দেয় ৷ এ কারণেই এ কাজকে হারাম করে দেয়া হয়েছে ৷
পুরুষ ও নারীদের কথা আলাদা করে উল্লেখ করার অর্থ এ নয় যে, পুরুষেদের নারীদেরকে বিদ্রূপের লক্ষ বানানো এবং নারীদের পুরুষদের হাসি-তামাসার লক্ষ বানানো জায়েয ৷ মূলত যে কারণে নারী ও পুরুষের বিষয় আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছে, ইসলাম এমন সমাজ আদৌ সমর্থন করে না ৷ যেখানে নারী অবাধে মেলামেশা করতে পারে ৷ অবাধ খোলামেলা মজলিসেই সাধারনত একজন আরেকজনকে হাসি তামাসার লক্ষ বানাতে পারে ৷ মুহাররাম নয় এমন নারী পুরুষ কোন মজলিসে একত্র হয়ে পরস্পর হাসি -তামাসা করবে ইসলামে এমন অবকাশ আদৌ রাখা হয়নি ৷ তাই একটি মুসলিম সমাজের একটি মজলিসে পুরুষ কোন নারীকে উপহাস ও বিদ্রূপ করবে কিংবা নারী কোন পুরুষকে বিদ্যুপ ও উপহাস করবে এমন বিষয় কল্পনার যোগ্যও মনে করা হয়নি ৷ 
২১. মূল আয়াতে ( ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ৷ শব্দটির মধ্যে বিদ্রোপ ও কুৎস ছাড়াও আরো কিছু সংখ্যক অর্থ এর মধ্যে শালিম ৷ যেমনঃ উপহাস করা, অপবাদ আরোপ করা, দোষ বের করা এবং খোলাখুলি বা গোপনে অথবা ইশারা -ইংগিত করে কাউকে তিরস্কারের লক্ষস্থল বানানো ৷ এসব কাজও যেহেতু পারস্পরিক সুস্পর্ক নষ্ট করে এবং সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি করে তাই এসব কাজও হারাম করে দেয়া হয়েছে ৷ এখানে আল্লাহর ভাষায় চমৎকারিত্ব এই যে, ( ) একে অপরকে বিদ্রুপ করো না ৷ ) বলার পরিবর্তে ( ) নিজেকে নিজে বিদ্রূপ করো না) ৷ কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে ৷ এর দ্বারা স্বতই একথা ইংগিত পাওয়া যায় যে, অন্যদের বিদ্রুপ ও উপহাসকারী প্রকৃতপক্ষে নিজেকেই বিদ্রূপ ও উপহাস করে ৷ এ বিষয়টি সুস্পস্ট যে, যতক্ষন না করো মনে কুপ্রেরণার লাভা জমে উপচে পড়ার জন্য প্রস্তুত না হবে ততক্ষণ তার মুখ অন্যদের কুৎসা রটনার জন্য খুলবে না ৷ এভাবে এ মানসিকতার লালনকারী অন্যদের আগে নিজেকেই তো কুকর্মের আস্তানা বানিয়ে ফেলে ৷ তারপর যখন সে অন্যদের ওপর আঘাত করে তখন তার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, সে তার নিজের ওপর আঘাত করার জন্য অন্যদেরকে আহবান করছে ৷ ভদ্রতার কারণে কেউ যদি তার আক্রমণ এড়িয়ে চলে তাহলে তা ভিন্ন কথা ৷ কিন্তু যাকে সে তার বাক্যবাণের লক্ষস্থল বানিয়েছে সে-ও পাল্টা তার ওপর আক্রমণ করুক এ দরজা সে নিজেই খুলে দিয়েছে ৷ 
২২. এ নির্দেশের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোন ব্যক্তিকে এমন নামে ডাকা না হয় অথবা এমন উপাধি না দেয়া হয় যা তার অপছন্দ এবং যা দ্বারা তার অবমাননা ও অমর্যাদা হয় ৷ যেমন কাউকে ফাসেক বা মুনাফিক বলা ৷ কাউকে খোঁড়া , অন্ধ অথবা কানা বলা ৷ কাউকে তার নিজের কিংবা মা -বাপের অথবা বংশের কোন দোষ বা ক্রুটির সাথে সম্পর্কিত করে উপাধি দেয়া ৷ মুসলমান হওয়ার পর তার পূর্ব অনুসৃত ধর্মের কারণে ইহুদী ব খৃষ্টান বলা ৷ কোন ব্যক্তি, বংশ, আত্মীয়তা অথবা গোষ্ঠির এমন নাম দেয়া যার মধ্যে তার নিন্দা ও অপমানের দিকটি বিদ্যমান ৷ তবে যেসব উপাধি বাহ্যত খারাপ কিন্তু তা দ্বারা কারো নিন্দা করা উদ্দেশ্য নয়, রবং ঐ উপাধি দ্বারা যাদের সম্বোধন করা হয় তা তাদের পরিচয়ের সহায়ক এমন সব উপাধি এ নির্দেশের মধ্যে পড়ে না ৷ এ কারণে মুহাদ্দিসগণ "আসমাউর রিজাল" ( বা হাদীসের রাবীদের পরিচয় মূলক) শাস্ত্রে সুলায়মান আল আ'মাশ ( ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন সুলায়মান) এবং ওয়াসেল আল আহদাব ( কুঁজো ওয়াসেল) এর মত নামের উল্লেখ রেখেছেন ৷ যদি একই নামের কয়েকজন লোক থাকে এবং তাদের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তার বিশেষ কোন উপাধি দ্বারাই কেবল চেনা যায় তাহলে ঐ উপাধি খারাপ হলেও তা বলা যেতে পারে ৷ যেমন আবদুল্লাহ নামের যদি কয়েকজন লোক থাকে আর তাদের মধ্যে একজন অন্ধ হয় তাহলে তাকে চেনা সুবিধানর জন্য আপনি অন্ধ আবদুল্লাহ, বলতে পারেন ৷ অনুরূপ এমন সব উপাধী বা উপনাম এ নির্দেশের মধ্যে পড়বে না যা দ্বারা বাহ্যত অমর্যাদা বুঝায় ৷ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ভালবাসা ও স্নেহবশতই রাখা হয় এবং যাদেরকে এ উপাধি বা উপনামে ডাকা হয় তারা নিজেরাও তা পছন্দ করে ৷ যেমন, আবু হুরাইরা এবং আবু তুরাব ৷
২৩. ঈমানদার হওয়া সত্ত্বেও সে কটুভাষী হবে এবং অসৎ ও অন্যায় কাজের জন্য বিখ্যাত হবে এটা একজন ঈমানদারের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার ৷ কোন কাফের যদি মানুষকের ঠাট্রা-বিদ্রুপ ও উপহাস করা কিংবা বেছে বেছে বিদ্রুপাত্মক নাম দেয়ার ব্যাপারে খুব খ্যাতি লাভ করে তাহলে তা মনুষ্যত্বের বিচারে যদিও সুখ্যাতি নয় তবুও অন্তত তার কুফরীর বিচারে তা মানায় ৷ কিন্তু কেউ আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং আখেরাত বিশ্বাস করা সত্ত্বেও যদি এরূপ হীন বিশেষণে ভূষিত হয় তাহলে তার জন্য পানিতে ডুবে মরার শামিল ৷
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ﴾
১২) হে ঈমানদাগণ, বেশী ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো কারণ কোন কোন ধারণা ও অনুমান গোনাহ৷ ২৪ দোষ অন্বেষন করো না৷ ২৫ আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে৷ ২৬ এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে ?২৭  দেখো, তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়৷ আল্লাহকে ভয় করো৷ আল্লাহ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু৷  
২৪. একেবারেই ধারণা করতে নিষেধ করা হয়নি ৷ বরং খুব বেশী ধারণার ভিত্তিতে কাজ করতে এবং সব রকম ধারণার অনুসরণ থেকে মানা করা হয়েছে ৷ এর কারণ বলা হয়েছে এই যে, অনেক ধারণা গোনাহের পর্যায়ের পড়ে ৷ এ নির্দেশটি বুঝার জন্য আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত ধারণা কত প্রকার এবং প্রত্যেক প্রকারের নৈতিক অবস্থা কি?
এক প্রকারের ধারণা হচ্ছে, যা নৈতিকতার দৃষ্টিতে অত্যন্ত পছন্দনীয় এবং দীনের দৃষ্টিতেও কাম্য ও প্রশংসিত ৷ যেমনঃআল্লাহ, তার রসূল এবং ঈমানদারদের ব্যাপারে ভাল ধারণা পোষণ করা ৷ তাছাড়া যাদের সাথে ব্যক্তির মেলামেশা ও উঠাবসা আছে এবং যাদের সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষনের কোন যুক্তিসংগত কারণ নেই ৷
আরেক প্রকার ধারণা আছে যা বাদ দিয়ে বাস্তব জীবনে চলার কোন উপায় নেই ৷ যেমন আদালতে বিচারকের সামনে যেসব সাক্ষ পেশ করা হয় তা যাঁচাই বাছাই করে নিশ্চিত প্রায় ধারণার ভিত্তিতে ফায়সালা করা ছাড়া আদালত চলতে পারে না ৷ কারণ, বিচারকের পক্ষে ঘটনা সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয় ৷ আর সাক্ষের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নিশ্চিত সত্য হয়না, বরং প্রায় নিশ্চিত ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ যে ক্ষেত্রে কোন না কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়ে, কিন্তু বাস্তব জ্ঞান লাভ বাস্তব হয় না সে ক্ষেত্রে ধারণার ওপর ভিত্তি করে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ছাড়া মানুষের জন্য আর কোন উপায় থাকে না ৷
তৃতীয় এক প্রকারের ধারণা আছে যা মূলত খারাপ হলেও বৈধ প্রকৃতির ৷ এ প্রকারের ধারণা গোনাহের অন্তরভুক্ত হতে পারে না ৷ যেমনঃ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির চরিত্র ও কাজ-কর্মে কিংবা তার দৈনন্দিন আচার -আচরণ ও চালচলে এমন সুস্পষ্ট লক্ষণ ফুটে উঠে যার ভিত্তিতে সে আর ভাল ধারণার যোগ্য থাকে না ৷ বরং তার প্রতি খারাপ ধারণা পোষণের একাধিক যুক্তিসংগত কারণ বিদ্যমান ৷ এরূপ পরিস্থিতিতে শরীয়াত কখনো এ দাবী করে যে, সরলতা দেখিয়ে মানুষ তার প্রতি অবশ্যই ভাল ধারণা পোষণ করবে ৷ তবে বৈধ খারাপ ধারণা পোষনের চূড়ান্ত সীমা হচ্ছে তার সম্ভাব্য দুস্কৃতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ৷ নিছক ধারণার ভিত্তিতে আরো অগ্রসর হয়ে তার বিরুদ্ধে কোন তৎপরতা চালানো ঠিক নয় ৷
চতুর্থ আরেক প্রকারের ধারণা আছে যা মূলত গোনাহ, সেটি হচ্ছে, বিনা কারণে কারো অপরের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা কিংবা অন্যদের ব্যাপারে মতস্থির করার বেলায় সবসময় খারাপ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই শুরু করা কিংবা এমন লোকেদের ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করা যাদের বাহ্যিক অবস্থা তাদের সৎ ও শিষ্ট হওয়ার প্রমাণ দেয় ৷ অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি কোন কথা বা কাজে যদি ভাল ও মন্দের সমান সম্ভবনা থাকে কিন্তু খারাপ ধারণার বশবর্তী হয়ে আমরা যদি তা খারাপ হিসেবেই ধরে নেই তাহলে তা গোনাহের কাজ বলে গণ্য হবে ৷ যেমনঃ কোন সৎ ও ভদ্র লোক কোন মাহফিল থেকে উঠে যাওয়ার সময় নিজের জুতার পরিবর্তে অন্য কারো জুতা উঠিয়ে নেন আমরা যদি ধরে নেই যে, জুতা চুরি করার উদ্দেশ্যেই তিনি এ কাজ করেছেন ৷ অথচ এ কাজটি ভুল করেও হতে পারে ৷ কিন্তু ভাল সম্ভাবনার দিকটি বাদ দিয়ে খারাপ সম্ভাবনার দিকটি গ্রহণ করার কারণ খারাপ ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয় ৷
