মথি ১২: ৪২ এবং লুক ১১: ৩১

মথি ১২: ৪২
যীশু একজন ভূতগ্রস্তকে সুস্থ করেন, এবং লোকদিগকে উপদেশ দেন
22তখন একজন ভূতগ্রস্ত তাঁহার নিকটে আনীত হইল, সে অন্ধ ও গোঁগা; আর তিনি তাহাকে সুস্থ করিলেন, তাহাতে সেই বোবা কথা কহিতে ও দেখিতে লাগিল। 23ইহাতে সমস্ত লোক চমৎকৃত হইল ও বলিতে লাগিল, ইনি কি সেই দায়ূদ-সন্তান? 24কিন্তু ফরীশীরা তাহা শুনিয়া কহিল, এই ব্যক্তি আর কিছুতে নয়, কেবল ভূতগণের অধিপতি বেল্‌সবূলের দ্বারাই ভূত ছাড়ায়। 25তাহাদের চিন্তা জানিয়া তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, যে কোন রাজ্য আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা উচ্ছিন্ন হয়; এবং যে কোন নগর কিম্বা পরিবার আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা স্থির থাকিবে না। 26আর শয়তান যদি শয়তানকে ছাড়ায়, সে ত আপনারই বিপক্ষে ভিন্ন হইল; তবে তাহার রাজ্য কি প্রকারে স্থির থাকিবে? 27আর আমি যদি বেল্‌সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের সন্তানেরা কাহার দ্বারা ছাড়ায়? এই জন্য তাহারাই তোমাদের বিচারকর্তা হইবে। 28কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা মন্দ-আত্মা ছাড়াই, তবে ত ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে। 29আর অগ্রে সেই বলবান ব্যক্তিকে না বাঁধিয়া কে কেমন করিয়া সেই বলবানের গৃহে প্রবেশ করিয়া তাহার ঘরের দ্রব্য লুট করিতে পারিবে? বাঁধিলে পরেই সে তাহার ঘর লুট করিবে। 30যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ; এবং যে আমার সহিত কুড়ায় না, সে ছড়াইয়া ফেলে।
31এই কারণ আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যদের সকল পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হইবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হইবে না। 32আর যে কেহ মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কোন কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে; কিন্তু যে কেহ পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে না, ইহকালেও নয়, পরকালেও নয়। 33হয় গাছকে ভাল বল, এবং তাহার ফলকেও ভাল বল; নয় গাছকে মন্দ বল, এবং তাহার ফলকেও মন্দ বল; 34কেননা ফল দ্বারাই গাছ চেনা যায়। হে সর্পের বংশেরা, তোমরা মন্দ হইয়া কেমন করিয়া ভাল কথা কহিতে পার? কেননা হৃদয় হইতে যাহা ছাপিয়া উঠে, মুখ তাহাই বলে। 35ভাল মানুষ ভাল ভাণ্ডার হইতে ভাল দ্রব্য বাহির করে, এবং মন্দ মানুষ মন্দ ভাণ্ডার হইতে মন্দ দ্রব্য বাহির করে। 36আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যেরা যত অনর্থক কথা বলে, বিচার-দিনে সেই সকলের হিসাব দিতে হইবে। 37কারণ তোমার বাক্য দ্বারা তুমি নির্দোষ বলিয়া গণিত হইবে, আর তোমার বাক্য দ্বারাই তুমি দোষী বলিয়া গণিত হইবে।
38তখন কয়েক জন অধ্যাপক ও ফরীশী তাঁহাকে বলিল, হে গুরু, আমরা আপনার কাছে কোন চিহ্ন-কার্য দেখিতে ইচ্ছা করি। 39তিনি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, এই কালের দুষ্ট ও ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন ইহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 40কারণ যোনা যেমন তিন দিবারাত্র বৃহৎ মৎস্যের উদরে ছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও তিন দিবারাত্র পৃথিবীর গর্ভে থাকিবেন। 41নীনবীর লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে, কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 42দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন; কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন, আর দেখ, শলোমন হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 43আর অশুচি আত্মা যখন মনুষ্য হইতে বাহির হইয়া যায়, তখন জলবিহীন নানা স্থান দিয়া ভ্রমণ করতঃ বিশ্রামের অন্বেষণ করে, কিন্তু তাহা পায় না। 44তখন সে বলে, আমি যেই স্থান হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি, আমার সেই গৃহে ফিরিয়া যাই; পরে সে আসিয়া তাহা শূন্য, মার্জিত ও শোভিত দেখে। 45তখন সে গিয়া আপনা হইতেও দুষ্ট অপর সাত আত্মাকে সঙ্গে লইয়া আইসে, আর তাহারা সেই স্থানে প্রবেশ করিয়া বাস করে; তাহাতে সেই মনুষ্যের প্রথম দশা হইতে শেষ দশা আরও মন্দ হয়। এই কালের দুষ্ট লোকদের প্রতি তাহাই ঘটিবে।
46তিনি লোকসমূহকে এই সকল কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে, দেখ, তাঁহার মাতা ও ভ্রাতারা তাঁহার সহিত কথা কহিবার চেষ্টায় বাহিরে দাঁড়াইয়া ছিলেন। 47তখন এক ব্যক্তি তাঁহাকে কহিল, দেখুন, আপনার মাতা ও ভ্রাতারা আপনার সহিত কথা কহিবার চেষ্টায় বাহিরে দাঁড়াইয়া আছেন। 48কিন্তু যে এই কথা বলিল, তাহাকে তিনি উত্তরে কহিলেন, আমার মাতা কে? আমার ভ্রাতারাই বা কাহারা? 49পরে তিনি তাঁহার শিষ্যগণের দিকে হাত বাড়াইয়া কহিলেন, এই দেখ, আমার মাতা ও আমার ভ্রাতারা; 50কেননা যে কেহ আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার ভ্রাতা ও ভগিনী ও মাতা।
======
সরল হইবার বিষয়ে শিক্ষা
29পরে তাঁহার নিকটে উত্তর উত্তর অনেক লোকের সমাগম হইলে তিনি বলিতে লাগিলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট, ইহারা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 30কারণ যোনা যেমন নীনবীয়দের কাছে চিহ্নস্বরূপ হইয়াছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও এই কালের লোকদের নিকটে হইবেন। 31দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন, কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন; আর দেখ, শলোমন হইতেও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32নীনবীয় লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে; কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
33প্রদীপ জ্বালিয়া কেহ গুপ্ত কুঠরিতে কিম্বা ঢাকনার নিচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, যেন, যাহারা ভিতরে যায়, তাহারা আলো দেখিতে পায়। 34তোমার চক্ষুই শরীরের প্রদীপ; তোমার চক্ষু যখন সরল হয়, তখন তোমার সমুদয় শরীরও দীপ্তিময় হয়; কিন্তু চক্ষু মন্দ হইলে তোমার শরীরও অন্ধকারময় হয়। 35অতএব দেখিও, তোমার অন্তরে যে দীপ্তি আছে, তাহা অন্ধকার কি না। 36বাস্তবিক, তোমার সমুদয় শরীর যদি দীপ্তিময় হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজ তেজে তোমাকে দীপ্তি দান করে, তেমনি তোমার শরীর সম্পূর্ণরূপে দীপ্তিময় হইবে।




