বংশাবলী-১পুস্তক ২৩ ও ২৪ অধ্যায়

 ২৩ অধ্যায়
 
শাস্ত্রী ও ফরিশীদের আচরণের সমালোচনা
 
1যীশু জনতা ও তাঁর শিষ্যদের লক্ষ্য করে বললেন,(মার্ক 12:38-40; লুক 20:45-47; মথি 15:11-20; লুক 11:39-52।) 2শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীরা মোশির আসন গ্রহণ করেছে। 3কাজেই তারা তোমাদের যা কিছু আদেশ করে তা মেনে নিয়ে তোমরা পালন কর। কিন্তু তারা যা করে তা করো না, কারণ তারা কথায় যা বলে কাজে তা করে না।মথি 5:20; রোমীয় 2:17-23। 4তারা ভারী ও দুর্বহ বোঝা লোকের কাঁধে চাপিয়ে দেয়, অথচ নিজেরা একটি আঙ্গুল দিয়েও সেই বোঝা সরাতে চায় না। 5তারা যা কিছু করে সমস্তই লোক দেখানো। তারা শাস্ত্র বচন বোঝাই বড় বড় কবচ ধারণ করে, আর আলখাল্লার ঝালর লম্বা করে।মথি 6:1; দ্বি.বি. 6:8-11,18; যাত্রা 13:9; গণনা 15:38-39। 6ভোজে প্রধান স্থান ও সমাজ ভবনে শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করতে তারা ভালবাসে।লুক 14:7; মথি 6:5। 7হাটেবাজারে অভিবাদন ও লোকের কাছে ‘রব্বি’ সম্ভাষণ পেতে তারা পছন্দ করে। 8তোমরা নিজেদের ‘রব্বি’ বলে অভিহিত হতে দিয়ো না, কারণ তোমাদের একজন মাত্র গুরু আছেন এবং তোমরা সকলে পরস্পর ভাই। 9এই পৃথিবীতে তোমরা কাউকে পিতা বলে সম্বোধন করো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই। তাঁর আবাস স্বর্গে। 10তোমরা ‘আচার্য’ বলে সম্ভাষিত হয়ো না। কারণ আচার্য তোমাদের একজনই, তিনি খ্রীষ্ট। 11তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, সে হবে তোমাদের সেবক।মথি 20:26-27। 12যে নিজেকে উন্নত করে, তাকে অবনত করা হবে, আর যে নিজেকে নত করে তাকেই উন্নত করা হবে।হিতো 29:23; ইয়োব 22:29; যিহি 21:26; লুক 18:14; ১ পিতর 5:5।
 
শাস্ত্রী ও ফরিশীদের প্রতি ধিক্কার
 
(মার্ক 12:40; লুক 11:39-42,44,52; 20:47)
13ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না।
14( ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা বিধবাদের বিষয়-সম্পত্তি গ্রাস কর, অথচ ধর্মের ভাণ করে লম্বাচওড়া প্রার্থনা আওড়াও, এজন্য বিচারে তোমাদের আরও গুরুতর শাস্তি হবে।)23:14 কোন কোন পাণ্ডুলিপিতে এই পদ পাওয়া যায়।
15ভণ্ড শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীর দল। ধিক তোমাদের! একটি লোককে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও, আর কাউকে যদি তা করতে পার তাহলে তোমরা তাকে নিজেদের চেয়েও বড় পাষণ্ড করে তোল।
16অন্ধ পথ-প্রদর্শকের দল। ধিক তোমাদের! তোমরা বলে থাক, ‘কেউ যদি মন্দিরের নামে দিব্যি করে তাতে কিছু যায় আসে না, কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের স্বর্ণের দিব্যি করে তাহলে সে শপথবদ্ধ হয়।’মথি 15:14। 17নির্বোধ ও অন্ধের দল! বল দেখি, কোনটি বড়? সোনা, না সোনাকে যে পবিত্র করেছে সেই মন্দির? 18এ কথাও তোমরা বলে থাক, যদি কেউ বেদীর নামে দিব্যি করে তাতে কিছু আসে যায় না, কিন্তু যে বেদী উপরে নৈবেদ্যের দিব্যি করে তবে সে শপথবদ্ধ হয়। 19ওরে অন্ধের দল! কোনটার গুরত্ব বেশি? নৈবেদ্যেকে পবিত্র করে তার?যাত্রা 29:37। 20কাজেই যে কেউ বেদীর দিব্যি করে, সে বেদীর এবং তার উপরে যা কিছু আছে সেগুলিরও দিব্যি করে। 21আর যে মন্দিরের দিব্যি করে সে মন্দিরের ও মন্দিরের মধ্যে যিনি বাস করেন তাঁর নামেও দিব্যি করে। 22যে কেউ স্বর্গের দিব্যি করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসনের দিব্যিও করে এবং সেই সিংহাসন যিনি অধিষ্ঠিত তাঁর দিব্যি করে।মথি 5:34।
23ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল! ধিক তোমাদের! তোমরা পুদিনা, মৌরা এবং জিরারও দশমাংশ দান করে থাক, কিন্তু বিধানের যে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ-ন্যায়পরায়ণতা, দয়া ও সততা, এগুলিকে তোমরা উপেক্ষা করেছ। তোমাদের উচিত ছিল ঐগুলির সঙ্গে এই নির্দেশগুলিও পালন করা।লেবীয় 27:30 24অন্ধ পথপ্রদর্শকের দল! তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে নাও।
25ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল! ধিক তোমাদের! তোমরা তোমাদের বাসনপত্রের বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু তোমাদের ভেতরটা লোভ ও অসংযমে পরিপূর্ণ।মার্ক 7:4। 26অন্ধ ফরিশী! ভিতরটা আগে পরিষ্কার কর তাহলে বাইরের দিকটা আপনিই পরিষ্কার হয়ে যাবে।যোহন 9:40; তীত 1:15।
27ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল! তোমরা চুণকাম করা কবরের মত।প্রেরিত 23:3। বাইরের দিকটা দেখতে সুন্দর, কিন্তু ভেতরটা মড়ার হাড় ও সব রকম আর্বজনায় পূর্ণ হয়ে আছে। 28ঠিক সেইভাবে বাইরে লোকের চোখে তোমরা ধার্মিক, কিন্তু তোমাদের অন্তর ভণ্ডামি ও উচ্ছৃঙ্খলতায় পরিপূর্ণ।লুক 16:15।
 