এ বিশ্লেষণ থেকে একথা পরিস্কার হয়ে যায় যে, ধারণা করা যেমন নিষিদ্ধ বিষয় নয় ৷ বরং কোন কোন পরিস্থিতিতে তা পছন্দনীয়, কোন কোন পরিস্থিতিতে অপরিহার্য, কোন কোন পরিস্থিতিতে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত জায়েয কিন্তু ঐ সীমার বাইরে নাজায়েয এবং কোন কোন পরিস্থিতিতে একেবারেই নাজায়েয ৷ তাই একথা বলা হয়নি যে, ধারণা বা খারাপ ধারণা করা থেকে একদম বিরত থাকো ৷ বরং বলা হয়েছে, অধিকমাত্রায় ধারণা করা থেকে বিরত থাকো ৷ তাছাড়া নির্দেশটির উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট করার জন্য আরো বলা হয়েছে , কোন কোন ধারণা গোনাহ ৷ এ সতর্কীকরণ দ্বারা আপনা থেকেই বুঝা যায় যে, যখনই কোন ব্যক্তি ধারণার ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কিংবা কোন পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তখন তার ভালভাবে যাচাই বাছাই করে দেখা দরকার, যে ধারণা সে পোষণ করেছে তা গোনাহের অন্তরভুক্ত নয় তো? আসলেই কি এরূপ ধারণা পোষনের দরকার আছে? এরূপ ধারণা পোষনের জন্য তার কাছে যুক্তিসংগত কারণ আছে কি? সে ধারণার ভিত্তিতে সে যে কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছে তা কি বৈধ? যেসব ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে এতটুকু সাবধানতা তারা অবশ্যই অবলম্বন করবে ৷ লাগামহীন ধারণা পোষণ কেবল তাদেরই কাজ যারা আল্লাহর ভয় থেকে মুক্ত এবং আখেরাতের জবাবদিহি সম্পর্কে উদাসীন ৷
২৫. অর্থাৎ মানুষের গোপন বিষয় তালাশ করো না ৷ একজন আরেকজনের দোষ খুঁজে বেড়িও না ৷ অন্যদের অবস্থা ও ব্যাপার স্যাপার অনুসন্ধান করে বেড়াবে না ৷ খারাপ ধারণা বশবর্তী হয়ে এ আচরণ করা হোক কিংবা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য করা হোক অথবা শুধু নিজের কৌতুহল ও ঔৎসুক্য নিবারণের জন্য করা হোক শরীয়াতের দৃষ্টিতে সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ ৷ অন্যদের যেসব বিষয় লোকচক্ষুর অন্তরালে আছে তা খোঁজাখুঁজি করা এবং কার কি দোষ-ক্রটি আছে ও কার কি কি দুর্বলতা গোপন আছে পর্দার অন্তরালে উকি দিয়ে তা জানার চেষ্টা করা কোন মু'মিনের কাজ নয় ৷ মানুষের ব্যক্তিগত চিঠিপত্র পড়া, দু'জনের কথোপকথন কান পেতে শোনা, প্রতিবেশীর ঘরে উঁকি দেয়া এবং বিভিন্ন পন্থায় অন্যদের পারিবারিক জীবন কিংব তাদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি খোঁজ করে বেড়ানো একটি বড় অনৈতিক কাজ ৷ এর দ্বারা নানা রকম ফিতনা -ফাসাদ সৃষ্টি হয় ৷ এ কারণে একবার নবী ( সা) তার খোতবায় দোষ অন্বেষণকারীদের সম্পর্কে বলেছেনঃ
-----------------
"হে সেই সব লোকজন, যারা মুখে ঈমান এনেছো কিন্তু এখনো ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলমানদের গোপনীয় বিষয় খুঁজে বেড়িও না ৷ যে ব্যক্তি মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি তালাশ করে বেড়াবে আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটির অন্বেষণে লেগে যাবেন ৷ আর আল্লাহর যার ক্রুটি তালাশ করেন তাকে তার ঘরের মধ্যে লাঞ্ছিত করে ছাড়েন ৷ " ( আবু দাউদ, ) ৷
হযরত মুয়াবিয়া ( রা) বলেন, আমি নিজে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ
-------------
"তুমি যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় জানার জন্য পেছনে লেগো ৷ তাদের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে কিংবা অন্তত বিপর্যয়ের দ্বার প্রান্তে পৌছে দেবে ৷ " ( আবু দাউদ)
অপর এক হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
------------------------
"তোমাদের মনে করো সম্পর্কে সন্দেহ হলে, অন্বেষণ করো না ৷ "( আহকামুল কুরআন-জাস্সাস) ৷
অপর একটি হাদীসে নবী ( সা) বলেছেনঃ
---------------
"কেউ যদি কারো গোপন দোষ-ত্রুটি দেখে ফেলে এবং তা গোপন রাখে তাহলে সে যেন একজন জীবন্ত পূঁতে ফেলা মেয়ে সন্তানকে জীবন দান করলো ৷ " ( আল জাস্সাস) ৷
দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান না করার এ নির্দেশ শুধু ব্যক্তির জন্যই নয়, বরং ইসলামী সরকারের জন্যেও ৷ ইসলামী শরীয়াত নাহী আনিল মুনকারের ( মন্দ কাজের প্রতিরোধ) যে দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত করেছে তার দাবী এ নয় যে, সে একটি গোয়েন্দা চক্র কায়েম করে মানুষের গোপন দোষ-ক্রুটিসমূহ খুঁজে খুঁজে বের করবে এবং তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবে ৷ বরং যেসব অসৎ প্রবণতা ও দোষ-ত্রুটি প্রকাশ হয়ে পড়বে কেবল তার বিরুদ্ধেই তার শক্তি প্রয়োগ করা উচিত ৷ গোপনীয় দোষ-ত্রুটি ও খারাপ চালচলন সংশোধনের উপায় গোয়েন্দাগিরি নয় ৷ বরং শিক্ষা, ওয়াজ-নসীহত, জনসাধারণের সামগ্রিক প্রশিক্ষণ এবং একটি পবিত্র সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করাই তার একমাত্র উপায় ৷ এ ক্ষেত্রে হযরত উমরের ( রা) এ ঘটনা অতীব শিক্ষাপ্রদ ৷ একবার রাতের বেলা তিনি এক ব্যক্তির কণ্ঠ শুনতে পেলেন ৷ সে গান গাইতেছিল ৷ তাঁর সন্দেহ হলো ৷ তিনি প্রাচীরে উঠে দেখলেন সেখানে শরাব প্রস্তুত , তার সাথে এক নারীও ৷ তিনি চিৎকার করে বললেনঃ ওরে আল্লাহর দুশমন, তুই কি মনে করেছিস যে, তুই আল্লাহর নাফরমানী করবি আর তিনি তোর গোপনীয় বিষয় প্রকাশ করবেন না? জবাবে সে বললোঃ আমীরুল মু'মেনীন , তাড়াহুড়ো করবেন না ৷ আমি যদি একটি গোনাহ করে থাকি তবে আপনি তিনটি গোনাহ করেছেন ৷ আল্লাহ দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়াতে নিষেধ করেছেন ৷ কিন্তু আপনি দোষ-ত্রুটি খুঁজেছেন ৷ আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন, দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করো ৷ কিন্তু আপনি প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছেন ৷ আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, নিজের ঘর ছাড়া অনুমতি না নিয়ে অন্যের ঘরে প্রবেশ করো না ৷ কিন্তু আমার অনুমতি ছাড়াই আপনি আমার ঘরে পদার্পণ করেছেন" ৷ এ জবাব শুনে হযরত উমর ( রা) নিজের ভুল স্বীকার করলেন এবং তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করলেন না ৷ তবে তিনি তার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিলেন যে, সে কল্যাণ ও সুকৃতির পথ অনুসরণ করবে ৷ ( মাকারিমুল আখলাক -আবু বকর মুহাম্মাদ ইবনে জা'ফর আলী খারায়েতী) এ থেকে প্রমানিত হয় যে, খুঁজে খুঁজে মানুষের গোপনীয় দোষ-ত্রুটি বের করা এবং তারপর তাদেরকে পাকড়াও করা শুধু ব্যক্তির জন্যই নয়, ইসলামী সরকারের জন্যও জায়েয নয় ৷ একটি হাদীসও একথা উল্লেখিত হয়েছে ৷ উক্ত হাদীসে নবী ( সা) বলেছেনঃ
---------
"শাসকরা যখন সন্দেহের বশে মানুষের দোষ অনুসন্ধান করতে শুরু করে তখন তাদের চরিত্র নষ্ট করে দেয় ৷ " ( আবু দাউদ) ৷
তবে কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি খোঁজ-খবর নেয়া ও অনুসন্ধান করা একান্তই প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তবে সেটা এ নির্দেশের আওতাভুক্ত নয় ৷ যেমনঃ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর আচার-আচরণে বিদ্রোহের কিছুটা লক্ষণ সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে ৷ ফলে তারা কোন অপরাধ সংঘটিত করতে যাচ্ছে বলে আশংকা সৃষ্টি হলে সরকার তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাতে পারে ৷ অথবা কোন ব্যক্তিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় বা তার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে চায় তাহলে তার ব্যাপারে নিশ্চিত হবার জন্য সে তার সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে ও খোঁজ-খবর নিতে পারে ৷
২৭. এ আয়াতাংশে আল্লাহ তা'আলা গীবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করে এ কাজের চরম ঘৃণিত হওয়ার ধারণা দিয়েছেন ৷ মৃতের গোশত খাওয়া এমনিতেই ঘৃণা ব্যাপার ৷ সে গোশত ও যখন অন্য কোন জন্তুর না হয়ে মানুষের হয়, আর সে মানুষটিও নিজের আপন ভাই হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই ৷ তারপর এ উপমাকে প্রশ্নের আকারে পেশ করে আরো অধিক কার্যকর বানিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে নিজেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে যে, সে কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে প্রস্তুত আছে? সে যদি তা খেতে রাজি না হয় এবং তার প্রবৃত্তি এতে ঘৃণাবোধ করে তাহলে সে কিভাবে এ কাজ পছন্দ করতে পারে যে, সে তার কোন মু'মিন ভাইয়ের অনুপস্থিততে তার মান মর্যাদার ওপর হামলা চালাবে যেখানে সে তা প্রতিরোধ করতে পারে না, এমনকি সে জানেও না যে, তাকে বেইজ্জতি করা হচ্ছে ৷ এ আয়াতাংশ থেকে একথাও জানা গেল যে, গীবত হারাম হওয়ার মূল কারণ যার গীবত করা হয়েছে তার মনোকষ্ট নয় ৷ বরং কোন ব্যক্তির অসাক্ষাতে তার নিন্দাবাদ করা আদতেই হারাম , চাই সে এ সম্পর্কে অবহিত হোক বা না হোক কিংবা এ কাজ দ্বারা সে কষ্ট পেয়ে থাক বা না থাক ৷ সবারই জানা কথা, মৃত ব্যক্তির গোশত খাওয়া এ জন্য হারাম নয় যে, তাতে মৃত ব্যক্তির কষ্ট হয় ৷ মৃত্যুর পর কে তার লাশ ছিঁড়ে খাবলে খাচ্ছে তা মৃত্যুর জানার কথা নয় ৷ কিন্তু সেটা আদতেই অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ ৷ অনুরূপ , যার গীবত করা হয়েছে , কোনভাবে যদি তার কাছে খবর না পৌছে তাহলে কোথায় কোন ব্যক্তি কখন কাদের সামনে তার মান-ইজ্জতের ওপর হামলা করেছিল এবং তার ফলস্বরূপ কার কার দৃষ্টিতে সে নীচ ও হীন সাব্যস্ত হয়েছিল, তা সে সারা জীবনেও জানতে পারবে না ৷ না জানার কারণে এ গীবত দ্বারা সে আদৌ কোন কষ্ট পাবে না ৷ কিন্তু এতে অবশ্যই তার মর্যাদাহানি হবে ৷ তাই ধরণ ও প্রকৃতির দিক থেকে কাজটি মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া থেকে ভিন্ন কিছু নয় ৷ 

