উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, এশরাক ও চাশত দুটি একই নামাজ। সূর্য ওঠার পর একটু দেরি করে পড়লে সেটাকে চাশতের নামাজ বলবেন এবং একটু আগে পড়লে সেটাকে এশরাকের নামাজ বলবেন। অর্থাৎ সূর্য উদয়ের পরপরই যদি আপনি নফল নামাজ পড়ে থাকেন, তাহলে সেটা এশরাকের নামাজ এবং সূর্য উদয়ের কিছুটা সময় পরে যদি আপনি আদায় করেন, যখন নাশতার সময় হয়ে যায় অথবা সূর্য একটু উত্তপ্ত হয়ে যায়, তখন সেই নামাজ চাশতের নামাজ হয়ে যাবে। আবার কোনো কোনো হাদিসের মধ্যে এসেছে, রাসুল (সা.) একে আউয়াবিনের নামাজ বলেছেন। সব নামাজ একই। একই বক্তব্য, একই কথা, শুধু সময়ের পার্থক্যের কারণে নামের মধ্যে পার্থক্য হয়েছে।
আবার ওয়াক্তের কারণে দুটির ফজিলতের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। ফজিলতের বিষয়েও ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। আবার এশরাকের নামাজ পড়লেই যথেষ্ট, আপনাকে আর চাশতের নামাজ আদায় করতে হবে না। তবে আপনি চাইলে এশরাক ও চাশত দুই নামাজ দুই ওয়াক্তে আদায় করতে পারবেন, এটি জায়েজ রয়েছে।
তার পরের মাসআলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলো, নফল বা অন্য অতিরিক্ত ইবাদত যেগুলো আছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে নিয়মিত আদায় করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যে আমলটি নিয়মিত করা হয়ে থাকে, সেটি যদিও কম হয়।’ তাই আপনি যদি এটি নিয়মিত করেন, তাহলে আপনার এই আমলটুকু আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার কাছে অত্যন্ত প্রিয় আমলে পরিণত হবে। এই জন্য নফল আমল বা অতিরিক্ত আমল কম করে হলেও আমরা নিয়মিত আদায়ের চেষ্টা করব, এটি হচ্ছে রাসুলের (সা.) সুন্নাহ। আল্লাহর নবী (সা.) কোনো নফল আমল শুরু করেন, কোনো কারণবশত হলেও মৃত্যুর আগপর্যন্ত সেই আমলকে তিনি ছেড়ে দেননি, বরং নিয়মিত সেই আমল করেছেন। এতেই প্রমাণিত হয়, নবী (সা.) মূলত নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেন, এটি সুন্নাহর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে কেউ যদি কোনোভাবে এই নফল আমলটুকুর মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন না। নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে গুনাহর মাস’আলাই আসবে না।
=================
ফজরের নামায পড়ার পর দুনিয়ার কাজকর্ম ও কথাবার্তা থেকে বিরত থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত স্বীয় নামাযের জায়গায় বা (পুরুষগণ) মসজিদে অন্যকোন জায়গায় বসে কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদিতে লিপ্ত থাকবেন। অতঃপর সূর্যোদয়ের ১২/১৩ মিনিট পর সূর্য একটু উপরে উঠলে তখন ইশরাকের সময় হয়–ঐ সময় দুই রাক‘আত ইশরাকের নামায পড়লে এক হজ্ব ও এক উমরার সমান ছাওয়াব লাভ হবে বলে হাদীসে রয়েছে। ((জামে তিরমিযী ১ : ১৩০) এতব্যতীত আরো দুই রাক‘আতসহ মোট চার রাক‘আত পড়লে আল্লাহ তা‘আলা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার এদিনের সকল কাজের জিম্মাদার হয়ে যান বলে অপর হাদীসে উল্লেখ আছে। (জামি তিরমিযী, ১ : ১০৮)নিয়ম হলো ফজরের নামাজের পর জায়নামাজ থেকে না ওঠে তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে রত থাকা এবং ওয়াক্ত হলেই এ নামাজ পড়ে নেয়া।অবশ্য যদি কেউ ফজরের নামাযের পর দুনিয়াবী কাজে লিপ্ত হয়ে যায় এবং সূর্য
ওঠার পর ইশরাক পড়ে, তাও জায়িয আছে। এতেও ইশরাক আদায় হবে।
=================
এশরাক সালাতের ফযিলত ও সময়
---------মুহাম্মদ শাহিন খাঁন✍
🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷
---------মুহাম্মদ শাহিন খাঁন✍
🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷🔷
"এশরাক " এর শব্দের অর্থ আলোকিত হওয়া , তাই জগত আলোকিত হওয়ার পর যে সালাত পড়তে হয় তাকে সালাতুল এশরাক বলা হয়।
