দ্বিতীয় বিবরণ 23

20     অন্য জাতির লোকদের কাছ থেকে তোমরা সুদ নিতে পার কিন্তু কোন ইসরাইলীয় ভাইয়ের কাছ থেকে নয়। এইভাবে চললে তোমরা যে দেশ দখল করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা যাতে হাত দেবে তাতেই তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের দোয়া করবেন।

 https://www.bible.com/de/bible/95/DEU.23.MBCL

দ্বিতীয় বিবরণ ১৫: ৩

দ্বিতীয় বিবরণ ১৫

ঋণ-মাফের বছর
1“প্রতি সপ্তম বছরের শেষে অন্যদের কাছ থেকে তোমাদের পাওনা সব মাফ করে দেবে। 2এই নিয়মে তা মাফ করতে হবে: প্রত্যেক ইসরাইলীয় পাওনাদার অন্য ইসরাইলীয়কে দেওয়া সব ঋণ মাফ করে দেবে। ঋণ মাফ করে দেবার জন্য মাবুদ যে সময় ঠিক করে দিয়েছেন তা ঘোষণা করা হয়েছে বলে কোন ইসরাইলীয় ভাইয়ের কাছ থেকে ঋণ শোধের দাবি করা চলবে না। 3ভিন্ন জাতির লোকদের কাছ থেকে ঋণ শোধের দাবি করা চলবে, কিন্তু তোমাদের ভাইদের ঋণ তোমাদের মাফ করে দিতে হবে। 4-5যদি তোমরা সম্পূর্ণভাবে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র কথার বাধ্য থাক এবং আজ আমি তোমাদের যে সব হুকুম দিচ্ছি তা মেনে চলবার দিকে মন দাও, তবে অবশ্য তোমাদের মধ্যে কারও গরীব থাকবার কথা নয়, কারণ সম্পত্তি হিসাবে যে দেশ তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানে তিনি তোমাদের প্রচুর দোয়া করবেন। 6তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁর ওয়াদা অনুসারে তোমাদের দোয়া করবেন, আর তাতে তোমরা অনেক জাতির লোককে ঋণ দেবে, কিন্তু কারও কাছ থেকে তোমাদের ঋণ নিতে হবে না। তোমরা অনেক জাতিকে শাসন করবে কিন্তু কেউ তোমাদের শাসন করবে না।
7“তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ যে দেশ তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেই দেশের কোন জায়গায় যদি তোমাদের ভাইদের মধ্যে কেউ গরীব থাকে, তবে তার উপর তোমাদের দিল কঠিন কোরো না, কিংবা সেই গরীব ভাইয়ের জন্য তোমাদের হাত মুঠো করে রেখো না। 8তোমাদের হাত যেন খোলা থাকে; তার দরকার মত তাকে অবশ্যই ধার দেবে। 9সাবধান, তোমাদের মনে এই খারাপ চিন্তাকে আমল দিয়ো না যে, সপ্তম বছর, অর্থাৎ ঋণ মাফের বছর প্রায় এসে গেছে। এই চিন্তা করে তোমাদের সেই অভাবী ভাইয়ের প্রতি বিরুদ্ধ মনোভাব নিয়ে তাকে খালি হাতে বিদায় কোরো না। যদি তা কর তবে তা নিয়ে সে তোমাদের বিরুদ্ধে মাবুদের কাছে কাতর হয়ে বিচার চাইবে আর তোমরা অন্যায়ের জন্য দোষী হবে। 10মনে অনিচ্ছার ভাব না রেখে খোলা হাতে তাকে দেবে; তাহলে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের সব কাজে দোয়া করবেন এবং তোমরা যাতে হাত দেবে তাতেই দোয়া পাবে। 11গরীব লোক অবশ্য দেশে সব সময়ই থাকবে। সেইজন্য আমি তোমাদের এই হুকুম দিচ্ছি যে, তোমাদের ভাইদের প্রতি এবং দেশের গরীব ও অভাবী লোকদের প্রতি তোমাদের হাত যেন খোলা থাকে।
গোলামী থেকে মুক্তি দেবার নিয়ম
12“যদি কোন ইবরানী পুরুষ বা স্ত্রীলোককে তোমাদের কাছে বিক্রি করা হয়, তবে ছয় বছর কাজ করবার পরে সপ্তম বছরে তাকে অবশ্যই তোমাদের ছেড়ে দিতে হবে। 13ছেড়ে দেবার সময়ে তাকে খালি হাতে বিদায় করবে না। 14তোমরা তাকে খোলা হাতে তোমাদের পাল থেকে ছাগল ও ভেড়া, খামার থেকে শস্য এবং আংগুর মাড়াইয়ের জায়গা থেকে আংগুর-রস দেবে। তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের যে পরিমাণে দোয়া করেছেন তোমরা সেই পরিমাণেই তাকে দেবে। 15মনে রেখো, মিসর দেশে তোমরাও গোলাম ছিলে এবং তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের মুক্ত করেছেন। সেইজন্য আজ আমি তোমাদের এই হুকুম দিচ্ছি।
16“কিন্তু তোমাদের ও তোমাদের পরিবারের লোকদের প্রতি ভালবাসার দরুন এবং তোমাদের কাছে সুখে আছে বলে যদি সেই গোলাম জানায় যে, সে তোমাদের ছেড়ে যাবে না, 17তবে তোমরা তার কানের লতি দরজার উপর রেখে তুরপুণ দিয়ে ছেঁদা করে দেবে; তাতে সে সারা জীবন তোমাদের গোলাম হয়ে থাকবে। তোমাদের বাঁদীর বেলায়ও তা-ই করবে।
18“গোলাম কিংবা বাঁদীকে মুক্ত করে দেওয়াটা তোমার কোন কষ্টের ব্যাপার বলে মনে কোরো না, কারণ এই ছয় বছর সে তোমাদের জন্য যে কাজ করেছে তার দাম দু’জন মজুরের মজুরির সমান। তাদের মুক্ত করে দিলে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তোমাদের সব কিছুতে দোয়া করবেন।

 https://www.bible.com/de/bible/95/DEU.15.MBCL

 