আসন্ন দণ্ড সম্বন্ধে যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী
 
(লুক 11:47-51)
29ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল! ধিক তোমাদের! তোমরা নবীদের জন্য সমাধি রচনা কর ও সাধুদের স্মৃতিস্তম্ভকে সাজাও। 30আর বল, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের আমলে যদি আমরা বেঁচে থাকতাম তাহলে নবীদের হত্যাকাণ্ডে আমরা অংশগ্রহণ করতাম না।’ 31এ কথার দ্বারা তাহলে তোমরা স্বীকার করছ যে নবীদের যারা খুন করেছে তোমরা তাদেরই সন্তান।প্রেরিত 7:52। 32তোমরাও তোমাদের পিতৃপুরুষদের ধারা অনুসরণ করে চলেছ। 33ওরে সর্পের দল!কেউটের বংশ! নরক দণ্ড এড়াবে কি করে?মথি 3:7। 34দেখ, আমি তোমাদের কাছে পাঠাব নবীদের, জ্ঞানী ব্যক্তি ও শাস্ত্রবিদদের। তাঁদের কাউকে তোমরা করবে হত্যা, কাউকে করবে ক্রুশবিদ্ধ, কাউকে তোমাদের সমাজভবনে নিয়ে কশাঘাত করবে এবং এক নগর থেকে অন্য নগরে তাদের তাড়া করে বেড়াবে।মথি 10:23; ১ থিষ 2:15। 35আর এভাবে ধার্মিক হেবলের রক্তপাত থেকে শুরু করে বরখিয়ের পুত্র সখরিয় যাঁকে তোমরা মন্দির ও যজ্ঞবেদীর মাঝখানে হত্যা করেছিলে-তাঁর রক্তপাত পর্যন্ত পৃথিবীতে যত নির্দোষ রক্ত পাত হয়েছে, তার সমস্ত দায় তোমাদের উপর বর্তাবে।আদি 4:8; ২ বংশা 24:20-21। 36আমি তোমাদের সত্য বলছি, এ যুগের লোকেরাই এ সবের জন্য দায়ী হবে।
37জেরুশালেম, ওগো জেরুশালেম, তুমি নবীদের হত্যা করেছ এবং তোমার কল্যাণের জন্য যাঁরা প্রেরিত হয়েছিলেন, তাঁদের করেছ প্রস্তরাঘাত। পক্ষীজননী যেমন নিজের ডানার নীচে তার শাবকদের জড়ো করে রাখে, তেমনি কতবার আমি তোমার সন্তানদের একত্র করতে চেয়েছি, কিন্তু তা তুমি করতে দাওনি।লুক 13:34-35; 19:41-44; প্রেরিত 7:59; ১ থিষ 2:15। 38তাই, তোমার মন্দির হবে ঈশ্বর পরিত্যক্ত ও জনশূন্য।যির 22:5; ১ রাজা 9:7-8। 39আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যতদিন না বলবে, ‘ধন্য তিনি, প্রভুর নামে যাঁর আগমন’ ততদিন তোমরা আর আমার দর্শন পাবে না।মথি 21:9; গীত 118:26।
 
