---------------------------------
বরাবর
মাননীয় মুফতি সাহেব!
আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী৷ আমি বাকীতে পন্য লেনদেন করি এবং নগদ মূল্যের চেয়ে বেশী মূল্যে বিক্রি করি৷ অর্থাৎ একটা বস্তু নগদে কিনলে নির্দিষ্ট দাম এবং বাকীতে কিনলে বেশী দাম। সেক্ষেত্রে মূল্য পরিশোধের মেয়াদও নির্দিষ্ট করে থাকি ৷
জানার বিষয় হলো,আমার এ লেনদেন জায়েয হবে কি না? আর যদি আমি এ লেনদেনটি ধানের মধ্যে করি৷ নগদে কম মূল্যে ধান কিনে বাকীতে নির্দিষ্ট মেয়াদে বেশী মূল্যে বিক্রি করি, তাহলে সেটি জায়েয হবে কি না? তেমনিভাবে এ লেনদেনটি যদি স্বর্ণের মধ্যে করি৷ অর্থাৎ নগদে কমমূল্যে স্বর্ণ কিনে বাকীতে নির্দিষ্ট মেয়াদে বেশী মূল্যে স্বর্ণ বিক্রি করি,তাহলে এটি জায়েয হবে কি না? অনেকে বলছেন, এভাবে লেনদেন সুদ হবে ৷ তাদের কথা সঠিক কি না? অনুগ্রহপূর্বক দলীলসহ সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
☞ উত্তরঃ
بسم الله الرحمن الر حيم
ফিকহের কিতাব সমূহে বর্নিত রয়েছে যে,ফুকাহায়ে কিরামের ঐক্যমতে বাকী ক্রয়-বিক্রয়ে নগদের তুলনায় কিছু মূল্য বৃদ্ধি করে বিক্রি করা জায়েয হবে। তবে অতি চড়া মূল্য বৃদ্ধি করা উচিত নয়। আল্লামা আব্দুল হক (রহঃ) তার ফাতোয়ার কিতাবে লেখেনঃ চার ইমাম এবং সমস্ত উলামায়ে কিরামের ঐক্যমতের রায় হলো,বাকিতে বিক্রয় করলে নগদের তুলনায় কিছূ মূল্য বৃদ্ধি করা জায়েয হবে। (ফাতওয়ায়ে হক্কানী ৬/১৪১)
'
সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত পদ্ধতিতে নগদের তুলানায় বাকিতে কিছু বেশি মূল্য নিয়ে বিক্রি করা জায়েয হবে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো,পরিশোধের সময় এবং পন্যের নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারন করে নিতে হবে। অর্থাৎ নগদ হলে এই পন্যটা ১০০,টাকা৷ আর বাকিতে হলে ১১০,টাকা। এভাবে পন্যের মূল্য ও পরিশোধের সময় নির্ধারন করা ব্যতীত বেচা-কেনা জায়েয হবে না। (আলমগীরী ৩/১৪২)
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ
অর্থাাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। (সুরা নিসা ২৯)
والله اعلم بالصواب
☞ হাওয়ালাঃ
ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৩/১৪২ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে শামী ৪/২৬ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে হক্কানী ৬/১৪১ পৃষ্ঠা৷
খুলাসাতুল ফতোয়া ৩/২৫ পৃষ্ঠা
ফতোয়ায়ে মাদানিয়া ১/৪৭৮ পৃষ্ঠা৷
আল মুহিতুল বুরহানী ১৪/৩৩ পৃষ্ঠা৷
বেহেশতী জেওর ৫/৪৯৬ পৃষ্ঠা৷
মিরআতুল মাজাল্লাহ ১/২৫ পৃষ্ঠা৷
আল-হিদায়া ৩/৬০ পৃষ্ঠা৷
No comments:
Post a Comment