(যাত্রা পুস্তক ৩২: ১-৬)

1পাহাড় থেকে নেমে আসতে মূসার দেরি হচ্ছে দেখে লোকেরা হারুনের চারপাশে জড়ো হয়ে বলল, “পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আপনি আমাদের দেব-দেবী তৈরী করে দিন কারণ ঐ মূসা, যে আমাদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছে, তার কি হয়েছে আমরা জানি না।”
2জবাবে হারুন তাদের বললেন, “তোমাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের কানের সোনার গহনা খুলে এনে আমাকে দাও।” 3তাতে সকলে তাদের কানের গহনা খুলে এনে হারুনকে দিল। 4লোকেরা হারুনকে যা দিল তা গলিয়ে ছাঁচে ফেলে যন্ত্রপাতির সাহায্যে তিনি বাছুরের আকারে একটা মূর্তি তৈরী করলেন।
সেটা দেখে বনি-ইসরাইলরা বলল, “ভাইয়েরা, এর মধ্যে রয়েছে তোমাদের দেব-দেবী। মিসর দেশ থেকে এই দেব-দেবীই তোমাদের বের করে এনেছেন।”
5এই ব্যাপার দেখে হারুন সেই বাছুরের সামনে একটা কোরবানগাহ্‌ তৈরী করে এই কথা ঘোষণা করলেন, “আগামী কাল মাবুদের উদ্দেশে ঈদ হবে।”
6পরের দিন লোকেরা খুব সকালে উঠে পোড়ানো-কোরবানী এবং যোগাযোগ-কোরবানী দিল। তার পরে তারা খাওয়া-দাওয়া করতে বসল এবং পরে হৈ-হল্লা করে আমোদ-প্রমোদ করবার জন্য উঠে দাঁড়াল। 7এতে মাবুদ মূসাকে বললেন, “তুমি নীচে নেমে যাও। তোমার ঐ সব লোক যাদের তুমি মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছ তারা জঘন্য হয়ে গেছে। 8এর মধ্যেই তারা আমার হুকুম থেকে দূরে সরে গেছে। তারা নিজেদের জন্য বাছুরের আকারে একটা মূর্তি তৈরী করে নিয়েছে। তারা মাটিতে পড়ে তাকে সেজদা করেছে এবং তার উদ্দেশে পশু-কোরবানী করে বলেছে, ‘ভাইয়েরা, এর মধ্যে রয়েছে তোমাদের দেব-দেবী। এই দেব-দেবীই মিসর দেশ থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন।’ ”
 
 
 
 

যাত্রা পুস্তক ৩১: ১৮, ৩২: ১৫-১৬ এবং দ্বিতীয় বিবরণ ৫: ৬-২২)।

যাত্রা পুস্তক ৩১: ১৮

18তুর পাহাড়ের উপর মূসার কাছে এই সব কথা বলা শেষ করে মাবুদ তাঁকে দু’খানা সাক্ষ্য-ফলক দিলেন। এই দু’টা পাথরের ফলকের উপর আল্লাহ্‌ নিজেই তাঁর হুকুম লিখেছিলেন।



যাত্রা পুস্তক  ৩২: ১৫-১৬


15এর পর মূসা সাক্ষ্য-ফলক দু’টি হাতে করে পাহাড় থেকে নীচে নেমে গেলেন। ফলক দু’টার সামনে এবং পিছনে দু’দিকেই লেখা ছিল। 16সেই দু’টা ছিল আল্লাহ্‌র নিজের হাতের কাজ, আর তার উপর খোদাই করা লেখাটিও ছিল তাঁর।





দ্বিতীয় বিবরণ ৫: ৬-২২)