১-রাজাবলী 10 : 1-13, ২-বংশাবলী ৯: ১-১২

শেবা দেশের রাণীর আগমন
(২ বংশা 9:1-12)
1শলোমনের সুখ্যাতির কথা শেবা দেশের রাণীর কাছেও পৌঁছাল। তিনি কূট প্রশ্ন করে তাঁকে যাচাই করতে এলেন জেরুশালেমে। 2সঙ্গে নিয়ে এলেন বিরাট একদল দাস-দাসী লোক-লস্কর। উটের পিঠে বোঝাই করে আনলেন সুগন্ধি মশলা, প্রচুর সোনাদানা ও বহুমূল্য মণিমাণিক্য। শলোমনের কাছে গিয়ে তাঁর মনে যত কিছু প্রশ্ন ছিল—সব জিজ্ঞাসা করলেন। 3শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন। কোন প্রশ্নের উত্তরই তাঁর কাছে কঠিন ছিল না। 4শেবার রাণী শলোমনের প্রজ্ঞার পরিচয় পেলেন। দেখলেন তাঁর গড়া রাজপ্রাসাদ। 5দেখলেন তাঁর ভোজের আসরে পরিবেশিত খাদ্যসম্ভার, কর্মচারীদের বাসস্থান, প্রাসাদের কর্মচারীদের শ্রেণীবিন্যাস, তাদের পোষাক-পরিচ্ছদ, পানপাত্র বাহকদের দল এবং প্রভুর মন্দিরে হোমবলির বহর। সব দেখে তিনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। 6রাজা শলোমনকে তিনি বললেন, দেশে থাকতে আমি আপনার প্রজ্ঞা ও কীর্তি সম্বন্ধে যা কিছু শুনেছিলাম সবই সত্যি। 7কিন্তু এখানে এসে নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। এখন দেখছি, এর অর্ধেক কথাও আমি শুনিনি। আমি যে খ্যাতি শুনেছি, আপনার প্রজ্ঞা ও সমৃদ্ধি তার চেয়েও অনেক বেশি। 8আপনার পত্নীরা কত সৌভাগ্যবতী! কত সৌভাগ্যবান আপনার কর্মচারীরা, যারা সর্বদা আপনার সেবা করে এবং নিয়ত শোনে আপনার প্রাজ্ঞ বাণী। 9ধন্য আপনার আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বর! ইসরায়েলের সিংহাসনে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করে তিনি দেখিয়েছেন যে তিনি আপনার প্রতি কত প্রসন্ন। ইসরায়েলের প্রতি তাঁর প্রেম চিরস্থায়ী, সেইজন্যই তিনি আপনাকে তাদের রাজা করেছেন, যাতে তারা ন্যায়বিচার পায় ও দেশে আইন-শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
10রাণী যা কিছু এনেছিলেন, সব রাজা শলোমনকে উপহার দিলেন। তিনি এনেছিলেন একশো কুড়ি তালন্ত সোনা, প্রচুর সুগন্ধি মশলা ও মণিমাণিক্য। শেবার রাণী যত সুগন্ধি মশলা রাজা শলোমনকে উপহার দিয়েছিলেন, তত সুগন্ধি মশলা আর কোনদিন তিনি পান নি।11(হীরামের নৌবহর ওফির থেকে সোনা আনবার সময় সেইসঙ্গে প্রচুর চন্দনকাঠ আর মণি নিয়ে আসত। 12সেই চন্দন কাঠ দিয়ে রাজা মন্দিরের ও রাজপ্রাসাদের জানালার গরাদ তৈরী করিয়ে ছিলেন। ইসরায়েল দেশে এমন চন্দন কাঠ আর কখনও আমদানী হয়নি, এমনটি আর কখনও দেখাও যায়নি)।
13রাজা শলোমনের কাছে শেবার রাণী যা চাইলেন, তিনি সবই দিলেন তাঁকে। তা ছাড়াও রাজার ভাণ্ডার থেকে প্রচুর দানসামগ্রী তাঁকে দেওয়া হল। তারপর রাণী তাঁর লোক-লস্কর নিয়ে ফিরে গেলেন নিজের দেশে।