মথি: ১৫ ৩-৯

3জবাবে ঈসা বললেন, “যে নিয়ম চলে আসছে তার জন্য আপনারাই বা কেন আল্লাহ্‌র হুকুম অমান্য করেন? 4আল্লাহ্‌ বলেছেন, ‘মা-বাবাকে সম্মান কোরো’ এবং ‘যার কথায় মা-বাবার প্রতি অসম্মান থাকে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে।’ 5কিন্তু আপনারা বলে থাকেন, যদি কেউ তার মা কিংবা বাবাকে বলে, ‘আমার যে জিনিসের দ্বারা তোমার সাহায্য হতে পারত, তা আল্লাহ্‌র কাছে দেওয়া হয়েছে,’ 6তবে পিতা-মাতাকে তার আর সম্মান করবার দরকার নেই। আপনাদের এই সব চলতি নিয়মের জন্য আপনারা আল্লাহ্‌র কালাম বাতিল করেছেন। 7ভণ্ডেরা! আপনাদের সম্বন্ধে ইশাইয়া নবী ঠিক কথাই বলেছিলেন যে,
8এই লোকেরা মুখেই আমাকে সম্মান করে,
কিন্তু তাদের দিল আমার কাছ থেকে দূরে থাকে।
9তারা মিথ্যাই আমার এবাদত করে;
তাদের দেওয়া শিক্ষা মানুষের তৈরী কতগুলো নিয়ম মাত্র।
 
 
 

মথি: ১১ , ২৮-৩০

28“তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়া"ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এস; আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব।

 29আমার জোয়াল তোমাদের উপর তুলে নাও ও আমার কাছ থেকে শেখো, কারণ আমার স্বভাব নরম ও নম্র।  

30এতে তোমরা দিলে বিশ্রাম পাবে, কারণ আমার জোয়াল বয়ে নেওয়া সহজ ও আমার বোঝা হালকা।”

লিংক: 

 

লূক:১৯, ৩৮:৪০

38“মাবুদের নামে যে বাদশাহ্‌ আসছেন
তাঁর প্রশংসা হোক!
বেহেশতেই শান্তি,
আর সেখানে আল্লাহ্‌র মহিমা প্রকাশিত।”
 
39ভিড়ের মধ্য থেকে কয়েকজন ফরীশী ঈসাকে বললেন, “হুজুর, আপনার সাহাবীদের চুপ করতে বলুন।”
 
40ঈসা তাঁদের বললেন, “আমি আপনাদের বলছি, এরা যদি চুপ করে থাকে তবে পাথরগুলো চেঁচিয়ে উঠবে।”
 
 
 

লূক:১৩ - ৩৩

 লূক: ১৩

33যাহোক, আর কয়েকদিন পরে আমাকে চলে যেতে হবে, কারণ এক জেরুজালেম ছাড়া আর কোথাও কোন নবীর মৃত্যু হতে পারে কি?

লিংক: 

 

মথি:৬ ১০

10তোমার রাজ্য আসুক।
তোমার ইচ্ছা যেমন বেহেশতে
তেমনি দুনিয়াতেও পূর্ণ হোক।
 
11যে খাবার আমাদের দরকার
তা আজ আমাদের দাও।
 
12যারা আমাদের উপর অন্যায় করে,
আমরা যেমন তাদের মাফ করেছি
তেমনি তুমিও আমাদের সমস্ত অন্যায় মাফ কর।
 
13আমাদের তুমি পরীক্ষায় পড়তে দিয়ো না,
বরং শয়তানের হাত থেকে রক্ষা কর।
 
14তোমরা যদি অন্যদের দোষ মাফ কর তবে তোমাদের বেহেশতী পিতা তোমাদেরও মাফ করবেন।
 
15কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের দোষ মাফ না কর তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও মাফ করবেন না।
 
 
 
 
 
 
 

মথি: ৪ ১০ নং শ্লোক

10তখন ঈসা তাকে বললেন, “দূর হও, শয়তান। পাক-কিতাবে লেখা আছে,
তুমি তোমার মাবুদ আল্লাহ্‌কেই ভয় করবে,
কেবল তাঁরই এবাদত করবে।”
 
 
 
 

