প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। বৃহস্পতিবার আসরের পর মাগরিবের ওয়াক্তের আগে কোন মাইয়েত মৃত্যুবরন করলে সেই মাইয়েতকে যদি জুমার নামাজের আগে দাফন সম্পন্ন হয়। তাহলে কি তার কবরের আজাব মাফ হবে
উত্তর : আসলে এসব ব্যাপারে মূল সত্য কথা হচ্ছে, পরকালীন আযাব ও পুরস্কার কোন দিন ক্ষণে মৃত্যুবরণ করার সাথে জড়িত নয়, বরং তা ঈমান ও আমালের সাথে জড়িত। একজন ব্যাক্তির কবরের আজাব বা পরকালীন আজাব হবে কি হবে না, তা মূলত নির্ধারিত হবে তার ঈমান ও আমলনামার উপর ভিত্তি করে। কুরআনের বহু আয়াত এ সত্যটিই দ্বর্থহীন ভাবে তুলে ধরেছে। আর শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে কবরের আযাব মাফ হয়ে যাবে এ সংক্রান্ত হাদীসের ব্যাপারে ইমাম তিরমিযি রহ. বলেন- হাদিসটি গরিব। এটি এমন একটি হাদিস যার সনদ মুত্তাসিল নয়। রাবিয়া ইবনে সাইফ (সরাসরি) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই। আল্লামা কাশমিরি রহ: - তিনি তিরমিযি শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘আল আরফুশ শাযী’ 2/351 তে বলেন-ما صح الحديث في فضل موت يوم الجعة‘‘জুমুআর দিনে মৃত্য বরণের ফযিলত-সংক্রান্ত হাদিস সঠিক নয়।’’ মূল হাদীসটি হচ্ছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلَّا وَقَاهُ اللهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ ‘‘যেকোনো মুসলমান জুমুআর দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিৎনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’’-মুসনাদে আহমদ: 11/147; তিরমিযি, হাদিস 1074 কিন্তু, তারপরেও আলেমগণ বলেছেন, এ হাদীস দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় না যে, এক ব্যাক্তি তার ঈমানের ত্রুটি ও আমলের খিয়ানতের কারণে কবরের আযাবের যোগ্য হয়ে থাকলেও, শুধুমাত্র শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করার কারণেই কিয়ামত পর্যন্ত ঐ ব্যাক্তির কবরের আযাাব মাফ হয়ে যাবে। হতে পারে যদি ঐ ব্যাক্তির ঈমান ও আমল গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের থাকে, তথাপি তার কোন ভুল ত্রুটি থেকে থাকে হয়ত সে কবরের প্রাথমিক ফিতনা থেকে বাচতে পারে, শুধু এতটুকুই, এর বেশী কিছু নয়। যদি তাই হতো, তাহলে বহু সংখ্যক সাহাবীদের থেকে শুক্রবারের মৃত্যু কামনা করার হাদীস পাওয়া যেত, অথচ, হযরত আবুবকর সোমবারে মৃত্যু কামনা করতেন এবং সোমবারেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। (বুখারি - 3/252) । লিংক: https://alquranindex114.blogspot.com/2020/09/blog-post_51.html
No comments:
Post a Comment