(1) يَا أَيُّهَا
الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ
وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا
بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا
فَاطَّهَّرُوا وَإِن كُنتُم مَّرْضَىٰ أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ
مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً
فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ
مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَٰكِن يُرِيدُ
لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ﴿المائدة: ٦﴾
(৫-সুরা
মায়েদা:৬.) হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য তৈরী হও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও
হাত দু’টি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো, মাথার ওপর হাত বুলাও এবং পা দু’টি গোড়ালী
পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো।২৪ যদি তোমরা ‘জানাবাত’ অবস্থায় থাকো, তাহলে গোসল করে পাক সাফ
হয়ে যাও। ২৫ যদি তোমরা রোগগ্রস্ত হও বা সফরে থাকো অথবা তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি
মলমূত্র ত্যাগ করে আসে বা তোমরা নারীদেরকে স্পর্শ করে থাকো এবং পানি না পাও, তাহলে
পাক-পবিত্র মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও। তার ওপর হাত রেখে নিজের চেহারা ও হাতের ওপর
মসেহ করে নাও। ২৬ আল্লাহ তোমাদের জন্য জীবনকে সংকীর্ণ করে দিতে চান না কিন্তু তিনি
চান তোমাদেরকে পাক-পবিত্র করতে এবং তাঁর নিয়ামত তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ করে দিতে,২৭
হয়তো তোমরা শোকর গুজার হবে
[[টিকা:২৪) নবী ﷺ এ হুকুমটির যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা
থেকে জানা যায়, কুল্লি করা ও নাক সাফ করা ও মুখ ধোয়ার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া মুখমণ্ডল
ধোয়ার কাজটি কখনই পূর্ণতা লাভ করতে পারে না। আর কান যেহেতু মাথার একটি অংশ তাই মাথা
মসেহ করার মধ্যে কানের ভেতরের ও বাইরের উভয় অংশও শামিল হয়ে যায়। তাছাড়া অযু শুরু
করার আগে দু’হাত ধুয়ে নেয়া উচিত। কারণ যে হাত দিয়ে অযু করা হচ্ছে সে হাতেরই তো আগে
পাক-পবিত্র হবার প্রয়োজন রয়েছে।]]
[[টিকা:২৫) স্ত্রী সহবাসের কারণে ‘জানাবাত ’ হোক
বা স্বপ্নে বীর্য স্খলনের কারণে হোক উভয় অবস্থায়ই গোসল ওয়াজিব। এ অবস্থায় গোসল ছাড়া
নামায পড়া বা কুরআন স্পর্শ করা জায়েয নয়। (আরো বিস্তারিত জানার জন্য সূরা আন্
নিসার ৬৭, ৬৮ ও ৬৯ টীকা দেখুন)]]
[[টিকা:২৬) ব্যাখ্যার জন্য দেখুন সূরা আন নিসার ৬৯
ও ৭০ টীকা।]]
[[টিকা:২৭) আত্মার পবিত্রতা যেমন একটি নিয়ামত ঠিক তেমনি শরীরের
পবিত্রতাও একটি নিয়ামত। আর মানুষের ওপর আল্লাহর নিয়ামত তখনই সম্পূর্ণ হতে বা
পূর্ণতা লাভ করতে পারবে যখন সে আত্মা ও শরীর উভয়ের তাহারাত ও পাক-পবিত্রতা অর্জনের
জন্য পূর্ণ হেদায়াত লাভ করতে সক্ষম হবে।]] (۵:
۶)
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি ?
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি? ইমামদের মতামতসহ জানতে চাই!
অসংখ্য ধন্যবাদ! যিনি এই প্রশ্নটির উত্তর জানতে চেয়েছেন। আমি একজন অধ্যয়নরত তালিবুল ইলম। ইসলমী শরীয়ত বা বিধানের কোন সিদ্ধান্ত জানানোর মত শক্তি এখনো আমার হয়ে উঠেনি। তাই এখানে কেবল আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি। যেহেতু আপনি মাসআলাটি সবিস্তারে দলিল-প্রমাণসহ জানতে চাননি তাই আমি সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। হ্যা, ভবিষ্যতে কেউ সেভাবে জানতে চাইলে কোন প্রাজ্ঞ মুফতি সাহেবের সত্যয়নসহ আমরা তা পেশ করতে আন্তরিক থাকবো। ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন: ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি? জানিয়ে বাধিত করবেন!
উত্তর: ওযুর ফরজ চারটি এবং সেগুলোকে নিম্নে এক এক করে উল্লেখ করা হলো_
১. সমস্ত মুখ ধৌত করা তথা কপালের চুলের গোড়া থেকে নিয়ে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে নিয়ে অপর কানের লতি পর্যন্ত ধৌত করা।
২. উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।
৩. মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
১. সমস্ত মুখ ধৌত করা তথা কপালের চুলের গোড়া থেকে নিয়ে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে নিয়ে অপর কানের লতি পর্যন্ত ধৌত করা।
২. উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।
৩. মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
উপরে উল্লেখিত চারটি ফরয আইম্মায়ে আহনাফের নিকট এবং তাদের দলীল-প্রমাণ ও মূলনীতির উপর নির্ভর করে কোরআন ও হাদীস থেকে উপলব্ধ ও উৎসারিত। তবে অন্যান্য আইম্মায়ে কেরাম ওযুর ফরয কয়টি ও কি কি তা নিয়ে ভিন্নমত পোষন করেন।
* ইমাম শাফী রহ. বলেন:- ওযুর ফরয ছয়টি। উপরোক্ত ৬টি এবং
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব রক্ষা করা।
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব রক্ষা করা।
* ইমাম মালেক রহ. বলেন:- ওযুর ফরয ৭টি। উপরের প্রথমোক্ত দুইটি এবং
৩. সমস্ত মাথা মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব ঠিক রাখা।
৭. ধারাবাহিকভাবে ওযু করা তথা এক অঙ্গ শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে অপর অঙ্গ ধৌত করা।
৩. সমস্ত মাথা মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব ঠিক রাখা।
৭. ধারাবাহিকভাবে ওযু করা তথা এক অঙ্গ শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে অপর অঙ্গ ধৌত করা।
* ইমাম আহমদ রহ. বলেন:- ওযুর ফরয ৯টি। উপরের প্রথমোক্ত দুইটি এবং
৩. সমস্ত মাথা মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব ঠিক রাখা।
৭. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়া।
৮. কুলি করা।
৯. নাকে পানি দেয়া।
৩. সমস্ত মাথা মাসেহ করা।
৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা।
৫. নিয়ত করা।
৬. তারতীব ঠিক রাখা।
৭. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়া।
৮. কুলি করা।
৯. নাকে পানি দেয়া।
উল্লেখ্য: বাংলাদেশের অধিকাংশ জনসাধারণ হানাফী মাযহাব অনুসারে আমল করে থাকেন। তাই তাদের জন্য প্রথমোক্ত চারটি ফরযই প্রযোজ্য। তবে অন্যান্য ইমামগণ অতিরিক্ত যে বিষয়গুলোকে ফরয বলেছেন তা আইম্মায়ে আহনাফের নিকট সুন্নত।
তাই যদি একজন হানাফী মাযহাবের অনুসারী প্রতিটি সুন্নতসহ ওযু আদায় করে তাহলে সকল ইমামগণের মতানুসারে তার ওযু সহীহ হয়ে যাবে। আর আমাদের সেভাবেই ওযু করা উচিৎ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।
খুব সুন্দর উত্তর।জাজাকাল্লাহ।
ReplyDelete