মথি:২৩ ২:৩

ধর্ম-নেতাদের বিরুদ্ধে হযরত ঈসা মসীহের কথা
 
 
1পরে ঈসা লোকদের কাছে ও তাঁর সাহাবীদের কাছে বললেন, 2“শরীয়ত শিক্ষা দেবার ব্যাপারে আলেমেরা ও ফরীশীরা মূসা নবীর জায়গায় আছেন। 3এইজন্য তাঁরা যা কিছু করতে বলেন তা কোরো এবং যা পালন করবার হুকুম দেন তা পালন কোরো। কিন্তু তাঁরা যা করেন তোমরা তা কোরো না, কারণ তাঁরা মুখে যা বলেন কাজে তা করেন না। 4তাঁরা ভারী ভারী বোঝা বেঁধে মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেন, কিন্তু সেগুলো সরাবার জন্য নিজেরা একটা আংগুলও নাড়াতে চান না। 5লোকদের দেখাবার জন্যই তাঁরা সব কাজ করেন। পাক-কিতাবের আয়াত-লেখা তাবিজ তাঁরা বড় করে তৈরী করেন আর নিজেদের ধার্মিক দেখাবার জন্য চাদরের কোণায় কোণায় লম্বা থোপ্‌না লাগান। 6মেজবানীর সময় সম্মানের জায়গায় এবং মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসনে তাঁরা বসতে ভালবাসেন। 7তাঁরা হাটে-বাজারে সম্মান খুঁজে বেড়ান আর চান যেন লোকেরা তাঁদের ওস্তাদ বলে ডাকে।
8“কেউ তোমাদের ওস্তাদ বলে ডাকুক তা চেয়ো না, কারণ তোমাদের ওস্তাদ বলতে কেবল একজনই আছেন, আর তোমরা সবাই ভাই ভাই। 9এই দুনিয়াতে কাউকেই পিতা বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের একজনই পিতা আর তিনি বেহেশতে আছেন। 10কেউ তোমাদের নেতা বলে ডাকুক তা চেয়ো না, কারণ তোমাদের নেতা বলতে কেবল একজনই আছেন, তিনি মসীহ্‌। 11তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বড় সে তোমাদের সেবাকারী হোক। 12যে কেউ নিজেকে উঁচু করে তাকে নীচু করা হবে এবং যে কেউ নিজেকে নীচু করে তাকে উঁচু করা হবে।
13“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা লোকদের সামনে বেহেশতী রাজ্যের দরজা বন্ধ করে রাখেন। তাতে নিজেরাও ঢোকেন না আর যারা ঢুকতে চেষ্টা করছে তাদেরও ঢুকতে দেন না।
14“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! এক দিকে আপনারা লোকদের দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মুনাজাত করেন, অন্য দিকে বিধবাদের সম্পত্তি দখল করেন। এইজন্য আপনাদের অনেক বেশী শাস্তি হবে।
15“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! একটি মাত্র লোককে আপনাদের ধর্ম-মতে আনবার জন্য আপনারা দুনিয়ার কোথায় না যান। আর সে যখন আপনাদের ধর্ম-মতে আসে তখন আপনারা নিজেদের চেয়ে তাকে অনেক বেশী করে জাহান্নামী করে তোলেন।
16“ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখান। আপনারা বলে থাকেন, বায়তুল-মোকাদ্দসের নামে কেউ কসম খেলে তাতে কিছু হয় না, কিন্তু যদি কেউ বায়তুল-মোকাদ্দসের সোনার নামে কসম খায় তবে সে সেই কসমে বাঁধা পড়ে। 17মূর্খ ও অন্ধের দল, কোন্‌টা বড়? সোনা, না সেই বায়তুল-মোকাদ্দস যা সেই সোনাকে পবিত্র করে? 18আপনারা আবার এই কথাও বলে থাকেন, কোরবানগাহের নামে কেউ কসম খেলে কিছুই হয় না, কিন্তু যদি কেউ সেই কোরবানগাহের উপরে যে দান আছে তার নামে কসম খায় তবে সে সেই কসমে বাঁধা পড়ে। 19অন্ধের দল, কোন্‌টা বড়? সেই দান, না সেই কোরবানগাহ্‌ যা সেই দানকে পবিত্র করে? 20এইজন্য কোরবানগাহের নামে যে কসম খায় সে সেই কোরবানগাহ্‌ এবং তার উপরের সব কিছুর নামেই কসম খায়। 21আর বায়তুল-মোকাদ্দসের নামে যে কসম খায় সে বায়তুল-মোকাদ্দস এবং তার ভিতরে যিনি থাকেন তাঁরই নামে কসম খায়। 22যে বেহেশতের নামে কসম খায় সে আল্লাহ্‌র সিংহাসন এবং যিনি তার উপর বসে আছেন তাঁরই নামে কসম খায়।
23“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা পুদিনা, মৌরি আর জিরার দশ ভাগের এক ভাগ আল্লাহ্‌কে ঠিকমতই দিয়ে থাকেন; কিন্তু ন্যায়, দয়া এবং বিশ্বস্ততা, যা মূসার শরীয়তের আরও দরকারী বিষয় তা আপনারা বাদ দিয়েছেন। আগেরগুলো পালন করবার সংগে সংগে পরেরগুলোও পালন করা আপনাদের উচিত। 24আপনারা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখান। একটা ছোট মাছিও আপনারা ছাঁকেন অথচ উট গিলে ফেলেন।
25“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা থালা-পেয়ালার বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাকেন, কিন্তু সেগুলো জুলুমের জিনিস আর লোভের ফল দিয়ে পূর্ণ। 26অন্ধ ফরীশীরা, আগে সেগুলোর ভিতরের দিকটা পরিষ্কার করুন, তাতে তার বাইরের দিকটাও পরিষ্কার হবে।
27“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা চুনকাম করা কবরের মত, যার বাইরের দিকটা সুন্দর কিন্তু ভিতরটা মরা মানুষের হাড়-গোড় ও সব রকম ময়লায় ভরা। 28ঠিক সেইভাবে, বাইরে আপনারা লোকদের চোখে ধার্মিক কিন্তু ভিতরে ভণ্ডামী ও গুনাহে পূর্ণ।
29“ভণ্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা নবীদের কবর নতুন করে গাঁথেন এবং আল্লাহ্‌ভক্ত লোকদের কবর সাজান। 30আপনারা বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় বেঁচে থাকতাম তবে নবীদের খুন করবার জন্য তাঁদের সংগে যোগ দিতাম না।’ 31এতে আপনারা নিজেদের বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নবীদের যারা খুন করেছে আপনারা তাদেরই বংশধর। 32তাহলে আপনাদের পূর্বপুরুষেরা যা শুরু করে গেছেন তার বাকী অংশ আপনারা শেষ করুন।
33“সাপের দল আর সাপের বংশধরেরা! কেমন করে আপনারা জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা পাবেন? 34এইজন্যই আমি আপনাদের কাছে নবী, জ্ঞানী লোক এবং আলেমদের পাঠাচ্ছি। আপনারা তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে খুন করবেন ও কয়েকজনকে ক্রুশের উপরে হত্যা করবেন। কয়েকজনকে আপনাদের মজলিস-খানায় চাবুক মারবেন এবং এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে তাড়া করে বেড়াবেন। 35এইজন্য নির্দোষ হাবিলের খুন থেকে শুরু করে আপনারা যে বরখিয়ের ছেলে জাকারিয়াকে পবিত্র স্থান আর কোরবানগাহের মাঝখানে খুন করেছিলেন, সেই জাকারিয়ার খুন পর্যন্ত দুনিয়াতে যত নির্দোষ লোক খুন হয়েছে আপনারা সেই সমস্ত রক্তের দায়ী হবেন। 36আমি আপনাদের সত্যিই বলছি, এই কালের লোকেরাই সেই সমস্ত রক্তের দায়ী হবে।
 
