মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী

 প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার ইসালে সওয়াবের জন্য কুরবানি দেওয়া যাবে? 


উত্তর: মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানি করা জায়েজ। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানি হিসেবে গণ্য হবে। 

কুরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। 

আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। 

তথ্যসূত্র: মুসনাদে আহমাদ ১/১০৭, হাদিস ৮৪৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; কাযীখান ৩/৩৫২

============================================

প্রশ্নঃ মৃত মানুষের নামে কোরবানি হবে কী?

উত্তরঃ মৃত মানুষের নামে কোরবানি করা মুস্তাহাব। করলে ভালো, উনি সওয়াব পাবেন। এছাড়াও নবীর নামে, আল্লাহর নামে, কোনো নেতার নামে কেউ চাইলে কোরবানি দিতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এটা দিতে হবে উনাদের পক্ষ থেকে, উনাদের নামে কোরবানি দেয়া যাবে না। নবীর নামে, আল্লাহর নামে, পিতামাতার নামে, এই নাম শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলতে হবে উনাদের পক্ষ থেকে। কোরবানি শুধুমাত্র আল্লাহর নামে হতে হবে, অন্য যে কারো নামেই হোক সেটা হারাম হয়ে যাবে।

================================


প্রশ্ন ১৩২ --> মৃত ব্যক্তির পক্ষে কুরবানী দেওয়া যায় কি?

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

মূলত কুরবানী যথাসময়ে জীবিত ব্যক্তির তরফ থেকেই হওয়া বাঞ্ছনীয়। অবশ্য ইচ্ছা করলে তার সওয়াবে জীবিত অথবা মৃত আত্মীয়-স্বজনকেও শরীক করতে পারে। যেহেতু আমরা দেখি রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবাগণ নিজেদের এবং পরিবার-পরিজনদের তরফ থেকে কুরবানী করতেন।

অনেকের ধারণা কুরবানী শুধু মৃত ব্যক্তিদের জন্য বা তাদের পক্ষ থেকে করা হবে। এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। মৃত ব্যক্তির তরফ থেকে পৃথক কুরবানী করার কোন দলীল নেই। তবে মৃত ব্যক্তিদের জন্য কুরবানী করা জায়েয ও একটি সওয়াবের কাজ। কুরবানী একটি সাদকা। আর মৃত ব্যক্তির নামে যেমন সদকা করা যায় তেমনি তার নামে কুরবানীও দেয়া যায়। মৃতব্যক্তি এর দ্বারা উপকৃত হবে, ইনশাআল্লাহ। উপরন্তু, মৃতব্যক্তি এ ধরনের পূণ্যকর্মের মুখাপেক্ষীও থাকে। যেমন, মৃত ব্যক্তির জন্য সাদকার বিষয়ে হাদীসে এসেছে

# আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (রা.) এর কাছে এসে জিজ্ঞের করল, ‘হে রাসূল! আমার মা হাঠাৎ ইমেত্মকাল করেছেন। কোন অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোন কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০০৪)।

মৃত ব্যক্তির জন্য এ ধরনের সদকা ও কল্যাণমূলক কাজের যেমন যথেষ্ট প্রয়োজন ও তেমনি তার জন্য উপকারী। 
যদি কোন কারণে মৃত ব্যক্তির জন্য কুরবানী ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কুরবানী করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তি নিজেকে বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য মৃত ব্যক্তির পক্ষে কুরবানী করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ভাল কাজ নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয় তারপর অন্যান্য জীবিত ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা যেতে পারে । যেমন হাদিসে এসেছে-

# আয়েশা (রা.) ও আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কুরবানী দিতে ইচ্ছা করলেন তখন দু‘টো দুম্বা ক্রয় করলেন। যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিংওয়ালা ,সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তার ঐ সকল উম্মতের জন্য কুরবানী করলেন; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তার রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে, অন্যটি তার নিজের ও পরিবারবর্গের জন্য কুরবানী করেছেন। (ইবনে মাজা, হাদিসটি সহীহ)

মৃত ব্যক্তি যদি তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাউকে কুরবানী করার অসিয়ত করে যান, অথবা কিছু ওয়াকফ করে তার অর্জিত অর্থ থেকে কুরবানীর অসিয়ত করে যায়, তবে তার অসীর জন্য ঐ মৃতের কুরবানী করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে কুরবানী না করে ঐ অর্থ সাদকাহ খাতে ব্যয় করা বৈধ নয়। করণ, তা সুন্নাহর পরিপন্থী এবং অসিয়তের রূপান্তর। অন্যথা, যদি কুরবানীর জন্য অসিয়তকৃত অর্থ সংকুলান না নয়, তাহলে দুই অথবা ততোধিক বছরের অর্থ একত্রিত করে কুরবানী দিতে হবে। অবশ্য নিজের তরফ থেকে বাকী অর্থ পূরণ করে কুরবানী করলে তা সর্বোত্তম । মোটকথা, অসীর উচিত, সূষ্ঠ ভাবে অসীয়ত কার্যকর করা এবং যাতে মৃত অসীয়তকারীর উপকারও লাভ হয় তারই যথার্থ প্রয়াস করা। উল্লেখ্য যে, রাসূল (সা.) কর্তৃক আলী (রা.) কে কুরবানীর অসিয়ত করার হাদীসটি যঈফ। (যঈফ আবূ দাউদ, হাদীস নং ৫৯৬; যঈফ তিরমিজী, হাদীস নং ২৫৫; যঈফ ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ৬৭২; মিশকাত, হাদীস নং ১৪৬২ এর টীকা দ্র.)।

একাধিক মৃতব্যক্তিকে একটি মাত্র কুরবানীর সওয়াবে শরীক করাও বৈধ; যদি তাদের মধ্যে কারো ওপর কুরবানী ওয়াজিব না হয়ে থাকে তবে। রাসূল (সা.) নিজের তরফ থেকে, পরিবার-পরিজনের তরফ থেকে এবং তার উম্মতের তরফ থেকে কুরবানী করেছেন; যারা আল্লাহর জন্য তাওহীদের সাক্ষ্য দিয়েছে এবং তার জন্য রিসালাত বা প্রচারের সাক্ষ্য দিয়েছে। (মুসনাদ আহমদ, ৬/৩৯১-৩৯২) এখানে উল্লেখ্য যে, ঐ সাক্ষ্য প্রদানকারী কিছু উম্মত তার যুগেই মারা গিয়েছিল। অতএব একই কুরবানীতে কেউ নিজ মৃত পিতা-মাতা ও দাদা-দাদীকেও সওয়াবে শামিল করতে পাবে। 

তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, একটি কুরবানীকে নিজের তরফ থেকে না দিয়ে কেবলমাত্র মৃতের জন্য নির্দিষ্ট করা ঠিক নয় এবং এতে আল্লাহ তা‘আলার সীমাহীন করুণা থেকে বঞ্চিত হওয়া উচিত নয়। বরং উচিত হচ্ছে, নিজের নামের সাথে জীবিত-মৃত অন্যান্য আত্মীয়-পরিজনকে কুরবানীর নিয়তে শামিল করা। যেমন- আল্লাহর নবী (সা.) কুরবানী যবেহ করার সময় বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! এ (কুরবানী) মুহাম্মাদের তরফ থেকে এবং মুহাম্মাদের বংশধরের তরফ থেকে।’ সুতরাং তিনি নিজের নাম প্রথমে নিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে বংশধরদেরকেও তার সওয়াবে শরীক করেছেন।

সালাতের নিষিদ্ধ সময়

 উকবা বিন আমের (রা.) বলেন, ‘তিনটি সময়ে রাসুল (সা.) আমাদের নামাজ পড়তে এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়, যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়; সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত; আর যখন সূর্য অস্ত যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৩)


আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই; আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫১)

সুতরাং নামাজের নিষিদ্ধ সময় পাঁচটি—

১. সূর্যোদয়ের সময়, যতক্ষণ না তার হলুদ রং ভালোভাবে চলে যায় এবং আলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর জন্য আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।

২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময়, যতক্ষণ না তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে।

৩. সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে কেউ যদি ওই দিনের আসরের নামাজ সঠিক সময়ে পড়তে না পারে, তাহলে সূর্যাস্তের আগে হলেও তা পড়ে নিতে হবে। তবে এটি কাজা হিসেবে পড়বে না।

৪. ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত।

৫. আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, যেহেতু সূর্যের উদয় ও অস্ত সব সময় একই সময়ে হয় না, তাই ঘড়ির সময় অনুপাতে তা বর্ণনা করা কঠিন। সুতরাং এর জন্য স্থায়ী ক্যালেন্ডারের সাহায্য নেয়া যায়।

