" খাসী ও বলদ কুরবানি নিয়া-ফেত্নাবাজীদের বিব্রান্তি নিরসনে পড়ুন ও শেয়ার করুন"
This Blog Contains Al Quran Indexing. Al Quran Searching. The Bible Verse which similar to Alquran are also described in this Blog. Tags: Al Quran, Arabic, Tafhimul Quran, Tafheemul Quran, Arabic search, Tafhimul Quran App, Al Quran Search, আল কুরআন, তাফহীমুল কুরআন, তাফহিমুল কুরআন।
খাসি অথবা বলদ কুরবানী করা ।
শরীরের অবাঞ্চিত লোম ও পায়ুপথের লোম পরিস্কার করা ।
প্রশ্ন :
মলমূত্রত্যাগের স্থানকেও খুর দ্বারা পরিস্কার করতে হবে!..এইটা করলে যখন নতুন ভাবে লোম উঠে তখন খুবই কষ্ট হয়।যদি লোম গুলো না চেচে যতদূর সম্ভব ছোটো করি জায়েজ হবে কি?কারণ ওখানে চুল কাটা খুবই কঠিন কাজ আসে পাশে কেটে ও যেতে পারে,আর যদিও কেটে দেই তাহলে যখন নতুন করে চুল উঠবে তখন মারাত্বক খোচা লাগে যা সাধারণ চলা ফেরা নামাজ ইত্যাদি বিষয়ে ভীষণ সমস্যা সৃষ্টি করে।
(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
=======================
কবরস্থানের উপর / কবরের উপর ঘর বাড়ি বা মসজিদ নির্মাণ করা কি জায়েজ ?
প্রশ্নঃ কবর স্থান ভেঙ্গে যদি কেউ বসববাস করার জন্য বাড়ী নির্মান করে তাহলে শরীয়তে তার বিধান কি?
উত্তর দিয়েছেন ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ
উত্তরঃ প্রথম কথা হচ্ছে কবরস্থানটি যদি ওয়াফকৃত না হয়ে থাকে, ব্যক্তিমালিকানাধীন থেকে থাকে এবং এখানে যদি বর্তমানে কবর দেয়া না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কবরস্থানকে যদি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয় অথবা কবরস্থানকে যদি উঠিয়ে অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর করা হয় তাহলে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করা, দোকানপাট নির্মাণ করা, মার্কেট নির্মাণ করা অথবা অন্য কোনো কাজ করা সম্পূর্ণ জায়েয। এতে কোনো অসুবিধে নেই।
২য় মাস’আলা হচ্ছে, কবরস্থানটি যদি কবরস্থান হিসেবে ওয়াকফ করা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াকফ হওয়ার কারণে এখানে বাড়ি নির্মাণ করা, দোকানপাট নির্মাণ করা বা অন্য কোনো কাজ করা জায়েয নেই যেহেতু এটিকে কবরের জন্য বা কবর দেয়ার জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে।
৩য় মাস’আলাটা হচ্ছে কবরস্থান ওয়াকফ করা হয়েছে কিনা সেটাও জানা নেই, ব্যক্তিমালিকানায় কিনা সেটাও জানা নেই কিন্তু সেটাকে বর্তমানে কবরস্থান হিসেবে ধরা হয় না এবং এটা বর্তমানে ধরতে গেলে ছাড়া বাড়ির মতো; সেখানে কবরও দেয়া হয়না আর সেটি কবরস্থান হিসেবেও ব্যবহার হয়না অর্থাৎ এমনিই পড়ে আছে। হয়তো অনেক আগে অথবা প্রাচীন যুগে এখানে কবর দেয়া হয়েছে। যদি এমনটি হয় তাহলে সেখানে বিধান হচ্ছে, কবরস্থান খুঁড়ে ফেলা এবং সেখানে লাশ বা অন্যকিছু পাওয়া গেলে সেটি অন্যস্থানে দাফন করতে হবে এবং এই জায়গাটুকু খাস জায়গা হিসেবে কারো ব্যক্তিমালিকানা যদি সেখানে প্রমাণিত হয় তাহলে সেটাকে তিনি ভেঙ্গে অন্য কাজে লাগাতে পারবেন এবং তার জন্য এটি বৈধ রয়েছে। অর্থাৎ ঐ কবরস্থানকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া ইসলামী শরিয়তে নাজায়েয নয় বরং জায়েয রয়েছে।
আমরা জানি আল্লাহর নবী ﷺ মসজিদে নববী ﷺ যেখানে নির্মাণ করেছেন সেই স্থানটি মূলত একসময় কবরস্থান ছিল। কবরগুলো একসময় উপড়ে ফেলা হয়েছে তারপর রাসূলুল্লাহ্ ﷺ সেখানে মদীনার মসজিদটি তৈরি করেছেন। সুতরাং, কবরগুলো উপড়ে ফেলার পর যদি সেখানে অন্য কিছু করার সুযোগ থাকে তাহলে সেটাও নাজায়েয নয়, জায়েয রয়েছে। তবে ওয়াফকের বিষয়টি সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে। যদি ওয়াফকৃত হয় কবরস্থানের জন্য তাহলে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করা বা অন্য কোনো কাজ করা জায়েয নেই।
=====================
=============================================
কবরের উপর ঘর তৈরি করে বসবাস করা যাবে কি?