 
 

মথি: ২২ ৩৪:৪০

সবচেয়ে বড় হুকুম
34ঈসা সদ্দূকীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন শুনে ফরীশীরা একত্র হলেন। 35তাঁদের মধ্যে একজন আলেম ঈসাকে পরীক্ষা করবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36“হুজুর, তৌরাত শরীফের মধ্যে সবচেয়ে বড় হুকুম কোন্‌টা?”
 
37-38ঈসা তাঁকে বললেন, “সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে দরকারী হুকুম হল, ‘তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত দিল, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত মন দিয়ে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌কে মহব্বত করবে।’  
39তার পরের দরকারী হুকুমটা প্রথমটারই মত- ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে।’  
40সম্পূর্ণ তৌরাত শরীফ এবং নবীদের সমস্ত কিতাব এই দু’টি হুকুমের উপরেই ভরসা করে আছে।”

লিংক: ক্লিক


https://www.bible.com/de/bible/95/MAT.22.MBCL 

মথি: ৫:১৭

তৌরাত শরীফের বিষয়ে হযরত ঈসার শিক্ষা
 
17“এই কথা মনে কোরো না, আমি তৌরাত কিতাব আর নবীদের কিতাব বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসি নি বরং পূর্ণ করতে এসেছি।  
 
18আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আসমান ও জমীন শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যতদিন না তৌরাত কিতাবের সমস্ত কথা সফল হয় ততদিন সেই তৌরাতের এক বিন্দু কি এক মাত্রা মুছে যাবে না।  
 
19তাই মূসার শরীয়তের মধ্যে ছোট একটা হুকুমও যে কেউ অমান্য করে এবং লোককে তা অমান্য করতে শিক্ষা দেয় তাকে বেহেশতী রাজ্যে সবচেয়ে ছোট বলা হবে। কিন্তু যে কেউ শরীয়তের হুকুমগুলো পালন করে ও শিক্ষা দেয় তাকে বেহেশতী রাজ্যে বড় বলা হবে। 20আমি তোমাদের বলছি, আলেম ও ফরীশীদের ধার্মিকতার চেয়ে তোমাদের যদি বেশী কিছু না থাকে তবে তোমরা কোনমতেই বেহেশতী রাজ্যে ঢুকতে পারবে না।

