★খালি গায়ে স্পর্শ হতে হবে বা এমন পাতলা কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ হতে হবে যে, কাপড় থাকার পরও শরীরের স্পন্দন অনুভূত হয়।বিস্তারিত জানুন-1233
(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
আসসালামু আলাইকুম হুজুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দয়া করে উত্তর দিলে অনেক উপকার হবে।
প্রশ্ন : শ্বশুর যদি ছেলের বৌকে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করে যদিও ছেলের বৌ এর এতে কোনো দোষ নেই তাহকে কি ওই বৌ কি তার স্বামীর জন্য হারাম হয়ে যাই?? তাকে কি তালাক দিবে তার স্বামী??
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ(প্রথম মত)
(দ্বিতীয় মত)
কোন মত গ্রহণযোগ্য ও অগ্রাধিকার যোগ্য?
(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
ছেলের স্ত্রীকে স্পর্শ করার দ্বারা কি স্ত্রীটি ছেলের জন্য হারাম হয়ে যায়?
প্রশ্ন:
From: zaied bin khalid
Subject: ছেলের বউকে স্পর্শ করা প্রসঙ্গে
Country : বাংলাদেশ
Mobile : Message Body
আসসালামু আলাইকুম। ভাই কেমন আছেন। প্রশ্ন বিস্তারিত না হওয়ায় আমি দুঃখিত।
প্রশঃ ছেলে যে মেয়েকে পছন্দ করে তাকে ছেলেটির বাবা ঘটনাক্রমে (মেয়েটি বাবু কোলে নেয়া অবস্থায় ছিল) মেয়েটির হাতের নিচে স্তনের অংশে হাত দেয়। সেখানে ছেলেটির ভাই মা উপস্থিত ছিল ( টিভি দেখছিল)। মেয়েটির দাবি বাবা তার অখানে ইচ্ছাকৃত হাত দেয়। কিন্তু ছেলেটির দাবি তার বাবা বাবুকে ধরতে গীয়ে হাত পরে জায়। উভয়ের দাবির আলোকে জবাব চাই। ধন্যবাদ।
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পিতা মেয়েটিকে স্পর্শ করার সময় নিম্ন বর্ণিত শর্ত যদি পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত মেয়ে সে পিতার সন্তানের জন্য হারাম হয়ে যাবে। তথা বিবাহ হয়ে থাকলে ভেঙ্গে যাবে। আর না হয়ে থাকলে কোনদিন উক্ত মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে না। যদি এর মাঝের একটি শর্তও ফউত হয়ে যায়, তাহলে এ নিষিদ্ধতা প্রয়োগ হবে না। শর্তগুলো নিম্নরূপ-
১–
সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে মেয়েকে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين- ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)
২–
স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।
পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
আর মহিলার উত্তেজনা হল মানসিকভাবে উত্তেজিত হয়ে যাওয়া।
وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)
৩–
স্পর্শ করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার শেষে, হাত ছেড়ে দেওয়ার পর যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও নিষিদ্ধতার সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)
৪–
স্পর্শ করার পর উদ্ভূত উত্তেজনা স্থীর হওয়ার পূর্বেই বীর্যপাত না হতে হবে। যদি উত্তেজনা হওয়ার সাথে সাথেই বীর্যপাত হয়ে যায়, তাহলেও নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- هذا إذا لم ينزل فلو أنزل مع مس أو نظر فلا حرمة به بفتى
وفى رد المحتار- قوله : فلا حرمة ) لأنه بالإنزال تبين أنه غير مفض إلى الوطء هداية .
