মার্ক ৬: ১৪-১৫

(মথি 13:53-58লুক 4:16-30)
1সেখান থেকে যীশু ফিরে গেলেন নিজের নগরে। শিষ্যেরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন। 2সাব্বাথ দিনে তিনি সমাজভবনে গিয়ে উপদেশ দিতে আরম্ভ করলেন। তাঁর উপদেশ শুনে লোকেরা খুব অবাক হয়ে বলতে লাগল, এসব কথা এ কোথা থেকে শিখল? এমন জ্ঞান কোথা থেকে পেল যারা সাহায্যে এ এতসব অলৌকিক কাজ করছে? 3একি সেই ছুতোর মিস্ত্রী নয়? এ তো মরিয়মের ছেলে, যাকোব , যোশি, শিমোন আর যিহুদার ভাই, তাই না? ওর বোনরাও তো আমাদের এখানেই থাকে। যীশুকে তারা গ্রাহ্যই করল না। 4যীশু তাদের বললেন, বাড়ি, আত্মীয়-স্বজন, স্বগৃহ এবং স্বদেশ ছাড়া কোনও নবী আর কোথাও অসম্মানিত হন না।5কয়েকজন অসুস্থ লোককে স্পর্শ করে সুস্থ করা ছাড়া আর কোন অলৌকিক কাজ তিনি সেখানে করতে পারলেন না। 6তাদের এত অবিশ্বাস দেখে যীশু অবাক হয়ে গেলেন।
দ্বাদশ শিষ্যের প্রচার অভিযান
(মথি 10:5-15লুক 9:1-6)
যীশু গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিয়ে বেড়াতে লাগলেন। 7তিনি তাঁর বারজন শিষ্যকে ডেকে দু'জন দু'জন করে এক একদিকে পাঠাতে লাগলেন এবং অশুচি আত্মা দূর করার ক্ষমতা তাঁদের দিলেন8যীশু তাঁদের আদেশ দিলেন যেন পথে লাঠি ছাড়া আর কিছুই সঙ্গে না নেন, খাবার নয়, ঝুলি নয়, এমনকি টাকাকড়িও নয়। 9তাঁদের পায়ে পাদুকা থাকতে পারে, কিন্তু সঙ্গে জামা যেন দুটো না থাকে। 10যীশু তাঁদের বললেন, কোথাও কোন বাড়িতে গেলে তেআমরা সেই এলাকা ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত সেই বাড়িতেই থাকবে। 11কোনো জায়গায় লোকে যদি তোমাদের স্বাগত না জানায় বা তোমাদের কথা না শোনে, তাহলে সেই জায়গা ছেড়ে চলে যাবার সময় পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেলো, তা-ই হবে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ। 12শিষ্যেরা চলে গেলেন এবং প্রচার করতে লাগলেন যেন মানুষ অনুতাপ করে মন পরিবর্তন করে। 13তাঁরা অনেক ভূত ছাড়ালেন এবং তৈলাভিষেক করে অনেক রোগীকে সুস্থ করলেন।
বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের শিরশ্ছেদ
(মথি 14:1-12লুক 9:7-9)
14রাজা হেরোদ যীশুর এ সমস্ত কথা শুনতে পেলেন কারণ যীশুর নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। কেউ কেউ বলছিল, বাপ্তিষ্মদাতা যোহন মৃতলোক থেকে পুনর্জীবিত হয়েছেন। সেইজন্যই তাঁর মধ্যে এই অলৌকিক শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে 15আবার কেউ বলল, উনি এলিয়। অন্যেরা বলতে লাগল, পুরাকালের নবীদের মত উনিও একজন নবী। 16কিন্তু হেরোদ এ কথা শুনে বললেন, আমি যার শিরশ্ছেদ করেছি সেই যোহন আবার বেঁচে উঠেছেন। 17হেরোদিয়ার কথায় হেরোদ স্বয়ং যোহনকে গ্রেপ্তার করিয়ে কারাগারে বন্দী করে রেখেছিলেন। 18হেরোদিয়া ছিলেন হেরোদের ভাই ফিলিপের স্ত্রী। হেরোদ তাঁকে বিবাহ করেছিলেন। তাই যোহন হেরোদকে বলেছিলেন, ভ্রাতৃবধূকে বিবাহ করা তোমার পক্ষে সঙ্গত হয়নি। 19এইজন্য যোহনের উপর হেরোদিয়ার আক্রোশ ছিল। তিনি তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি 20কারণ হেরোদ যোহনকে ভয় করতেন। তিনি জানতেন যে যোহন একজন ধর্মনিষ্ঠ সাধু ব্যক্তি, তাই তিনি তাঁকে রক্ষা করেছিলেন। যোহনের কথাবার্তা শুনে হেরোদ খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তেন কিন্তু তবুও তাঁর কথা শুনতে চাইতেন। 21হেরোদিয়ার সামনে একদিন সুযোগ এল। হেরোদ তাঁর জন্মদিনে তাঁর সভাসদ, সামরিক কর্মচারী ও গালীল প্রদেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এক ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানালেন। 22সেই সভায় হেরোদিয়ার কন্যা নৃত্যকলা প্রদর্শন করে হেরোদকে এবং আমন্ত্রিতদের মুগ্ধ করেছিল। রাজা তাই মেয়েটিকে বললেন, তোমার যা ইচ্ছা আমার কাছে চাও, আমি তাই-ই তোমায় দেব। 23তিনি তার কাছে শপথ করে বললেন, তুমি আমার কাছে যা চাইবে তাই দেব, এমন কি আমার অর্ধেক রাজত্ব পর্যন্ত তোমায় দিয়ে দেব। 24সে চলে গেল তার মায়ের কাছে, জিজ্ঞেস করল, আমি কি চাইব? তিনি বললেন, বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা। 25সঙ্গে সঙ্গে সে রাজার কাছে গিয়ে বলল, আমি চাই, এক্ষুণি আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা থালায় করে আমায় এনে দিন। 26এ কথা সুনে রাজা খুবই দুঃখিত হলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি আমন্ত্রিতদের সামনে শপথে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং আমন্ত্রিতেরা উপস্তিত ছিলেন তাই তিনি তাকে প্রত্যাখ্যান করতে চাইলেন না। 27রাজা তখনই একজন দেহরক্ষীকে যোহনের মাথা কেটে আনার আদেশ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। সে কারাগারে গিযে যোহনের শিরশ্ছেদ করে তাঁর মাথা 28একটা থালায় করে এনে মেয়েটিকে দিল। মেয়েটি গিয়ে সেটি তার মাকে দিল। 29যোহনের শিষ্যেরা এই খবর পেয়ে এসে তাঁর দেহটি নিয়ে গিয়ে কবর দিল।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...