লূক: ১

এই সিপারা লিখবার উদ্দেশ্য
 
 
1-2মাননীয় থিয়ফিল,
আমাদের মধ্যে যে সব ঘটনা ঘটেছে তা যাঁরা প্রথম থেকে নিজের চোখে দেখেছেন ও আল্লাহ্‌র সুসংবাদ তবলিগ করেছেন, তাঁরা আমাদের কাছে সব কিছু জানিয়েছেন, আর তাঁদের কথামতই অনেকে সেই সব বিষয়গুলো পরপর লিখেছেন। 3সেই সব বিষয় সম্বন্ধে প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে আপনার জন্য তা একটা একটা করে লেখা আমিও ভাল মনে করলাম। 4এর ফলে আপনি যা জেনেছেন তা সত্যি কি না জানতে পারবেন।
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর জন্মের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
5হেরোদ যখন এহুদিয়া প্রদেশের বাদশাহ্‌ ছিলেন সেই সময়ে ইমাম অবিয়ের দলে জাকারিয়া নামে ইহুদীদের একজন ইমাম ছিলেন। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল এলিজাবেত। তিনিও ছিলেন ইমাম হারুনের একজন বংশধর। 6তাঁরা দু’জনেই আল্লাহ্‌র চোখে ধার্মিক ছিলেন। মাবুদের সমস্ত হুকুম ও নিয়ম তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন। 7তাঁদের কোন ছেলেমেয়ে হয় নি কারণ এলিজাবেত বন্ধ্যা ছিলেন। এছাড়া তাঁদের বয়সও খুব বেশী হয়ে গিয়েছিল।
8একবার নিজের দলের পালার সময় জাকারিয়া ইমাম হিসাবে আল্লাহ্‌র এবাদত-কাজ করছিলেন। 9ইমামের কাজের চলতি নিয়ম অনুসারে গুলিবাঁট দ্বারা তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল, যেন তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসের পবিত্র স্থানে গিয়ে ধূপ জ্বালাতে পারেন। 10ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক মুনাজাত করছিল। 11এমন সময় ধূপগাহের ডানদিকে মাবুদের একজন ফেরেশতা হঠাৎ এসে জাকারিয়াকে দেখা দিলেন। 12ফেরেশতাকে দেখে তাঁর মন অস্থির হয়ে উঠল এবং তিনি ভয় পেলেন।
13ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “জাকারিয়া, ভয় কোরো না, কারণ আল্লাহ্‌ তোমার মুনাজাত শুনেছেন। তোমার স্ত্রী এলিজাবেতের একটি ছেলে হবে। তুমি তার নাম রেখো ইয়াহিয়া। 14সে তোমার জীবনে মহা আনন্দের কারণ হবে এবং তার জন্মের দরুন আরও অনেকে আনন্দিত হবে, 15কারণ মাবুদের চোখে সে মহান হবে। সে কখনও আংগুর-রস বা কোন রকম মদানো রস খাবে না এবং মায়ের গর্ভে থাকতেই সে পাক-রূহে পূর্ণ হবে। 16বনি-ইসরাইলদের অনেককেই সে তাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র কাছে ফিরিয়ে আনবে। 17নবী ইলিয়াসের মত মনোভাব ও শক্তি নিয়ে সে মাবুদের আগে আসবে। সে পিতার মন সন্তানের দিকে ফিরাবে এবং অবাধ্য লোকদের মনের ভাব বদলে আল্লাহ্‌ভক্ত লোকদের মনের ভাবের মত করবে। এইভাবে সে মাবুদের জন্য এক দল লোককে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করবে।”
18তখন জাকারিয়া ফেরেশতাকে বললেন, “কিভাবে আমি তা বুঝব? আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি এবং আমার স্ত্রীর বয়সও অনেক বেশী হয়ে গেছে।”
19ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “আমার নাম জিবরাইল; আমি আল্লাহ্‌র সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। তোমার সংগে কথা বলবার জন্য ও তোমাকে এই সুসংবাদ দেবার জন্য আল্লাহ্‌ আমাকে পাঠিয়েছেন। 20দেখ, আমার কথা সময়মতই পূর্ণ হবে, কিন্তু তুমি আমার কথা বিশ্বাস কর নি বলে বোবা হয়ে থাকবে। যতদিন না এই সব ঘটে ততদিন তুমি কথা বলতে পারবে না।”
21এদিকে লোকেরা জাকারিয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। বায়তুল-মোকাদ্দসের পবিত্র স্থানে তাঁর দেরি হচ্ছে দেখে তারা ভাবতে লাগল। 22পরে জাকারিয়া যখন বের হয়ে আসলেন তখন লোকদের সংগে কথা বলতে পারলেন না। এতে লোকেরা বুঝতে পারল পবিত্র স্থানে তিনি কোন দর্শন পেয়েছেন। তিনি লোকদের কাছে ইশারায় কথা বলতে থাকলেন এবং বোবা হয়ে রইলেন।
23ইমামের কাজের পালা শেষ হবার পরে জাকারিয়া বাড়ী চলে গেলেন। 24এর পরে তাঁর স্ত্রী এলিজাবেত গর্ভবতী হলেন এবং পাঁচ মাস পর্যন্ত বাড়ী ছেড়ে বাইরে গেলেন না। তিনি বললেন, 25“এটা মাবুদেরই কাজ। মানুষের কাছে আমার লজ্জা দূর করবার জন্য তিনি এখন আমার দিকে চোখ তুলে চেয়েছেন।”
হযরত ঈসা মসীহের জন্মের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
26-27এলিজাবেতের যখন ছয় মাসের গর্ভ তখন আল্লাহ্‌ গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রামের মরিয়ম নামে একটি অবিবাহিতা সতী মেয়ের কাছে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাঠালেন। বাদশাহ্‌ দাউদের বংশের ইউসুফ নামে একজন লোকের সংগে তাঁর বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয়েছিল। 28ফেরেশতা মরিয়মের কাছে এসে তাঁকে সালাম জানিয়ে বললেন, “মাবুদ তোমার সংগে আছেন এবং তোমাকে অনেক দোয়া করেছেন।”
29এই কথা শুনে মরিয়মের মন খুব অস্থির হয়ে উঠল। তিনি ভাবতে লাগলেন এই রকম সালামের মানে কি। 30ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় কোরো না, কারণ আল্লাহ্‌ তোমাকে খুব রহমত করেছেন। 31শোন, তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার একটি ছেলে হবে। তুমি তাঁর নাম ঈসা রাখবে। 32তিনি মহান হবেন। তাঁকে আল্লাহ্‌তা’লার পুত্র বলা হবে। মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁর পূর্বপুরুষ বাদশাহ্‌ দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন। 33তিনি ইয়াকুবের বংশের লোকদের উপরে চিরকাল ধরে রাজত্ব করবেন। তাঁর রাজত্ব কখনও শেষ হবে না।”
34তখন মরিয়ম ফেরেশতাকে বললেন, “এ কেমন করে হবে? আমার তো বিয়ে হয় নি।”
35ফেরেশতা বললেন, “পাক-রূহ্‌ তোমার উপরে আসবেন এবং আল্লাহ্‌তা’লার শক্তির ছায়া তোমার উপরে পড়বে। এইজন্য যে পবিত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবেন তাঁকে ইব্‌নুল্লাহ্‌ বলা হবে। 36দেখ, এই বুড়ো বয়সে তোমার আত্মীয়া এলিজাবেতের গর্ভেও ছেলের জন্ম হয়েছে। লোকে বলত তার ছেলেমেয়ে হবে না, কিন্তু এখন তার ছয় মাস চলছে। 37আল্লাহ্‌র কাছে অসম্ভব বলে কোন কিছুই নেই।”
38মরিয়ম বললেন, “আমি মাবুদের বাঁদী, আপনার কথামতই আমার উপর সব কিছু হোক।” এর পরে ফেরেশতা মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।
বিবি এলিজাবেতের ঘরে বিবি মরিয়ম
39তারপর মরিয়ম তাড়াতাড়ি করে এহুদিয়া প্রদেশের একটা গ্রামে গেলেন। গ্রামটা পাহাড়ী এলাকায় ছিল। 40মরিয়ম সেখানে জাকারিয়ার বাড়ীতে ঢুকে এলিজাবেতকে সালাম জানালেন। 41-42এলিজাবেত যখন মরিয়মের কথা শুনলেন তখন তাঁর গর্ভের শিশুটি নেচে উঠল। তিনি পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে জোরে জোরে বললেন, “সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে তুমি ধন্যা এবং তোমার যে সন্তান হবে সেই সন্তানও ধন্য। 43আমার প্রভুর মা আমার কাছে এসেছেন, এ কেমন করে সম্ভব হল? 44যখনই আমি তোমার কথা শুনলাম তখনই আমার গর্ভের শিশুটি আনন্দে নেচে উঠল। 45তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ যে, মাবুদ তোমাকে যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে।”
46তখন মরিয়ম বললেন,
“আমার হৃদয় মাবুদের প্রশংসা করছে;
47আমার নাজাতদাতা আল্লাহ্‌কে নিয়ে
আমার দিল আনন্দে ভরে উঠছে,
48কারণ তাঁর এই সামান্যা বাঁদীর দিকে
তিনি মনোযোগ দিয়েছেন।
এখন থেকে সব লোক আমাকে ধন্যা বলবে,
49কারণ শক্তিমান আল্লাহ্‌ আমার জন্য
কত না মহৎ কাজ করেছেন।
তিনি পবিত্র।
50যারা তাঁকে ভয় করে
তাদের প্রতি তিনি মমতা করেন,
বংশের পর বংশ ধরেই করেন।
51তিনি হাত বাড়িয়ে মহাশক্তির কাজ করেছেন;
যাদের মন অহংকারে ভরা
তাদের তিনি চারদিকে দূর করে দিয়েছেন।
52সিংহাসন থেকে বাদশাহ্‌দের তিনি নামিয়ে দিয়েছেন,
কিন্তু সাধারণ লোকদের তুলে ধরেছেন।
53যাদের অভাব আছে,
ভাল ভাল জিনিস দিয়ে
তিনি তাদের অভাব পূরণ করেছেন,
কিন্তু ধনীদের খালি হাতে বিদায় করেছেন।
54-55তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে
যে ওয়াদা করেছিলেন,
সেইমতই তিনি তাঁর গোলাম
ইসরাইলকে সাহায্য করেছেন।
ইব্রাহিম ও তাঁর বংশের লোকদের উপরে
চিরকাল মমতা করবার কথা তিনি মনে রেখেছেন।”
56প্রায় তিন মাস এলিজাবেতের কাছে থাকবার পর মরিয়ম নিজের বাড়ীতে ফিরে গেলেন।
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর জন্ম
57সময় পূর্ণ হলে পর এলিজাবেতের একটি ছেলে হল। 58তাঁর উপর মাবুদের প্রচুর মমতার কথা শুনে প্রতিবেশীরা ও আত্মীয়রা তাঁর সংগে আনন্দ করতে লাগল। 59ইহুদীদের নিয়ম মত আট দিনের দিন তারা ছেলেটির খৎনা করাবার কাজে যোগ দিতে আসল। তারা ছেলেটির নাম তার পিতার নামের মত জাকারিয়া রাখতে চাইল, 60কিন্তু তার মা বললেন, “না, এর নাম ইয়াহিয়া রাখা হবে।”
61তারা এলিজাবেতকে বলল, “আপনার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই।”
62তারা ইশারা করে ছেলেটির পিতার কাছ থেকে জানতে চাইল তিনি কি নাম দিতে চান। 63জাকারিয়া লিখবার জিনিস চেয়ে নিয়ে লিখলেন, “ওর নাম ইয়াহিয়া।”
এতে তারা সবাই অবাক হল, 64আর তখনই জাকারিয়ার মুখ ও জিভ্‌ খুলে গেল এবং তিনি কথা বলতে ও আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতে লাগলেন। 65এ দেখে প্রতিবেশীরা সবাই ভয় পেল, আর এহুদিয়ার সমস্ত পাহাড়ী এলাকার লোকেরা এই সব বিষয়ে বলাবলি করতে লাগল। 66যারা এই সব কথা শুনল তারা প্রত্যেকেই মনে মনে তা ভাবতে লাগল আর বলল, “বড় হয়ে এই ছেলেটি তবে কি হবে!” তারা এই কথা বলল, কারণ মাবুদের শক্তি এই ছেলেটির উপর দেখা গিয়েছিল।
হযরত জাকারিয়ার মুখে আল্লাহ্‌র প্রশংসা
67পরে ছেলেটির পিতা জাকারিয়া পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে নবী হিসাবে এই কথা বলতে লাগলেন,
68“ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌র প্রশংসা হোক,
কারণ তিনি তাঁর নিজের বান্দাদের দিকে
মনোযোগ দিয়েছেন আর তাদের মুক্ত করেছেন।
69তিনি আমাদের জন্য
তাঁর গোলাম দাউদের বংশ থেকে
একজন শক্তিশালী নাজাতদাতা তুলেছেন।
70এই কথা তাঁর পবিত্র নবীদের মুখ দিয়ে
তিনি অনেক দিন আগেই বলেছিলেন।
71তিনি শত্রুদের হাত থেকে
আর যারা ঘৃণা করে তাদের সকলের হাত থেকে
আমাদের রক্ষা করেছেন।
72তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের মমতা করবার জন্য
আর তাঁর পবিত্র ব্যবস্থা, অর্থাৎ তাঁর কসম
পূর্ণ করবার জন্য আমাদের রক্ষা করেছেন।
73-75সেই কসম তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ
ইব্রাহিমের কাছে খেয়েছিলেন।
তিনি শত্রুদের হাত থেকে
আমাদের উদ্ধার করেছেন
যেন যতদিন বেঁচে থাকি
পবিত্র ও সৎভাবে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে
নির্ভয়ে তাঁর এবাদত করতে পারি।
76সন্তান আমার,
তোমাকে আল্লাহ্‌তা’লার নবী বলা হবে,
কারণ তুমি তাঁর পথ ঠিক করবার জন্য
তাঁর আগে আগে চলবে।
77-78তুমি তাঁর বান্দাদের জানাবে,
কিভাবে আমাদের আল্লাহ্‌র মমতার দরুন
গুনাহের মাফ পেয়ে
নাজাত পাওয়া যায়।
তাঁর মমতায় বেহেশত থেকে এক উঠন্ত সূর্য
আমাদের উপর নেমে আসবেন,
79যাতে অন্ধকারে ও মৃত্যুর ছায়ায় যারা বসে আছে
তাদের নূর দিতে পারেন,
আর শান্তির পথে আমাদের চালাতে পারেন।”
80পরে ইয়াহিয়া বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং দিলে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন। বনি-ইসরাইলদের সামনে খোলাখুলিভাবে উপস্থিতির আগ পর্যন্ত তিনি মরুভূমিতে ছিলেন।