লূক: ৩

হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর তবলিগ
 
 
1রোম-সম্রাট টিবেরিয়াস সিজারের রাজত্বের পনের বছরের সময় এহুদিয়া প্রদেশের প্রধান শাসনকর্তা ছিলেন পন্তীয় পীলাত। তখন হেরোদ গালীল প্রদেশ ও তাঁর ভাই ফিলিপ যিতূরিয়া প্রদেশ ও ত্রাখোনীতিয়া শাসন করছিলেন। লুষানিয়া ছিলেন অবিলীনীর শাসনকর্তা, 2আর হানন ও কাইয়াফা ছিলেন ইহুদীদের মহা-ইমাম। ঠিক এই সময়ে আল্লাহ্‌ মরুভূমিতে জাকারিয়ার পুত্র ইয়াহিয়ার উপর তাঁর কালাম নাজেল করলেন। 3তখন ইয়াহিয়া জর্ডান নদীর চারদিকের সমস্ত জায়গায় গিয়ে তবলিগ করতে লাগলেন যেন লোকে গুনাহের মাফ পাবার জন্য তওবা করে এবং তার চিহ্ন হিসাবে তরিকাবন্দী নেয়। 4নবী ইশাইয়ার কিতাবে যা লেখা আছে ঠিক সেইভাবে এই সব হল। লেখা আছে,
“মরুভূমিতে একজনের কন্ঠস্বর চিৎকার করে জানাচ্ছে,
‘তোমরা মাবুদের পথ ঠিক কর,
তাঁর রাস্তা সোজা কর।
5সমস্ত উপত্যকা ভরা হবে,
পাহাড়-পর্বত সমান করা হবে।
আঁকাবাঁকা পথ সোজা করা হবে,
অসমান রাস্তা সমান করা হবে।
6মানুষকে নাজাত করবার জন্য
আল্লাহ্‌ যা করেছেন,
সব লোকেই তা দেখতে পাবে।’ ”
7তখন তরিকাবন্দী নেবার জন্য অনেক লোক ইয়াহিয়ার কাছে আসতে লাগল। ইয়াহিয়া তাদের বললেন, “সাপের বংশধরেরা! আল্লাহ্‌র যে গজব নেমে আসছে তা থেকে পালিয়ে যাবার এই বুদ্ধি তোমাদের কে দিল? 8তোমরা যে তওবা করেছ তার উপযুক্ত ফল তোমাদের জীবনে দেখাও। নিজেদের মনে ভেবো না যে, তোমরা ইব্রাহিমের বংশের লোক। আমি তোমাদের বলছি, এই পাথরগুলো থেকে আল্লাহ্‌ ইব্রাহিমের বংশধর তৈরী করতে পারেন। 9গাছের গোড়াতে কুড়াল লাগানোই আছে। যে গাছে ভাল ফল ধরে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে।”
10তখন লোকেরা ইয়াহিয়াকে জিজ্ঞাসা করল, “তা হলে আমরা কি করব?”
11ইয়াহিয়া তাদের বললেন, “যদি কারও দু’টা কোর্তা থাকে তবে যার কোর্তা নেই সে তাকে একটা দিক। যার খাবার আছে সেও সেই রকম করুক।”
12কয়েকজন খাজনা-আদায়কারী তরিকাবন্দী নেবার জন্য এসে ইয়াহিয়াকে বলল, “হুজুর, আমরা কি করব?”
13তিনি তাদের বললেন, “আইনে যা আছে তার বেশী আদায় কোরো না।”
14কয়েকজন সৈন্যও তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “আর আমরা কি করব?”
তিনি সেই সৈন্যদের বললেন, “জুলুম করে বা অন্যায়ভাবে দোষ দেখিয়ে কারও কাছ থেকে কিছু আদায় কোরো না এবং তোমাদের বেতনেই সন্তুষ্ট থেকো।”
15লোকেরা খুব আশা নিয়ে মনে মনে ভাবছিল হয়ত বা ইয়াহিয়াই মসীহ্‌। 16এমন সময় ইয়াহিয়া তাদের সবাইকে বললেন, “আমি তোমাদের পানিতে তরিকাবন্দী দিচ্ছি, কিন্তু যিনি আমার চেয়ে শক্তিশালী তিনি আসছেন। আমি তাঁর জুতার ফিতা খুলবারও যোগ্য নই। তিনি পাক-রূহ্‌ ও আগুনে তোমাদের তরিকাবন্দী দেবেন। 17কুলা তাঁর হাতেই আছে; তা দিয়ে তিনি তাঁর ফসল মাড়াবার জায়গা পরিষ্কার করে ফসল গোলায় জমা করবেন, কিন্তু যে আগুন কখনও নেভে না তাতে তিনি তুষ পুড়িয়ে ফেলবেন।”