 
===================================================
২৪ অধ্যায় 


মন্দিরের বিনাশ সম্বন্ধে যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী
(মার্ক 13:1-2; লুক 21:5-6)
1মন্দির থেকে বেরিয়ে যীশু চলে যাচ্ছিলেন, তাঁর শিষ্যেরা কাছে এসে মন্দিরের দালানগুলোর দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।মার্ক 13:1-37; লুক 21:5-36 2তিনি তাঁদের বললেন, তোমরা এসব দেখছ বটে, কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এই মন্দিরের একখানি পাথরও আর একখানির উপর থাকবে না, সব ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।লুক 19:44।
ভাবী ক্লেশ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী
(মার্ক 13:3-13; লুক 21:7-19)
3যীশু অলিভ পাহাড়ে গিয়ে বসলেন। তাঁর শিষ্যেরা নিভৃতে তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, এ সব ঘটনা কখন ঘটবে, আমাদের বলুন। আপনার পুনরাগমন ও যুগাবসানের লক্ষণই বা কি? 4যীশু বললেন, তোমরা সতর্ক থাকবে কেউ যেন তোমাদের প্রতারিত করতে না পারে। 5অনেকেই আমার নাম নিয়ে আসবে, আর তোমাদের বলবে, ‘আমিই খ্রীষ্ট’। তারা বহুলোককে প্রতারিত করবে।প্রেরিত 5:36-37,42; ১ যোহন 2:18।
6তোমরা বহু যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের বিষয়ে নানা গুজব শুনতে পাবে। এতে তোমরা উদ্বিগ্ন হয়ো না। এসব ঘটনা অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও যুগের অবসান বুঝায় না। 7একে জাতির বিরুদ্ধে অন্য জাতির, এক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্য রাষ্ট্রের অভ্যুত্থান হবে এবং বিভিন্ন স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প দেখা দেবে।যিশা 19:2; ২ বংশা 15:6। 8এ সবই দুর্বিপাকের সূচনা মাত্র।
9তখন নিপীড়ন করার জন্য লোকে তোমাদের কর্তৃপক্ষের হাতে ধরিয়ে দেবে, তারা তোমাদের হত্যা করবে, আর আমার নামের জন্যই তোমরা সকল জাতির কাছে ঘৃণাস্পদ হবে।মথি 10:17-22; যোহন 16:2। 10তখন অনেকেরই মন ভেঙ্গে যাবে, তারা বিশ্বাস হারাবে। একে অন্যকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে এবং তারা পরস্পরের ঈর্ষা করবে।মথি 10:21। 11বহু নকল নবীর আবির্ভাব হবে, তারা অনেককে বিপথে নিয়ে যাবে।মথি 7:15; ১ যোহন 4:1। 12অধর্মের আধিক্য ঘটাবে, অধিকাংশ লোকের অন্তর হবে প্রেমহীন।২ তিম 3:1-5। 13কিন্তু যে ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সে পরিত্রাণ পাবে।মথি 10:22। 14সর্বজাতির সমক্ষে সাক্ষ্য স্বরূপ ঐশ রাজ্যের সুসমাচার সমগ্র জগতে প্রচারিত হবে। তখনই হবে কালের অন্ত।মথি 28:19; 10:18।
জেরুশালেমে ভয়াবহ সঙ্কট
(মার্ক 13:14-23; লুক 21:20-24)
15তোমরা যখন দেখবে যে নবহী দানিয়েল কথিত সেই ‘ঘৃর্ণাহ বস্তু’ পবিত্র স্থানে দণ্ডায়মান (পাঠক এর অর্থ বুঝে নিক),দানি 9:26-27; 11:31; 12:11। 16তখন যারা, যিহুদীয়াতে থাকবে তারা যেন পাহাড়ী অঞ্চলে পালিয়ে যায়। 17যে ব্যক্তি বাড়ির ছাদের উপরে থাকবে সে যেন তার বাড়ি থেকে জিনিসপত্র নেবার জন্য নীচে না নামে,লুক 17:31। 18এবং যে ব্যক্তি মাঠে থাকবে সে যেন তার পোষাক নেবার জন্য ফিরে না আসে। 19হায়, যে সব নারী তখন গর্ভবতী থাকবে, আর যাদের কোলে শিশু থাকবে তাদের কত কষ্টই না হবে। 20প্রার্থনা করো, যেন তোমাদের এই পলায়ন শীতকালে বা সাব্বাথ বারে না হয়। 21কারণ সে সময়ে এমন নিদারুণ দুঃখকষ্ট উপস্থিত হবে যে জগতের আদি থেকে আজ পর্যন্ত যা কখনও হয় নি, যা কখনও হবে না।দানি 12:1; যোয়েল 2:2। 22সেই দিনের সংখ্যা ঈশ্বর কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি যদি তা না করতেন, তাহলে কোন প্রাণীই রক্ষা পেত না। মনোনীত লোকদের কথা চিন্তা করেই সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। 23কেউ যদি তখন তোমাদের বলে যে খ্রীষ্ট এখানে রয়েছেন কিম্বা ওখানে আছেন সে কথা বিশ্বাস করো না। 24কারণ অনেক নকল খ্রীষ্ট ও ভুয়ো নবীর আবির্ভাব ঘটবে। তারা এমন সব চমকপ্রদ নিদর্শন ও অলৌকিক কাণ্ড দেখাবে যার ফলে মনোনীতরাও প্রতারিত হতে পারে।মথি 24:11; দ্বি.বি. 13:1-3। 25দেখ, আগে থেকেই আমি তোমাদের এসব বলে রাখলাম। 26কাজেই লোকে যদি তোমাদের বলে, ‘তিনি মরুপ্রান্তরে রয়েছেন’, তোমরা সেখানে যেও না, কিম্বা যদি তারা বলে, ‘তিনি এখানে গুপ্তভাবে আছেন'-সে কথা বিশ্বাস করো না।লুক 17:23-24। 27বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মানবপুত্রের আগমন হবে। 28যেখানে শব সেখানে শকুনরা24:28 পাঠান্তর: ঈগল। এসে জুটবে।ইয়োব 39:30; লুক 17:37।