জিজ্ঞাসা–৯৭: আমার প্রশ্ন হলো, অনেক দিনের পুরোনো অথবা অল্প দিনের পুরোনো কবরের উপরে বসত বাড়ি তৈরি করা কি বৈধ হবে?–ইবনে সুলতান: ibnesultan29121995@gmail.com
জবাব : কবরের উপর ঘর তৈরি করে বসবাস করা নাজায়েয ও নিন্দনীয় কাজ। এ কাজের দ্বারা কবরবাসীকে অপমান করা হয়। এমনকি কবরের উপর বসাও অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لا تُصَلُّوا إِلَى الْقُبُورِ وَلا تَجْلِسُوا عَلَيْهَا
“তোমরা কবরের দিকে মুখ করে নামায পড়বে না এবং কবরের উপর বসবে না। ” (মুসলিম, হা/ ২১২২)
ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) বলেন, ফকীহগণ এ বিষয়ে একমত যে, কবরের উপর মসজিদ,বাড়ি-ঘর ইত্যাদি করা যাবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে নিষেধ করে গিয়েছেন ।(মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২২/১৯৪-৯৫ )
তবে যদি একান্ত কোনো কারণে বাড়ি-ঘর করতে হয় আর কবর অল্প-পুরোনো বা নূতন হয় তাহলে লাশ উঠিয়ে অন্যত্র কবর স্থানান্তর করতে হবে। পক্ষান্তরে যদি কবর অনেক পুরাতন হয় তাহলে সেখানে মাটির নিচে পুঁতে রেখে সমান করার মাধ্যমে কবর মিটিয়ে দিয়ে উপরে বাড়ি নির্মাণ করতে পারবেন। (ফাতহুল কাদীর ২/১০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া; মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২২/১৯৪-৯৫)
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
=======================
কবরের উপর মসজিদ নির্মাণের হুকুম কি?
প্রশ্ন
বরাবর,
লুৎফর রহমান ফরায়েজী
বিষয়: কবর স্থানের উপর মসজিদ তৈরীর বিষয়ে কুরআন এবং হাদিসের আলোকে সমাধানের জন্য লিখিত ফতোয়ার আবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমরা পাবনা জেলার আটঘরিয়া, উপজেলার, চাঁদভা ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আমরা মৌখিক ভাবে ওয়াকফ করা কবর স্থান যে কবরস্থানে মানুষ মাটি দেওয়া হচ্ছে প্রায় ৮০/৯০ বছর ধরে এই রকম জায়গা মসজিদের নামে রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে সেই কবর গুলোর হাড়-হাড্ডি সেখান থেকে উত্তোলন না করে বরং কবর গুলো ঐ অবস্তাতেই রেখে দিয়ে তার উপর ৩ ফুট মাটি দিয়ে উচু করে কবরগুলো মাটির নিচে চাপা দিয়েছি এবং মসজিদের পিলার করতে গিয়ে মাটি খনন করার সময় যে সমস্ত হাড়-হাড্ডি পাওয়া গেছে সে সমস্ত হাড়-হাড্ডি গুলোও আবার ঐ কবরের মধ্যেই চাপা দিয়েছি এবং সেখানে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার প্লান করে ২০০৮ সালে একটি জুময়া মসজিদ তৈরীর কাজ শুরু করি কিন্তু মসজিদের এখনও অনেক কাজ বাদ রয়েছে। প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে শুধু মাত্র ছাদ, মেঝে এবং গিরিলের দরজা, জানালা লাগিয়ে নামাজ পড়ার মত একটা পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে এখনও রং প্লাস্টার, টাইস এ সমস্ত সকল কাজ বাদ রয়েছে। এবং এতদিন ধরে আমরা সেই মসজিদে নামাজও পড়ে আসছি। এখন এই মসজিদে আমদের নামাজ সঠিক হবে কিনা, (অথচ ঐ কবরস্থান ছাড়াও মসজিদের পাশে মসজিদ করার মত অনেক বড় জায়গা রয়েছে যে জায়গাটুকুও মসজিদের নামে রেজিষ্ট্রি করা সেখানে কোন কবরও নাই সেই জায়গায় মসজীদ না করে কবরস্থানের উপর মসজীদ করেছি) এই বিষয়টির সঠিক সমাধান পাওয়ার জন্য আপনার বরাবর মসজিদ তৈরীর জায়গা বিষয়ে লিখিত তথ্য পেশ করলাম। আমাদের লিখিত তথ্যাদি পড়ার পড়ে কুরআন এবং হাদিসের উপর ভিত্তি করে সঠিক সমাধান দিতে আপনার সদয় মরজি হয়।
লিখিত তথ্য