==========================================
২-বংশাবলী ৯: ১-১২

শেবা দেশের রাণীর আগমন
(১ রাজা 20:1-13)
1শলোমনের সুখ্যাতির কথা শেবা দেশের রাণীর কাছেও পৌঁছাল। তিনি কূট প্রশ্ন করে তাঁকে যাচাই করতে এলেন জেরুশালেমে। 2সঙ্গে নিয়ে এলেন বিরাট একদল দাসদাসী,উটের পিঠে বোঝাই করে আনলেন সুগন্ধি মশলা, প্রচুর সোনা ও বহুমূল্য মণিমাণিক্য। শলোমনের সঙ্গে দেখা হলে যত প্রশ্ন তাঁর মনে ছিল, সব জিজ্ঞাসা করলেন। শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন। কোন প্রশ্নের উত্তরই তাঁর কাছে কঠিন ছিল না। 3শেবার রাণী শলোমনের প্রজ্ঞার পরিচয় পেলেন, দেখলেন তাঁর গড়া রাজপ্রাসাদ। 4দেখলেন তাঁর ভোজের আসরে পরিবেশিত খাদ্য সম্ভার, কর্মচারীদের বাসস্থান, প্রাসাদের কর্মচারীদের শ্রেণীবিন্যাস, তাদের পোষাক পরিচ্ছদ, ভোজনসভায় পরিবেশনকারী কর্মচারীদের পোষাক এবং প্রভু পরমেশ্বরের মন্দিরে হোমবলির ঘটা। সব দেখে তিনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। 5রাজা শলোমনকে তিনি বললেন, দেশে থাকতে আপনার প্রজ্ঞা ও কীর্তি সম্বন্ধে যা কিছু শুনেছিলাম, সবই সত্যি। 6কিন্তু এখানে এসে স্বচক্ষে না দেখা পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করতে পারি নি। এখন দেখছি এর অর্ধেকও আমি শুনি নি। লোকমুখে আমি যে খ্যাতির কথা শুনেছি, আপনার প্রজ্ঞা ও সমৃদ্ধি তার চেয়েও অনেক বেশি। 7কত সৌভাগ্যবান আপনার কর্মচারীরা–যরা সর্বদা আপনার সেবা করে,আপনার সান্নিধ্য পায় ও নিয়ত শোনে আপনার প্রজ্ঞাবাণী। 8ধন্য আপনার আরাধ্য প্রভু পরমেশ্বর! ইসরায়েলের সিংহাসনে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করে তিনি দেখিয়েছেন যে, তিনি আপনার প্রতি কত প্রসন্ন। ইসরায়েলের প্রতি তাঁর প্রেম চিরস্থায়ী। সেই জন্যই তিনি আপনাকে তাদের রাজা করেছেন যেন তারা ন্যায়বিচার পায় ও দেশে আইন শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
9রাণী যা কিছু এনেছিলেন, সব রাজা শলোমনকে উপহার দিলেন। তিনি এনেছিলেন একশো বিশ তালন্তেরও বেশি সোনা, প্রচুর সুগন্ধি মশলা ও মণিমাণিক্য। শেবার রাণী যত ভাল সুগন্ধি মশলা রাজা শলোমনকে উপহার দিয়েছিলেন তার চেয়ে ভাল সুগন্ধি মশলা আর কোনদিন তিনি পান নি।
10(হীরামের নৌবহর ওফির থেকে সোনা আনবার সময় সেইসঙ্গে প্রচুর চন্দন কাঠ আর মণিমাণিক্য এনেছিল। 11সেই চন্দনকাঠ দিয়ে রাজা মন্দির ও রাজপ্রসাদের সিঁড়ি এবং গায়কদের জন্য বীণা ও নেবলযন্ত্র তৈরী করিয়েছিলেন। যিহুদীয়া দেশে এমন চন্দনকাঠ আর কখনও দেখা যায় নি)।
12শেবার রাণী রাজা শলোমনের কাছে যা চাইলেন, সবই তিনি দিলেন তাঁকে। এ ছাড়াও রাজার ভাণ্ডার থেকে প্রচুর উপহার সামগ্রী তাঁকে দেওয়া হল। তারপর রাণী তাঁর লোকজন নিয়ে ফিরে গেলেন নিজের দেশে।

(জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৩৯ পৃষ্ঠা)

হযরত সুলাইমানকে (আ) যে পশু-পাখির ভাষা শেখানো হয়েছিল, বাইবেলে সে কথা আলোচিত হয়নি। কিন্তু বনী ইসরাঈলের বর্ণনাসমূহে এর সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।
(জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৩৯ পৃষ্ঠা)



জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৪০ পৃষ্ঠা


জিনেরা যে হযরত সুলাইমানের সেনাবাহিনীর অংশ ছিল এবং তিনি তাদের কাজে নিয়োগ করতেন, বাইবেলে একথারও উল্লেখ নেই। কিন্তু তালমূদে ও রাব্বীদের বর্ণনায় এর বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। (জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৪০ পৃষ্ঠা।)