মানবপুত্রের আগমন
(মার্ক 13:24-27; লুক 21:25-28)
29সে সব দিনের দুঃখ ক্লেশের শেষে,
সূর্য ঢেকে যাবে অন্ধকারে,
চাঁদ আর দেবে না আলো,
আকাশ থেকে খসে পড়বে তারকারাজি
প্রকম্পিত হবে নভোমণ্ডল।যিশা 13:10; 34:4; ২ পিতর 3:10।
30তখন আকাশের বুকে মানবপুত্রের আগমনের চিহ্ন প্রকাশ পাবে, আর পৃথিবীর সমস্ত জাতি বক্ষে করাঘাত করে বিলাপ করবে। তারা মানপুত্রকে মহাপরাক্রমে মহিমান্বিত হয়ে মেঘবাহনে আসতে দেখবে।প্রকা 1:7; মথি 26:64; দানি 7:13-14; সখ 12:10। 31তূর্যধ্বনি সহকারে তিনি তাঁর দূতদের প্রেরণ করবেন। তাঁরা জগতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পরিভ্রমণ করে পৃথিবীর চারদিক থেকে তাঁর মনোনীতদের একত্র করবেন।১ করি 15:52; ১ থিষ 4:16; প্রকা 8:1-2; যিশা 17:13; সখ 2:6; দ্বি.বি. 30:4।
ডুমুর গাছের উপমা
(মার্ক 13:28-31; লুক 21:29-33)
32ডুমুর গাছ থেকে এই শিক্ষা নাও। ডুমুর গাছের শাখায় যখন কোমল পল্লবের উদ্গম হয় তখন তোমরা বুঝতে পার যে গ্রীষ্মকাল আসতে আর দেরী নেই। 33অনুরূপ ভাবে যখন তোমরা এ সব দেখতে পাবে তখন জানবে যে অন্তিমকাল আসন্ন, একেবারে দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। 34আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই প্রজন্ম অবসানের পূর্বেই এ সমস্ত ঘটনা ঘটবে। 35আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত হবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লোপ পাবে না।লুক 16:17; গীত 102:26; যিশা 51:6; মথি 5:18; ২ পিতর 3:10।
মানবপুত্রের আকস্মিক আগমন
(মার্ক 13:32-37; লুক 17:26-30,34-35)
36সেই দিনের ও সেই ক্ষণের কথা কেউ জানে না, স্বর্গদূতেরাও না, এমন কি পুত্রও সে কথা জানেন না। একমাত্র পিতাই জানেন।১ থিষ 5:1-2; মথি 25:13। 37নোহের সময়ে যা ঘটেছিল, মানবপুত্রের আবির্ভাবের সময়েও ঠিক তাই ঘটবে।আদি 6:11-13; লুক 17:26-27। 38মহাপ্লাবনে আগে নোহ যেদিন জাহাজে গিয়ে উঠলেন সেদিন পর্যন্ত লোকে পানাহার করেছে, বিবাহ করেছে ও বিবাহ দিয়েছে,২ পিতর 3:5-6; আদি 7:7। 39যতদিন না মহাপ্লাবন এসে তাদের সকলকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ততদিন তারা কিছুই বুঝতে পারে নি। মানবপুত্রের আবির্ভাবের সময়ে তেমনিই হবে। 40তখন মাঠে দুজন লোক থাকলে, একজনকে তুলে নেওয়া হবে, অন্যজন পরিত্যক্ত হবে।লুক 17:34-35। 41দুজন স্ত্রীলোক জাঁতা পিষতে থাকলে, একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজন পড়ে থাকবে। 42কাজেই সজাগ থেক, কারণ তোমাদের প্রভু যে কখন এসে পড়বেন তা তোমরা জান না।মথি 25:13। 43মনে রাখবে, রাত্রির কোন প্রহরে চোর আসবে তা যদি গৃহকর্তা জানত তাহলে সে অবশ্যই সজাগ থাকত, ঘরে সিঁধ কাটতে দিত না।লুক 12:39-46। 44কাজেই তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকবে, কারণ মানবপুত্র এমন সময়ে আসবেন যে সময়ে তাঁর আগমন প্রত্যাশা করবে না।প্রকা 16:15।
বিশ্বস্ত ও অবিশ্বস্ত ভৃত্য
(লুক 12:41-48)
45বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান ভৃত্য কে, যার উপরে তার মনিব গৃহের অন্যান্য সকলের ভার দিয়ে যথাসময়ে তাদের আহারের ব্যবস্থা করতে বলবেন? 46ধন্য সেই ভৃত্য, যার মনিব বাড়ি ফিরে এসে তাকে সেই কাজে ব্যস্ত দেখতে পাবেন। 47আমি সত্যই তোমাদের বলছি, তিনি তাঁর সমস্ত সম্পত্তির ভার তার উপরেই অর্পণ করবেন।মথি 25:21-23। 48কিন্তু সে যদি অসৎ হয়, তাহলে সে, ‘মনিবের বাড়ি ফিরে আসার অনেক দেরী আছে'-উপ 8:11। 49এই ভেবে তার সহকর্মীদের প্রহার করতে আরম্ভ করবে এবং মাতালদের সঙ্গে পানাহার শুরু করবে, 50তারপর সে যেদিন প্রত্যাশা করবে না বা যে মূহুর্তে সে সচেতন থাকবে না তেমনি এক সময়ে তার মনিব ফিরে আসবেন। 51তখন তিনি তাকে উচ্ছেদ24:51 পাঠান্তর: খণ্ড-বিখণ্ড। করে প্রতারকদের দলে তাকে নিক্ষেপ করবেন। সেখানেই শোনা যাবে তার অনুশোচনা ও আক্ষেপের আর্তস্বর।মথি 8:12।
 