আমাদের গ্রামে আজ থেকে প্রায় ৮০/৯০ বছর আগে নামাজ পড়ার জন্য নির্ধারিত কোন মসজিদ এবং মানুষ মারা গেলে মাটি দেওয়ার জন্য নিরধারিত কোন কবরস্থানের জায়গা ছিলো না। ঠিক সেই সময় মেছের জোয়াদ্দার নামে একজন ব্যক্তি ইসলামী শরিওত মোতাবেক তাহার নিজস্ব একটি জমি মসজিদ ও কবরস্থান বরাবর আলাদা-আলাদা ভাবে উল্লেখ করে মৌখিক ভাবে ওয়াকফ করে দেয় (কিন্তু সেই ওয়াকফের লিখিত কোন প্রমান নাই) । তার ওয়াকফ করা মসজিদের জায়গার উপর প্রথমে একটি ছোট মসজিদ ও তার পাশে ওয়াকফ করা কবরস্থানের উপর একটি কবরস্থান জমির মালিক নিজেই তৈরী করে দেয় এবং মানুষ মারা গেলে সেই কবরস্থানে মানুষকে মাটি দেওয়া হয় কিন্তু জমির মূল মালিক মেছের জোয়াদ্দারের মৃত্যুর পর তার দুই সন্তান মো: ওসমান গণি জোয়াদ্দার এবং ছোট সন্তান মো: আব্দুল গণি জোয়াদ্দার তার সমস্ত জমি জমার ওয়ারিশ হন।
তারা ওয়ারিশ হওয়ার পর আবার নতুন করে মসজিদ এবং কবরস্থানের সমস্ত জায়গা প্রায় ৩০ বছর পর শুধূ মসজিদ বরাবর সরকারী আইন অনুযায়ী ১৯৭০ সালের দিকে লিখিত দলিল করে দেয় কিন্তু যদিও দলিল করে দেয় দলিল করে দেওয়ার পরেও আবার নতুন করে গ্রামের জনগন ঐ কবরস্থানে কবর দেওয়ার কাজ যথানিয়মে চালাতে খাকে এবং রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার পরে সেই কবরস্থানে যাদেরকে মাটি দেওয়া হয় তাদের মধ্যে গ্রামের প্রধানদের কবরও রয়েছে তার প্রমাণ সরুপ তাদের কবর এখনও নতুন যে মসজিদ করা হয়েছে সেই মসজিদের ভিতরে কিছু অংশ এবং মসজিদের বাইরে কিছু অংশ বিদ্যমান রয়েছে।
এবং এছাড়াও অনেক মানুষ সেখানে মাটি দেওয়া হয়েছে। মাটি দিতে দিতে এমন একটি অবস্থান তৈরী হয়ে গিয়েছিলো যে, সেখানে আর কবর দেওয়ার কোন জায়গা ছিলো না আবার নতুন করে ঐ কবরস্থানে মাটি দিয়ে ভরাট করে নতুন কবর দেওয়ার কাজ শুরু হয়। সবার শেষে যে কবরটি দেওয়া হয় সেটা হলো মসজিদ তৈরীর মাত্র ৫ বছর আগে অর্থাত ২০০৪ সালে। কিন্তু ১৯৭০ সালেই আমাদের গ্রামে আবার একটা নতুন কবরস্থান তৈরী করা হয় এবং সেখানে ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করে বতর্মানেও সেখানে মানুষ মাটি দেওয়া হচ্ছে আমাদের এই পুরাতন কবরস্থানে মানুষ মাটি দেওয়ার আর প্রয়োজন নাই। তাই আমাদের পুরাতন জামে মসজিদটি সংস্কার ও বড় করার জন্য পুরাতন মসজিদের সবটুকু জায়গা বহাল না রেখে কবরস্থানের সকল কবরগুলো খনন না করে কবর গুলো ঐ অবস্থাতেই রেখে দিয়ে তার উপর নতুন করে ৩ ফুট মাটি দিয়ে উচু করে অনেক বড় একটি মসজিদ তৈরী করেছি এবং নামাজও পড়ছি।
এখন আমার প্রশ্ন হলো:
০১।
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ওয়াকফ সহিহ বা বৈধ হওয়ার জন্য মৌখিক ওয়াক্ফই যথেষ্ট নাকি রেজিষ্ট্রি করা জরুরি? এ বিষয়ে জানতে চাই?
০২।
যদি কোরআন এবং হাদিসের নিয়ম অনুযায়ী নতুন করে আবার মসজিদ এবং কবরস্থানের সমস্ত জায়গা শুধূ মসজিদ বরাবর সরকারী আইন অনুযায়ী ওয়ারিশদের লিখিত দলিল করে দেওয়ার নিয়ম থাকে তাহলে মসজিদের পাশে যে অনেক ফাকা জায়গা পড়ে রয়েছে সে জায়গাটুকুও মসজিদের নামে রেজিষ্ট্রি করা, অথচ সেই জায়গায় মসজিদ না করে কবরস্থানের উপর আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মসজিদ তৈরী করেছি এবং নামাজ পড়ছি এখন সেই মসজিদে নামাজ পড়লে নামাজের সঠিক হক আদায় হবে কিনা?
০৩।
আর মসজিদ তৈরীর সময় ঐ সমস্ত সকল কবরগুলো খনন না করে, শুধু মাত্র পিলার করার জন্য যে জায়গাটুকু খনন করার দরকার সেই জায়গাটুকু খনন করেছি এবং সেখানকার যে হাড়-হাড্ডি গুলো পাওয়া গেছে সে হাড়-হাড্ডি গুল্ওো অন্য জায়গা না সড়িয়ে সেই কবরের মধ্যেই তার মানে মসজিদের নিচে চাপা দিয়েছি আর বাঁকি শত শত কবরগুলো কবরগুলো ঐ অবস্থাতেই রেখে দিয়ে সমস্ত কবরগুলো গোটা মসজিদের মেঝের নিচে চাপা দিয়ে মসজিদ করেছি এবং এতদিন ধরে এই ভাবেই সেই মসজিদে আমরা নামাজও পড়ছি এখন আমাদের নামাজ হবে কিনা?
০৪।
আর যদি গ্রামের সকল জনগন একমত হয়ে মসজিদের মেঝ ভেঙ্গে ফেলে দিয়ে ঐ সকল কবরের হাড়-হাড্ডি তুলে ফেলে অন্য কবরস্থানে দাফন করে তারপর নতুন করে মেঝে তৈরী করে নামাজ পড়ি তাহলে সে কাজটি করা উত্তম হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাই?
০৫।
আর যদি আমরা হাড়-হাড্ডি না তুলে ঐ অবস্থাতেই নামাজ পড়ি এবং এ রকম অবস্থায় মসজিদ করে নামাজ পড়া শরিয়তের বিধান অনুযায়ী বিলকুল জায়েজ কিনা এ বিষয়ে জানতে চাই?
