রাসুল সা: এর পিতা মাতা জান্নাতী কিনা ?

 প্রশ্ন-বিস্তারিত:

আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম,রাসূল সাঃ এর পিতা ও মাতা জান্নাতি কিনা??(আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসূফ ও মতিউর রহমান মাদনী ওনাদের জাহান্নামি বলেছেন)যদি ওনারা তাওরাত বা ইনজিলের অনুসারী হন এবং মুমিন হন তাহলে জন্নাতি কেন হবেন না?একি ভাবে, হাতিম তায়ি একজন মুমিন খ্রীস্টান ছিলেন রাসূল সাঃ এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বেই ইন্তেকাল করেন। উনি জান্নাতি কি না??


উত্তর :

ওয়া আলাইকুম আস সালাম।

আসলে রাসুল সা: এর আগমনের পূর্বে সৎ এবং সঠিক দ্বীন বলতে যে বিষয়টি জানা যায়, তা হচ্ছে, দ্বীনে হানিফ। এটা আসলে মূলত ইব্রাহিম আ: এর মতাদর্শের ‍অনূকুল। ইতিহাস থেকে দেখা যায়, রাসুল সা: এর নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্ব সময়ে অনেকেই এই দ্বীনের অনুসারী ছিলেন। আরেকটা বিষয় দেখতে হবে, যে, ঐ পূর্ব সময়ে কোনো ব্যাক্তি শিরকে লিপ্ত ছিল কিনা। অনেক সাহাবার ক্ষেত্রেই প্রমান পাওয়া গেছে, ইসলাম পূর্ব যুগে তারা কোনোদিন শিরকে লিপ্ত হননাই। কোনো মূর্তি পূজা করেন না। রাসুল সা: এর মা বাবার ক্ষেত্রেও এরকম কথা আমাদের জানা নাই। তারা মূর্তি পূজা করেছেন, বা শিরকে লিপ্ত হয়েছেন বলে এরকম কোনো বর্ণনা আমাদের নজরে আসে নাই। বিপরীত পক্ষে, ঐ সময় এমন কোনো সঠিক শরীয়তের উপস্থিতি ছিলনা বা তাদের কাছে পৌছায়নাই যা তারা মেনে চলতে পারতেন, বা অমান্য করেছেন। কুরআন বার বার বলেছে, আমি তোমাদেরকে এই নবীর মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি এজন্য যে, তোমরা যেন পরকালে না বলো, আমরা তো জানতাম না।” বরং, ইসলাম পূর্ব যুগেও এমন কিছু লোক ছিল, যারা কখনো মূর্তি পূজা করেন নাই এবং শিরককে তারা অপছন্দ করতো। সুতরাং, রাসুল সা: এর মাতা পিতার ব্যাপারেও ঐ বিষয় অনুযায়ীই ফায়সালা হবে। তবে, সাধারণ ভাবে সুধারণা রাখাই কর্তব্য। আরেকটা বিষয় হলো, আসলে রাসুল সা: এর মাতা পিতার শেষফল কি হবে, এই প্রশ্নের সাথে শরীয়তের কোনো বিষয়ই জড়িত নয়। অতএব, সে ব্যাপারে খামাখা অতিরিক্ত প্রশ্ন না করা এবং মাথা না ঘামানোই উত্তম। কুরআন অতিরিক্ত প্রশ্ন করতে নিষেধ করেছে। এজন্য সম্ভবত কোনো একজন সাহাবী রাসুল সা: কে তার পিতা মাতা জান্নাতী না জাহান্নামী এরকম প্রশ্ন করেননি। হাদীসে পরিস্কার ভাবে এরকম সরাসরি কোনা বর্ণনা পাওয়া যায় না।


তাই,  এ বিষয়টি মহান আল্লাহর উপরই ছেড়ে দিতে হবে। যেমন ধরুন: আবু তালিব রাসুল সা: এর এত উপকার করেছেন, কিন্তু তারপরেও তার ব্যাপারে   জান্নাতের পক্ষে কোন ফায়সালার কথা বলা হয়নি। বরং,মূল বিষয় হচ্ছে ঈমান। হযরত ইবরাহীম আ: এর পিতার জন্য দোয়া করতে হযরত ইবরাহীম আ: কে নিষেধ করা হয়েছে। হযরত নূহ আ: এর ছেলের জন্য তাকে দোয়া করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানে ব্লাড কানেকশন  এর কোন মূল্য নেই। আসল মূল্য  যার যার নিজের ঈমান ও আমাল।  আরেকটা বিষয় হচ্ছে,  আপনার প্রশ্নের উত্তরের সাথে অর্থাৎ তাদের   জান্নাতি বা জাহান্নামী হওয়ার  প্রশ্নের  উত্তরের সাথে, শরীয়তের কোন বিধিবিধানের কোন সম্পর্ক যেমন নেই, তেমনি তারা জান্নাতে গেলেও আপনার কোন লাভ নাই,  না  গেলেও আপনার কোন লস নাই। তাই এ ধরণের প্রশ্ন নিয়ে মাথাব্যাথা সৃষ্টি করারও কোন কারণ নেই। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রশ্ন শয়তানী ওয়াস ওয়াসার কারণে সৃষ্টি হয়।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...