TAFHIMUL QURAN SEARCH SOFTWARE - Tafhim ul quran Desktop Version

Al Quran Search And Browse For Windows / Desktop Computer : 

TAFHIMUL QURAN SEARCH SOFTWARE - Tafhim ul quran  Desktop Version 


আলহামদুলিল্লাহ। ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।

এ্যান্ড্রয়েড তাফহীমুল কুরআন এ্যাপ Al Quran Search And Browse এর ন্যায় উইন্ডোজ এর জন্যও তাফহীমুল কুরআন উইন্ডোজ এ্যাপ তৈরী করা হলো।

এই এ্যাপে যে সুবিধাগুলো থাকছে :

অন্যান্য তাফসীর ও অনুবাদ মিলিয়ে প্রায় ১৫০ টি,
ফী যিলালিল কুরআন,
১৮০ টিরও বেশী ইসলামী সাহিত্য,
১৮ টি হাদীস গ্রন্থ,
আল কুরআন বাংলায় ও আরবীতে সার্চ করার সুবিধা,
আরবী রুট ওয়ার্ড সার্চ,
আল কুরআনের সকল শব্দের শব্দার্থ ও গ্রামার,
২৪ জন ক্বারীর কুরআন তিলাওয়াত - ইত্যাদি আরো সুবিধা সহ এই এ্যাপটিতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

যারা প্রতিদিন এক রুকু করে কুরআন অধ্যয়ন করতে চান, তাদের জন্য সুরা ও রুকু ভিত্তিক সিস্টেম অত্যন্ত উপযোগী হবে।

তাছাড়া, এই এ্যাপে সংযোজিত হাফেজী কুরআন এর আরেকটি বিশেষত্ব হলো একবার প্লে দিলেই এক পৃষ্ঠা বা এক রুকু তিলাওয়াত হয়ে যাবে। তিলাওয়াত শেষে প্লে দিলে আবার ঐ রুকুটিই পুনরায় প্রথম থেকে তিলাওয়াত হবে।
মহান আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি।

( বি: দ্র:  এই এ্যাপটি শুধুমাত্র ৬৪ বিট কম্পিউটারে চলবে।  আর   গুগল ড্রাইভ সাধারণত ৫০/৬০ এমবির চাইতে বড় ফাইল হলে ভাইরাস স্ক্যান ওয়ার্নিং দেয়।  তাই উপরোক্ত লিংক এ ক্লিক করার পর Download Any Way বাটনে ক্লিক করবেন। তাহলেই ডাউনলোড শুরু হবে ইনশাআল্লাহ ) 








হিযকিয়েল (যিহিষ্কেল) পুস্তিকায় (৩৮ অধ্যায় ও ৩৯ অধ্যায়)

৩৮ অধ্যায় 

ঈশ্বরের হাতের যন্ত্ররূপে গোগ
1প্রভু পরমেশ্বর আমাকে বললেন, 2হে মর্ত্যমানব, তুমি মেশেক ও তুবলের মুখ্য শাসক মাগোগ-নিবাসী গোগকে ধিক্কার দাও। ধিক্কার দিয়েপ্রকা 20:8 3তাকে বল, আমি, সর্বাধিপতি প্রভু তার শত্রু। 4আমি তাকে ঘুরপাক খাওয়াব, বড়শি দিয়ে তাকে ও তার সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে টেনে আনব। সুসজ্জিত অশ্বারোহী সৈন্যসহ তার সৈন্যদল অসংখ্য, তার প্রতিটি সৈন্য ঢাল-তরোয়ালে সজ্জিত। 5পারস্য, সুদান ও লিবিয়া তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তারাও ঢাল ও শিরস্ত্রাণে সুরক্ষিত। 6উত্তরের গোমের ও বেথটোগারমার সমস্ত সৈন্যবাহিনী তার সঙ্গে আছে, তাদের মত আরও বহু জাতির মানুষ তাদের পক্ষে যোগ দিয়েছে। 7তাকে প্রস্তুত হতে বল এবং প্রস্তুত হতে বল তার সমস্ত সৈন্যবাহিনীকে। 8বহুদিন পরে তাকে আমি এমন একটি দেশ আক্রমণ করতে বলল যে দেশে বহুজাতির মধ্যে ছড়িয়ে থাকা মানুষগুলিকে ফিরিয়ে এনে একত্র করা হয়েছে, যেখানে তারা নির্ভয়ে বাস করছে, যুদ্ধের আশঙ্কা তাদের নেই। তারা পর্বতমালায় সাজানো ইসরায়েলভূমি আক্রমণ করবে, যা ছিল একদিন বিধ্বস্ত—পরিত্যক্ত শ্মশান ভূমি কিন্তু আজ সেখানে সমস্ত জনমণ্ডলী নিরাপদে বাস করছে। 9সে তার সৈন্যবাহিনী এবং তার পক্ষে যোগদানকারী জাতিবৃন্দসহ ঝড়ের বেগে ইসরায়েলকে আক্রমণ করবে এবং মেঘের মত দেশ ছেয়ে ফেলবে।
