This Blog Contains Al Quran Indexing. Al Quran Searching. The Bible Verse which similar to Alquran are also described in this Blog. Tags: Al Quran, Arabic, Tafhimul Quran, Tafheemul Quran, Arabic search, Tafhimul Quran App, Al Quran Search, আল কুরআন, তাফহীমুল কুরআন, তাফহিমুল কুরআন।
১। তাফহীমুল কুরআন : মানচিত্র সমূহ : হযরত ইবরাহীম আ: এর হিজরতের পথ
প্রশ্ন: ৩৮৮ : শুক্রবারে মৃত্যু হলে কবরের আযাব মাফ হওয়া প্রসঙ্গ।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। বৃহস্পতিবার আসরের পর মাগরিবের ওয়াক্তের আগে কোন মাইয়েত মৃত্যুবরন করলে সেই মাইয়েতকে যদি জুমার নামাজের আগে দাফন সম্পন্ন হয়। তাহলে কি তার কবরের আজাব মাফ হবে
উত্তর : আসলে এসব ব্যাপারে মূল সত্য কথা হচ্ছে, পরকালীন আযাব ও পুরস্কার কোন দিন ক্ষণে মৃত্যুবরণ করার সাথে জড়িত নয়, বরং তা ঈমান ও আমালের সাথে জড়িত। একজন ব্যাক্তির কবরের আজাব বা পরকালীন আজাব হবে কি হবে না, তা মূলত নির্ধারিত হবে তার ঈমান ও আমলনামার উপর ভিত্তি করে। কুরআনের বহু আয়াত এ সত্যটিই দ্বর্থহীন ভাবে তুলে ধরেছে। আর শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে কবরের আযাব মাফ হয়ে যাবে এ সংক্রান্ত হাদীসের ব্যাপারে ইমাম তিরমিযি রহ. বলেন- হাদিসটি গরিব। এটি এমন একটি হাদিস যার সনদ মুত্তাসিল নয়। রাবিয়া ইবনে সাইফ (সরাসরি) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই। আল্লামা কাশমিরি রহ: - তিনি তিরমিযি শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘আল আরফুশ শাযী’ 2/351 তে বলেন-ما صح الحديث في فضل موت يوم الجعة‘‘জুমুআর দিনে মৃত্য বরণের ফযিলত-সংক্রান্ত হাদিস সঠিক নয়।’’ মূল হাদীসটি হচ্ছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلَّا وَقَاهُ اللهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ ‘‘যেকোনো মুসলমান জুমুআর দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিৎনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’’-মুসনাদে আহমদ: 11/147; তিরমিযি, হাদিস 1074 কিন্তু, তারপরেও আলেমগণ বলেছেন, এ হাদীস দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় না যে, এক ব্যাক্তি তার ঈমানের ত্রুটি ও আমলের খিয়ানতের কারণে কবরের আযাবের যোগ্য হয়ে থাকলেও, শুধুমাত্র শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করার কারণেই কিয়ামত পর্যন্ত ঐ ব্যাক্তির কবরের আযাাব মাফ হয়ে যাবে। হতে পারে যদি ঐ ব্যাক্তির ঈমান ও আমল গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের থাকে, তথাপি তার কোন ভুল ত্রুটি থেকে থাকে হয়ত সে কবরের প্রাথমিক ফিতনা থেকে বাচতে পারে, শুধু এতটুকুই, এর বেশী কিছু নয়। যদি তাই হতো, তাহলে বহু সংখ্যক সাহাবীদের থেকে শুক্রবারের মৃত্যু কামনা করার হাদীস পাওয়া যেত, অথচ, হযরত আবুবকর সোমবারে মৃত্যু কামনা করতেন এবং সোমবারেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। (বুখারি - 3/252) । লিংক: https://alquranindex114.blogspot.com/2020/09/blog-post_51.html
প্রশ্ন: ৩৮৭ : আউয়াল ওয়াক্ত বলতে কি বুঝায়
প্রশ্ন:
আওয়াল ওয়াক্ত কি? আউয়াল ওয়াক্ত দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে এর বিস্তারিত ভাবে জানান এবং কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন শুরু হলে আওয়াল ওক্ত ভাববো।
উত্তর : নামাজের প্রতিটি ওয়াক্তের ই একটি ব্যাপ্তি সময় রয়েছে। এই ব্যাপ্তি সময়ের শুরুই হলো আউয়াল ওয়াক্ত । প্রতিটি ওয়াক্ত শুরুর দিকেই ঐ ওয়াক্তের নামাজ পড়ার ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় তাহারাত, সুন্নাত আদায় ইত্যাদি করার পরে ফরজ আদায় করে তবে তা-ই আউয়াল ওয়াক্ত হবে। কিন্তু, ফরজ নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব, তাই একটি এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আলেমগণ জামায়াতে নামাজের একটি সময় নির্ধারণ করে দেন। এলাকার মসজিদে সে অনুযায়ীই জামায়াত আদায় করা হয়। তাই, উক্ত জামায়াতে শামিল হয়ে কেউ যদি জামায়াতে নামাজ আদায় করে তবে তাতেই ঐ ব্যাক্তি আউয়াল ওয়াক্তে নামাজ আদায় করেছে। আর, যদি এমন হয় যে ওয়াক্ত বেরিয়ে যাচ্ছে, আপনি অলসতা করে দেরিতে সালাত পড়ছেন, তাহলে আউয়াল ওয়াক্তের সালাত আদায় হবে না। আউয়াল ওয়াক্তের সালাত আদায়ের ফজিলত আপনি পাবেন না, যেহেতু আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করেছেন। আর যদি এমন হয় যে, ব্যস্ততার কারণে আপনি ভুলে গিয়েছেন, তাহলে যখনই মনে পরবে তখনই সালাত আদায় করবেন। এতে আউয়াল ওয়াক্তের সালাতের ফজিলত আপনি পাবেন।
প্রশ্ন: ৩৮৬: স্ত্রীর বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার ।
প্রশ্ন:
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে স্ত্রীর যেকোনো ধরনের ক্রুটিতে স্বামী তালাকের অধিকার রাখে। এমনকি সে রাগ বসত তালাক দিয়ে দিলেও তা স্ত্রীর উপর কার্যকর হয়।অন্যদিকে স্বামীর যে কোনো ক্রুটিতে সামাজিকভাবে স্ত্রীরা ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে যদি তার ধৈর্য ধারনের শেষ সীমা অতিক্রম করে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে তখন স্ত্রীর করণীয় কি? শরীয়তে নারীর জন্য তালাক অধিকার রাখা হয়নি। এক্ষেত্রে নারী কি ডিভোর্সের অধিকার রাখে কিনা? ইসলামে এ সম্পর্কে নারী মুক্তির ব্যাপারে কি বলে? ইসলামী শরীয়তের ভিত্তিতে এর মাসালা সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : এ বিষয়টিরও ইসলামী শরীয়ত সুন্দর সমাধান দিয়েছে। ১। কাবিন নামা পড়ে দেখবেন, সেখানে উল্লেখ থাকে কোন কোন কারণে একজন স্ত্রী এই স্বামীকে পরিত্যাগ করতে পারবে, তা সেখানে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। অতএব, যদি এরূপ কোন শর্ত স্বামীর দ্বারা ভঙ্গ হয় তবে স্ত্রী আদালতের বা কাজীর দরবারের স্মরণাপন্ন হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আবেদন করতে পারে। ২। অথবা ধরুণ, স্বামী এমন আচরণ করছে যা কাবিন নামায় উল্লেখ নেই, কিন্তু স্ত্রী স্বামীর আচরণে অতিষ্ঠ অথবা এই স্বামীর সাথে একত্রে বসবাস করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রেও সে আদালতে বা কাজীর দরবারের স্মরনাপন্ন হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারে। উপরোক্ত উভয় ক্ষেত্রেই উক্ত বিচারক প্রয়োজন মনে করলে উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং বিচ্ছিন্ন করে দেবেন। একটা কথা মনে রাখবেন, ইসলামী শরীয়ত কারো উপরেই জুলুম করে নাই। তাই অনেক গুলো দিকে দৃষ্টি রেখেই তালাকের ক্ষমতাটা স্ত্রীর হাতে অর্পন না করে স্বামীর হাতে অর্পন করেছে। এটা স্ত্রীর জন্যই শেষপর্যন্ত কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে, এর মানে এই না যে, স্ত্রীর নিজের বিচ্ছিন্ন হওয়ার বুঝি কোন পথ খোলা নেই। না এই ধারনাটা ভুল । স্ত্রীর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথ অবশ্যই খোলা আছে, যা উপরে বর্ণিত হয়েছে।
প্রশ্ন: ৩৮৫: খুলা তালাকের পরিচয় ও পদ্ধতি
প্রশ্ন
উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।.