২৭. এ আয়াতাংশে আল্লাহ তা'আলা গীবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করে এ কাজের চরম ঘৃণিত হওয়ার ধারণা দিয়েছেন ৷ মৃতের গোশত খাওয়া এমনিতেই ঘৃণা ব্যাপার ৷ সে গোশত ও যখন অন্য কোন জন্তুর না হয়ে মানুষের হয়, আর সে মানুষটিও নিজের আপন ভাই হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই ৷ তারপর এ উপমাকে প্রশ্নের আকারে পেশ করে আরো অধিক কার্যকর বানিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে নিজেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে যে, সে কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে প্রস্তুত আছে? সে যদি তা খেতে রাজি না হয় এবং তার প্রবৃত্তি এতে ঘৃণাবোধ করে তাহলে সে কিভাবে এ কাজ পছন্দ করতে পারে যে, সে তার কোন মু'মিন ভাইয়ের অনুপস্থিততে তার মান মর্যাদার ওপর হামলা চালাবে যেখানে সে তা প্রতিরোধ করতে পারে না, এমনকি সে জানেও না যে, তাকে বেইজ্জতি করা হচ্ছে ৷ এ আয়াতাংশ থেকে একথাও জানা গেল যে, গীবত হারাম হওয়ার মূল কারণ যার গীবত করা হয়েছে তার মনোকষ্ট নয় ৷ বরং কোন ব্যক্তির অসাক্ষাতে তার নিন্দাবাদ করা আদতেই হারাম , চাই সে এ সম্পর্কে অবহিত হোক বা না হোক কিংবা এ কাজ দ্বারা সে কষ্ট পেয়ে থাক বা না থাক ৷ সবারই জানা কথা, মৃত ব্যক্তির গোশত খাওয়া এ জন্য হারাম নয় যে, তাতে মৃত ব্যক্তির কষ্ট হয় ৷ মৃত্যুর পর কে তার লাশ ছিঁড়ে খাবলে খাচ্ছে তা মৃত্যুর জানার কথা নয় ৷ কিন্তু সেটা আদতেই অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ ৷ অনুরূপ , যার গীবত করা হয়েছে , কোনভাবে যদি তার কাছে খবর না পৌছে তাহলে কোথায় কোন ব্যক্তি কখন কাদের সামনে তার মান-ইজ্জতের ওপর হামলা করেছিল এবং তার ফলস্বরূপ কার কার দৃষ্টিতে সে নীচ ও হীন সাব্যস্ত হয়েছিল, তা সে সারা জীবনেও জানতে পারবে না ৷ না জানার কারণে এ গীবত দ্বারা সে আদৌ কোন কষ্ট পাবে না ৷ কিন্তু এতে অবশ্যই তার মর্যাদাহানি হবে ৷ তাই ধরণ ও প্রকৃতির দিক থেকে কাজটি মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া থেকে ভিন্ন কিছু নয় ৷ 