মার্ক: ৬

নিজের গ্রামে হযরত ঈসা মসীহের অসম্মান
 
 
1এর পর ঈসা সেই জায়গা ছেড়ে নিজের গ্রামে গেলেন, 2আর তাঁর সাহাবীরাও তাঁর সংগে গেলেন। বিশ্রামবারে তিনি মজলিস-খানায় গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন। অনেক লোক তাঁর কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, “এই লোক কোথা থেকে এই সব পেল? এই যে জ্ঞান তাকে দেওয়া হয়েছে, এ-ই বা কি? আবার সে অলৌকিক চিহ্ন-কাজও করছে। 3এ কি সেই ছুতার মিস্ত্রি নয়? এ কি মরিয়মের ছেলে নয়? ইয়াকুব, ইউসুফ, এহুদা ও শিমোনের ভাই নয়? তার বোনেরা কি এখানে আমাদের মধ্যে নেই?” এইভাবে ঈসাকে নিয়ে লোকদের মনে বাধা আসতে লাগল।
4তখন ঈসা তাদের বললেন, “নিজের গ্রাম, নিজের আত্মীয়-স্বজন ও নিজের বাড়ী ছাড়া আর সব জায়গাতেই নবীরা সম্মান পান।” 5তারপর তিনি কয়েকজন অসুস্থ লোকের উপর হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন, কিন্তু সেখানে আর কোন অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করা সম্ভব হল না। 6লোকেরা তাঁর উপর ঈমান আনল না দেখে তিনি খুব আশ্চর্য হলেন।
সাহাবীদের তবলিগ-যাত্রা
এর পরে ঈসা গ্রামে গ্রামে গিয়ে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। 7পরে তিনি তাঁর সেই বারোজন সাহাবীকে নিজের কাছে ডাকলেন এবং তবলিগ করবার জন্য দু’জন দু’জন করে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি ভূতদের উপরে তাঁদের ক্ষমতা দিলেন। 8যাত্রাপথের জন্য একটা লাঠি ছাড়া আর কিছুই তিনি সাহাবীদের নিতে দিলেন না। রুটি, থলি, কোমর-বাঁধনিতে পয়সা পর্যন্ত নিতে তিনি তাঁদের নিষেধ করলেন। 9তিনি তাঁদের জুতা পরতে বললেন বটে, কিন্তু একটার বেশী কোর্তা পরতে নিষেধ করলেন। 10তিনি তাঁদের আরও বললেন, “তোমরা যে বাড়ীতে ঢুকবে সেই গ্রাম ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত সেই বাড়ীতেই থেকো। 11কোন জায়গার লোকেরা যদি তোমাদের গ্রহণ না করে কিংবা তোমাদের কথা না শোনে, তবে সেই জায়গা ছেড়ে চলে যাবার সময়ে তোমাদের পায়ের ধুলা ঝেড়ে ফেলো যেন সেটাই তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হয়।”
12তখন সাহাবীরা গিয়ে তবলিগ করতে লাগলেন যেন লোকেরা তওবা করে। 13তাঁরা অনেক ভূত ছাড়ালেন এবং অনেক অসুস্থ লোকের মাথায় তেল দিয়ে তাদের সুস্থ করলেন।
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর শাহাদাত বরণ
14ঈসার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল বলে বাদশাহ্‌ হেরোদ ঈসার কথা শুনতে পেয়েছিলেন। কোন কোন লোক বলছিল, “উনিই সেই তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়া। তিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছেন বলে এই সব অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করছেন।”
15কেউ কেউ বলছিল, “উনি ইলিয়াস নবী”; আবার কেউ কেউ বলছিল, “অনেক দিন আগেকার নবীদের মত উনিও একজন নবী।”
16এই সব কথা শুনে হেরোদ বললেন, “উনি ইয়াহিয়া, যাঁর মাথা কেটে ফেলবার হুকুম আমি দিয়েছিলাম। আবার উনি বেঁচে উঠেছেন।”
17-18এই ঘটনার আগে হেরোদ লোক পাঠিয়ে ইয়াহিয়াকে ধরেছিলেন এবং তাঁকে বেঁধে জেলখানায় রেখেছিলেন। হেরোদ তাঁর ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্যই এটা করেছিলেন। হেরোদ হেরোদিয়াকে বিয়ে করেছিলেন বলে ইয়াহিয়া বারবার হেরোদকে বলতেন, “আপনার ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করা আপনার উচিত হয় নি।” 19এইজন্য ইয়াহিয়ার উপর হেরোদিয়ার খুব রাগ ছিল। সে ইয়াহিয়াকে হত্যা করতে চেয়েছিল, 20কিন্তু হেরোদ ইয়াহিয়াকে ভয় করতেন বলে সে তা করতে পারছিল না। ইয়াহিয়া যে একজন আল্লাহ্‌ভক্ত ও পবিত্র লোক হেরোদ তা জানতেন, তাই তিনি ইয়াহিয়াকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতেন। ইয়াহিয়ার কথা শুনবার সময় মনে খুব অস্বস্তি বোধ করলেও হেরোদ তাঁর কথা শুনতে ভালবাসতেন।
21শেষে হেরোদিয়া একটা সুযোগ পেল। হেরোদ নিজের জন্মদিনে তাঁর বড় বড় রাজকর্মচারী, সেনাপতি ও গালীল প্রদেশের প্রধান লোকদের জন্য একটা মেজবানী দিলেন। 22হেরোদিয়ার মেয়ে সেই মেজবানীসভায় নাচ দেখিয়ে হেরোদ ও ভোজে দাওয়াতী লোকদের সন্তুষ্ট করল।
তখন বাদশাহ্‌ মেয়েটিকে বললেন, “তুমি যা চাও আমি তোমাকে তা-ই দেব।” 23হেরোদ মেয়েটির কাছে কসম খেয়ে বললেন, “তুমি যা চাও আমি তা-ই তোমাকে দেব। এমন কি, আমার রাজ্যের অর্ধেক পর্যন্তও দেব।”
24মেয়েটি গিয়ে তার মাকে বলল, “আমি কি চাইব?”
তার মা বলল, “তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়ার মাথা।”
25মেয়েটি তখনই গিয়ে বাদশাহ্‌কে বলল, “একটা থালায় করে আমি এখনই তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়ার মাথাটা চাই।”
26এই কথা শুনে বাদশাহ্‌ হেরোদ খুব দুঃখিত হলেন, কিন্তু ভোজে দাওয়াতী লোকদের সামনে কসম খেয়েছিলেন বলে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দিতে চাইলেন না। 27-28তিনি তখনই ইয়াহিয়ার মাথা কেটে আনবার জন্য একজন জল্লাদকে হুকুম দিলেন। সেই জল্লাদ জেলখানায় গিয়ে ইয়াহিয়ার মাথা কেটে একটা থালায় করে তা নিয়ে আসল। বাদশাহ্‌ সেটা মেয়েটিকে দিলে পর সে তা নিয়ে গিয়ে তার মাকে দিল। 29এই খবর পেয়ে ইয়াহিয়ার সাহাবীরা এসে তাঁর লাশটা নিয়ে গিয়ে দাফন করলেন।
পাঁচ হাজার লোককে খাওয়ানো
30ঈসা যে বারোজন সাহাবীকে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা ফিরে আসলেন এবং যা যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন সবই তাঁকে জানালেন। 31সেই সময় অনেক লোক সেখানে যাওয়া-আসা করছিল বলে সাহাবীরা কিছু খাওয়ার সুযোগও পেলেন না। সেইজন্য ঈসা তাঁদের বললেন, “তোমরা আমার সংগে কোন একটা নির্জন জায়গায় এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম কর।”
32তাঁরা নৌকায় করে একটা নির্জন জায়গায় গেলেন। 33তাঁদের যেতে দেখে অনেকেই কিন্তু তাঁদের চিনতে পারল এবং আশেপাশের গ্রাম থেকে দৌড়ে গিয়ে তাঁদের আগেই সেখানে উপস্থিত হল। 34ঈসা নৌকা থেকে নেমে অনেক লোকের ভিড় দেখতে পেলেন। এই লোকদের জন্য ঈসার খুব মমতা হল কারণ এদের দশা রাখালহীন ভেড়ার মত ছিল। ঈসা তাদের অনেক বিষয় শিক্ষা দিতে লাগলেন।
35যখন দিন শেষ হয়ে আসল তখন সাহাবীরা এসে ঈসাকে বললেন, “জায়গাটা নির্জন, বেলাও প্রায় ডুবে গেছে। 36লোকদের বিদায় করে দিন যেন তারা আশেপাশের পাড়ায় ও গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য কিছু খাবার কিনতে পারে।”
37ঈসা বললেন, “তোমরাই ওদের খেতে দাও।”
সাহাবীরা তাঁকে বললেন, “আমরা গিয়ে দু’শো দীনারের রুটি কিনে এনে কি তাদের খেতে দেব?”
38ঈসা বললেন, “তোমাদের কাছে কয়টা রুটি আছে গিয়ে দেখ।”
সাহাবীরা দেখে এসে বললেন, “পাঁচটা রুটি আর দু’টা মাছ আছে।”
39তখন ঈসা সাহাবীদের হুকুম দিলেন যেন তাঁরা সবুজ ঘাসের উপর লোকদের বসিয়ে দেন। 40লোকেরা একশো একশো করে, পঞ্চাশ পঞ্চাশ জন করে সারি সারি বসে গেল। 41ঈসা সেই পাঁচটা রুটি আর দু’টা মাছ নিয়ে বেহেশতের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানালেন, আর লোকদের দেবার জন্য রুটি ভেংগে সাহাবীদের হাতে দিলেন। এইভাবে তিনি সবাইকে মাছও ভাগ করে দিলেন। 42তারা সকলে পেট ভরে খেল। 43তার পরে সাহাবীরা বাকী রুটি ও মাছের টুকরা তুলে নিয়ে বারোটা টুকরি ভরতি করলেন। 44যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই ছিল পাঁচ হাজার।
পানির উপর হাঁটা
45ঈসা এর পরেই তাঁর সাহাবীদের তাগাদা দিলেন যেন তাঁরা নৌকায় উঠে তাঁর আগে সাগরের অন্য পারে বৈৎসৈদা গ্রামে যান, আর এদিকে তিনি লোকদের বিদায় করতে লাগলেন। 46লোকদের বিদায় দিয়ে তিনি মুনাজাত করবার জন্য পাহাড়ে উঠে গেলেন। 47যখন রাত হল তখন সাহাবীদের নৌকাটা সাগরের মাঝখানে ছিল এবং ঈসা একা ডাংগায় ছিলেন। 48ঈসা দেখলেন সাহাবীরা খুব কষ্ট করে দাঁড় বাইছেন, কারণ বাতাস তাঁদের উল্টাদিকে ছিল। প্রায় শেষ রাতের দিকে ঈসা সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে সাহাবীদের কাছে আসলেন এবং তাঁদের ফেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। 49সাহাবীরা কিন্তু তাঁকে সাগরের উপর দিয়ে হাঁটতে দেখে ভূত মনে করে চিৎকার করে উঠলেন, 50কারণ তাঁকে দেখে সবাই ভয় পেয়েছিলেন।
ঈসা তখনই সাহাবীদের সংগে কথা বললেন। তিনি তাঁদের বললেন, “এ তো আমি; ভয় কোরো না, সাহস কর।”
51ঈসা সাহাবীদের নৌকায় উঠলে পর বাতাস থেমে গেল। এতে সাহাবীরা খুব অবাক হয়ে গেলেন, 52কারণ এর আগে রুটি খাওয়াবার ব্যাপারটা তাঁরা বুঝতে পারেন নি; তাঁদের মন কঠিন হয়েই রইল।
53ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা সাগর পার হয়ে গিনেষরৎ এলাকায় এসে নৌকা বাঁধলেন। 54-55তাঁরা নৌকা থেকে নামতেই লোকেরা ঈসাকে চিনতে পেরে ঐ এলাকার সব জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে লাগল। তারপর তিনি কোথায় আছেন তা জেনে নিয়ে তারা মাদুরের উপরে করে রোগীদের তাঁর কাছে বয়ে নিয়ে গেল।
56শহরে, গ্রামে বা পাড়ায়, যেখানেই তিনি যেতেন সেখানকার লোকেরা রোগীদের এনে বাজারের মধ্যে জড়ো করত। তারা ঈসাকে মিনতি করত যেন রোগীরা তাঁর চাদরের কিনারাটা কেবল ছুঁতে পারে, আর যারা তাঁকে ছুঁতো তারা সুস্থ হত।

মার্ক : ১

হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর তবলিগ
 
 
1ইব্‌নুল্লাহ্‌ ঈসা মসীহের বিষয়ে সুসংবাদের শুরু।
2নবী ইশাইয়ার কিতাবে আল্লাহ্‌র বলা এই কথা লেখা আছে:
দেখ, তোমার আগে
আমি আমার সংবাদদাতাকে পাঠাচ্ছি।
সে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।
3মরুভূমিতে একজনের কণ্ঠস্বর চিৎকার করে জানাচ্ছে,
তোমরা মাবুদের পথ ঠিক কর,
তাঁর রাস্তা সোজা কর।
4সেই কথামতই হযরত ইয়াহিয়া মরুভূমিতে গিয়ে লোকদের তরিকাবন্দী দিচ্ছিলেন এবং তবলিগ করছিলেন যেন লোকে গুনাহের মাফ পাবার জন্য তওবা করে ও তরিকাবন্দী নেয়। 5তাতে এহুদিয়া প্রদেশ ও জেরুজালেম শহরের সবাই বের হয়ে ইয়াহিয়ার কাছে আসতে লাগল। তারা যখন গুনাহ্‌ স্বীকার করল তখন ইয়াহিয়া জর্ডান নদীতে তাদের তরিকাবন্দী দিলেন।
6ইয়াহিয়া উটের লোমের কাপড় পরতেন এবং তাঁর কোমরে চামড়ার কোমর-বাঁধনি ছিল। তিনি পংগপাল আর বনমধু খেতেন। 7তিনি যা তবলিগ করতেন তা এই, “আমার পরে একজন আসছেন। তিনি আমার চেয়ে শক্তিশালী। উবুড় হয়ে তাঁর জুতার ফিতা খুলবার যোগ্যও আমি নই। 8আমি তোমাদের পানিতে তরিকাবন্দী দিচ্ছি কিন্তু তিনি পাক-রূহে তোমাদের তরিকাবন্দী দেবেন।”
হযরত ঈসা মসীহের তরিকাবন্দী ও পরীক্ষা
9সেই সময়ে ঈসা গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রাম থেকে আসলেন, আর ইয়াহিয়া তাঁকে জর্ডান নদীতে তরিকাবন্দী দিলেন। 10পানি থেকে উঠে আসবার সংগে সংগেই ঈসা দেখলেন, আসমান চিরে গেছে এবং পাক-রূহ্‌ কবুতরের মত হয়ে তাঁর উপর নেমে আসছেন। 11সেই সময় আসমান থেকে এই কথা শোনা গেল, “তুমিই আমার প্রিয় পুত্র, তোমার উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট।”
12এর পরেই ঈসাকে পাক-রূহের পরিচালনায় মরুভূমিতে যেতে হল। 13সেই মরুভূমিতে চল্লিশ দিন ধরে শয়তান ঈসাকে লোভ দেখিয়ে গুনাহে ফেলবার চেষ্টা করতে লাগল। সেখানে অনেক বুনো জন্তু ছিল, আর ফেরেশতারা ঈসার সেবা করতেন।
সাহাবী গ্রহণ
14ইয়াহিয়া জেলখানায় বন্দী হবার পরে ঈসা গালীল প্রদেশে গেলেন। সেখানে তিনি এই কথা বলে আল্লাহ্‌র দেওয়া সুসংবাদ তবলিগ করতে লাগলেন, 15“সময় হয়েছে, আল্লাহ্‌র রাজ্য কাছে এসে গেছে। আপনারা তওবা করুন এবং এই সুসংবাদের উপর ঈমান আনুন।”
16একদিন ঈসা গালীল সাগরের পার দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি শিমোন ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়কে সাগরে জাল ফেলতে দেখলেন। সেই দু’জন ছিলেন জেলে। 17ঈসা তাঁদের বললেন, “আমার সংগে চল। আমি তোমাদের মানুষ-ধরা জেলে করব।” 18তখনই তাঁরা জাল ফেলে রেখে ঈসার সংগে গেলেন।
19সেখান থেকে কিছু দূরে গেলে পর তিনি সিবদিয়ের দুই ছেলে ইয়াকুব ও ইউহোন্নাকে দেখতে পেলেন। তাঁরা তাঁদের নৌকায় বসে জাল ঠিক করছিলেন। 20ঈসা তাঁদের দেখামাত্র ডাক দিলেন, আর তাঁরা তাঁদের বাবা সিবদিয়কে মজুরদের সংগে নৌকায় রেখে ঈসার সংগে গেলেন।
ভূতে পাওয়া লোকটি
21ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা কফরনাহূম শহরে গেলেন। পরে বিশ্রামবারে ঈসা মজলিস-খানায় গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন। 22লোকেরা তাঁর শিক্ষায় আশ্চর্য হয়ে গেল, কারণ তিনি আলেমদের মত শিক্ষা দিচ্ছিলেন না বরং যাঁর অধিকার আছে সেই রকম লোকের মতই শিক্ষা দিচ্ছিলেন।
23সেই সময় ভূতে পাওয়া একজন লোক সেই মজলিস-খানার মধ্যে ছিল। 24সে চিৎকার করে বলল, “ওহে নাসরতের ঈসা, আমাদের সংগে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের সর্বনাশ করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে; আপনিই তো আল্লাহ্‌র সেই পবিত্রজন।”
25ঈসা তখন সেই ভূতকে ধমক দিয়ে বললেন, “চুপ কর, ওর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও।”
26সেই ভূত তখন লোকটাকে মুচ্‌ড়ে ধরল এবং জোরে চিৎকার করে তার মধ্য থেকে বের হয়ে গেল। 27এই ঘটনা দেখে লোকেরা এমন আশ্চর্য হল যে, তারা নিজেদের মধ্যে বলতে লাগল, “এই সব কি ব্যাপার? এই অধিকার-ভরা নতুন শিক্ষাই বা কি? এমন কি, ভূতদেরও তিনি হুকুম দেন আর তারা তাঁর কথা শুনতে বাধ্য হয়।”
28এতে গালীল প্রদেশের সব জায়গায় ঈসার কথা খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ল।
অনেকে সুস্থ হল
29পরে তাঁরা মজলিস-খানা থেকে বের হয়ে শিমোন ও আন্দ্রিয়ের বাড়ীতে গেলেন। ইয়াকুব এবং ইউহোন্নাও তাঁদের সংগে ছিলেন। 30শিমোনের শাশুড়ীর জ্বর হয়েছিল বলে তিনি শুয়ে ছিলেন। ঈসা আসামাত্রই তাঁর কথা তাঁকে বলা হল। 31তখন ঈসা তাঁর কাছে গিয়ে হাত ধরে তাঁকে তুললেন। তাতে তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল এবং তিনি তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে লাগলেন।
32সেই দিন সূর্য ডুবে গেলে পর সন্ধ্যাবেলা লোকেরা সব রোগীদের ও ভূতে পাওয়া লোকদের ঈসার কাছে আনল। 33শহরের সব লোক তখন সেই বাড়ীর দরজার কাছে এসে জমায়েত হল। 34ঈসা অনেক রকমের রোগীকে সুস্থ করলেন এবং অনেক ভূত ছাড়ালেন। তিনি ভূতদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ সেই ভূতেরা জানত তিনি কে।
গালীল প্রদেশে তবলিগ
35পরদিন খুব ভোরে অন্ধকার থাকতেই ঈসা উঠলেন এবং ঘর ছেড়ে একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে মুনাজাত করতে লাগলেন। 36শিমোন ও তাঁর সংগীরা ঈসাকে তালাশ করছিলেন। 37পরে তাঁকে তালাশ করে পেয়ে বললেন, “সবাই আপনাকে তালাশ করছে।”
38ঈসা তাঁদের বললেন, “চল, আমরা কাছের গ্রামগুলোতে যাই যেন আমি সেখানেও তবলিগ করতে পারি, কারণ সেইজন্যই তো আমি এসেছি।” 39এইভাবে ঈসা গালীলের সব জায়গায় গিয়ে ইহুদীদের মজলিস-খানাগুলোতে তবলিগ করলেন এবং ভূত দূর করলেন।
একজন চর্মরোগী সুস্থ হল
40পরে একজন চর্মরোগী ঈসার কাছে এসে তাঁর সামনে হাঁটু পেতে বলল, “আপনি ইচ্ছা করলেই আমাকে ভাল করতে পারেন।”
41লোকটির উপর ঈসার খুব মমতা হল। তিনি হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, “আমি তা-ই চাই, তুমি পাক-সাফ হও।” 42আর তখনই তার চর্মরোগ ভাল হয়ে গেল।
43ঈসা তখনই তাকে বিদায় করলেন, কিন্তু তার আগে তাকে কড়াকড়িভাবে বললেন, 44“দেখ, এই কথা কাউকে বোলো না। তুমি বরং ইমামের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও আর পাক-সাফ হবার জন্য মূসা যে কোরবানীর হুকুম দিয়েছেন তা কোরবানী দাও। এতে ইমামদের কাছে প্রমাণ হবে যে, তুমি ভাল হয়েছ।”
45সেই লোকটি কিন্তু বাইরে গিয়ে সব জায়গায় এই খবর ছড়াতে লাগল। তার ফলে ঈসা কোন গ্রামে আর খোলাখুলিভাবে যেতে পারলেন না। তাঁকে নির্জন জায়গায় থাকতে হল; তবুও লোকেরা সব জায়গা থেকে তাঁর কাছে আসতে লাগল।

মথি : ১৪

হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর মৃত্যু
 
 
1সেই সময়ে ঈসার বিষয় শুনে গালীল প্রদেশের শাসনকর্তা হেরোদ তাঁর কর্মচারীদের বললেন, 2“ইনি তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়া; মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছেন। সেইজন্যই উনি এই সব অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করছেন।”
3হেরোদ নিজের ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার দরুন ইয়াহিয়াকে বেঁধে নিয়ে গিয়ে জেলখানায় রেখেছিলেন, 4কারণ ইয়াহিয়া তাঁকে বলতেন, “হেরোদিয়াকে স্ত্রী হিসাবে রাখা আপনার উচিত নয়।” 5হেরোদ ইয়াহিয়াকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় করতেন কারণ লোকে ইয়াহিয়াকে নবী বলে মানত।
6হেরোদের জন্মদিনের উৎসবে হেরোদিয়ার মেয়ে উপস্থিত লোকদের সামনে নেচে হেরোদকে সন্তুষ্ট করল। 7সেইজন্য হেরোদ কসম খেয়ে বললেন সে যা চাইবে তা-ই তিনি তাকে দেবেন। 8মেয়েটি তার মায়ের কাছ থেকে পরামর্শ পেয়ে বলল, “থালায় করে তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়ার মাথাটা এখানে আমার কাছে এনে দিন।”
9এতে বাদশাহ্‌ হেরোদ দুঃখিত হলেন, কিন্তু যাঁরা তাঁর সংগে খেতে বসেছিলেন তাঁদের সামনে কসম খেয়েছিলেন বলে তিনি তা দিতে হুকুম করলেন। 10তিনি লোক পাঠিয়ে জেলখানার মধ্যেই ইয়াহিয়ার মাথা কাটালেন। 11পরে মাথাটি থালায় করে এনে মেয়েটিকে দেওয়া হলে পর সে তার মায়ের কাছে তা নিয়ে গেল। 12এর পর ইয়াহিয়ার সাহাবীরা এসে তাঁর লাশটা নিয়ে গিয়ে দাফন করলেন এবং সেই খবর ঈসাকে গিয়ে দিলেন।
পাঁচ হাজার লোককে খাওয়ানো
13ইয়াহিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে ঈসা একাই সেখান থেকে নৌকায় করে একটা নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। লোকেরা সেই কথা শুনে ভিন্ন ভিন্ন গ্রাম থেকে হাঁটা-পথে তাঁর পিছন ধরল। 14তিনি নৌকা থেকে নেমে লোকদের ভিড় দেখতে পেলেন আর মমতায় পূর্ণ হয়ে তাদের মধ্যে যারা অসুস্থ ছিল তাদের সুস্থ করলেন।
15দিনের শেষে সাহাবীরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “জায়গাটা নির্জন, বেলাও গেছে। লোকদের বিদায় করে দিন যেন তারা গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনতে পারে।”
16ঈসা তাঁদের বললেন, “ওদের যাবার দরকার নেই, তোমরাই ওদের খেতে দাও।”
17সাহাবীরা তাঁকে বললেন, “আমাদের এখানে পাঁচখানা রুটি আর দু’টা মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই।”
18-19তিনি বললেন, “ওগুলো আমার কাছে আন।” পরে তিনি লোকদের ঘাসের উপর বসতে হুকুম করলেন, আর সেই পাঁচখানা রুটি আর দু’টা মাছ নিয়ে আসমানের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানালেন। এর পরে তিনি রুটি ভেংগে সাহাবীদের হাতে দিলেন আর সাহাবীরা তা লোকদের দিলেন। তারা প্রত্যেকে পেট ভরে খেল। 20খাওয়ার পরে যে টুকরাগুলো পড়ে রইল সাহাবীরা তা তুলে নিলেন, আর তাতে বারোটা টুকরি পূর্ণ হল। 21যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে স্ত্রীলোক ও ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া কমবেশী পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল।
পানির উপর দিয়ে হাঁটা
22এর পরে ঈসা সাহাবীদের তাগাদা দিলেন যেন তাঁরা নৌকায় উঠে তাঁর আগে অন্য পারে যান, আর এদিকে তিনি লোকদের বিদায় করলেন। 23লোকদের বিদায় করে মুনাজাত করবার জন্য তিনি একা পাহাড়ে উঠে গেলেন। যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসল তখনও তিনি সেখানে একাই রইলেন। 24ততক্ষণে সাহাবীদের নৌকাখানা ডাংগা থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে পড়েছিল এবং বাতাস উল্টাদিকে থাকাতে ঢেউয়ে ভীষণভাবে দুলছিল। 25শেষ রাতে ঈসা সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে সাহাবীদের কাছে আসছিলেন। 26সাহাবীরা একজনকে সাগরের উপর হাঁটতে দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে বললেন, “ভূত, ভূত,” আর তার পরেই চিৎকার করে উঠলেন।
27ঈসা তখনই তাঁদের বললেন, “এ তো আমি; ভয় কোরো না, সাহস কর।”
28পিতর তাঁকে বললেন, “হুজুর, যদি আপনিই হন তবে পানির উপর দিয়ে আপনার কাছে যেতে আমাকে হুকুম দিন।”
29ঈসা বললেন, “এস।”
তখন পিতর নৌকা থেকে নেমে পানির উপর দিয়ে হেঁটে ঈসার কাছে চললেন। 30কিন্তু জোর বাতাস দেখে তিনি ভয় পেয়ে ডুবে যেতে লাগলেন এবং চিৎকার করে বললেন, “হুজুর, আমাকে বাঁচান।”
31ঈসা তখনই হাত বাড়িয়ে তাঁকে ধরলেন এবং বললেন, “অল্প ঈমানদার, কেন সন্দেহ করলে?”
32-33ঈসা আর পিতর নৌকায় উঠলে পর বাতাস থেমে গেল। যাঁরা নৌকার মধ্যে ছিলেন তাঁরা ঈসাকে সেজদা করে বললেন, “সত্যিই আপনি ইব্‌নুল্লাহ্‌।”
34পরে তাঁরা সাগর পার হয়ে গিনেষরৎ এলাকায় এসে নামলেন। 35সেখানকার লোকেরা ঈসাকে চিনতে পেরে এলাকার সব জায়গায় খবর পাঠাল। 36তাতে লোকেরা অসুস্থদের ঈসার কাছে আনল এবং তাঁকে অনুরোধ করল যেন সেই অসুস্থরা তাঁর চাদরের কিনারাটা কেবল ছুঁতে পারে; আর যত লোক তা ছুঁলো তারা সবাই সুস্থ হল।

মথি: ১১

হযরত ঈসা মসীহের কাছে হযরত ইয়াহিয়ার সাহাবীরা
 
1ঈসা তাঁর বারোজন সাহাবীকে হুকুম দেওয়া শেষ করলেন। তারপর তিনি গ্রামে গ্রামে শিক্ষা দেবার ও তবলিগ করবার জন্য সেখান থেকে চলে গেলেন।
2ইয়াহিয়া জেলখানায় থেকে যখন মসীহের কাজের কথা শুনলেন তখন তাঁর সাহাবীদের দিয়ে ঈসাকে জিজ্ঞাসা করে পাঠালেন, 3“যাঁর আসবার কথা আছে আপনি কি তিনি, না আমরা আর কারও জন্য অপেক্ষা করব?”
4জবাবে ঈসা তাদের বললেন, “তোমরা যা শুনছ এবং দেখছ তা গিয়ে ইয়াহিয়াকে বল। 5তাঁকে জানাও যে, অন্ধেরা দেখছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, চর্মরোগীরা পাক-সাফ হচ্ছে, বধির লোকেরা শুনছে, মৃতেরা বেঁচে উঠছে আর গরীব লোকদের কাছে সুসংবাদ তবলিগ করা হচ্ছে। 6আর ধন্য সে-ই যে আমাকে নিয়ে মনে কোন বাধা না পায়।”
হযরত ইয়াহিয়ার বিষয়ে হযরত ঈসা মসীহের কথা
7ইয়াহিয়ার সাহাবীরা চলে যাচ্ছে, এমন সময় ঈসা লোকদের কাছে ইয়াহিয়ার বিষয়ে বলতে শুরু করলেন, “আপনারা মরুভূমিতে কি দেখতে গিয়েছিলেন? বাতাসে দোলা নল-খাগড়া? 8তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলেন? সুন্দর কাপড় পরা কোন লোককে দেখতে কি? আসলে যারা সুন্দর কাপড় পরে তারা বাদশাহ্‌র বাড়ীতে থাকে। 9তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলেন? কোন নবীকে কি? জ্বী, আমি আপনাদের বলছি, তিনি নবীর চেয়েও বড়। 10ইয়াহিয়াই সেই লোক যাঁর বিষয়ে কিতাবে লেখা আছে:
দেখ, আমি তোমার আগে আমার সংবাদদাতাকে পাঠাচ্ছি।
সে তোমার আগে গিয়ে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।
11আমি আপনাদের সত্যিই বলছি, মানুষের মধ্যে তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়ার চেয়ে বড় আর কেউ নেই। কিন্তু বেহেশতী রাজ্যের মধ্যে যে সকলের চেয়ে ছোট সে-ও ইয়াহিয়ার চেয়ে মহান। 12ইয়াহিয়ার সময় থেকে এখন পর্যন্ত বেহেশতী রাজ্য খুব জোরের সংগে এগিয়ে আসছে, আর যারা শক্তিশালী তারা তা আঁকড়ে ধরছে। 13ইয়াহিয়ার সময় পর্যন্ত নবীদের সমস্ত কিতাব, এমন কি, তৌরাত কিতাবও ভবিষ্যতের কথা বলেছে। 14যদি আপনারা এই কথা বিশ্বাস করতে রাজী থাকেন তবে শুনুন্ত যাঁর আসবার কথা ছিল এই ইয়াহিয়াই সেই নবী ইলিয়াস। 15যার শুনবার কান আছে সে শুনুক।”
16“এই কালের লোকদের আমি কাদের সংগে তুলনা করব? এরা এমন ছেলেমেয়েদের মত যারা বাজারে বসে অন্য ছেলেমেয়েদের ডেকে বলে, 17‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশী বাজালাম, তোমরা নাচলে না; বিলাপের গান গাইলাম, তোমরা বুক চাপড়ালে না।’ 18ইয়াহিয়া এসে খাওয়া-দাওয়া করলেন না বলে লোকে বলছে, ‘তাকে ভূতে পেয়েছে।’ 19আর ইব্‌ন্তেআদম এসে খাওয়া-দাওয়া করলেন বলে লোকে বলছে, ‘ঐ দেখ, একজন পেটুক ও মদখোর, খাজনা-আদায়কারী ও খারাপ লোকদের বন্ধু।’ কিন্তু জ্ঞান যে খাঁটি তার প্রমাণ তার কাজের মধ্যেই রয়েছে।”
বেঈমান গ্রাম ও শহরগুলো
20ঈসা যে সব গ্রামে ও শহরে বেশীর ভাগ অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করেছিলেন সেই সব জায়গার লোকেরা তওবা করে নি। এইজন্য সেই জায়গাগুলোকে তিনি ধিক্কার দিয়ে বলতে লাগলেন, 21“ঘৃণ্য কোরাসীন, ঘৃণ্য বৈৎসৈদা! তোমাদের মধ্যে যে সব অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করা হয়েছে সেগুলো যদি টায়ার ও সিডন শহরে করা হত তবে অনেক দিন আগেই তারা চট পরে ছাই মেখে তওবা করত। 22আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, রোজ হাশরে টায়ার ও সিডনের অবস্থা বরং তোমাদের চেয়ে অনেকখানি সহ্য করবার মত হবে। 23আর তুমি কফরনাহূম! তুমি নাকি বেহেশত পর্যন্ত উঁচুতে উঠবে? কখনও না, তোমাকে নীচে কবরে ফেলে দেওয়া হবে। যে সব অলৌকিক চিহ্ন-কাজ তোমার মধ্যে করা হয়েছে তা যদি সাদুম শহরে করা হত তবে সাদুম আজও টিকে থাকত। 24আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, রোজ হাশরে সাদুমের অবস্থা বরং তোমাদের চেয়ে অনেকখানি সহ্য করবার মত হবে।”
হযরত ঈসা মসীহের আহ্বান
25তারপর ঈসা বললেন, “হে পিতা, তুমি বেহেশত ও দুনিয়ার মালিক। আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ তুমি এই সব বিষয় জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানদের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছ, কিন্তু শিশুর মত লোকদের কাছে প্রকাশ করেছ। 26জ্বী পিতা, তোমার ইচ্ছামতই এটা হয়েছে।
27“আমার পিতা সব কিছুই আমার হাতে দিয়েছেন। পিতা ছাড়া পুত্রকে কেউ জানে না এবং পুত্র ছাড়া পিতাকে কেউ জানে না, আর পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন সে-ই তাঁকে জানে।
28“তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়া"ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এস; আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব। 29আমার জোয়াল তোমাদের উপর তুলে নাও ও আমার কাছ থেকে শেখো, কারণ আমার স্বভাব নরম ও নম্র। 30এতে তোমরা দিলে বিশ্রাম পাবে, কারণ আমার জোয়াল বয়ে নেওয়া সহজ ও আমার বোঝা হালকা।”

