হযরত মূসা (আঃ)-এর মধ্য দিয়ে আল্লাহ্র ব্যবস্থা স্থাপন
1পরে
মাবুদ মূসাকে বললেন, “হারুন, নাদব, অবীহূ আর বনি-ইসরাইলদের সত্তরজন বৃদ্ধ
নেতা এবং তুমি আমার কাছে উঠে এস। আসবার সময়ে তোমরা দূরে থেকে আমাকে সেজদা
করবে। 2কিন্তু তুমি একাই আমার কাছে এগিয়ে আসবে, অন্যেরা আসবে না। এরা ছাড়া অন্য বনি-ইসরাইলরা যেন তোমার সংগে উঠে না আসে।”
3মূসা
যখন ফিরে গিয়ে লোকদের কাছে মাবুদের সমস্ত কথা বললেন এবং তাঁর সব আইন ঘোষণা
করলেন তখন লোকেরা একসংগে বলল, “মাবুদ যা যা বলেছেন আমরা তা সবই করব।” 4মাবুদ যে সব কথা বলেছিলেন মূসা তা লিখে রাখলেন।
পরের
দিন মূসা খুব সকালে উঠে পাহাড়ের নীচে একটা কোরবানগাহ্ তৈরী করলেন এবং
ইসরাইলীয় বারো গোষ্ঠীর কথা মনে করে বারোটা পাথরের থাম তৈরী করলেন। 5তারপর
তিনি কয়েকজন ইসরাইলীয় যুবককে পাঠিয়ে দিলেন আর তারা গিয়ে মাবুদের উদ্দেশে
অনেকগুলো পোড়ানো-কোরবানী দিল এবং যোগাযোগ-কোরবানী হিসাবে অনেক ষাঁড়ও
কোরবানী দিল। 6মূসা কোরবানীর রক্তের অর্ধেকটা নিয়ে কয়েকটা পাত্রে রাখলেন এবং বাকী অর্ধেক তিনি কোরবানগাহের উপরে ছিটিয়ে দিলেন। 7তারপর তিনি ব্যবস্থা-লেখা কিতাবটা নিয়ে লোকদের তেলাওয়াত করে শোনালেন।
এর জবাবে লোকেরা বলল, “আমরা বাধ্য থাকব এবং মাবুদ যা যা বলেছেন তা সবই পালন করব।”
8এই
কথা শুনে মূসা রক্ত নিয়ে লোকদের উপর ছিটিয়ে দিয়ে বললেন, “এই সেই ব্যবস্থার
রক্ত, যে ব্যবস্থা মাবুদ তোমাদের জন্য এই সব কথা অনুসারে স্থির করেছেন।”
9-10এর
পর মূসা, হারুন, নাদব, অবীহূ এবং বনি-ইসরাইলদের সত্তরজন বৃদ্ধ নেতা
পাহাড়ের উপর উঠে গিয়ে বনি-ইসরাইলদের আল্লাহ্কে দেখলেন। তাঁর পায়ের তলায়
ছিল পরিষ্কার আকাশের মত নীলকান্তমণি দিয়ে তৈরী মেঝের মত একটা কিছু। 11বনি-ইসরাইলদের এই সব নেতারা যদিও আল্লাহ্কে দেখলেন তবু তিনি তাঁদের মেরে ফেললেন না। তাঁরা তাঁকে দেখলেন এবং খাওয়া-দাওয়া করলেন।
তুর পাহাড়ের উপর হযরত মূসা (আঃ)
12তারপর
মাবুদ মূসাকে বললেন, “তুমি পাহাড়ের উপরে আমার কাছে উঠে এসে কিছুকাল এখানেই
থাক। লোকদের শিক্ষা দেবার জন্য পাথরের যে ফলকের উপর আমি শরীয়ত ও হুকুম
লিখে রেখেছি তা আমি তোমাকে দেব।”
13এই কথা শুনে মূসা তাঁর সাহায্যকারী ইউসাকে নিয়ে রওনা হলেন। তারপর তিনি আল্লাহ্র পাহাড়ে গিয়ে উঠলেন। 14তিনি
বৃদ্ধ নেতাদের বলে গেলেন, “আমরা ফিরে না আসা পর্যন্ত আপনারা এখানেই
অপেক্ষা করুন। হারুন আর হূর আপনাদের সংগে রইলেন। ঝগড়া-বিবাদ হলে লোকেরা যেন