নিচের পৃষ্ঠাটির বাঁ পাশের প্রথম প্যারাটি পড়ে দেখুন : জ্বীনদের উপরে সুলাইমান আ: এর কর্তৃত্ব ছিল তা এখানে বলা হয়েছে :
(LINK) 


গীত সংহিতা ৭২: ১-২, ১০-১১

1হে ঈশ্বর, রাজাকে দান কর তোমার বিচারবুদ্ধি,
প্রদান কর রাজপুত্রকে তোমার ন্যায়পরতা।
2তিনি ধর্মতঃ বিচার করুন তোমার প্রজাদের,
বিচার করুন ন্যায়পরতায় দীনদুঃখীদের।
3দেশ প্রজাদের জন্য উৎপাদন করুক সমৃদ্ধি,
রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হোক ন্যায় ধর্ম।
4দীনদুঃখী প্রজাদের পক্ষে তিনি করুন ন্যায় বিচার,
দরিদ্রদের করুন উদ্ধার অত্যাচারীদের চূর্ণ করুন।
5চন্দ্র সূর্যের মত দীর্ঘায়ু হোন তিনি
বিরাজ করুন তিনি যুগ যুগান্ত ধরে।
6তিনি হোন বর্ষাধারার মতশস্য ক্ষেত্রের উপর যা হয় বর্ষিত,
যার ধারাবর্ষণে ধরণী হয় সিঞ্চিতা।
7তাঁর রাজত্বকালে ন্যায় ধর্মের হোক সম্যক বিস্তার,
চন্দ্রের অস্তিত্ব যতদিন ততদিন বিরাজ করুক দেশে সমৃদ্ধি ও অপার শান্তি।
8এক সমুদ্র থেকে আর এক সমুদ্র পর্যন্ত,
ইউফ্রেটিস নদীতীর থেকে পৃথিবীর প্রান্ত অবধি বিস্তৃত হোক তাঁর অধিকার।
9বৈরী জাতিসমূহ নতি স্বীকার করুক
তাঁর কাছে তাঁর শত্রুরা লেহন করুক ধূলি।
10তার্শিশ ও দ্বীপপুঞ্জের নৃপতিরা তাঁকে প্রদান করুক উপহার সামগ্রী,
শিবা ও সােবার রাজারা আনুক রাজস্ব।
11নৃপতিবৃন্দ সকলেই তাঁর কাছে করুক প্রণিপাত,
সকল জাতিই স্বীকার করুক তাঁর বশ্যতা।
12কারণ তিনি শরণাগত অসহায়কে,
দীন দুঃখী ও বঞ্চিতকে করেন উদ্ধার।
13দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তের প্রতি তিনি দয়াপরবশ,
রক্ষা করেন তিনি দুর্বলের প্রাণ।
14উৎপীড়ন ও দৌরাত্ম্যের কবল থেকে
তিনি তাদের করেন উদ্ধার, তাদের জীবন তাঁর দৃষ্টিতে মূল্যবান।
15দীর্ঘজীবী হোন রাজা,
তাঁকে উপঢৌকন দেওয়া হোক শিবাদেশের সুবর্ণ,
তাঁর জন্য নিরন্তর নিবেদিত হোক প্রার্থনা,
ঈশ্বরের আশিস বর্ষিত হোক তাঁর উপর চিরদিন।
16দেশে হোক শস্যের প্রাচুর্য, গিরিশিখর সমূহে আন্দোলিত হোক শস্যগুচ্ছ,
ফলগুলি হোক লেবাননের ফলের মত উৎকৃষ্ট,
মাঠের তৃণদলের মত অপর্যাপ্ত হোক শস্য ভাণ্ডার।
17তাঁর খ্যাতি হোক চিরস্থায়ী,
সূর্য যতদিন থাকবে ততদিন স্থায়ী হোক তাঁর সুনাম।
তাঁর মাধ্যমেই লোকে হবে আশিসপ্রাপ্ত
সকল জাতিই করুক তাঁর প্রশস্তি।
18ধন্য প্রভু পরমেশ্বর, ইসরায়েলের আরাধ্য ঈশ্বর,
একমাত্র তিনিই মহৎ কর্ম সাধনে সক্ষম।
19চিরধন্য হোক তাঁর গৌরবান্বিত নাম,
তাঁর মহিমায় পরিপূর্ণ হোক এ পৃথিবী,
আমেন, আমেন।
20যিশয়ের পুত্র দাউদের স্তোত্রমালা সমাপ্ত।

(গণনা পুস্তক ২৫: ১-৫ এবং ৩১: ১৬-১৭)