প্রশ্ন: ১০৯ : কোরবানির গরুর পেটে বাচ্চা হলে হুকুম কি?



আবু সাঈদ খুদরী বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমরা উটনী, গাভী ও ছাগী যবেহ করি এবং কখনো কখনো আমরা তার পেটে বাচ্চা পাই। আমরা ঐ বাচ্চা ফেলে দিব, না খাব? রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা হ’লে খাও। কারণ বাচ্চার মাকে যবেহ করা বাচ্চাকে যবেহ করার শামিল’ (আবুদাউদ হা/২৮২৮; মিশকাত হা/৪০৯১-৯২)।

গর্ভবতী পশুর কুরবানী
মাসআলা : ৩০. গর্ভবতী পশু কুরবানী করা জায়েয। জবাইয়ের পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে। তবে প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কুরবানী করা মাকরূহ। -কাযীখান ৩/৩৫০

ক) যদি কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে...

প্রশ্ন
ক) যদি কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে তার বিধান কি? সেটা খাওয়া যাবে, নাকি ফেলে দিবে?
খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর সময় সাময়িক ঋণগ্রস্ত হয় তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি?
উত্তর
ক) কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া গেলে বাচ্চার গোশত খাওয়া যাবে না। তা ফেলে দিতে হবে। তবে মূল পশুর গোশত খাওয়া যাবে এবং কুরবানী সহীহ হবে। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৬৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৬৫৬
প্রকাশ থাকে যে, যে পশুর গর্ভ অল্প দিনের ঐ পশু দ্বারা কুরবানী করা অনুত্তম। আর বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী হলে সে পশু দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ।
খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর দিনগুলোতে সাময়িক ঋণগ্রস্ত থাকে যা পরিশোধ করে দিলে তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে না তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। আর যদি ঋণ আদায় করে দিলেও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার

সারাংশ ঃ 

তবে কোন কোন আলেমের মতে, কুরবাানীর পশুর গর্ভে যে বাচ্চা পাওয়া যায় এবং তা যদি জীবিত পাওয়া যায় তা সদকা করে দেওয়া উত্তম। কারণ, বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী হলে সে পশু দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ।  এবং  আমিও ব্যক্তিগত ভাবে এই মতের সমর্থক। 


প্রশ্ন: ১০৮ : হজরত মুসা [আ.] কর্তৃক আজরাইলকে থাপ্পর মারার ঘটনার কারণ কি ?

একবার ছুটিতে গ্রামের এক ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলাম। সেখানে এক ওয়ায়েজের মুখে শুনলাম, হাদীসে নাকি আছে, হযরত আযরাঈল আ. যখন মূসা আ.-এর রূহ কবজ করতে এসেছিলেন তখন মূসা আ. তাকে এতো জোরে থাপ্পড় মেরেছিলেন যে, তার চক্ষু বের হয়ে গিয়েছিল। এ সংক্রান্ত হাদীসটি কোন কিতাবে আছে এবং তা বিশুদ্ধ কি না? জ্বী, ঘটনাটি সত্য এবং এ সংক্রান্ত হাদীসটি সহীহ। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মালাকুল মাউত (জান কবজকারী ফেরেশতা) কে মূসা আ.-এর নিকট প্রেরণ করা হল। তিনি যখন এলেন তখন মূসা আ. তাকে জোরে থাপ্পড় মারলেন। যার ফলে মালাকুল মাউতের চক্ষু বের হয়ে পড়ল। তখন তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট আরজ করলেন, আপনি আমাকে এমন বান্দার নিকট প্রেরণ করেছেন যিনি মওত চান না। আল্লাহ তাআলা তখন (নিজ কুদরতে) তার চক্ষু আপন স্থানে ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, তুমি আবার যাও এবং তাকে বল-আপনি একটি ষাড়ের পিঠে হাত রাখুন। ঐ হাতের নিচে যত পশম পড়বে আপনি চাইলে এর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে আপনার হায়াত এক বছর করে দীর্ঘায়িত হবে। মূসা আ. এ কথা শুনে বললেন, এরপর কী হবে? আল্লাহ তাআলা বললেন, মৃত্যুই আসবে। মূসা আ. বললেন, তাহলে এখনি মৃত্যু দিন। [সহীহ বুখারী হাদীস : ৩৪০৭; সহীহ মুসলিম হাদীস : ২৩৭২ উল্লেখ্য, বিখ্যাত হাদীস-বিশারদগণ বলেন, মালাকুল মাওত মূসা আ.-এর অনুমতি না নিয়েই মানুষের বেশে তাঁর ঘরে প্রবেশ করেছিলেন। তখন তিনি তাকে না চিনতে পেরে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করার কারণে চপেটাঘাত করেন।-ফাতহুল বারী ৬/৫০৮; শরহে নববী ১৫/১২৯] গ্রন্থনা ও সম্পদানা : মাওলানা মিরাজ রহমান

ডিকশনারী এ্যাপ ব্যবহার করার নিয়ম। (instructions)

আসসালামু আলাইকুম ।

 এই এ্যাপে প্রায় সাড়ে সাতাত্তর হাজার করে  বাংলা,  ইংরেজী ও আরবী শব্দ রয়েছে। 

Next - Go to Dictionary  বাটনে প্রেস করলেই  তিন ভাষায় আলকুরআন ডিকশনারী অটোমেটিক চালু হয়ে যাবে। আপনি সেখানে বংলা, ইংরেজী, আরবী শব্দ দিয়ে ডিকশনারী সার্চ করতে পারবেন এবং এই এ্যাপের সথে একটি আরবী কী বোর্ডও দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি শব্দের পাশে যে নাম্বারিং রয়েছে তা ঐ শব্দের আল কুরআনে অবস্থানের নাম্বার, অর্থাৎ, ঐ শব্দটি আল কুরআনের  এত তম শব্দ। 

মহান আল্লাহ, আমাদের সবাইকে কুরআন হৃদয়ঙ্গম করার, কুরআনের কাছকাছি থাকার এবং কুরআন অনুযায়ী পরিচালিত হবার তৌফিক্ব দান করুন। আমীন। 

এ্যাপ ডাউনলোড লিংক :

 https://play.google.com/store/apps/details?id=quran.alquran.tafhimulquran.arabic.bangla.ovidhan


( এই লিংকটি ইনশাআল্লাহ, আপনাদের ফেসবুক, টুইটার, রেডিট,  গুগল প্লাস, ফেসবুক মেসেঞ্জার ইত্যাদি যে যেখানে পারেন শেয়ার করুন, এবং শেয়ার পাওয়ার পর ঐ ব্যক্তি যদি এ্যাপটি পড়ে তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনিও সওয়াবের অংশীদার হবেন, জাজাকুুমুল্লাহ। কুরআনের শব্দার্থ এ্যাপ অনেকেই খুজেন কিন্তু যথাযথভাবে পান না। তাই আপনি তাদেরকে খুজে পেতে সহায়তা করুন। ইনশাআল্লাহ। )  