আলহামদুলিল্লাহ।খুলা হচ্ছে: কোন কিছুর বিনিময়ে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে স্বামী সে বিনিময়টি গ্রহণ করে স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে; এ বিনিময়টি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহরানা হোক কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ হোক কিংবা এর চেয়ে কম হোক।
এ বিধানের দলিল হচ্ছে, আল্লাহ্র বাণী: “আর তাদেরকে যা কিছু দিয়েছো (বিদায় করার সময়) তা থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয়। তবে এটা স্বতন্ত্র, স্বামী-স্ত্রী যদি আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না বলে আশংকা করে, তাহলে এমতাবস্থায় যদি তোমরা আশংকা করো, তারা উভয়ে আল্লাহ্ নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থান করতে পারবে না, তাহলে স্ত্রীর কিছু বিনিময় দিয়ে তার স্বামী থেকে বিচ্ছেদ লাভ করায় উভয়ের কোন গুনাহ নেই।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২২৯]
সুন্নাহ্ থেকে এর দলিল হচ্ছে, সাবেত বিন ক্বাইস বিন শাম্মাস এর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি সাবেত বিন ক্বাইসের উপর চারিত্রিক বা দ্বীনদারির কোন দোষ দিব না। কিন্তু, আমি মুসলিম হয়ে কুফরিতে লিপ্ত হতে অপছন্দ করি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দিবে? সাবেত মোহরানা হিসেবে তাকে বাগান দিয়েছিল। সে বলল: জ্বি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: বাগানটি গ্রহণ করে তাকে বিচ্ছিন্ন করে দাও”[সহিহ বুখারী (৫২৭৩)]
এই ঘটনা থেকে আলেমগণ গ্রহণ করেন যে, কোন নারী যদি তার স্বামীর সাথে অবস্থান করতে না পারে সেক্ষেত্রে বিচারক স্বামীকে বলবেন তাকে তালাক দিয়ে দিতে; বরং স্বামীকে তালাক দেয়ার নির্দেশ দিবেন।
এর পদ্ধতি হচ্ছে- স্বামী বিনিময় গ্রহণ করবেন কিংবা তারা দুইজন এ বিষয়ে একমত হবেন; এরপর স্বামী তার স্ত্রীকে বলবেন: আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম কিংবা আমি তোমাকে খুলা তালাক দিলাম, কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন শব্দ।
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। দলিল হচ্ছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তালাক তারই অধিকার যার রয়েছে সহবাস করার অধিকার” অর্থাৎ স্বামীর। [সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৮১), আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে (২০৪১) হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
এ কারণে আলেমগণ বলেন: যে ব্যক্তিকে তালাক দেয়ার জন্য অন্যায়ভাবে জবরদস্তি করা হয়েছে; সে ব্যক্তি যদি এ জবরদস্তি থেকে বাঁচার জন্য তালাক দেয় তাহলে সে তালাক সংঘটিত হবে না।[দেখুন আল-মুগনী (১০/৩৫২)]
আপনাদের সেখানে মানবরচিত আইনে স্ত্রী নিজেই নিজেকে তালাক দিতে পারার যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন: যদি সেটা এমন কোন কারণে হয় যে কারণে মহিলার জন্য তালাক চাওয়া জায়েয আছে; যেমন- স্ত্রী তার স্বামীকে অপছন্দ করা, স্বামীর সাথে একত্রে থাকতে না পারা, কিংবা স্বামীর দ্বীনদারির ঘাটতি ও হারামে লিপ্ত হওয়ার স্পর্ধাকে অপছন্দ করা ইত্যাদি, তাহলে স্ত্রীর তালাক চাওয়াতে কোন দোষ নেই। তবে, এ অবস্থাতে স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে যে মোহরানা গ্রহণ করেছে সেটা ফেরত দিতে হবে।
আর যদি যথাযথ কারণ ছাড়া স্ত্রী তালাক চায় তাহলে সেটা নাজায়েয। এমতাবস্থায় কোর্ট যদি তালাক কার্যকর করে তাহলে সেটা ইসলামি শরিয়তে গ্রাহ্য হবে না। বরং এ মহিলা এ পুরুষের স্ত্রী হিসেবে বলবৎ থাকবে। এখানে হচ্ছে সমস্যা। সমস্যাটা হলো- এ নারী আইনের দৃষ্টিতে তালাকপ্রাপ্তা; ইদ্দত শেষ হলে সে হয়ত অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। অথচ প্রকৃতপক্ষে সে তালাকপ্রাপ্ত নয়; সে অন্য একজনের স্ত্রী।
শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন এ ধরণের মাসয়ালার ক্ষেত্রে বলেন:
আমরা এখন একটা সমস্যা সংকুল মাসয়ালার সামনে আছি। এ নারী তার স্বামীর বিবাহাধীনে থাকায় অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না। কিন্তু, বাহ্যতঃ কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে সে তালাকপ্রাপ্তা নারী; যখনি তার ইদ্দত পূর্ণ হবে তার জন্য অন্য স্বামী গ্রহণ করা বৈধ। এ সমস্যা নিরসনে আমার দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে কিছু দ্বীনদার ও ভাল মানুষকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; যাতে করে তারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সমঝোতা করতে পারে। সমঝোতা না হলে, স্ত্রী তার স্বামীকে বিনিময় দিতে হবে; যাতে করে এটি ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে খুলা তালাক হিসেবে গণ্য হয়।
শাইখ উছাইমীনের লিকাউল বাব আল-মাফতুহ; নং ৫৪, (৩/১৭৪) দারুল বাছিরা প্রকাশনী, মিশর
প্রশ্ন: ৩৮৪ : মহিলাদের জন্য জোরে কথা বলার হুকুম কি?
মহিলাদের জন্য জোরে কথা বলার হুকুম কি?
প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
মুসলিম উম্মাহর সন্দেহ, সংশয় ও বিভেদ নিরসনে আপনাদের ভুমিকা আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নেয়ামত। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আপনাদের মত হাক্কানি আলেমদের দ্বীনের হেফাজতের জন্য কবুল করেছেন। বিশেষ করে আহলে হাদিস ও অন্যান্য বাতিল ফিরকা যেভাবে মানুষদের মধ্যে দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহ তৈরি করছে তার বিরুদ্ধে আপনাদের দলিল ভিত্তিক জবাব সঠিক রাহবারি করছে, উম্মত কে বিপথগামিতা থেকে সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আলাহ তায়ালা আপনাদের ইলম আরও বাড়িয়ে দিন।
আমার একটি প্রশ্ন হলঃ মহিলাদের সব সময় নিচু আওয়াজে কথা বলা ফরজ- কথাটি কি সঠিক? বিস্তারিত আলোচনা করে বাধিত করবেন।
মোঃ ফায়সাল, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যদি পর পুরুষ কথা শুনে ফেলার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে প্রয়োজন ছাড়া জোরে কথা বলা জায়েজ নয়। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে জোরে কথা বলতে সমস্যা নেই।
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
মহিলাদের জন্য আস্তে কথা বলা ফরজ?
প্রশ্ন
মেয়েদের আস্তে কথা বলা ফরজ। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিস কি বলেছে? আর যে সব নারীরা উচ্চ স্বরে কথা বলে কি বলা হয়েছে? হাদিসের আলোকে জানতে চাই।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
আস্তে কথা বলা ফরজ এভাবে বলা উচিত হবে না। বাকি প্রয়োজন ছাড়া জোরে কথা না বলাই উচিত। তবে প্রয়োজনে জোরে কথা বলা জায়েজ আছে। পরপুরুষকে আকৃষ্ট করার মানসে বা আকৃষ্ট হবার শংকা থাকলে জোরে কথা বলা জায়েজ নয়।
إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
প্রশ্ন: ৩৮৩: হায়েজ চলাকালীন সময়ে তালাক দিলে তালাক পতিত হয় কি?