তাঁদের কাছে যায়।”
15মূসা পাহাড়ে উঠবার সময় পাহাড়টা মেঘে ঢেকে গেল, 16আর
তুর পাহাড়ের উপর মাবুদের মহিমা স্থির হয়ে রইল। ছয় দিন পর্যন্ত পাহাড়টা
মেঘে ঢাকা রইল। তারপর সপ্তম দিনে সেই মেঘের মধ্য থেকে মাবুদ মূসাকে ডাকলেন।
17বনি-ইসরাইলদের চোখে মাবুদের মহিমা জ্বলন্ত আগুনের মত হয়ে পাহাড়ের চূড়ায় দেখা দিল। 18পাহাড় বেয়ে উঠতে উঠতে মূসা সেই মেঘের ভিতরে ঢুকে গেলেন। তিনি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সেই পাহাড়ে রইলেন।
নির্গমন পুস্তক - ২৫
মাবুদের আবাস-তাম্বুর জন্য দান
1মাবুদ মূসাকে বললেন, 2“বনি-ইসরাইলদের বল যেন তারা আমার জন্য দান নিয়ে আসে। নিজের ইচ্ছায় যারা তা আনবে তুমি তাদের কাছ থেকে তা বুঝে নেবে। 3তারা যেন এই সব দান আনে: সোনা, রূপা ও ব্রোঞ্জ; 4নীল, বেগুনে ও লাল রংয়ের সুতা এবং মসীনা সুতা; ছাগলের লোম; 5লাল রং-করা ভেড়ার চামড়া এবং শুশুকের চামড়া; বাব্লা কাঠ; 6আলো জ্বালাবার জন্য জলপাইয়ের তেল; অভিষেক-তেল ও খোশবু ধূপের জন্য মসলা; 7এফোদ ও বুক-ঢাকনের উপরে বসাবার জন্য বৈদূর্যমণি এবং অন্যান্য দামী পাথর। 8বনি-ইসরাইলদের দিয়ে তুমি আমার থাকবার জন্য একটা পবিত্র জায়গা তৈরী করিয়ে নেবে। তাতে আমি তাদের মধ্যে বাস করব। 9যে নমুনা আমি তোমাকে দেখাতে যাচ্ছি ঠিক সেই রকম করেই তুমি আমার এই আবাস-তাম্বু ও সব আসবাবপত্র তৈরী করাবে।
সাক্ষ্য-সিন্দুক
10“বাব্লা-কাঠ দিয়ে তারা একটা সিন্দুক তৈরী করবে। সেটা লম্বায় হবে আড়াই হাত, চওড়ায় ও উচ্চতায় দেড় হাত। 11তার ভিতর ও বাইর খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে এবং তার চার কিনারা ধরে থাকবে সোনার নক্শা। 12ছাঁচে ফেলে চারটা সোনার কড়া তৈরী করে তার চারটা পায়ায় লাগাতে হবে- এপাশে দু’টা, ওপাশে দু’টা। 13তারপর বাব্লা কাঠ দিয়ে দু’টা ডাণ্ডা তৈরী করে তা সোনা দিয়ে মুড়িয়ে নিতে হবে। 14সিন্দুকটা বয়ে নেবার জন্য তার দুই পাশের কড়ার মধ্য দিয়ে সেই ডাণ্ডা দু’টা ঢুকিয়ে দেবে। 15ডাণ্ডা দু’টা সেই সিন্দুকের কড়ার মধ্যে ঢুকানোই থাকবে; সেগুলো খুলে নেওয়া চলবে না। 16যে সাক্ষ্য-ফলক আমি তোমাকে দেব তা তুমি এই সিন্দুকের মধ্যে রাখবে।
17“খাঁটি
সোনা দিয়ে সেই সিন্দুকের জন্য একটা ঢাকনা তৈরী করাবে, যার উপর গুনাহ্
ঢাকা দেওয়া হবে। এই ঢাকনাটা লম্বায় হবে আড়াই হাত এবং চওড়ায় দেড় হাত। 18সেই ঢাকনার কিনারায় সোনা পিটিয়ে দু’টি কারুবী তৈরী করাতে হবে। 19কারুবী
