(1) একটি পশুর 7 টি অংশ একটি অথবা দুই টি অংশ যদি রাসুল(সাঃ)এর নামে কুরবানী করা হয়, তাহলে আদায় হবে কিনা? প্রশ্ন(2)পাঁচ ভাই প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন সংসার সকলের উপরেই কুরবানী ওয়াজিব,এখন বড় ভাই যদি নিজের সম্পদ থেকে সকলের কুরবানী আদায় করে দেয় তাহলে অন্যন্য ভাইএর ওয়াজিব আদায় হবে কিনা? জানতে ইচ্ছুক।
উত্তর :
(১) নং :
ইমাম আবূ দা'ঊদ এবং ইমাম তিরমিযী এ মর্মে দু'টি হাদীস বর্ণনা করেছেন নিম্নে সে দু'টি নিয়ে আলোচনা করা হলো :حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا شَرِيكٌ عَنْ أَبِي الْحَسْنَاءِ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ حَنَشٍ قَالَ رَأَيْتُ عَلِيًّا يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ فَقُلْتُ لَهُ مَا هَذَا فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانِي أَنْ أُضَحِّيَ عَنْهُ فَأَنَا أُضَحِّي عَنْهُ. (أبوداود : ২৭৯০)ইমাম আবূ দাঊদ বলেন : আমাদেরকে উসমান ইবনু আবী শাইবাহ্ হাদীস বর্ণনা করে (শুনিয়েছেন), তিনি বলেন : আমাদেরকে শারীক হাদীস বর্ণনা করে (শুনিয়েছেন), তিনি আবুল হাসনা হতে, তিনি আল-হাকাম হতে, তিনি হানাশ হতে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন : আমি আলী )ঃ(-কে দু'টি মেষ যাব্হ করতে দেখেছি। আমি তাকে বললাম এ কি? (অর্থাৎ দু'টি কেন?) তিনি উত্তরে বললেন : রসূল )ব ( আমাকে তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য অসিয়্যাত করে গেছেন। তাই আমি তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করছি।
:حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا شَرِيكٌ عَنْ أَبِي الْحَسْنَاءِ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ حَنَشٍ عَنْ عَلِيٍّ أَنَّهُ كَانَ يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ أَحَدُهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْآخَرُ عَنْ نَفْسِهِ فَقِيلَ لَهُ فَقَالَ أَمَرَنِي بِهِ يَعْنِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَا أَدَعُهُ أَبَدًا.ইমাম তিরমিযী বলেন : আমাদেরকে মুহাম্মাদ ইবনু ওবাইদ মুহারিবী কূফী হাদীস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তিনি বলেন : আমাদেরকে শারীক হাদীস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তিনি আবুল হাসনা হতে, তিনি আল-হাকাম হতে, তিনি হানাশ হতে, তিনি আলী )ঃ( হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি (আলী) দু'টি মেষ কুরবানী দিতেন একটি নাবী )ব (-এর পক্ষ থেকে আর দ্বিতীয়টি তার নিজের পক্ষ থেকে। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন : আমাকে নাবী )ব( তা করতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন। অতএব আমি কখনও তা ছাড়ব না। [হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (১৪৯৫) বর্ণনা করেছেন]।
অতএব, রাসুল সা: এর নামে কুরবানী করলে তা আদায় হবে।
উত্তর :
(২) নং ।
না, আদায় হবে না। প্রত্যেক ভাইকেই নিজের পয়সা খরচ করে কুরবানী দিতে হবে, যার নিজের উপর কুরবানী ওয়াজিব । অন্যদিকে রাসুল সা: সম্পদশালী ছিলেন না, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব ছিলনা, বরং নফল ছিল। তিনি প্রতি বৎসরই কুরবানী দিতেন।
কেননা রাসুলের কোরবানি নফল ছিল। তিনি তো সম্পদ জমা রাখতেন না। তাই তিনি নিসাবের মালিক থাকতেন না। তাঁর ওপর জাকাত ফরজ ছিল না। তিনি নফল সদকা করতেন, তেমনি তাঁর কোরবানি নফল ছিল। আর নফল কোরবানিতে একাধিক ব্যক্তির নিয়ত করা যায়। কেননা তাতে কোরবানি দাতার জন্য হয় আর পুণ্য সবার জন্য পৌঁছে যায়। নফল কোরবানির জন্য অনুমতিও লাগে না। বিদায় হজেও মহানবী (সা.) দুটি ভেড়া জবেহ করেছেন। এক হাদিসে এসেছে : ‘অতঃপর (বিদায় হজের ভাষণের পর) তিনি চিত্রবিচিত্র দুটি ভেড়া নিলেন ও তা জবেহ করলেন। একটি ছাগলের পাল তিনি সাহাবাদের মধ্যে বণ্টন করেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৭৯)
হজের সময় তিনি তাঁর স্ত্রীদের জন্য কোরবানি করেছেন। সেটা ছিল তাঁদের অনুমতিবিহীন। কেননা তা নফল কোরবানি ছিল। আর নফল কোরবানির জন্য অনুমতি লাগে না। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, “আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে জিলকদের ২৫ তারিখে বের হলাম, তখন আমরা হজের নিয়ত করেছি। যখন আমরা মক্কার কাছে গেলাম তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মধ্যে যারা ‘হাদি’র প্রাণী আনেনি, তাদের ইহরাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তখন আমাদের মধ্যে কোরবানির দিন গরুর গোশত বিতরণ করা হলো। আমি (বাহককে) বললাম, এটা কী? বাহক বলল, রাসুলুল্লাহ (সা.) বিবিদের পক্ষ থেকে গরু কোরবানি করেছেন।” (বুখারি, হাদিস : ১৭০৯)
No comments:
Post a Comment