যাত্রাপুস্তক ৫:২০-২১, ১৪: ১১-১২, ১৬: ২-৩, ১৭: ৩-৪; গণনা পুস্তক ১১: ১-১৫, ১৪: ১-১০, ১৬: সম্পূর্ণ ২০

যাত্রাপুস্তক ৫:২০-২১

1পরে মোশি ও হারোণ গিয়া ফরৌণকে কহিলেন, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, প্রান্তরে আমার উদ্দেশে উৎসব করিবার জন্য আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া দেও। 2ফরৌণ কহিলেন, সদাপ্রভু কে, যে আমি তাহার কথা শুনিয়া ইস্রায়েলকে ছাড়িয়া দিব? আমি সদাপ্রভুকে জানি না, ইস্রায়েলকেও ছাড়িয়া দিব না। 3তাঁহারা কহিলেন, ইব্রীয়দের ঈশ্বর আমাদিগকে দর্শন দিয়াছেন; আমরা বিনয় করি, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ করণার্থে আমাদিগকে তিন দিনের পথ প্রান্তরে যাইতে দিউন, পাছে তিনি মহামারী কি খড়্‌গ দ্বারা আমাদিগকে আক্রমণ করেন। 4মিসর-রাজ তাঁহাদিগকে কহিলেন, ওহে মোশি ও হারোণ, তোমরা লোকদিগকে কেন তাহাদের কার্য হইতে নিবৃত্ত কর? যাও, তোমাদের ভার বহন কর গিয়া। 5ফরৌণ আরও কহিলেন, দেখ, দেশের লোক এখন অনেক, আর তোমরা তাহাদিগকে ভার বহন হইতে নিবৃত্ত করিতেছ।
6আর ফরৌণ সেই দিন লোকদের কার্যশাসক ও অধ্যক্ষগণকে এই আজ্ঞা দিলেন, 7তোমরা ইষ্টক নির্মাণার্থে পূর্বের মত এই লোকদিগকে আর খড় দিও না; তাহারা গিয়া আপনারাই আপনাদের খড় সংগ্রহ করুক। 8কিন্তু পূর্বে তাহাদের যত ইষ্টক নির্মাণের ভার ছিল, এখনও সেই ভার দেও; তাহার কিছুই কম করিও না; কেননা তাহারা অলস, এই জন্য ক্রন্দন করিয়া বলিতেছে, আমরা আপনাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে যজ্ঞ করিতে যাই। 9সেই লোকদের উপরে আরও কঠিন কার্য চাপান হউক, তাহারা তাহাতেই ব্যস্ত থাকুক, এবং মিথ্যা কথায় অবধান না করুক।
10আর লোকদের কার্যশাসকেরা ও অধ্যক্ষেরা বাহিরে গিয়া তাহাদিগকে কহিল, ফরৌণ এই কথা কহেন, আমি তোমাদিগকে খড় দিব না। 11তোমরা যেখানে পাও, সেখানে গিয়া খড় সংগ্রহ কর; কিন্তু তোমাদের কার্য কিছুই কম হইবে না। 12তাহাতে লোকেরা খড়ের চেষ্টায় নাড়া সংগ্রহ করিতে সমস্ত মিসর দেশে ছড়াইয়া পড়িল। 13আর কার্যশাসকেরা তাড়া দিয়া কহিল, খড় পাইলে যেমন করিতে, তদ্রূপ এখনও তোমাদের কার্য, নিরূপিত দৈনিক কর্ম, প্রতিদিন সম্পূর্ণ কর। 14আর ফরৌণের কার্যশাসকেরা ইস্রায়েল-সন্তানদের যে অধ্যক্ষদিগকে তাহাদের উপরে রাখিয়াছিল, তাহারাও প্রহারিত হইল, আর বলিয়া দেওয়া হইল, তোমরা পূর্বের ন্যায় ইষ্টক নির্মাণের বিষয়ে নিরূপিত কর্ম আজকাল কেন সম্পূর্ণ কর না? 15তাহাতে ইস্রায়েল-সন্তানদের অধ্যক্ষেরা আসিয়া ফরৌণের নিকটে ক্রন্দন করিয়া কহিল, আপনার দাসদের সহিত আপনি এমন ব্যবহার কেন করিতেছেন? 16লোকেরা আপনার দাসদিগকে খড় দেয় না, তথাপি আমাদিগকে বলে, ইষ্টক নির্মাণ কর; আর দেখুন, আপনার এই দাসেরা প্রহারিত হয়, কিন্তু আপনারই লোকদের দোষ। 17ফরৌণ কহিলেন, তোমরা অলস, তাই বলিতেছ, আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ করিতে যাই। 18এখন যাও, কর্ম কর, তোমাদিগকে খড় দেওয়া যাইবে না, তথাপি ইষ্টকের পূর্ণ সংখ্যা দিতে হইবে। 19তখন ইস্রায়েল-সন্তানদের অধ্যক্ষেরা দেখিল, তাহারা বিপাকে পড়িয়াছে, কারণ বলা হইয়াছিল, তোমরা প্রত্যেক দিনের কার্যের, নিরূপিত ইষ্টকের, কিছু কম করিতে পারিবে না।
20পরে ফরৌণের নিকট হইতে বাহির হইয়া আসিবার সময়ে তাহারা মোশির ও হারোণের সাক্ষাৎ পাইল, তাঁহারা পথে দাঁড়াইয়াছিলেন। 21তাহারা তাঁহাদিগকে কহিল, সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া বিচার করুন, কেননা তোমরা ফরৌণের দৃষ্টিতে ও তাঁহার দাসগণের দৃষ্টিতে আমাদিগকে দুর্গন্ধস্বরূপ করিয়া আমাদের প্রাণনাশার্থে তাহাদের হস্তে খড়্‌গ দিয়াছ।
22পরে মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরিয়া গিয়া তাঁহাকে কহিলেন, হে প্রভু, তুমি এই লোকদের প্রতি অমঙ্গল কেন করিলে? আমাকে কেন পাঠাইলে? 23যে অবধি আমি তোমার নামে কথা কহিতে ফরৌণের নিকটে উপস্থিত হইয়াছি, সেই অবধি তিনি এই লোকদের অমঙ্গল করিতেছেন, আর তুমি আপন প্রজাদের উদ্ধার কিছুই কর নাই।
=========================================