প্রশ্ন: ১০৭ : মৃত ব্যক্তির নামে কি কুরবানী করা যাবে? উপযুক্ত দলীল সহকারে বিস্তারিত উত্তর দেন বাধিত করবেন।

ইসলাম ডেস্ক: সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা। এদিন মুসলমানেরা পবিত্র ঈদের নামাজ শেষ করে কোরবানি করে থাকেন। তাই মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি জায়েজ কিনা কিংবা কাদের নামে কোরবানি করা জায়েজ-এ বিষয়ে জ্ঞান থাকা খুবই জুরুরী। তাই নিচের বর্ণনাটি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়েন।
মৃতের পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েয। তবে মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তাহলে সেটি নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে। কোরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। [মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬, কাযীখান ৩/৩৫২]
প্রশ্ন : আমার পিতা গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার নামে কোরবানি করার নিয়ত করেছি। প্রশ্ন হল, মৃত ব্যক্তির নামে দেওয়া কোরবানির গোশত কী করতে হবে? তার অংশের পুরো গোশতই কি সদকা করতে হবে, নাকি নিজেরাও তা খেতে পারব? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর: মৃত ব্যক্তি যদি কোরবানির জন্য ওসিয়ত না করে থাকে তবে তার পক্ষ থেকে দেওয়া কোরবানির গোশতের হুকুম সাধারণ কোরবানির মতো; নিজেরাও খেতে পারবে অন্যদেরকেও দিতে পারবে। পুরোটা সদকা করা জরুরি নয়। তবে মৃত ব্যক্তি যদি অসিয়ত করে যায় এবং তার সম্পদ দ্বারাই কোরবানি করা হয়ে থাকে তাহলে এ কোরবানির পুরো গোশত সদকা করা জরুরি। এ থেকে নিজেদের খাওয়া জায়েয হবে না।
[ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৩৫]
প্রশ্ন: প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই একটি গরু কোরবানি করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে ছওয়াবের উদ্দেশে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কোরবানি দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কোরবানি করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?
উত্তর: হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কোরবানি করলে তা সহীহ হবে এবং আপনারা ঐ অংশের গোশত খেতে পারবেন। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। আর ঐ ভাই পিতার পক্ষ থেকে কোরবানি করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর এ অবস্থায়ও মৃত পিতার পক্ষ থেকে দেওয়া অংশের গোশত কোরবানিদাতার হবে। সে তা নিজেও খেতে পারবে, সদকাও করবে পারবে এবং অন্য শরিককে হাদিয়াও দিতে পারবে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮] -প্রিয় নিউজ
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর

ইমাম আবূ দা'ঊদ এবং ইমাম তিরমিযী এ মর্মে দু'টি হাদীস বর্ণনা করেছেন নিম্নে সে দু'টি নিয়ে আলোচনা করা হলো :

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا شَرِيكٌ عَنْ أَبِي الْحَسْنَاءِ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ حَنَشٍ قَالَ رَأَيْتُ عَلِيًّا يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ فَقُلْتُ لَهُ مَا هَذَا فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانِي أَنْ أُضَحِّيَ عَنْهُ فَأَنَا أُضَحِّي عَنْهُ. (أبوداود : ২৭৯০)

ইমাম আবূ দাঊদ বলেন : আমাদেরকে উসমান ইবনু আবী শাইবাহ্‌ হাদীস বর্ণনা করে (শুনিয়েছেন), তিনি বলেন : আমাদেরকে শারীক হাদীস বর্ণনা করে (শুনিয়েছেন), তিনি আবুল হাসনা হতে, তিনি আল-হাকাম হতে, তিনি হানাশ হতে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন : আমি আলী )ঃ(-কে দু'টি মেষ যাব্‌হ করতে দেখেছি। আমি তাকে বললাম এ কি? (অর্থাৎ দু'টি কেন?) তিনি উত্তরে বললেন : রসূল )সা: ( আমাকে তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য অসিয়্যাত করে গেছেন। তাই আমি তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করছি। [হাদীসটি ইমাম আবূ দাঊদ (২৭৯০) বর্ণনা করেছেন।

আর ইমাম তিরমিযীর ভাষাটি হচ্ছে নিম্নরূপ :

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا شَرِيكٌ عَنْ أَبِي الْحَسْنَاءِ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ حَنَشٍ عَنْ عَلِيٍّ أَنَّهُ كَانَ يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ أَحَدُهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْآخَرُ عَنْ نَفْسِهِ فَقِيلَ لَهُ فَقَالَ أَمَرَنِي بِهِ يَعْنِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَا أَدَعُهُ أَبَدًا.

ইমাম তিরমিযী বলেন : আমাদেরকে মুহাম্মাদ ইবনু ওবাইদ মুহারিবী কূফী হাদীস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তিনি বলেন : আমাদেরকে শারীক হাদীস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তিনি আবুল হাসনা হতে, তিনি আল-হাকাম হতে, তিনি হানাশ হতে, তিনি আলী )ঃ( হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি (আলী) দু'টি মেষ কুরবানী দিতেন একটি নাবী )ব (-এর পক্ষ থেকে আর দ্বিতীয়টি তার নিজের পক্ষ থেকে। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন : আমাকে নাবী )সা:( তা করতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন। অতএব আমি কখনও তা ছাড়ব না। [হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (১৪৯৫) বর্ণনা করেছেন]।

প্রশ্ন: ১০৬ : পরিবারের দশ জনের মধ্যে চার জন সাবালক। এই চার জন সাবালক এর সবাই কি নিজের নিজের নামে কুরবানী দেবে?


উত্তর: জ্বী, চার জন সাবালকের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান (নিজ সম্পদে সামর্থ্যবান) তারা প্রত্যেকেই  কুরবানী দেবে, আর যিনি সামর্থ্যবান নন, তিনি কুরবানী দিবেন না। ধরুন, চার জনের মধ্যে দুইজন  সম্পদশালী, এই দুইজন নিজ নিজ কুরবানী দেবেন। আর বাকী দুইজন সম্পদশালী নন (নিজ সম্পদে সামর্থ্যবান নন), এই বাকী দুইজনকে কুরবানী দিতে হবে না। তবে তাদের পক্ষ থেকে যদি সম্পদশালী ভাইয়েরা কুরবানী দেন, তবে  সেটা ভিন্ন কথা। 

প্রশ্ন: ১০৫ : মুতাশাবিহাত আয়াত কয়টি কি কি ?