প্রশ্ন
আমার স্বামী আমাকে আমার পিরিয়ড চলার সময় তালাক প্রদান করেছে। আমার প্রশ্ন হল, মাসিক চলার সময় তালাক দিলে কি তা পতিত হয়?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
মাসিকের সময় যদিও তালাক দেয়া নিষেধ। কিন্তু তালাক দিলে তালাক পতিত হয়ে যায়।
ابْنَ عُمَرَ قَالَ طَلَّقَ ابْنُ عُمَرَ امْرَأَتَه“ وَهِيَ حَائِضٌ فَذَكَرَ عُمَرُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِيُرَاجِعْهَا قُلْتُ تُحْتَسَبُ قَالَ فَمَهْ
ইবন ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে হায়িয অবস্থায় তালাক দিলেন। ‘উমার (রাঃ) বিষয়টি নাবী এর কাছে ব্যক্ত করলেন। তখন তিনি বললেনঃ সে যেন তাকে ফিরিয়ে আনে। রাবী ইব্ন সীরীন) বলেন, আমি বললাম ,তালাকটি কি গণ্য করা হবে? তিনি (ইবনে ‘উমার) বললেন,তাহলে কী? [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫২৫২]
يقع الطلاق باتفاق المذاهب الأربعة فى حال الحيض او فى حال الطهر الذى جامع الرجل أمرأته فيه، لأن النبى صلى الله عليه وسلم أمر ابن عمر بمراجعة أمرأته التى طلقها، وهى حائض المراجعة لا تكون إلا بعد وقوع الطلاق (الفقه الاسلامى وادلته-7/387-388)
وإذا طلق الرجل امرأته فى حالة الحيض وقع الطلاق، لأن النهى عنه لمعنى فى غيره، وهو ما ذكرنا، فلا ينعدم مشروعيته، ويستحب له أن يراجعها لقوله عليه السلام لعمرمر ابنك فليراجعها، وقد طلقها فى حالة الحيض، وهذا يفيد الوقوع (الهداية-2/357)
ولنا قوله عليه الصلاة والسلام لعمر من ابنك فليراجعها، وكان طلاقها فى حالة الحيض والمراجعة بدون وقوع الطلاق محال (تبيين الحقائق-3/30، زكريا، قديم-2/193
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
প্রশ্ন: ৩৮২ : শুক্রবারে মৃত্যু বরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত কবরের আযাব কি বন্ধ থাকে?
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلَّا وَقَاهُ اللهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ
‘‘যেকোনো মুসলমান জুমুআর দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিৎনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’’-মুসনাদে আহমদ: 11/147; তিরমিযি, হাদিস 1074
উপরিউক্ত হাদিসের উপর ভিত্তি করেই এ কথাটি ব্যাপকভাবে প্রচার লাভ করেছে যে, জুমুআর দিনে মৃত্যু বরণ করলেই কেল্লা ফতেহ। তার কবরের আযাব মাফ হয়ে যাবে। একারণেই যেকোনো ফাসেক-ফাজের, সুদখোর, ঘুষ-খোর মোটকথা যত বড় অপরাধীই হোক-না কেন, শুক্রবার দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করলে সাধারণ মানুষ দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করে যে, মৃত ব্যক্তির কবরে কোনো-ই আযাব হবে না; এমনটি কিয়ামত পর্যন্ত না। এর ব্যতিক্রম হতে পারে এমনটি কেউ ধারণাই করে না।
কিন্তু বাস্তবেই কি তাই? বাস্তবেই কি জুমুআর দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করলে কবরের আযাব মাফ হয়ে যায়? উপরিউক্ত হাদিসটি কোন পর্যায়ের? হাদিসটি কি সহিহ? বিষয়টি একটি পর্যালোচনার দাবী রাখে। প্রথমেই আমরা হাদিসটি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো এরপর একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
হাদিসটি ইমাম তিরমিযি রহ. নিম্নোক্ত সনদে বর্ণনা করেন-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، وَأَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، قَالَا: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْن أَبِي هِلَالٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ سَيْفٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍ
ইমাম তিরমিযি রহ. বলেন-
হাদিসটি গরিব। এটি এমন একটি হাদিস যার সনদ মুত্তাসিল নয়। রাবিয়া ইবনে সাইফ (সরাসরি) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
ইমাম তিরমিযি রহ. এর কথা থেকে বুঝা গেল, হাদিসটি মুত্তাসিল নয় অর্থাৎ এর সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। রাবিয়া এবং আব্দুল্লাহ এর মধ্যে কোনো রাবী বাদ পড়েছে। কিন্তু রাবিয়া এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. এর মাঝে বাদ পড়া সেই রাবী কে?
বিষয়টির বিস্তারিত বিবরণ শরহু মুশকিলিল আসার (1/250) এ ইমাম তাহাবী রহ. এর একটি রেওয়ায়েতে এসেছে। তাঁর রেওয়ায়েতে রাবিয়া এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. এর মধ্যখানে তিনজন রাবির কথার এসেছে। এরা হচ্ছেন, আব্দুর রহমান ইবনে ক্বাহযাম, ইয়ায ইবনে ইকবা, ‘সদফ’ এর এক ব্যক্তি।
ইয়ায ইবনে উকবা একজন্য তাবেয়ী ছিলেন। (রিয়াযুন নুফুস, আবু বকর আব্দুল্লা ইবনে মুহাম্মদ আল মালেকী, পৃষ্ঠা 132) আর ‘ইবনে ক্বাহযাম’ সম্পর্কে শায়েখ শুআইব আল আরনাউত রহ. বলেন, তিনি ‘মাজহুলুল হাল’। ইবনে মাকুলা তার আল ইকমাল: 7/101-102 এর উল্লেখ করেছেন। আর ‘সদফী’ সম্পর্কে বলেন, লোকটি ‘মুবহাম’ (অস্পষ্ট)।-মুসনাদে আহমদ: 11/150
অবশ্য আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের হাদিসটি উপরিউক্ত সনদ ছাড়াও ভিন্ন সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।
যেমন মুসনাদেন আহমদে 11/225 নিম্নোক্ত সনদে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে:
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي الْعَبَّاسِ حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ سَعِيدٍ التُّجِيبِيُّ سَمِعْتُ أَبَا قَبِيلٍ الْمِصْرِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ مَاتَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ وُقِيَ فِتْنَةَ الْقَبْرِ
সনদের রাবি مُعَاوِيَةُ بْنُ سَعِيدٍ التُّجِيبِيُّ ইবনে হিব্বান ছাড়া কেউ তাঁর তাওসিক করেন নি। أَبو قَبِيلٍ الْمِصْرِيَّ কে হাফেজ ইবেন হাজার রহ. তাঁর তা‘জিলুল মানফাআহ গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসটি ইমাম বাইহাকি রহ. তাঁর ‘ইসবাতু আযাবিল কাবর’ গ্রন্থে (82) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর থেকে নিম্নোক্ত সনদে ‘মওকুফান’ অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের বক্তব্য হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ، وَأَبُو سَعِيدٍ قَالا: ثَنَا أَبُو الْعَبَّاسِ، نَا مُحَمَّدٌ، نَا عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ، ثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ سِنَانِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الصَّدَفِيِّ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، كَانَ يَقُولُ: " مَنْ تُوُفِّيَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ وُقِيَ الْفَتَّانَ ". وَرُوِيَ ذَلِكَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ مَرْفُوعًا
এছাড়াও আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের উপরিউক্ত হাদিসটির ‘শাহিদ’ তথা সমার্থক আরো কয়েকটি হাদিস রয়েছে:
এক.
হযরত আনাস রা. এর হাদিস:
হাদিসটি মুসনাদে আবু ইয়া‘লাতে নিম্নোক্ত সনদে বর্ণিত হয়েছে:
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ وَاقِدِ بْنِ سَلامَةَ، عَنْ يَزِيدَ الرَّقَاشِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: " مَنْ مَاتَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وُقِيَ عَذَابَ الْقَبْرِ "
সনদের রাবি ‘ওয়াকিদ ইবনে সালামাহ’ এবং ‘ইয়াযিদ আর রাকাশি’ দু’জনই দুর্বল রাবী।
দুই.
হযরত জাবির রা. এর হাদিস:
হাদিসটি ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া’ গ্রন্থে 3/155 নিম্নোক্ত সনদে বর্ণিত হয়েছে।
حدثنا عبد الرحمن بن العباس الوراق ثنا أحمد بن داود السجستاني ثنا الحسن بن سوار أبو العلاء ثنا عمر بن موسى بن الوجيه عن محمد بن المنكدر عن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من مات يوم الجمعة أو ليلة الجمعة أجير من عذاب القبر وجاء يوم القيامة عليه طابع الشهداء
হাদিসের সনদে উমর ইবনে মুসা নামক রাবী, হাদিস জাল করার অভিযোগে অভিযুক্ত। বিস্তারিত দেখুন, লিসানুল মিযান: 6/148
প্রশ্ন হলো উপরিউক্ত তাখরিজকে সামনে রেখে আমরা কোন সিদ্ধান্তে উপনিত হবো? হাদিসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে এবং এর কয়েকটি শাওয়াহিদ তথা সমার্থক হাদিস থাকার কারণে এটাকে সহিহ কিংবা হাসান বলবো? নাকি একথা বলবো যে, যদিও অনেক সনদ এবং শাওয়াহিদ রয়েছে কিন্তু এই সকল সনদ এবং শাওয়াহিদগুলো এই পর্যায়ের নয় যে সবগুলো মিলে হাদিসটি হাসান কিংবা সহিহের পর্যায়ে পৌঁছে যাবে?