ফরৌণের সৈন্যসামন্তের বিনাশ
5পরে লোকেরা পলাইয়াছে, মিসর-রাজকে এই সংবাদ দেওয়া হইলে লোকদের বিষয়ে ফরৌণ ও তাঁহার দাসগণের অন্তঃকরণ বিকারপ্রাপ্ত হইল; তাঁহারা কহিলেন, আমরা এ কি করিলাম? আমাদের দাসত্ব হইতে ইস্রায়েলকে কেন ছাড়িয়া দিলাম? 6তখন তিনি আপন রথ প্রস্তুত করাইলেন, ও আপন লোকদিগকে সঙ্গে লইলেন। 7আর মনোনীত ছয়শত রথ, এবং মিসরের সমস্ত রথ ও তৎসমুদয়ের উপরে নিযুক্ত সেনানীদিগকে লইলেন। 8আর সদাপ্রভু মিসর-রাজ ফরৌণের হৃদয় কঠিন করিলেন, তাহাতে তিনি ইস্র্রায়েল-সন্তানদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবমান হইলেন; তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা ঊর্ধ্বহস্তে বহির্গমন করিতেছিল। 9আর মিসরীয়েরা, ফরৌণের সকল অশ্ব ও রথ, এবং তাঁহার অশ্বারোহীগণ ও সৈন্যগণ তাহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবমান হইল; আর উহারা বাল্‌-সফোনের সম্মুখে পী-হহীরোতের নিকটে সমুদ্রতীরে শিবির স্থাপন করিলে তাহাদের নিকটে উপস্থিত হইল।
10ফরৌণ যখন নিকটবর্তী হইলেন, তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা চক্ষু তুলিয়া চাহিল, আর দেখ, তাহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ মিসরীয়েরা আসিতেছে; তাই তাহারা অতিশয় ভীত হইল, আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে ক্রন্দন করিল। 11তখন তাহারা মোশিকে কহিল, মিসরে কবর নাই বলিয়া তুমি কি আমাদিগকে লইয়া আসিলে, যেন আমরা প্রান্তরে মরিয়া যাই? তুমি আমাদের সহিত এ কেমন ব্যবহার করিলে? কেন আমাদিগকে মিসর হইতে বাহির করিলে? 12আমরা কি মিসর দেশে তোমাকে এই কথা কহি নাই, আমাদিগকে থাকিতে দেও, আমরা মিসরীয়দের দাস্যকর্ম করি? কেননা প্রান্তরে মরণাপেক্ষা মিসরীয়দের দাস্যকর্ম করা আমাদের মঙ্গল। 13তখন মোশি লোকদিগকে কহিলেন, ভয় করিও না, সকলে স্থির হইয়া দাঁড়াও। সদাপ্রভু অদ্য তোমাদের যে নিস্তার করেন, তাহা দেখ; কেননা এই যে মিসরীয়দিগকে অদ্য দেখিতেছ, ইহাদিগকে আর কখনই দেখিবে না। 14সদাপ্রভু তোমাদের পক্ষ হইয়া যুদ্ধ করিবেন, তোমরা নীরব থাকিবে।
15পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি আমার কাছে কেন ক্রন্দন করিতেছ? ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে অগ্রসর হইতে বল। 16আর তুমি আপন যষ্টি তুলিয়া সমুদ্রের উপরে হস্ত বিস্তার কর, সমুদ্রকে দুই ভাগ কর; তাহাতে ইস্রায়েল-সন্তানেরা শুষ্ক পথে সমুদ্রমধ্যে প্রবেশ করিবে। 17আর দেখ, আমিই মিসরীয়দের হৃদয় কঠিন করিব, তাহাতে তাহারা ইহাদের পশ্চাৎ প্রবেশ করিবে, এবং আমি ফরৌণের, তাহার সকল সৈন্যের, তাহার রথ সকলের ও তাহার অশ্বারোহীগণের দ্বারা গৌরবান্বিত হইব। 18আর ফরৌণ ও তাহার রথ সকল ও তাহার অশ্বারোহীগণ দ্বারা আমার গৌরবলাভ হইলে মিসরীয়েরা জানিতে পারিবে যে, আমিই সদাপ্রভু।
19তখন ইস্রায়েলীয় সৈন্যের অগ্রগামী ঈশ্বরের দূত সরিয়া গিয়া তাহাদের পশ্চাতে গমন করিলেন, এবং মেঘস্তম্ভ তাহাদের অগ্র হইতে সরিয়া গিয়া তাহাদের পশ্চাতে দাঁড়াইল; 20তাহা মিসরের শিবির ও ইস্রায়েলের শিবির, এই উভয়ের মধ্যে আসিল। আর সেই মেঘ ও অন্ধকার থাকিল, তথাপি উহা রাত্রিতে আলোক প্রদান করিল। ইহার ফলে সমস্ত রাত্রিতে এক দল অন্য দলের নিকটে আসিল না। 21মোশি সমুদ্রের উপরে আপন হস্ত বিস্তার করিলেন, তাহাতে সদাপ্রভু সেই সমস্ত রাত্রি প্রবল পূর্বীয় বায়ু দ্বারা সমুদ্রকে সরাইয়া দিলেন, ও তাহা শুষ্ক ভূমি করিলেন, তাহাতে জল দুই ভাগ হইল। 22আর ইস্র্রায়েল-সন্তানেরা শুষ্ক পথে সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করিল, এবং তাহাদের দক্ষিণে ও বামে জল প্রাচীরস্বরূপ হইল। 23পরে মিসরীয়েরা, ফরৌণের সকল অশ্ব ও রথ এবং অশ্বারোহীগণ ধাবমান হইয়া তাহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করিল। 24কিন্তু রাত্রির শেষ প্রহরে সদাপ্রভু অগ্নি ও মেঘস্তম্ভে থাকিয়া মিসরীয়দের সৈন্যের উপরে দৃষ্টিপাত করিলেন, ও মিসরীয়দের সৈন্যকে উদ্বিগ্ন করিলেন। 25আর তিনি তাহাদের রথের চক্র সরাইলেন, তাহাতে তাহারা অতি কষ্টে রথ চালাইল; তখন মিসরীয়েরা কহিল, চল, আমরা ইস্রায়েলের সম্মুখ হইতে পলায়ন করি, কেননা সদাপ্রভু তাহাদের পক্ষ হইয়া মিসরীয়দের বিপক্ষে যুদ্ধ করিতেছেন।
26পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি সমুদ্রের উপরে হস্ত বিস্তার কর; তাহাতে জল ফিরিয়া মিসরীয়দের উপরে ও তাহাদের রথের উপরে ও অশ্বারোহীদের উপরে আসিবে। 27তখন মোশি সমুদ্রের উপরে হস্ত বিস্তার করিলেন, আর প্রাতঃকাল হইতে না হইতে সমুদ্র পুনরায় সমান হইয়া গেল; তাহাতে মিসরীয়েরা তাহার দিকেই পলায়ন করিল; আর সদাপ্রভু সমুদ্রের মধ্যে মিসরীয়দিগকে ঠেলিয়া দিলেন। 28জল ফিরিয়া আসিল, ও তাহাদের রথ ও অশ্বারোহীদিগকে আচ্ছাদন করিল, তাহাতে ফরৌণের যে সকল সৈন্য তাহাদের পশ্চাৎ সমুদ্রে প্রবিষ্ট হইয়াছিল, তাহাদের একজনও অবশিষ্ট রহিল না। 29কিন্তু ইস্র্রায়েল-সন্তানেরা শুষ্ক পথে সমুদ্রের মধ্য দিয়া চলিল, এবং তাহাদের দক্ষিণে ও বামে জল প্রাচীরস্বরূপ হইল। 30এইরূপে সেই দিন সদাপ্রভু মিসরীয়দের হস্ত হইতে ইস্র্রায়েলকে নিস্তার করিলেন, ও ইস্র্রায়েল মিসরীয়দিগকে সমুদ্রের ধারে মৃত দেখিল। 31আর ইস্র্রায়েল মিসরীয়দের প্রতি কৃত সদাপ্রভুর মহৎ কর্ম দেখিল, তাহাতে লোকেরা সদাপ্রভুকে ভয় করিল, এবং সদাপ্রভুতে ও তাঁহার দাস মোশিতে বিশ্বাস করিল।