মাহরাম ও গায়রে মাহরামদের সামনে নারী ও পুরুষের সতর ও পর্দা

 এক হল শরীরের পর্দা, আরেক হল শরীরের সতর।


পুরুষের সতর : 

পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত। অর্থাৎ এতটুকু স্থান অন্য ব্যক্তিদের সামনে ঢেকে রাখা ফরজ। বাকি মানুষের সামনে যাওয়ার সময় ক্ষেত্র ও সমাজ হিসেবে যা শালীন, ও তাকওয়া প্রকাশক করে এমন পোশাক পরিধান করা উত্তম।


মাহরামদের সামনে মহিলাদের সতর: 

আর মাহরামদের সামনে মহিলাদের সতর হল, মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর সতর। {ফাতাওয়া হিন্দিয়া-৫/৩২} । অর্থাৎ, মাহরামদের সামনে উল্লেখিত অংশ গুলো ছাড়া বাকী পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখতে হবে। তবে, কোনো কোনো আলেমের মতে মাহরামদের সামনেও অর্থাৎ, বাবা ভাই বা শ্বশুর এর সামনেও মাথা, চুল ও গর্দান ঢেকে রাখা জরুরী। 


নামাযের সময় মহিলাদের সতর : 

আর মহিলাদের নামাযের সময় হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর। এ সময় হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখতে হবে। মুখ এর সাথে কান অন্তর্ভুক্ত নয়। কান ঢেকে রাখতে হবে। 

فى تنوير الأبصار- وَسَتْرُ عَوْرَتِهِ وَهِيَ لِلرَّجُلِ مَا تَحْتَ سُرَّتِهِ إلَى مَا تَحْتَ رُكْبَتِهِ وَلِلْحُرَّةِ جَمِيعُ بَدَنِهَا خَلَا الْوَجْهِ وَالْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة، مطلب فى ستر العورة-1/404


গায়রে মাহরামের সামনে মহিলাদের সতর : 

মহিলাদের জন্য অন্য সময় গায়রে মাহরামের সামনে পূর্ণ শরীরই সতর। অর্থাৎ, তখন সতর ঢাকার সাথে সাথে পর্দা ফরজ।   তবে অতীব প্রয়োজনে চেহারা, পা, হাত খোলা জায়েজ আছে। যেমন রাস্তায় প্রচন্ড ভীর হলে, আদালতে সাক্ষ্য দেয়া ইত্যাদি।

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ: ” لَمَّا نَزَلَتْ: {يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ} [الأحزاب: 59]، خَرَجَ نِسَاءُ الْأَنْصَارِ كَأَنَّ عَلَى رُءُوسِهِنَّ الْغِرْبَانَ مِنَ الأَكْسِيَةِ “

إسناده قوي. ابن خثيم -وهو عبد الله بن عثمان- لا بأس به. ابن ثور: هو محمد بن ثور الصنعاني، ومحمد بن عُبيد: هو ابن حِساب الغُبَري.

وأخرجه ابن أبي حاتم في “تفسيره” كما في “تفسير ابن كثير” 6/ 48 – 49 من طريق الزنجي مسلم بن خالد، عن عبد الله بن عثمان بن خثيم، به مطولاً.

হযরত উম্মে সালামা রাঃ বলেন, যখন কুরআনে কারীমের এ আয়াত يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ

তথা “তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। [মাথার দিক থেকে]” -সূরা আহযাব-৫৯} নাজিল হয়, তখন আনসারী মহিলারা স্বীয় ঘর থেকে এমনভাবে বের হতো যেন তাদের মাথায় কাক বসে আছে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১০১}

হযরত মুফতী শফী রহঃ “আহকামুল কুরআন” গ্রন্থে লিখেন যে,

فى هذه الآية دلالة على أن المرأة الشابة مأمورة بستر وجهها من الأجنبيين

এ আয়াত একথা বুঝাচ্ছে যে, যুবতী মেয়েরা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এমনভাবে বের হবে যেন তাদের চেহারা পরপুরুষের সামনে প্রকাশিত না হয়। {আহকামুল কুরআন-৩/১৪৫৮}

عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ، فَإِذَا خَرَجَتْ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নারী জাতি হল আপাদমস্তক সতর। যখনি সে বের হয়, তখনি শয়তান তাকে চমৎকৃত করে তোলে। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১৭৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২০৬৫, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৫৯৮}

অন্য বর্ণনায় এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ: «أَنَّهَا كَانَتْ تَطُوفُ بِالْبَيْتِ وَهِيَ مُنْتَقِبَةً»

হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ বাইতুল্লাহ তওয়াফ করতেন পর্দাবৃত অবস্থায়। {মুসন্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৮৮৫৯}

পর্দা পরপুরুষের সাথে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সৌন্দর্যমন্ডিত বস্তুও লুকানোও ফরজ।

কুরআনে কারীমে নির্দেশ এসেছে-

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ [٢٤:٣١

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে {সূরা নূর-৩১}


সতর ঢাকা ও পর্দা করার পার্থক্য : 

এ আয়াতে স্পষ্টভাষায় সৌন্দর্যকে লুকাতে আদেশ দেয়া হয়েছে। যেটা হল পর্দা করার মূল হাকীকত।

কিন্তু যা “সাধারণতঃ প্রকাশমান” বলে চেহারা ও হাত উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। যা তীব্র প্রয়োজনের সময় যেমন প্রচন্ড ভীর, আদালতে সাক্ষ্য প্রদান ইত্যাদি প্রয়োজনে খোলা জায়েজ আছে।

এ দুটি বিষয়কে পৃথক করা হয়েছে সতর থেকে। পর্দা থেকে নয়। অর্থাৎ এ দুটি অংশ সতরের অন্তর্ভূক্ত নয়। কিন্তু পর্দার অন্তর্ভূক্ত। এ কারণেই নামাযরত অবস্থায় হাত ও মুখ এবং পা ঢাকতে হয় না। এসব খোলা রেখেই নামায হয়ে যায়। কারণ এসব সতর নয়। আর নামাযে সতর ঢাকা ফরজ।

কিন্তু বাহিরে বের হওয়ার সময় যেহেতু সতরের সাথে সাথে পর্দা রক্ষা করাও ফরজ, এসব ঢেকে রাখা ফরজ।



সাত ভাগে কুরবানী দেওয়া কি জায়েজ ?

 ইসলামি বিধান মতে সর্বমোট ছয় ধরনের পশু দিয়ে কুরবানি করা যায়। আর তাহলো- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা।


আর সাত ভাগে কুরবানী দেওয়া জায়েজ।

বিস্তারিত দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=t7G3B2sOPwQ

বন্য প্রাণী কুরবানী করা জায়েজ কিনা ?

 

হালাল বন্য প্রাণী কুরবানী করা যাবে কি?

প্রশ্ন

From: মোঃ এহসানুর রহমান
বিষয়ঃ কোরবানি
প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,
এই মাসআলা আপনাদের পেজে প্রকাশ করা হয়েছিল;
(কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে
উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫)
আমার প্রশ্ন হল, এই সমস্ত পশু আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া যায় কিন্তু এমনও অনেক দেশ আছে যেখানে এই সব পশু সহজে পাওয়া নাও যেতে পারে। আবার শীতের দেশ গুলোতে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রানি সহজে তারা পেয়ে থাকেন, যেগুলো আমাদের দেশে সহজলভ্য না, যেমন দুম্বা আরবে সহজলভ্য কিন্তু আমাদের দেশে নয়, এছাড়া লামা নামেও একটি প্রানি দেখলাম বিভিন্ন ফার্মে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে শুনলাম এগুলো নাকি হল্যান্ড অথবা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত, এছাড়া হাটে দেখলাম গয়াল নামের গরুর মতই দেখতে কিন্তু এগুলো বন্য প্রানি যা সচরাচর চিড়িয়াখানায় দেখা যায়।এগুলো দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে কিনা? এগুলো যদি বন্য প্রানি হওয়ার কারনে জায়েজ না হয় তাহলে শীত প্রধান দেশ গুলতে কি জায়েজ হবে? নাকি তাদের মাসআলা ভিন্ন?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে কেবল উট, গরু, মহিষ, বকরি, ভেরা ও দুম্বা এ ক’টি প্রাণী কুরবানী করার কথা এসেছে। যা গৃহপালিত। বন্য গরুও কুরবানী করা যাবে না।

বন্য প্রাণী কুরবানী করার কোন প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়।

তাই যেসব এলাকায় উপরোক্ত গৃহপালিত পশু না পাওয়া যাবে, তাদের জন্য উচিত বাহির থেকে আনানোর চেষ্টা করা। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে একটি মধ্যম ধরণের বকরীর মূল্য সমপরিমাণ টাকা কুরবানীর নিয়তে দান করে দিবে।

