নামাজের মধ্যে অজু ভেংগে গেলে করনীয়।

একাকী নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে: 

ধরেন আপনি চার রাকাত নামাজ আদায় করছিলেন। তিন রাকাত পরে আপনার অজু ভেংগে গেল। আপনি চুপচাপ বেরিয়ে যাবেন, এবং কোন কথা না বলে অজু করে এসে আবার এক রাকাত আদায় করে যথারীতি নামাজ শেষ করবেন। 


জামায়াতে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে: 

আপনি ইমামের পিছনে চার রাকাত নামাজ আদায় করছিলেন।  এক রাকাত পর আপনার অজু ভেংগে গেল।  তখন, চুপচাপ বেরিয়ে যাবেন এবং অজু করে এসে আবার জামায়াতে শামিল হবেন। পরে যখন আপনি শামিল হয়েছেন, আপনি দেখলেন যে, আপনি যখন অজু করেছেন, সেই সময় ইমাম সাহেব আরো এক রাকাত পড়ে ফেলেছেন। পরে আপনি অজু করে এসে ইমাম সাহেবের সাথে দুই রাকাত পড়েছেন। তাহলে আপনার হলো অজু ছুটে যাওয়ার আগে এক রাকাত এবং অজু করে আসার পরে দুই রাকাত - মোট তিন রাকাত। এবার  ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করার পর আপনি দাড়িয়ে এক রাকাত পড়ে নেবেন। 


উল্লেখ্য যে, আপনি যখন চুপচাপ থেকে এবং কোনো কথা না বলে পুনরায় নামাজে শামিল হবেন, তখন উপরোক্ত নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কিন্তু যদি কথা বলেন, তাহলে পুরো চার রাকায়াতই আদায় করতে হবে। 


 


=========================

প্রশ্ন : নামাজের ভেতর অনেক সময় অজু ভেঙে যায়। তখন কি আবার অজু করে প্রথম থেকে নামাজ পড়ব, নাকি যেখানে এসে অজু ভেঙেছে সেখান থেকে পড়ব?

উত্তর : সালাতের মধ্যে কোনো কারণে যদি আপনার অজু নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে যেখানে আপনার সালাতে অজু নষ্ট হয়ে গেছে, অজু করে এসে সেখান থেকে সালাত আদায় করবেন। আবার নতুন করে সালাত আদায় করার দরকার নেই। কারণ, আপনি তো সালাতের একটা অংশ আদায় করেছেনই এবং সালাতের ওই অংশটুকু, যেটা আপনি আদায় করেছেন, সেটা কিন্তু বৈধ বা গ্রহণযোগ্য। যেহেতু ফরজ ইবাদত যেভাবে আদায় করা দরকার, আপনি সেভাবেই আদায় করেছেন। তাহরাতের সঙ্গে পালন করেছেন। সুতরাং আপনার সেই বৈধ ইবাদতটুকু কীভাবে নষ্ট করবেন, ‘তোমরা তোমাদের আমলসমূহ বাতিল করো না।’

স্বেচ্ছায় কোনো আমল বাতিল করা জায়েজ নেই, নাজায়েজ কাজ। তাই কোনোভাবেই আপনি আপনার আমল বাতিল করতে পারবেন না। সালাতে দুই রাকাত আপনি আদায় করেছেন, দুই রাকাতের পরে আপনি সালাতে এসে আবার বাকিটুকু শেষ করবেন। অজু যদি আপনার নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে অজু করে এসে দ্বিতীয় রাকাত থেকে আপনি সালাত শেষ করবেন। এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকে আদায় করাটি সালাতের সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ, এটা জায়েজ নয়।

অনেকে মনে করেন, প্রথম থেকে শুরু করলে অসুবিধা নেই। এটি সুবিধা-অসুবিধার বিষয় না, বিধান যেটা সেটা অনুসরণ করাটার নামই হচ্ছে দ্বীন। ইসলাম যে বিধান দিয়েছে, সেই বিধান অনুসরণ করাটাই হচ্ছে বিধান। এখানে অসুবিধা হচ্ছে, আগের ইবাদতটা আপনি বাতিল করলেন কিসের ভিত্তিতে? যেহেতু বাতিল করার কোনো বৈধতা নেই, সেটি দেওয়া হয়নি। এই বৈধতাটুকু আপনি পাননি, বাতিল করাটা অন্যায়। এই অন্যায় কাজের বৈধতা আপনাকে দেওয়া হয়নি। তাই সেভাবে আপনি সালাত আদায় করতে পারেন না। যেখানে সালাত নষ্ট হয়েছে, সেখান থেকেই আপনি সালাত শেষ করবেন।  

- ড: মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। 


====================


প্রশ্ন: ফরজ নামাজ জামাতে পড়ার সময়, দ্বিতীয় রাকাতে বায়ু বের হলে ওজু করে এসে দ্বিতীয় রাকাত ধরতে হবে না প্রথম থেকে নামাজ শুরু করতে হবে?


উত্তর: জামাতে নামাজ পড়া অবস্থায় ওজু ছুটে গেলে তৎক্ষণাৎ ওজুর জন্য বের হয়ে যেতে হবে। ইমামের নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকা যাবে না।

আমর ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী করণীয় এ সম্পর্কে ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, সে ওজুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং ওজু করে আসবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা- ৫৯৫০)

সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কারো যদি নামাজে ওজু ছুটে যায় তাহলে সে যেন বের হয়ে ওজু করে আসে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা- ৫৯৫৪)

দুই. ওজু করে ফিরে এসে ইমামের সঙ্গে নামাজে যোগদান করবে। ইমামের সালাম ফিরানোর পর সে উঠে দাঁড়িয়ে বাকি নামাজ যথারীতি আদায় করবে। ওজু করে ফিরে আসতে আসতে যদি ইমামের নামাজ শেষ হয়ে যায়, তবে সে একাকি অবশিষ্ট নামাজ আদায় করবে। তবে শর্ত হচ্ছে এ সময় কোনো প্রকার কথা বলা যাবে না। কথা বললে পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।

উত্তর দিয়েছেন: মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...