১. প্রশ্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হলে।
২. শরীরের কোন অঙ্গ থেকে প্রবাহমান নাপাক বের হয়ে এমন জায়গায় গড়িয়ে পড়লে যা অজূর মধ্যে ধোয়া ফরজ।
৩. মুখ ভরে বমি করলে, তা পানি হোক,খাদ্য হোক,অথবা পিত্ত কিংবা জমাট রক্ত হোক ; (এসব কারণে) অজূ ভঙ্গ হয়ে যায়। বমিতে কফ বের হলে অজূ ভঙ্গ হয়না।
তবে ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) এর মতে কফ যদি মুখ ভরে বের হয় তাহলে অজূ ভেঙ্গে যাবে।
৪. থুথুর সঙ্গে রক্ত বেরিয়ে আসলে রক্ত যদি থুথুকে লাল বানিয়ে দেয় তাহলে অজূ ভেঙ্গে যাবে।
যদি কেউ একটু একটু করে কয়েক বার বমি করে;
তাহলে ইমাম আহমদ (রহ.) এর মতে বমির কারণ এক হলে আর ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) এর মতে বমির স্থান এক হলে সেগুলো একত্রিত করে দেখবে।
৫. চিৎ বা কাৎ হয়ে কিংবা এমন বস্তুর সঙ্গে হেলান দিয়ে ঘুমালে যা সরিয়ে নিলে লোকটি পড়ে যাবে; তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।
দাঁড়িয়ে কিংবা বসে,ঠেস না দিয়ে,সুন্নত তরিকায় রুকু বা সিজদায় ঘুমালে ওজূ ভাঙ্গবে না।
৬. পাগল, মাতাল বা বেহুশ হয়ে গেলে সর্বাবস্থায় ওজূ ভেঙ্গে যাবে।
প্রাপ্ত বয়স্ক রুকু সিজদা ওয়ালা নামাজে হা: হা: (খিল খিল) করে হাসলে ওজূ ভেঙ্গে যাবে।
৭. নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে।
হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। [সুনানে দারা কুতনি, হাদিস নং-৬১২]
৮. মুবাশারাতে ফাহেশা অর্থাৎ জড়াজড়ি অবস্থায় নারী -পুরুষের যৌনাঙ্গ পরস্পর মিলিত হলে তাতেও ওজু ভেঙ্গে যাবে।
৯. আবরণ বিহীন নিজের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে এবং পুরুষ আবরণ বিহীন নারীর গায়ে হাত দিলে ইমাম আবু হানীফার মতে ওজূ ভঙ্গ হবে না। অন্যান্য ইমামদের মতে ওজূ ভেঙ্গে যাবে।
১০. ইমাম আহমদ (রহ.) এর মতে উটের গোশত খাওয়াও অজূ ভঙ্গের কারণ।
সতর্কতার খাতিরে এর প্রতিটি থেকেই বেচে থাকা উচিত।
=============================================================
আবরণ বিহীন নিজের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে, অজু ভেঙ্গে যাবে তার দলিল :
৪। পুরুষাঙ্গ ছোঁয়া। দলিল হচ্ছে– বুসরা বিনতে সাফওয়ান (রাঃ) এর হাদিস তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে: “যে ব্যক্তি তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করেছে তার উচিত ওজু করা”।[সুনানে আবু দাউদ, তাহারাত অধ্যায়/১৫৪), আলবানী সহিহ সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (১৬৬) বলেছেন: সহিহ]
আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত,
.
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ سُلَيْمَانَ الْمُعَدَّلُ، بِالْفُسْطَاطِ، وَعِمْرَانُ بْنُ فَضَالَةَ الشَّعِيرِيُّ بِالْمَوْصِلِ، قَالا: حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الْهَمْدَانِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ، وَنَافِعِ بْنِ أَبِي نُعَيْمٍ القارئ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ : " إِذَا أَفْضَى أَحَدُكُمْ بِيَدِهِ إِلَى فَرْجِهِ، وَلَيْسَ بَيْنَهُمَا سِتْرٌ وَلا حِجَابٌ، فَلْيَتَوَضَّأ
.
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, তোমাদের কারো হাত লজ্জাস্থানের উপর লাগলে এবং হাত ও লজ্জাস্থানের মধ্যে কোনো আবরণ না থাকলে, তাকে ওযু করতে হবে।
সূত্র: ইবনে হিব্বান, হাদিস # 1118
৫। উটের গোশত খাওয়া। দলিল হচ্ছে জাবের বিন সামুরা (রাঃ) এর হাদিস: “এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি উটের গোশত খাওয়ার কারণে ওজু করব? তিনি বললেন: হ্যাঁ।”[সহিহ মুসলিম, হায়েয অধ্যায়/৫৩৯)]
======================================================
আর যারা বলেন, আবরণহীন নিজের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না, তাদের দলিল হচ্ছে ,
عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: سَأَلَ رَجُلٌ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيَتَوَضَّأُ أَحَدُنَا إِذَا مَسَّ ذَكَرَهُ؟ قَالَ: ” إِنَّمَا هُوَ بَضْعَةٌ مِنْكَ أَوْ جَسَدِكَ
কায়েশ বিন তালক তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করে যে, যে ব্যক্তি তার গোপনাঙ্গ স্পর্শ করেছে সে কি অজু করবে? রাসূল সাঃ বললেন, এটিতো তোমার একটি অঙ্গ বা বলেছেন তোমার শরীরের একটি অঙ্গ। [তাই এটি ধরলে অজু ভাঙ্গবে কেন?] {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬২৮৬}
================================
তবে, আমাদের মতে, সাবধানতার খাতিরে উপরে বর্ণিত, অজু ভঙ্গের সবগুলো বিষয় থেকেই বেচে থাকা উচিত।।
Jajakallah
ReplyDelete