কিন্তু তবু্ও বন্য প্রাণী কুরবানী করলে কুরবানী আদায় হবে না।

ولا يجوز فى الاضاحى شيئ من الوحشى (الفتاوى الهندية، كتاب الاضحية، الباب الخامس-5/297، تبيين الحقائق-6/7)

(وَلَوْ) (تُرِكَتْ التَّضْحِيَةُ وَمَضَتْ أَيَّامُهَا) (تَصَدَّقَ بِهَا حَيَّةً نَاذِرٌ) فَاعِلُ تَصَدَّقَ (لِمُعَيَّنَةٍ) وَلَوْ فَقِيرًا، وَلَوْ ذَبَحَهَا تَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا، وَلَوْ نَقَصَهَا تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ النُّقْصَانِ أَيْضًا وَلَا يَأْكُلُ النَّاذِرُ مِنْهَا؛ فَإِنْ أَكَلَ تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ مَا أَكَلَ (وَفَقِيرٌ) عُطِفَ عَلَيْهِ (شَرَاهَا لَهَا) لِوُجُوبِهَا عَلَيْهِ بِذَلِكَ حَتَّى يَمْتَنِعَ عَلَيْهِ بَيْعُهَا (وَ) تَصَدَّقَ (بِقِيمَتِهَا غَنِيٌّ شَرَاهَا أَوَّلًا) لِتَعَلُّقِهَا بِذِمَّتِهِ بِشِرَائِهَا أَوَّلًا، فَالْمُرَادُ بِالْقِيمَةِ قِيمَةُ شَاةٍ تُجْزِي فِيهَا. (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الاضحية-9/463-465

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

ঘুমানোর সুন্নাত সমূহ ।

 মানুষের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতরাজির মধ্যে ঘুম একটি। এর মাধ্যমে তিনি বান্দার প্রতি অনেক বড় অনুগ্রহ করেছেন। কুরআনুল কারিমের এ নেয়ামতের কথা তুলে ধরে আল্লাহ বলেন-

- ‘তিনিই স্বীয় রহমতে তোমাদের জন্যে রাত ও দিন করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ কর ও তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ৭৩)
- ‘তোমাদের ঘুমকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী।’ (সুরা নাবা : আয়াত ৯)




দিনের ক্লান্তি কাটিয়ে সুস্থ জীবন যাপনে এবং শরীরের বর্ধন, কাজের জন্য নিজেদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে ঘুমের বিকল্প নেই। মানুষের বেঁচে থাকার জন্যও ঘুম অনেক জরুরি বিষয়।

ঘুমের মাধ্যমে মুমিন বান্দা নিজেদের দেহ ও মনকে প্রশান্তি দেয়। আর তাতে স্রষ্ঠার প্রতি আনুগত্য ও মনোবল দৃঢ় হয়।

মুমিন মুসলমানের উচিত ঘুমকে ইবাদতে পরিণত করতে সুন্নাত ও শরয়ী আদব মেনেই ঘুমাতে যাওয়া। যাদের ঘুম আসে না তাদের জন্য ঘুমের সুন্নাতগুলো মেনে চলা জরুরি। ঘুমাতে যাওয়া সম্পর্কে হাদিসে একাধিক দিক-নির্দেশনামূলক নসিহত পেশ করা হয়েছে। যা পালনে ঘুমের সময়টিও হবে ইবাদতে পরিপূর্ণ।

হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, ‘আর আমি (রাতে) ঘুমাই এবং জাগ্রত হওয়ার পর নামাজ আদায় করি। জেগে থাকা অবস্থায় যেভাবে নামাজের মাধ্যমে সাওয়াবের আশা করি ঠিক সেভাবে ঘুমের মধ্যে সাওয়াবের আশা করি।’ (বুখারি)


ঘুমকে ইবাদতে পরিণত করতে ১০টি সুন্নাতি আদব তুলে ধরা হলো-

>> ঘুমের আগে বিছানা ঝেড়ে নেয়া
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি তোমাদের কোনো ব্যক্তি বিছানায় (ঘুমাতে) যায়, তখন সে যেন তার লুঙ্গির ভেতর দিক দিয়ে নিজ বিছানাটা ঝেড়ে নেয়। কারণ, সে জানে না যে, বিছানার উপর তার অনুপস্থিতিতে পীড়াদায়ক কোনো কিছু আছে কিনা। তারপর পড়বে-

بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণ : বিসমিকা রাব্বি ওয়াদাতু ঝাম্বি, ওয়া বিকা আরফাউহু, ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা, ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজ বিহি ইবাদাকাস সালিহিন।’
অর্থ : ‘হে আমার রব্ব! আপনারই নামে আমার শরীরটা বিছানায় রাখলাম এবং আপনারই নামে আবার উঠবো। যদি আপনি ইতোমধ্যে আমার জান কব্‌য করে নেন তা হলে, তার উপর রহম করবেন। আর যদি তা আমাকে ফিরিয়ে দেন, তবে তাকে এমনভাবে হেফাজত করবেন, যেভাবে আপনি আপনার নেক বান্দাদের হেফাজত করে থাকেন।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)

>> আল্লাহর নামে দরজা বন্ধ করা
হজরত জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখ। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে, কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোনো বস্তু আড়াআড়ি করে রেখো। আর (শয্যায় যাওয়ার সময়) তোমরা তোমাদের প্রদীপগুলো নিভিয়ে দেবে। (বুখারি)

>> ঘুমানোর সময় দোয়া পড়া
হজরত হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে নিজ বিছানায় শোয়ার সময় নিজ হাত গালের নীচে রাখতেন, তারপর বলতেন-

اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনার নামেই মরি, আপনার নামেই জীবিত হই ‘
আর যখন ঘুম থেকে জাগতেন, তখন বলতেন-
‏الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
উচ্চারণ : ‘আল-হামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।’
অর্থ : সেই আল্লাহ্‌র জন্য প্রশংসা, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তাঁরই দিকে আমাদের পুনরুত্থান হবে।’ (বুখারি)

>> ডান কাতে শোয়া
হজরত বারাআ ইবনু আজিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপর ঘুমাতেন।’ (বুখারি)

>> অজু করে ঘুমানো
হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন জানাবাতের (অপবিত্রতা) অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছা করতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে নামাজের ওজুর মতো ওজু করে ঘুমাতেন।’ (বুখারি)

>> সতর অবস্থায় ঘুমানো
হজরত বাহয ইবনে হাকিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘আমি প্রশ্ন করলাম- হে আল্লাহর রাসুল ! আমাদের লজ্জাস্থান কতটুকু ঢেকে রাখব এবং কতটুকু খোলা রাখতে পারব? তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন- ‘তোমার স্ত্রী ও দাসী ছাড়া সবার দৃষ্টি থেকে তোমার লজ্জাস্থান হেফাজত করবে।’
তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, ‘পুরুষরা একত্রে অবস্থানরত থাকলে?
তিনি বললেন- ‘যতদূর সম্ভব কেউ যেন আভরণীয় স্থান দেখতে না পারে তুমি তাই কর।
আমি আবার প্রশ্ন করলাম- ‘মানুষ তো কখনো নির্জন অবস্থায়ও থাকে।’
তিনি বললেন- ‘আল্লাহ তাআলা তো লজ্জার ক্ষেত্রে বেশি হাক্বদার। (ইবনু মাজাহ)

>> উপুড় হয়ে না শোয়া
হরজ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে পেটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা এ রকম শোয়া পছন্দ করেন না।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

>> আলো বন্ধ করে ঘুমানো
হজরত সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন, ‘তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শোয়ার (ঘুমের) সময় তোমরা তোমাদের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে রেখ না।’ (নাসাঈ)

>> দুঃস্বপ্নে পাশ ফিরে ঘুমানো
হরজত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন সে যেন তার বামপাশে তিনবার থু থু ফেলে এবং শয়তানের (অনিষ্টতা) থেকে আল্লাহর কাছে তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করে। আর যে পাশে ঘুমানো ছিল তা থেকে যেন বিপরীত দিকে ফিরে ঘুমায়।’ (মুসলিম)

>> ঘুমের খারাপ কিছু দেখার পর করণীয়
হজরত আবু কাতাদাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, সুন্দর স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর দুঃস্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। অতএব তোমাদের কেউ যখন এমন কোনো ব্যাপারে স্বপ্নে দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন সে যেন তার বাম পাশে তিন বার থু থু ফেলে এবং (আউজুবিল্লাহ বা সুরা ফালাক্ব ও সুরা নাস পড়ে) স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চায়। কারণ (এভাবে করলে) তাতে তার কোনো ক্ষতি হতে পারে না।’ (মুসলিম)

- অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখল আর এতে কোকো কিছু পছন্দ হলো না, তখন সে যেন তার বাম পাশে থু থু ফেলে এবং শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করে, (তাহলে) তা তাকে কোন সমস্যায় ফেলবে না। আর কারো কাছেই এ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করবে না। আর যদি কোনো ভাল স্বপ্ন দেখে তাহলে সু-সংবাদ গ্রহণ করবে। আর যাকে সে মুহাব্বাত করে এমন ব্যক্তি ছাড়া কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে।ক’ (মুসলিম)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঘুমের উল্লেখত সুন্নাতগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। এ সুন্নাতগুলো আদায়ের মাধ্যমে ঘুমকে ইবাদতে পরিণত করার তাওফিক দান করুন। সার্বিক ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

তাকবীরে তাশরিক কি ? কখন পড়তে হয়, ফজীলত কি ?