===================================

1পরে তাহারা এলীম হইতে যাত্রা করিল। আর মিসর দেশ হইতে প্রস্থান করিবার পর দ্বিতীয় মাসের পঞ্চদশ দিনে ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলী সীন প্রান্তরে উপস্থিত হইল, তাহা এলীমের ও সীনয়ের মধ্যবর্তী। 2তখন ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী মোশির ও হারোণের বিরুদ্ধে প্রান্তরে বচসা করিল; 3আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা তাঁহাদিগকে কহিল, হায়, হায়, আমরা মিসর দেশে সদাপ্রভুর হস্তে কেন মরি নাই? তখন মাংসের হাঁড়ির কাছে বসিতাম; তৃপ্তি পর্যন্ত রুটি ভোজন করিতাম, তোমরা ত এই সমস্ত সমাজকে ক্ষুধায় মারিয়া ফেলিতে আমাদিগকে বাহির করিয়া এই প্রান্তরে আনিয়াছ।
4তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ, আমি তোমাদের নিমিত্ত স্বর্গ হইতে খাদ্য দ্রব্য বর্ষণ করিব। লোকেরা বাহিরে গিয়া প্রতিদিন দিনের খাদ্য কুড়াইবে; যেন আমি তাহাদের এই পরীক্ষা লই যে, তাহারা আমার ব্যবস্থাতে চলিবে কি না। 5ষষ্ঠ দিনে তাহারা যাহা আনিবে, তাহা প্রস্তুত করিলে প্রতিদিন যাহা কুড়ায়, তাহার দ্বিগুণ হইবে। 6পরে মোশি ও হারোণ সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানকে কহিলেন, সায়ংকাল হইলে তোমরা জানিবে যে, সদাপ্রভু তোমাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছেন। 7আর প্রাতঃকাল হইলে তোমরা সদাপ্রভুর প্রতাপ দেখিতে পাইবে, কেননা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তোমাদের যে বচসা, তাহা তিনি শুনিয়াছেন। আমরা কে যে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে বচসা কর? 8পরে মোশি কহিলেন, সদাপ্রভু সায়ংকালে ভোজনার্থে তোমাদিগকে মাংস দিবেন, ও প্রাতঃকালে তৃপ্ত পর্যন্ত অন্ন দিবেন; সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা যে বচসা করিতেছ, তাহা তিনি শুনিতেছেন। আমরা কে? তোমরা যে বচসা করিতেছ, উহা আমাদের বিরুদ্ধে নয়, সদাপ্রভুরই বিরুদ্ধে করা হইতেছে।

========================================

1পরে ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী সীন প্রান্তর হইতে যাত্রা করিয়া সদাপ্রভুর আজ্ঞা অনুসারে নিরূপিত সকল উত্তরণস্থান দিয়া রফীদীমে গিয়া শিবির স্থাপন করিল। আর সেই স্থানে লোকদের পানার্থক জল ছিল না। 2এই জন্য লোকেরা মোশির সহিত বিবাদ করিয়া কহিল, আমাদিগকে জল দেও, আমরা পান করিব। মোশি তাহাদিগকে কহিলেন, কেন আমার সহিত বিবাদ করিতেছ? কেন সদাপ্রভুর পরীক্ষা করিতেছ? 3তখন লোকেরা সেই স্থানে জলপিপাসায় ব্যাকুল হইল, আর মোশির বিরুদ্ধে বচসা করিয়া কহিল, তুমি আমাদিগকে, এবং আমাদের সন্তানগণকে ও পশুগণকে তৃষ্ণা দ্বারা বধ করিতে মিসর হইতে কেন আনিলে? 4আর মোশি সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করিয়া কহিলেন, আমি এই লোকদের নিমিত্ত কি করিব? ক্ষণকালের মধ্যে ইহারা আমাকে প্রস্তরাঘাতে বধ করিবে। 5তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি লোকদের অগ্রে যাও, ইস্রায়েলের জন কতক প্রাচীনকে সঙ্গে লইয়া, আর যাহা দ্বারা নদীতে আঘাত করিয়াছিলে সেই যষ্টি হস্তে লইয়া যাও। 6দেখ, আমি হোরেবে সেই শৈলের উপরে তোমার সম্মুখে দাঁড়াইব; তুমি শৈলে আঘাত করিবে, তাহাতে তাহা হইতে জল নির্গত হইবে, আর লোকেরা পান করিবে। তখন মোশি ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গের দৃষ্টিতে সেইরূপ করিলেন। 7তিনি সেই স্থানের নাম মঃসা ও মরীবা [পরীক্ষা ও বিবাদ] রাখিলেন, কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণ বিবাদ করিয়াছিল এবং সদাপ্রভুর পরীক্ষা করিয়াছিল, বলিয়াছিল, “সদাপ্রভু আমাদের মধ্যে আছেন কি না?”

