------------
উত্তর: মেয়েদের জন্য মাথায় চুলের খোপা বাধা জায়েয। কিন্তু মাথার উপর উটের কুজের মত উঁচু করে বাধা বৈধ নয়। কিন্তু পেছনে ঘাড়ের কাছে ফেলে রাখতে কোন সমস্যা নেই-যাতে উঁচু দেখাবে না।
আবু হুরায়রা রা. ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
صنفان من أهل النار لم أرهما تيجان بأيديهن سياط يضربون بها الناس يعني ظلماً ونساء كاسيات عاريات مائلات مميلات رؤوسهن كأسمنة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا
“জাহান্নাম বাসী দুটি দল রয়েছে- যাদেরকে আমি এখনো দেখি নি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।” [মুসলিম : ২১২৮]
হাদিসের ভাষা হল: “উটের পিঠের কুজের মত”। মাথার উপর চুল বাঁধলে বা ঝুটি থাকলেই তখন উটের পিঠের কুজের মত দেখা যাবে; অন্যথায় নয়।
আল্লাহু আলাম।
-------------
উত্তর প্রদান:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
================
প্রশ্ন : ছালাত আদায়কালে মহিলাদের চুল বেঁধে খোপা করে রাখা যাবে, না ছেড়ে দিতে হবে?
উত্তর: অন্য সময়ের ন্যায় ছালাত আদায়কালেও মেয়েরা পর্দা রক্ষার সুবিধার্থে তাদের চুল পিছনে বেণী বা খোঁপাবদ্ধ রাখতে পারে। এটা মেয়েদের পর্দা রক্ষা এবং ছালাতে খুশূ-খুযূ বজায় রাখার সহায়ক। তবে তাদের খোঁপা উটের কুঁজোর মত (كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ) করে মাথার উপরে বাঁধা যাবে না। যেমনভাবে প্রাচীন যুগে মিসরীয় নারীরা বাঁধত। পর পুরুষকে আকৃষ্টকারী এইসব মহিলারা জাহান্নামী (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪ ‘ক্বিছাছ’ অধ্যায়; মিরক্বাত ৭/৯৬)।
এক্ষণে ছালাতের সময় মুছল্লী তার ৭টি অঙ্গের (কপাল, দু’হাত, দু’হাঁটু ও দু’পায়ের আঙ্গুলের মাথা) উপরে সিজদা করবে মর্মে ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীছের শেষাংশে যে বলা হয়েছে وَلاَ نَكْفِتَ الثِّيَابَ وَالشَّعَرَ ‘এবং আমরা যেন সিজদাকালে আমাদের কাপড় ও চুল গুটিয়ে না নেই’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা৮৮৭; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৮২৭ ‘সিজদা ও তার মাহাত্ম্য’ অনুচ্ছেদ; নায়লুল আওত্বার ৩/২২ পৃঃ), উক্ত বিষয়টি পুরুষের জন্য খাছ, মহিলাদের জন্য নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর এই নিষেধাজ্ঞা না জানার কারণে অনেক পুরুষ মুছল্লী ছালাতের সময়ে তাদের মাথার চুল বেঁধে নিতেন। একদা ইবনু আববাস (রাঃ) জনৈক বদরী ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনুল হারিছ (রাঃ) এর চুল খুলে দেন (ইবনু মাজাহ, আবুদাঊদ, তিরমিযী, নায়লুল আওত্বার ৩/২৩৫; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৮৬১ ছহীহ আবুদাঊদ হা/৬৪৬)। ইমাম শাওকানী উপরোক্ত হাদীছ দু’টির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন,والحديثان يدلان علي كراهية صلاة الرجل وهو معقوص الشعر ‘হাদীছ দু’টি পুরুষের জন্য চুল বাঁধা অবস্থায় ছালাত আদায় করা মাকরূহ সাব্যস্ত করে। হাফেয ইরাকী বলেন, এটি পুরুষের জন্য খাছ, মেয়েদের জন্য নয়। কেননা তাদের চুলও সতরের অন্তর্ভুক্ত, যা ছালাত অবস্থায় ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এছাড়াও খোঁপা বা বেণী খোলার মধ্যে তার জন্য বাড়তি কষ্ট ও ঝামেলা রয়েছে। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মেয়েদেরকে ফরয গোসলের মত গুরুত্বপূর্ণ সময়েও খোঁপা বা বেণী না খোলার অনুমতি দিয়েছেন (নায়লুল আওত্বার ৩/২৩৬-২৩৭ ‘পুরুষের জন্য চুল বাঁধা অবস্থায় ছালাত আদায়’ অনুচ্ছেদ)। শায়খ আলবানী বলেন, ويبدو أن هذا الحكم خاص بالرجال دون النساء ‘এটা স্পষ্ট যে, সিজদাকালে চুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ শুধুমাত্র পুরুষের জন্য খাছ, মহিলাদের জন্য নয়’ (ছিফাতু ছালাতিন নবী পৃঃ ১২৫)।
জমহূর বিদ্বানগণ বলেন, ‘পুরুষের জন্য মাথার চুল বাঁধা কেবল ছালাতের সময় নয় বরং সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। ইমাম নববী বলেন, এভাবেই ছাহাবায়ে কেরাম ও অন্যান্য বিদ্বানগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে এবং এটাই সঠিক’ (মির‘আত ৩/২০৭ হা/৮৯৪-এর ব্যাখ্যা)।
আল্লাহপাকআপনাকেউত্তমজাজাদানকরু। আমিন
ReplyDeleteইহাতে অনেক শিক্ষা আছে
ReplyDelete