﴿هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ ۖ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ ۗ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ﴾
(আলে ইমরান : ৭) তিনিই তোমাদের প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন ৷ এ কিতাবে দুই ধরনের আয়াত আছেঃ এক হচ্ছে, মুহ্কামাত, যেগুলো কিতাবের আসল বুনিয়াদ এবং দ্বিতীয় হচ্ছে, মুতাশাবিহাত৷ যাদের মনে বক্রতা আছে তারা ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সবসময় মুতাশাবিহাতের পিছনে লেগে থাকে এবং তার অর্থ করার চেষ্টা করে থাকে৷ অথচ সেগুলোর আসল অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না ৷ বিপরীত পক্ষে পরিপক্ক জ্ঞানের অধিকারীরা বলেঃ ‘‘আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, এসব আমাদের রবের পক্ষ থেকেই এসেছে’’ ৷ আর প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানবান লোকেরাই কোন বিষয় থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে৷ 
৫. মুহকাম পাকাপোক্ত জিনিসকে বলা হয়৷ এর বহুবচন 'মুহকামাত'৷ 'মুহকামাত আয়াত' বলতে এমন সব আয়াত বুঝায় যেগুলোর ভাষা একেবারেই সুস্পষ্ট, যেগুলোর অর্থ নির্ধারণ করার ব্যাপারে কোন প্রকার সংশয়-সন্দেহে অবকাশ থাকে না, যে শব্দগুলো দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য উপস্থাপন করে এবং যেগুলোর অর্থ বিকৃত করার সুযোগ লাভ করা বড়ই কঠিন৷ এ আয়াতগুলো 'কিতাবের আসল বুনিয়াদ' ৷ অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে এ আয়াতগুলো সেই উদ্দেশ্য পূর্ণ করে৷ এ আয়াতগুলোর মাধ্যমে দুনিয়াবাসীকে ইসলামের দিকে আহবান জানানো হয়েছে৷ এগুলোতেই শিক্ষা ও উপদেশের কথা বর্ণিত হয়েছে৷ ভ্রষ্টতার গলদ তুলে ধরে সত্য-সঠিক পথের চেহারা সুস্পষ্ট করা হয়েছে৷ দীনের মূলনীতি এবং আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত, চরিত্রনীতি,দায়িত্ব-কর্তব্য ও আদেশ-নিষেধের বিধান এ আয়াতগুলোতেই বর্ণিত হয়েছে৷ কাজেই কোন সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তি কোন্ পথে চলবে এবং
৬. 'মুতাশাবিহাত' অর্থ যেসব আয়াতের অর্থ গ্রহণে সন্দেহ-সংশয়ের ও বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে দেবার অবকাশ রয়েছে৷
বিশ্ব-জাহানের অন্তর্নিহিত সত্য ও তাৎপর্য, তার সূচনা ও পরিণতি, সেখানে মানুষের অবস্থান, মর্যাদা ও ভূমিকা এবং এ ধরনের আরো বিভিন্ন মৌলিক বিষয় সম্পর্কিত সর্বনিম্ন অপরিহার্য তথ্যাবলী মানুষকে সরবরাহ না করা পর্যন্ত মানুষের জীবন পথে চলার জন্য কোন পথনির্দেশ দেয়া যেতে পারে না, এটি একটি সর্বজন বিদিত সত্য৷ আবার একথাও সত্য, মানবিক ইন্দ্রিয়ানভুতির বাইরের বস্তু-বিষয়গুলো, যেগুলো মানবিক জ্ঞানের আওতায় কখনো আসেনি এবং আসতেও পারে না, যেগুলোকে সে কখনো দেখেনি, স্পর্শ করেনি এবং যেগুলোর স্বাদও গ্রহণ করেনি, সেগুলো বুঝাবার জন্য মানুষের ভাষার ভাণ্ডারে কোন শব্দও রচিত হয়নি এবং প্রত্যেক শ্রোতার মনে তাদের নির্ভুল ছবি অংকিত করার মতো কোন পরিচিত বর্ণনা পদ্ধতিও পাওয়া যায় না৷ কাজেই এ ধরনের বিষয় বুঝাবার জন্য এমন সব শব্দ ও বর্ণনা পদ্ধথিত অবলম্বন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যেগুলো প্রকৃত সত্যের সাথে নিকটতর সাদৃশ্যের অধিকারী অনুভবযোগ্য জিনিসগুলো বুঝাবার জন্য মানুষের ভাষায় পাওয়া যায়৷ এ জন্য অতি প্রাকৃতিক তথা মানবিক জ্ঞানের ঊর্ধের ও ইন্দ্রিয়াতীত বিষয়গুলো বুঝাবার জন্য কুরআন মজীদে এ ধরনের শব্দ ও ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে৷ যেসব আয়াতে এ ধরনের ভাষা ও শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোকেই 'মুতাশাবিহাত' বলা হয়৷
কিন্তু এ ভাষা ব্যবহারের ফলে মানুষ বড়জোর সত্যের কাছাকাছি পৌছতে পারে অথবা সত্যের অস্পষ্ট ধারণা তার মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে, এর বেশী নয়৷ এ ধরনের আয়াতের অর্থ নির্ণয়ের ও নির্দিষ্ট করনের জন্য যত বেশী চেষ্টা করা হবে তত বেশী সংশয়-সন্দেহ ও সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে৷ ফলে মানুষ প্রকৃত সত্যের নিকটতর হবার চাইতে বরং তার থেকে আরো দূরে সরে যাবে৷ কাজেই যারা সত্যসন্ধানী এবং আজেবাজে অর্থহীন বিষয়ের চর্চা করার মানসিকতা যাদের নেই, তারা 'মুতাশাবিহাত' থেকে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে অস্পষ্ট ধারণা লাভ করেই সন্তুষ্ট থাকে৷ এতটুকুন ধারণাই তাদের কাজ চালাবার জন্য যথেষ্ট হয়৷ তারপর তারা 'মুহ্‌কামাত' এর পেছনে নিজেদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে৷ কিন্তু যারা ফিত্‌নাবাজ অথবা বাজে কাজে সময় নষ্ট করতে অব্যস্ত, তাদের কাজই হয় মুতাশাবিহাতের আলোচনায় মশগুল থাকা এবং তার সাহায্যেই তারা পেছন দিয়ে সিঁদ কাটে৷
৭. এখানে এ অমূলক সন্দেহ করার কোন প্রশ্নই ওঠে না যে, মুতাশাবিহাতের সঠিক অর্থ যখন তারা জানে না তখন তারা তার ওপর কেমন করে ঈমান আনে? আসলে একজন সচেতন বিবেক-বুদ্ধির অধিকারী ব্যক্তির মনে মুতাশাবিহাত আয়াতগুলোর দূরবর্তী অসংগত বিশ্লেষন ও অস্পষ্ট বিকৃত ব্যাখার মাধ্যমে কুরআন আল্লাহর কিতাব হবার বিশ্বাস জন্মে না৷ এ বিশ্বাস জন্মে মুহকামাত আয়াতগুলো অধ্যায়নের মাধ্যমে৷ মুহকামাত আয়াতগুরোর মধ্যে চিন্তা-গবেষণা করার পর যখন তার মনে কুরআন আল্লাহর কিতবা হবার ব্যপারে পরিপূর্ণ নিশ্চিন্ততা আসে তখন মুতাশাবিহাত তার মনে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব ও সংশয় সৃষ্টিতে সক্ষম হয় না৷ তাদের যতটুকু সরল অর্থ সে অনুধাবন করতে সক্ষম হয় ততটুকুই গ্রহণ করে নেয় করার নামে উল্‌টা সিধা অর্থ করার পরিবর্তে সে আল্লাহর কালামের ওপর সামগ্রিকভাবে ঈমান এনে কাজের কথাগুলোর দিকে নিজে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয়৷



﴿الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ الرَّحْمَٰنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا﴾
( আল ফুরকান : ৫৯) তিনিই ছয়দিনে আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী এবং তাদের মাঝখানে যা কিছু আছে সব তৈরি করে রেখে দিয়েছেন, তারপর তিনিই (বিশ্ব-জাহানের সিংহাসন) আরশে সমাসীন হয়েছেন,৭২ তিনিই রহমান, যে জানে তাকে জিজ্ঞেস করো তাঁর আবস্থা সম্পর্কে৷ 
৭২. মহান আল্লাহর আরশের ওপর সমাসীন হবার বিষয়টি ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল আরাফ ৪১-৪২, ইউনুস ৪ এবং হূদ ৭ টীকা৷
পৃথিবী ও আকাশমন্ডলী ছ'দিনে তৈরি করার বিষয়টি মুতাশাবিহাতের অন্তরভূক্ত৷ এর অর্থ নির্ধারণ করা কঠিন৷ হতে পারে একদিন অর্থ একটি যুগ, আবার এও হতে পারে, দুনিয়ায় আমরা একদিন বলতে যে সময়টুকু বুঝি একদিন অর্থ সেই পরিমাণ সময়৷ (বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন সূরা হা-মীম-আস্ সাজদাহ ১১-১৫ টীকা)৷