===============================


লোকদের বচসা ও দণ্ড
1আর লোকেরা বচসাকারীদের মত সদাপ্রভুর কর্ণগোচরে মন্দ কথা কহিতে লাগিল; আর সদাপ্রভু তাহা শুনিলেন, ও তাঁহার ক্রোধ প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল; তাহাতে তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর অগ্নি জ্বলিয়া উঠিয়া শিবিরের প্রান্তভাগ গ্রাস করিতে লাগিল। 2তখন লোকেরা মোশির নিকটে ক্রন্দন করিল; তাহাতে মোশি সদাপ্রভুর নিকটে প্রার্থনা করিলে সেই অগ্নি নির্বাপিত হইল। 3তখন তিনি ঐ স্থানের নাম তবেরা [জ্বলন] রাখিলেন, কেননা সদাপ্রভুর অগ্নি তাহাদের মধ্যে জ্বলিয়াছিল।
4আর তাহাদের মধ্যবর্তী বিদ্রোহী লোকেরা লোভাক্রান্ত হইয়া উঠিল; আর ইস্রায়েল-সন্তানগণও পুনর্বার রোদন করিয়া কহিল, কে আমাদিগকে ভক্ষণার্থে মাংস দিবে? 5আমরা মিসর দেশে বিনামূল্যে যে যে মাছ খাইতাম, তাহা এবং শসা, খরমুজ, পিঁয়াজ, সব্‌জি-পিঁয়াজ ও রশুনের কথা মনে পড়িতেছে। 6এখন আমাদের প্রাণ শুষ্ক হইল, কিছুই নাই; আমাদের সম্মুখে এই মান্না ব্যতীত আর কিছু নাই। 7ঐ মান্না ধনিয়া বীজের ন্যায়, ও তাহা দেখিতে গুগ্‌গুলের ন্যায় ছিল। 8লোকেরা ভ্রমণ করিয়া তাহা কুড়াইত, এবং যাঁতায় পিষিয়া কিম্বা উখলিতে চূর্ণ করিয়া বহুগুণাতে সিদ্ধ করিত, ও তদ্দ্বারা পিষ্টক প্রস্তুত করিত; তৈলপক্ব পিষ্টকের ন্যায় তাহার আস্বাদ ছিল। 9রাত্রিতে শিবিরের উপরে শিশির পড়িলে ঐ মান্না তাহার উপরে পড়িয়া থাকিত।- 10মোশি লোকদের রোদন শুনিলেন, তাহারা গোষ্ঠী সকলের মধ্যে প্রত্যেকে আপন আপন তাম্বুদ্বারে কাঁদিতেছিল; আর সদাপ্রভুর ক্রোধ অতিশয় প্রজ্বলিত হইল; মোশিও অসন্তুষ্ট হইলেন। 11আর মোশি সদাপ্রভুকে কহিলেন, তুমি কি নিমিত্ত আপন দাসকে এত ক্লেশ দিয়াছ? কি নিমিত্তই বা আমি তোমার অনুগ্রহ পাই নাই যে, তুমি এই সকল লোকের ভার আমার উপরে দিতেছ? 12আমি কি এই সমস্ত লোক গর্ভে ধারণ করিয়াছি? আমি কি ইহাদিগকে প্রসব করিয়াছি? সেই জন্য তুমি ইহাদের পুর্বপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয়ে দিব্য করিয়াছিলে, সেই দেশ পর্যন্ত আমাকে কি দুগ্ধপোষ্য শিশু বহনকারী পালকের ন্যায় ইহাদিগকে বক্ষে করিয়া বহন করিতে বলিতেছ? 13এই সমস্ত লোককে দিবার জন্য আমি কোথায় মাংস পাইব? ইহারা ত আমার কাছে রোদন করিয়া বলিতেছে, আমাদিগকে মাংস দেও, আমরা খাইব। 14এত লোকের ভার সহ্য করা একাকী আমার অসাধ্য; কেননা তাহা আমার শক্তির অতিরিক্ত। 15তুমি যদি আমার প্রতি এইরূপ ব্যবহার কর, তবে বিনয় করি, আমি তোমার দৃষ্টিতে যদি অনুগ্রহ পাইয়া থাকি, আমাকে একবারে বধ কর; আমি যেন আমার দুর্গতি না দেখি।
========================================
1পরে সমস্ত মণ্ডলী উচ্চৈঃস্বরে কলরব করিল, এবং লোকেরা সেই রাত্রিতে রোদন করিল। 2আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ সকলে মোশির বিপরীতে ও হারোণের বিপরীতে বচসা করিল, ও সমস্ত মণ্ডলী তাহাদিগকে কহিল, হায় হায়, আমরা কেন মিসর দেশে মরি নাই; এই প্রান্তরেই বা কেন মরি নাই? 3সদাপ্রভু আমাদিগকে খড়্‌গধারে নিপাত করাইতে এ দেশে কেন আনিলেন? আমাদের স্ত্রী ও বালকগণ ত লুন্ঠিত হইবে। মিসরে ফিরিয়া যাওয়া কি আমাদের ভাল নয়? 4পরে তাহারা পরস্পর বলাবলি করিল, আইস, আমরা একজনকে সেনাপতি করিয়া মিসরে ফিরিয়া যাই। 5তাহাতে মোশি ও হারোণ ইস্রায়েল-সন্তানগণের মণ্ডলীর সমস্ত সমাজের সম্মুখে উবুড় হইয়া পড়িলেন। 6আর যাঁহারা দেশ নিরীক্ষণ করিয়া আসিয়াছিলেন, তাঁহাদের মধ্যে নূনের পুত্র যিহোশূয় ও যিফূন্নির পুত্র কালেব আপন আপন বস্ত্র চিড়িলেন, 7এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলীকে কহিলেন, আমরা যে দেশ নিরীক্ষণ করিতে গিয়াছিলাম, সে যার পর নাই উত্তম দেশ। 8সদাপ্রভু যদি আমাদের উপর প্রীত হন, তবে তিনি আমাদিগকে সেই দেশে প্রবেশ করাইবেন, ও সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ আমাদিগকে দিবেন। 9কিন্তু তোমরা কোন মতে সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হইও না, ও সেই দেশের লোকদিগকে ভয় করিও না; কেননা তাহারা আমাদের ভক্ষ্যস্বরূপ, তাহাদের আশ্রয়-ছত্র তাহাদের উপর হইতে নীত হইল, সদাপ্রভু আমাদের সহবর্তী; তাহাদিগকে ভয় করিও না। 10কিন্তু সমস্ত মণ্ডলী সেই দুই জনকে প্রস্তরাঘাতে বধ করিতে বলিল। তখন সমাগম-তাম্বুতে সদাপ্রভুর প্রতাপ সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানের প্রত্যক্ষ হইল। 11আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, এই লোকেরা কত কাল আমাকে অবজ্ঞা করিবে? এবং আমি ইহাদের মধ্যে যে সকল চিহ্ন-কার্য করিয়াছি, তাহা দেখিয়াও ইহারা কত কাল আমার প্রতি অবিশ্বাসী থকিবে? 12আমি মহামারী দ্বারা ইহাদিগকে আঘাত করিব, ইহাদিগকে অধিকার-বঞ্চিত করিব, এবং তোমাকেই ইহাদের অপেক্ষা বৃহৎ ও বলবান জাতি করিব।