মথি ৩

হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর তবলিগ
 
 
1পরে তরিকাবন্দীদাতা ইয়াহিয়া এহুদিয়ার মরুভূমিতে এসে এই বলে তবলিগ করতে লাগলেন, 2“তওবা কর, কারণ বেহেশতী রাজ্য কাছে এসে গেছে।”
3এই ইয়াহিয়ার বিষয়েই নবী ইশাইয়া বলেছিলেন,
মরুভূমিতে একজনের কণ্ঠস্বর চিৎকার করে জানাচ্ছে,
“তোমরা মাবুদের পথ ঠিক কর;
তাঁর রাস্তা সোজা কর।”
4ইয়াহিয়া উটের লোমের কাপড় পরতেন এবং তাঁর কোমরে চামড়ার কোমর-বাঁধনি ছিল। তিনি পংগপাল ও বনমধু খেতেন। 5জেরুজালেম, সমস্ত এহুদিয়া এবং জর্ডান নদীর চারপাশের লোকেরা সেই সময় তাঁর কাছে আসতে লাগল। 6এই লোকেরা যখন নিজেদের গুনাহ্‌ স্বীকার করল তখন ইয়াহিয়া জর্ডান নদীতে তাদের তরিকাবন্দী দিলেন।
7পরে ইয়াহিয়া দেখলেন অনেক ফরীশী ও সদ্দূকী তরিকাবন্দী নেবার জন্য তাঁর কাছে আসছেন। তিনি তাঁদের বললেন, “সাপের বংশধরেরা! আল্লাহ্‌র যে গজব নেমে আসছে তা থেকে পালিয়ে যাবার এই বুদ্ধি তোমাদের কে দিল? 8ভাল, তোমরা যে তওবা করেছ তার উপযুক্ত ফল তোমাদের জীবনে দেখাও। 9তোমরা ইব্রাহিমের বংশের লোক, এটা নিজেদের মনে বলতে পারবার কথা চিন্তাও কোরো না। আমি তোমাদের বলছি, আল্লাহ্‌ এই পাথরগুলো থেকে ইব্রাহিমের বংশধর তৈরী করতে পারেন। 10গাছের গোড়াতে কুড়াল লাগানোই আছে। যে গাছে ভাল ফল ধরে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে। 11তওবা করেছ বলে আমি তোমাদের পানিতে তরিকাবন্দী দিচ্ছি, কিন্তু আমার পরে যিনি আসছেন তিনি আমার চেয়ে শক্তিশালী। আমি তাঁর জুতা বইবারও যোগ্য নই। তিনি পাক-রূহ্‌ ও আগুনে তোমাদের তরিকাবন্দী দেবেন। 12কুলা তাঁর হাতেই আছে এবং তাঁর ফসল মাড়াবার জায়গা তিনি ভাল করেই পরিষ্কার করবেন। তিনি তাঁর ফসল গোলাতে জমা করবেন, কিন্তু যে আগুন কখনও নেভে না সেই আগুনে তুষ পুড়িয়ে ফেলবেন।”
হযরত ঈসা মসীহের তরিকাবন্দী
13সেই সময় ঈসা তরিকাবন্দী নেবার জন্য গালীল থেকে জর্ডান নদীর ধারে ইয়াহিয়ার কাছে আসলেন। 14ইয়াহিয়া কিন্তু তাঁকে এই কথা বলে বাধা দিতে চেষ্টা করলেন, “আমারই বরং আপনার কাছে তরিকাবন্দী নেওয়া দরকার; আর আপনি কিনা আসছেন আমার কাছে!”
15তখন ঈসা তাঁকে বললেন, “কিন্তু এবার এই রকমই হোক, কারণ আল্লাহ্‌র ইচ্ছা এইভাবেই আমাদের পূর্ণ করা উচিত।” তখন ইয়াহিয়া রাজী হলেন।
16তরিকাবন্দী নেবার পর ঈসা পানি থেকে উঠে আসবার সংগে সংগেই তাঁর সামনে আসমান খুলে গেল। তিনি আল্লাহ্‌র রূহ্‌কে কবুতরের মত হয়ে তাঁর উপরে নেমে আসতে দেখলেন। 17তখন বেহেশত থেকে বলা হল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এঁর উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট।”

3 সুরা আলে ইমরান এর টিকা নং ২ :

(২-রাজাবলী, অধ্যায় ২২, শ্লোক ৮-১৩ দেখুন)











 Download app 1  (play store link bible )
 Download app 2  (play store link bible )


তাফহীমুল কুরআন আরবী ও বাংলা সার্চ । ডাউনলোড । 


Al Quran Search And Tafheemul Quran Maps

আল কুরআন  এবং তাফহীমুল কুরআন বাংলা ও আরবী সার্চ, মানচিত্রসমূহ, প্রতিটি শব্দের শব্দার্থ ও ১৭ জন ক্বারীর তিলাওয়াত (আরবী কীবোর্ড সহ)

( AL QURAN SEARCH AND MAPS APK FOR ANDROID, BUILT IN ARABIC KEYBOARD) 


আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। (আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন, ওয়া আলাল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাতি ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত) ।
.
তাফহীমুল কুরআনের (Read, Search, Explore, Copy, Share, Save) এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপটি ডেভেলপ করা শেষ হল।


তাফহীমুল কুরআন এর ব্যবহার বিধির ভিডিও দেখুন। 


এ মাসে আলহামদুলিল্লাহ এ্যাপটির পুনরায় আপডেট দেওয়া হলো। 


আপডেট : মে/2019 :

এই এ্যাপে তিলাওয়াত শুনার জন্য ২ টি পদ্ধতি রাখা হয়েছে : 


১) যদি দেখে দেখে পড়তে ও শুনতে চান তবে কুরান অধ্যয়ন বিভাগ থেকে শুনবেন। প্রতিটি আয়াত তিলাওয়াত হওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট আয়াতটি স্ক্রীণের সামনে এসে যাবে ।

২) অথবা, শুধু তিলাওয়াত শুনতে চাইলে হোম স্ক্রীনের একদম নিচের দিকে দেখুন তিলাওয়াত বিভাগ, সেখান থেকে তিলাওয়াত শুনুন, তাহলে এ্যাপ মিনিমাইজ করে রাখলে অথবা স্ক্রীন অফ করে রাখলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে তিলাওয়াত চলতে থাকবে,  ইনশা আল্লাহ।
 


এই আপডেট এ শব্দার্থ থেকে আরবী সার্চ,  এই অপশনটি নতুন যোগ করা হয়েছে। এছাড়া নাইটমোড যোগ করা হয়েছে। এছাড়াও তাফহীমুল কুরানের মূল আকর্ষণ, বিভিন্ন টিকা সমুহে বর্ণিত অন্যান্য টিকায়ও দেখুন, এমন রেফারেন্স এ ক্লিক করলে সংশ্লিষ্ট টিকাটি বা আয়তটি পাওয়া যাবে, এই অপশন তো থাকছেই। মুহতারাম  Apu Ahmed ভাই সহ অনেকেই এই জিনিসটি চেয়েছিলেন।

এক ভাই জানতে চেয়েছিলেন, সার্চ কিভাবে করবো?

উত্তর হলো, আরবীতে সার্চ করার জন্য এই এ্যাপে তিনটি অপশন আছে, (হয়তো কেউ আরবী লিখতে পারে অথবা পারেনা)ঃ

১) আলকুরান সার্চ> আরবী সার্চ,

এখানে আরবী কীবোর্ড আছে, আরবী লিখে সার্চ করতে পারবেন। এছাড়াও জেরজবর সহ অথবা জের জবর ছাড়া কুরানের যে  কোন আয়াতংশ এখানে কপি পেস্ট করেও সার্চ করতে পারবেন।

২) সার্চ সাজেশন> আল কুরআন ওয়ার্ড

এখানে পুরো কুরআন শরীফের ওয়ার্ড গুলো আছে, যে কোন ওয়ার্ডের উপর ক্লিক করে 'আল কুরআনে খুজুন' বাটনে ক্লিক করুন। শব্দটির আলকুরানের সার্চ রেজাল্ট পাবেন।

৩) কুরআন অধ্যয়ন> আরবী অধ্যয়ন

এই বিভাগের মূল পেইজে   আরবী আয়াতের উপর ক্লিক করলে সে আয়াতের প্রতিটি শব্দের শব্দার্থ পাবেন, শব্দার্থের যে কোন আরবী শব্দে ক্লিক করলে সেই শব্দটির আলকুরানে সার্চ রেজাল্ট পাবেন।ইনশায়াল্লাহ। এতে কুরান স্টাডির এক দিগন্ত উন্মোচিত হবে ইনশআল্লাহ। কারন আপনি যে আয়তটি পড়ছেন সেই আয়াতের শব্দগুলো কুরানের আর কোন কোন আয়াতে ব্যবহৃত হয়েছে এবং সেই আয়াত সমুহে সে সম্পর্কে কি কি বলা হয়েছে, পুরো বিষয়টা কুরান থেকে বুঝে ফেলতে পারবেন ইনশআল্লাহ। শুধু তাই নয় প্রয়োজনে শব্দটি কীবোর্ড থেকে এডিট করেও সার্চ করতে পারবেন, সে সুযোগও রাখা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

এছাড়াও অনুবাদ, তাফসীর এবং ভুমিকা সমুহ বাংলা শব্দ দিয়ে সার্চ করতে পারবেন। নাইট মোড থাকছে।   যে আয়াতের তাফসীর তা টিকা নাম্বারে ক্লিক করলে একই সাথে আরবী, বাংলা এবং তাফসীর গুলো পাওয়া যাবে। Aslam Sayedee ভাই সহ অনেকেই এরকমটি চেয়েছিলেন।  যে কোন আয়াত বা তাফসীর দিয়ে নিজস্ব নোট তৈরী করার সুবিধা ইত্যাদি।

MK Rahman ভাইসহ আরো অনেক ভাই  ইনবক্সে এ্যাপটি সুন্দর করার জন্য যথেষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া যার প্রমোট করে এ্যপটির প্রচার প্রাসারে সহযোগিতা করবেন/করেছেন, আল্লাহ তাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন।

পরিশেষে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, এই এ্যাপটি যেন কুরআন স্টাডি, এবং কুরান বুঝা, হৃদয়ংগম করা, কুরান গবেষণা এবং কুরান অনুযায়ী পথ চলার জন্য এক উল্লেখযোগ্য টুলস/হাতিয়ার হিসেবে মহান আল্লাহ কবুল করে নেন। আমীন।

রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস সামীউল আলীম। ওয়াতুব আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত তাওয়্যাবুর রাহীম।

Tag: Tafheem, Tafhim, Tafheemul, Tafhimul, Quran, Bangla, Tafsir, Tafseer, তাফহীম, তাফহিম, তাফহিমুল, তাফহীমুল, কুরআন, কোরআন, বাংলা, তাফসীর, তাফসির, ইসলামী প্রশ্ন, ইসলামী জীবন জিজ্ঞাসা, ইসলামী প্রশ্নোত্তর, বাংলা কুরআন, শব্দার্থে কুরআন, আল কুরআনের শব্দার্থ, word meaning of Alquran, Arabic to bangla word meaning. 


.

এই এ্যাপে যে মূল ফিচার গুলো রয়েছে :
.
১। এক পৃষ্ঠায় তাফহীমুল কুরআনের পুর্ণাঙ্গ তাফসীর  ২। আল কুরআন সার্চ (আরবী), তাফসীর সার্চ (বাংলা/আরবী), ৩। ১১৪ টি সুরার ভূমিকা এক পৃষ্ঠায় ৪। মানচিত্র ৫। সার্চ সাজেশনে পুরো কুরআন শরীফের প্রতিটি শব্দ । ৬। যেখানে পড়ছিলেন ৭। যে কোন টিকা/আয়াত। ৮। কপি , শেয়ার ৯। সেভ - যে কোন সার্চ কী-ওয়ার্ড সেভ করার মাধ্যমে নিজস্ব বিষয় অভিধান তৈরী। ১০। আরবী ও বাংলা ফন্ট চেঞ্জ এবং ফন্ট ছোট বড় করার অপশন। ১১। বিল্ট ইন এ্যারাবিক কীবোর্ড । ১২। ফুল স্ক্রীণ  রীডিং।


.