 
1পরে ইস্রায়েল শিটীমে বাস করিল, আর লোকেরা মোয়াবের কন্যাদের সহিত ব্যভিচারে লিপ্ত হইল। 2সেই কন্যারা তাহাদিগকে আপনাদের দেব-প্রসাদ ভোজনের নিমন্ত্রণ করিল, এবং লোকেরা ভোজন করিয়া তাহাদের দেবগণের কাছে প্রণিপাত করিল। 3আর ইস্রায়েল বাল্‌-পিয়োর [দেবের] প্রতি আসক্ত হইতে লাগিল; অতএব ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল। 4সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি লোকদের সমস্ত অধ্যক্ষকে সঙ্গে লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে সূর্যের সম্মুখে উহাদিগকে টাঙ্গাইয়া দেও; তাহাতে ইস্রায়েলের উপর হইতে সদাপ্রভুর প্রচণ্ড ক্রোধ নিবৃত্ত হইবে। 5তখন মোশি ইস্রায়েলের বিচারকর্তৃগণকে কহিলেন, তোমরা প্রত্যেকে বাল-পিয়োরের প্রতি আসক্ত আপন আপন লোকদিগকে বধ কর।
6আর দেখ, মোশির ও ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীর সাক্ষাতে ইস্রায়েল-সন্তানদের মধ্যে এক পুরুষ আপন জ্ঞাতিগণের নিকটে এক মিদিয়নীয়া স্ত্রীকে আনিল, তৎকালে লোকেরা সমাগম-তাম্বুর দ্বারে রোদন করিতেছিল। 7তাহা দেখিয়া হারোণ যাজকের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস মণ্ডলীর মধ্য হইতে উঠিয়া হস্তে বর্শা লইলেন; 8আর সেই ইস্রায়েলীয় পুরুষের পশ্চাৎ পশ্চাৎ কুঠরিতে প্রবেশ করিয়া ঐ দুই জনকে, সেই ইস্রায়েলীয় পুরুষকে এবং পেট দিয়া সেই স্ত্রীকে, বিদ্ধ করিলেন; তাহাতে ইস্রায়েল-সন্তানগণ হইতে মহামারী নিবৃত্ত হইল। 9যাহারা ঐ মহামারীতে মরিয়াছিল, তাহারা চব্বিশ সহস্র লোক।
10পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 11লোকদের মধ্যে আমার পক্ষে অন্তর্জ্বালা প্রকাশ করাতে হারোণ যাজকের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস ইস্রায়েল সন্তানগণ হইতে আমার ক্রোধ নিবৃত্ত করিল; এই জন্য আমি অন্তর্জ্বালায় ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সংহার করিলাম না। 12অতএব তুমি এই কথা বল, দেখ, আমি তাহাকে আমার শান্তিকর নিয়ম দিয়াছি; 13তাহা তাহার পক্ষে ও তাহার ভাবী বংশের পক্ষে চিরস্থায়ী যাজকত্বের নিয়ম হইবে; কেননা সে আপন ঈশ্বরের পক্ষে অন্তর্জ্বালা প্রকাশ করিয়াছে, এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছে। 14ইস্রায়েলীয় যে পুরুষ ঐ মিদিয়নীয়া স্ত্রীর সহিত হত হইয়াছিল, তাহার নাম সিম্রি, সে সালূর পুত্র; সে শিমিয়োনীয়দের একজন পিতৃকুলাধ্যক্ষ ছিল। 15আর ঐ হতা মিদিয়নীয়া স্ত্রীর নাম কস্‌বী, সে সূরের কন্যা; ঐ সূর মিদিয়নের মধ্যে এক পিতৃকুলস্থ লোকদের অধ্যক্ষ ছিল।
16পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 17তুমি মিদিয়নীয়দিগকে ক্লেশ দেও ও আঘাত কর। 18কেননা পিয়োর বিষয়ক ছলে এবং সেই পিয়োরের জন্য মহামারীর দিবসে হতা তাহাদের আত্মীয়া কস্‌বী নাম্নী মিদিয়নীয়া অধ্যক্ষের কন্যা বিষয়ক ছলে তাহারা তোমাদিগকে প্রবঞ্চনা করিয়া ক্লেশ দিয়াছে।
 
 
 
 
1সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 2তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের জন্য মিদিয়নীয়দিগকে প্রতিফল দেও; তৎপরে তুমি আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইবে। 3তখন মোশি লোকদিগকে কহিলেন, তোমাদের কতক লোক যুদ্ধার্থে সজ্জিত হউক, সদাপ্রভুর জন্য মিদিয়নকে প্রতিফল দিতে মিদিয়নের বিরুদ্ধে যাত্রা করুক। 4তোমরা ইস্রায়েল-বংশসমূহের প্রত্যেক বংশ হইতে এক এক সহস্র লোক যুদ্ধে প্রেরণ করিবে। 5তাহাতে ইস্রায়েলের সহস্র-সহস্রের মধ্যে এক এক বংশ হইতে এক এক সহস্র মনোনীত হইলে যুদ্ধের জন্য বারো সহস্র লোক সজ্জিত হইল। 6এইরূপে মোশি এক এক বংশের এক এক সহস্র লোককে, এবং ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহসকে যুদ্ধে প্রেরণ করিলেন, এবং পবিত্র স্থানের পাত্র সকল ও রণবাদ্যের তূরী পীনহসের হস্তগত ছিল। 7পরে মোশির প্রতি সদাপ্রভুর দত্ত আজ্ঞা অনুসারে তাহারা মিদিয়নের সহিত যুদ্ধ করিল, ও সমস্ত পুরুষকে বধ করিল। 8আর তাহারা মিদিয়নের রাজগণকে তাহাদের অন্য নিহত লোকদের সহিত বধ করিল; ইবি, রেকম, সূর, হূর, ও রেবা, মিদিয়নের এই পাঁচ জন রাজাকে বধ করিল; বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকেও খড়্‌গ দ্বারা বধ করিল। 9আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ মিদিয়নের সকল স্ত্রীলোক ও বালক-বালিকাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া গেল, এবং তাহাদের সমস্ত পশু, সমস্ত মেষপাল ও সমস্ত সম্পত্তি লুটিয়া লইল; 10আর তাহাদের সমস্ত নিবাস-নগর ও সমস্ত ছাউনি পোড়াইয়া দিল। 11আর তাহারা লুন্ঠিত দ্রব্য এবং মনুষ্য কি পশু, সমস্ত ধৃত জীব সঙ্গে লইয়া চলিল। 12তাহারা যিরীহোর নিকটবর্তী যর্দনতীরস্থ মোয়াবের তলভূমিতে মোশির, ইলিয়াসর যাজকের ও ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলীর নিকটে বন্দিগণকে ও যুদ্ধে ধৃত জীবগণকে এবং লুন্ঠিত দ্রব্য সকল শিবিরে লইয়া গেল।
13আর মোশি, ইলিয়াসর যাজক ও মণ্ডলীর সমস্ত অধ্যক্ষ তাহাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে শিবিরের বাহিরে গেলেন। 14তখন যুদ্ধ হইতে প্রত্যাগত সেনাপতিদের, অর্থাৎ সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উপরে মোশি ক্রুদ্ধ হইলেন। 15মোশি তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি সমস্ত স্ত্রীলোককে জীবিত রাখিয়াছ?
 