এশরাক সালাতের সময়ঃ
➖➖➖➖➖➖➖
➖➖➖➖➖➖➖
🌴শামী কিতাবে লিখা আছে, সূর্য এক নেজা বা দুই নেজা পরিমান উঠলে এশরাকের নামাজ পড়বে| এ নেজার পরিমাণ ছয় হাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে|
ফিকহবীদগণের মতে এ সালাতের ওয়াক্ত সূর্য উদয়ের কমপক্ষে ২০ মিনিট পর শুরু হয়ে ২ ঘণ্টা অবধি থাকে।
ফিকহবীদগণের মতে এ সালাতের ওয়াক্ত সূর্য উদয়ের কমপক্ষে ২০ মিনিট পর শুরু হয়ে ২ ঘণ্টা অবধি থাকে।
🍃এশরাক সালাতের হুকুমঃ🍃
এশরাকের সালাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিন শুরু করতেন।
এ নামাজ পড়া মোস্তাহাব। নিয়ম হলো ফজরের নামাজের পর জায়নামাজ থেকে না ওঠে তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে রত থাকা এবং ওয়াক্ত হলেই এ নামাজ পড়ে নেয়া।
অবশ্য জায়নামাজ ছেড়ে ওঠে গেলেও এ নামাজ পড়া যায়, তবে সওয়াব আগের মতো হবে না।
এ নামাজ পড়া মোস্তাহাব। নিয়ম হলো ফজরের নামাজের পর জায়নামাজ থেকে না ওঠে তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে রত থাকা এবং ওয়াক্ত হলেই এ নামাজ পড়ে নেয়া।
অবশ্য জায়নামাজ ছেড়ে ওঠে গেলেও এ নামাজ পড়া যায়, তবে সওয়াব আগের মতো হবে না।
🌴তাবেঈ হযরত আসিম (রহঃ) বলেন, আমরা হযরত আলী (রা.) কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নফল নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মতো কার শক্তি আছে? আমরা বললাম, আপনি তাঁর আমল সম্পর্কে আমাদের বলুন। আমরা আমল করতে চেষ্টা করব। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর পড়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতেন। যখন সূর্য উপরে উঠত, উপরে ওঠার পরিমাণ ছিল আসরের ওয়াক্তের ন্যায়, (অর্থাৎ আসরের মুস্তাহাব ওয়াক্ত শেষ ; যা সূর্য পশ্চিমাংশ হলদে ভাব হওয়া থেকে সূর্য ডুবা পর্যন্ত সময়) তখন তিনি দুই রাকাত সালাত পড়তেন।
🌴বায়হাকি।
🔷এশরাক সালাতের রাকাত সংখ্যা🔷
🍃হযরত শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভি (রহ.) এর মতে, এশরাকের নামাজ দুই রাকাত। অবশ্য চার এমনকি ১২ রাকাত পড়ারও বিধান রয়েছে।
🌴এশরাক সালাতের ফযিলত🌴
🍃হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করে স্বীয় স্থানে বসে থাকে, তার জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। তারা এভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তার প্রতি দয়া করুন।
🍃মুসনাদে আহমদ।
🌴 হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে এরপর বসে থেকেই সূর্য না ওঠা পর্যন্ত জিকির-আজকারে নিমগ্ন থাকে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য একটি হজ ও ওমরার সওয়াব রয়েছে।
🍃তিরমিজি : ৫৮৬;
🌴হযরত আলী (রা.) এর বর্ণিত অপর এক হাদিসে এসেছে, 'যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করল এবং বসে বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করল, অতঃপর দুই রাকাত বা চার রাকাত নামাজ আদায় করল, জাহান্নামের আগুন তাকে স্পর্শ করবে না।
🍃বায়হাকি।
🍃আবু দাউদ।
🍃আবু দাউদ।
🌴হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, দিনের প্রথম ভাগে আমার জন্য চার রাকাত নামাজ নিশ্চিত করো, আমি দিনের শেষভাগে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব।
🍃মুসনাদে আহমদ, খন্ড- ২, পৃ. ৬১২;
🍃তিরমিজী শরীফ।
🍃তিরমিজী শরীফ।
🌴 ’মালাবুদ্দা মিনহু’ কিতাবে আছে, ফজরের নামাজের পর কিছু সময় জিকির-ফিকির, দোয়া-দরূদ, মোরাকাবা-মোশাহাদা ইত্যাদির মধ্যে মশগুল থাকার পর যে ব্যক্তি (সূর্যোদয়ের পর) দুই রাকায়াত এশরাকের নামাজ পড়বে তার আমলনামায় একটি পূর্ণ হজ্ব ও একটি পূর্ণ উমরার ছওয়াব লেখা হয়|