অতএব, জনাবের নিকট বিনীত অনুরোধ আমাদের উপরোক্ত বিষয়গুলো ভাল ভাবে পড়ে ও বুঝে আমাদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে দিয়ে আমাদের এই সমস্যার সমাধান করে দিতে আপনার সহানুভূতি কামনা করছি।
নিবেদক
গ্রাম বাসীদের পক্ষে
মো: আব্দুল হাই
গ্রাম: হাপানিয়া
উপজেলা: আটঘরিয়া
জেলা: পাবনা।
(বিঃদ্রঃ আমাদের উপরোক্ত ০৪ টি প্রশ্নেরে উত্তর হাওলা সহ আলাদা আলাদা ভাবে দিবেন, তাহলে আমাদের প্রত্যেকটি বিষয়ে জানা হবে এবং আমরা খুব উপকৃত হব এবং এই প্রশ্নের উত্তরের ১ কপি যদি কুরিয়ার ও পোষ্টের মাধ্যমে পাঠাতেন তাহলে আমরা সারা জীবন আপনার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতাম।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
১ নং প্রশ্নের জবাব
ওয়াকফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য লিখিত দেয়া বা রেজিষ্ট্রি করে দেয়া শর্ত নয়। শুধুমাত্র মৌখিক হুকুম দিয়ে জমিটি ওয়াকফকৃত প্রয়োজনে আলাদা করে দিলেই ওয়াকফ সম্পন্ন হয়ে যায়।
সেই হিসেবে মরহুম মেছের জোয়াদ্দার সাহেব মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য আলাদা আলাদা দু’টি জমি ওয়াকফ করার কথা বলে পৃথক করে দেয়ার দ্বারাই ওয়াকফ শুদ্ধ হয়ে গেছে। উক্ত দু’টি নির্ধারিত স্থানে মসজিদ ও কবরস্থানের কাজ সমাপনের দ্বারা ওয়াকফটি আরো শক্তিশালী ও পূর্ণতা লাভ করেছে। পরবর্তীতে ওয়াকফকারীর ওয়ারিসদের কোন অধিকার নেই তার উপর কোনরূপ হস্তক্ষেপ করার।
وَأَبُو يُوسُفَ – رَحِمَهُ اللَّهُ – مَرَّ عَلَى أَصْلِهِ مِنْ زَوَالِ الْمِلْكِ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ أَذِنَ فِي الصَّلَاةِ أَوْ لَمْ يَأْذَنْ، وَيَصِيرُ مَسْجِدًا بِلَا حُكْمٍ؛ لِأَنَّهُ إسْقَاطٌ كَالْإِعْتَاقِ، وَبِهِ قَالَتْ الْأَئِمَّةُ الثَّلَاثَةُ. (فتح القدير، كتال الوقف، فصل فى احكام المسجد، إذَا بَنَى مَسْجِدًا لَمْ يَزُلْ مِلْكُهُ عَنْهُ-6/234
وفى البحر الرائق- الخامس من شرائطه الملك وقت الوقف…………. اما لو وقف ضيعة غيره على جهات فبلغ الغيرفأجازه جاز بشرط الحكم والتسليم، ( البحر الرائق-5/188)
২ ও ৩ এবং ৫নং প্রশ্নের জবাব
ওয়াকফকারী যে স্থানকে কবরস্থান হিসেবে ওয়াকফ করে গেছে, সেটিতে মসজিদ নির্মাণ করা জায়েজ নয়। ওয়াকফকারীর ওয়াকফের বিপরীত করে কবরস্থানের স্থলে মসজিদ নির্মাণ করাটি শরীয়ত গর্হিত কাজ হয়েছে। দেশীয় আইনের ফাঁক গলে এহেন কাজ করা কিছুতেই সমীচিন হয়নি। মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত স্থানে মসজিদ নির্মাণ করতে হবে। আর কবরস্থানটিকে কবরস্থান হিসেবেই রাখতে হবে। এর উল্টো করা জায়েজ নয়।
শরয়ী বিধানের উল্টো কবরস্থানের জন্য ওয়াকফকৃত জমিনে মসজিদ নির্মাণের ফলে কর্তৃপক্ষ শক্ত গোনাহগার হয়েছে।
شرط الواقف كنص الشارع أي في المفهوم والدلالة، ووجوب العمل به (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى قولهم شرط الواقف كنص الشارع-6/649، البحر الرائق، كتاب الوقف-5/245، النهر الفائق، كتاب الوقف-3/326
হ্যাঁ, কবরস্থানের স্থলে মসজিদ নির্মাণ করা জায়েজ আছে ২টি শর্তে। যথা-
১- যদি উক্ত কবরস্থানটি আর কবর দেয়ার কাজে ব্যবহৃত না হয়।
২- কবরস্থানে দাফনকৃত লাশ মাটির সাথে মিশে গিয়ে থাকে।
যদি উল্লেখিত উভয় শর্ত পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণ জায়েজ হয়েছে। সুতরাং তাতে নামাযও জায়েজ হচ্ছে।
فى عمدة القارى شرح صحيح البخارى- قال ابن القاسم لو أن مقبرة من مقابر المسلمين عفت فبنى قوم عليها مسجدا لم أر بذلك بأسا وذلك لأن المقابر وقف من أوقاف المسلمين لدفن موتاهم لا يجوز لأحد أن يملكها فإذا درست واستغنى عن الدفن فيها جاز صرفها إلى المسجد لأن المسجد أيضا وقف من أوقاف المسلمين لا يجوز تملكه لأحد فمعناهما على هذا واحد وذكر أصحابنا أن المسجد إذا خرب ودثر ولم يبق حوله جماعة والمقبرة إذا عفت ودثرت تعود ملكا لأربابها فإذا عادت ملكا يجوز أن يبنى موضع المسجد دارا وموضع المقبرة مسجدا وغير ذلك فإذا لم يكن لها أرباب تكون لبيت المال (عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الصلاة، باب هل تنبش قبور مشركي الجاهلية ويتخذ مكانها مساجد-3/435 زكاريا
وَلَوْ بَلَى الْمَيِّتُ وَصَارَ تُرَابًا جَازَ دَفْنُ غَيْرِهِ فِي قَبْرِهِ وَزَرْعُهُ وَالْبِنَاءُ عَلَيْهِ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الباب الحادى عشر فى الجنائز، الفصل السادس فى القبر الدفن-1/167