18ইয়াহিয়া আরও অনেক উপদেশের মধ্য দিয়ে লোকদের মনে উৎসাহ জাগিয়ে আল্লাহ্‌র দেওয়া সুসংবাদ তবলিগ করলেন। 19শাসনকর্তা হেরোদের ভাইয়ের স্ত্রী হেরোদিয়ার সংগে হেরোদের সম্পর্কে র দরুন এবং তাঁর আরও অনেক খারাপ কাজের দরুন ইয়াহিয়া তাঁর দোষ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। 20তাতে তিনি ইয়াহিয়াকে বন্দী করে জেলে দিলেন। এতে তাঁর অন্য সব খারাপ কাজের সংগে এই খারাপ কাজটাও যোগ হল।
হযরত ঈসা মসীহের তরিকাবন্দী
21যে সমস্ত লোক ইয়াহিয়ার কাছে এসেছিল তারা তরিকাবন্দী নেবার সময় ঈসাও তরিকাবন্দী নিলেন। তরিকাবন্দীর পরে ঈসা যখন মুনাজাত করছিলেন তখন আসমান খুলে গেল। 22সেই সময় পাক-রূহ্‌ কবুতরের আকার নিয়ে তাঁর উপর নেমে আসলেন, আর বেহেশত থেকে এই কথা শোনা গেল, “তুমিই আমার প্রিয় পুত্র, তোমার উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট।”
হযরত ঈসা মসীহের বংশ-তালিকা
23প্রায় তিরিশ বছর বয়সে ঈসা তাঁর কাজ শুরু করলেন। লোকে মনে করত তিনি ইউসুফের ছেলে। ইউসুফ আলীর ছেলে; 24আলী মত্ততের ছেলে, মত্তত লেবির ছেলে, লেবি মল্কির ছেলে, মল্কি যান্নায়ের ছেলে, যান্নায় ইউসুফের ছেলে; 25ইউসুফ মত্তথিয়ের ছেলে, মত্তথিয় আমোজের ছেলে, আমোজ নাহূমের ছেলে, নাহূম ইষ্‌লির ছেলে, ইষ্‌লি নগির ছেলে; 26নগি মাটের ছেলে, মাট মত্তথিয়ের ছেলে, মত্তথিয় শিমিয়ির ছেলে, শিমিয়ি যোষেখের ছেলে, যোষেখ যূদার ছেলে; 27যূদা যোহানার ছেলে, যোহানা রীষার ছেলে, রীষা সরুব্বাবিলের ছেলে, সরুব্বাবিল শল্টীয়েলের ছেলে, শল্টীয়েল নেরির ছেলে; 28নেরি মল্কির ছেলে, মল্কি অদ্দীর ছেলে, অদ্দী কোষমের ছেলে, কোষম ইল্‌মাদমের ছেলে, ইল্‌মাদম এরের ছেলে; 29এর ইউসার ছেলে, ইউসা ইলীয়েষরের ছেলে, ইলীয়েষর যোরীমের ছেলে, যোরীম মত্ততের ছেলে, মত্তত লেবির ছেলে; 30লেবি শামাউনের ছেলে, শামাউন যূদার ছেলে, যূদা ইউসুফের ছেলে, ইউসুফ যোনমের ছেলে, যোনম ইলিয়াকীমের ছেলে; 31ইলিয়াকীম মিলেয়ার ছেলে, মিলেয়া মিন্নার ছেলে, মিন্না মত্তথের ছেলে, মত্তথ নাথনের ছেলে, নাথন দাউদের ছেলে; 32দাউদ ইয়াসির ছেলে, ইয়াসি ওবেদের ছেলে, ওবেদ বোয়সের ছেলে, বোয়স সল্‌মোনের ছেলে, সল্‌মোন নহশোনের ছেলে; 33নহশোন অম্মীনাদবের ছেলে, অম্মীনাদব অদমানের ছেলে, অদমান অর্ণির ছেলে, অর্ণি হিষ্রোণের ছেলে, হিষ্রোণ পেরসের ছেলে, পেরস এহুদার ছেলে; 34এহুদা ইয়াকুবের ছেলে, ইয়াকুব ইসহাকের ছেলে, ইসহাক ইব্রাহিমের ছেলে, ইব্রাহিম তারেখের ছেলে, তারেখ নাহুরের ছেলে; 35নাহুর সারূজের ছেলে, সারূজ রাউর ছেলে, রাউ ফালেজের ছেলে, ফালেজ আবেরের ছেলে, আবের শালেখের ছেলে; 36শালেখ কীনানের ছেলে, কীনান আরফাখশাদের ছেলে, আরফাখশাদ সামের ছেলে, সাম নূহের ছেলে, নূহ লামাকের ছেলে; 37লামাক মুতাওশালেহের ছেলে, মুতাওশালেহ ইনোকের ছেলে, ইনোক ইয়ারুদের ছেলে, ইয়ারুদ মাহলাইলের ছেলে, মাহলাইল কীনানের ছেলে; 38কীনান আনুশের ছেলে, আনুশ শিসের ছেলে, শিস আদমের ছেলে, আদম আল্লাহ্‌র ছেলে।