قال في العناية : ومعنى قولهم إنه لا يوجب الحرمة بالإنزال أن الحرمة عند ابتداء المس بشهوة كان حكمها موقوفا إلى أن يتبين بالإنزال ، فإن أنزل لم تثبت ، وإلا ثبت(الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/109
৫–
মহিলার বয়স ৯ বছর থেকে কম না হতে হবে। আর পুরুষের বয়স ১২ বছর থেকে কম না হতে হবে। {হুরমতে মুসাহারাত-১৯}
৬–
যদি স্পর্শকারী মহিলা হয়, আর উত্তেজনা হওয়ার দাবি করে, আর স্বামীর এ ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় যে, স্ত্রী সত্য বলছে, বা স্পর্শকারী পুরুষ হয় ও উত্তেজনার দাবি করে, তাহলেও তার সংবাদের উপর স্বামীর প্রবল ধারণা হয় যে, লোকটি সত্য বলছে, তাহলে নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে নতুবা নয়। কেননা স্ত্রী এ দাবি করার মাধ্যমে স্বামী থেকে বাঁচতে চাচ্ছে, তাই স্বামীর সত্যায়ন জরুরী, তাছাড়া যদি দুই জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয় যে, স্পর্শ করার সময় উত্তেজনা ছিল তাহলে স্বামীর সত্যায়নের কোন প্রয়োজন নেই। {ইমদাদুল ফাতওয়া-২/৩২০, হুরমতে মুসাহারাত-১৯}
উল্লেখিত ৬টি শর্ত পাওয়া গেলে মেয়েটিকে বিয়ে করা ছেলেটির জন্য হারাম হয়ে যাবে। আর যদি কোন একটি শর্তও ফওত হয়ে যায়, তাহলে মেয়েটিকে বিয়ে করা ছেলেটির জন্য হারাম সাব্যস্ত হবে না।
যদি কোন সাক্ষ্য না থাকে কিন্তু ছেলেটির এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত ধারণা হয় যে, এমন ঘটনা ঘটেছে যাতে হারাম হওয়া প্রমাণিত হয়, তাহলে ছেলের জন্য তা অস্বিকার করা জায়েজ নয়। {আল হিলাতুন নাজেযা লিল হালিলাতিল আজেযা, ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৩/১১৮, ৪/১১৮}
আর যদি মেয়ের সুনিশ্চিত বিশ্বাস হয় যে, এমন ঘটনাই ঘটেছে, যার দরূন ছেলেটি তার জন্য হারাম হয়ে গেছে, তাহলে মেয়েটি আল্লাহকে ভয় করে ছেলেটি থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখবে। কখনোই বিয়ে করবে না। {হিলাতুন নাজেযা লিল হালিলাতিল আজেযা, ইমদাদুল ফাতওয়া-২/৩২১}
বিস্তারিত জানতে দেখুন-
হুরমতে মুসাহারাত
হিলাতুন নাজেযা লিল হালিলাতিল আজেযা
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
(
পাদটিকা :
তবে, হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আলেমের বক্তব্য হলো: কুরআনের একটি মূলনীতি হলো, একজনের বোঝা বা কাজের শাস্তি আরেকজন ভোগ করবে না। কিন্তু এখানে স্ত্রীর দোষে, বা পুরুষের দোষে, কিংবা স্বামীর দোষে কিংবা পিতার দোষে - ইত্যাদির কারণে আরেকজন ভুক্তভোগী হয়। তালাক হয়ে যাওয়ার পর স্বামী বা স্ত্রী নিদারুণ সমস্যায় পড়তে পারে। তাই এক্ষেত্রে তাদের বিচারের দাবী করা হবে, কিন্তু তালাক হওয়ার বিষয়টা সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীর উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত, যার কোনো দোষ নেই, তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, সে কি তালাক নিতে চায়, নাকি নিতে চায় না, এবং তার সিদ্ধান্তের আলোকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
যদি অপরাধী স্বামী হয়, তাহলে স্ত্রী তালাক নিতে চাইলে হয়তো স্বামীকে দ্বিগুণ মোহরানা পরিশোধ করতে হবে, আবার যদি অপরাধী স্ত্রী হয়, তাহলে স্বামী তালাক দিতে চাইলে তার মোহরানা মাফ করে দেওয়া হবে, -- এরকম কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, পরিস্থিতির আলোকে।
তবে, এ বিষয়টাও যথেষ্ট আলোচনার দাবীদার, আলেমদেরকে বিষয়টি আরো গভীর ভাবে দেখতে হবে।
)
আরো বিস্তারিত দেখতে পারেন এই লিংকে ।
No comments:
Post a Comment