দু’টি সিন্দুকের দুই কিনারায় থাকবে। সেই কারুবী দু’টি এমনভাবে ঢাকনা থেকে
তৈরী করাতে হবে যাতে সমস্তটা মিলে মাত্র একটা জিনিসই হয়। 20তাদের
ডানাগুলো উপর দিকে মেলে দেওয়া থাকবে এবং তার ছায়ার নীচে থাকবে সিন্দুকের
ঢাকনাটা। কারুবীরা সামনাসামনি দাঁড়িয়ে থাকবে এবং তাদের চোখ থাকবে ঢাকনাটার
দিকে। 21এই ঢাকনাটা সিন্দুকের উপর রাখতে হবে এবং যে সাক্ষ্য-ফলক আমি তোমাকে দেব সেটা তুমি সেই সিন্দুকের মধ্যে রাখবে। 22এই সাক্ষ্য-সিন্দুকের ঢাকনার উপরে কারুবী দু’টির মাঝখানে আমি তোমার সংগে দেখা করে বনি-ইসরাইলদের জন্য আমার সমস্ত হুকুম তোমাকে দেব।
আবাস-তাম্বুর টেবিল
23“বাব্লা কাঠ দিয়ে দুই হাত লম্বা, এক হাত চওড়া ও দেড় হাত উঁচু করে একটা টেবিল তৈরী করাতে হবে। 24খাঁটি সোনা দিয়ে সেটা মুড়িয়ে দেবে এবং তার চার কিনারা ধরে থাকবে সোনার নক্শা। 25টেবিলটার চারপাশের কিনারায় চার আংগুল উঁচু করে একটা বেড় তৈরী করাতে হবে, আর তার উপরেও সোনা দিয়ে নক্শার কাজ করাতে হবে। 26টেবিলের চার কোণাতে চার পায়ার উপরে চারটা সোনার কড়া তৈরী করিয়ে লাগিয়ে দিতে হবে। 27সেই কড়াগুলো টেবিলের কিনারায় ঐ উঁচু বেড়ের কাছাকাছি থাকবে যাতে টেবিলটা বয়ে নেবার জন্য সেগুলোর মধ্য দিয়ে ডাণ্ডা ঢুকানো যায়। 28ডাণ্ডা দু’টা বাব্লা কাঠ দিয়ে তৈরী করে সোনা দিয়ে মুড়াতে হবে এবং তা দিয়ে টেবিলটা বয়ে নিতে হবে। 29টেবিলের বড় এবং ছোট থালাগুলো আর যে সব কলসী ও পেয়ালা থেকে ঢালন-কোরবানীর জিনিস ঢালতে হবে তা সবই খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করাতে হবে। 30সেই টেবিলের উপরে আমার সামনে পবিত্র-রুটি রাখতে হবে, আর তা যেন সব সময় সেখানে থাকে।
সোনার বাতিদান
31“খাঁটি
সোনা দিয়ে একটা বাতিদান তৈরী করাতে হবে। তার নীচের অংশ এবং তা থেকে উঠে
যাওয়া ডাঁটিটা সোনা পিটিয়ে তৈরী করাবে। তার ফুলের মত পেয়ালাগুলো, কুঁড়ি ও
ফুল বাতিদান থেকে বের হয়ে আসবে এবং সমস্তটা মিলে মাত্র একটা জিনিসই হবে। 32বাতিদানের দু’পাশ দিয়ে তিনটা তিনটা করে মোট ছয়টা ডাল থাকবে। 33ফুল
ও কুঁড়িসুদ্ধ বাদাম ফুলের মত দেখতে তিনটা পেয়ালা প্রথম ডালের মাঝে মাঝে
থাকবে। তার পরের ডালেও ঐ রকম তিনটা পেয়ালা থাকবে। বাতিদান থেকে বের হয়ে আসা
ছয়টা ডাল একই রকম হবে। 34বাতিদানের ডাঁটিটার মাঝে মাঝেও ফুল ও কুঁড়িসুদ্ধ বাদাম ফুলের মত দেখতে চারটা পেয়ালা থাকবে। 35বাতিদান
থেকে বের হয়ে আসা মোট ছয়টা ডালের মধ্যে প্রথম দু’টা যেখানে মিশবে তার নীচে