13তাহাতে মোশি সদাপ্রভুকে কহিলেন, তাহা করিলে মিসরীয়েরা তাহা শুনিবে, কেননা তাহাদেরই মধ্য হইতে তুমি আপন শক্তি দ্বারা এই লোকদিগকে আনিয়াছ; 14আর তাহারা এই দেশনিবাসী লোকদিগকেও তাহার সংবাদ দিবে। তাহারা শুনিয়াছে যে, তুমি সদাপ্রভু এই লোকদের মধ্যবর্তী, কারণ তুমি সদাপ্রভু ইহাদিগকে প্রত্যক্ষে দর্শন দিয়া থাক, আর তোমার মেঘ ইহাদের উপরে অবস্থিতি করিতেছে, এবং তুমি দিবাতে মেঘস্তম্ভে ও রাত্রিতে অগ্নিস্তম্ভে থাকিয়া ইহাদের অগ্রে অগ্রে গমন করিতেছ। 15এখন যদি তুমি এই লোকদিগকে এক ব্যক্তির ন্যায় বধ কর, তবে ঐ যে জাতিগণ তোমার খ্যাতি শুনিয়াছে, 16তাহারা বলিবে, সদাপ্রভু এই লোকদিগকে যে দেশ দিতে শপথ করিয়াছিলেন, সেই দেশে তাহাদিগকে প্রবেশ করাইতে অপারগ হইলেন; এই জন্য প্রান্তরে তাহাদিগকে সংহার করিলেন। 17এখন নিবেদন করি, তোমার বাক্যানুসারে প্রভুর প্রভাব মহিমাম্বিত হউক; 18তুমি ত বলিয়াছ, সদাপ্রভু ক্রোধে ধীর ও দয়াতে মহান এবং অধর্মের ও অপরাধের ক্ষমাকারী, তথাপি অবশ্য [পাপের] দণ্ড দেন, তিনি তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত সন্তানদের উপরে পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল বর্তান। 19বিনয় করি, তোমার দয়ার মহত্ত্বানুসারে, এবং মিসর দেশ হইতে এই পর্যন্ত এই লোকদিগকে যেমন ক্ষমা করিয়া আসিতেছ, তদনুসারে এই লোকদের অপরাধ ক্ষমা কর। 20তখন সদাপ্রভু কহিলেন, তোমার বাক্যানুসারে আমি ক্ষমা করিলাম। 21সত্যই আমি জীবন্ত, এবং সমস্ত পৃথিবী সদাপ্রভুর প্রতাপে পরিপূর্ণ হইবে; 22তাই যত লোক আমার প্রতাপ এবং মিসরে ও প্রান্তরে কৃত আমার চিহ্ন-কার্যসমূহ দেখিয়াছে, তথাচ এই দশ বার আমার পরীক্ষা করিয়াছে ও আমার রবে মনোযোগ করে নাই; 23আমি তাহাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয়ে দিব্য করিয়াছি, তাহারা সেই দেশ দেখিতে পাইবেই না; যাহারা আমাকে অবজ্ঞা করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে কেহই তাহা দেখিতে পাইবে না। 24কিন্তু আমার দাস কালেবের অন্তরে অন্য আত্মা ছিল, এবং সে সম্পূর্ণরূপে আমার অনুগত হইয়া চলিয়াছে, এই নিমিত্তে সে যে দেশে গিয়াছিল, সেই দেশে আমি তাহাকে প্রবেশ করাইব, ও তাহার বংশ তাহা অধিকার করিবে। 25পরন্তু অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা তলভূমিতে রহিয়াছে; কল্য তোমরা ফিরিয়া সূফ-সাগরের পথ দিয়া প্রান্তরে গমন কর।
26পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, 27আমার প্রতিকূলে বচসাকারী এই দুষ্ট মণ্ডলীর ভার আমি কতকাল সহ্য করিব? ইস্রায়েল-সন্তানগণ আমার প্রতিকূলে যে যে বচসা করে, তাহা আমি শুনিয়াছি। 28তুমি তাহাদিগকে বল, সদাপ্রভু বলেন, আমি জীবন্ত, আমার কর্ণগোচরে তোমরা যাহা বলিয়াছ, তাহাই আমি তোমাদের প্রতি করিব; 29এই প্রান্তরে তোমাদের শব পতিত হইবে; তোমাদের সম্পূর্ণ সংখ্যানুসারে গণিত বিংশতি বৎসর ও ততোধিক বয়স্ক তোমরা যে সমস্ত লোক আমার বিপরীতে বচসা করিয়াছ, 30আমি তোমাদিগকে যে দেশে বাস করাইব বলিয়া হস্ত উত্তোলন করিয়াছিলাম, সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করিবে না, কেবল যিফুন্নির পুত্র কালেব ও নূনের পুত্র যিহোশূয় প্রবেশ করিবে। 31কিন্তু তোমরা আপনাদের যে বালকদের বিষয়ে বলিয়াছিলে, ইহারা লুন্ঠিত হইবে, তাহাদিগকে আমি তথায় প্রবেশ করাইব; ও তোমরা যে দেশ অগ্রাহ্য করিয়াছ, তাহারা তাহার পরিচয় পাইবে। 32কিন্তু তোমাদের শব এই প্রান্তরে পতিত হইবে। 33আর তোমাদের সন্তানগণ চল্লিশ বৎসর এই প্রান্তরে পশু চরাইবে, এবং এই প্রান্তরে তোমাদের শবের সংখ্যা যে পর্যন্ত সম্পূর্ণ না হয়, সেই পর্যন্ত তাহারা তোমাদের ব্যভিচারের ফল ভোগ করিবে। 34তোমরা যে চল্লিশ দিন দেশ নিরীক্ষণ করিয়াছ, সেই দিনের সংখ্যানুসারে চল্লিশ বৎসর, এক এক দিনের জন্য এক এক বৎসর, তোমরা আপনাদের অপরাধ বহন করিবে, আর আমার বিপক্ষতা কেমন, তাহা জ্ঞাত হইবে। 35আমি সদাপ্রভু বলিয়াছি, আমার বিপরীতে চক্রান্তকারী এই সমগ্র দুষ্ট মণ্ডলীর প্রতি আমি ইহা অবশ্য করিব; এই প্রান্তরে তাহারা নিঃশেষিত হইবে, এখানেই তাহারা মরিবে।
36আর দেশ নিরীক্ষণ করিতে মোশি যে লোকদিগকে পাঠাইয়াছিলেন, যাহারা ফিরিয়া আসিয়া ঐ দেশের অখ্যাতি করিয়া তাঁহার প্রতিকূলে সমস্ত মণ্ডলীকে দিয়া বচসা করাইয়াছিল, 37দেশের অখ্যাতিকারী সেই ব্যক্তিরা সদাপ্রভুর সম্মুখে মহামারীতে মরিল। 38যে ব্যক্তিরা দেশ নিরীক্ষণ করিতে গিয়াছিল, তাহাদের মধ্যে কেবল নূনের পুত্র যিহোশূয় ও যিফূন্নির পুত্র কালেব জীবিত থাকিলেন। 39তখন মোশি সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানকে সেই কথা কহিলেন, এবং লোকেরা অতিশয় শোক করিল।
40পরে তাহারা প্রত্যুষে উঠিয়া পর্বতের শৃঙ্গে আরোহণ করিতে উদ্যত হইয়া কহিল, দেখ, এই আমরা, সদাপ্রভু যে স্থানের কথা বলিয়াছেন, আমরা সেই স্থানে যাই, কেননা আমরা পাপ করিয়াছি। 41তাহাতে মোশি কহিলেন, এখন সদাপ্রভুর আজ্ঞা লঙ্ঘন কেন করিতেছ? ইহা ত সফল হইবে না। 42তোমরা উঠিয়া যাইও না, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের মধ্যে নাই, গেলে তোমরা শত্রুসম্মুখে পরাস্ত হইবে। 43কেননা অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা সেই স্থানে তোমাদের সম্মুখে আছে; তোমরা খড়্‌গে পতিত হইবে, কেননা তোমরা সদাপ্রভুর পশ্চাৎ হইতে ফিরিয়াছ, তাই সদাপ্রভু তোমাদের সহবর্তী হইবেন না। 44তথাপি তাহারা দুঃসাহসী হইয়া পর্বত শৃঙ্গে আরোহণ করিতে লাগিল; কিন্তু সদাপ্রভুর সাক্ষ্য-সিন্দুক ও মোশি শিবির হইতে সরিলেন না। 45তখন ঐ পর্বতবাসী অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা নামিয়া আসিয়া তাহাদিগকে আঘাত করিল ও হর্মা পর্যন্ত তাহাদিগকে তাড়াইয়া দিল।

