নামাজ বসে পড়ার বিধান

প্রশ্ন : বসে বসে নামাজ পড়ার মাসালা একটু আলোচনা করবেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্যগত সমস্যা না থাকলেও অনেকে সুন্নত ও নফল নামাজ বসে পড়ে থাকেন।

উত্তর : ফরজ সালাত ছাড়া যত সুন্নত সালাত আছে সেগুলো বসে আদায় করা জায়েজ। সেখানে বসার অনুমোদন আছে। কিন্তু এ অনুমোদনটুকু এমন যে, সুস্থ থাকলেও পড়তে পারবেন, তবে সওয়াবের ক্ষেত্রে কম-বেশি হয়ে যাবে।

সুতরাং কোনো কাজের অনুমোদন পেলেই সে কাজটা করলে শুদ্ধ নয়। দাঁড়িয়ে পড়লে যে মর্যাদা বা সওয়াব পাওয়া যাবে, বসে পড়লে সে মর্যাদা বা সওয়াব পাওয়া যাবে না। এটিই হলো পার্থক্য।

ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।


=======================================================


রুকু সেজদা করতে সক্ষম ব্যক্তি ফজরের সুন্নাত বসে আদায় করলে হবে না। দাঁড়িয়েই আদায় করবে। বাকি সুন্নাতে মুআক্কাদাগুলোও দাঁড়িয়ে আদায় করা উচিত। বাকি বসে আদায় করলেও হবে।

কিন্তু এছাড়া বাকি সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদা ও নফল নামায বসে আদায় করতে পারবে। তবে দাঁড়িয়ে রুকু সেজদা করে নামায আদায় করাই উত্তম।


فى الدر المختار: ومنها القيام……. فِي فَرْضٍ) وَمُلْحَقٍ بِهِ كَنَذْرٍ وَسُنَّةِ فَجْرٍ فِي الْأَصَحِّ (لِقَادِرٍ عَلَيْهِ)

وفى رد المحتار: (قَوْلُهُ وَسُنَّةُ فَجْرٍ فِي الْأَصَحِّ) أَمَّا عَنْ الْقَوْلِ بِوُجُوبِهَا فَظَاهِرٌ، وَأَمَّا عَلَى الْقَوْلِ بِسُنِّيَّتِهَا فَمُرَاعَاةً لِلْقَوْلِ بِالْوُجُوبِ. وَنُقِلَ فِي مَرَاقِي الْفَلَاحِ أَنَّ الْأَصَحَّ جَوَازُهَا مِنْ قُعُودٍ ط.

أَقُولُ: لَكِنْ فِي الْحِلْيَةِ عِنْدَ الْكَلَامِ عَلَى صَلَاةِ التَّرَاوِيحِ لَوْ صَلَّى التَّرَاوِيحَ قَاعِدًا بِلَا عُذْرٍ، قِيلَ لَا تَجُوزُ قِيَاسًا عَلَى سُنَّةِ الْفَجْرِ فَإِنَّ كُلًّا مِنْهُمَا سُنَّةٌ مُؤَكَّدَةٌ وَسُنَّةُ الْفَجْرِ لَا تَجُوزُ قَاعِدًا مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ بِإِجْمَاعِهِمْ كَمَا هُوَ رِوَايَةُ الْحَسَنِ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلاَةِ الرَّجُلِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ، وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ، وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَاعِدِ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، مَطْلَبٌ قَدْ يُطْلَقُ الْفَرْضُ عَلَى مَا يُقَابِلُ الرُّكْنَ وَعَلَى مَا لَيْسَ بِرُكْنٍ وَلَا شَرْطٍ، بحث القيام-2/131-132، طحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الصلاة، فصل فى صلاة النفل جالسا-402

হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ব্যক্তির বসে নামায পড়া বিষয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায পড়ে সে উত্তম। বসে যে নামায পড়ে, সে দাড়িয়ে নামায আদায়কারীর তুলনায় অর্ধেক সওয়াব পায়। আর যে ব্যক্তি শুয়ে নামায পড়ে, সে বসে নামায আদায়কারীর তুলনায় অর্ধেক সওয়াব পায়। [বুখারী, হাদীস নং-১১১৬]