লূক: ১

এই সিপারা লিখবার উদ্দেশ্য
 
 
1-2মাননীয় থিয়ফিল,
আমাদের মধ্যে যে সব ঘটনা ঘটেছে তা যাঁরা প্রথম থেকে নিজের চোখে দেখেছেন ও আল্লাহ্‌র সুসংবাদ তবলিগ করেছেন, তাঁরা আমাদের কাছে সব কিছু জানিয়েছেন, আর তাঁদের কথামতই অনেকে সেই সব বিষয়গুলো পরপর লিখেছেন। 3সেই সব বিষয় সম্বন্ধে প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে আপনার জন্য তা একটা একটা করে লেখা আমিও ভাল মনে করলাম। 4এর ফলে আপনি যা জেনেছেন তা সত্যি কি না জানতে পারবেন।
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর জন্মের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
5হেরোদ যখন এহুদিয়া প্রদেশের বাদশাহ্‌ ছিলেন সেই সময়ে ইমাম অবিয়ের দলে জাকারিয়া নামে ইহুদীদের একজন ইমাম ছিলেন। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল এলিজাবেত। তিনিও ছিলেন ইমাম হারুনের একজন বংশধর। 6তাঁরা দু’জনেই আল্লাহ্‌র চোখে ধার্মিক ছিলেন। মাবুদের সমস্ত হুকুম ও নিয়ম তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন। 7তাঁদের কোন ছেলেমেয়ে হয় নি কারণ এলিজাবেত বন্ধ্যা ছিলেন। এছাড়া তাঁদের বয়সও খুব বেশী হয়ে গিয়েছিল।
8একবার নিজের দলের পালার সময় জাকারিয়া ইমাম হিসাবে আল্লাহ্‌র এবাদত-কাজ করছিলেন। 9ইমামের কাজের চলতি নিয়ম অনুসারে গুলিবাঁট দ্বারা তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল, যেন তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসের পবিত্র স্থানে গিয়ে ধূপ জ্বালাতে পারেন। 10ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক মুনাজাত করছিল। 11এমন সময় ধূপগাহের ডানদিকে মাবুদের একজন ফেরেশতা হঠাৎ এসে জাকারিয়াকে দেখা দিলেন। 12ফেরেশতাকে দেখে তাঁর মন অস্থির হয়ে উঠল এবং তিনি ভয় পেলেন।
13ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “জাকারিয়া, ভয় কোরো না, কারণ আল্লাহ্‌ তোমার মুনাজাত শুনেছেন। তোমার স্ত্রী এলিজাবেতের একটি ছেলে হবে। তুমি তার নাম রেখো ইয়াহিয়া। 14সে তোমার জীবনে মহা আনন্দের কারণ হবে এবং তার জন্মের দরুন আরও অনেকে আনন্দিত হবে, 15কারণ মাবুদের চোখে সে মহান হবে। সে কখনও আংগুর-রস বা কোন রকম মদানো রস খাবে না এবং মায়ের গর্ভে থাকতেই সে পাক-রূহে পূর্ণ হবে। 16বনি-ইসরাইলদের অনেককেই সে তাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র কাছে ফিরিয়ে আনবে। 17নবী ইলিয়াসের মত মনোভাব ও শক্তি নিয়ে সে মাবুদের আগে আসবে। সে পিতার মন সন্তানের দিকে ফিরাবে এবং অবাধ্য লোকদের মনের ভাব বদলে আল্লাহ্‌ভক্ত লোকদের মনের ভাবের মত করবে। এইভাবে সে মাবুদের জন্য এক দল লোককে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করবে।”
18তখন জাকারিয়া ফেরেশতাকে বললেন, “কিভাবে আমি তা বুঝব? আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি এবং আমার স্ত্রীর বয়সও অনেক বেশী হয়ে গেছে।”
19ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “আমার নাম জিবরাইল; আমি আল্লাহ্‌র সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। তোমার সংগে কথা বলবার জন্য ও তোমাকে এই সুসংবাদ দেবার জন্য আল্লাহ্‌ আমাকে পাঠিয়েছেন। 20দেখ, আমার কথা সময়মতই পূর্ণ হবে, কিন্তু তুমি আমার কথা বিশ্বাস কর নি বলে বোবা হয়ে থাকবে। যতদিন না এই সব ঘটে ততদিন তুমি কথা বলতে পারবে না।”
21এদিকে লোকেরা জাকারিয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। বায়তুল-মোকাদ্দসের পবিত্র স্থানে তাঁর দেরি হচ্ছে দেখে তারা ভাবতে লাগল। 22পরে জাকারিয়া যখন বের হয়ে আসলেন তখন লোকদের সংগে কথা বলতে পারলেন না। এতে লোকেরা বুঝতে পারল পবিত্র স্থানে তিনি কোন দর্শন পেয়েছেন। তিনি লোকদের কাছে ইশারায় কথা বলতে থাকলেন এবং বোবা হয়ে রইলেন।
23ইমামের কাজের পালা শেষ হবার পরে জাকারিয়া বাড়ী চলে গেলেন। 24এর পরে তাঁর স্ত্রী এলিজাবেত গর্ভবতী হলেন এবং পাঁচ মাস পর্যন্ত বাড়ী ছেড়ে বাইরে গেলেন না। তিনি বললেন, 25“এটা মাবুদেরই কাজ। মানুষের কাছে আমার লজ্জা দূর করবার জন্য তিনি এখন আমার দিকে চোখ তুলে চেয়েছেন।”
হযরত ঈসা মসীহের জন্মের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
26-27এলিজাবেতের যখন ছয় মাসের গর্ভ তখন আল্লাহ্‌ গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রামের মরিয়ম নামে একটি অবিবাহিতা সতী মেয়ের কাছে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাঠালেন। বাদশাহ্‌ দাউদের বংশের ইউসুফ নামে একজন লোকের সংগে তাঁর বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয়েছিল। 28ফেরেশতা মরিয়মের কাছে এসে তাঁকে সালাম জানিয়ে বললেন, “মাবুদ তোমার সংগে আছেন এবং তোমাকে অনেক দোয়া করেছেন।”
29এই কথা শুনে মরিয়মের মন খুব অস্থির হয়ে উঠল। তিনি ভাবতে লাগলেন এই রকম সালামের মানে কি। 30ফেরেশতা তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় কোরো না, কারণ আল্লাহ্‌ তোমাকে খুব রহমত করেছেন। 31শোন, তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার একটি ছেলে হবে। তুমি তাঁর নাম ঈসা রাখবে। 32তিনি মহান হবেন। তাঁকে আল্লাহ্‌তা’লার পুত্র বলা হবে। মাবুদ আল্লাহ্‌ তাঁর পূর্বপুরুষ বাদশাহ্‌ দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন। 33তিনি ইয়াকুবের বংশের লোকদের উপরে চিরকাল ধরে রাজত্ব করবেন। তাঁর রাজত্ব কখনও শেষ হবে না।”
34তখন মরিয়ম ফেরেশতাকে বললেন, “এ কেমন করে হবে? আমার তো বিয়ে হয় নি।”