==========================

কোরহ ও তাহার দলের বিদ্রোহ ও বিনাশ
1লেবির সন্তান কহাৎ, তাঁহার সন্তান যিষ্‌হর, সেই যিষ্‌হরের সন্তান যে কোরহ, সে এবং রূবেণ-সন্তানগণের মধ্যে ইলীয়াবের পুত্র দাথন ও অবীরাম এবং পেলতের পুত্র ওন দল বাঁধিল; 2আর ইস্রায়েল-সন্তানদের দুই শত পঞ্চাশ জনের সহিত মোশির সম্মুখে উঠিল; ইহারা মণ্ডলীর অধ্যক্ষ, সমাজে সমাহূত ও প্রসিদ্ধ লোক ছিল। 3তাহারা মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে একত্র হইয়া তাঁহাদিগকে কহিল, তোমরা বড়ই অভিমানী; কেননা সমস্ত মণ্ডলীর প্রত্যেক জনই পবিত্র, এবং সদাপ্রভু তাহাদের মধ্যবর্তী। তবে কেন সদাপ্রভুর সমাজের উপরে আপনাদিগকে উন্নত করিতেছ?
4তখন মোশি তাহা শুনিয়া উবুড় হইয়া পড়িলেন। 5আর তিনি কোরহকে ও তাহার দলস্থ সকলকে কহিলেন, কে সদাপ্রভুর লোক, ও কে পবিত্র, কাহাকে তিনি আপনার নিকটবর্তী করেন, তাহা সদাপ্রভু প্রাতঃকালে জানাইবেন; তিনি যাহাকে মনোনীত করিবেন, তাহাকেই তাঁহার নিকটবর্তী করিবেন। 6হে কোরহ ও কোরহের দলস্থ সকলে, এক কর্ম কর; 7তোমরা অঙ্গারধানী লও, এবং তাহাতে অগ্নি দিয়া কল্য সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহার উপরে ধূপ দেও; তাহাতে সদাপ্রভু যাহাকে মনোনীত করিবেন, সেই ব্যক্তি পবিত্র হইবে; হে লেবির সন্তানগণ, তোমরা বড়ই অভিমানী। 8পরে মোশি কোরহকে কহিলেন, হে লেবির সন্তানগণ, বিনয় করি, আমার কথা শুন। 9ইহা কি তোমাদের নিকটে ক্ষুদ্র বিষয় যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদিগকে ইস্রায়েল-মণ্ডলী হইতে পৃথক করিয়া সদাপ্রভুর আবাসের সেবাকর্ম করণার্থে ও মণ্ডলীর সম্মুখে দাঁড়াইয়া তাহার পরিচর্যা করণার্থে আপনার নিকটবর্তী করিয়াছেন; 10আর তোমাকে ও তোমার সহিত তোমার সমস্ত ভ্রাতাকে অর্থাৎ লেবির সন্তানগণকে আপনার নিকটবর্তী করিয়াছেন? আর তোমরা কি যাজকত্বেরও চেষ্টা করিতেছ? 11অতএব তুমি ও তোমার সমস্ত দল সদাপ্রভুরই প্রতিকূলে একত্র হইয়াছ; আর হারোণ কে যে তোমরা তাঁহার প্রতিকূলে বচসা কর?
12পরে মোশি ইলীয়াবের পুত্র দাথন ও অবীরামকে ডাকিতে লোক পাঠাইলেন, কিন্তু তাহারা কহিল, আমরা যাইব না; 13ইহা কি ক্ষুদ্র বিষয় যে, তুমি আমাদিগকে প্রান্তরে মারিবার জন্য দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ হইতে আনিয়াছ? তুমি কি আমাদের উপরে সর্বতোভাবে কর্তৃত্বও করিবে? 14আর, তুমি ত আমাদিগকে দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশে আন নাই, শস্যক্ষেত্রের ও দ্রাক্ষাক্ষেত্রের অধিকারও দেও নাই। তুমি কি এই লোকদের চক্ষু উৎপাটন করিবে? আমরা যাইব না। 15তখন মোশি অতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া সদাপ্রভুকে কহিলেন, উহাদের নৈবেদ্য গ্রাহ্য করিও না; আমি উহাদের হইতে একটি গর্দভও লই নাই, আর উহাদের একজনেরও ক্ষতি করি নাই।
16পরে মোশি কোরহকে কহিলেন, তুমি ও তোমার দলস্থ সকলে, তোমরা কল্য হারোণের সহিত সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত হইবে। 17তোমরা প্রত্যেক জন অঙ্গারধানী লইয়া তাহার উপরে ধূপ দিয়া সদাপ্রভুর সম্মুখে আপন আপন অঙ্গারধানী উপস্থিত করিবে; দুই শত পঞ্চাশটি অঙ্গারধানী উপস্থিত করিবে; এবং তুমি ও হারোণ আপন আপন অঙ্গারধানী লইবে। 18পরে তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন অঙ্গারধানী লইয়া তাহার মধ্যে অগ্নি রাখিয়া ধূপ দিয়া মোশি ও হারোণের সহিত সমাগম-তাম্বুর দ্বারে দাঁড়াইল। 19আর কোরহ সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে তাঁহাদের প্রতিকূলে সমস্ত মণ্ডলীকে সমবেত করিল। তখন সদাপ্রভুর প্রতাপ সমস্ত মণ্ডলীর প্রত্যক্ষ হইল।
20পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, তোমরা এই মণ্ডলীর মধ্য হইতে পৃথক হও; 21আমি এক নিমিষে ইহাদিগকে সংহার করি। 22তাঁহারা উবুড় হইয়া পড়িলেন, ও কহিলেন, হে ঈশ্বর, হে যাবতীয় শরীরস্থ আত্মার ঈশ্বর, একজন পাপ করিলে তুমি কি সমস্ত মণ্ডলীর উপরে কোপাবিষ্ট হইবে? 23তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 24তুমি মণ্ডলীকে বল, তোমরা কোরহের, দাথনের ও অবীরামের আবাসের চতুর্দিক হইতে উঠিয়া যাও। 25আর মোশি উঠিয়া দাথনের ও অবীরামের নিকটে গেলেন, এবং ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গ তাঁহার পশ্চাৎ গেলেন। 26পরে তিনি মণ্ডলীকে কহিলেন, বিনয় করি, তোমরা এই দুষ্ট লোকদের তাম্বুর নিকট হইতে উঠিয়া যাও, ইহাদের কিছুই স্পর্শ করিও না, পাছে ইহাদের সমস্ত পাপে বিনষ্ট হও। 27তাহাতে তাহারা কোরহের, দাথনের ও অবীরামের আবাসের চারিদিক হইতে উঠিয়া গেল, আর দাথন ও অবীরাম বাহির হইয়া আপন আপন স্ত্রী, পুত্র ও শিশুগণের সহিত আপন আপন তাম্বুদ্বারে দাঁড়াইয়া রহিল।