থাকবে একটা কুঁড়ি, দ্বিতীয় দু’টার নীচে আর একটা কুঁড়ি এবং তৃতীয় দু’টার
নীচে আর একটা কুঁড়ি। 36কুঁড়ি এবং ডাল সবই বাতিদান থেকে বের হয়ে আসবে এবং সমস্তটা মিলে একটা জিনিসই হবে। সবটাই খাঁটি সোনা পিটিয়ে তৈরী করাতে হবে। 37তারপর
খাঁটি সোনা দিয়ে সাতটা বাতি তৈরী করিয়ে ঐ বাতিদানের উপর এমনভাবে বসাতে হবে
যাতে বাতিগুলো জ্বালালে পর বাতিদানের সামনের জায়গাটায় আলো পড়ে। 38সল্তে পরিষ্কার করবার চিম্টা এবং সল্তের পোড়া অংশ রাখবার জন্য কয়েকটা পাত্রও খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করাতে হবে। 39সব কিছু সুদ্ধ বাতিদানটা তৈরী করবার জন্য ত্রিশ কেজি খাঁটি সোনা দরকার হবে। 40এই পাহাড়ের উপরে তোমাকে যে নমুনা দেখানো হল ঠিক সেইমতই যেন সব কিছু তৈরী করা হয় তা দেখো।
নির্গমন পুস্তক : ২৬
আবাস-তাম্বু
1“আমার
আবাস-তাম্বু দশ টুকরা কাপড় দিয়ে তৈরী করাতে হবে। টুকরাগুলো পাকানো মসীনা
সুতা এবং নীল, বেগুনে ও লাল রংয়ের সুতা দিয়ে তৈরী করাতে হবে। ওস্তাদ কারিগর
দিয়ে তার মধ্যে কারুবীদের ছবি বুনিয়ে নেবে। 2টুকরাগুলো সব একই মাপের হবে- লম্বায় আটাশ হাত এবং চওড়ায় চার হাত। 3টুকরাগুলো পাঁচটা পাঁচটা করে একসংগে জুড়ে দু’টা বড় টুকরা করতে হবে। 4প্রথম বড় টুকরাটার একপাশের চওড়ার দিকের কিনারা ধরে নীল সুতা দিয়ে কতগুলো ফাঁস তৈরী করাবে। দ্বিতীয় বড় টুকরাতেও ঠিক তা-ই করাতে হবে। 5এইভাবে
পঞ্চাশটা ফাঁস প্রথম বড় টুকরার কিনারায় এবং আরও পঞ্চাশটা ফাঁস দ্বিতীয় বড়
টুকরার কিনারায় থাকবে। দুই বড় টুকরার এই ফাঁসগুলো একটা আর একটার ঠিক উল্টা
দিকে থাকবে। 6তারপর
পঞ্চাশটা সোনার আংটা তৈরী করে সেগুলো ফাঁসের মধ্যে ঢুকিয়ে সেই বড় টুকরা
দু’টা আট্কে দিতে হবে। তাতে দু’টা বড় টুকরা দিয়ে একটা আবাস-তাম্বু হবে।
7“আবাস-তাম্বুর উপরের অংশ ঢেকে দেবার জন্য ছাগলের লোম দিয়ে চাদরের মত করে এগারটা টুকরা বুনিয়ে নিতে হবে। 8টুকরাগুলো একই মাপের হবে- ত্রিশ হাত লম্বা ও চার হাত চওড়া। 9তা
থেকে পাঁচটা টুকরা একসংগে জুড়ে নিয়ে একটা বড় টুকরা করতে হবে। বাকী ছয়টা
টুকরা একসংগে জুড়ে নিয়ে আর একটা বড় টুকরা করতে হবে। এই বড় টুকরার মধ্যে যে
টুকরাটা বেশী থাকবে সেটা তাম্বুর সামনের দিকে দু’ভাঁজ করে দিতে হবে। 10প্রথম বড় টুকরাটা একপাশের চওড়ার দিকের কিনারা ধরে পঞ্চাশটা ফাঁস তৈরী করাতে হবে; দ্বিতীয় বড় টুকরাতেও ঠিক তা-ই করাতে হবে। 11তারপর