কিন্তু যদি এই দুই শর্তের একটি শর্তও না পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণ জায়েজ হয়নি। সুতরাং তাতে নামায পড়া মাকরূহে তাহরিমী হচ্ছে।
وتكره الصلاة عليه وإليه لورود النهي عن ذلك، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صلاة الجنائز، مطلب فى اهداء ثواب القرائة للنبى صلى الله عليه وسلم-3/154، تاتارخانية، كتاب الجنائز، باب التعزية والماتم-2/182
৪ নং প্রশ্নের জবাব
যদি কবরস্থানটি প্রয়োজনীয়তা আর না থাকে। অন্য কবরস্থানেই মানুষ এখন লাশ দাফন করে। ওয়াকফকৃত উক্ত কবরস্থানটি বিরান হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে উক্ত স্থান থেকে কবরের হাড়গোড় উঠিয়ে অন্যত্র সম্মানের সাথে দাফন করে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণের সুযোগ রয়েছে।
তবে এক্ষেত্রেও হাড়গোড় একদম মাটির সাথে মিশে যাওয়ার পর কাজটি করলেই সর্বোত্তম হবে।
আর যদি এখনো উক্ত স্থানে মানুষ লাশ দাফন করে থাকে। তথা কবরস্থানটির প্রয়োজনীয়তা এখনো বাকি থাকে, তাহলে উক্ত স্থানে ওয়াকফকারীর নির্দেশনার উল্টো হওয়ায় মসজিদ নির্মাণ জায়েজ হবে না।
فى عمدة القارى شرح صحيح البخارى- قال ابن القاسم لو أن مقبرة من مقابر المسلمين عفت فبنى قوم عليها مسجدا لم أر بذلك بأسا وذلك لأن المقابر وقف من أوقاف المسلمين لدفن موتاهم لا يجوز لأحد أن يملكها فإذا درست واستغنى عن الدفن فيها جاز صرفها إلى المسجد لأن المسجد أيضا وقف من أوقاف المسلمين لا يجوز تملكه لأحد فمعناهما على هذا واحد وذكر أصحابنا أن المسجد إذا خرب ودثر ولم يبق حوله جماعة والمقبرة إذا عفت ودثرت تعود ملكا لأربابها فإذا عادت ملكا يجوز أن يبنى موضع المسجد دارا وموضع المقبرة مسجدا وغير ذلك فإذا لم يكن لها أرباب تكون لبيت المال (عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الصلاة، باب هل تنبش قبور مشركي الجاهلية ويتخذ مكانها مساجد-3/435 زكاريا
وَلَوْ بَلَى الْمَيِّتُ وَصَارَ تُرَابًا جَازَ دَفْنُ غَيْرِهِ فِي قَبْرِهِ وَزَرْعُهُ وَالْبِنَاءُ عَلَيْهِ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الباب الحادى عشر فى الجنائز، الفصل السادس فى القبر الدفن-1/167
شرط الواقف كنص الشارع أي في المفهوم والدلالة، ووجوب العمل به (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى قولهم شرط الواقف كنص الشارع-6/649، البحر الرائق، كتاب الوقف-5/245، النهر الفائق، كتاب الوقف-3/326
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পৃথিবীর প্রকৃত বয়স ।
পুর্নাঙ্গ প্রশ্ন:---বিভিন্ন হাদিস বা বুখারীর হাদিস হতে অামরা পাই যে অাদম (অাঃ) পৃথিবীতে এসেছে প্রায় ৭ হাজার বছর পূর্বে। কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞান বিভিন্ন মানব ফসিল পাচ্ছে যেগুলো কয়েক লক্ষ বছর পূর্বের। এবং বিভিন্ন লিখনি চিত্রও পাচ্ছে যেগুলো ৩০ হতে ৪০ হাজার বছর পূর্বের।তাহলে এটাকে কুরআনের অালোকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবো। এই বিষয়টি বিজ্ঞান ও কুরআনের অালোকে ব্যাখ্যা করলে উপকৃত হবো। ধন্যবাদ।
উত্তর : উত্তরটা সহজ।(১) প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে। তার অনেক পরে আদম আ: কে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। (২) অথবা, সময়ের সৃষ্টি আল্লাহই করেছেন, কোথাও সাত হাজার বছর, কিন্তু অন্য কোথাও সাত কোটি বছর কেটে যেতে পারে, তদ্রূপ পৃথিবীর ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে। (৩) বিভিন্ন স্থানে সময়ের এই কম বেশী হওয়া, হেরফের হওয়া - এ বিষয়টি মিরাজ এর ঘটনায় সবিস্তারে বর্ণনা করা আছে। (৪) মানব ফসিল এর বয়স নির্ণয়ের বিষয়টি এক আর কোন প্রানীর ফসিল এর বয়সের বিষয়টি ভিন্ন। যেমন: ফেরাউনের যে লাশ সংরক্ষিত রয়েছে, তা কিন্তু বয়সের হিসেবে মিলে গেছে, কেউ বা কোন বিজ্ঞানী কিন্তু দাবী করেন নাই, ফেরাউনের আগমনের সময় এবং এই লাশের বয়সের অনেক পার্থক্য রয়েছে, এমনটি কেউ দাবী করেনি। (৪) সাত হাজার বছর পূর্বে আদম আ: এসেছেন - এটা অকাট্য বর্ণনা নয়। এটা একটা আপাত হিসাব। আমরা জানি বনী ইসরাঈলে হাজার হাজার নবী এসেছে, তাদের বয়সের হিসাব, যুগের হিসাব ইত্যাদি যোগ করলে কিন্তু সময়টা অনেক লম্বা হয়ে যেতে পারে।
অতএব, এ বিষয়গুলো যথেষ্ট আলোচনার দাবী রাখে।
ইমাম সাহেবের অজু না থাকলে বা অজু ভেঙ্গে গেলে ।
এ ক্ষেত্রে প্রথমত দুটি বিষয়।
(ক)