28পরে মোশি কহিলেন, সদাপ্রভু আমাকে এই সমস্ত কার্য করিতে পাঠাইয়াছেন, আমি স্বেচ্ছানুসারে করি নাই, তাহা তোমরা ইহাতেই জানিতে পারিবে। 29সাধারণ লোকদের মরণের ন্যায় যদি এই মনুষ্যেরা মরে, কিম্বা সাধারণ লোকের শাস্তির ন্যায় যদি ইহাদের শাস্তি হয়, তবে সদাপ্রভু আমাকে পাঠান নাই। 30কিন্তু সদাপ্রভু যদি অঘটন ঘটান, এবং ভূমি আপন মুখ বিস্তার করিয়া ইহাদিগকে ও ইহাদের সর্বস্ব গ্রাস করে, আর ইহারা জীবদ্দশায় পাতালে নামে, তবে ইহারা যে সদাপ্রভুকে অবজ্ঞা করিয়াছে, তাহা তোমরা জানিতে পারিবে।
31পরে মোশির এই সমস্ত কথা সমাপ্ত হইবামাত্র তাহাদের অধঃস্থিত ভূমি বিদীর্ণ হইল, 32আর পৃথিবী আপন মুখ বিস্তার করিয়া তাহাদিগকে, তাহাদের পরিজনগণকে ও কোরহের সপক্ষ সমস্ত লোককে এবং তাহাদের সকল সম্পত্তি গ্রাস করিল। 33তাহাতে তাহারা ও তাহাদের সমস্ত পরিজন জীবদ্দশায় পাতালে নামিল, এবং পৃথিবী তাহাদের উপরে চাপিয়া পড়িল; এইরূপে তাহারা সমাজের মধ্য হইতে লুপ্ত হইল। 34আর তাহাদের রবে চারিদিকের সমস্ত ইস্রায়েল পলায়ন করিল, কেননা তাহারা বলিল, পাছে পৃথিবী আমাদিগকে গ্রাস করে। 35আর সদাপ্রভু হইতে অগ্নি নির্গত হইয়া যাহারা ধূপ নিবেদন করিয়াছিল, সেই দুই শত পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করিল।
36পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 37তুমি হারোণ যাজকের পুত্র ইলীয়াসরকে বল, সে দাহস্থান হইতে ঐ সকল অঙ্গারধানী উঠাইয়া লউক, এবং তাহার অগ্নি দূরে ঝাড়িয়া ফেলুক, কেননা সেই সকল অঙ্গারধানী পবিত্র। 38আর ঐ যে পাপীরা আপন আপন প্রাণের প্রতিকূলে পাপ করিয়াছিল, তাহাদের অঙ্গারধানী পিটাইয়া যজ্ঞবেদির আচ্ছাদনার্থ পাত প্রস্তুত করা হউক, কেননা তাহারা সদাপ্রভুর সম্মুখে সেই সকল নিবেদন করিয়াছিল; অতএব সেই সকল পবিত্র; আর সেই সকল ইস্রায়েল-সন্তানগণের পক্ষে চিহ্ন হইবে। 39তাহাতে যাহারা পুড়িয়া মরিল, তাহারা পিতলের যে যে অঙ্গারধানী নিবেদন করিয়াছিল, ইলীয়াসর যাজক সেই সকল গ্রহণ করিলেন; এবং তাহা পিটাইয়া যজ্ঞবেদির আচ্ছাদনার্থ পাত প্রস্তুত করা গেল; 40উহা ইস্রায়েল-সন্তানগণের স্মরণার্থে হইল, যেন হারোণ বংশজাত ভিন্ন অন্য গোষ্ঠীভুক্ত কোন মনুষ্য সদাপ্রভুর সম্মুখে ধূপ উৎসর্গ করিতে নিকটে না যায়, এবং কোরহের ও তাহার দলের মত না হয়; সদাপ্রভু মোশির দ্বারা তাহাকে এইরূপ আজ্ঞা দিয়াছিলেন।
41তথাপি পর দিনে ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলী মোশির ও হারোণের প্রতিকূলে বচসা করিয়া কহিল, তোমরাই সদাপ্রভুর প্রজাদিগকে বধ করিলে। 42আর মণ্ডলী মোশির ও হারোণের প্রতিকূলে একত্র হইলে তাহারা সমাগম-তাম্বুর দিকে মুখ ফিরাইল, আর দেখ, মেঘ তাহা আচ্ছাদন করিয়াছে, এবং সদাপ্রভুর প্রতাপ প্রত্যক্ষ হইয়াছে। 43তখন মোশি ও হারোণ সমাগম-তাম্বুর সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। 44আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 45তোমরা এই মণ্ডলীর মধ্য হইতে উঠিয়া যাও, আমি এক নিমিষে ইহাদিগকে সংহার করিব। 46তখন তাঁহারা উবুড় হইয়া পড়িলেন। আর মোশি হারোণকে কহিলেন, তোমার অঙ্গারধানী লও, ও যজ্ঞবেদির উপর হইতে অগ্নি লইয়া তাহার মধ্যে দেও, এবং তাহাতে ধূপ দিয়া শীঘ্র মণ্ডলীর নিকটে গিয়া তাহাদের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত কর; কেননা সদাপ্রভুর সম্মুখ হইতে ক্রোধ নির্গত হইল, মহামারী আরম্ভ হইল। 47আর মোশি যেমন বলিলেন, অমনি হারোণ অঙ্গারধানী লইয়া সমাজের মধ্যে দৌড়াইয়া গেলেন; আর দেখ, লোকদের মধ্যে মহামারী আরম্ভ হইয়াছিল, কিন্তু তিনি ধূপ দিয়া লোকদের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিলেন। 48তিনি মৃত ও জীবিত লোকদের মধ্যে দাঁড়াইলেন; তাহাতে মহামারী নিবৃত্ত হইল। 49যাহারা কোরহের ব্যাপারে মারা পড়ে, তাহারা ছাড়া আরও চৌদ্দ সহস্র সাত শত লোক ঐ মহামারীতে মারা পড়িল। 50পরে হারোণ সমাগম-তাম্বুর দ্বারে মোশির নিকটে ফিরিয়া আসিলেন। এইরূপে মহামারী নিবৃত্ত হইল।