﴿تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ﴾
( মাআরিজ : ৪) ফেরেশতারা এবং রূহ   তার দিকে উঠে যায়   এমন এক দিনে যা পঞ্চাম হাজার বছরের সমান৷  
৪ . এ পুরো বিবরণটি "মুতাশাবিহাতের" অন্তরভুক্ত৷ এর কোন নির্দিষ্ট অর্থ করা যায় না৷ আমরা ফেরেশতার সঠিক তাৎপর্য কি তা জানিনা৷ আমরা তাদের উর্ধারোহণের সঠিক রূপও জানি না৷ যে ধাপগুলো পেরিয়ে ফেরেশতারা ওপরে ওঠেন তা কেমন তাও আমরা জানি না৷ মহান আল্লাহ সম্পর্কে ও এ ধারণ করা যায় না যে, তিনি কোন বিশেষ স্থানে অবস্থান করেন৷ কারণ তাঁর মহান সত্তা স্থান ও কালের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়৷
৫ . সূরা হজ্জের ৪৭ আয়াতে বলা হয়েছেঃ এসব লোক এ মুহূর্তেই আযাব নিয়ে আসার জন্য তোমার কাছে দাবী করেছে৷ আল্লাহ কখনো তাঁর প্রতিশ্রুতি ভংগ করবেন না৷ তবে তোমরা রবের হিসেবের একদিন তোমাদের হিসেবের হাজার হাজার বছরের সমান হয়ে থাকে৷ সূরা আস সাজদার ৫ আয়াতে বলা হয়েছেঃ "তিনি আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত গোটাবিশ্ব -জাহানের সব বিষয় পরিচালন করেন৷ এরপর (তার রিপোর্ট) এমন একটি দিনে তার কাছে পৌছে যা তোমাদের গণনার এ হাজার বছরের সমান৷" আর এখানে আযাব দাবী করার জবাবে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহ তা"আলার একদিন পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান৷ এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে যারা বিদ্রুপ করে আযাব দাবী করেছে তাদের এসব কথায় ধৈর্য ধারণ করুন৷ তারপর বলা হচ্ছে, এসব লোক আযাবকে দূরে মনে করছে৷ কিন্তু আমি দেখছি তা অত্যাসন্ন ৷ এসব বক্তব্যের প্রতি সামগ্রিকভাবে দৃষ্টিপাত করলে এ বিষয়টি ষ্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, মানুষ তার মন-মানসিকতা, চিন্তা ও দৃষ্টির পরিসর সংকীর্ণ হওয়ার কারণে আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত বিষয়াবলিকে নিজেদের সময়ের মান অনুযায়ী পরিমাপ করে থাকে৷ তাই একশো বছর বা পঞ্চাশ বছর সময়ও তাদের কাছে অত্যন্ত দীর্ঘ সময় বলে মনে হয়৷ কিন্তু আল্লাহর এক একটি পরিকল্পনা হাজার হাজার বছর বা লাখ লাখ বছর মেয়াদের হয়ে থাকে৷এ সময়টিও বলা হয়েছে উদাহরণ হিসেবে৷ প্রকৃতপক্ষে মহা বিশ্ব ভিত্তিক পরিকল্পনা লক্ষ লক্ষ ও শত শত কোটি বছর মেয়াদেও হয়ে থাকে৷ এসব পরিকল্পনার মধ্য থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনার অধীনে এ পৃথীবীতে মানব জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে৷ এরপর একটা নির্দিষ্ট সময় দেয়া হয়েছে৷ সে অনুযায়ী তাদেরকে এখানে একটি বিশেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করার অবকাশ দেয়া হবে৷ কোন মানুষই জানে না এ পরিকষ্পনা কখন শুরু হয়েছে, তা কার্যকরী করার জন্য কি পরিমাণ সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তার পরিসমাপ্তির জন্য কোন মুহুর্তটি নির্ধারিত করা হয়েছে যে, মুহুর্তটিতে কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত জন্মলাভকারী সমস্ত মানুষকে এক সাথে জীবিত করে উঠিয়ে বিচার করার জন্য কোন সময়টি ঠিক করে রাখা হয়েছে৷ আমরা এ মহা পরিকল্পনার ততটুকুই কেবল জানি যতটুকু আমাদের চোখের সামনে সংঘটিত হচ্ছে অথবা অতীত মহাকালে সংঘটিত ঘটনাবলীর যে আংশিক ইতিহাসটুকু আমাদের সামনে বিদ্যমান আছে৷ এর সূচনা ও পরিণতি সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় ,সে সম্পর্কে জানা তো দূরের কথা তা বুঝাও তো কোন প্রশ্নেই ওঠে না৷ এখন কথা হলো, যেসব লোক দাবী করছে যে, এ পরিকল্পনা বাদ দিয়ে তার পরিনাম এখনই তাদের সামনে এনে হাজির করা হোক৷ আর যদি তা না করা হয় তাহলে পরিণাম সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে সেটিই মিথ্যা, তারা আসলে নিজেদের অজ্ঞতাই প্রমাণ করেছে৷ (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাহফীমুল কুরআন, সূরা আল হজ্ব, টীকা৯২-৯৩ এবং আস সাজদা, টীকা ৯) 


﴿ذِي قُوَّةٍ عِندَ ذِي الْعَرْشِ مَكِينٍ﴾
( তাকভীর ২০) যিনি বড়ই শক্তিধর ,১৫  আরশের মালিকের কাছে উন্নত মর্যাদার অধিকারী ,  
১৫ . সূরা আন নাজমের ৪ - ৫ আয়াতে এই বিষয়বস্তুটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে:
" এ তো একটি ওহী, যা তার ওপর নাযিল করা হয়৷ প্রবল শক্তির অধিকারী তাকে তা শিখিয়েছেন ৷ ' জিব্রীল আলাইহিস সালামের সেই প্রবল ও মহাপরাক্রমশালী শক্তি কি ? এটি আসলে " মুতাশাবিহাত " এর অন্তরভুক্ত ৷ আল্লাহ ছাড়া এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্য কারোর জানা নেই ৷ তবে এ থেকে এতটুকু কথা অবশ্যি জানা যায় যে , নিজের অসাধারণ ক্ষমতার দিক দিয়ে তিনি ফেরেশতাদের মধ্যেও বৈশিষ্টের অধিকারী ৷ মুসলিম শরীফে কিতাবুল ঈমানে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই উক্তি উদ্ধৃত করেছেন : আমি দু ' বার জিব্রীলকে তার আসল আকৃতিতে দেখেছি৷ তাঁর বিশাল সত্তা আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী সমগ্র মহাশূন্য জুড়ে বিস্তৃত ছিল৷ বুখারী , মুসলিম , তিরমিযী ও মুসনাদে আহমদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে , রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ছ'টি ডানা সমন্নিত অবস্থায় দেখেছেন৷ এ থেকে তাঁর অসাধারণ শক্তির বিষয়টি কিছুটা আন্দাজ করা যেতে পারে৷




প্রশ্ন : ১০৪ : যদি বাসায় আমার স্ত্রীর সাথে জামায়েতে নামায পড়ি মসজিদের জামায়েতের সমান সওয়াব পাবো ?



উত্তর : না সমান সওয়াব পাবেন না। বরং, এটা হলো এ্যাকসিডেন্টালী যদি আপনি মসজিদে জামায়াতের সময়ে উপস্থিত হতে না পারেন। সেক্ষেত্রে স্ত্রী ও পরিবারকে নিয়ে নামাজ পড়া উত্তম, এতে ঘরে নামাজের পরিবেশ বজায় থাকে

প্রশ্ন : ১১৩ : মহিলাদের রুকু এবং পুরুষের রুকু একই রকম কিনা ? দলিল সহ বিস্তারিত জানতে চাই।


عن عبد الله بن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا جلست المرأة في الصلوة وضعت فخذها على فخذها الاخرى وإذا سجدت الصقت بطنها في فخذيها كالستر ما يكون لها وان الله تعالى ينظر إليها ويقول يا ملائكتى اشهدكم انى قد غفرت لها
অনুবাদ: ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, “নবী (সাঃ) বলেন, “যখন একটি মহিলা নামায পড়ে, সে যেনো তার এক উরুর উপর তার অন্য উরুকে রাখে এবং তার উরুর সাথে তার পেট মিশিয়ে রাখে যাতে তার জন্য অধিকতর গোপনীয়তা রক্ষা হয়। প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ তার দিকে তাকান এবং ফেরেশতাদেরকে বলেন! “হে ফেরেশতাগণ, তোমরা সাক্ষী থাক যে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম”। [সুনান আল বায়হাকী আল কুবরা (৩/৭৪)]




عن يزيدَ بن أبي حبيب أنَّ رسولَ الله مَرَّ عَلَى امرأتينِ تصليانِ، فقال : «إذَا سَجَدْتُمَا فَضُمَّا بعضَ اللحمِ إلى الأرضِ، فإنَّ المرأةَ لَيْسَتْ في ذلِكَ كالرجلِ

অনুবাদঃ ইয়াজীদ ইবনে আবি হাবীব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) নামাযরত দুটি মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এবং বললেন, “যখন তোমরা সিজদা করো, তোমরা তোমাদের শরীর মাটিতে মিশিয়ে রাখবে কারণ, এইক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের মত না” [সুনান আল বায়হাকী আল কুবরা (৩/৭৪)]
ই’লাল আল সুন্নাহ (৩/২৬) বইতে বলা হয়েছে যে, এই হাদিসের রাবীরা নির্ভরযোগ্য ও বাতিল নন।



عن عليّ قال: إذا سجدت المرأة فلتحتفر ولتضم فخذيها.