ইমাম সাহেবের অজুই ছিলনা কিন্তু তার মনে নেই। এ ক্ষেত্রে আবার তিনটি বিষয়। (১) হয়তো দুই রাকাত পড়ার পর তার মনে পড়েছে যে তার অজু ছিলনা। সেক্ষেত্রে নামায ভেঙ্গে দিতে হবে, এবং তিনি অজু করে এসে পুনরায় নামাজ প্রথম থেকে আরম্ভ করবেন। (২) অথবা, পুরো নামাজ শেষ করার পর ইমাম সাহেবের মনে পড়েছে যে তার অজু ছিলনা। এক্ষেত্রেও কারো নামাজ হয়নি। তাই ইমাম সাহেব অজু করে এসে পুরো নামাজ পুনরায় পড়াবেন। (৩) অথবা, ঐ ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর বা দু একদিন পর ইমাম সাহেবের মনে পড়েছে, সেক্ষেত্রে তিনি সাধারণ ঘোষণা দিয়ে দিবেন, অমুক দিনের অমুক ওয়াক্তের নামাজ আপনারা মুসল্লীগণ নিজে নিজে আদায় করে নিবেন। ঘোষণাটি দুই তিনি ওয়াক্ত দেওয়া দরকার যাতে ঐ দিন যত মুসল্লী ছিল সবাই জেনে যেতে পারে। ইমাম সাহেব নিজেও একা একা উক্ত ওয়াক্তের নামাজ কাজা আদায় করবেন।
(খ) ইমাম সাহেবের অজু ছিল কিন্তু নামাজের মধ্যে অজু ভেঙ্গে গেছে, সেক্ষেত্রে নিম্নের জবাবটি প্রযোজ্য হবে।
ইমামের অযু ভেঙ্গে গেলে করণীয়
জিজ্ঞাসা–৩৩৮: কোনো নামাজে ইমামের যদি অযু ভেঙ্গে যায়, এমন সময় নামাজ ছেড়ে দিলে বা অযু ভাঙ্গার খবর প্রকাশ পেলে যদি ফেৎনার আশঙ্খা থাকে তাহলে কী করণীয়? জানালে ভাল হয়।– আব্দুর রহমান সেরনায়বাত: saraslam077@gmail.com
জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, এটা তো জানা কথা যে, অযু ছাড়া নামাজ হয়না। আবু হুরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, لا تقبل صلاة أحدكم إذا أحدث حتى يتوضأ তোমাদের যদি অযু ভেঙ্গে যায় তাহলে অযু করা পর্যন্ত তোমাদের নামায কবুল করা হয় না। (মুসলিম: ২২৫)
সুতরাং ফেতনার আশঙ্কায় অযু ছাড়া নামাজের অনুমতি নেই। বরং নামাযে যদি ইমাম সাহেবের অযু ভেঙ্গে যায় তাহলে তিনি কিরাত শুদ্ধ আছে এমন কাউকে তার প্রতিনিধি বানাবেন। প্রতিনিধি বাকি নামাজ মুসল্লীদের নিয়ে আদায় করবে। ইমাম সাহেব অযু করে এসে তার ইকতেদা করবেন।
আমর ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী করণীয় এ সম্পর্কে উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. বলেন, يَنْفَتِلُ فَيَتَوَضَّأُ، ثُمَّ يَرْجِعُ فَيُصَلِّي সে অযুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং অযু করে আসবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫০)
ইবরাহিম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ عَلْقَمَةَ رَعَفَ فِي الصَّلاَةِ، فَأَخَذَ بِيَدِ رَجُلٍ فَقَدَّمَهُ، ثُمَّ ذَهَبَ، فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ جَاءَ فَبَنَى عَلَى مَا بَقِيَ مِنْ صَلاَتِهِ
অর্থাৎ, আলকামার নামাজে নাক থেকে রক্ত বের হয়েছে, তখন তিনি এক ব্যক্তির হাত ধরে ইমামতির স্থানে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তিনি বের হয়ে গিয়ে অযু করে আসলেন। তারপর বাকি নামাজে বেনা করছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫৬)
হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব হেদায়াতে আছে,ومن سبقه الحدث في الصلاة انصرف فإن كان إماما استخلف وتوضأ وبنى অর্থাৎ, যে ব্যক্তির নামাযে হদস হবে অর্থাৎ নামাযে অযু চলে যাবে সে ফিরে আসবে। সে যদি ইমাম হয় তাহলে সে একজন প্রতিনিধি বানাবে এবং অযু করবে এবং তার নামাযে বেনা করবে। (হেদায়া: ১/৫৯)
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
মুনাবাযা ও মুলামাসা পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় ।
আর আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তোমরা পরস্পর পরস্পরের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কিন্তু তোমাদের পরস্পর সন্তুষ্টচিত্তে ব্যবসা করা বৈধ।” (আন্-নিসাঃ ২৯)
ছোঁয়ার মাধ্যমে কেনা-বেচা করা
আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ বেচা-কেনা হতে নিষেধ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মুনাবাযা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। আর তা হলো, বিক্রয় চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে ক্রেতার কাপড়টি উল্টানো-পাল্টানো অথবা দেখে নেওয়ার আগেই বিক্রেতা কর্তৃক তা ক্রেতার দিকে নিক্ষেপ করা। তিনি ‘মুলামাসা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় করতেও নিষেধ করেছেন। মুলামাসা হলো, কাপড়টি না দেখে স্পর্শ করা (এতেই বেচা-কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য করা)।
عن أبي سعيد الخدري -رضي الله عنه- مرفوعاً: «أن رسول الله -صلى الله عليه وسلم- نهى عن الْمُنَابَذَةِ-وهي طرح الرجل ثوبه بالبيع إلى الرجل قبل أن يقلبه، أو ينظر إليه-، ونهى عن الْمُلَامَسَةِ -والملامسة: لمس الرجل الثوب ولا ينظر إليه-».