🌴হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্ললাহ পাক বলেন- যদি ঐ ব্যক্তি চার রাকায়াত এশরাকের নামাজ পড়ে তাহলে আমি আল্ললাহ পাক সারাদিন তার সাহায্যকারী হয়ে যাই|
🍃তিরমিযী শরীফ।
🌴 হযরত হাসান ইবনে আলী (রাঃ) বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে এই এরশাদ করিতে শুনিয়াছি যে, যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়িয় সূর্যোদয় পযর্ন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। অতঃপর ২ অথবা ৪ রাকাত এশরাকের নামায পড়ে দোযখের আগুন তাহার চামড়া (ও) স্পর্শ করিবে না।
🍃বাইহাকী ৪২০-৩; মুন্তাখাব হাদীস ২৫৪ পৃষ্ঠা।
🌴হযরত মুআয ইবনে আনাস জুহানি (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায শেষ করিয়া উক্ত জায়গায় বসিয় থাকে, ভাল কথা ছাড়া কোন কথা না বলে। অতঃপর দুই রাকাত এশরাকের নামায পড়ে তাহার গুনাহ মাফ হইয়া যায়, যদিও তাহা সমুদ্রের ফেনা হইতে অধিক হয়।
🍃আবু দাউদ শরীফ।
তাই আল্ললাহ পাকের অলীগণ এশরাক নামাজ নিজেরা যেভাবে পড়েছেন অন্যকেও সেভাবে পড়ার জন্য তাকীদ দিয়েছেন|
আল্লাহ্ আমাদের সকলকে এ সালাত নিয়মিত আদায়ের তৌফিক দান করুন। আমিন।
আল্লাহ্ আমাদের সকলকে এ সালাত নিয়মিত আদায়ের তৌফিক দান করুন। আমিন।
🌴🔷🍃🔷🌱🔷🌴🔷🍃🔷🌴
========================
চাশতের নামায :
সময়ের হিসাবে গ্রীষ্মকালে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়। আর শীতকালে শুরু হয় সকাল ১০টা থেকে। এ নামাজকে আরবিতে ‘সালাতুদ্দোহা’ বলা হয়।
চাশতের নামাজের রাকাতের সংখ্যা হাদিসে দুই, ছয়, আট ও বারো এসেছে। তাই চাশতের নামাজ কমপক্ষে দুই রাকাত পড়া আবশ্যক। দুই রাকাতের বেশি বারো রাকাত পর্যন্ত যতইচ্ছা পড়বে।
হজরত আয়েশা (রা.) আট রাকাত পড়তেন। তিনি বলতেন, যদি আমার মা-বাবাও কবর থেকে উঠে চলে আসেন, তাহলেও আমি তা ছাড়ব না। (মিশকাত শরিফ)
ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) এর বোন উম্মেহানি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন আমার ঘরে এসে দুপুরের পূর্বে চাশতের আট রাকাত নামাজ আদায় করেছেন। (বুখারি, হাদিস নং: ২০৭)
অন্য হাদিসে আছে, তিনি সংক্ষিপ্তভাবে তা আদায় করেছেন। তবে সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু এবং সিজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতার সঙ্গে ছিলেন। প্রতি দুই রাকাত পরপর সালাম ফিরিয়ে ছিলেন।
বুরাইদা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড় রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হল প্রত্যেকটি জোড়ের জন্য একটি করে সদকা করা।’
সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? তিনি (সা.) বললেন, মসজিদে কোথাও কারো থুতু পড়ে থাকতে দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত সালাতই এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং ৫২২২)
এই হাদিসটি মূলত চাশতের সালাত বা সালাতুদ্দুহার অপরিসীম গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই তুলে ধরে। এর থেকে আরো বোঝা যায়, চাশতের নামাজকবা সালাতুদ্দুহার মাধ্যমে ৩৬০টি সদকার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়।
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে আমল করার উপদেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসের প্রথম তিনদিন রোজা রাখা; চাশতের নামাজ (সালাতুদ্ দুহা) আদায় করা এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিতরের নামাজ আদায় করার। (বুখারি, হাদিস নং ২৭৪; মুসলিম, হাদিস নং ১৫৬০)
চাশতের নামাজ মুমিনদের জন্য উপহার স্বরূপ। এটা আদায় করলে আল্লাহ বিপুল পুণ্য ও সওয়াব দেবেন। আখেরাতে এর প্রতিদান দেবেন। তবে এই নামাজ না পড়লে কেউ গুনাহগার হবে না।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
এমএমইউ/এমএ
এমএমইউ/এমএ
No comments:
Post a Comment