10গোগকে সর্বাধিপতি প্রভু বলেছেনঃ সেই নিরূপিত সময় যখন আসবে, তখন তুমি কুমতলব আঁটতে শুরু করবে। 11একটি অসহায় দেশকে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেবে, যে দেশের শহর-নগরে নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই, নেই কোন প্রাচীর-পরিখা। এই সব নগর-জনপদে নিরাপদে শান্তিতে যারা বাস করে তাদের তুমি আক্রমণ করতে চাইবে। 12একদা বিধ্বস্ত এই নগর জনপদে যারা এখন বাস করছে, তুমি তাদের আক্রমণ করে লুঠতরাজ চালাবে। নানা জাতির মধ্যে থেকে তাদের তুলে এনে একত্র করা হয়েছে, এখন তাদের পশুসম্পদ ও সম্পত্তি হয়েছে, তারা পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে বাস করছে। 13শেবা ও দেদানের লোকেরা, স্পেনের38:13 স্পেনঃ তার্শিশ। বণিকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, আক্রমণ ও লুঠতরাজ করার জন্যই কি তুমি সৈন্য সমাবেশ করেছ? তুমি কি সোনা-রূপো, পশুপাল ও ধনসম্পদের লোভে এখানে এসে হাজির হয়েছ?
14তাই সর্বাধিপতি প্রভু আমাকে গোগের কাছে পাঠিয়েছেন তাঁর এই কথা বলতে: আমার প্রজা ইসরায়েলীরা বর্তমানে যখন নিরাপদে বাস করছে, তখন তুমি 15সুদূর উত্তর থেকে বহু জাতির সৈন্য সহযোগে পরাক্রান্ত এক বিশাল অশ্বারোহী সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাদের আক্রমণ করার জন্য অভিযোগ করবে। 16প্রবল ঝড়ের বেগে সারা দেশ তোলপাড় করে তুমি আমার প্রজা ইসরায়েলীদের আক্রমণ করবে। নিরূপিত সময় উপস্থিত হলে জাতিবৃন্দের কাছে আমার স্বরূপ প্রকাশ করার জন্যই আমি তোমাকে আমার দেশ আক্রমণ করতে পাঠাব। আমার পবিত্রতা প্রমাণ করার জন্যই আমি তোমার মাধ্যমে কাজ করব। 17বহুদিন আগে আমার দাসদের, ইসরায়েলের প্রবক্তা নবীদের মাধ্যমে যার সম্বন্ধে আমি ঘোষণা করেছিলাম, তুমিই সেই ব্যক্তি। তোমারই সম্বন্ধে আমি বলেছিলাম, একদিন আমি ইসরায়েলকে আক্রমণ করার জন্য একজনকে নিয়ে আসব। তুমিই সেইজন, সর্বাধিপতি প্রভু এই কথা বলেছেন।
গোগের দণ্ড
18সর্বাধিপতি প্রভু বলেন, সেদিন গোগ ইসরায়েলকে আক্রমণ করবে সেদিন আমি ভয়াল হয়ে উঠব। 19প্রচণ্ড ক্রোধের অসহ্য জ্বালায় আমি ঘোষণা করছি, সেদিন ইসরায়েল ভূমিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হবে। 20এই পৃথিবীর বুকে সেদিন ছোট-বড় নির্বিশেষে সমস্ত পশু-পাখি-মৎস্যকুল এবং প্রতিটি মানুষ আমার ভয়ে কাঁপতে থাকবে। পাহাড়-পর্বত ভেঙ্গে পড়বে, পর্বত শিলা খসে পড়বে, সমস্ত দেওয়াল ধসে পড়বে। 21সর্বপ্রকার দুর্বিপাকের মধ্যে ফেলে গোগকে আমি আতঙ্কগ্রস্ত38:21 আতঙ্কগ্রস্ত: প্রাচীন অনুবাদ। হিব্রু অস্পষ্ট। করে তুলবো। আমি, সর্বাধিপতি প্রভু এই কথা বলছি। তার সৈন্যবাহিনী নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। 22মহামারী ও হানাহানি দিয়ে আমি তাদের শাস্তি দেব। শিলাবৃষ্টিসহ প্রবল বর্ষণ ও তার সঙ্গে আগুন ও গন্ধক বর্ষণ করব আমি তার ও তার সৈন্যবাহিনীর উপরে এবং তার পক্ষে যে সমস্ত জাতি যোগ দিয়েছিল তাদের উপরে। 23এইভাবে আমি সমস্ত জাতিকে দেখিয়ে দেব যে, আমি মহান, আমি পরম পবিত্র। তারা জানবে যে আমিই প্রভু পরমেশ্বর।
---------------------------------------------------------------------
৩৯ অধ্যায়