[صحيح] - [متفق عليه.]
আবূ সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মুনাবাযা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন। আর তা হলো, বিক্রয় চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে ক্রেতা কাপড়টি উল্টানো-পাল্টানো অথবা দেখে নেওয়ার আগেই বিক্রেতা কর্তৃক তা ক্রেতার দিকে নিক্ষেপ করা। তিনি ‘মুলামাসা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় করতেও নিষেধ করেছেন। মুলামাসা হলো কাপড়টি না দেখে স্পর্শ করা (এতেই বেচা-কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য করা)।
সহীহ - মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)। (বুখারী : ২১৪৪ )
ব্যাখ্যা
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অজানা বস্তুর বেচাকেনা করতে নিষেধ করেছেন। কেননা, এতে ক্রেতা বা বিক্রেতার ক্ষতি নিহিত। হয় ক্রেতা কিনে ঠকে বা বিক্রেতা বিক্রি করে ঠকে। যেমন, বিক্রয়কৃত বস্তুটি ক্রেতা বা বিক্রেতা বা উভয়ের কাছে অস্পষ্ট। এ ধরণের বেচা-কেনার একটি হলো, ‘মুনাবাযা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়। আর তা হলো, বিক্রয় চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে ক্রেতা কাপড়টি উল্টানো-পাল্টানো অথবা দেখে নেওয়ার আগেই বিক্রেতা কর্তৃক তা ক্রেতার দিকে নিক্ষেপ করা। এ ধরণের আরেকটি নিষিদ্ধ ক্রয়-বিক্রয় হলো, ‘মুলামাসা’ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়। তা হলো, কাপড়টি না দেখে বা উল্টানো-পাল্টানোর আগে শুধু স্পর্শ করে বেচা-কেনা সম্পন্ন করা। এ দু-ধরণের বেচা-কেনা বিক্রিত বস্তুর ব্যাপারে অজ্ঞতা ও অস্পষ্টতার অভিযোগ সৃষ্টি করে। ক্রেতা বা বিক্রতা যে কেউ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে কেউ অতিরিক্ত লাভবান হবে এবং অন্যজন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে তা মাইসার তথা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত— যা শরী‘আতে নিষিদ্ধ।
প্রশ্ন: ৪৬৪ : ঈদ যেভাবে শুরু হয়েছে।
নামকরণ
ঈদ শব্দটি আরবি। অর্থ খুশি, আনন্দ, অনুষ্ঠান, উৎসব, পর্ব ইত্যাদি। শব্দের মূল রূপ হলো আওদ, যার অর্থ ফিরে আসা। লিসানুল আরব অভিধানে রয়েছে, আরবদের কাছে ঈদ বলা হয় এমন সময়কে, যে সময় আনন্দ ও দুঃখ ফিরে আসে। আল মুহিত অভিধানে রয়েছে, যে রোগ, দুঃখ, দুশ্চিন্তা বা অনুরূপ কোনো কিছু বারবার ফিরে আসে তাকে ঈদ বলা হয়। আল মুনজিদ অভিধানে বলা হয়েছে, ঈদ এমন দিনকে বলা হয়, যাতে লোকজনের সমাগম হয় বা কোনো সম্মানিত ব্যক্তি অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনার স্মৃতিচারণা করা হয়।
ঈদ প্রতিবছর সাজগোজ, আনন্দ-খুশি ও নতুন পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে ফিরে আসে। এ কারণে ঈদের দিনকে আনন্দ ও খুশির দিন বলা হয়। অভিধানে বলা হয়েছে, ঈদকে এ জন্য ঈদ বলা হয় যে তা প্রতিবছর নতুন আনন্দ ও খুশি নিয়ে ফিরে আসে। কোরআন মজিদেও ঈদ শব্দের ব্যবহার রয়েছে; যেমন—মরিয়ম তনয় ঈসা বলল, ‘হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ করুন, তা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবার জন্য হবে ঈদ আনন্দোৎসব এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ১১৪) এই আয়াতে আসমানি খাদ্য নাজিল হওয়ার দিনটি পরবর্তীদের জন্য স্মৃতিচারণার দিন হওয়ায় তাকে ঈদ বলা হয়েছে।
ঈদের প্রবর্তন
মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর ঈদের প্রবর্তন হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় পৌঁছে দেখতে পান যে মদিনায় বসবাসকারী ইহুদিরা শরতের পূর্ণিমায় নওরোজ উৎসব এবং বসন্তের পূর্ণিমায় মেহেরজান উৎসব উদ্যাপন করছে। তারা এ উৎসবে নানা আয়োজন, আচার-অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন আনন্দ উৎসব করে থাকে। মহানবী (সা.) মুসলমানদের এ দুটি উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের ওই উৎসবের বিনিময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো পবিত্র দুটি দিন দান করেছেন। এতে তোমরা পবিত্রতার সঙ্গে উৎসব পালন করো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) যখন মদিনায় আগমন করেন তখন তাদের দুটি দিন ছিল, যাতে তারা উৎসব পালন করত। তিনি জিজ্ঞেস করেন, এ দুটি কিসের দিন? তারা বলল, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিন খেলাধুলা ইত্যাদি উৎসব পালন করতাম। এ নিয়মই চলে আসছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুটির পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। তা হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১১৩৬; মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১৩৬৪৭)
মদিনায় প্রথম ঈদ
