যোহন ১: ১৯-২৬

1সৃষ্টির পূর্বেই ছিলেন বাক্। ঈশ্বরের সঙ্গেই বাক্ ছিলেন বিরাজমান। বাক্ ও ঈশ্বর ছিলেন অভিন্নসত্তা। 2আদিতে তিনিই ছিলেন ঈশ্বরের সঙ্গে। 3সর্ববস্তু তাঁর মাধ্যমে সৃষ্ট। এমন কিছুর অস্তিত্ব নেই যা তাঁর মাধ্যমে হয়নি সম্ভব। 4সমগ্র সৃষ্টির জীবন ছিল তাঁরই মধ্যে নিহিত, আর সেই জীবনই ছিল মানুষের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া জ্যোতি। 5সেই জ্যোতি তমসার মাঝে দীপ্যমান। তমসা তাকে গ্রাস করতে পারেনি।6ঈশ্বরপ্রেরিত এক ব্যক্তির হল আবির্ভাব, তাঁর নাম যোহন। 7সেই জ্যোতির বিষয়ে সাক্ষ্যদান করতে তিনি এলেন যেন সকলের মধ্যে এই সাক্ষ্য সৃষ্টি করে বিশ্বাস। 8তিনি নিজে সেই জ্যোতি ছিলেন না কিন্তু জ্যোতির বিষয়ে সাক্ষ্য দান করতেই হয়েছিল তাঁর আগমন। 9প্রকৃত যে জ্যোতি সর্বমানবকে করে আলোকদান, এ জগতে তাঁর প্রকাশ ছিল প্রত্যাসন্ন। 10এ জগতেই ছিলেন তিনি। যদিও তাঁরই মাধ্যমে সৃষ্ট হয়েছিল এই বিশ্বচরাচর কিন্তু এ জগত জানত না তাঁর পরিচয়। 11স্বরাজ্যে তিনি এলেন কিন্তু যারা তাঁর আপনজন তারাই বরণ করল না তাঁকে। 12কিন্তু যারা তাঁকে বরণ করল, বিশ্বাসে গ্রহণ করল তাঁকে, তাদেরই দিলেন তিনি ঈশ্বরের পুত্র হওয়ার অধিকার। 13তারা শোণিত সূত্রে নয়, জৈব বাসনায় নয়, মানবিক ইচ্ছাক্রমেও নয়, কিন্তু তাঁরা ঈশ্বর থেকেই জাত।
14সেই বাক্ দেহ ধারণ করলেন। আমাদেরই মাঝে করলেন বসতি। আমরা প্রত্যক্ষ করলাম তাঁর মহিমা, পিতার অনন্য পুত্রের মহিমা-যা করুণা ও সত্যে মণ্ডিত। 15যোহন তাঁরই সম্পর্কে করলেন উদাত্ত ঘোষণা: ইনিই সেই ব্যক্তি, এঁরই সম্পর্কে আমি বলেছিলাম: আমার পরে যিনি আসছেন। তিনি আমার অগ্রগণ্য। কারণ আমার আগে থেকেই তিনি বিদ্যমান। 16তাঁর পূর্ণতার ভাণ্ডার থেকে আমরা সকলেই পেয়েছি নিরবচ্ছিন্ন করুণাধারা। 17মোশির মাধ্যমে প্রদত্ত হয়েছিল শাস্ত্রীয় বিধান কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে বিতরিত হল অনুগ্রহ ও সত্য।18ঈশ্বরকে কখনও কেউ প্রত্যক্ষ করেনি কিন্তু ঈশ্বরের অনন্য পুত্রপিতার বক্ষলগ্ন যিনি, তিনিই তাঁকে করেছেন অভিব্যক্ত।
বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের সাক্ষ্য
(মার্ক 3:1-12মার্ক 1:1-8লুক 3:1-18)
19-20জেরুশালেমের ইহুদী সমাজের পক্ষ থেকে পুরোহিত ও লেবীয়দের একটি প্রতিনিধি দলকে যোহনের কাছে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি কে? এ বিষয়ে যোহন নীরব রইলেন না, বরং সুস্পষ্টভাবে তাঁর সাক্ষ্য ঘোষণা করে বললেন, আমি খ্রীষ্ট নই। 21তারা জিজ্ঞাসা করল, তাহলে কে আপনি? আপনি কি এলিয়? তিনি উত্তর দিলেন না, আমি এলিয় নই। তারা তখন জিজ্ঞাসা করল, আপনি কি সেই প্রত্যাশিত নবী? তিনি বললেন, না। 22তারা তাঁকে বলল, তাহলে আমাদের বলুন, কে আপনি? যাঁরা আমাদের পাঠিয়েছেন, তাঁদের কাছে আমাদের এর উত্তর নিয়ে যেতে হবে। আপনার নিজের সম্বন্ধে আপনার কি বক্তব্য? 23যোহন নবী যিশাইয়র উক্তি দিয়ে তাদের উত্তর দিলেন, আমি হচ্ছি সেই কন্ঠস্বর যা মরুপ্রান্তরে ঘোষণা করছেঃ
সরল করে দাও প্রভুর আগমনের পথ।
24ফরিশীরাও কয়েকজন দূত পাঠিয়েছিল তাঁর কাছে। 25তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, আপনি যদি খ্রীষ্ট না হন, যদি এলিয় বা সেই প্রত্যাশিত নবী না হন, তাহলে কেন আপনি বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন? 26-27যোহন তাদের উত্তর দিলেন, আমি জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি। কিন্তু যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি তোমাদেরই মাঝে আছেন, তাঁকে তোমরা চেন না। আমি তাঁর পাদুকাবন্ধন খোলারও যোগ্য নই। 28বেথানিতে, যর্ডনের তীরে যেখানে যোহন বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন, সেখানে এই সমস্ত ঘটনা ঘটেছিল।
ঈশ্বরের মেষশাবক
29পরের দিন যোহন যীশুকে তাঁর কাছে আসতে দেখে বললেন, ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপরাশি হরণ করেন।30ইনিই সেই ব্যক্তি। এঁর সম্বন্ধে আমি বলেছিলাম: ‘আমার পরে যিনি আসছেন, তিনি আমার চেয়ে মহান’। তিনি আমার জন্মের পূর্ব থেকেই বিদ্যমান। 31আমি নিজেও তাঁকে জানতাম না, তিনি কে। কিন্তু এখন আমি জলে বাপ্তিষ্ম দান করছি যেন ইসরায়েল জাতির কাছে ব্যক্ত হয় তাঁর পরিচয়। এই জন্যই আমার আগমন।
32যোহন আরও সাক্ষ্য দিলেন, আমি দেখলাম, পবিত্র আত্মা কপোতের মত স্বর্গ থেকে নেমে এসে তাঁর উপর অধিষ্ঠান করলেন।33আমি তখনও তাঁকে চিনতাম না কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিষ্ম দিতে পাঠিয়েছেন, তিনিই আমাকে বলেছেন যে, পবিত্র আত্মাকে যাঁর উপর অবতরণ করতে দেখবে, জেনো, তিনিই বাপ্তিষ্মদান করবেন পবিত্র আত্মায়। 34আমি তাঁকে দেখেছি এবং আমার সাক্ষ্য এই: ইনিই ঈশ্বরের পুত্র।

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...