 তাকবিরে তাশরিক নিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন- তোমরা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহকে স্মরণ কর। (সূরা বাকারা: ২০৩)

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এখানে নির্দিষ্ট দিনগুলো দ্বারা উদ্দেশ্য-তাকবিরে তাশরিক পাঠের দিনসমূহ। ( সহীহ বুখারী, মারিফাতুস সুনানি ওয়াল আছার, হাদিস ১০৮৭২)

তাকবিরে তাশরিক পাঠের তাৎপর্য কী?

তাকবিরে তাশরিকের তাৎপর্য হলো- আল্লাহতায়ালার জিকির এবং তাওহিদের চেতনায় সর্বদা উজ্জীবিত থাকা এবং শিরকের পাপ-পঙ্কিলতামুক্ত তাওহিদের শিক্ষায় উদ্ভাসিত ঈমানী জীবন গঠনের লক্ষ্যে সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত করা। 

কারণ দ্বীন-ধর্ম ও আমল আখলাক সবকিছুর মূল হল, নির্ভেজাল তাওহিদ। এই বিশ্বাসে খুঁত থাকলে পর্বতসম আমলেরও কোনো মূল্য নেই। 

তাই মুমিনের দিলে তাওহিদের শিক্ষাকে আরো মজবুত আরো শাণিত করতেই এই দিনগুলোতে অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির করতে বারবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। 

শ্রদ্ধা, ভক্তি ও বিশ্বাসের সবটুকু মিশিয়ে মুমিন বলবে- আল্লাহু আকবার ওয়াহদাকা লা-শারীকা লাকা। 

বিশেষ করে এই দিনগুলোতে আল্লাহর জিকিরের প্রতি আলাদাভাবে গুরুত্ব দেয়ার কারণ সম্পর্কে মুহাদ্দিস আল্লামা খাত্তাবী (রহ.) বলেন- বর্বরতার যুগে লোকেরা তাদের কথিত প্রভুদের নামে পশু-প্রাণী উৎসর্গ করত। এর প্রতি উত্তরে মুমিনদের প্রতি আদেশ করা হয়েছে তারা যেন আল্লাহর জিকির ও তাকবিরের মাধ্যমে তাওহিদ ও আনুগত্যের ঘোষণা প্রদান করে। 

আল্লাহই একমাত্র ইলাহ। তার কোনো শরীক নেই। তিনি ছাড়া কারো নামে প্রাণী উৎসর্গ করা যাবে না। কারণ তা সুস্পষ্ট শিরক।  (ফাতহুল বারী ২/৫৩৫)

তাকবিরে তাশরিক কী?

তাকবিরে তাশরিকের মূল কথা হলো- আল্লাহর জিকির তথা তার বড়ত্ব প্রকাশ করা। তবে,বিশেষ দিনে এই আমলের জন্য বিভিন্ন শব্দ হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে। 

হাদিস বিশারদদের মতে সর্বোত্তম ও সর্বজনবিদিত শব্দ হলো- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওলিল্লাহিল হামদ।  (তাবারানী মুজামে কাবীর: হাদিস: ৯৫৩৮, মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: হাদিস: ৫৬৭৯)

তাকবিরে তাশরিক আদায়ের পদ্ধতি।

৯ ই জিলহজ ফজরের নামাজ হতে ১৩ ই জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর কোন কথা বা সুন্নত নামাজ না পড়ে একবার করে তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব।

জামাতে নামাজ পড়া হোক বা একাকি, পুরুষ বা নারী, মুকীম বা মুসাফির সকলের উপর ওয়াজিব।

(এবছর এই আমল আমরা শুক্রবার ফজরের নামাজ থেকে পরবর্তী মঙ্গলবার আসরের নামাজসহ প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সমস্বরে আদায় করব ইনশাআল্লাহ)

তাকবিরে তাশরিক পুরুষের জন্য জোরে পড়া ওয়াজিব। আস্তে পড়লে তাকবীরে তাশরীক পড়ার হক আদায় হবে না। আর মহিলারা নিচু আওয়াজে অর্থাৎ নিজে শুনতে পায় এমন আওয়াজে পড়বে। 

শুধু পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। বিতরের পর এবং অন্য কোনো সুন্নত বা নফলের পরে পড়ার নিয়ম সুন্নাহসম্মত নয়।

ইমাম তাকবির বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদীরা ইমামের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরা তাকবির বলবেন।

কোনো সময় সকলেই বা কেউ কেউ তাকবির বলতে ভুলে গিয়ে মসজিদ থেকে বের না হয়ে গেলে তাকবির আদায় করে নিবে। আর যদি মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় তাহলে এই ওয়াজিব ছুটে যাবে। এই ওয়াজিবের কোনো কাজা নেই এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেয়ার কারণে ওই ব্যক্তি গুনাহগার হবে।

কোনো ব্যক্তির জামাত ছুটে গেলে ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর পর দাঁড়িয়ে স্বীয় নামাজ আদায় করার পর তাকবিরে তাশরিক বলবে।

৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত কোনো নামায কাজা হয়ে গেলে এবং ঐ কাজা এই দিনগুলোর ভিতরেই আদায় করলে সে কাজা নামাযের পরও তাকবিরে তাশরিক পড়বে।

হাজীদের ওপর ইহরাম অবস্থায় পূর্বোক্ত নিয়ম অনুযায়ী তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব।

ঈদুল আজহায় ঈদগাহে পৌঁছার আগ পর্যন্ত পথে পথে উচ্চস্বরে তাকবীর বলে বলে যাবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: হাদিস ১৯২)

ঈদের দিন সাহাবায়ে কেরামের তাকবির ধ্বনিতে পুরো আশপাশ কেঁপে উঠত। আর এই তাকবির উচ্চ স্বরে বলার তাৎপর্য এটাও যে, এর দ্বারা ইসলামের তাওহিদের ঘোষণা প্রকাশ্যে উচ্চস্বরে দেওয়া হবে। গুনগুন শব্দে এর বহিঃপ্রকাশ কি সম্ভব? (ইসলাহী খুতবাত ২/১২৬-১২৯)

সার্বক্ষণিক জিকির ও তাকবিরের আমল ছাড়াও জিলহজের প্রাথমিক দিনগুলোর প্রায় প্রতিটি ইবাদত ও আমলের সাথে জিকির ও তাকবিরকে এমনভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে যেন সব আমল-ইবাদতের মূল কথা হল জিকরুল্লাহ, তাকবির ও তাওহিদ।

এজন্য এ সময়ের সকল ইবাদতের পরতে পরতে রয়েছে নির্ভেজাল তাওহিদের উপস্থিতি।

সাহাবায়ে কেরাম এই দিনগুলোতে সর্বদা আল্লাহু আকবারের ধ্বনি তুলতেন। 

হযরত ইবনে উমর রা. ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বাজারে গিয়ে তাকবিরের আওয়াজ তুলতেন। শুনে শুনে লোকেরাও তাদের সাথে তাকবিরের সুর তুলত। 

ইবনে ওমর রা. পথে-ঘাটে, বাজারে-ঘরে এবং নামাযের পরে শুধুই তাকবির বলতে থাকতেন। মিনার দিনগুলোতো তার তাকবিরের সাথে সমস্বরে মানুষের তাকবিরে মিনার প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে উঠত। মহিলারাও (নিচু স্বরে) তাকবীর বলতে থাকতেন। (সহীহ বুখারী;ফাতহুল বারী ২/৫৩০-৫৩৬)

তাই আসুন,তাকবিরে তাশরিকের যে বাক্যজুড়ে রয়েছে তাওহিদ,আল্লাহর বড়ত্ব ও প্রশংসার কথা;সে বাক্যে উচ্চকিত করে তুলি পৃথিবীর প্রতিটি জনপদ। 

এ জিকির গুঞ্জরিত হোক, প্রতিটি মসজিদে, প্রতিটি মুসলিমের ঘরে; প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর, নারী-পুরুষ সকলের মুখে।


========================


তাকবিরে তাশরিক কী?