এব্যাপারে মুহা্দ্দিসীনে কেরামের মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে এটাকে ‘হাসান’ কিংবা ‘সহিহ’ মনে করেন। যেমন মুনযিরি রহ. তাঁর আততারগী: (পৃ. 1286) গ্রন্থে সুয়তি রহ. `আল জামিউস সগির’ গ্রন্থে (ফয়জুল কাদির 5/499) হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। এছাড়াও সমসাময়িক আলেমদের মধ্যে শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. তাঁর ‘আহকামুল জানাইয’ গ্রন্থে পৃ. 50 হাদিসটিকে ‘হাসান’ অথবা ‘সহিহ’ বলেছেন।
এর বিপরিত অনেক মুহাদ্দিস উক্ত হাদিসকে সহিহ মনে করেন না। যেমন:
ক.
ইমাম তাহাবি রহ:
তিনি তাঁর শরহু মুশকিলিল আসার গ্রন্থে (1/250) প্রথমে হযরত আয়েশা রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হাদিস- إنَّ لِلْقَبْرِ لَضَغْطَةً لَوْ كَانَ أَحَدٌ نَاجِيًا مِنْهَا، نَجَا مِنْهَا سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ উল্লেখ করেন। এরপর বলেন, কেউ কেউ বলেন, এই হাদিসটি কি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত হাদিস مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ، أَوْ لَيْلَةِ الْجُمُعَةِ إِلا بَرِئَ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ এর বিরোধী হয়ে গেল?
এরপর তিনি আব্দুল্লাহ ইবন আমরের হাদিসের সনদের দুর্বলতা তুলে ধরে বলেন, এর দ্বারা (এই আলোচনার মাধ্যমে) হাদিসের সনদ যে সঠিক নয়, এসম্পর্কে আমরা অবগতি লাভ করতে পারলাম। আরো জানতে পারলাম যে তাঁর (রাবিয়া, হাদিসের রাবি) জন্য এমন কোনো কিছু রেওয়ায়েত করা বৈধ নয় যার মধ্যে আয়েশার হাদিস অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। (অর্থাৎ রাবিয়ার জন্যে এমন কিছু বর্ণনা করা বৈধ নয় যা হযরত আয়েশা রা. এর পূর্বোক্ত হাদিসের বিরোধী হয়।
ইমাম তাহাবি রহ. এর কথার সারাংশ হচ্ছে-জুমুঅা বারে মৃত্যুর ফযিলত সংক্রান্ত হাদিসটি অায়েশা রা. এর হাদিসের বিরোধী হওয়ার কারণে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
খ.
হাফেয যাহাবি রহ:
তিনি তাঁর মিযানুল ই‘তিদাল গ্রন্থে (7/81) এটিকে ‘মুনকার’ তথা আপত্তিজনক (এমন হাদিস যা ফাযায়েলের ক্ষেত্রেও গ্রহণযোগ্য নয়) বলেছেন।
গ.
আল্লামা কাশমিরি রহ:
তিনি তিরমিযি শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘আল আরফুশ শাযী’ 2/351 তে বলেন-
ما صح الحديث في فضل موت يوم الجعة
‘‘জুমুআর দিনে মৃত্য বরণের ফযিলত-সংক্রান্ত হাদিস সঠিক নয়।’’
ঘ.
সমসামিয়ক আলেম শায়খ শুআইব আল আরনাউত রহ. মুসনাদে আহমদ (11/150) এর টিকায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের হাদিসের ‘শাওয়াহিদ’ তথা সমার্থক কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, এসকল ‘শাওয়াহিদ’ হাদিসকে শক্তিশালি করার যোগ্যতা রাখে না। শায়খ আলবানী তাঁর ‘আল জানাইয’ গ্রন্থে (পৃ. 35) মুকারকপুরির ‘তুহফাতুল আহওয়াযী’ এর অনুসরণে হাদিসটিকে ‘হাসান’ কিংবা ‘সহিহ’ বলে ভুল করেছেন।
উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা গেলো হাদিসটি সহিহ কি সহিহ নয়, এ ব্যাপারে মুহাদ্দিসীনে কেরাম একমত নয়। তাহলে বিষয়টি সমাধান কীভাবে হবে? যেসকল মুহাদ্দিস হাদিসটিকে হাসান কিংবা সহিহ মনে করেন, তাদের মতানুযায়ী কি একথা বলবো, হাদিসটি যেহেতু সহিহ, সুতরাং একথা প্রমাণিত হয়ে গেল যে, শুক্রবারে মৃত্যু বরণ করলে কবরের আযাব মাফ হয়ে যাবে। নাকি যে সকল মুহাদ্দিস উক্ত হাদিসটিকে সহিহ এবং গ্রহণযোগ্য মনে করেন না তাদের কথানুযায়ী বলবো যে হাদিসটি গ্রহণযোগ্য নয়; সুতরাং শুক্রবারে মৃত্যু বরণ করলে কবরের আযাব মাফ হয়ে যায়, এমন কথা ভিত্তিহীন?
কি সিদ্ধান্তে উপনিত হবো? এবিষয়ে সমাধানে পৌঁছার জন্য কয়েকটি বিষয় জানা প্রয়োজন:
ক.
কবরের আযাব সত্য। কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এই আযাব থেকে মুক্তির প্রথম শর্ত ঈমান। দ্বিতীয় শর্ত ঈমানের দাবি অনুযায়ী জীবন যাপন, বিশেষত যেসব গুনাহর কারণে কবরে আযাবের কথা বর্ণিত হয়েছে তা থেকে সর্বোতভাবে বেঁচে থাকা এবং যেসব আমলের দ্বারা কবরের আযাব থেকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি বর্ণিত হয়েছে সেসব আমল গুরুত্বসহকারে করা। আর কবর ও আখিরাতকে সর্বোচ্চ সুন্দর বানানোর চেষ্টায় সর্বদা নিয়োজিত থাকা উচিত।
খ.
আল্লাহ তাআলা পরকালে নাজাত এবং শাস্তি থেকে মুক্তির বিষয়টি আমলের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। বিশেষ কোনো দিনে বা রাতে মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত করেন নি। তাছাড়া এটি একটি গায়রে এখতিয়ারি ফে‘ল। সুতরাং এর সাথে আযাবে কবর মাফ হওয়ার বিষয়টি বাহ্যত অযৌক্তিক।
গ.
যদি বিশেষ কোনো দিনে মৃত্যু বরণ করা ফযিলতপূর্ণ হয়ে থাকে এবং একারণেই আযাবে কবর মাফ হয়ে থাকে তবে সেই দিনটি সোমবার হওয়াই বেশি যুক্তিসংগত। কেননা সোমবার এমন একটি দিন, সহিহ হাদিসের আলোকে যে দিন আল্লাহ তাআলা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন, যেদিন জান্নাতের দরজাসমূহ খোলে দেওয়া হয়।
সহিহ মুসলিমে (2566) হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে জান্নাতে দরজাসমূহ খোলে দেওয়া হয়, অত:পর মুশরিক ব্যতীত সকল বান্দাকেই ক্ষমা করে দেওয়া হয়। তবে ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয় না যার অপর ভাইয়ের সাথে বিদ্বেষ রয়েছে...
এই সোমবার এমন একটি দিন যেদিন আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেছেন। আল্লাহর রাসুলের সাহাবিগণও সোমবারে মৃত্যুর কামনা করতেন। কিন্তু আমরা একটি হাদিস কিংবা আছারেও একথা পাই নি যে আল্লাহর রাসুলের একজন সাহাবিও শুক্রবারে মৃত্যুর কামনা করেছেন; অথচ ঐসকল সাহাবায়ে সব সময় আল্লাহর ভয়ে কম্পমান থাকতেন এবং জাহান্নাম এবং কবরের শাস্তি থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সেই চিন্তায় বিভোর থাকতেন। যদি এতো সহজে আযাবে-কবর থেকে মুক্তি পাওয়া যেত, তাহলে সেই কামনা তারা করতেন। কিন্তু কেউ-ই শুক্রবারে মৃত্যুর কামনা করেন নি। বরং এর বিপরিত আমরা দেখি আল্লাহর রাসুলের সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি হযরত আবু বকর রা. আল্লাহর রাসুলের মৃত্যুর দিন অর্থাৎ সোমবারে মৃত্যুর কামনা করেছেন। হয়েছেও তাই। দেখুন, সহিহ বুখারি, হাদিস 3/252
ঘ.
