জিজ্ঞাসা-৬৭:আসসালামু আলাইকুম। আমাদের সমাজে প্রচলন আছে যে, ছোট বাচ্চাদের কপালের একপাশে আঙ্গুল দিয়ে কালো টিপ এঁকে দেয়া হয় বদ নজর থেকে বা কুদৃষ্টি থেকে বাচ্চাটাকে রক্ষার জন্য। এব্যাপারে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কি?
জবাব:ওয়া’লাইকুসসালাম।এটি নিছক কুসংস্কার ছাড়া কিছু নয়। একজন মুসলিম হিসাবে এজাতীয় কুসংস্কার পরিহার করা উচিত। কারণ এটি বদ নজর রোধ করে না। শিশুকে বদ নজর ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য কী করতে হবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তা শিক্ষা দিয়েছেন।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ও হুসাইন রা. এর জন্য এই দোয়া পড়ে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করতেন-
أُعِيْذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَّهَامَّةٍ وَّمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ.
অর্থ : সকল শয়তান, কীটপতঙ্গ ও বদনজর হতে তোমাদেরকে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমাসমূহের আশ্রয়ে দিচ্ছি।
(দোয়াটি এক সন্তানের জন্য পড়লে ‘উয়ীযুকা’, দুইজনের জন্য ‘উয়ীযুকুমা’ আর দুইয়ের অধিক হলে ‘উয়ীযুকুম’ বলতে হবে। ) (বুখারীঃ ৩৩৭১)
শিশুকে বদ নজর ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য এই দোয়াটি পড়েও ফু দেয়া যেতে পারে। হাদীসে এসেছে, জিবরীল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে এই দোয়ার মাধ্যমে ঝাড়তেন।
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
“আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিষ হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নজর হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি।” (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সালাম)
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
“আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিষ হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নজর হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি।” (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সালাম)
পাশাপাশি আয়াতুল কুরসী, তিন কুল ও হাদীসের অন্যান্য দোয়াও এক্ষেত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে ।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
=========================
প্রশ্ন : কালো টিপ বাচ্চাদের অনেক মা দেন। অনেকে ঝাড়ু বা জুতা ঝুলিয়ে রাখেন বদনজর থেকে রক্ষার জন্য। আমি মনে করি এগুলো কুসংস্কার। এ ব্যাপারে আপনাদের অভিমত জানতে চাই।
উত্তর : আপনি মনে করেছেন কুসংস্কার। কুসংস্কার তো আছেই বরং তার থেকে আরো একটু উপরে আছে। ট্রাকের পেছনে জুতা ঝুলিয়ে রাখা অথবা ঘরের ভেতর ঝাড়ু ঝুলিয়ে রাখা বা বাচ্চাদের কপালে কালো টিপ দেওয়া যেন বদনজর থেকে বাঁচা যায়, ইত্যাদি যাবতীয় কাজ হলো এক প্রকারের শিরক। শুধু কুসংস্কারই নয়, এগুলো এক ধরনের শিরক।
কারণ, আপনি মনে করছেন, এগুলোর এই ক্ষমতা আছে। আমাদের কুসংস্কার এবং এই শিরকি আকিদার ভেতর এটা এমন ব্যাপক হয়েছে যে দেখা যায়, প্রায় ট্রাকের পেছনেই ছেঁড়া জুতা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, কু-দৃষ্টি লাগবে না। আবার কেউ কেউ মনে করে, এতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না। এই যে বক্তব্য বা দৃষ্টিভঙ্গি, এটি একেবারেই ভুল। এই কাজটি মূলত এক প্রকারের শিরক। শিরকি চিন্তা চেতনা থেকেই মূলত এগুলো মুসলমানদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর আমরা মুসলমানরা না বুঝেই সেগুলোকে গো-গ্রাসে গেলার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা মনে করছি এগুলোই সঠিক।
ইসলাম একটি সুন্দর জীবন ব্যবস্থা। আপনি দেখেন এই কাজগুলোর মধ্যে কিন্তু কোনো সৌন্দর্য বা কোনো বিবেক-বিবেচনা নেই। অথচ ইসলামে এগুলো থেকে বাঁচার জন্য বিবেচনা এবং সৌন্দর্য সবটাই দেওয়া আছে। আপনি যদি বদদোয়া থেকে বাঁচতে চান, তাহলে কীভাবে বাঁচবেন, সেটা রাসুল (সা.) বলে দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন।
আপনি সন্তানকে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন, বদদোয়া লাগতে পারে, সেটা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি ওই দোয়াটি পড়ে তাকে ফুঁ দিলেই যথেষ্ট।
প্রশ্ন : শিশুদের গলায় তাবিজ ব্যবহার করা যাবে কি ?
উত্তর : না । রাসুল সা: বলেছেন, “যে ব্যাক্তি কোন কিছু লটকালো তাকে তার উপরই সোপর্দ করা হল।
সুতরাং, কোন শিশু বা ব্যক্তি কারো জন্যই তাবিজ ব্যবহার করা যাবেনা। এটা হচ্ছে এক শ্রেণীর লোকদের একটা ব্যবসা। তারা আপনার নিকট তাবিজ বিক্রয় করে দু পয়সা কামাই করে থাকে।
প্রশ্ন : শিশুদের গলায় তাবিজ ব্যবহার করা যাবে কি ?
উত্তর : না । রাসুল সা: বলেছেন, “যে ব্যাক্তি কোন কিছু লটকালো তাকে তার উপরই সোপর্দ করা হল।
সুতরাং, কোন শিশু বা ব্যক্তি কারো জন্যই তাবিজ ব্যবহার করা যাবেনা। এটা হচ্ছে এক শ্রেণীর লোকদের একটা ব্যবসা। তারা আপনার নিকট তাবিজ বিক্রয় করে দু পয়সা কামাই করে থাকে।
No comments:
Post a Comment