 16দেখ, বিলিয়মের পরামর্শে তাহারাই পিয়োর দেবের বিষয়ে ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সদাপ্রভুর বিপরীতে সত্যলঙ্ঘন করাইয়াছিল, তন্নিমিত্তই সদাপ্রভুর মণ্ডলীতে মহামারী হইয়াছিল। 17অতএব তোমরা এখন বালক-বালিকাদের মধ্যে সমস্ত বালককে বধ কর, এবং শয়নে পুরুষের পরিচয়প্রাপ্ত সমস্ত স্ত্রীলোককেও বধ কর;  
 
18কিন্তু যে বালিকারা শয়নে পুরুষের পরিচয় পায় নাই, তাহাদিগকে আপনাদের জন্য জীবিত রাখ। 19আর তোমরা সাত দিন শিবিরের বাহিরে ছাউনি করিয়া থাক; তোমরা যত লোক মনুষ্যহত্যা করিয়াছ, ও হত লোককে স্পর্শ করিয়াছ, সকলে তৃতীয় দিবসে ও সপ্তম দিবসে আপনাদিগকে ও আপন আপন বন্দিগণকে শুচি কর; 20আর যাবতীয় বস্ত্র, চর্ম নির্মিত যাবতীয় বস্তু, ছাগলোম নির্মিত যাবতীয় বস্তু ও কাষ্ঠ নির্মিত যাবতীয় বস্তুর বিষয়ে আপনাদিগকে শুচি কর।
21আর যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, ইলিয়াসর যাজক সেই যোদ্ধাদিগকে কহিলেন, সদাপ্রভু কর্তৃক মোশিকে দত্ত ব্যবস্থার এই বিধি; 22কেবল স্বর্ণ, রৌপ্য, পিত্তল, লৌহ, রাঙ্গ ও সীসা প্রভৃতি 23যে সকল দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয় না, সেই সকল অগ্নির মধ্য দিয়া চালাইবে, তাহাতে তাহা শুচি হইবে; তথাপি তাহা শুচিকরণ জলে শুচি করিতে হইবে; কিন্তু যে যে দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয়, তাহা তোমরা জলের মধ্য দিয়া চালাইবে। 24আর সপ্তম দিবসে তোমরা আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিবে; তাহাতে শুচি হইবে; পরে শিবিরে প্রবেশ করিবে।
25পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 26তুমি ও ইলিয়াসর যাজক এবং মণ্ডলীর পিতৃকুলপতিগণ যুদ্ধে ধৃত জীবগণের, অর্থাৎ বন্দি মনুষ্যদের ও পশুদের সংখ্যা গ্রহণ কর। 27আর যুদ্ধে ধৃত সেই জীবগণকে দুই অংশ করিয়া, যে যোদ্ধারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের ও সমস্ত মণ্ডলীর মধ্যে বিভাগ কর। 28আর যুদ্ধে গমনকারী যোদ্ধাদের নিকট হইতে সদাপ্রভুর নিমিত্তে কর গ্রহণ কর; মনুষ্য, গরু, গর্দভ ও মেষ, এই সকলের মধ্যে প্রতি পাঁচ শত জীবের মধ্য হইতে এক জীব, 29তাহাদের অর্ধাংশ হইতে লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে উত্তোলনীয় উপহার বলিয়া ইলিয়াসর যাজককে দেও। 30আর তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের অর্ধাংশের বিভাগ হইতে মনুষ্য, গরু, গর্দভ ও মেষাদি সমস্ত পশুর প্রতি পঞ্চাশ জীব হইতে এক এক জীব লও, এবং সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দেও। 31মোশিকে সদাপ্রভু যেমন আজ্ঞা করিলেন, মোশি ও ইলীয়াসর যাজক সেইরূপ করিলেন। 32যোদ্ধাগণ কর্তৃক লুণ্ঠিত বস্তু সকল ছাড়া ঐ ধৃত জীবসমূহ ছয় লক্ষ পঁচাত্তর সহস্র মেষ, 33ও বাহাত্তর সহস্র গরু, 34একষট্টি সহস্র গর্দভ, 35আর বত্রিশ সহস্র মনুষ্য, অর্থাৎ শয়নে পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্ত স্ত্রীলোক ছিল। 36তাহাতে যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের প্রাপ্য অর্ধাংশের সংখ্যা হইল তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ; 37সেই মেষ হইতে সদাপ্রভুর লভ্য কর হইল ছয়শত পঁচাত্তরটি মেষ। 38আর গরু ছিল ছত্রিশ সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বাহাত্তরটি। 39আর গর্দভ ছিল ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল একষট্টিটি। 40আর মনুষ্য ছিল ষোল সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বত্রিশটি প্রাণী। 41সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আজ্ঞা করিলেন, তদনুসারে মোশি সেই কর অর্থাৎ সদাপ্রভুর উত্তোলনীয় উপহার যাজক ইলিয়াসরকে দিলেন। 42আর মোশি যে অর্ধাংশ যোদ্ধাদের নিকট হইতে লইয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণকে দিয়াছিলেন, 43মণ্ডলীর সেই অর্ধাংশ সংখ্যাতে তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ, 44ছত্রিশ সহস্র গরু, 45ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত গর্দভ, 46ও ষোল সহস্র মনুষ্য ছিল। 47পরে মোশি ইস্রায়েল-সন্তানগণের সেই অর্ধাংশ হইতে মনুষ্যের ও পশুর মধ্যে প্রতি পঞ্চাশ জীব হইতে এক জীব লইয়া সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দিলেন, যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আজ্ঞা করিলেন।
48পরে সৈন্যসাহস্রের উপরে কর্তৃত্বকারী সহস্রপতিরা ও শতপতিরা মোশির নিকটে আসিলেন; 49আর তাঁহারা মোশিকে কহিলেন, আপনার এই দাসগণ আমাদের অধীন যোদ্ধাদের সংখ্যা গ্রহণ করিয়াছে, আমাদের মধ্যে একজনও কমে নাই। 50আর আমরা প্রতিজন স্বর্ণাভরণ, নূপুর, বলয়, অঙ্গুরীয়, কুণ্ডল ও হার, এই যে সকল পাইয়াছি, তাহা হইতে সদাপ্রভুর সম্মুখে আমাদের প্রাণের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার আনিয়াছি। 51তখন মোশি ও ইলিয়াসর যাজক তাঁহাদের হইতে সেই স্বর্ণ, শিল্পীকৃত আভরণ, লইলেন। 52আর সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিবেদিত, সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উত্তোলনীয় উপহারের সমস্ত স্বর্ণ ষোল সহস্র সাত শত পঞ্চাশ শেকল পরিমিত হইল। 53যোদ্ধারা প্রত্যেকেই আপনাদের নিমিত্ত লুন্ঠিত দ্রব্য লইয়াছিল। 54পরে মোশি ও ইলিয়াসর যাজক সহস্রপতিদের ও শতপতিদের নিকট হইতে সেই স্বর্ণ গ্রহণ করিলেন, এবং সদাপ্রভুর সম্মুখে ইস্রায়েল-সন্তানগণের স্মরণার্থক চিহ্নরূপে তাহা সমাগম-তাম্বুতে আনিলেন।
 

