১. প্রথমত মৃত ব্যক্তিকে ক্বিবলার দিকে সম্মুখে রেখে ইমাম ও মুসল্লিদের দাঁড়ানো।
২. মুসল্লীরা নামাজের অজুর ন্যায় অজু করে ইমামের পিছনে ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।
৩. মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার পাশে দাঁড়ানো। আর মহিলা হলে কফিনের মাঝ বরাবর দাঁড়ানো। মৃত ব্যক্তির মাঝ বরাবর দাঁড়ানোতে কোনো দোষ নেই।
৪. জানাযার নিয়ত করে চার তাকবিরের সহিত নামাজ আদায় করা।
৫. কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাঁধা।
৬. অন্যান্য নামাজের ন্যায় ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।
৭. ছানা পড়া (কেউ কেউ সুরা ফাতিহা পড়ে অন্যান্য সুরা মিলানোর কথা উল্লেখ করেছেন।)
৮. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরূদে ইবরাহিম পড়া।
৯. তৃতীয় তাকবির দিয়ে ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
১০. চতুর্থ তাকবির দিয়ে যথাক্রমে ডানে ও বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে জানাযার নামাজ শেষ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় এবং নিজেদের সাওয়াব বৃদ্ধিতে সুন্দরভাবে জানাযার নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আমাদের জীবদ্দশাতেই আমাদের চোখের সামন দিয়ে আমাদের প্রিয়জনেরা কবরস্থ হন। চলে যান দাদাজান, দাদুজান, নানা ও নানুজি। এমনকি বাবা-মা, নিজ সন্তান বা সহোদর ভাই বা বোনের মৃত্যুও কখনো আমাদের দেখতে হয়। আমরা এ অনিবার্য বাস্তবতার আঘাতে চূড়ান্ত ব্যথাতুর শোক-স্তব্ধ বিহ্বল হয়ে যাই।
কিন্তু সেই ক্ষণটা আরও খুব আফসোসের হয় যখন তাদের বিদায় দেবার সময় শেষ জানাযার নামাযটুকুও না জানার কারণে পড়তে পারি না। জানা থাকে না পদ্ধতি, কারো জানা থাকে না সহজ দু’আটিও। এ নিবন্ধে ইনশাআল্লাহ পাঠকদের জন্যে এমনই অজানাগুলো তুলে ধরা হবে।
প্রথমেই জেনে নিই জানাযার নামাযের ফযিলত
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের জানাযায় শরীক হয়ে নামায পড়ে এবং তাকে কবরও দেয় সে দু’কীরাত নেকী পায়। প্রত্যেক কীরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকী। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাযার নামায পড়ে এবং মাটি দেয় না সে এক কীরাত নেকী পাবে। -সহীহ বুখারী ও মুসলিম
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, কোন মুসলমানের জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেননি, যদি শরীক হয়ে ঐ লাশের জন্য দুআ করে তাহলে আল্লাহতা’য়ালা তাদের সুপারিশ নিশ্চয়ই কবুল করবেন। -সহীহ মুসলিম ও মিশকাত
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-যখন কোনো মুসলমানের ইন্তেকাল হয় এবং একশ জনের কাছাকছি সংখ্যক মুসলমান তাঁর জানাযার নামায পড়ে ও তাঁর জন্য সুপারিশ করে তো এই সুপারিশ কবুল করা হয়’। -জামে আত-তিরমীযি
উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে আমরা জানাযার নামাযে শরীক হওয়াতে নিজের ও মৃত ব্যক্তির লাভের কথা জানলাম। নিম্নে জানাযার নামাযের নিয়ম ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করা হল।
জানাযা নামাযের নিয়মঃ
১. প্রথম তাকবীরের পর ছানা পড়া
২. দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরূদ পড়া
৩. তৃতীয় তাকবীরের পর জানাযার দুআ পড়া
৪. চতুর্থ তাকবীরের পর সালাম ফিরানো।
হাত উঠানো : জানাযা নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরে হাত উঠাবে এছাড়া আর কোন তাকবীরে হাত ওঠানোর বিধান নেই।
জামাত যেভাবে দাঁড়াবে : জামাআতের সামনে কাফন ঢাকা লাশ রাখতে হবে। তার পেছনে লাশের সিনা বরাবর ইমাম দাঁড়াবেন। তার পেছনে মুক্তাদীরা কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবেন। সবাই মনে মনে ইচ্ছা করবেন : এই মৃত ব্যক্তির দুআর জন্য জানাযার নামায পড়ছি। মূলত এটাই হল নিয়ত।
জানাযা নামাযের নিয়ত :
শুদ্ধ আরবি জানা না থাকলে জানাযার নামাযসহ যে কোন নামাযের নিয়তই নিজের মাতৃভাষায় করাই উচিত। অর্থ না জেনে অশুদ্ধ আরবিতে নিয়ত করার বিশেষ কোন তাৎপর্য নেই। কেননা নিয়ত তো হল অন্তরের ইচ্ছা ও সংকল্পের নাম। তবু আগ্রহীদের জন্য নিম্নে আরবি নিয়ত উল্লেখ করছি।
نَوَيْتُ اَنْ اُوَدِّيْ لِلّٰهِ تَعَالٰى اَرْبَعَ تَكْبِرَاتٍ صَلْوَةِ الْجَنَازَةِ فِرْضِ الْكِفَايْةِا لثَّنَاءُ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَالصَّلَوةُ عَلٰى النَّبِي وَالدُّعَاءُ لِهَذَا الْمَيْتِ اِقْتَدَيْتُ بِهَذَاالاِمَامِ مُتَوَجِّهًا ا لٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفِةِ اَللهُ اَكْبَر.
বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উওয়াদ্দিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ তাকবীরাতিন সালাতিল জানাযাতি ফারদিল কেফাইয়তি আছ্ছানাউ লিল্লাহি ওয়াস সালাতু আলান্নাবীয়্যি ওয়াদ্দু’আউ লিহাযাল মাইয়্যিতি ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি-আল্লাহু আকবার।
নিয়তের অর্থ : (সংক্ষেপে) আল্লাহর জন্য আমি কেবলামুখী হয়ে চার তাকবীরের সাথে এই ইমামের পেছনে জানাযার ফরযে কেফায়া নামায আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।
নিয়ত করে ইমাম উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবার বলে অন্য নামাযের মত হাত বাঁধবে। এরপর ছানা পাঠ করবে।
মুক্তাদীগণ ইমামের অনুসরণ করে একইভাবে তাকবীর দিয়ে ছানা পড়বে। এরপর ইমাম হাত উত্তোলন না করেই উচ্চস্বরে দ্বিতীয় তাকবির দিবে। এরপর নিম্নস্বরে অন্য নামাযের দরূদের ন্যায় দরূদ পড়বে। মুক্তাদীরাও ঐরূপ করবে। দরূদ শেষ করে ইমাম তৃতীয় তাকবীর দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থাতেই মৃত ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে নিম্ন স্বরে এই দুআ পড়বে-
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِ نَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلٰى الْاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلٰى الْاِيْمَانِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগ ফিরলি হায়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সাগীরিনা ওয়া কাবীরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াহতাহু মিন্না ফাআহয়িহী আলাল ইসলামি ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহ আলাল ইমান।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং পুরুষ ও নারী – সকলকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাঁদেরকে জীবিত রেখেছেন ইসলামের উপর জীবিত রাখেন আর যাদেরকে মৃত্যু দান করেছেন তাদেরকে ঈমানের সাথেই মৃত্যু দান করেন।
আর জানাযা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কারো হলে উক্ত দুআর পরিবর্তে এই দুআ পড়বে :
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً ا وَّاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفِّعًا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাজ আলহু লানা ফারাতাও ওয়াজ আলহু লানা আজরাও ওয়াজ আলহু লানা শাফিআও ওয়া মুশাফফাআ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি তাকে আমাদের জন্য অগ্রবর্তী হিসেবে কবুল করুন, তাকে করুন আমাদের জন্য প্রতিদান স্বরূপ এবং তাকে বানান আমাদের জন্য সুপারিশকারী -যার সুপারিশ কবুল করা হবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক লাশ মেয়ের হলে ‘হু’ (هُ) স্থানে ‘হা’ (هَا) বলতে হবে। এই দুআ পাঠের পর ইমাম চতুর্থ তাকবীর বলে প্রথমে ডানে ও পরে বামে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি’ বলে সালাম ফিরাবে। মুক্তাদীরাও তার অনুকরণ করবে।
সংশ্লিষ্ট কিছু জরুরী মাসআলা :
মাসআলা : ছানা, দরূদ ও দুআর পরে যে আরো তিনবার তাকবীর বলতে হয় তখন ইমাম ও মোক্তাদীর হাত বাঁধা থাকবে।
মাসআলা : ইমাম তাকবীর ব্যতীত সবকিছুই চুপে চুপে বলবে, শুধু তাকবীর উচ্চস্বরে বলবে। মোক্তাদীরা তাকবীরসহ সবকিছুই আস্তে আস্তে বলবে।
মাসআলা : ডান দিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে ডান হাত এবং বাম দিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে বাম হাত নামিয়ে ফেলবে।
মাসআলা : জানাযার নামাযের পরে আর কোন দুআ বা মোনাজাত এক সাথে করার বিধান নেই।
মাসআলা : জানাযার নামায ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে (পানি নিকটে থাকা সত্ত্বেও) তায়াম্মুম করে জানাযায় শরীক হওয়া যায়।
মাসআলা : জুতা পায়ে রেখেও জানাযার নামায পড়া যায়। তবে শর্ত এই যে জুতার তলা এবং জুতার নিচে জায়গা পাক থাকতে হবে। আর যদি জুতা খুলে জুতার উপরে পা রেখে দাঁড়ায় তাহলে পায়ের সাথে লেগে থেকে জুতার উপরের অংশ পাক থাকলেই হবে।