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজর নামাজের পর থেকে নিয়ে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত সময়কে তাশরিকের দিন বলে এবং এই সময়ে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর অন্তত একবার ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ এই তাকবির পড়া ওয়াজিব। এটিকে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়। (হেদায়া : ১/২৭৫)


তাকবিরে তাশরিকের পটভূমি

বুখারি শরিফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি (রহ.) বলেন, যখন হজরত ইবরাহিম (আ.) স্বীয় পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে জবাইয়ের উদ্দেশ্যে গলায় ছুরি রাখলেন, এদিকে আল্লাহর নির্দেশে হজরত জিবরাঈল (আ.) আসমান থেকে একটি দুম্বা নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করছিলেন। কিন্তু জিবরাঈল (আ.)-এর আশঙ্কা ছিল, তিনি দুনিয়াতে পৌঁছার আগেই ইবরাহিম (আ.) জবাইপর্ব সমাপ্ত করে বসবেন। ফলে তিনি আসমান থেকে উঁচু আওয়াজে বলে উঠলেন : ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার।’ ইবরাহিম (আ.) আওয়াজ শুনে আসমানের দিকে নজর ফেরাতেই দেখতে পেলেন জিবরাঈল (আ.) একটি দুম্বা নিয়ে আগমন করছেন। ফলে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর।’ পিতার কণ্ঠে এই কালিমা শুনতেই ইসমাঈল (আ.) উচ্চারণ করলেন : ‘আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ একজন ফেরেশতা আর দুজন প্রিয় নবীর এ বাক্যমালা আল্লাহর খুব পছন্দ হয়। তাই কিয়ামত পর্যন্ত এই বাক্যমালা আইয়ামে তাশরিকে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পড়াকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ২/১৭৮, ইনায়া শরহুল হিদায়া : ১/৪৬৪)

 

তাকবিরে তাশরিকের ফজিলত

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যেন তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ২৮)

বিখ্যাত সাহাবি মুফাসসির ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, এখানে ‘নির্দিষ্ট দিন বলতে ‘আইয়ামে তাশরিক’ ও ‘আল্লাহর স্মরণ’ বলতে তাকবিরে তাশরিক বোঝানো হয়েছে। (বুখারি, অধ্যায় দুই ঈদ)

এখানে নির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা আইয়ামে তাশরিক উদ্দেশ্য এবং জিকির দ্বারা তাকবিরে তাশরিক উদ্দেশ্য। (ইবনে কাসির)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, এই দিনগুলোতে তাকবিরে তাশরিকের আমলের চেয়ে অন্য কোনো দিনের আমল উত্তম নয়। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী করিম (সা.) বলেন, ‘জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়ে জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)

 

তাকবিরে তাশরিক সংক্রান্ত কিছু মাসায়েল

তাশরিকের দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পুরুষদের ওপর উচ্চৈঃস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। আর নারীরা নিচু স্বরে পড়বে,  যাতে নিজে শোনে। ( শামি : ২/১৭৮)

ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়া হোক বা একাকী, ওয়াক্তের মধ্যে পড়া হোক বা কাজা, নামাজি ব্যক্তি মুকিম হোক বা মুসাফির, শহরের বাসিন্দা হোক বা গ্রামের—সবার ওপর ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। (দুররে মুখতার : ২/১৮০)

ফরজ নামাজের পর তাকবির বলতে ভুলে গেলে, স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকবির পড়ে নেবে। তবে হ্যাঁ, নামাজের বিপরীত কোনো কাজে লিপ্ত হয়ে গেলে, যেমন—কথা বলা, নামাজের স্থান থেকে উঠে পড়া ইত্যাদি হলে তাকবির বলতে হবে না, বরং ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে আল্লাহর কাছে তওবা করবে। ( শামি : ৬/১৭৯)

========================


তাকবিরে তাশরিক ও ঈদ-উল-আজহা এক সুতোয় গাঁথা। তাকবিরে তাশরিকের ইতিহাস কুরবানির ঈদের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত। মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা ও প্রশংসায় ভরপুর তাকবিরে তাশরিক। কুরবানি বা আত্মত্যাগ হলো মহান আল্লাহর একন্ত আপন হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহর একান্ত প্রিয় হওয়ার ইবাদত পালনকালীন সময়েই তাকবিরে তাশরিকের প্রচলন শুরু হয়।

তাকবিরে তাশরিক প্রত্যেত হিজরি সালের জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে শুরু করে ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যনর্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত পড়া ওয়াজিব। আর এ সময়ের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয় আত্মত্যাগের অন্যতম ইবাদত কুরবানি।


তাকবিরে তাশরিকের ৫ দিনের মধ্যে ৩ দিন কুরবানি করা যায়। তাকবিরে তাশরিকের আবশ্যকভাবে পড়া শুরু হওয়ার পেছনে রয়েছে আল্লাহর দুই প্রিয় পয়গাম্বরের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক জড়িত। তাকবিরে তাশরিক যেভাবে শুরু হলো তা জানতে হলে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের জীবনের সেই গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা উল্লেখ করা প্রয়োজন। আর তাহলো-

কুরবানির বিধান জারি করে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
‘অতঃপর সে (ইসমাইল) যখন পিতার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইবরাহিম তাকে বলল, হে ছেলে! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবাই করছি; এখন তোমার অভিমত কি? সে বলল, হে পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যধারণকারীর দলভূক্ত পাবেন।’ (সুরা সাফফাত : আয়াত ১০২)

হজরত ইবরাহিম আলাইহি সালাম স্বপ্নে প্রাণপ্রিয় সন্তান হজরত ইসমাইলকে আল্লাহর জন্য কুরবানি করার নির্দেশ পান। আল্লাহর পয়গাম্বর পুত্রকে তার স্বপ্নে বর্ণনা দিলে সন্তান একবাক্যে স্বপ্নে কার্যাদেশ বাস্তবায়নের অভিমত প্রকাশ করেন এবং নিজেকে ধৈর্যধারণকারীদের অন্তর্ভূক্ত পাওয়া যাবে বলেও আশ্বাস দেন।

হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কুরবানি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই সূচনা হয় এ তাকবিরে তাশরিকের। যা কেয়ামত পর্যন্ত ইসলামে এ তাকবির প্রত্যেক বছর ৫ দিন পড়া ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়।

তাকবিরে তাশরিকের সূচনা
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন শিশুপুত্র ইসমাইলকে কুরবানির নির্দেশ পালনে জরার করার জন্য মাটিতে শোয়ালেন, তখন আল্লাহ তাআলা হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামকে বেহেশত থেকে দুম্বা নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন।

হজরত ইসমাইলকে জবাই করার আগে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম যাতে দুম্বা নিয়ে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের ছুরির নিচে দুম্বা পৌঁছাতে পারেন এবং তাকবিরের আওয়াজ যেন হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কানে আসে, সে জন্য আকাশে থাকতেই আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে থাকেন-
اَللهُ اَكْبَر – اَللهُ اَكْبَر (আল্লাহু আকবার; আল্লাহু আকবার। অর্থ : আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান)

অতঃপর হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এ তাকবিরের আওয়াজ শুনে কাপড় দ্বারা আবৃত চোখ খুলে দেখলেন হজরত জিবরিল আলাইহি সালাম আনিত দুম্বা হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের পরিবর্তে কুরবানি হয়ে যায়। তখন তিনি তাওহিদের কালেমা ও তার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে বলেন-
لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ اَللهُ اَكْبَر (লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার। অর্থ : আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আপনিই শ্রেষ্ঠ)

হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে তাওহিদের কালেমা ও আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে দেখে হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রশংসা করে বলেন-
اَللهُ اَكْبَر وَ لِلهِ الْحَمْد (আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ। অর্থ : আল্লাহ মহান, সব প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য)

হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম, হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের তাকবির, তাওহিদের কালেমার প্রশংসা আল্লাহর কাছে এতই পছন্দনীয় হয়ে যায় যে, হজ পালনকারী, কুরবানি দাতাসহ মুসলিম উম্মাহর জন্য জিলহজ মাসের ৯-১৩ পর্যন্ত এ ৫ দিন তাকবিরে তাশরিক পড়া আবশ্যক হয়ে যায়।

সুতরাং এ তাকবিরে তাশরিক আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার অন্যতম টনিকও বটে। এ তাকবিরে তাশরিকের ভাব-মর্মার্থ ও শিক্ষা নিজেদের মধ্যে লালন করতে পারলেই কুরবানি তথা আত্মত্যাগ সফল হবে।