আদিপুস্তক ১৩:১০

1পরে অব্রাম ও তাঁহার স্ত্রী সমস্ত সম্পত্তি লইয়া লোটের সঙ্গে মিসর হইতে [কনান দেশের] দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রা করিলেন। 2অব্রাম পশুধনে ও স্বর্ণ রৌপ্যে অতিশয় ধনবান ছিলেন। 3পরে তিনি দক্ষিণ হইতে বৈথেলের দিকে যাইতে যাইতে বৈথেলের ও অয়ের মধ্যবর্তী যে স্থানে পূর্বে তাঁহার তাম্বু স্থাপিত ছিল, 4সেই স্থানে আপনার পূর্বনির্মিত যজ্ঞবেদির নিকটে উপস্থিত হইলেন; তথায় অব্রাম সদাপ্রভুর নামে ডাকিলেন। 5আর অব্রামের সহযাত্রী লোটেরও অনেক গো-মেষাদি এবং তাম্বু ছিল। 6আর সেই দেশে একত্র বাস সমেপাষ্য হইল না, কেননা তাঁহাদের প্রচুর সম্পত্তি থাকাতে তাঁহারা একত্র বাস করিতে পারিলেন না। 7আর অব্রামের পশুপালকদের ও লোটের পশুপালকদের মধ্যে বিবাদ হইল। তৎকালে সেই দেশে কনানীয়েরা ও পরিষীয়েরা বসতি করিত। 8তাহাতে অব্রাম লোটকে কহিলেন, বিনয় করি, তোমাতে ও আমাতে এবং তোমার পশুপালকগণে ও আমার পশুপালকগণে বিবাদ না হউক; কেননা আমরা পরস্পর জ্ঞাতি। 9তোমার সম্মুখে কি সমস্ত দেশ নাই? বিনয় করি, আমা হইতে পৃথক হও; হয়, তুমি বামে যাও, আমি দক্ষিণে যাই; নয়, তুমি দক্ষিণে যাও, আমি বামে যাই।
10তখন লোট চক্ষু তুলিয়া দেখিলেন, যর্দনের সমস্ত অঞ্চল সোয়র পর্যন্ত সর্বত্র সজল, সদাপ্রভুর উদ্যানের ন্যায়, মিসর দেশের ন্যায়, কেননা তৎকালে সদাপ্রভু সদোম ও ঘমোরা বিনষ্ট করেন নাই। 11অতএব লোট আপনার নিমিত্ত যর্দনের সমস্ত অঞ্চল মনোনীত করিয়া পূর্বদিকে প্রস্থান করিলেন; এইরূপে তাঁহারা পরস্পর পৃথক হইলেন। 12অব্রাম কনান দেশে থাকিলেন, এবং লোট সেই অঞ্চলস্থিত নগরসমূহের মধ্যে থাকিয়া সদোমের নিকট পর্যন্ত তাম্বু স্থাপন করিতে লাগিলেন। 13সদোমের লোকেরা অতি দুষ্ট ও সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে অতি পাপিষ্ঠ ছিল।
14অব্রাম হইতে লোট পৃথক হইলে পর সদাপ্রভু অব্রামকে কহিলেন, চক্ষু তুলিয়া এই যে স্থানে তুমি আছ, এই স্থান হইতে উত্তর-দক্ষিণে ও পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টিপাত কর; 15কেননা এই যে সমস্ত দেশ তুমি দেখিতে পাইতেছ, ইহা আমি তোমাকে ও যুগে যুগে তোমার বংশকে দিব। 16আর পৃথিবীস্থ ধূলির ন্যায় তোমার বংশ বৃদ্ধি করিব; কেহ যদি পৃথিবীর ধূলি গণিতে পারে, তবে তোমার বংশও গণা যাইবে। 17উঠ, এই দেশের দৈর্ঘ্যপ্রস্থে পর্যটন কর, কেননা আমি তোমাকেই ইহা দিব।
18তখন অব্রাম তাম্বু তুলিয়া হিব্রোণে স্থিত মম্রির এলোন বনের নিকটে গিয়া বাস করিলেন, এবং সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিলেন।