সংক্ষিপ্ত আকারে ফিচারগুলো সম্পর্কে কিছু তুলে ধরা হলো:
.
১। পুরো ১৯ খন্ড তাফহীম একটা ভিউতে ( মানে এক পৃষ্ঠায়) দেওয়া হয়েছে। মজাটাই আলাদা। ফার্স্ট স্ক্রল এনাবল করা আছে, যার ফলে অতি দ্রুত স্ক্রল বার ধরেই মুহুর্তের মধ্যে যে কোন সুরার যে কোন আয়াতে বা টিকায় যেতে পারবেন। এছাড়াও সাথেই স্পিনার রয়েছে। প্রথম স্পিনার থেকে সুরার নম্বর এবং দ্বিতীয় স্পিনার থেকে আয়াত নম্বর সিলেক্ট করে ‘Go' বাটনে ক্লিক করলেও যে কোন সুরার যে কোন আয়াত/আরবী/অনুবাদ/তাফসীর স্ক্রীণে উপস্থিত হবে।


২। সার্চ : সার্চ করার জন্য আরবী/অনুবাদ/তাফসীর/ভূমিকা - প্রতিটি বিভাগের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা এ্যাকটিভিটি।

.

.



৩। ভূমিকা: এক পৃষ্ঠায় ১১৪ টি সুরার ভূমিকা পড়ার জন্য আলাদা এ্যাকটিভিটি রয়েছে। যেখানে স্পিনার থেকে সুরার নাম সিলেক্ট করে যে কোন সুরার ভূমিকা মুহুর্তেই পেয়ে যাবেন।

.

.


.




৪। মানচিত্র: কুরআনে বর্ণিত ঘটনাবলী কোন গাল গল্প নয়, বরং এ পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া বাস্তব ইসলামী আন্দোলন এবং আমাদের বিজয় গাঁথা। সুরায় বর্ণিত ঘটনাবলীর সাথে সংশ্লিষ্ট মানচিত্র গুলো আলাদা এ্যাকটিভিটিতে যোগ করা হয়েছে। প্রতিটি মানচিত্রের জন্য আলাদা বাটন, অটোজুম, টুফিঙ্গার্স জুম, সোয়া্ইপ টু চেঞ্জ ভিউ, এবং আলাদা বর্ণনা বাটন যোগ করা হয়েছে, যেখানে ক্লিক করলে সংশ্লিষ্ট মানচিত্রটি সম্পর্কে তাফসীরের যে স্থানে (টিকা/ভূমিকায়) বর্ণনা রয়েছে সে স্থানটি ওপেন হবে, এবং ঠিক যে স্থানে এ সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে তার প্রথম কয়েকটি শব্দ হাইলাইট হয়ে থাকবে।

.

.


.


.




৫। সার্চ সাজেশন : সার্চ সাজেশন হিসেবে রয়েছে আল কুরআনের প্রতিটি শব্দ সহ বাংলা ইংরেজী মিলিয়ে প্রায় ৪০০০০ শব্দের (ক) BENGALI:  বিল্ট ইন ড্রপডাউন (খ) QURAN WORDS : বিল্টইন লিষ্ট এ্যাকটিভিটি। যে কোন শব্দ লংপ্রেস করে সিলেক্ট করার পর আরবী, অনুবাদ, তাফসীর, ভূমিকা - যে কোন বাটনে প্রেস করে সংশ্লিষ্ট এ্যাকটিভিটিতে সার্চ করতে পারবেন। সার্চ সাজেশন অথবা Reading Activitiy গুলোর “Hints” বাটনে ক্লিক করেও সাজেশনে যেতে পারবেন।

.

.


.


.



.


.



৬। যেখানে পড়ছিলেন (Reading Position Save) : এ্যান্ড্রয়েডে তাফসীর পড়ার একটি অসুবিধা ছিল কোন পর্য ন্ত পড়া হয়েছে তা সেভ করে রাখার ব্যবস্থা ছিলনা। আলহামদুলিল্লাহ এই এ্যাপে সেই অসুবিধা দুর করা হয়েছে। ‘কুরআন অধ্যয়ন’ বিভাগে আরবী, অনুবাদ, তাফসীর, টিকা, ভূমিকা - প্রতিটি সেকশনের জন্যই Reading Position Save এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই যেখানেই আপনি পড়ুন না কেন পড়া শেষ করে ‘সেভ’ বাটনে ক্লিক করে বেরিয়ে আসুন। পরে আবার যখন পড়বেন “যেখানে পড়ছিলেন’ বাটনে ক্লিক করে অথবা ”লোড” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার পড়ার অবস্থানটি লোড হবে। এভাবে নিয়মিত পড়ার অবস্থান সেভ করে পড়তে থাকলে আপনি পুরো তাফসীরটি পড়া শেষ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।এছাড়াও প্রতিটি সেকশনের জন্যই আলাদা ‘সেভ’ ও ‘লোড’ বাটন রয়েছে। আরবী কতটুকু পড়েছেন, অনুবাদ কতটুকু পড়েছেন, তাফসীর বা ভূমিকা কোন পর্যন্ত পড়েছেন - প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই অবস্থান গুলো সেভ করে রাখতে পারবেন।

.


৭। যে কোন টিকা:: যেমন ধরুন সুরা আহক্বাফের ৩ নং আয়াতের তাফসীরে অন্যান্য সুরার প্রায় ১৩ টি টিকার রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আয়াত নম্বর উল্লেখ করা হয়নি। কারণ তাফহীমুল কুরআন হচ্ছে একটি ইনডেক্সিং তাফসীর। সংশ্লিষ্ট টিকাগুলোতে একই বিষয়বস্ত বর্ণিত হওয়ার কারণে এখানে শুধুমাত্র টিকা নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। তাই টিকাটি কত নং আয়াতে তা খুজে বের করতে হয়। কিন্তু আমরা ’টিকা’ অধ্যায়ে একটি নতুন এ্যাকটিভিটি যোগ করেছি। যেখানে আয়াত নম্বরের প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র সুরার নাম আর টিকার নম্বর সিলেক্ট করলেই সংশ্লিষ্ট টিকাটি আপনার সম্মুখে হাজির হবে। এবং এ টিকাটি সংশ্লিষ্ট সুরার কত নম্বর আয়াতের তাও জানতে পারবেন।

.

.
৮। Copy / Share: ডাবল ট্যাপ/ক্লিক করলে ম্যানুয়াল সিলেকশন ও কপি অপশন এনাবল হবে। আর লংপ্রেস করলে আরবী আয়াত অথবা ব্যাখ্যাসহ পুরো আয়াতটি কপি হবে, এবং সাথে সাথে পরবর্তী এ্যাকটিভিটি ওপেন হবে। এরপর এ্যাপবার থেকে শেয়ার মেনুতে ক্লিক করলে ফেসবুক/জিমেইল ইত্যাদির শুধুমাত্র Post অপশনটি এনাবল হবে (এই এ্যাপের মধ্যেই)। এরপর লংপ্রেস করে পেষ্ট করুন, এবং পোষ্ট বাটনে ক্লিক করুন। এবার মোবাইলের ব্যাক বাটনে প্রেস করুন। আপনি যেখানে পড়ছিলেন সেই অবস্থানটিই থাকবে।
.
৯। Save: তৈরী করে ফেলুন আপনার নিজস্ব বিষয় অভিধান : সার্চ সেকশনেও “সেভ” বাটন রয়েছে। এখানে ক্লিক করে যে কোন সার্চ কী-ওয়ার্ড সেভ করার মাধ্যমে নিজস্ব বিষয় অভিধান তৈরী করে ফেলতে পারবেন। তাফসীর পড়তে থাকুন, যে শব্দটি আপনার পছন্দ হয় কপি করে সার্চ বক্সে পেষ্ট করুন এরপর সার্চ করুন। এবার যদি চান শব্দটি সেভ বাটনে ক্লিক করে সেভ করে রাখতে পারবেন, শব্দটি একটি তালিকা আকারে “ তালিকা “ বাটনে সেভ হতে থাকবে, যা পরবর্তীতে তালিকা বাটন ওপেন করে সংশ্লিষ্ট শব্দে ক্লিক করলেই তা সার্চ বক্সে চলে আসবে। এভাবে  তাফসীর পড়তে থাকবেন এবং নিজস্ব বিষয় অভিধান তৈরী করতে থাকবেন। যেদিন তাফসীর পড়া শেষ হবে সেদিন আপনার নিজস্ব একটি বিষয় অভিধানও তৈরী হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। আরবী/অনুবাদ/তাফসীর/ভূমিকা চারটি এ্যাকটিভিটিতে ৩০,০০০ করে মোট ১,২০,০০০ শব্দ ( শব্দগুচ্ছ/লাইন) সেভ করে রাখতে পারবেন। এমনকি আপনার গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নাম্বার, দলিল নম্বর, ঠিকানা ইত্যাদিও সেভ করে রাখতে পারবেন।
.

.



.



১০। ফন্ট চেঞ্জ : কুরআন পড়ার সুবিধার্থে আরবী মোট ৯ টি ফন্ট এবং বাংলায় চারটি ফন্ট চেঞ্জ করার সুবিধা রয়েছে। এরমধ্যে আরবীতে কলকাতা ফন্ট এবং বাংলার জন্য বিখ্যাত Android RoboTo ফন্ট ইউজ করার সুবিধা রয়েছে। এই ফন্টটি বর্তমানে ফেসবুকের জন্য ব্যবহার করা হয়।





.