তাই মুসলিম উম্মাহর সব প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ, মুকিম-মুসাফির, গ্রামবাসী-শহরবাসী এবং জামায়াতে কিংবা একাকি নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির উচিত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার করে তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা। আত্মত্যাগের শিক্ষা ও তাৎপর্য গ্রহণ করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকবিরে তাশরিকের ইতিহাস জানার পর উল্লেখিত দিনগুলোতে শুকরিয়া হিসেবে এ ওয়াজিব কাজ যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করে তার একান্ত নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।


========================



কুরবানীর গোশত বন্টনের নিয়ম।

 আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানির মাংস একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরীব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ গরীব-মিসকিনদের দিতেন। এছাড়া ইবন মাসঊদ (রাঃ) কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকীর-মিসকীনকে দিতেন বলে উল্লেখ রয়েছে। ইসলামের বিভিন্ন ইমামগণও কুরবানীর গোশতকে তিনভাগ করাকে মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন। কুরবানির মাংস আত্মীয় ও গরীবদের মাঝে বিতরণ না করাটা খুবই গর্হিত কাজ। এতে কৃপণতা প্রকাশ পায়। কারণ কুরবানির মাধ্যমে কুরবানিদাতা অহংকার থেকে নিরাপদ থাকেন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধ থাকে। ইসলামি জ্ঞানে বুৎপত্তি অর্জন করা আলেমগণ বলেন, কুরবানির মাংস নিজে রেখে একা একা খাওয়া কখনোই উচিৎ নয়। এতে নিজের অন্তরের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পায়। তবে এক্ষেত্রে একটি কথা হচ্ছে, ধরেন, একটি খাসি কুরবানী দিলেন, কিন্তু আপনার ফ্যামিলির লোকজন খেলেই সেই খাসিটি যথেষ্ট হবে। বিলানোর মত থাকবেনা। সেক্ষেত্রে আপনি না বিলালেও কোন দোষ নেই।

মৃতের লাশ ময়নাতদন্ত বা পোষ্ট মর্টেম করা জায়েজ কি ?

 

মৃতের লাশ ময়না তদন্ত করার বিধান

মৃতের লাশ পোস্ট মর্টেম বা ময়না তদন্ত করার ব্যাপারে সংক্ষেপে কথা হল:
আমাদের জানা জরুরি যে, মুসলিম ব্যক্তির দেহ সম্মানের পাত্র জীবদ্দশায় হোক অথবা মৃত্যুর পরে হোক। তাই তো ইসলামে অতি যত্নের সাথে মৃতের গোসল, কাফন-দাফন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে সসম্মানে তার লাশ কবর দেয়ার নির্দেশ এসেছে। আর মৃত ব্যক্তিকে অপদস্থ করা বা শরীরে আঘাত করা বা তার হাড়-হাড্ডি ভাঙ্গার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞায় হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: كَسْرُ عَظْمِ الْمَيِّتِ كَكَسْرِه حَيًّا
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মৃত ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গা, জীবিতকালে তার হাড় ভাঙারই মতো।”
(আবু দাউদ, হা/৩২০৭, ইবনে মাজাহ হা/ ১৬১৬, সহীহ আত্ তারগীব, হা/ ৩৫৬৭-সনদ সহিহ)

◉ ব্যাখ্যা: এ হাদিসে মৃত ব্যক্তিকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করতে নিষেধ করা হয়েছে।

আলোচ্য হাদিসের বর্ণনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ) আবু দাঊদের হাশিয়ার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, জাবির (রাঃ) বলেন, একবার আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক জানাযায় গেলাম। সেখানে গিয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কবরের কাছে বসলেন এবং তার সাথে সাহাবীরাও বসলেন। এমন সময় একজন গর্ত খননকারী বেশ কিছু হাড় বের করে আনল এবং সে এগুলো ভাঙ্গার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এগুলো ভাঙ্গিও না। কেননা َ كَسْرُ عَظْمِ الْمَيِّتِ كَكَسْرِه حَيًّا “মৃত অবস্থায় হাড় ভাঙ্গা জীবদ্দশায় হাড় ভাঙ্গার অনুরূপ।”
◗ আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন: এ হাদিস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, জীবিত ব্যক্তিকে যেমন অপমান-অপদস্থ ও লাঞ্ছিত করা যায় না ঠিক তেমনিভাবে মৃত ব্যক্তিকে অনুরূপ অবজ্ঞা ও অবহেলা করা যাবে না।
◗ ইবনে আবদুল বার বলেন, এ হাদিস থেকে এ ফায়দা গ্রহণ করা যায় যে, জীবিত ব্যক্তি যে সব কারণে কষ্ট ও ব্যথা অনুভব করে মৃত ব্যক্তিও সেসব কারণে ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করে। (হাদিস বিডি ডট কম থেকে সংগৃহীত)
তবে বর্তমানে মানুষ হত্যা ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে তদন্তের স্বার্থে অথবা বিশেষ কোন সংক্রামক রোগের কারণ নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে মৃতের দেহের অংশ বিশেষ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। এ কাজটি বৃহত্তর স্বার্থে জায়েজ বলে নির্ভরযোগ্য আলেমগণ ফতোয়া প্রদান করেছেন এবং এটি Islamic Fiqh Academy এর সিদ্ধান্ত।
আল্লাহু আলাম।
———————–
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

কোরবানী কার উপর ফরজ

 প্রশ্ন : কোরবানি কার ওপর ফরজ? ওইভাবে হয়তো আয় নাই, কিন্তু ব্যাংকে কিছু টাকা জমা আছে। তার ওপর কি কোরবানি ফরজ?

উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, ফরজ এ বক্তব্য আসলে আলেমদের মধ্যে কেউ দেননি। আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে কোরবানি কি সুন্নাহ নাকি ওয়াজিব, এ নিয়ে।

একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, এটি সুন্নত, সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি অধিকাংশ আলেমের বক্তব্য। আরেকদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, কোরবানি ওয়াজিব। তিন থেকে চারজন ওলামায়ে কেরাম ছাড়া আর কেউ কোরবানিকে ওয়াজিব বলেননি।

শরিয়তে যাঁদের ওপর কোরবানি বাধ্যতামূলক হয় তাঁরা হলেন মুসলিম হওয়া, বিবেকসম্পন্ন হওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, এগুলো ঠিক থাকবে।

এর সঙ্গে আর একটি শর্ত যোগ হবে সেটি হলো, যে ব্যক্তি ওই দিন কোরবানির পশু জবাই করার সামর্থ্য রাখে, সেই ব্যক্তির ওপর কোরবানি আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি বলেছেন অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম।

কিন্তু যাঁরা ওয়াজিব বলেছেন, তাঁরা দুটি কঠিন শর্ত দিয়েছেন। একটি হচ্ছে, ওই ব্যক্তির নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে, যেই নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ হয়। অন্যটি হচ্ছে তাঁকে মুসাফির হওয়া যাবে না। এ দুটি শর্ত করে বলা হয়েছে কোরবানি ওয়াজিব।

এ দুটির একটি শর্তও যদি কোনো ব্যক্তি পূরণ করতে না পারে, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে না।

কিন্তু বিশুদ্ধ বক্তব্য হচ্ছে, রাসুল (সা.) যে হাদিস দিয়ে ওয়াজিবের দলিল দিয়েছেন সেটি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন কোরবানি করে।’ সামর্থ্যকে রাসুল (সা.) সাধারণ রেখে দিয়েছেন।

অন্য রেওয়াতের মধ্যে এসেছে, ‘সামর্থ্য থাকার পরও যদি সে কোরবানি না করে, তাহলে সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ এই হাদিস দিয়েই ওয়াজিবের দলিল দেওয়া হয়েছে। নবীজি (সা.) নেসাব পরিমাণ সম্পদের কথা মোটেও বলেননি, এটি না থাকলেও চলবে।

ব্যাংকে কোরবানি দেওয়ার মতো অর্থ যদি আপনার থাকে, তাহলে আপনি কোরবানি দিতে পারবেন।  

- বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানির হুকুম কী?

 


প্রশ্ন:

 বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানির হুকুম কী? এগুলো কাপড়ে বা গায়ে লাগলে ধোয়া ছাড়া নামায পড়া যাবে কী?