গোগের পরাজয়
1সর্বাধিপতি প্রভু বললেন, হে মর্ত্যমানব, মেশেক ও তুবলের মুখ্য শাসক গোগকে ধিক্কার দাও। তাকে বল, আমি তার শত্রু। 2যতক্ষণ না সে ইসরায়েলের পর্বতমালার কাছে এসে পৌঁছায়, আমি তাকে এক নতুন পথে সুদূর উত্তর থেকে টেনে নিয়ে আসব। 3তারপর এক আঘাতে তার বাঁ হাত থেকে ধনুক এবং ডান হাত থেকে সমস্ত বাণ ফেলে দেব। 4সৈন্যবাহিনীসহ গোগ ও তার মিত্রপক্ষ ইসরায়েলের পার্বত্যভূমিতে মারা পড়বে। তাদের মৃতদেহ পাখি ও বন্যজন্তুর আহার হবে। 5খোলা মাঠের মধ্যে তারা মরবে। আমি, সর্বাধিপতি প্রভু এই কথা বলছি। 6মাগোগ দেশে আমি আগুন লাগিয়ে দেব। সমস্ত উপকুলবাসী, যারা নিরাপদে নির্বিঘ্নে বসবাস করে, তারা প্রত্যেকে জানবে যে আমিই প্রভু পরমেশ্বর। 7একথা সুনিশ্চিত, আমার প্রজা ইসরায়েল জানবে আমার পবিত্র নাম। আমার নামে কলঙ্ক লেপন করতে আমি আর দেব না, তখন সমস্ত জাতি জানবে যে আমিই প্রভু পরমেশ্বর, ইসরায়েলের পবিত্র ঈশ্বর।
8সর্বাধিপতি প্রভু বললেন, যে দিনের কথা আমি বলেছি, সেই দিন আসবেই। 9ইসরায়েলের নগর-জনপদের অধিবাসীরা বাইরে গিয়ে পরিত্যক্ত অস্ত্র-শস্ত্র কুড়িয়ে এনে জ্বালানি করবে। তারা তীর, ধনুক, ঢাল, বর্শা-সড়কি-সব পোড়াবে এবং সাত বছর ধরে এতেই তাদের যথেষ্ট জ্বালানির কাজ চলবে। 10মাঠে জ্বালানি কাঠ কুড়াতে বা বনে-জঙ্গলে জ্বালানির জন্য গাছ কাটতে তাদের আর যেতে হবে না কারণ তাদের জ্বালানির জন্য পরিত্যক্ত যথেষ্ট অস্ত্র-শস্ত্র জমা করে রাখা আছে। যারা তাদের আক্রমণ করেছিল তারা আক্রান্ত হবে, যারা লুঠ করেছিল তারাই এবার লুন্ঠিত হবে। একথা সর্বাধিপতি প্রভু বলেছেন।
গোগের শেষকৃত্য
11প্রভু পরমেশ্বর বললেন, যখন এইসব ঘটনা ঘটবে তখন ইসরায়েল দেশে মরুসাগরের39:11 হিব্রুতে চারটি অতিরিক্ত শব্দ আছে, যার অর্থ অস্পষ্ট। পূর্ব দিকে পর্যটকদের উপত্যকায় আমি গোগকে একটি সমাধিস্থান দেব। গোগ ও তার সৈন্যবাহিনী সেখানে সমাহিত হবে এবং ঐ উপত্যকার নাম হবে ‘গোগের সৈন্যবাহিনীর উপত্যকা’। 12সমস্ত মৃতদেহ কবর দিয়ে দেশ পরিষ্কার করে তুলতে ইসরায়েলীদের সাত মাস লাগবে। 13তাদের কবর দেওয়ার কাজে দেশের প্রত্যেকটি লোক সাহায্য করবে এবং আমার বিজয়ের দিনটি তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি, সর্বাধিপতি প্রভু এই কথা বললাম। 14সাত মাস কেটে গেলে কিছু লোককে মনোনীত করা হবে, যারা সারা দেশ ঘুরে ঘুরে খুঁজে দেখবে, কোথাও কোন মৃতদেহ তখনও পড়ে আছে কি না? সেগুলিকে খুঁজে এনে তারা কবর দেবে এবং এইভাবে দেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে। 15সারা দেশে অনুসন্ধান চালাবার সময় প্রতিবারই তারা মানুষের অস্থি পাবে। সেই অস্থির পাশে তারা চিহ্ন করে রাখবে যাতে কবর খোঁড়ার কাজে নিযুক্ত লোকেরা সেই অস্থি তুলে নিয়ে গিয়ে ‘গোগের সৈন্যবাহিনীর উপত্যকা’য় কবর দিতে পারে। (16এরা কাছেই একটি শহর থাকবে, সৈন্যবাহিনীর নামেই এর নামকরণ হবে।) এইভাবে দেশটি আবার শুচি-শুদ্ধ হয়ে উঠবে।
17সর্বাধিপতি প্রভু আমাকে বললেন, হে মর্ত্যমানব, সমস্ত পশু-পাখিকে ডাক। আমি তাদের জন্য যে যজ্ঞের আয়োজন করেছি, চারিদিক থেকে তারা এসে জমা হোক, গ্রহণ করুক খাদ্য। ইসরায়েলের পর্বতমালায় অনুষ্ঠিত হবে মহাযজ্ঞ। এখানে তারা রক্ত ও মাংস দুই-ই খেতে পারে।প্রকা 19:17-18 18এখানে তারা খাবে সৈনিকদের মৃতদেহ এবং পান করবে পৃথিবীর অধিপতিদের রক্ত। গরু-ছাগল ভেড়ার মত, তারা সকলে নিহত হবে এখানে। 19বলির পশুর মত আমি যখন এদের হত্যা করব, তখন সমস্ত পশুপাখি পেটভরে চর্বি খাবে, আকন্ঠ রক্ত পান করে মাতাল হয়ে যাবে। 20আমার ভোজ সভায় তারা অশ্ব, অশ্বারোহী, সৈন্যবাহিনী ও যোদ্ধাদের মাংস প্রাণভরে খাবে। আমি, সর্বাধিপতি প্রভু এই কথা বললাম।
ইসরায়েলের পুনরুদ্ধার
21প্রভু পরমেশ্বর বললেন, সমস্ত জাতিকে আমি দেখাব আমার মহিমার ঐশ্বর্য। তাদের দেখিয়ে দেব, কি ভাবে আমি আমার ন্যায়ের বিধান কার্যকরী করার জন্য ক্ষমতার ব্যবহার করে থাকি। 22ইসরায়েলীরা তখনই জানবে যে, আমিই তাদের প্রভু পরমেশ্বর। 23জাতিবৃন্দ জানবে যে ইসরায়েলীরা আমার অবমাননা করে যে অন্যায় করেছিল, তারই শাস্তিস্বরূপ তাদের নির্বাসনে যেতে হয়েছিল। আমি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম, শত্রুদের হাতে সমর্পণ করেছিলাম এবং যুদ্ধে তাদের নিহত হতে দিয়েছিলেন। 24তাদের দুষ্কর্ম ও অশুচিতার যোগ্য প্রাপ্যই তাদের দিয়েছিলাম এবং তাদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়েছিলাম।
25সর্বাধিপতি প্রভু বলেন, কিন্তু এবার যাকোবের বংশধর, ইসরায়েলী প্রজাদের প্রতি আমি কৃপা করব, আবার তাদের শ্রীবৃদ্ধি করব। আমার পবিত্র নামের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখব। 26তারা নিজেদের দেশে আবার নিরাপদে, শান্তিতে বসবাস করবে, কেউ আর তাদের হুমকি দিতে আসবে না। তখনই তারা আমাকে অবমাননা করায় প্রতারণার দায়ে কীভাবে অপদস্থ হয়েছিল—সেই লজ্জার স্মৃতি তাদের মন থেকে মুছে যাবে। 27আমি মহাপবিত্র—সর্বজাতির কাছে এ কথা সপ্রমাণ করার জন্যই আমি আমার প্রজাদের সমস্ত শত্রু দেশ থেকে ফিরিয়ে আনব। 28তখন আমার প্রজারা জানবে যে, আমিই প্রভু পরমেশ্বর। তারা একথা জানবে, যে আমিই তাদের নির্বাসনে পাঠিয়েছিলাম এবং আমিই ফিরিয়ে এনেছি তাদের আপন দেশে, একজনকেও ফেলে আসিনি। 29আমি ইসরায়েলী প্রজাদের উপর আমার আত্মা সঞ্চারিত করব, আর কোন দিন তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব না। আমি, সর্বাধিপতি প্রভু, এই কথা বললাম।