জানাজার জন্য লাশ কিবলার দিকে রাখতে হবে। লাশ যদি পুরুষ হয় তবে, মাথার পাশ বরাবর ইমাম সাহেব দাঁড়াবেন। আর মহিলা হলে মধ্যবর্তী স্থানে দাঁড়াবেন, এটাই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের সুন্নত।
নামাজের নিয়ম:
জানাজার নামাজ চার তাকবীরের সঙ্গে আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তুলতে হয়, তবে জানাজার নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তোলার প্রয়োজন পড়ে না।
জানাজার নামাজের নিয়ত:
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
নিয়তের বাংলা উচ্চারন:
নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।
নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।
এখানে নিয়তে ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ পুরুষ/ছেলে লাশ হলে পড়তে হবে, আর লাশ নারী/মেয়ে হলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলতে হবে।
নিয়ত আরবিতে করতে না পারলে বাংলায় করলেও চলবে, আমি চার তাকবিরের সহিত ফরজে কিফায়া জানাজার নামাজ কিবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মরহুম ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলার) জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।
জানাজার নামাজে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও রাসূলের ওপর দরুদ পাঠ করা হয়। বাংলায় নিয়ত করলে তা বাংলায় বলে অথবা মনে মনে নিয়তে আনলেও চলবে।
নিয়তে তাকবীরে তাহরিমা অর্থাৎ, আল্লাহু আকবার বলার পর হাত তুলে তারপর অন্যান্য নামাজের মতো হাত বেঁধে নিতে হবে। হাত বেধে সানা পড়তে হবে।
আরবিতে সানা:
سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
বাংলা উচ্চারন:
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
সানা পড়ার পরে তাকবীর বলে দরুদ শরীফ পড়তে হবে যেটা সাধারন নামাজে তাশাহুদের পর পড়া হয়।
দরুদ শরীফ:
للَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদি ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
দরুদ শরীফ পড়ার পর তৃতীয় তাকবীর আদায় করে জানাজার দোয়া পড়তে হয়।
জানাজার দোয়া:
لَّهُمَّ اغْفِرْلحَيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَىالاْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَاَارْ حَمَالرَّحِمِيْنَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িইবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
তবে নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাজার দোয়া পড়তে হবে,
তবে নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাজার দোয়া পড়তে হবে,
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًاوْ اَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَا فِعًة وَمُشَفَّعًا
উচ্চারন:
আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাজার দোয়া পড়তে হবে,
للَّهُمَّ اجْعَلْهَ لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَ لَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهَ لَنَا شَا فِعً وَمُشَفَّعًا
উচ্চারন:
আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান। এরপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে একটু নীরব থেকে ডানে এবং বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
যদি কারো নামাজে আসতে দেরী হয়ে যায়, তবে ইমাম সাহেবকে অনুসরণ করতে হবে। সম্ভব হলে চার তাকবীর আদায় করে নিতে হবে, তা যদি সম্ভব না হয়, তবে ইমাম সাহবকে অনুসরণ করে সালাম ফিরিয়ে নিয়ে জানাজা নামাজ সম্পন্ন করবে। জানাজা নামাজ জামাতে আদায় করতে হয়,তাই এটি কাজা পড়ার সুযোগ নেই।
ফরজে কেফায়া হওয়ার কারণে জানাজার নামাজ সমাজের কিছু মানুষ আদায় করলে দায়মুক্ত হওয়া যাবে। তবে, কেউ আদায় না করলে একসঙ্গে সবাই পাপের ভাগীদার হবে। সমস্যা থাকলে বা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকলে একি এলাকার অন্য কেউ নামাজ পড়লে গুনাহগার হবে না।
হাদিসে আছে জানাজার নামাজে উহুদ পরিমাণ সাওয়াব আদায় হয়, তাই সুযোগ পেলে এই নামাজ ছাড়া উচিত নয়। এছাড়া একজন প্রতিবেশী হিসেবে, একজন আত্নীয় হিসেবেও এ নামাজ আদায় করা মুসলমানের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
==================================