6‘আমি আল্লাহ্‌ তোমাদের মাবুদ। মিসর দেশের গোলামী থেকে আমিই তোমাদের বের করে এনেছি।
7‘আমার জায়গায় কোন দেব-দেবী দাঁড় করাবে না।
8‘পূজার উদ্দেশ্যে তোমরা কোন মূর্তি তৈরী করবে না, তা আসমানের কোন কিছুর মত হোক বা মাটির উপরকার কোন কিছুর মত হোক কিংবা পানির মধ্যেকার কোন কিছুর মত হোক। 9তোমরা তাদের পূজাও করবে না, তাদের সেবাও করবে না, কারণ কেবলমাত্র আমি আল্লাহ্‌ই তোমাদের মাবুদ। আমার পাওনা এবাদত আমি চাই। যারা আমাকে ঘৃণা করে তাদের গুনাহের শাস্তি আমি তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত দিয়ে থাকি। 10কিন্তু যারা আমাকে মহব্বত করে এবং আমার হুকুম পালন করে হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত তাদের প্রতি আমার অটল মহব্বত থাকবে।
11‘কোন বাজে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র নাম নেবে না। যে তা করবে তাকে মাবুদ শাস্তি দেবেন।
12‘তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাকে যেমন হুকুম দিয়েছেন তেমনি করে তোমরা বিশ্রামবার পবিত্র করে রাখবে এবং তা পালন করবে। 13সপ্তার ছয় দিন তোমরা পরিশ্রম করবে এবং তোমাদের সমস্ত কাজ করবে, 14কিন্তু সপ্তম দিনটি হল তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র উদ্দেশে বিশ্রামের দিন। সেই দিন তোমরা, তোমাদের ছেলেমেয়ে, তোমাদের গোলাম ও বাঁদী, তোমাদের গরু ও গাধা কিংবা অন্য কোন পশু কিংবা তোমাদের গ্রাম ও শহরে বাস করা অন্য জাতির লোক- কারও কোন কাজ করা চলবে না। এতে তোমাদের গোলাম ও বাঁদীও তোমাদের মত বিশ্রাম পাবে। 15মনে রেখো, তোমরাও মিসর দেশে গোলামই ছিলে এবং তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁর কঠোর এবং শক্তিশালী হাত বাড়িয়ে সেখান থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন। সেইজন্যই তিনি বিশ্রামবার পালন করবার হুকুম তোমাদের দিয়েছেন।
16‘তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র হুকুম মেনে তোমরা তোমাদের পিতা-মাতাকে সম্মান করে চলবে। তাতে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র দেওয়া দেশে তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকবে এবং তোমাদের উন্নতি হবে।
17‘খুন কোরো না।
18‘জেনা কোরো না।
19‘চুরি কোরো না।
20‘কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না।
21‘অন্যের স্ত্রীর উপর লোভ কোরো না। অন্যের ঘর-দুয়ার, জমা-জমি, গোলাম ও বাঁদী, গরু-গাধা কিংবা আর কিছুর উপর লোভ কোরো না।’
22“সেই পাহাড়ের উপর আগুন, মেঘ ও গাঢ় অন্ধকারের মধ্য থেকে মাবুদ এই হুকুমগুলোই তোমাদের সকলের কাছে জোরে ঘোষণা করেছিলেন। এছাড়া তিনি তোমাদের কাছে আর কিছু বলেন নি। পরে তিনি সেগুলো দু’টি পাথরের ফলকের উপর লিখে আমার কাছে দিয়েছিলেন।

ইউসা 24

14তারপর ইউসা বললেন, “এখন তোমরা খাঁটি অন্তরে বিশ্বস্তভাবে মাবুদকে ভয় কর এবং তাঁর এবাদত কর। তোমাদের পূর্বপুরুষেরা ফোরাত নদীর ওপারে ও মিসর দেশে যে সব দেব-দেবীর পূজা করতেন সেগুলো তোমরা দূর করে দিয়ে মাবুদের এবাদত কর। 15কিন্তু মাবুদের এবাদত করতে যদি তোমাদের পছন্দ না হয় তবে যার এবাদত তোমরা করবে তা আজই ঠিক করে নাও। তোমাদের পূর্বপুরুষেরা ফোরাত নদীর ওপারে থাকতে যে সব দেব-দেবীর পূজা করতেন তাদের এবাদত করবে, না কি যাদের দেশে তোমরা বাস করছ সেই আমোরীয়দের দেব-দেবীদের এবাদত করবে? তবে আমি ও আমার পরিবারের সবাই মাবুদের এবাদত করব।”
16জবাবে লোকেরা বলল, “মাবুদকে ত্যাগ করে দেব-দেবীর পূজা করা যেন আমাদের দ্বারা কখনও না হয়। 17আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ নিজেই আমাদের ও আমাদের পূর্বপুরুষদের মিসর দেশ থেকে, সেই গোলামীর দেশ থেকে বের করে এনেছেন এবং আমাদের চোখের সামনেই সেই সব বড় বড় অলৌকিক চিহ্ন দেখিয়েছেন। আমাদের সারা যাত্রা পথে এবং যে সব জাতির মধ্য দিয়ে আমরা এসেছি তাদের হাত থেকে তিনিই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। 18এই দেশের বাসিন্দা আমোরীয়দের এবং অন্যান্য সব জাতিদের মাবুদই আমাদের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরাও মাবুদের এবাদত করব, কারণ তিনিই আমাদের আল্লাহ্‌।”
 
 
 

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...