ইমাম তাহাবি রহ. জুমুআর দিনে মৃত্যু বরণের ফযিলত-সংক্রান্ত হাদিসটিকে হযতর আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হাদিস-
لِلْقَبْرِ ضَغْطَةٌ لَوْ نَجَا مِنْهَا أَحَدٌ، لَنَجَا مِنْهَا سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ
‘‘কবরের একটি চাপ রয়েছে। কারো পক্ষে যদি সেই চাপ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হতো, তাহলে অবশ্যই সা‘দ ইবেন মুআয সেই চাঁপ থেকে বাঁচতেন’’
এই হাদিসের বিরোধী মনে করেন। আর এই হাদিসের কারণেই তিনি জুমুআর ফযিলত-সংক্রান্ত হাদিসকে সহিহ মনে করেন না।
‘যাগতা’ হচ্ছে-কবরের দু’পাশ মৃত ব্যক্তির শরিরের সাথে মিলে যাওয়া।
হযরত সা‘দ ইবনে মুআযের আযাবের কারণ কি? এসম্পর্কে হাকিম তিরমিযি রহ. বলেন, প্রত্যেকের কিছু-না কিছু গোনাহ তো আছেই। তাই কবরের এই ‘যাগতা’ তথা চাপের মাধ্যমে সেই অপরাধ মাফ হয়। এটি হবে অপরাধের প্রতিদান হিসেবে। ঠিক তেমনিভাবেই হযরত সা‘দ ইবনে মুআযেরও কবরের চাপ হয়েছে, প্রশ্রাব থেকে বেঁচে থাকার মধ্যে ত্রুটির কারণে। দেখুন, শরহুস সুয়ুতী আলান নাসায়ী, বাব, যাম্মাতুল কাবরি ওয়া আযাবুহু
লক্ষ্য করুন, সা‘দ ইবনে মুআযের মতো সাহাবি, সুনানে নাসায়ি (2055) এর বর্ণনা অনুযায়ী যার মৃত্যুতে আরশ কেঁপেছে, আসমানের দরজাসমূহ খোলে দেওয়া হয়েছে, সত্তর হাজার ফেরেশতা যার জানাযায় শরিক হয়েছেন; সহিহ ইবনে হিব্বানের বর্ণনা অনুযায়ী (3112) যার সম্পর্কে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- কারো পক্ষে যদি কবরের চাপ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হতো, তাহলে অবশ্যই সা‘দ ইবেন মুআয তা থেকে বাঁচতেন; এমন সাহাবিও যখন কবরের আযাব থেকে মুক্তি থেকে পান নি; সুতরাং যে লোকটি সারাটি জীবন সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি, এবং নেশার মধ্যে কাটিয়েছে, যেই লোকটি সারাটি জীবন হারামের উপর কাটিয়েছে; শুধু একটি গায়রে এখতিয়ারি (অনিচ্ছাকৃত) আমল অর্থাৎ শুক্রবারে মৃত্যুর কারণে আযাবে কবর থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে, বিষয়টি কি যৌক্তিক মনে হয়?
ঘ.
গোনাহগারের জন্য কবরের আযাবের বিষয়টি কুরআন হাদিসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং এর বিপরিত কারো জন্য যদি আযাবে কবর মাফ হওয়ার দাবী করতে হয় তাহলে এর স্বপক্ষে অকাট্য দলিল থাকতে হবে। এসম্পর্কে মোল্লা আলী কারী রহ. এর বক্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ফিকহুল আকবারের ব্যাখ্যা গ্রন্থে আবু মুয়িনের রমযান এবং শুক্রবারে কবরের আযাব মাফ সংক্রান্ত আলোচনাটি উল্লেখ করে বলেন-
এটা সুস্পষ্ট বিষয় যে আকিদার ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য হল, ইয়াকিনি তথা সুনিশ্চিত দলিল। ‘হাদিসে আহাদ’ (যে হাদিসটি মুতাওয়াতির পর্যায় পৌঁছায়নি) যদি প্রমাণিত হয় তবে তা জন্নি তথা সুনিশ্চিত দলিল নয়। তবে হাদিসটি যদি একাধিক সনদের কারনে মুতাওতিরে মানবি (এমন দলিল যা এত সুত্রে বর্ণিত হয়েছে যে যাকে যৌক্তির নিরিখে মিথ্যা বলা অসম্ভব হয়) হয় তখন সেটা কাতয়ী (সুদৃঢ় দলিল) হয়ে যাবে। ( মিনাহুর রওদিল আযহার ফি শরহে ফিকহুল আকবার-২৯৫-২৯৬)
উপরর্যুক্ত দীর্ঘ অালোচনার ভিত্তিতে বলতে চাই, শুক্রবারে মৃত্যু বরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত কবরের অাযাব মাফ হয়ে যাবে (যেমনটি লোকমুখে প্রসিদ্ধ) একথা বলার কোনো সুযোগ নেই।
হ্যাঁ, শুক্রবারে মৃত্যু বরণের ফযিলত সংক্রান্ত হাদিসটি কে হাসান ধরে নিলে শুধু এতটুকু বলা যেতে পারে যে, শুক্রবারে মৃত্যু হলে শুধু ঐ দিন কবরে আযাব হবে না। (ঐ দিনের বিশেষ ফযিলতের কারণে) কিন্তু এই হাদিসের কোথাও একথা তো বলা হয় নি যে, শুক্রবারে মৃত্যু বরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত আযাব মাফ হয়ে যায়! অার অাযাবে কবরের অকাট্য দলিলগুলোর অালোকে একথা বলার সুযোগও নেই। উপরে শেষ দিকে উল্লিখিত লক্ষনীয় বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে পড়লে বিষয়টি অাপনার কাছেও সুস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা।
মুল্লা আলী কারী রহ. তাঁর ‘মিনাহুর রওদিল আযহার ফি শরহে ফিকহুল আকবার (পৃ. ২৯৫-২৯৬) এ একথাটিই বলেছেন। তিনি বলেন-
ثبت في الجملة ان من مات يوم الجمعة او ليلة الجمعة يرفع العذاب عنه الا أنه لا يعود اليه الي يوم القيامة فلا اعرف له اصلا
‘‘জুমার দিনে বা জুমার রাতে যে মারা যাবে তার থেকে কবরের আজাব উঠিয়ে নেওয়া হবে, এটা মোটামুটি প্রমাণিত। তবে কিয়ামত পর্যন্ত আর (আজাব) ফিরে আসবে না একথার কোন ভিত্তি আমার জানা নেই।’’
আল্লাহ তাআলা আমাকে আপনাকে সবাইকে কবরের আযাব থেকে মুক্তি দান করুন, আমিন।
প্রশ্ন: ৩৮১ : একজন মেয়ে একা কতদূরের পথ সফর করতে পারবে ?