ব্রোঞ্জ দিয়ে পঞ্চাশটা আংটা তৈরী করিয়ে তা ফাঁসের মধ্য দিয়ে ঢুকিয়ে সেই বড়
টুকরা দু’টা একসংগে আট্কে দিতে হবে। তাতে বড় টুকরা দু’টা মিলে একটা
তাম্বু-ঢাকন হবে। 12প্রথম বড় টুকরাটার যে অর্ধেকটা পিছন দিকে ঝুলে পড়বে সেটা সেইভাবেই থাকবে। 13ছাগলের লোমের টুকরাখানা তলার কাপড় থেকে দু’পাশে এক হাত করে বড় হবার দরুন তা দু’পাশে ঝুলে পড়ে গোটা আবাস-তাম্বুটা ঢেকে ফেলবে। 14তার
উপরটা ঢেকে দেবার জন্য লাল রং করা ভেড়ার চামড়া দিয়ে একটা ঢাকনি তৈরী করাতে
হবে, আর তার উপরটা ঢেকে দিতে হবে শুশুকের চামড়ার ঢাকনি দিয়ে।
15“আবাস-তাম্বুর জন্য বাব্লা কাঠ দিয়ে কতগুলো খাড়া ফ্রেম তৈরী করাতে হবে। 16প্রত্যেকটা ফ্রেম দশ হাত লম্বা আর দেড় হাত চওড়া হবে। 17প্রত্যেক ফ্রেমের দু’টা করে পায়া থাকবে। আবাস-তাম্বুর সব ফ্রেমগুলো একই রকম করে তৈরী করাতে হবে। 18দক্ষিণ দিকের জন্য বিশটা ফ্রেম তৈরী করাতে হবে। 19ঐ
ফ্রেমগুলোর প্রত্যেকটা পায়ার নীচে বসাবার জন্য চল্লিশটা রূপার পা-দানি
তৈরী করাবে- প্রত্যেকটা ফ্রেমের জন্য দু’টা করে, অর্থাৎ প্রত্যেকটা পায়ার
জন্য একটা করে। 20-21আবাস-তাম্বুর
অন্য দিকের জন্যও, অর্থাৎ উত্তর দিকের জন্যও বিশটা ফ্রেম এবং প্রত্যেকটা
ফ্রেমের জন্য দু’টা করে মোট চল্লিশটা রূপার পা-দানি তৈরী করাবে। 22তাম্বুর পশ্চিম দিকের জন্য, অর্থাৎ পিছন দিকের জন্য ছয়টা ফ্রেম, 23আর পিছন দিকের দুই কোণার জন্যও আরও দু’টা ফ্রেম তৈরী করাবে। 24এই
ফ্রেম দু’টার প্রত্যেকটা দুই কোণার দু’টা ফ্রেমের সংগে একত্র করে নীচ থেকে
উপর পর্যন্ত জোড়া দিতে হবে। প্রত্যেকটি কোণার দুই ফ্রেম ও পাশের ফ্রেমটা
আংটা দিয়ে একসংগে জুড়ে দিতে হবে। দুই কোণা একই রকম হবে। 25এতে পিছন দিকে আটটা ফ্রেম হবে এবং প্রত্যেকটা ফ্রেমের নীচে দেবার জন্য দু’টা করে মোট ষোলটা রূপার পা-দানি থাকবে।
26-27“আবাস-তাম্বুর
ফ্রেমগুলোর জন্য বাব্লা কাঠের হুড়কা তৈরী করাতে হবে। এর মধ্যে পাঁচটা
হুড়কা হবে একদিকের ফ্রেমের জন্য এবং পাঁচটা অন্য দিকের ফ্রেমের জন্য আর
পাঁচটা পিছনের, অর্থাৎ পশ্চিম দিকের ফ্রেমের জন্য। 28উপর এবং নীচের হুড়কাগুলোর মধ্যেকার লম্বা হুড়কাটা ফ্রেমের মাঝখান দিয়ে এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত চলে যাবে। 29ফ্রেমগুলো
সোনা দিয়ে মুড়াতে হবে এবং হুড়কাগুলো ঢুকাবার জন্য সোনার কড়া তৈরী করে
ফ্রেমে লাগাতে হবে। সেই হুড়কাগুলোও সোনা দিয়ে মুড়িয়ে নেবে।
30“এই পাহাড়ের উপরে তোমাকে আবাস-তাম্বুর যে নমুনা দেখানো হল তুমি ঠিক সেইমত করেই সেটা তৈরী করাবে।
31“নীল,
বেগুনে ও লাল রংয়ের সুতা এবং পাকানো মসীনা সুতা দিয়ে একটা পর্দা তৈরী
করাবে। ওস্তাদ কারিগর দিয়ে তার উপরে কারুবীদের ছবি বুনিয়ে নেবে। 32সেই
পর্দাটা বাব্লা কাঠের চারটা খুঁটির সংগে লাগানো সোনার হুক থেকে ঝুলিয়ে
দিতে হবে। খুঁটিগুলো সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে এবং সেগুলো রূপার পা-দানির
উপর দাঁড়িয়ে থাকবে। 33পর্দাটা
উপরের মসীনার কাপড়ে লাগানো আংটার নীচে ঝুলানো থাকবে। এই পর্দার পিছনে
সাক্ষ্য-সিন্দুকটি রাখবে। পর্দাটা মহাপবিত্র স্থান ও পবিত্র স্থানের
মাঝখানে থেকে দু’টি স্থানকে আলাদা করে রাখবে। 34এই মহাপবিত্র স্থানের ভিতরে সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরে তার ঢাকনাটা রাখবে। 35এই পর্দাটার বাইরে পবিত্র স্থানের মধ্যে উত্তর পাশে টেবিলটা রাখতে হবে আর তার উল্টাদিকে দক্ষিণ পাশে থাকবে বাতিদানটা।
36“তাম্বুর
দরজার জন্যও একটা পর্দা তৈরী করাতে হবে। সেটা হবে নীল, বেগুনে ও লাল রংয়ের
সুতা এবং পাকানো মসীনা সুতা দিয়ে সেলাই করে নক্শা করা জিনিস। 37এই
পর্দার জন্য সোনার হুক এবং বাব্লা কাঠের পাঁচটা খুঁটি তৈরী করাবে।
খুঁটিগুলো সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। সেই খুঁটিগুলো বসাবার জন্য ব্রোঞ্জ
দিয়ে পাঁচটা পা-দানি তৈরী করাবে।
নির্গমন পুস্তক : ২৭
পোড়ানো-কোরবানগাহ্
1“বাব্লা কাঠ দিয়ে পাঁচ হাত লম্বা, পাঁচ হাত চওড়া ও তিন হাত উঁচু করে একটা চারকোনা বিশিষ্ট কোরবানগাহ্ তৈরী করাবে। 2কোরবানগাহ্টি
তৈরী করবার সময় তার চার কোণার কাঠ এমনভাবে চেঁছে ফেলতে হবে যাতে চারটা শিং
তৈরী হয়। তাতে শিংসুদ্ধ কোরবানগাহ্টি একটা গোটা জিনিস হবে। ব্রোঞ্জ দিয়ে
সমস্ত কোরবানগাহ্টি মুড়ে দেবে। 3কোরবানগাহের
ছাই ফেলবার পাত্র ও হাতা, কোরবানীর রক্ত রাখবার পেয়ালা, গোশ্ত তুলবার
কাঁটা এবং আগুন রাখবার পাত্র সবই ব্রোঞ্জের তৈরী হবে। 4ব্রোঞ্জ দিয়ে একটা ঝাঁঝরি, অর্থাৎ জাল্তি তৈরী করাবে। তার চার কোণায় চারটা ব্রোঞ্জের কড়া লাগাবে। 5কোরবানগাহের চারপাশ থেকে বের হয়ে আসা তাকের নীচে এই ঝাঁঝরি রাখবে। সেটা কোরবানগাহের নীচ থেকে উপরের দিকে মাঝামাঝি জায়গায় থাকবে। 6কোরবানগাহের জন্য বাব্লা কাঠ দিয়ে দু’টা ডাণ্ডা তৈরী করাতে হবে এবং সেই ডাণ্ডা দু’টা ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। 7এই ডাণ্ডাগুলো কড়ার মধ্য দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হবে। তাতে কোরবানগাহ্টি বয়ে নেবার সময় ডাণ্ডাগুলো কোরবানগাহের দু’পাশে থাকবে। 8কোরবানগাহ্টি
তক্তা দিয়ে তৈরী হবে এবং তার ভিতরটা ফাঁকা থাকবে। এই পাহাড়ের উপরে তোমাকে
যেমন দেখানো হল ঠিক তেমনি করেই তুমি সেটা তৈরী করাবে।
আবাস-তাম্বুর উঠান
9“আবাস-তাম্বুর চারদিকে একটা উঠান থাকবে। এর দক্ষিণ দিকটা হবে একশো হাত। সেই দিকে থাকবে পাকানো মসীনা সুতার পর্দা। 10সেই
পর্দাগুলো খাটাবার জন্য বিশটা খুঁটি থাকবে। খুঁটির নীচে থাকবে একটা করে
ব্রোঞ্জের পা-দানি, আর খুঁটির সংগে লাগানো থাকবে রূপার হুক আর বাঁধন-পাত। 11উঠানের
উত্তর দিকটাও হবে একশো হাত। সেখানেও থাকবে পর্দা, বিশটা খুঁটি, বিশটা
ব্রোঞ্জের পা-দানি এবং খুঁটির সংগে থাকবে রূপার হুক আর বাঁধন-পাত।
12“উঠানের পশ্চিম দিকটা হবে পঞ্চাশ হাত। সেখানেও কতগুলো পর্দা ও দশটা খুঁটি থাকবে আর খুঁটির নীচে থাকবে একটা করে পা-দানি। 13উঠানের পূর্ব দিকটাও হবে পঞ্চাশ হাত। 14-15সেখানকার দরজার দু’পাশে থাকবে পনের হাত করে কতগুলো লম্বা পর্দা এবং তিনটা করে খুঁটি ও পা-দানি।
16“উঠানের
দরজার জন্য চারটা খুঁটি, চারটা পা-দানি এবং বিশ হাত লম্বা একটা পর্দা
থাকবে। পর্দাটা হবে নীল, বেগুনে ও লাল রংয়ের সুতা এবং পাকানো মসীনা সুতার
একটা নক্শা করা জিনিস। 17উঠানের চারদিকের সব খুঁটিতে রূপার হুক ও বাঁধন-পাত এবং ব্রোঞ্জের পা-দানি থাকবে। 18উঠানটা
লম্বায় হবে একশো হাত এবং পাশে পঞ্চাশ হাত। তার চারদিকের পর্দাগুলো পাঁচ
হাত করে উঁচু হবে এবং সেগুলো তৈরী হবে পাকানো মসীনা সুতা দিয়ে, আর
খুঁটিগুলোতে থাকবে ব্রোঞ্জের পা-দানি। 19আবাস-তাম্বুতে
যে সব জিনিসপত্র ব্যবহার করা হবে, সেগুলো যে কাজেই ব্যবহার করা হোক না কেন
সবই ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরী করাতে হবে। এমন কি, তাম্বুর এবং উঠানের পর্দার
গোঁজগুলোও হবে ব্রোঞ্জের।
বাতিদানের তেল
20“বাতিদানে
যাতে আলো জ্বালিয়ে রাখা যায় সেইজন্য তুমি বনি-ইসরাইলদের হুকুম দাও যেন
তারা ছেঁচা জলপাইয়ের খাঁটি তেল তোমার কাছে নিয়ে আসে। 21এই
মিলন-তাম্বুর সাক্ষ্য-সিন্দুকের সামনে যে পর্দা থাকবে সেই পর্দার বাইরে
হারুন ও তার ছেলেরা সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত মাবুদের সামনে বাতিগুলোর
দেখাশোনা করবে। বনি-ইসরাইলরা যেন বংশের পর বংশ ধরে স্থায়ী নিয়ম হিসাবে এটা
পালন করে।
No comments:
Post a Comment