মথি ১২: ৪২
যীশু একজন ভূতগ্রস্তকে সুস্থ করেন, এবং লোকদিগকে উপদেশ দেন
22তখন একজন ভূতগ্রস্ত তাঁহার নিকটে আনীত হইল, সে অন্ধ ও গোঁগা; আর তিনি তাহাকে সুস্থ করিলেন, তাহাতে সেই বোবা কথা কহিতে ও দেখিতে লাগিল। 23ইহাতে সমস্ত লোক চমৎকৃত হইল ও বলিতে লাগিল, ইনি কি সেই দায়ূদ-সন্তান? 24কিন্তু ফরীশীরা তাহা শুনিয়া কহিল, এই ব্যক্তি আর কিছুতে নয়, কেবল ভূতগণের অধিপতি বেল্সবূলের দ্বারাই ভূত ছাড়ায়। 25তাহাদের চিন্তা জানিয়া তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, যে কোন রাজ্য আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা উচ্ছিন্ন হয়; এবং যে কোন নগর কিম্বা পরিবার আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা স্থির থাকিবে না। 26আর শয়তান যদি শয়তানকে ছাড়ায়, সে ত আপনারই বিপক্ষে ভিন্ন হইল; তবে তাহার রাজ্য কি প্রকারে স্থির থাকিবে? 27আর আমি যদি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের সন্তানেরা কাহার দ্বারা ছাড়ায়? এই জন্য তাহারাই তোমাদের বিচারকর্তা হইবে। 28কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা মন্দ-আত্মা ছাড়াই, তবে ত ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে। 29আর অগ্রে সেই বলবান ব্যক্তিকে না বাঁধিয়া কে কেমন করিয়া সেই বলবানের গৃহে প্রবেশ করিয়া তাহার ঘরের দ্রব্য লুট করিতে পারিবে? বাঁধিলে পরেই সে তাহার ঘর লুট করিবে। 30যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ; এবং যে আমার সহিত কুড়ায় না, সে ছড়াইয়া ফেলে।
31এই কারণ আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যদের সকল পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হইবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হইবে না। 32আর যে কেহ মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কোন কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে; কিন্তু যে কেহ পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে না, ইহকালেও নয়, পরকালেও নয়। 33হয় গাছকে ভাল বল, এবং তাহার ফলকেও ভাল বল; নয় গাছকে মন্দ বল, এবং তাহার ফলকেও মন্দ বল; 34কেননা ফল দ্বারাই গাছ চেনা যায়। হে সর্পের বংশেরা, তোমরা মন্দ হইয়া কেমন করিয়া ভাল কথা কহিতে পার? কেননা হৃদয় হইতে যাহা ছাপিয়া উঠে, মুখ তাহাই বলে। 35ভাল মানুষ ভাল ভাণ্ডার হইতে ভাল দ্রব্য বাহির করে, এবং মন্দ মানুষ মন্দ ভাণ্ডার হইতে মন্দ দ্রব্য বাহির করে। 36আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যেরা যত অনর্থক কথা বলে, বিচার-দিনে সেই সকলের হিসাব দিতে হইবে। 37কারণ তোমার বাক্য দ্বারা তুমি নির্দোষ বলিয়া গণিত হইবে, আর তোমার বাক্য দ্বারাই তুমি দোষী বলিয়া গণিত হইবে।
38তখন কয়েক জন অধ্যাপক ও ফরীশী তাঁহাকে বলিল, হে গুরু, আমরা আপনার কাছে কোন চিহ্ন-কার্য দেখিতে ইচ্ছা করি। 39তিনি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, এই কালের দুষ্ট ও ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন ইহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 40কারণ যোনা যেমন তিন দিবারাত্র বৃহৎ মৎস্যের উদরে ছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও তিন দিবারাত্র পৃথিবীর গর্ভে থাকিবেন। 41নীনবীর লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে, কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 42দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন; কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন, আর দেখ, শলোমন হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 43আর অশুচি আত্মা যখন মনুষ্য হইতে বাহির হইয়া যায়, তখন জলবিহীন নানা স্থান দিয়া ভ্রমণ করতঃ বিশ্রামের অন্বেষণ করে, কিন্তু তাহা পায় না। 44তখন সে বলে, আমি যেই স্থান হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি, আমার সেই গৃহে ফিরিয়া যাই; পরে সে আসিয়া তাহা শূন্য, মার্জিত ও শোভিত দেখে। 45তখন সে গিয়া আপনা হইতেও দুষ্ট অপর সাত আত্মাকে সঙ্গে লইয়া আইসে, আর তাহারা সেই স্থানে প্রবেশ করিয়া বাস করে; তাহাতে সেই মনুষ্যের প্রথম দশা হইতে শেষ দশা আরও মন্দ হয়। এই কালের দুষ্ট লোকদের প্রতি তাহাই ঘটিবে।
46তিনি লোকসমূহকে এই সকল কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে, দেখ, তাঁহার মাতা ও ভ্রাতারা তাঁহার সহিত কথা কহিবার চেষ্টায় বাহিরে দাঁড়াইয়া ছিলেন। 47তখন এক ব্যক্তি তাঁহাকে কহিল, দেখুন, আপনার মাতা ও ভ্রাতারা আপনার সহিত কথা কহিবার চেষ্টায় বাহিরে দাঁড়াইয়া আছেন। 48কিন্তু যে এই কথা বলিল, তাহাকে তিনি উত্তরে কহিলেন, আমার মাতা কে? আমার ভ্রাতারাই বা কাহারা? 49পরে তিনি তাঁহার শিষ্যগণের দিকে হাত বাড়াইয়া কহিলেন, এই দেখ, আমার মাতা ও আমার ভ্রাতারা; 50কেননা যে কেহ আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার ভ্রাতা ও ভগিনী ও মাতা।
======
সরল হইবার বিষয়ে শিক্ষা
29পরে তাঁহার নিকটে উত্তর উত্তর অনেক লোকের সমাগম হইলে তিনি বলিতে লাগিলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট, ইহারা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 30কারণ যোনা যেমন নীনবীয়দের কাছে চিহ্নস্বরূপ হইয়াছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও এই কালের লোকদের নিকটে হইবেন। 31দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন, কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন; আর দেখ, শলোমন হইতেও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32নীনবীয় লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে; কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
33প্রদীপ জ্বালিয়া কেহ গুপ্ত কুঠরিতে কিম্বা ঢাকনার নিচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, যেন, যাহারা ভিতরে যায়, তাহারা আলো দেখিতে পায়। 34তোমার চক্ষুই শরীরের প্রদীপ; তোমার চক্ষু যখন সরল হয়, তখন তোমার সমুদয় শরীরও দীপ্তিময় হয়; কিন্তু চক্ষু মন্দ হইলে তোমার শরীরও অন্ধকারময় হয়। 35অতএব দেখিও, তোমার অন্তরে যে দীপ্তি আছে, তাহা অন্ধকার কি না। 36বাস্তবিক, তোমার সমুদয় শরীর যদি দীপ্তিময় হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজ তেজে তোমাকে দীপ্তি দান করে, তেমনি তোমার শরীর সম্পূর্ণরূপে দীপ্তিময় হইবে।
No comments:
Post a Comment