বাইবেলের আদি পুস্তক (১০ অধ্যায়)

নোহের বংশতালিকা
1নোহের পুত্র শেম, হাম ও যাফত-এর বংশ বৃত্তান্ত নিম্নরূপ। প্লাবনের পরে তাদের সন্তানেরা জন্মগ্রহণ করেছিল।
2যাফতের সন্তান - গোমের, মাগোগ, মাদাই, যবন, তুবল, মেশেক ও তীরাস। 3গোমের-এর সন্তান - আশকিনাজ, রীফাত ও তোগারমা। 4যবনের সন্তান - এলিশা তারশীশ10:4 তারশীশ = স্পেন, কিত্তিম10:4 কিত্তিম = সাইপ্রাস। ও দোদানীম10:4 দোদানীম = রোডস। 5এদের থেকেই উপকূল ও দ্বীপ নিবাসী জাতিসমূহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষা ও গোষ্ঠী অনুযায়ী বিভক্ত হয়ে বিস্তৃতি লাভ করল।
6হাম-এর সন্তান - কুশ, মিশর, পুট ও কনান।
7কুশের সন্তান - শেবা, হবীলা, সাবতা, রয়মা ও সাবতকা। 8রয়মার সন্তান - শেবা ও দদান। কুশের পুত্র নিমরোদ, তিনিই পৃথিবীর প্রথম পরাক্রান্ত পুরুষ।
9প্রভুর সাক্ষাতে তিনি ছিলেন মহাশক্তিধর ব্যাধ। এই কারণেই বলা হয়, ‘প্রভুর সাক্ষাতে মহাশক্তিধর ব্যাধ নিমরোদের তুল্য’ - 10শিনিয়র দেশের বাবেল, এরেক ও আক্কাদ - এই অঞ্চলগুলি নিয়েই প্রথমে তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। 11এই দেশ থেকে তিনি আসিরিয়ায় যান এবং সেখানে নীনবী, রহোবোত-ঈর, 12কালাহ্ এবং নীনবী ও কালাহ্-এর মধ্যবর্তী রেশেন মহানগরীর পত্তন করেন। 13মিশরের সন্তান - লুদি, অনামি, লেহাবি, নাফতুহি, পাথরুশি, কসলুহি ও কাফতোরি 14(যাদের থেক ফিলিস্তিনীদের উৎপত্তি)। 15কনানের সন্তান - জ্যেষ্ঠপুত্র সিদোন, হেৎ, যেবুষী, আমোরী, গির্গাশী, হিব্বতী, আরকিতি, 16-17সিনী, আরভাদী, জেমরাতী ও হামাতী জাতিসমূহ। 18পরে কনানের গোষ্ঠীবর্গ আরও বিস্তৃতি লাভ করেছিল। 19কনানী জাতির আঞ্চলিক সীমা সীদোন থেকে গেরার-এর দিকে গাজা নগরী পর্যন্ত এবং সদোম, ঘমোরা, আদমা ও জেবোয়িম-এর দিকে লাশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 20নিজ নিজ গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এরাই হাম-এর বংশধর। 21এবের-এর সন্তানদের আদিপুরুষ, যাফত-এর জ্যেষ্ঠভ্রাতা শেম-এরও সন্তান-সন্ততি ছিল।
22শেম-এর সন্তান - এলাম, আশুর, আরফাকষাদ, লুদ ও অরাম। 23অরামের সন্তান - উজ্, হুল, গেথের ও মশ। 24আরফাক্-ষাদের পুত্র কোলাহ্ ও শেলাহ্-এর পুত্র এবের। 25এবেরের দুই পুত্র, একজনের নাম পেলেগ (বিভাগ) কারণ তার আমলেই পৃথিবী বিভক্ত হয়েছিল। তার ভাইয়ের নাম যোক্তান। 26যোক্তানের সন্তান আল্‌মোদাদ, শেলেফ, হাজারমাবেৎ, যেরাহ্, 27হাদোরাম, উজাল, দিকলা, 28ওবাল অবিময়েল, শেবা, ওফির, হাবিলা এবং যোবাব। 29এরা সকলেই যোক্তানের সন্তান। 30তাঁদের বসতি পূর্বদিকের পার্বত্য অঞ্চল মেশা থেকে সফার পর্যন্ত বিস্তৃত। 31নিজ নিজ গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এরাই শেমের বংশধর।
32নিজ নিজ বংশ ও জাতি অনুসারে এরা সকলে নোহের সন্তানদের বংশধর। প্লাবনের পর এদের বংশজাত বিভিন্ন জাতি পৃথিবীর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...