যদি ৪৮ মাইল (৭৭ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে সফর হয়, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত পুরুষদের থেকে নিজের কোনো মাহরাম আত্মীয় ভাই, বাবা বা স্বামী সঙ্গে না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নারীর জন্য সফর করা জায়েজ নেই। তা হজের সফর হোক বা উচ্চশিক্ষার জন্য সফর হোক কিংবা দেশ ভ্রমণ হোক। শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের জন্য তার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত ৪৮ মাইল বা তদাপেক্ষা বেশী দুরুত্বের সফর করা জায়েয নয়। এর কম হলে জায়েয আছে । তবে সর্বাবস্থায় মাহরাম পুরুষের সাথে সফর করাই উত্তম। আর গাইরে মাহরামদের সাথে সফর করা মারাত্তক গোনাহ।হাদীসে মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের সফরের ব্যপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। -বুখারী শরীফ হা: নং১০৮৬,ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২।
মহিলাদের ওপর হজ্জ ফরজ হওয়ার জন্য তার স্বামী বা মাহরাম শর্ত। মাহরাম ছাড়া হজ্জ সফর মহিলাদের জন্য জায়েজ নয়। (মাআরেফুল কুরআন)
তবে সফরের দূরত্ব যদি ৪৮ মাইল বা তার কম হয় তবে ইমাম আবু হানিফাসহ কতিপয় হানাফী ইমামদের মতে মাহরাম প্রয়োজন নেই। (মাযহারী, শরহে বেকায়া ও হেদায়া)
কিন্তু ইমাম মালিকসহ একদল হানাাফীদের মত হলো, পথ অল্প-বিস্তর যাই হোক, মাহরাম ছাড়া সাধারণ কিংবা হজ্জ; কোনো সফরই জায়েজ নয়। কারণ রাসূল (সা.) বলেছেন, মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলা যেন সফর না করে। (বুখারী)
রিয়াদ থেকে প্রকাশিত ফতোয়ায়ে লাজনায় বলা হয়েছে, ‘যে মহিলার মাহরাম নেই সে মহিলার ওপর হজ্জ ফরজ নয়। এটা সুফিয়ান সাওরী, হাসান বসরী, ইবরাহীম নাখয়ী, ইমাম আহমদ, ইসহাক, ইবনে মুনযির ও ইমাম আজম আবু হানীফার মত। আর এটাই সঠিক।’ (ফতোয়ায়ে লাজনা) সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বাযসহ কয়েকজন বিশ্ববরেণ্য মুফতী এ ফতোয়ায় স্বাক্ষর প্রদানের মাধ্যমে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। (লাজনা)
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘মাহরাম ছাড়া কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না এবং কোনো নারী মাহরাম ব্যতীত সফর করবে না। এক সাহবী বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্ত্রী হজ্জ করতে যাচ্ছে আর আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি। রাসূল (সা.) বললেন, তোমার স্ত্রীর সাথে হজে যাও।’ (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মহিলার জন্য মাহরাম না পাওয়ার কারণে হজ্জ সফর থেকে বিরত থাকা জায়েজ নয়। তার উচিত কোনো মহিলা দলের সাথে হজ্জ সম্পন্ন করা।’ (সুনানে আবু দাউদ, মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
‘মানুষের মধ্য থেকে যারা এই ঘরে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তারা যেন এই ঘরের হজ্জ সম্পন্ন করে। এটি তাদের ওপর আল্লাহর হক। আর যে ব্যক্তি এ নির্দেশ মেনে চলতে অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ববাসীর প্রতি মুখাপেক্ষী নন।’ (সূরা আলে ইমরান, ২:৯৭) এ আয়াতে ‘মানুষ’ বলে নারী-পুরুষ উভয়কেই বুঝানো হয়েছে। ‘পৌঁছার সামর্থ্য রাখা’র ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেছেন, ‘যানবাহন বা যানবাহনের ভাড়া এবং অন্যান্য পাথেয় ও খরচাদি সংগ্রহ করতে সমর্থ হওয়া। (মাযহারী, ইবনে কাসীর, তাবারী)
যেসব হাদীসে মহিলাদের জন্য সফর সঙ্গী হিসেবে মাহরাম বা স্বামী সঙ্গে থাকার কথা বলা হয়েছে তার মূল উদ্দেশ্য হলো, ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়া। কোনো বিশ্বস্ত মহিলা দলের সাথে যাত্রা করলে এ উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়ে যাবে। বিশ্বস্ত মহিলা দলের ব্যাখ্যা ইমাম শাফেয়ী এভাবে করেছেন, ‘দলের কিছু সংখ্যক মহিলা নির্ভরযোগ্য হতে হবে এবং তাদের সাথে মাহরাম থাকতে হবে। তবেই এ দলের সাথে একজন মাহরামহীন মহিলা হজ্জ সফরে যেতে পারবে।’ (আসান ফেকাহ) তবে এমন কোনো পুরুষ দলের সাথে মহিলারা যেতে পারবেন না, যে দলে কয়েকজন মহিলা নেই বা নিজ মাহরাম পুরুষ নেই। (আল উম্ম)
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘মাহরাম ছাড়া কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না এবং কোনো নারী মাহরাম ব্যতীত সফর করবে না। এক সাহবী বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্ত্রী হজ্জ করতে যাচ্ছে আর আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি। রাসূল (সা.) বললেন, তোমার স্ত্রীর সাথে হজে যাও।’ (বুখারী ও মুসলিম)
ইসলামী শরীয়ত যদি কোনো বিষয়কে ফিতনা দূর করার জন্য নিষিদ্ধ করে থাকে তবে পরবর্তীতে ঐ ফিতনা দূর হয়ে গেলে তা বৈধ হয়ে যায়। মহিলাদের জন্য একাকী হজ্জ সফর নিষিদ্ধের কারণ হলো, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মাহরাম ছাড়া সফর করার সময় নিরাপত্তার ব্যাপরে যদি পূর্ণ বিশ্বস্ত মহিলা দল পাওয়া যায় তবে ঐ দলের সাথে সফর করা জায়েজ। (ফতোয়ায়ে কারযাভী।)
যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয় তবে গাইরে মাহরাম তো বটেই, মাহরামের সঙ্গেও সফর করাও মাকরুহ। হানফী মাযহাবসহ সব ইমামই এ বিষয়ে একমত। যেমন আবু দাউদ বাযযামিয়্যাহ বর্ণনা করেছেন, আমাদের সময়ে দুধ বোন তার দুধ ভাইয়ের সাথে সফর করতে পারবে না। রদ্দুল মুহতারে বলা হয়েছে, এমনিভাবে যুগের ফাসাদের কারণে যুবতী শাশুড়ি তার মেয়ের জামাইয়ের সাথে সফর করতে পারবে না। (ইলাউস সুনান) অথচ এরা কুরআন ও হাদীসের আলোকে পরস্পর পরস্পরের মাহরাম। কিন্তু পরবর্তীতে ইমামরা এটাকে অপছন্দ করেছেন এজন্য যে এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।
ইমামদের মাঝে যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে তার মূল ভিত্তি হলো মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই মহিলাদের হজ্জের জন্য তাদের সার্বিক নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ত দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল মহিলাদের ওপর হজ্জ ফরজ বা অন্যান্য সফর জায়েজ, অন্যথায় নয়।
আদী ইবনে হাতেম (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘হে আদী! তোমার জীবনকাল যদি দীর্ঘ হয়, তুমি অবশ্যই দেখতে পাবে, ইরাকের হীরা অঞ্চল থেকে একজন মহিলা একাকী উটের হাওদায় বসে কাবা তাওয়াফ করবে এবং সে আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাবে না।’ (বুখারী ও মুসলিম) অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘সে মহিলা আল্লাহর ঘর তাওয়াফের নিয়তে/উদ্দেশে একাকী আসবে তার সাথে অন্য কেউ থাকবে না।’ (ফিকহুন্নিসা।) এ হাদীসে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, ইসলামের কল্যাণে মানুষের জান মালের নিরাপত্তা এমন পর্যায়ে পৌঁছবে, মহিলারা একাকী হজের নিয়তে সফর করবে তাদের কোনো অসুবিধা হবে না।। আর এর বৈধতাও এই হাদীস দ্বারাই প্রমাণীত হয়েছে। কারণ রাসূল (সা.) সতর্কতামূলক নয় বরং প্রশংসামূলকভাবেই এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। (ফতোয়ায়ে কারযাভী) এ হাদীস থেকে আলেমগণ এ যুক্তিও গ্রহণ করেছেন যে, নিরাপত্তার বিঘœ না হলে মহিলারা একাকী হজ্জ সফরে যাত্রা করতে পারবে। (ফিকহুন্নিসা)