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন :  মাওলানা মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

সূত্র: আহলে হক মিডিয়া



 

1 comment:

  1. আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ।
    আমার একটা বিষয়ে জরুরি প্রশ্ন ছিলো,
    : বাংলাদেশে এখন চীন জাপানের মতো ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা চাষ করা হচ্ছে, মুক্তা চাষের পদ্ধতিটা হলো, ঝিনুকের দুটি খোলস থাকে, খোলসের ভিতরের দিকে প্রতিটা খোলসে দুটি করে পাতলা পর্দা থাকে, উপরের পর্দাটি সামান্য কেটে, ভিতরে বিভিন্ন নকশা করা বিশেষ পদার্থ ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
    এরপর ঝিনুক যেনো এ অপারেশনের জন্য ব্যাথায় জ্বরে আক্রান্ত না হয় সে জন্য বিশেষ ঔষধে ডুবিয়ে রাখা হয়। তবে কিছু ঝিনুক মারাও যায়। এরপর ঝিনুককে পুকুরে বা অ্যাকুরিয়ামে ছেরে দেয়া হয়। ঝিনুকের মধ্যে ঐ পদার্থটিই এক বছর পর অটোমেটিক মুক্তা হয়ে যায়। এরপর ঝিনুক কেটে মুক্তা বের করা হয়। ঝিনুককটি তখন মারা যায়।
    এখন প্রশ্ন হলো: ঝিনুক ব্যাবহার করে এ পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ করা কি জায়েজ?
    যেহেতু ঝিনুক এর মাধ্যমে প্রথম দিকে কিছুটা কষ্ট পায় এবং পুকুরে যেরকম স্বাধীনতা পায় অ্যাকুরিয়ামে সেরকম পায়না?
    তবে এরা চলা ফেরা খুব কম করে?
    অ্যাকুরিয়ামেও তার খাবারের ব্যাবস্থা করা যায়।

    এরপর আসে মুক্তা বাজার জাত করার বিষয়ে। চাষ করা মুক্তা পরিমানে অনেক হয়, যেটা পাইকারি ব্যাবসায়ি, বিদেশি বিভিন্ন এজেন্ট, এরপর বাংলাদেশে আড়ং কোম্পানিও এ মুক্তাগুলো ক্রয় করে।এরপর অনেকের হাত হয়ে শেষ পর্যন্ত খুচরা দোকানদারের মাধ্যমে প্রতিটা খুচরা ক্রেতার হাতে চলে যায়। ইসলামে একটা বিধান আছে সেটা হলো কসমেটিকস বা জুয়েলারি পন্য এমন মহিলার কাছে বিক্রি করা যাবেনা, যে মহিলা এটা পরে বে-পর্দা হয়ে ঘুরে বেড়াবে। এরকম কারো কাছে বিক্রি করলে সেটা সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগীতা করা হবে।

    দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো:এই ছোট বড় এজেন্ট বা ব্যাবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই অমুসলমান, কিছু মুসলমান ক্রেতা বিক্রিেতাও আছে। আবার এর বড় একটা অংশ বিদেশে যায়।
    কিন্তু এরাতো ইসলামের কোনো বিধি বিধান মেনে ব্যাবসা পরিচালনা করে না। আর এই মুক্তাগুলো শুধু মুসলমান দোকানদারদের মধ্যে সাপ্লাই দেয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার।এখন আমাদের কি এদের সাথে ব্যাবসা করা হালাল হবে? নাকি এদের সাথে ব্যাবসা করলে সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগীতা করা হবে।
    আর ব্যাবসা করা গেলে কোন পদ্ধতিতে করা উচিত?
    এ ব্যাপারে দয়া করে বিস্তারিত জানতে চাই।

    ReplyDelete

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...