==================================
জানাযার ফরজ ২টি ও সুন্নাত ৩টি ও জানাযা নামাযের নিয়ম :
মাসআলাঃ জানাযার ফরজ ২টি
(১)চার তাকবীর বলা (২)দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া (শামী -৩/২০৯
মাসআলাঃ জানাযার সুন্নাত ৩টি
(১)সানা পড়া (২) দুরুদ শরীফ পড়া (৩) দোআ পড়া।
মাসআলাঃ
শুধু জুতার উপরিভাগ পাক হলেই জুতা খুলে জুতার ওপর দাঁড়িয়ে নামায পড়া জায়েয নিচের অংশ পাক হোক বা নাপাক হোক। (মারাকিল ফালাহ -৫৮২,বাহরুর রায়েক - ২/৩১৫,ইমদয ফতওয়া -১৮৩২,আহসানুল ফাতওয়া -৪/২০২)
শুধু জুতার উপরিভাগ পাক হলেই জুতা খুলে জুতার ওপর দাঁড়িয়ে নামায পড়া জায়েয নিচের অংশ পাক হোক বা নাপাক হোক। (মারাকিল ফালাহ -৫৮২,বাহরুর রায়েক - ২/৩১৫,ইমদয ফতওয়া -১৮৩২,আহসানুল ফাতওয়া -৪/২০২)
জানাজার নামাজ
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করাইয়া, কাফন পরাইয়া তাহার মাগফিরাত ও পরকালে মুক্তির জন্য কতক লোক একত্র হইয়া যে নামায পড়িতে হয়, তাহাকে জানাযার নামায বলে। এই নামায মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া অথাৎ জানাযার সংবাদ শ্রবণকারী সকল লোকের পক্ষ হইতেই ফরয আদায় হইয়া যায়, আর কেহই আদায় না করিলে প্রত্যেককেই গুণাহ্গার হইতে হইবে।
লাশকে গোসল করাইয়া কাফন পরাইয়া একটি প্রশস্ত পবিত্র স্থানে খাটের উপরে উত্তর শিয়রী করিয়া শয়ন করাইবে; তারপর মৃতের যাবতীয় ঋণ ও দেনা ইত্যাদি শোধ বা মাফ করাইয়া তাহার সন্তান বা অন্য কোন ওলী ব্যক্তি নামাযের ইমামতী করিতে মৃতকে সম্মুখে রাখিয়া তাহার বক্ষ বরাবর দন্ডায়মান হইবেন। লাশের ওলী নিজে ইমামতী না করিলে তাহার অনুমতিক্রমে অন্য কোন পরহেজগার আলেম ব্যক্তি ইমাম নিযুক্ত হইবেন। ইমামের পিছনে মোক্তাদিরা তিন, পাঁচ বা সাত এইরূপ বে-জোড় কাতারে দাঁড়াইবে। এই নামায দাঁড়াইয়া আদায় করিতে হয়, ইহাতে কোন রুকু সিজদা বা বৈঠক ইত্যাদি নাই। এই নামায বসিয়া পড়িলে শুদ্ধ হইবে না।
জানাজার নামাজের নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিললাহে তায়ালা আরবাআ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিললাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতি এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আললাহু আকবার।
অনুবাদঃ আমি আললাহর উদ্দেশ্যে জানাযা নামাজের চারি তাকবীর ফরযে কেফায়া কেবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে আদায় করার মনস্থ করলাম। ইহা আললাহু তায়ালার প্রশংসা রাসূলের প্রতি দরূদ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া (আর্শীবাদ) আললাহ মহান।
[আর নিয়তের ‘লেহাযাল মাইয়্যেতি’ শব্দটি কেবল পুরুষ লাশের বেলায় বলিতে হইবে, কিন্তু স্ত্রী লাশ হইলে ঐ শব্দটির স্থলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতি’ বলিতে হইবে।]
জানাযা নামাযের নিয়ত করার পরে প্রথম তাক্বীর বলবে
সানা পড়ার পরে দ্বিতীয় তাকবীর বলবে
দরুদ শরীফ পড়ার পরে তৃতীয় তাকবীর বলবে
জানাযার দোয়া
উচ্চারণঃ আললাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহীদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আললাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
অনুবাদঃ হে আললাহ্ আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অনুপস্থিত বালকও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আললাহ! আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে মৃত্যু মুখে পতিত কর।
জানাযার দোয়া পড়ার পরে চার নং তাকবীর বলে সালাম ফিরাইবে
লাশ নাবালক ছেলে হলে নিমোক্ত দোয়া পড়তে হয়
উচ্চারণঃ আললাহুম্মাজ আল্হুলানা ফারতাঁও ওয়াজ আল্হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আল্হুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
অনুবাদঃহে আললাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।
লাশ নাবালক মেয়ে হলে নিমোক্ত দোয়া পড়তে হয়
উচ্চারণঃ আললাহুম্মাজ আল্হালানা ফারতাঁও ওয়াজ আল্হালানা আজরাঁও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়াহ।
অনুবাদঃ হে আললাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।
No comments:
Post a Comment