১১। বিল্ট ইন এ্যারাবিক কীবোর্ড : এই এ্যাপটি ইনষ্টল করার সাথে সাথে আপনার মোবাইলে একটি এ্যারাবিক কীবোর্ড ইনষ্টল হয়ে যাবে। আপনার মোবাইলের সেটিংস>ল্যাংগুয়েজ এ্যান্ড ইনপুট > ভার্চুয়াল কীবোর্ড > ম্যানেজ কীবোর্ড  অপশনে গিয়ে “Tafheemul Quran keyboard" অন করে দিয়ে আসুন। এবার এই এ্যাপের এ্যারাবিক সার্চ বিভাগ ওপেন করে keyboard বাটন ক্লিক করুন তাহলেই আরবী কীবোর্ডটি নির্বাচন করতে পারবেন।


১২। ফুল স্ক্রীণ : কুরআন পড়ার সময় কোন এ্যাপবার থাকবে না, ফলে ফুলস্ক্রীণে সর্বাধিক স্থান নিয়ে কুরআন ও তাফসীর পড়া ও সার্চ করা যাবে। আর ফুল স্ক্রীণে কুরআন পড়ার মজাটাই আলাদা।

.
.
(বি:দ্র: অধ্যয়ন বিভাগে ‘সেভ’ বাটন ক্লিক করলে পড়ার অবস্থানটি সেভ হবে, আর সার্চ বিভাগে ’সেভ’ বাটন ক্লিক করলে সার্চ -কীওয়ার্ডটি বিষয় অভিধান তালিকায় সেভ হবে। )
.
পরিশেষে, মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি, যে তাঁর মহান কুরআন প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় এ ক্ষুদ্র কাজটুকু করার তৌফিক তিনি আমাদেরকে দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
.
Apu Ahmed, রিয়াদ মাহমুদ, পথিক পথিক, মো: শামীম আহমেদ সহ যারা উৎসাহ দিয়ে পাশে ছিলেন, যারা ইনবক্সে এ্যাপটির অগ্রগতি সম্পর্কে খোজ খবর নিয়েছেন, এমনকি আমার সহধর্মিনী - ব্যস্ততার কারণে তার সংসারে ঠিকমত সময় দিতে পারিনি তবুও হাসিমুখে যিনি আমার পাশেই ছিলেন, এমনকি রাতে যখন বাসায় বসে কাজ করেছি রাত ২টা/৩টায়ও আমাকে চা বানিয়ে দিয়েছেন, এছাড়াও পরবর্তীতে এই এ্যাপটি প্রচার প্রসারে যারা শেয়ার/প্রমোট/ট্যাগ করবেন, এই এ্যাপের উন্নয়নে পরামর্শ দেবেন - তাদের সবার জন্যই আল্লাহর নিকট দোয়া করছি, আল্লাহ যেন তাদেরকে ইহকালে পরকালে উত্তম যাজা দান করেন।

====================================================





আপডেট :  মে/2019 :


আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।

অনেক দিন ধরে মনে আশা ছিল তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের সাথে তিলাওয়াত যুক্ত করার । আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহ মনের আশা পূরণ করেছেন। প্রতিটি আয়াতের সাথে প্লে বাটন আছে, তাতে ক্লিক করলেই আয়াতটি তিলাওয়াত হতে থাকবে, শুদ্ধ উচ্চারণ শেখা, মুখস্থ করা বা অনুধাবন করার জন্য রিপিট মোড যোগ করা হয়েছে। আপনি ইচ্ছাা করলে ভিউ মেনু থেকে রিপিট মোড অফ করেও দিতে পারবেন।
এছাড়াও স্ক্রীণের উপরের দিকে play>> বাটন রয়েছে, সেখানে ক্লিক করলে স্ক্রীণে যে আয়াত রয়েছে সেখান থেকে পুরো কুরআন আয়াত বাই আয়াত তিলাওয়াত হতে থাকবে, এবং যে আয়াাতটি তিলাওয়াত চলছে তা আয়াত বাই আয়াত স্ক্রীণের সামনে চলে আসতে থাকবে।
এছাড়াও আলাদা অডিও বিভাগও যোগ করা হয়েছে। সেখানে সুরা ভিত্তিক তিলাওয়াত শুনতে পারবেন এবং যে পর্যন্ত তিলাওয়াত শুনেছেন তার অবস্থান সেভ হয়ে থাকবে। পরবর্তীতে এ্যাপ চালু করলে ঠিক সেই সুরার সেই আয়াত থেকেই তিলাওয়াত শুনতে পারবেন এবং এভাবে ধীরে ধীরে আপনি পুরো কুরআনের তিলাওয়াত শুনে ফেলতে পারবেন। বিখ্যাত পাচজন ক্বারীর তিলাওয়াত সহ ইংরেজী অনুবাদের অডিও ও যোগ করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
“অটো ব্যাকগ্রাউন্ড সেভিং সিস্টেম” (saving by async task) যোগ করা হয়েছে। অর্থাৎ, আপনি তিলাওয়াত শুনতে থাকবেন এবং তা আপনার মোবাইলে ব্যাকগ্রাউন্ডে অটো সেভ হতে থাকবে। ফলে দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে সেই তিলাওয়াতটি শুনতে আর ইন্টারনেট খরচ হবেনা। আপনি ইচ্ছা করলে ব্যাকগ্রাউন্ড সেভিং সিস্টেম অফ করে দিতে পারেন। তাহলে প্রতিবাার তিলাওয়াত শুনতে ইন্টারনেট সংযোগ লাগবে।
এবারের আপডেট এ অনলাইন সেভ এর ব্যবস্থা রয়েছে। Aslam Sayedee ভাই বিষয়টার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাফসীরের ফন্ট ছোট বড় করার সিস্টেমও যোগ করা হয়েছে। MD Jomir Uddin ভাই এ্যাপের প্রূফ রিডিং দেখছেন, উনার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
Apu Ahmed ভাই বলেছিলেন আপডেট দিলে তাকে যেন জানাই , তিনি প্রমোট পোষ্ট দিবেন ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও ইতিপূর্বে Kutub Shah ভাই সহ অনেক ভাই প্রমোট দিয়েছেন, তাই সকল বন্ধুদের নিকট অনুরোধ থাকবে সবাই যেন কুরআন প্রচার ও গবেষণার স্বার্থে প্রত্যেকে আবারও প্রমোট পোষ্ট দিয়ে আলকুরআন সার্চ এ্যাপটির বহুল প্রচারে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা রাখেন, ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ সকলের প্রচেষ্টা কবুল করে নিন । আমীন।



এ্যাপটির আপডেট ভার্সনে যা রয়েছে :


 1. আরবী ও বাংলা শব্দ দিয়ে আলকুরআন সার্চ। ১৭ জন ক্বারীর কুরআন তিলাওয়াত।


2. শব্দার্থ : - আল কুরআনে ব্যবহৃত প্রতিটি আয়াতের প্রতিটি আরবী শব্দের বাংলা শব্দার্থ। যে কোন শব্দার্থের আরবী শব্দের উপর ক্লিক করলে সেই শব্দটি আলকুরআনে সার্চ হয়ে সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলো সামনে নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ।


3. তাফহীমুল কুরআনের টিকাসমূহে অন্যান্য অনেক টিকার রেফারেন্স দেওয়া আছে। সেই রেফারেন্সে ক্লিক করলেই সংশ্লিষ্ট টিকাটি বা আয়াতটিও পেয়ে যাবেন। ইনশাআল্লাহ।


4. তাফহীমুল কুরআনে ব্যবহৃত সকল মানচিত্র এই এ্যাপে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।


5. সকল সুরার ভূমিকা এবং তাফহীমুল কুরআনের ভূমিকা ও প্রসঙ্গ কথা। খতমে নবুওয়াত সংক্রান্ত সুরা আহযাবের ৭৭ নং টিকা পুর্ণাঙ্গ দেওয়া হয়েছে।


6. যেখানে পড়ছিলেন বিভাগে আরবী, অনুবাদ, তাফসীর অধ্যয়নের জন্য আলাদা আলাদা সর্বশেষ পাঠকৃত স্থান সংরক্ষণ।


7. আপনার মোবাইলে একটি নোটিফিকেশন যাবে “আজ ‍কুরআন অধ্যয়ন করেছেন কি? শত ব্যস্ততার মাঝেও মাত্র কয়েক মিনিট ব্যয় করুন . “ - এই নোটিফিকেশনের উপর ক্লিক করলেই আপনার সর্বশেষ পাঠকৃত স্থান ওপেন হবে, এবং সেখান থেকে পড়া শুরু করতে পারবেন।


8. আরবী ও বাংলা মিলিয়ে প্রায় ১০ টি ফন্ট দেওয়া হয়েছে। এবং ফন্ট কালার, ফন্ট স্টাইল, ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ইত্যাদি চেঞ্জ করতে পারবেন।


9. আরবী সার্চ সাজেশনে পুরো আল কুরআনের প্রতিটি শব্দ দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে আলকুরআন সার্চ করতে পারবেন।


10. হরকত বিহীন কুরআন অধ্যয়নের মজা পাবেন।


11. ইসলামী প্রশ্ন পাঠাবার সুযোগ, প্রশ্ন পাঠানোর সাথে সাথে তা এই এ্যাপে লাইভ হয়ে যাবে, এবং যতজন এ্যাপ ব্যবহারকারী আছেন সবার কাছে প্রশ্নটি চলে যাবে। আপনি অন্য প্রশ্নকারীদের উত্তরও দিতে পারবেন।


12. টিকা দেখার জন্য ফুলস্ক্রীন বা উইন্ডো মোড। রাতে পড়ার জন্য নাইট মোড ( ভিউ মেনুতে দেখুন)


13. ফেসবুকে ব্যবহৃত ফন্ট এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করা হয়েছে, ইনশাআল্লাহ, যার ফলে আপনি প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ ধরে এ্যাপটি পড়তে পারবেন এবং পরিশ্রান্ত হবেন না।


14. আপনার ব্যাক্তিগত নোট সেভ করে রাখার সুবিধা


15. তাফহীমুল কুরআনে যেসব বাইবেল বা তালমুদ অথবা দুর্লভ বইয়ের রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে সেই সব রেফারেন্সে ক্লিক করলেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টি আপনার সামনে এসে যাবে ইনশাআল্লাহ।


16. ইসলামী সাহিত্যের সকল লিংকগুলি পাবেন।


17. বিষয় অভিধান ।


18. Contact : 01884597895





.

ডাউনলোড লিঙ্ক:
১। সরাসরি এপিকে ডাউনলোড : তাফহীমুল কুরআন সার্চ । (ক্লিক করুন)


যোগাযোগ : ইনবক্স :  মোহাম্মদ নুর হোসেন

.

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...