বন্য প্রাণী কুরবানী করা জায়েজ কিনা ?

 

হালাল বন্য প্রাণী কুরবানী করা যাবে কি?

প্রশ্ন

From: মোঃ এহসানুর রহমান
বিষয়ঃ কোরবানি
প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,
এই মাসআলা আপনাদের পেজে প্রকাশ করা হয়েছিল;
(কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে
উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫)
আমার প্রশ্ন হল, এই সমস্ত পশু আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া যায় কিন্তু এমনও অনেক দেশ আছে যেখানে এই সব পশু সহজে পাওয়া নাও যেতে পারে। আবার শীতের দেশ গুলোতে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রানি সহজে তারা পেয়ে থাকেন, যেগুলো আমাদের দেশে সহজলভ্য না, যেমন দুম্বা আরবে সহজলভ্য কিন্তু আমাদের দেশে নয়, এছাড়া লামা নামেও একটি প্রানি দেখলাম বিভিন্ন ফার্মে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে শুনলাম এগুলো নাকি হল্যান্ড অথবা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত, এছাড়া হাটে দেখলাম গয়াল নামের গরুর মতই দেখতে কিন্তু এগুলো বন্য প্রানি যা সচরাচর চিড়িয়াখানায় দেখা যায়।এগুলো দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে কিনা? এগুলো যদি বন্য প্রানি হওয়ার কারনে জায়েজ না হয় তাহলে শীত প্রধান দেশ গুলতে কি জায়েজ হবে? নাকি তাদের মাসআলা ভিন্ন?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে কেবল উট, গরু, মহিষ, বকরি, ভেরা ও দুম্বা এ ক’টি প্রাণী কুরবানী করার কথা এসেছে। যা গৃহপালিত। বন্য গরুও কুরবানী করা যাবে না।

বন্য প্রাণী কুরবানী করার কোন প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়।

তাই যেসব এলাকায় উপরোক্ত গৃহপালিত পশু না পাওয়া যাবে, তাদের জন্য উচিত বাহির থেকে আনানোর চেষ্টা করা। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে একটি মধ্যম ধরণের বকরীর মূল্য সমপরিমাণ টাকা কুরবানীর নিয়তে দান করে দিবে।

কিন্তু তবু্ও বন্য প্রাণী কুরবানী করলে কুরবানী আদায় হবে না।

ولا يجوز فى الاضاحى شيئ من الوحشى (الفتاوى الهندية، كتاب الاضحية، الباب الخامس-5/297، تبيين الحقائق-6/7)

(وَلَوْ) (تُرِكَتْ التَّضْحِيَةُ وَمَضَتْ أَيَّامُهَا) (تَصَدَّقَ بِهَا حَيَّةً نَاذِرٌ) فَاعِلُ تَصَدَّقَ (لِمُعَيَّنَةٍ) وَلَوْ فَقِيرًا، وَلَوْ ذَبَحَهَا تَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا، وَلَوْ نَقَصَهَا تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ النُّقْصَانِ أَيْضًا وَلَا يَأْكُلُ النَّاذِرُ مِنْهَا؛ فَإِنْ أَكَلَ تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ مَا أَكَلَ (وَفَقِيرٌ) عُطِفَ عَلَيْهِ (شَرَاهَا لَهَا) لِوُجُوبِهَا عَلَيْهِ بِذَلِكَ حَتَّى يَمْتَنِعَ عَلَيْهِ بَيْعُهَا (وَ) تَصَدَّقَ (بِقِيمَتِهَا غَنِيٌّ شَرَاهَا أَوَّلًا) لِتَعَلُّقِهَا بِذِمَّتِهِ بِشِرَائِهَا أَوَّلًا، فَالْمُرَادُ بِالْقِيمَةِ قِيمَةُ شَاةٍ تُجْزِي فِيهَا. (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الاضحية-9/463-465

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...