১। জুম’আর খুতবা শুনা ওয়াজিব :
প্রশ্ন
আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
মুহতারাম, নিচের প্রশ্নের কুরআন ও হাদীসের দলীল-সূত্র সহ দিলে একটি ফেতনা থেকে রেহাই পাওয়া যেত।
প্রশ্নঃ (১) “জুমা ও ঈদের নামাজে খুতবা শোনা ওয়াজিব” এ কথার দলীল কি?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
খুৎবা শুনা আবশ্যক হওয়া মর্মে অনেক প্রমাণ আছে। এর মাঝে দু’টি উপস্থাপন করছি। হাদীসের গ্রন্থগুলোর সালাত অধ্যায় ভাল করে অধ্যয়ন করলে আপনি আরো প্রমাণ নিজেই বের করে নিতে পারবেন।
أن أبا هريرة أخبره أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال إذا قلت لصاحبك يوم الجمعة أنصت والإمام يخطب فقد لغوت (صحيح البخارى-كتاب الجمعة، باب الإنصات يوم الجمعة والإمام يخطب، رقم الحديث-892
অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বলেন-রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন তুমি তোমার পাশের জনকে জুমআর দিন বল-চুপ থাক এমতাবস্থায় যে, ইমাম সাহেব খুতবা দিচ্ছে, তাহলে তুমি অযথা কাজ করলে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৮৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০০৫}
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: دَخَلَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ الْمَسْجِدَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَجَلَسَ إِلَى جَنْبِهِ أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ أَوْ كَلَّمَهُ بِشَيْءٍ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ أُبَيٌّ، فَظَنَّ ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّهَا مَوْجِدَةٌ، فَلَمَّا انْفَتَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ صَلَاتِهِ، قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: يَا أُبَيُّ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرُدَّ عَلَيَّ؟ قَالَ: إِنَّكَ لَمْ تَحْضُرْ مَعَنَا الْجُمُعَةَ، قَالَ: لِمَ؟ قَالَ: تَكَلَّمْتَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَامَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَدَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ أُبَيٌّ أَطِعْ أُبَيًّا»
হযরত জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ মসজিদে প্রবেশ করলেন এমতাবস্থায় যে, রাসুল সাঃ খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি হযরত উবাই বিন কাব রাঃ এর পাশে এসে বসলেন। বসে উবাইকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেন বা কোন বিষয়ে কথা বললেন। কিন্তু উবাই তার কথার কোন প্রতিউত্তর করলেন না। তখন ইবনে মাসঊদ রাঃ মনে করলেন তিনি হয়তো তার উপর রাগাম্বিত। তারপর যখন রাসূল সাঃ নামায শেষ করে চলে গেলেন। তখন ইবনে মাসঊদ বললেন, হে উবাই! আমার কথা জবাব দিতে তোমাকে বাঁধা দিল কে? তিনি বললেন, তুমি আমাদের সাথে জুমআর নামাযে উপস্থিত হওনি। ইবনে মাসঊদ রাঃ বললেন, তো? উবাই রাঃ বললেন, তুমি কথা বলছিলে আর রাসূল সাঃ তো তখন খুতবা দিচ্ছিলেন। [তাই কথার জবাব দেইনি]
একথা শুনে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ দাড়িয়ে গেলেন। ছুটে গেলেন রাসূল সাঃ এর কাছে। জানালেন পুরো বিষয়টি। তখন রাসূল সাঃ বললেন, উবাই ঠিক কথাই বলেছে। তুমি এ বিষয়ে উবাই এর কথাকে মেনে নাও। [মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-১৭৯৯]
এ হাদীসটি সহীহ।
এছাড়া আরো অনেক হাদীস আছে, যা প্রমাণ করে ইমামের খুতবাদানকালে কথা বলা, নামায পড়া নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সে সময় কথা না বলে খুতবা মনযোগ সহকারে শুনতে হয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
তবে, কারো কারো মতে:
২। ঈদের খুতবা শুনা সুন্নাত :
ঈদের খুতবা শোনা কি ওয়াজিব
ঈদের খুতবায় উপস্থিত হওয়ার সঠিক বিধান হচ্ছে যে, তা সুন্নাত।
আবদুল্লাহ ইবনে সায়িব রাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে ঈদে উপস্থিত হলাম; অতঃপর তিনি সালাত সম্পন্ন করে বললেন, আমি খুতবা প্রদান করব; তাই যে খুতবা শোনার জন্য বসতে চাইবে সে বসুক, আর যে চলে যেতে চায়, সে চলে যাক।
আবু দাউদ আলএ. হা/১১৫৫ হাদীসটিকে ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন।