ইসলামী আন্দোলন করা ফরজ কেনো?
আল্লাহ বলছেন, ওয়াকিমুস সালাত মানে "নামাজ কায়েম করো" সেই আল্লাহই বলছেন ওয়াকিমুত দ্বিন মানে "দ্বীন-ইসলাম কায়েম করো" এখন আপনি নামাজ কায়েম মানবেন কিন্তু ইসলাম কায়েম মানবেন না কেনো ?? দুইটাইতো সরাসরি আল্লাহর কথা, কোরআনের আয়াত।
ইসলাম কায়েম আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন। এখন ইসলাম কীভাবে কায়েম করবেন??
আওয়ামীলীগ বিএনপি কি ইসলাম কায়েম করছে বা করবে??? নিশ্চয়ই না । তাহলে কেনো তাদের সাপোর্ট করেন? ইসলামী দল ক্ষমতায় আসা ব্যতীত ইসলাম কায়েম অসম্ভব। তাই ইসলাম কায়েমে ইসলামী দল করা ফরজ।
রাজনীতি অর্থ রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি। আল্লাহর কোরআনে কি রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি নাই ?? বরং কোরআনে ব্যক্তিগত দিক থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সকল নীতি আছে। এই নীতি কার জন্য। যারা আল্লাহ এবং আল্লাহর কোরআনকে বিশ্বাস করে তাদের জন্য। আপনি কি কোরআন বিশ্বাস করেন ??? যদি করেন তাহলে কেন কোরআনের রাজনীতি বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগ বিএনপির কুফরী রাজনীতি করেন ??
আপনি কি বিশ্বাস করেন কোরআন সব সমস্যার সমাধান ? তাহলে রাজনীতির সমাধান কোরআন দিতে পারবে না কেনো ? নাকি কোরআন এক্ষেত্রে ব্যর্থ ?? আমাদের রাসূল সাঃ কি রাজনীতি করেন নাই ?? দেশ চালান নাই । আবু বকর রাঃ, উমর রাঃ, ওসমান রাঃ, আলী রাঃ উনারা কি দেশ চালান নাই ?? ইসলাম দিয়ে কেনো দেশ চলতে পারবে না ?? এখন সময় আছে আখিরাতে কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পেতে চাইলে কোরআনের রাজনীতি করুন ।।
=> ইসলামী আন্দোলন প্রত্যেক মুসলমান কেন করবে? পবিত্র কুরান- হাদিসে আলোকে যা জানতে পারলাম তার আলোকে প্রতিটি মুসলমান কেন ইসলামী আন্দোলন করবে তার সার সংক্ষেপ নিম্নে তুলে ধরা হলো। যা অন্তরে বিশ্বাস রেখে, মুখে স্বীকার করে এবং কার্যে পরিণত করতে হবে।
০১) ইসলামী সংগঠন বা আন্দোলন করা প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহ তাআলা ফরয করে দিয়েছেন বলে।
০২) মুসলমানের ঈমান বাঁচাতে বা ঈমানের অপরিহার্য দাবী আদায়ে ।
০৩) ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রমাণ করতে।
০৪) সংগঠন না থাকলে ইসলাম সগৌরবে টিকে থাকতে পারে না বলে।
০৫) তাগুত জাহেলিয়াতকে অস্বীকার করে জাহান্নাম থেকে বাচার জন্য।
০৬) ইসলামী সংগঠনবিহীন মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু বলে ।
০৭) সংঘবদ্ধ জীবনযাপন জান্নাতপ্রাপ্তির পূর্বশর্ত বলে।
০৮) আমার বিল মারুফ নাহি আনিল মুনকারের হক আদায় করতে।
০৯) অর্থনৈতিক মুক্তি এবং স্বণির্ভর ও দারিদ্রমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে।
০৯) অর্থনৈতিক মুক্তি এবং স্বণির্ভর ও দারিদ্রমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে।
১০) সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্টার জন্য।
১১) ইনসাফভিত্তিক ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে।
১২) দেশের স্থায়ী শান্তি ও মানবতার সার্বিক মুক্তি ফিরিয়ে দিতে।
১৩) সংখ্যালঘুদের অধিকার,নারীর অধ্র্কার ও মর্যদা প্রতিষ্টা করতে।
১৪) রাষ্ট্রের স্বাধিনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে।
১৫) সর্বোপরি দ্বীনে শরিয়াতের হক আদায় করতে।
----Jast Hasan
ইসলামী আন্দোলন করা কি জরুরী ? না করলে কি গুনাহ হবে ?
ইসলাম এবং আন্দোলন না বুঝলে ইসলামী আন্দোলনও বুঝা যাবে না ।
ইসলামঃ আল্লাহ প্রদত্ত রাসুল(সা) প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী চলার পথ ইসলাম , আর যে ব্যাক্তি ইসলাম মেনে চলে তাকে বলা হয় মুসলিম । মুসলিম শব্দের অর্থ হচ্ছে আত্মসমর্পণ কারী । অর্থাৎ যে ব্যাক্তি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আত্মসমর্পণ করে, মনে প্রানে মেনে নেয় যে, এই জমিন আল্লাহর , এই দুনিয়া আল্লাহর , আমিও আল্লাহর একটি সৃষ্টি এবং একদিন আমাকে ফিরে যেতে হবে তার কাছে, তাকেই মুসলিম বলা হয় ।
আল্লাহ বলেছেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
অর্থাৎঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
মানে ইমানদার হলেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না , আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইমানদারদেরকে বলছেন মুসলিম হতে ।
আন্দোলনঃ
যেকোন দাবী / মতবাদ/ আদর্শ প্রতিষ্ঠা / অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সগ্রাম করাকে আন্দোলন বলা হয় ।
ইসলামী আন্দোলন মানে হচ্ছে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম । আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ [النحل : 125]
ডাক , তোমার রবের পথের দিকে হিকমত ও উত্তম নসীহতের সাথে। (আন নাহল:১২৫)
কোরআনে বলা হয়েছে:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا (45) وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا [الأحزاب : 45 ، 46]
হে নবী! আমরা তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শকরূপে এবং খোদার নির্দেশে তাঁর প্রতি আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ [التوبة : 111]
সন্দেহ নেই আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদের জান ও মাল বেহেশতের বিনিময়ে খরিদ করে নিয়েছেন, এখন তাদের একমাত্র কাজ হলো আল্লাহর পথে লড়াই করা, সংগ্রাম করা। পরিণামে জীবন দেয়া বা জীবন নেয়া।(সূরা আত তাওবা ১১১)
এর থেকে প্রমাণিত যে ইসলামী আন্দোলন করা শুধু জরুরীই নয় বরং তা ফরজ ।আল্লাহ সরাসরি পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, অবশ্যই করতে হবে ।
আর ফরজ তরক করলে / না মানলে / ইসলামী আন্দোলন ন করলে গুনাহ হওয়া স্বাভাবিক ।
ইসলামী আন্দোলন করতে গেলে যেই বিষয় গুলোকে প্রাধান্য দিতে হয়ঃ
১. মানুষ একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব করবে; জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলবে। আল্লাহর আইনের ভিত্তিতেই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল দিক পরিচালিত হবে।
২. মানুষ জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শ নেতা রূপে মেনে চলার সুযোগ পাবে।
৩. সৎ ও চরিত্রবান লোকেরা শাসন কর্তৃত্বের পরিচালক হবে এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের কোন স্থান থাকবে না।
৪. আদল ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা : কেউ কারো প্রতি কোন ধরনের অন্যায় আচরণ করবে না।
৫. রাষ্ট্র পরিচালিত হবে পরামর্শভিত্তিক এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে শাসক নির্বাচিত হবে। ক্ষমতাসীনরা স্বৈরাচারী বা স্বেচ্ছাচারী হবেন না। তারা মানুষের কল্যাণে সদাসচেষ্ট থাকবেন।