জবাব:

بسم الله الرحمن الرحيم

বৃষ্টিপাতের ফলে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানি পাক। শরীরে বা কাপড়ে লাগলে তা ধৌত করা ছাড়া নামায পড়া জায়েজ। কেননা এ থেকে বাঁচা অসম্ভব। তবে ধুয়ে নেয়া উত্তম।

কিন্তু যদি পানিতে স্পষ্ট নাপাক দেখা যায় বা নিশ্চিত নাপাক স্থানে পানি জমে, তবে সে পানি লাগলে তা ধোয়া ছাড়া নামায হবেনা।

فى رد المحتار- ( قَوْلُهُ : وَطِينُ شَارِعٍ ) مُبْتَدَأٌ خَبَرُهُ قَوْلُهُ : عَفْوٌ وَالشَّارِعُ الطَّرِيقُ ط .وَفِي الْفَيْضِ : طِينُ الشَّوَارِعِ عَفْوٌ وَإِنْ مَلَأَ الثَّوْبَ لِلضَّرُورَةِ وَلَوْ مُخْتَلِطًا بِالْعَذِرَاتِ وَتَجُوزُ الصَّلَاةُ مَعَهُ ……….. أَقُولُ : وَالْعَفْوُ مُقَيَّدٌ بِمَا إذَا لَمْ يَظْهَرْ فِيهِ أَثَرُ النَّجَاسَةِ كَمَا نَقَلَهُ فِي الْفَتْحِ عَنْ التَّجْنِيسِ .(رد المحتار-1/530-531

প্রামান্য গ্রন্থাবলী:

১. ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫৩০-৫৩১

২. ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪৩

৩. হেদায়া-১/৭৬

৪. আহসানুল ফাতওয়া-২/৮৩,১০১

৫. ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-৫/১২৮,২৭৩

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

নামাজে প্রতি রাকাতের শুরুতে বা প্রতি সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া।

 নামাজে প্রথম রাকাতে বিসমিল্লাহ তো পড়তেই হবে। এরপর  প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পূর্বে বিসমিল্লাহ পাঠ করা সুন্নাত। এবং সুরা তাওবা ছাড়া অন্যান্য সুরার শুরুতেও বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নাত । তবে যদি কেউ না পাঠ করে তাহলেও অসুবিধা নাই। 


===================

জবাব: প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য ছোট তিন আয়াত বা যেকোনো সূরা পাঠের আগে চুপিচুপি বিসমিল্লাহ পাঠ ইমাম মুহাম্মাদ রহ.  এর মতে সুন্নাত। এটা ইমাম ও একা নামাযি ব্যক্তির জন্য সুন্নাত।(আল-মাউসুআ আল-ফিকহিয়্যা ৮/৮৭)

ফাতাওয়া আল্ লাজনাহ আদ্দাইমাহ (৬/৩৭৮)-তে এসেছে,

دلَّت السنَّة الثابتة أنه ﷺ يقرأ البسملة في الصلاة قبل الفاتحة وقبل غيرها من السوَر ، ما عدا سورة التوبة

রাসুলুল্লাহ ﷺ নামাযে সূরা ফাতিহার আগে এবং সূরা তাওবা ছাড়া অন্যান্য সুরার আগে বিসমিল্লাহ পড়তেন; এটা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী


=====================


প্রশ্ন : নামাজে প্রতিটি সূরা পড়ার পূর্বেই কি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়তে হবে বা এটা পড়া কি ফরজ?

উত্তর : সূরা আল ফাতেহা যখন আপনি তিলাওয়াত করবেন, তখন বিসমিল্লাহ পড়বেন। এটাই হলো সুন্নাহ। কেউ কেউ এটাকে বাধ্যতামূলক বলেছেন। যেহেতু কোরআনুল কারিমে সূরা আল ফাতেহার অন্যতম প্রথম আয়াত হচ্ছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। এই মাসআলার মধ্যে আলেমদের দ্বিমত থাকলেও বিশুদ্ধ দিক হচ্ছে এটি সূরা ফাতেহার আয়াত। তাই অধিকাংশ তাহকিক মাহকিক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, সূরা ফাতেহার শুরুতেই বিসমিল্লাহ পরেই তার পর শুরু করব। অবশ্য আবু মোহাম্মদ বাক্কি রাহমাতুল্লা আলাইর যে রেওয়াত রয়েছে, সে রেওয়াতের মধ্যে কিন্তু এটাকে আয়াতই উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কিন্তু কোনো অপশন নেই যে সূরা ফাতেহার আগে বিসমিল্লাহ পড়বে না, এ ধরনের কোনো অপশন নেই। বাকি অন্য যে সূরাগুলো রয়েছে, সেগুলোর শুরুতেই বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নাহ। এটি ওই বিসমিল্লাহ যে লেখা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন লেখার জন্য।

তাই সে ক্ষেত্রে কেউ যদি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে, তাহলে তিনি সুন্নাহ ঘোষণা করলেন। আর যদি না পড়েন, এতেও কোনো অসুবিধা নেই। যেহেতু এটি ওই সূরার আয়াত বা অংশ নয়।


-- বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

খতনা করার হুকুম কী? কত বছর বয়সে খতনা করানো উত্তম?

 প্রশ্ন : খতনা করার হুকুম কী? কত বছর বয়সে খতনা করানো উত্তম? আমাদের এলাকায় এক লোক নতুন মুসলমান হয়েছে। তার বয়স ৩৫। তার খতনার বিধান কী? অনেকে ছেলের খতনা করিয়ে লোকজনকে দাওয়াত করে খাওয়ায় এটা কেমন? এ ধরনের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা যাবে কী? অনুগ্রহ করে জানালে কৃতজ্ঞ হব। 


উত্তর : খতনা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি শিআরে ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা নবীগণের সুন্নত) পাঁচটি : খতনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের পশম উঠানো, মোঁচ ছোট করা এবং নখ কাটা। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬২৯৭] শারীরিকভাবে শক্ত-সামর্থ্যবান হওয়ার পরই সুবিধাজনক সময় ছেলের খতনা করিয়ে দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব। আর কোনো কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে যদি খতনা না করা হয় অথবা বয়স্ক হওয়ার পর কেউ ইসলাম গ্রহণ করে তাহলেও তার খতনা করা জরুরি। অতএব প্রশ্নোক্ত নবমুসলিমকেও খতনা করে নিতে হবে। ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন ইসলাম গ্রহণ করত তখন সে বড় হলেও তাকে খতনা করার আদেশ করা হত। [আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস : ১২৫২] খতনার উত্তম সময়ের ব্যাপারে ফকীহগণ বলেন, শিশুর শারীরিক উপযুক্ততা ও তার বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌঁছার আগেই বা এর মাঝামাঝি সময়ে যেমন, ৭-১০ বছর বা অনুর্ধ্ব ১২ বছরের মধ্যে করে নেওয়া উত্তম। আর খতনা উপলক্ষ্যে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রমাণ নেই। তাছাড়া বর্তমানে যে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই বর্জনীয়। এছাড়া এতে গান-বাদ্য ইত্যাদি শরীয়তবিরোধী কোনো কিছু থাকলে তা তো সম্পূর্ণ নাজায়েয হবে। [ফাতহুল বারী ১১/৯২, ৯/৫০৩, ১০/৩৫৫, ৪/৪১৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫১-৭৫২, ৬/২৮২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১৩২; আলবাহরুর রায়েক ৭/৯৫-৯৬] গ্রন্থনা ও সম্পদানা : মাওলানা মিরাজ রহমান সৌজন্যে : মাসিক আল-কাউসার


লিংক

How To Make Android Color Coded Tajweed Alquran

 মজার কোডিং 

.

আচ্ছা আসেন, আজকে একটু কোডিং নিয়ে আলোচনা করি। 

.