==============================

জলের অভাবে ইস্রায়েলীয়দের বচসা
1আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ, অর্থাৎ সমস্ত মণ্ডলী প্রথম মাসে সীন প্রান্তরে উপস্থিত হইল, এবং লোকেরা কাদেশে বাস করিল; আর সেই স্থানে মরিয়মের মৃত্যু হইল ও সেই স্থানে তাঁহার কবর হইল।
2সেই স্থানে মণ্ডলীর জন্য জল ছিল না; তাহাতে লোকেরা মোশির ও হারোণের প্রতিকূলে একত্র হইল। 3আর তাহারা মোশির সহিত বিবাদ করিয়া কহিল, হায়, আমাদের ভ্রাতৃগণ যখন সদাপ্রভুর সম্মুখে মরিয়া গেল, তখন কেন আমাদের মৃত্যু হইল না? 4আর তোমরা আমাদের ও আমাদের পশুদের মৃত্যুর জন্য সদাপ্রভুর সমাজকে কেন এই প্রান্তরে আনিলে? 5এই কুস্থানে আনিবার জন্য আমাদিগকে মিসর হইতে কেন বাহির করিয়া লইয়া আসিলে? এই স্থানে চাষ কি ডুমুর কি দ্রাক্ষা কি দাড়িম্ব হয় না, এবং পান করিবার জলও নাই। 6তখন মোশি ও হারোণ সমাজের সাক্ষাৎ হইতে সমাগম-তাম্বুর দ্বারে গিয়া উবুড় হইয়া পড়িলেন; আর সদাপ্রভুর প্রতাপ তাঁহাদের দৃষ্টিগোচর হইল।
7পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, 8তুমি যষ্টি লও, এবং তুমি ও তোমার ভ্রাতা হারোণ মণ্ডলীকে একত্র করিয়া তাহাদের সাক্ষাতে ঐ শৈলকে বল, তাহাতে সে নিজ জল প্রদান করিবে; এইরূপে তুমি তাহাদের নিমিত্তে শৈল হইতে জল বাহির করিয়া মণ্ডলীকে ও তাহাদের পশু সকলকে পান করাইবে। 9তখন মোশি সদাপ্রভুর আজ্ঞা অনুসারে তাঁহার সম্মুখ হইতে ঐ যষ্টি লইলেন। 10আর মোশি ও হারোণ সেই শৈলের সম্মুখে সমাজকে একত্র করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, হে বিদ্রোহী লোকেরা, শুন; আমরা তোমাদের জন্য কি এই শৈল হইতে জল বাহির করিব? 11পরে মোশি তাহার হস্ত তুলিয়া ঐ যষ্টি দ্বারা শৈলে দুই বার আঘাত করিলেন, তাহাতে প্রচুর জল বাহির হইল, এবং মণ্ডলী ও তাহাদের পশু সকল পান করিল।
12পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, তোমরা ইস্রায়েল-সন্তানগণের সাক্ষাতে আমাকে পবিত্র বলিয়া মান্য করিতে আমার বাক্যে বিশ্বাস করিলে না, এই জন্য আমি তাহাদিগকে যে দেশ দিয়াছি, সেই দেশে তোমরা এই মণ্ডলীকে প্রবেশ করাইবে না। 13সেই জলের নাম মরীবা [বিবাদ]; যেহেতু ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর সহিত বিবাদ করিল, আর তিনি তাহাদের মধ্যে পবিত্ররূপে মান্য হইলেন।
14পরে মোশি কাদেশ হইতে ইদোমীয় রাজার নিকটে দূত দ্বারা বলিয়া পাঠাইলেন, তোমার ভ্রাতা ইস্রায়েল কহিতেছে, আমাদের যে সমস্ত কষ্ট ঘটিয়াছে, তাহা তুমি জ্ঞাত আছ। 15আমাদের পিতৃপুরুষেরা মিসরে নামিয়া গিয়াছিলেন, সেই মিসরে আমরা অনেক দিন বাস করিয়াছিলাম; পরে মিসরীয়েরা আমাদের প্রতি ও আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দুর্ব্যবহার করিতে লাগিল। 16তখন আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে ক্রন্দন করিলাম, আর তিনি আমাদের রব শুনিলেন, এবং দূত প্রেরণ করিয়া আমাদিগকে মিসর হইতে বাহির করিয়া আনিলেন; আর দেখ, আমরা তোমার দেশের প্রান্তস্থিত কাদেশ নগরে আছি। 17আমি বিনয় করি, তুমি আপন দেশের মধ্য দিয়া আমাদিগকে যাইতে দেও; আমরা শস্যক্ষেত্র কি দ্রাক্ষাক্ষেত্র দিয়া যাইব না, কূপের জলও পান করিব না; কেবল রাজপথ দিয়া যাইব; যাবৎ তোমার সীমা উত্তীর্ণ না হই, তাবৎ দক্ষিণে কি বামে ফিরিব না। 18ইদোম তাঁহাকে কহিল, তুমি আমার দেশের মধ্য দিয়া যাইতে পারিবে না, গেলে আমি খড়্‌গ লইয়া তোমার বিরুদ্ধে বাহির হইব। 19তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাহাকে কহিল, আমরা রাজপথ দিয়া যাইব; আমরা কিম্বা আমাদের পশুগণ, আমরা যদি তোমার জল পান করি, তবে তাহার মূল্য দিব; আর কিছু নয়, কেবল আমাকে পায়ে হাঁটিয়া যাইতে দেও। 20সে উত্তর দিল, তুমি যাইতে পারিবে না। পরে ইদোম অনেক লোক সঙ্গে লইয়া মহাবলে তাহাদের প্রতিকূলে বাহির হইল। 21এইরূপে ইদোম ইস্রায়েলকে আপন সীমার মধ্য দিয়া যাইতে দিতে অসম্মত হইল; অতএব ইস্রায়েল তাহার নিকট হইতে অন্য পথে গমন করিল।
হারোণের মৃত্যু
22ইস্রায়েল-সন্তানগণ অর্থাৎ সমস্ত মণ্ডলী কাদেশ হইতে প্রস্থান করিয়া হোর পর্বতে উপস্থিত হইল, 23তখন ইদোম দেশের সীমার নিকটস্থ হোর পর্বতে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, 24হারোণ আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইবে; কেননা আমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে যে দেশ দিয়াছি, সেই দেশে সে প্রবেশ করিবে না; কারণ মরীবা জলের নিকটে তোমরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচারী হইয়াছিলে। 25তুমি হারোণকে ও তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্বতের উপরে লইয়া যাও। 26হারোণকে তাহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাও; হারোণ সেই স্থানে [আপন লোকদের কাছে] সংগৃহীত হইবে, সেখানে মরিবে। 27তখন মোশি সদাপ্রভুর আজ্ঞা অনুযায়ী কর্ম করিলেন; তাঁহারা সমস্ত মণ্ডলীর সাক্ষাতে হোর পর্বতে উঠিলেন। 28পরে মোশি হারোণকে তাঁহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাঁহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাইলেন, এবং হারোণ সেই স্থানে পর্বতশৃঙ্গে মরিলেন; পরে মোশি ও ইলীয়াসর পর্বত হইতে নামিয়া আসিলেন। 29আর যখন সমস্ত মণ্ডলী দেখিল যে, হারোণ মরিয়া গিয়াছেন, তখন সমস্ত ইস্রায়েল-কুল হারোণের জন্য ত্রিশ দিন পর্যন্ত শোক করিল।

ইনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামে “লুকমান” শিরোনামে (B.Heller) হেলারের নিবন্ধটি





The Orientalists have vaingloriously tried to tie Luqman with Aesop of the Greek literature: an unwise tribute to a wise man.
He is mentioned in chapter 31 of the Qur’an, which is named after him; but little is known through trustworthy reports about who he was, despite the fact that he was a familiar legendry figure of the Arabs contemporary to the Prophet, and earlier; but of course merely as a sage, and a celebrity wiseman among the pre-Islamic poets. Some have thought that he was an African but without evidence. Although it is said that Sa`id b. al-Musayyib told a dark person: “Do not be rueful because of your color. Three of the best men ever were dark: Bilal, Mihja` (`Umar’s freed slave) and Luqman,” it does not make the case any stronger. The Orientalists have vaingloriously tried to tie him up with Aesop of the Greek literature: an unwise tribute to a wise man.
There are quite a few sayings in Arabic literature attributed to Luqman, e.g., he advised his son: ‘My son. Keep yourself in the company of the learned and listen to what the Hukama’ (wise men) have to say; for Allah quickens the dead heart with the Nur (light) of Hikmah (wisdom) as He quickens the dead land with rains.’ But no account can elevate the personality of Luqman the way Qur’an did. (See chapter entitled “Luqman.”) If Aesop is forgotten by the Greeks, Luqman remains an unforgettable wise man throughout the globe.


ইনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামে “লুকমান” শিরোনামে (B.Heller) হেলারের নিবন্ধটি  (811 থেকে 813 ) পৃষ্ঠা পড়ুন  : 



এই বইয়ের 811 পেজ এর  লিংক : LINK

Fables de Loqman Le Sage

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...