যাত্রা পুস্তক ৪: ১-১৭

1মোশি উত্তরে কহিলেন, কিন্তু দেখুন, তাহারা আমাকে বিশ্বাস করিবে না, ও আমার রবে মনোযোগ করিবে না, কেননা তাহারা বলিবে, সদাপ্রভু তোমাকে দর্শন দেন নাই। 2তখন সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তোমার হস্তে ওখানি কি? তিনি বলিলেন, যষ্টি। তখন তিনি কহিলেন, উহা ভূমিতে ফেল। 3পরে মোশি ভূমিতে ফেলিলে তাহা সর্প হইল; আর মোশি তাহার সম্মুখ হইতে পলায়ন করিলেন। 4তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, “হস্ত বিস্তার করিয়া উহার লেজ ধর,” তাহাতে তিনি হস্ত বিস্তার করিয়া ধরিলে উহা তাঁহার হস্তে যষ্টি হইল- 5“যেন তাহারা বিশ্বাস করে যে, সদাপ্রভু, তাহাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর তোমাকে দর্শন দিয়াছেন।”
6পরে সদাপ্রভু তাঁহাকে আরও কহিলেন, তুমি তোমার হস্ত বক্ষঃস্থলে দেও; তিনি বক্ষস্থলে হস্ত দিলেন; পরে তাহা বাহির করিলে দেখ, তাঁহার হস্ত হিমের ন্যায় কুষ্ঠযুক্ত হইয়াছে। 7পরে তিনি কহিলেন, “তোমার হস্ত আবার বক্ষঃস্থলে দাও”। তিনি আবার বক্ষঃস্থলে হস্ত দিলেন, পরে বক্ষঃস্থল হইতে হস্ত বাহির করিলে দেখ, তাহা পুনরায় তাঁহার মাংসের ন্যায় হইল। 8‘তাহারা যদি তোমাকে বিশ্বাস না করে, এবং ঐ প্রথম চিহ্নেও মনোযোগ না করে, তবে দ্বিতীয় চিহ্নে বিশ্বাস করিবে। 9আর এই দুই চিহ্নেও যদি বিশ্বাস না করে ও তোমার রবে মনোযোগ না করে, তবে তুমি নদীর কিছু জল লইয়া শুষ্ক ভূমিতে ঢালিয়া দিও; তাহাতে তুমি নদী হইতে যে জল তুলিবে, তাহা শুষ্ক ভূমিতে রক্ত হইয়া যাইবে।’
10পরে মোশি সদাপ্রভুকে কহিলেন, হায় প্রভু! আমি বাক্‌পটু নহি, ইহার পূর্বেও ছিলাম না, বা এই দাসের সহিত তোমার আলাপ করিবার পরেও নহি; কারণ আমি জড়মুখ জড়জিহ্বা। 11সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, মনুষ্যের মুখ কে নির্মাণ করিয়াছে? আর বোবা, বধির, চক্ষুষমান বা অন্ধকে কে নির্মাণ করে? আমি সদাপ্রভুই কি করি না? 12এখন তুমি যাও; আমি তোমার মুখের সহবর্তী হইব, ও কি বলিতে হইবে, তোমাকে জানাইব। 13তিনি কহিলেন, হে আমার প্রভু, বিনয় করি, যাহার হাতে পাঠাইতে চাও, পাঠাও। 14তখন মোশির প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল; তিনি কহিলেন, তোমার ভ্রাতা লেবীয় হারোণ কি নাই? আমি জানি, সে সুবক্তা; আরও দেখ, সে তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেছে; তোমাকে দেখিয়া হৃষ্টচিত্ত হইবে। 15তুমি তাহাকে বলিবে, ও তাহার মুখে বাক্য দিবে; এবং আমি তোমার মুখের ও তাহার মুখের সহবর্তী হইব, ও কি করিতে হইবে, তোমাদিগকে জানাইব। 16তোমার পরিবর্তে সে লোকদের কাছে বক্তা হইবে; ফলতঃ সে তোমার মুখস্বরূপ হইবে, এবং তুমি তাহার ঈশ্বরস্বরূপ হইবে। 17আর তুমি এই যষ্টি হস্তে লইবে, ইহা দ্বারাই তোমাকে সেই সকল চিহ্ন-কার্য করিতে হইবে।
 
 

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...