শরহে মুসলিমে ইমাম নববী লিখেছেন, প্রখ্যাত তাবেয়ী আতা, সায়ীদ ইবনুল জুবায়ের, ইবনে সীরীন, মালিক ইবনে আনাস এবং ইমাম আওযায়ীর মতে, মহিলাদের হজ্জ সফরে মাহরাম থাকা শর্ত নয়। বরং শর্ত হলো ঐ মহিলা নিজের ইজ্জত-আবরুর হেফাজত এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। ইমাম ইবনে হাযম এবং ইমাম শাফেয়ীও একই শর্ত দিয়েছেন। (শরহে মুসলিম) হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী কারাবীনীর সূত্রে তার কিতাবে একই কথা লিখেছেন। (ফিকহুস সুন্নাহ)
প্রশ্ন: ৩৮০ : আগের কাতারে জায়গা না পেয়ে নামাজের শেষের কাতারে একা দাড়ানো।
যদি কোন ব্যক্তি জামাআতে এসে দেখে যে, কাতার পরিপূর্ণ, তাহলে সে কাতারে কোথাও ফাঁক থাকলে সেখানে প্রবেশ করবে। নচেৎ সামান্যক্ষণ কারো অপেক্ষা করে কেউ এলে তাঁর সাথে কাতার বাধা উচিৎ। সে আশা না থাকলে বা জামাআত ছুটার ভয় থাকলে (মিহরাব ছাড়া বাইরে নামায পড়ার সময়) যদি ইমামের পাশে জায়গা থাকে এবং সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়, তাহলে তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং এ সব উপায় থাকতে পিছনে একা দাঁড়াবে না।
পরন্ত কাতার বাধার জন্য সামনের কাতার থেকে কাউকে টেনে নেওয়া ঠিক নয়। এ ব্যাপারে যে হাদিস এসেছে তা সহীহ ও শুদ্ধ নয়। ১৯৯ তাছাড়াএ কাজে একাধিক ক্ষতিও রয়েছে। যেমন; যে মুসল্লীকে টানা হবে তাঁর নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হবে, প্রথম কাতারের ফযীলত থেকে বঞ্চিত হবে, কাতারের মাঝে ফাঁক হয়ে যাবে, সেই ফাঁক বন্ধ করার জন্য পাশের মুসল্লী সরে আসতে বাধ্য হবে, ফলে তাঁর জায়গা ফাঁক হবে এবং শেষ পর্যন্ত প্রথম বা সামনের কাতারের ডান অথবা বাম দিককার সকল মুসল্লীকে নড়তে-সরতে হবে। আর এতে তাঁদের সকলের একাগ্রতা নষ্ট হবে। অবশ্য হাদীস সহীহ হলে এত ক্ষতি স্বীকার করতে বাধা ছিল না। যেমন নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু হলে কিংবা ওযূ ভেঙ্গে গেলে কাতার ছেড়ে আসতে বাধা নেই। যেহেতু নবী (সঃ) বলেন, “যখন তোমাদের কেউ নামাযে বেওযূ হয়ে যায়, তখন সে যেন নাক ধরে নামায ত্যাগ করে বেরিয়ে আসে।” ২০০ তদনুরূপ ইমামের পাশে যেতেও যদি অনুরূপ ক্ষতির শিকার হতে হয়, তাহলে তাও করা যাবে না।
ঠিক তদ্রূপই জায়গা না থাকলেও কাতারের মুসল্লীদেরকে এক এক করে ঠেলে অথবা সরে যেতে ইঙ্গিত করে জায়গা করে নওয়াতেও ঐ মুসল্লীদের নামাযের একাগ্রতায় বড় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সুতরাং এ কাজও বৈধ নয়। বলা বাহুল্য, এ ব্যাপারে সঠিক ফয়সালা এই যে, সামানে কাতারে জায়গা না পেলে পিছনে একা দাড়িয়েই নামায হয়ে যাবে। কারণ, সে নিরুপায়। আর মহান আল্লাহ কাউকে তাঁর সাধ্যের বাইরে ভার দেন না। ২০১
প্রকাশ থাকে যে, মহিলা জামাআতের মহিলা কাতারে জায়গা থাকতে যে মহিলা পিছনে একা দাঁড়িয়ে নামায পড়বে তার নামায হবে না। ২০২ পক্ষান্তরে পুরুষদের পিছনে একা দাঁড়িয়ে মহিলার নামায হয়ে যাবে।
ফুটনোটঃ১৯৯ (জয়ীফুল জামে ২২৬১ নং), ২০০ (আবূ দাঊদ ১১১৪ নং), ২০১ (লিক্বাউ বাবিল মাফতূহ ২২৭ পৃঃ), ২০২ (মুমতে ৪/৩৮৭)
প্রশ্ন: ৩৭৯ : ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান ।
পবিত্র কোরআন মাজীদে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে-
‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমূখ হয়ো না।’ (সূরা আনফাল, আয়াত:২০)
‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সূরা হাশর, আয়াত:৭)
দাড়ির আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে লিহইয়াহ। এই শব্দটি ‘লাহি’ বা চোয়াল থেকে আগত। চোয়াল তথা গালে গজানো চুলকেই মূলত দাড়ি বলা হয়। নিচের ঠোঁটের নিচে, চিবুকে ও চোয়ালের নিচের অংশে উৎপন্ন চুলও এর অন্তর্ভুক্ত।
দাড়ি পুরুষদের মুখমন্ডলের একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ। গুরুত্ত্বপূর্ণ বলার কারণ হচ্ছে দাড়ি রাখা বা না রাখার ইসলামিক ও বৈজ্ঞানিক উপকারী ও ক্ষতিকর উভয় দিক রয়েছে।
পুরুষদের মুখমন্ডলে দাড়ি রাখা মুসলিমদের এক গুরুত্বপূর্ণ চিন্হ যা তার মুসলমান হওয়ার পরিচয় বহন করে। দাড়ি রাখা ফরজ, ওয়াজিব নাকি সুন্নাত তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) তার জীবনে যা করতেন অর্থাৎ তার কর্মপন্থাই মূলত সুন্নাত হিসেবে পরিগণিত। সেই দিক থেকে দাড়ি রাখা অবশ্যই বড় রকমের সুন্নাত এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
পবিত্র কোরআন মাজীদে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে-
‘বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১)
হাদীস শরীফে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘দশটি বিষয় সকল নবী-রাসূলগণের সুন্নাত। তন্মধ্যে গোঁফ ছোট করা এবং দাড়ি লম্বা করা অন্যতম।’ (সহীহ মুসলিম শরীফ: ১/১২৯)
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ أَحْفُوا الشَّوَارِبَ وَأَوْفُوا اللِّحَى
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ( রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুশরিকদের বিরোধিতা করো, দাড়ি লম্বা কর, আর গোঁফ ছোট কর।’ (সহীহ বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫, সহীহ মুসলিম: হাদীস নং ৬২৫)
‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সূরা হাশর, আয়াত:৭)
এসব দৃষ্টিকোণ থেকে দাড়ি রাখাকে অনেক ওলামায়ে কেরামগণ ওয়াজিবও বলেছেন।
হাদীস শরীফে দাড়ি :
১. হযরত আয়েশা রা. বলেন রাসুল (স:) ইশরাদ করেছেন, দশটি বিষয় সকল নবী রাসুলগণের সুন্নাত তন্মধ্যে গোঁফ ছোট করা এবং দাড়ি লম্বা করা অন্যতম। (মুসলীম শরীফ, ১/১২৯)
২. হযরত আবুহায়ারা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. ইশরাদ করেছেন, তোমরা গোঁফ কাট এবং দাড়ি লম্বা কর, আর অগ্নি পূজকদের বিরোধিতা কর। (মুসলীম শরীফ, ১/১২৯)
৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল স. ইশরাদ করেন, মুশরিকদের বিরোধিতা কর, দাড়ি লম্বা কর, আর গোঁফ ছোট কর। (বুখারী শরীফ-২/৮৭৫, মুসলীম)
৪. হুজুর স. বলেছেন যে, তোমরা ভালভাবে গোঁফ কাট এবং দাড়ি বাড়াও। (বুখারী শরীফ)
৫. হুজুরে (স:) এরশাদ করেন যে, গোঁফ কাট এবং দাড়ি ছড়িয়ে রাখ। (কাজী এয়াজ শরহে মুসলিম নববী)
৬. হযরত আবুহুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম স. ইশরাদ করেন, দাড়ি বাড়াও, গোফ কাট এবং এক্ষেত্রে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করোনা। (মাসনাদে আহমদ)
এক নজরে দাড়ি :
১. দাড়িবাড়াও। (বুখারী, মুসলিমশরীফ)
২.দাড়িপূর্ণ কর। (মুসলিম শরীফ)
৩.দাড়ি ঝুলন্ত ও লম্বা রাখ। (মুসলিম শরীফ)
৪. দাড়ি বেশিরাখ। (বুখারীমুসলিম)
৫. দাড়িকেছাড়, অর্থাৎ কর্তন করোনা। (তাবরানী)।
দাড়ি ও সাহাবায়ে কোরামের আমল :
১. হযরত আব্দুলাহ ইবনে ওমর রা. যখন হজ্জ বা উমরা আদায় করতেন, তখন স্বীয় দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন, অত:পর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। ( বুখারী শরীফ-২/৮৭৫)
২. হযরত আবুহুরায়রা রা. স্বীয় দাড়ি ধরতেন, অত:পর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। (মুসান্ন ফলি-ইবনে আবিশাইবা -১৩/১১২)
প্রশ্ন: ৩৭৮ : কাপরে রক্ত / নাপাক লেগে তা শুকিয়ে গেলে পাক হয়ে যাবে কি