35ফেরেশতা বললেন, “পাক-রূহ্‌ তোমার উপরে আসবেন এবং আল্লাহ্‌তা’লার শক্তির ছায়া তোমার উপরে পড়বে। এইজন্য যে পবিত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবেন তাঁকে ইব্‌নুল্লাহ্‌ বলা হবে। 36দেখ, এই বুড়ো বয়সে তোমার আত্মীয়া এলিজাবেতের গর্ভেও ছেলের জন্ম হয়েছে। লোকে বলত তার ছেলেমেয়ে হবে না, কিন্তু এখন তার ছয় মাস চলছে। 37আল্লাহ্‌র কাছে অসম্ভব বলে কোন কিছুই নেই।”
38মরিয়ম বললেন, “আমি মাবুদের বাঁদী, আপনার কথামতই আমার উপর সব কিছু হোক।” এর পরে ফেরেশতা মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।
বিবি এলিজাবেতের ঘরে বিবি মরিয়ম
39তারপর মরিয়ম তাড়াতাড়ি করে এহুদিয়া প্রদেশের একটা গ্রামে গেলেন। গ্রামটা পাহাড়ী এলাকায় ছিল। 40মরিয়ম সেখানে জাকারিয়ার বাড়ীতে ঢুকে এলিজাবেতকে সালাম জানালেন। 41-42এলিজাবেত যখন মরিয়মের কথা শুনলেন তখন তাঁর গর্ভের শিশুটি নেচে উঠল। তিনি পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে জোরে জোরে বললেন, “সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে তুমি ধন্যা এবং তোমার যে সন্তান হবে সেই সন্তানও ধন্য। 43আমার প্রভুর মা আমার কাছে এসেছেন, এ কেমন করে সম্ভব হল? 44যখনই আমি তোমার কথা শুনলাম তখনই আমার গর্ভের শিশুটি আনন্দে নেচে উঠল। 45তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ যে, মাবুদ তোমাকে যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে।”
46তখন মরিয়ম বললেন,
“আমার হৃদয় মাবুদের প্রশংসা করছে;
47আমার নাজাতদাতা আল্লাহ্‌কে নিয়ে
আমার দিল আনন্দে ভরে উঠছে,
48কারণ তাঁর এই সামান্যা বাঁদীর দিকে
তিনি মনোযোগ দিয়েছেন।
এখন থেকে সব লোক আমাকে ধন্যা বলবে,
49কারণ শক্তিমান আল্লাহ্‌ আমার জন্য
কত না মহৎ কাজ করেছেন।
তিনি পবিত্র।
50যারা তাঁকে ভয় করে
তাদের প্রতি তিনি মমতা করেন,
বংশের পর বংশ ধরেই করেন।
51তিনি হাত বাড়িয়ে মহাশক্তির কাজ করেছেন;
যাদের মন অহংকারে ভরা
তাদের তিনি চারদিকে দূর করে দিয়েছেন।
52সিংহাসন থেকে বাদশাহ্‌দের তিনি নামিয়ে দিয়েছেন,
কিন্তু সাধারণ লোকদের তুলে ধরেছেন।
53যাদের অভাব আছে,
ভাল ভাল জিনিস দিয়ে
তিনি তাদের অভাব পূরণ করেছেন,
কিন্তু ধনীদের খালি হাতে বিদায় করেছেন।
54-55তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে
যে ওয়াদা করেছিলেন,
সেইমতই তিনি তাঁর গোলাম
ইসরাইলকে সাহায্য করেছেন।
ইব্রাহিম ও তাঁর বংশের লোকদের উপরে
চিরকাল মমতা করবার কথা তিনি মনে রেখেছেন।”
56প্রায় তিন মাস এলিজাবেতের কাছে থাকবার পর মরিয়ম নিজের বাড়ীতে ফিরে গেলেন।
হযরত ইয়াহিয়া (আঃ)-এর জন্ম
57সময় পূর্ণ হলে পর এলিজাবেতের একটি ছেলে হল। 58তাঁর উপর মাবুদের প্রচুর মমতার কথা শুনে প্রতিবেশীরা ও আত্মীয়রা তাঁর সংগে আনন্দ করতে লাগল। 59ইহুদীদের নিয়ম মত আট দিনের দিন তারা ছেলেটির খৎনা করাবার কাজে যোগ দিতে আসল। তারা ছেলেটির নাম তার পিতার নামের মত জাকারিয়া রাখতে চাইল, 60কিন্তু তার মা বললেন, “না, এর নাম ইয়াহিয়া রাখা হবে।”
61তারা এলিজাবেতকে বলল, “আপনার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই।”
62তারা ইশারা করে ছেলেটির পিতার কাছ থেকে জানতে চাইল তিনি কি নাম দিতে চান। 63জাকারিয়া লিখবার জিনিস চেয়ে নিয়ে লিখলেন, “ওর নাম ইয়াহিয়া।”
এতে তারা সবাই অবাক হল, 64আর তখনই জাকারিয়ার মুখ ও জিভ্‌ খুলে গেল এবং তিনি কথা বলতে ও আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতে লাগলেন। 65এ দেখে প্রতিবেশীরা সবাই ভয় পেল, আর এহুদিয়ার সমস্ত পাহাড়ী এলাকার লোকেরা এই সব বিষয়ে বলাবলি করতে লাগল। 66যারা এই সব কথা শুনল তারা প্রত্যেকেই মনে মনে তা ভাবতে লাগল আর বলল, “বড় হয়ে এই ছেলেটি তবে কি হবে!” তারা এই কথা বলল, কারণ মাবুদের শক্তি এই ছেলেটির উপর দেখা গিয়েছিল।
হযরত জাকারিয়ার মুখে আল্লাহ্‌র প্রশংসা
67পরে ছেলেটির পিতা জাকারিয়া পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে নবী হিসাবে এই কথা বলতে লাগলেন,
68“ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌র প্রশংসা হোক,
কারণ তিনি তাঁর নিজের বান্দাদের দিকে
মনোযোগ দিয়েছেন আর তাদের মুক্ত করেছেন।
69তিনি আমাদের জন্য
তাঁর গোলাম দাউদের বংশ থেকে
একজন শক্তিশালী নাজাতদাতা তুলেছেন।
70এই কথা তাঁর পবিত্র নবীদের মুখ দিয়ে
তিনি অনেক দিন আগেই বলেছিলেন।
71তিনি শত্রুদের হাত থেকে
আর যারা ঘৃণা করে তাদের সকলের হাত থেকে
আমাদের রক্ষা করেছেন।
72তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের মমতা করবার জন্য
আর তাঁর পবিত্র ব্যবস্থা, অর্থাৎ তাঁর কসম
পূর্ণ করবার জন্য আমাদের রক্ষা করেছেন।
73-75সেই কসম তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ
ইব্রাহিমের কাছে খেয়েছিলেন।
তিনি শত্রুদের হাত থেকে
আমাদের উদ্ধার করেছেন
যেন যতদিন বেঁচে থাকি
পবিত্র ও সৎভাবে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে
নির্ভয়ে তাঁর এবাদত করতে পারি।
76সন্তান আমার,
তোমাকে আল্লাহ্‌তা’লার নবী বলা হবে,
কারণ তুমি তাঁর পথ ঠিক করবার জন্য
তাঁর আগে আগে চলবে।
77-78তুমি তাঁর বান্দাদের জানাবে,
কিভাবে আমাদের আল্লাহ্‌র মমতার দরুন
গুনাহের মাফ পেয়ে
নাজাত পাওয়া যায়।
তাঁর মমতায় বেহেশত থেকে এক উঠন্ত সূর্য
আমাদের উপর নেমে আসবেন,
79যাতে অন্ধকারে ও মৃত্যুর ছায়ায় যারা বসে আছে
তাদের নূর দিতে পারেন,
আর শান্তির পথে আমাদের চালাতে পারেন।”
80পরে ইয়াহিয়া বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং দিলে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন। বনি-ইসরাইলদের সামনে খোলাখুলিভাবে উপস্থিতির আগ পর্যন্ত তিনি মরুভূমিতে ছিলেন।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...