৬. সমাজ থেকে অপরাধ ও দরিদ্রতা দূর করা হবে উক্ত সমাজের অন্যতম লক্ষ্য।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে পরিষ্কার যে, ইসলামের লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে শান্তি ও কল্যাণকর সুন্দর একটি সমাজ উপহার দেয়া। তবে কোন দেশের অধিকাংশ মানুষ উক্ত আদর্শের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন না করলে জোরপূর্বক ইসলামী আদর্শ চাপিয়ে দেয়া আল্লাহর বিধান নয়। অনেক নবী ও রাসূল আল্লাহর পথে মানুষকে দাওয়াত দিয়েছেন সত্য কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সেই দাওয়াত কবুল না করায় আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে পারেননি। এক্ষেত্রে হযরত নূহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি প্রায় সাড়ে নয়শত বছর আল্লাহর পথে মানুষদেরকে আহবান জানানোর পর মাত্র চল্লিশ কিংবা মতান্তরে ৮০ জন মানুষ তাঁর আহবানে সাড়া দিয়েছিলেন।
আমার মনে হয় বর্তমানে পৃথিবীর যেসকল দেশে ইসলামী আন্দোলনের কার্যক্রম চলছে তাদের আসল বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে পুরোপুরি সুস্পষ্ট নয়। তাই তারা সহজেই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলে মনে করা হয় উক্ত সমাজের মূল কাজ হচ্ছে চোরের হাত কাটা। অথচ ইসলামী সমাজব্যবস্থার মূল টার্গেট চোরের হাত কাটা নয়। মূল টার্গেট হচ্ছে দরিদ্রতা বিমোচন করা এবং অপরাধমুক্ত সমাজ উপহার দেয়া। দরিদ্রতা বিমোচন করার পর কেউ অভাবের পরিবর্তে স্বভাবের কারণে চুরি করলেই ইসলামী দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হবে। এই কারণেই হজরত উমর ফারুক (রা) এর সময়ে একজন ব্যক্তি অভাবের কারণে চুরি করলে হজরত উমর তার হাত কাটার নির্দেশের পরিবর্তে নিজেকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘ফোরাতের তীরে একটি কুকুর না খেয়ে মারা গেলে আমাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
আসুন আমরা যারা নামায পড়ি , আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলার চেষ্টা করি , আজ থেকে / এখন থেকেই ইসলামী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হই । আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
আলহামদুলিল্লাহ অনেক সুন্দর লেগেছে
ReplyDeleteAlhamdulillah
ReplyDeleteমা শা আল্লাহ
ReplyDeleteতারাবী নামাজের তেলাওয়াত নিম্ন স্বরে হওয়ায় মুসল্লি যদি সুরা ফাতিহা বুঝতে না পেলে নামাজের কি কোন ক্ষতি হবে?
ReplyDeleteইসলামি আন্দোলন যে ফরজ তার দলিল কি??
ReplyDeleteআলহামদুলিল্লাহ। প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়েছেন।
ReplyDeleteআলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteকিসের আয়াত দিয়ে কিসের দলিল দিলেন ভাই? আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহর দিকে ডাকতে আর এই ডাকা টা আন্দলন নামে চালিয়ে দিলেন। ডাকা আর আন্দোলন করা কি এক জিনিস? আমি একা যদি কোন মানুষ কে আল্লাহর দিকে ডাকি তাহলে কি আল্লাহর এই আয়াতের অনুসরণ হবেনা? ইসলামি দলের নামে তো ইসলাম কে খন্ড বিখন্ড করে দিচ্ছেন। দ্বীনকে খন্ড করা হারাম জানেন না? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন আমিন।
ReplyDeleteআলহামদুলিল্লাহ জাযাকাল্লাহ যদি কেউ ইসলামের সকল বিধি-বিধান মেনে চলে কিন্তু ইসলামী পার্টি না করে তাহলে অন্য আমল গুলো কি তাকে জান্নাত দিবেনা?
ReplyDeleteযথার্থ বলেছেন।
ReplyDeleteআয়াত ঠিক কিন্তু ব্যখ্যা মনগড়া...
ReplyDelete