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জামা কাপড়ে নাপাক লাগলে তা দূরিভূত করার দ্বারা উক্ত কাপড় পবিত্র হয়ে যায়। দূরিভূত করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যদি নাপাকটি শুকিয়ে যায়, এবং তা দেখা যায়, তাহলে তা রগরে একদম উঠিয়ে ফেললেই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। যদি রগরে উঠানো না যায়, তাহলে উক্ত নাপাক দূর করার দ্বারা উক্ত কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে কোন সংখ্যার শর্ত নেই। নাপাকটি দূরিভূত হয়ে যাওয়া শর্ত।
তবে যদি নাপাক দেখা না যায়, বরং তা কাপড়ের সাথে মিশে গিয়ে থাকে, কিংবা কোথায় লেগেছে তা জানা না যায়, তাহলে পুরো কাপড় ভাল করে তিনবার ধৌত করা এবং প্রতিবার ভাল করে নিংড়ানো দ্বারা কাপড়টি পবিত্র হয়ে যাবে।
وَإِزَالَتُهَا إنْ كَانَتْ مَرْئِيَّةً بِإِزَالَةِ عَيْنِهَا وَأَثَرِهَا إنْ كَانَتْ شَيْئًا يَزُولُ أَثَرُهُ وَلَا يُعْتَبَرُ فِيهِ الْعَدَدُ. كَذَا فِي الْمُحِيطِ فَلَوْ زَالَتْ عَيْنُهَا بِمَرَّةٍ اكْتَفَى بِهَا وَلَوْ لَمْتَزُلْ بِثَلَاثَةٍ تُغْسَلُ إلَى أَنْ تَزُولَ، كَذَا فِي السِّرَاجِيَّةِ. . . . . وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ مَرْئِيَّةٍ يَغْسِلُهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَيُشْتَرَطُ الْعَصْرُ فِي كُلِّ مَرَّةٍ فِيمَا يَنْعَصِرُ وَيُبَالِغُ فِي الْمَرَّةِ الثَّالِثَةِ حَتَّى لَوْ عَصَرَ بَعْدَهُ لَا يَسِيلُ مِنْهُ الْمَاءُ وَيُعْتَبَرُ فِي كُلِّ شَخْصٍ قُوَّتُهُ وَفِي غَيْرِ رِوَايَةِ الْأُصُولِ يَكْتَفِي بِالْعَصْرِ مَرَّةً وَهُوَ أَرْفَقُ. كَذَا فِي الْكَافِي وَفِي النَّوَازِلِ وَعَلَيْهِ الْفَتْوَى. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة وَالْأَوَّلُ أَحْوَطُ. هَكَذَا فِي الْمُحِيطِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة، الْبَابُ السَّابِعُ فِي النَّجَاسَةِ وَأَحْكَامِهَا وَفِيهِ ثَلَاثَةُ فُصُولٍ، الْفَصْلُ الْأَوَّلُ فِي تَطْهِيرِ الْأَنْجَاسِ-1/42
কাপড়ে নাপাক লাগার পর যদি উক্ত নাপাক শুকিয়ে যায়, তাহলে উক্ত স্থানে হাত বা কাপড় লাগলে তা নাপাক হবে না। শুকানোর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, নাপাক লেগে শুকিয়ে যাওয়া কাপড় নিংড়ালে কোন কিছু বের হয় না। অর্থাৎ কোন কিছুতে তা লাগলে নাপাকের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় না। তাহলে যে কাপড় শুকিয়ে যাওয়া নাপাকে লেগেছে সে কাপড় ও স্থান নাপাক হয় না। সুতরাং পেশাব শুকিয়ে গেলে উক্ত স্থানে হাত লাগার দ্বারা হাতে নাপাকীর চিহ্ন না দেখা যায়, তাহলে হাত বা কাপড় নাপাক হবে না।
وَإِذَا جَعَلَ السِّرْقِينَ فِي الطِّينِ فَطَيَّنَ بِهِ السَّقْفَ فَيَبِسَ فَوَضَعَ عَلَيْهِ مِنْدِيلٌ مَبْلُولٌ لَا يَتَنَجَّسُ (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة، الْفَصْلُ الثَّانِي فِي الْأَعْيَانِ النَّجِسَةِ-1/47، وكذا فى حلبى كبير-1/153
যে নাপাক দেখা যায়, সে নাপাক এক দিরহাম পরিমাণ হলে কাপড় পাক থাকে, উক্ত কাপড় পরিধান করে নামায পড়া শুদ্ধ আছে। তবে যদি এক দিরহাম থেকে অধিক হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহ নামায পড়া শুদ্ধ হয় না।
عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}
এ হাদীসটি দুর্বল। কিন্তু যেহেতু এ বিষয়ে এ হাদীসটিই পাওয়া যায়, এর বিপরীত কোন হাদীস বর্ণিত নেই। তাই এর উপর আমল করা হয়। সেই সাথে এমন কম নাজাসাত থেকে সাধারণত বেঁচে থাকা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার তাই এ সহ নামায জায়েজ হওয়ার বিষয়টি যুক্তিগ্রাহ্য বিষয়ও। এছাড়া সাহাবাদের থেকে বর্ণিত রয়েছে যে,
فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء، باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140
হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
প্রশ্ন: ৩৭৭ : পালক সন্তান বাবা ডাকতে পারবে ?
রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জায়েদ নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁর পিতার নাম ছিল হারেসা। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাত্ মোহাম্মাদের পুত্র বলে ডাকত। কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়া হয়। পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে।
কোরআনে কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর আল্লাহ তোমাদের পোষ্যপুত্রদের তোমাদের পুত্র করেননি, এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ সঠিক কথা বলেন এবং সরল পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকো। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সংগত বিধান। যদি তোমরা তাদের পিতৃপরিচয় না জানো, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে।’ (সুরা আহজাব : ৪-৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের পিতাকে ছাড়া অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি : ৪৩২৬)
এ জন্যই যুগশ্রেষ্ঠ ফকিহ মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মা-বাবা ডাকা বৈধ হলেও অনুত্তম ও অনুচিত। কেননা এতে জাহেলিয়াতের কুসংস্কারের সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায়। ইসলাম এ ধরনের সাদৃশ্য পছন্দ করে না।’ (আহকামুল কোরআন : ৩/২৯২)
Featured Post
প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ
আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে। বিগত দিনের ...
-
يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اذْكُرُوا نِعْمَتِيَ الَّتِي أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَنِّي فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ (২-সুরা-বাক্বারা:১২২.)...
-
(Version 1): Zekr Software With Tafhimul Quran : ডাউনলোড করার পর এক্সট্রাক্ট করে নিবেন ইনশাআল্লাহ: 1. Download Zekr Here 2. Instructions...
-
ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ (০২-বাক্বারা-১৯৯.) তারপর যেখান থে...
-
গলায় মাছের কাঁটা আঁতকে যাওয়া যেমন অস্বস্তিকর ঠিক তেমনই কষ্টকর। তবে কিছু উপায় জানা থাকলে আপনি অল্প সময়ে দূর করতে পারবেন এই কাঁটা। জেনে নিন ত...
-
وَإِذْ غَدَوْتَ مِنْ أَهْلِكَ تُبَوِّئُ الْمُؤْمِنِينَ مَقَاعِدَ لِلْقِتَالِ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (৩-আলে-ইমরান:১২১.) (হে নবী!৯৪ মুস...
-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ইসলামী জীবন বিধান, কুরআন, হাদীস, ইতিহাস, ফিকাহ, আধুনিক ইসলামী যুগ জিজ্ঞাসা ইত্যাদি সংক্রান্ত আপনার যে কোন প...
-
ইমামতির নিয়ম কানুন । ইমামতির জন্য আলাদা কোন নিয়ম কানুন আছে কি ? এই ভিডিওটি দেখুন (ক্লিক করুন) : ইমামতির জন্য আলাদা নিয়ম কান...
-
আসসালামু আলাইকুম । এই এ্যাপে প্রায় সাড়ে সাতাত্তর হাজার করে বাংলা, ইংরেজী ও আরবী শব্দ রয়েছে। Next - Go to Dictionary বাটনে প্রেস কর...
-
এ ব্যাপারে ইসলামিক স্কলারদের আলোচনা থেকে নিন্মোক্ত বিষয়গুলি জানা যায়। এ থেকেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, বিবাহে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করবেন ক...
-
ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী: ‘সিনা চাক’ বা বক্ষবিদারণ শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে আমাদের চিন্তা চলে যায় দেড় হাজার বছর আগে ইতিহাসের একটি বাঁ...