মুসলমানরা প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে দ্বিতীয় হিজরি মোতাবেক ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ বা ৩১ মার্চ। তখনকার ঈদে বর্তমান ঈদের মতো নতুন জামাকাপড়, কেনাকাটার ধুমধাম ছিল না। তবে আনন্দ-খুশি কম ছিল না। মহানবী (সা.) ঈদের দিন ছোট-বড় সবার আনন্দের প্রতি খেয়াল করতেন। মদিনার ছোট ছোট শিশু-কিশোরের সঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) আনন্দ করতেন। শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত সব আনন্দ করার অনুমতি দিতেন। বালিকা বয়সী আয়েশা (রা.)-এর মনের বাসনাও রাসুল (সা.) পূরণ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, একদা ঈদের দিন আবিসিনিয়ার কিছু লোক লাঠি নিয়ে খেলা করছে। মহানবী (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করেন, হে আয়েশা! তুমি কি লাঠিখেলা দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তখন আমাকে তাঁর পেছনে দাঁড় করান, আমি আমার গাল তাঁর গালের ওপর রেখে লাঠিখেলা দেখতে লাগলাম। তিনি তাদের উৎসাহ দিয়ে বললেন, হে বনি আরফেদা! লাঠি শক্ত করে ধরো। আমি দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম। তিনি তখন বলেন, তোমার দেখা হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তাহলে এবার যাও।
ঈদে রাসুল (সা.)-এর আমল
মহানবী (সা.) ঈদের দিনে গোসল করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন, সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে উত্তম পোশাক পরতেন। ঈদুল ফিতরে কিছু মিষ্টি দ্রব্য খেতেন।
ঈদুল আজহায় কিছু খেতেন না। কোরবানির গোশত দিয়ে দিবসের প্রথম আহার করতেন। ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যেতেন, অন্য রাস্তা দিয়ে আসতেন। তিনি ঈদে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানাতেন। গরিব-দুঃখীদের খোঁজখবর নিতেন। অতঃপর ঈদগাহে গিয়ে অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। নামাজ থেকে ফারেগ হয়ে খুতবা দিতেন। ঈদুল ফিতরের খুতবায় ঈদের করণীয় কাজ এবং ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব বর্ণনা করতেন।
সাহাবায়ে কেরামের ঈদ
সাহাবায়ে কেরাম সর্বক্ষেত্রে মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ করতেন। তাঁরা এ বাক্যের মাধ্যমে ঈদের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন।
সাহাবায়ে কেরাম মাহে রমজানে গুনাহ মাফ হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে বেশি চিন্তিত থাকতেন। তাই আমিরুল মুমিনিন হজরত ওমর ফারুক (রা.) ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে বলতে থাকেন, আমার গুনাহ মাফ না হলে আমি ঈদগাহে গিয়ে কিভাবে ইমামতি করতে পারি। তাঁদের ঈদে নতুন জামা, জুতা ও খাওয়াদাওয়ার ধুমধাম ছিল না। তবে আনন্দ কম ছিল না।
মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভ করা, তাঁকে কাছে পাওয়া, তাঁর নির্দেশ পালন করাই ছিল তাঁদের প্রকৃত আনন্দ। ঈদের দিন অনেক দূর থেকে সাহাবায়ে কেরাম ছুটে যেতেন মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য এবং তাঁর পেছনে দুই রাকাত নামাজ পড়ার জন্য।
লেখক : প্রধান ফকিহ
আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা, ফেনী
Featured Post
প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ
আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে। বিগত দিনের ...
-
يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اذْكُرُوا نِعْمَتِيَ الَّتِي أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَنِّي فَضَّلْتُكُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ (২-সুরা-বাক্বারা:১২২.)...
-
(Version 1): Zekr Software With Tafhimul Quran : ডাউনলোড করার পর এক্সট্রাক্ট করে নিবেন ইনশাআল্লাহ: 1. Download Zekr Here 2. Instructions...
-
ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ (০২-বাক্বারা-১৯৯.) তারপর যেখান থে...
-
গলায় মাছের কাঁটা আঁতকে যাওয়া যেমন অস্বস্তিকর ঠিক তেমনই কষ্টকর। তবে কিছু উপায় জানা থাকলে আপনি অল্প সময়ে দূর করতে পারবেন এই কাঁটা। জেনে নিন ত...
-
وَإِذْ غَدَوْتَ مِنْ أَهْلِكَ تُبَوِّئُ الْمُؤْمِنِينَ مَقَاعِدَ لِلْقِتَالِ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (৩-আলে-ইমরান:১২১.) (হে নবী!৯৪ মুস...
-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ইসলামী জীবন বিধান, কুরআন, হাদীস, ইতিহাস, ফিকাহ, আধুনিক ইসলামী যুগ জিজ্ঞাসা ইত্যাদি সংক্রান্ত আপনার যে কোন প...
-
ইমামতির নিয়ম কানুন । ইমামতির জন্য আলাদা কোন নিয়ম কানুন আছে কি ? এই ভিডিওটি দেখুন (ক্লিক করুন) : ইমামতির জন্য আলাদা নিয়ম কান...
-
আসসালামু আলাইকুম । এই এ্যাপে প্রায় সাড়ে সাতাত্তর হাজার করে বাংলা, ইংরেজী ও আরবী শব্দ রয়েছে। Next - Go to Dictionary বাটনে প্রেস কর...
-
এ ব্যাপারে ইসলামিক স্কলারদের আলোচনা থেকে নিন্মোক্ত বিষয়গুলি জানা যায়। এ থেকেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, বিবাহে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করবেন ক...
-
ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী: ‘সিনা চাক’ বা বক্ষবিদারণ শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে আমাদের চিন্তা চলে যায় দেড় হাজার বছর আগে ইতিহাসের একটি বাঁ...