অনুবাদ: আমির উল মুমিনীন সায়্যিদিনা আলী (রাঃ) বলেন: “যখন একজন নারী সিজদাতে যায় তার নিতম্বের উপর বসার সময় একপাশে হেলে বসা উচিত এবং তার একটির উরুর কাছাকাছি অন্য উরু রাখা উচিত [মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, (১/৩০২, হাদীস # ২৭৭৩)]



عن خالد بن اللجلاج قال: كن النساء يؤمرن أن يتربعن إذا جلسن في الصلاة ولا يجلسن جلوس الرجال على أوراكهن

অনুবাদ: খালিদ ইবনে জিল্লাজ (রাঃ) বর্ণনা করেন: নারীদেরকে আদেশ করা হয়েছে নামাযে বসা অবস্থায় তারাব্বু করতে এবং তারা “তাদের পুরুষদের মত বসা উচিত নয়” [মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বান (১/৩০৩)]
উল্লেখ্য: তারাব্বু মানে আড়াআড়িভাবে পা রেখে বসা।


উম্মে দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি নামাযে পুরুষদের মতোই বসতেন ([মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ ১/২০৭ হাদীস নং ২৭৮৫, এবং উমদাতুল কারী ৬/১০১, সনদ কুয়ি, আল তারিখ আল সাগীর আল-বুখারী ১/২২৩, তারিখ দামিস্ক আল ইবনে আসাকির ৭৪/১১৭, এবং তাগলিক আল তালিক ২/৩২৯)



(عن نافع، عن ابن عمر أنه سئل كيف كن النساء يصلين على عهد رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم أي في زمانه صلى اللّه عليه وسلم (قال: كن يتربعن) أي في حال قعودهن (ثم أمرن أن يحتفزن
অনুবাদ: ইবনে উমরকে (রাঃ) প্রশ্ন করা হয়েছিলো, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সময় মহিলারা কিভাবে বসতেন সে সম্পর্কে। তিনি বলেন: শুরুর দিকে তারা “তারাব্বু” করতেন কিন্তু পরে তারা ‘ইহতিফায’ করতে আদিষ্ট হন [মুসনাদ ইমাম আবু হানিফা (১/১২০)]।


حدّثنا أبو بكر قال نا ابن مبارك عن هشام عن الحسن قال: المرأة تضم في السجود
অনুবাদ: হাসান আল বসরী (রহঃ) বলেন: একজন মহিলা সিজদার সময় নিজেকে জড়োসড়ো করে রাখা উচিত। [মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বান (১/২৭০)]



وعن وائلِ بنِ حجرٍ قالَ: قالَ لي رسولُ الله صلى الله عليه وسلّم : «يا وائلُ بنَ حجرٍ إِذَا صَلَّيْتَ فَاجْعَلْ يَدَيْكَ حِذَاءَ أُذُنَيْكَ، والمَرْأَةُ تَجْعَلُ يَدَيْهَا حِذَاءَ ثَدْيَيْهَا».
অনুবাদ: ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) তাঁকে বলেছেন, তুমি যখন (পুরুষ) নামায শুরু করো তখন তোমার কান পর্যন্ত হাত তুলবে, যেখানে একজন মহিলা (কেবলমাত্র) তার কাঁধ পর্যন্ত তাদের হাত তুলবে। [মাজমু আজ-জাওয়েদ (২/১০৩), ই’লা আস-সুন্নান (২/১৫৬)]



ইবনে কুদামাহ (রহঃ) বলেন “প্রকৃতপক্ষে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য নামাযের পদ্ধতি এক বলেই প্রমাণিত হয়েছে শুধুমাত্র এটা ছাড়া যে তারজন্য রুকু এবং সিজদার সময় নিজেকে আবৃত রাখা মুস্তাহাব” [আল মুগনি ২/২৫৮]

Privacy Policy for quran.alquran.tafhimulquran.arabic.bangla.ovidhan app package

quran.alquran.tafhimulquran.arabic.bangla.ovidhan Privacy Policy

This Privacy Policy describes how your personal information is collected, used, and shared when you use this app - package name: uberrider.rider.bangla (the app).

PERSONAL INFORMATION WE COLLECT

When you use this app, we automatically collect certain information about your device, including information about your name, phone number, time zone, dates  are installed on your device. Additionally, as you use this app, we use your sd card as wel as your device storage, your device location, collect information about how you interact with the app. We refer to this automatically-collected information as - Device Information.

We collect your Device Information using the following technologies:

    -  Cookies - are data files that are placed on your device or computer and often include an anonymous unique identifier. For more information about cookies, and how to disable cookies, visit http://www.allaboutcookies.org.
    - Log files  - track actions occurring on the App, and collect data including your IP address, device type, Internet service provider, referring/exit pages, and date/time stamps.
    - Web beacons, tags, and pixels are electronic files used to record information about how you use the App.
    - Device location - as it is a finding driver app, we have to know your location, so that the driver who accepted your request can easily find you and provide the service where you want to go.
    - Device Service - we  use your device service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request. 
    - Device Messaging Service - we use your devices messaging service part, as the drivers send you messages, and send messages when they accept your request. 
    - Additionally when you make a request or attempt to make a request through the app, we collect certain information from you, including your name, location, place, addresses  and phone number.  We refer to this information as - request Information.
    

When we talk about - Personal Information- in this Privacy Policy, we are talking both about Device Information and request Informations.

HOW DO WE USE YOUR PERSONAL INFORMATION?

We use the request Information that we collect generally to fulfill any request placed through the App (including processing your location information, arranging drivers, and providing you with invoices and/or request confirmations).  Additionally, we use this request Information to:
    -Communicate with you;
    -Screen your request for potential risk or fraud; and
When in line with the preferences you have shared with us, provide you with information or advertising relating to our products or services.

We use the Device Information that we collect to help us screen for potential risk and fraud (in particular, your IP address), and more generally to improve and optimize our App (for example, by generating analytics about how our customers request and interact with the App, and to assess the success of our marketing and advertising campaigns).


SHARING YOUR PERSONAL INFORMATION

We share your Personal Information with third parties to help us use your Personal Information, as described above.  For example, we use Shopify to power our online store--you can read more about how Shopify uses your Personal Information here:  https://www.shopify.com/legal/privacy.  We also use Google Analytics to help us understand how our customers use the Site--you can read more about how Google uses your Personal Information here:  https://www.google.com/intl/en/policies/privacy/.  You can also opt-out of Google Analytics here:  https://tools.google.com/dlpage/gaoptout.

Finally, we may also share your Personal Information to comply with applicable laws and regulations, to respond to a subpoena, search warrant or other lawful request for information we receive, or to otherwise protect our rights.

BEHAVIOURAL ADVERTISING
As described above, we use your Personal Information to provide you with targeted advertisements or marketing communications we believe may be of interest to you.  For more information about how targeted advertising works, you can visit the Network Advertising Initiative’s (-NAI-) educational page at http://www.networkadvertising.org/understanding-online-advertising/how-does-it-work.

You can opt out of targeted advertising by:
[[
  INCLUDE OPT-OUT LINKS FROM WHICHEVER SERVICES BEING USED.
  COMMON LINKS INCLUDE:
    FACEBOOK - https://www.facebook.com/settings/?tab=ads
    GOOGLE - https://www.google.com/settings/ads/anonymous
    BING - https://advertise.bingads.microsoft.com/en-us/resources/policies/personalized-ads
]]

Additionally, you can opt out of some of these services by visiting the Digital Advertising Alliances opt-out portal at:  http://optout.aboutads.info/.

DO NOT TRACK
Please note that we do not alter our App data collection and use practices when we see a Do Not Track signal from your browser.

YOUR RIGHTS
If you are a European resident, you have the right to access personal information we hold about you and to ask that your personal information be corrected, updated, or deleted. If you would like to exercise this right, please contact us through the contact information below.

Additionally, if you are a European resident we note that we are processing your information in order to fulfill contracts we might have with you (for example if you make an order through the app), or otherwise to pursue our legitimate business interests listed above.  Additionally, please note that your information will be transferred outside of Europe, including to Canada and the United States.

DATA RETENTION
When you place a request through the app, we will maintain your Order Information for our records unless and until you ask us to delete this information.



Before you continue, you are asked to give the app those above permissions. IF YOU ARE NOT READY TO GIVE THIS APP THOSE ABOVE PERMISSIONS, WELL, SO, YOU MAY UNINSTALL THE APP FROM YOUR DEVICE.  

MINORS
The App is not intended for individuals under the age of 10.

CHANGES
We may update this privacy policy from time to time in order to reflect, for example, changes to our practices or for other operational, legal or regulatory reasons.

CONTACT US
For more information about our privacy practices, if you have questions, or if you would like to make a complaint, please contact us by e-mail at noorhossain888@gmail.com or by mail using the details provided below:

Shibchar, Madaripur, Bangladesh, Phone: +88-01879115953.
E-mail: noorhossainappupload@gmail.com

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...