কুরআনের আয়াত গুলো কালার কোডেড তাজবীদ দেখার জন্য চিন্তায় ছিলাম।  অনেক গুলো অক্ষরের মধ্যে মাঝে মাঝে একটি অক্ষর ভিন্ন রঙ্গের বানানো খুব বেশী কঠিন কিছু না। কিন্তু পুরো কুরআনে এই কাজ করা যথেষ্ট কঠিন।   পরবর্তীতে খোজ পেলাম  api.alqruanCloud এবং GlobalQuran ওয়েব সাইট  কালার কোডেড তাজবীদ এর এপিয়াই তৈরী করে রেখেছে।  এখন দেখুন  আপনি যখন ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি আয়াত রঙিন তাজবীদ অক্ষর সহ তাদের কাছে রিকোয়েস্ট করবেন তার লিংকটা এরকম :

  http://api.alquran.cloud/ayah/24:35/quran-tajweed  

  - এখানে ২৪ নং সুরার ৩৫ নং আয়াত চাওয়া হয়েছে।  যদি সুরা ফাতিহার ১ নং আয়াত অর্থাৎ বিসমিল্লাহ আয়াতটি চান তাহলে লিংক হলো :

  http://api.alquran.cloud/ayah/1:1/quran-tajweed  

 ইচ্ছে করলে উপরের  লিংকে একটু কষ্ট করে  ক্লিক করে মজা দেখতে পারেন। আয়াতটির মূল চেহারা দেখলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন।  আপনি কল করার পর তাদের কাছ থেকে বিসমিল্লাহ কালার কোডেড আয়াত হিসেবে যা পাবেন তা হলো  এই : 

"\u0628\u0650\u0633\u0652\u0645\u0650 [h:1[\u0671]\u0644\u0644\u0651\u064e\u0647\u0650 [h:2[\u0671][l[\u0644]\u0631\u0651\u064e\u062d\u0652\u0645\u064e[n[\u0640\u0670]\u0646\u0650 [h:3[\u0671][l[\u0644]\u0631\u0651\u064e\u062d[p[\u0650\u064a]\u0645\u0650"

উপরের লেখা গুলোতে বিসমিল্লাহ পুরো আয়াতটি রঙিন তাজবীদে লেখা আছে।  এখন এই লেখাটিকে দুই ভাবে হিউম্যান রিডেবল করা যাবে । দুই ভাবে বললাম এই জন্য যে, একভাবে গিটহাব এ দেখানো হয়েছে। আর একভাবে আমি নিজে তৈরী করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। 

গিটহাবে যে সিস্টেম দেখানে হয়েছে, তা হলো :  php (parser) > Css Script > html  

আর আমি তাফহীম এ্যাপে যেভাবে করেছি :  jsonParser > Replace Method ( Make Html String  ) > Html to Text 

এই দুটির মধ্যে পার্থক্য হলো গিটহাব এর পদ্ধতিতে যেহেতু  পিএইচপি এবং সিএসএস আছে, তাই কুরআনের আয়াতগুলো মূল কুরআন অধ্যয়নে দেখানো সম্ভব নয়, আলাদা স্থানে (এ্যাকটিভিটিতে দেখাতে হবে), যেমনটি গ্রীন টেক এ্যাপের ক্ষেত্রে করা হয়েছে,  কিন্তু,   আলহামদুলিল্লাহ আমার পদ্ধতিতে   মূল কুরআন অধ্যয়ন স্ক্রীণেই কুরআন অনুবাদের সাথেই  এ্যারাবিক রঙিন  লেখাটি  দেখানো সম্ভব। 

এখন আসেন উপরের বিসমিল্লাহ আয়াতটি এপিআই থেকে পাওয়ার পর আমরা একে জেসন পার্সার এর মাধ্যমে হিউম্যান রিডেবল তৈরী করলাম । জেসন পার্সার কোড নিম্নরূপ : 

jsonObject = new JSONObject(mainString);

JSONObject object = jsonObject.getJSONObject("data");

String text = object.getString("text");

এই পার্সার এর মাধ্যমে বিসমিল্লাহ রঙিন  আয়াতটির হিউম্যান রিডেবল চেহারা দাড়ালো  নিম্নরূপ : 

"بِسْمِ [h:1[ٱ]للَّهِ [h:2[ٱ][l[ل]رَّحْمَ[n[ـٰ]نِ [h:3[ٱ][l[ل]رَّح[p[ِي]م

এখানে খেয়াল করে দেখেন উপরোল্লিখিত ভাবে যারা পুরো কুরআন কে লিখেছেন / টাইপ করেছেন এবং সবার জন্য উন্মুক্ত এপিআই করে দিয়েছেন তারা কতটুকু পরিশ্রম করেছেন। ভাবা যায় ? 

এখন বিসমিল্লাহ আয়াতটি এ্যাপের মধ্যে রঙিন অক্ষরে দেখানোর জন্য আমরা যে জাভা মেথডটি তৈরী করেছি তা হচ্ছে টেক্সট এর রিপ্লেস ফাংশনের মাধ্যমে তৈরী করা । জাভা মেথডটি নিম্নরূপ : 


public static String replaceText (String text){


        return    text.replaceAll("\\d+", "")

                .replace(":", "")

                .replace("[h[","<font color = '#CAAE1C'>" )

                .replace("[s[","<font color = '#069ECF'>" )

                .replace("[l[","<font color = '#11E6CE'>" )

                .replace("[n[","<font color = '#00ff00'>" )

                .replace("[p[","<font color = '#B97BE4'>" )

                .replace("[m[","<font color = '#AC215F'>" )

                .replace("[q[","<font color = '#788ACC'>" )

                .replace("[o[","<font color = '#A6791D'>" )

                .replace("[c[","<font color = '#D500B7'>" )

                .replace("[f[","<font color = '#CA57DA'>" )

                .replace("[w[","<font color = '#D53333'>" )

                .replace("[i[","<font color = '#4CAF50'>" )

                .replace("[a[","<font color = '#169777'>" )

                .replace("[u[","<font color = '#169200'>" )

                .replace("[d[","<font color = '#FF4081'>" )

                .replace("[b[","<font color = '#A7FFE3'>" )

                .replace("[g[","<font color = '#FF0000'>" )

                .replace("]","</font>" );

    }

এই মেথডটি চালিয়ে দিয়ে বিসমিল্লাহ আয়াতটি যেভাবে পেলাম তা নিম্নরূপ : 


 بِسْمِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font>للَّهِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font><font color = '#11E6CE'>ل</font>رَّحْمَ<font color = '#00ff00'>ـٰ</font>نِ <font color = '#CAAE1C'>ٱ</font><font color = '#11E6CE'>ل</font>رَّح<font color = '#B97BE4'>ِي</font>مِ,

 

 এইটা আসলে একটা Html String , এটাই সর্বশেষ রূপ। এরপর এ্যাপে কালার কোডেড তাজবীদ (রঙিন অক্ষরের ) বিসমিল্লাহ দেখানোর জন্য আমরা জাভার যে মেথডটি ব্যবহার করেছি তাহলো সেট টেক্সট উইথ এইচটিএমএল ফরমেট : 

 textView.setText(Html.fromHtml(bismillahText)); 

 এই শেষ লাইন কোডটির ফলেই আমরা রঙিন হরফে আয়াতগুলো দেখতে পাবো।  এখন প্রশ্ন হতে পারে এপিআই থেকে একটা আয়াত বা সুরা কল করার জন্য তো এ্যাপের অনলাইন হওয়া প্রয়োজন। জ্বি ঠিক বলেছেন। আসলে যা করেছি তা হলো, ম্যানুয়ালি ব্রাউজারে  লিংক দিয়ে এপিয়াই কল করে পুরো একটি সুরা ডাউনলোড করেছি। এরপর অনলাইন জেসন পার্সার এর মাধ্যমে সুরাটিকে হিউম্যান রিডেবল ফরমেট তৈরী করেছি। এরপর  প্রতিটি আয়াতের সাথে সুরা নাম্বার, আয়াত নাম্বার, রুকু নাম্বার, পারা নাম্বার ইত্যাদি যোগ করেছি।  এরপর আয়াতগুলো দিয়ে তথা পুরো কুরআনের  একটি এসকিউলাইট (sQlite) ডাটাবেজ তৈরী করেছি। এরপর এ্যাপের মধ্যে এই সিস্টেম করেছি যে,  অন ডিমান্ড পুরো ডাটাবেজটি একসাথে ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে এবং যেখানে কুরআন অধ্যয়ন করা হয়, ঠিক সেই স্থানেই পূর্বের ডাটাবেজ এর  কালো আয়াত এর পরিবর্তে নতুন রঙিন ডাটাবেজ  এর রঙিন আয়াত দেখাবে। আলহামদুলিল্লাহ। 

উল্লেখ্য যে, পুরো ডাটাবেইজ টি মাত্র চার এমবিরও কম। 

 তো এই হলো রঙিন আয়াত / কালার কোডেড তাজবীদ এ্যান্ড্রয়েডে প্রদর্শনের সিস্টেম। হয়তো অনেক কঠিন মনে হচ্ছে, আসলে আলহামদুলিল্লাহ বিষয়টা অনেক সোজা।  আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গিটহাব এর দেখানো পদ্ধতির পিএইচপি স্ক্রীপ্ট এবং জাভা স্ক্রীপ্ট বাইপাস করে শুধুমাত্র  জেসন পার্সার ও   জাভার মাধ্যমে এত সহজে যে এই জিনিসটা এ্যান্ড্রয়েডে প্রদর্শন করনো যাবে, এই বুদ্ধিটা আসলে মহান আল্লাহই দয়া করে আমাকে দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, অবনত মস্তকে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। বিশ্বাস করুন, এখানে আমার নিজের কোনই কৃতিত্ব নাই। সব কৃতিত্বই একমাত্র মহান আল্লাহর। 

 আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।





Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...