প্রশ্ন: ৪৪৯ : নিফাস বা সন্তান প্রসব পরবর্তীকালীন পবিত্র হওয়ার সময় সীমা ।

 

সন্তান প্রসবের পর নারীদের যে রক্তশ্রাব হয় শরিয়তের ভাষায় তাকে ‘নেফাস’ বলে। 

নেফাস চলাকালীন সময়ে নারীদের জন্য কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। এ সময়ে তাদের জন্য অনেক ইবাদত করাও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। যেমন: নামাজ ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত। সেইসঙ্গে স্বামী সহবাসও। 

তবে তা কতো দিন? এ সময়ে তাদের জন্য কী কী নিষিদ্ধ বা হারাম? বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

নেফাস কাকে বলে?

নেফাসের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘জন্ম’। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর নারীদের যোনি থেকে যে রক্তস্রাব হয় শরিয়তের ভাষায় তাকেই নেফাস বলে।

নেফাসের সময়সীমা: 

নেফাসের সর্বোচ্চ সময় ৪০ দিন। সর্বনিম্ন সময়ের সীমা নেই। এক দুই ঘণ্টা বা এক দুই দিনেও বন্ধ হতে পারে। তবে আমাদের দেশের নারীদের সাধারণত ১৫, ২০, ২৫ দিন হয়ে থাকে। ৪০ দিনের বেশি রক্ত বের হলে একে এস্তেহাজা বা রোগ মনে করতে হবে। নেফাসের রক্ত ১৫, ২০, ২৫, ২৭, ৩০, ৩৫ দিনের মধ্যে কিংবা উক্ত সময়ের মধ্যে যেকোনো দিন বন্ধ হতে দেখবে তখন গোসল করে নামাজ দোয়া পড়া ইত্যাদি কাজ শুরু করবে।

প্রসবের পর যদি কারো একেবারেই রক্ত না যায়, তবুও তাকে গোসল করতে হবে। এ গোসল ফরজ। নেফাসের সময়সীমার মধ্যে সর্বক্ষণ রক্ত আসা জরুরি নয় বরং মাঝে মধ্যে দুই চার ঘণ্টা বা দুই একদিন রক্ত বন্ধ হয়ে থেকে আবার এলেও সেই মাঝখানের সময়কেও নেফাসের সময় ধরা হবে।

কোনো নারীর হয়তো ৩০ দিন রক্ত যাওয়ার অভ্যাস ছিল, কিন্তু একবার ৩০ দিন অতিক্রম হওয়ার পরও রক্ত বন্ধ হল না; এমতাবস্থায় সে গোসল না করে অপেক্ষা করবে। অত:পর যদি পূর্ণ ৪০ দিন শেষে বা ৪০ দিনের ভেতর রক্ত বন্ধ হয়, তাহলে এইসব কয় দিনও নেফাসের মধ্যে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে যদি ৪০ দিনের বেশি রক্ত জারি থাকে, তাহলে পূর্বের অভ্যাস মোতাবেক ৩০ দিন নেফাসের মধ্যে গণ্য হবে এবং অবশিষ্ট দিনগুলো ইস্তেহাযা বলে গণ্য হবে। ৪০ দিন পরে গোসল করে নামাজ পড়তে থাকবে এবং ৩০ দিনের পরের ১০ দিনের নামাজের কাযা করবে।

নেফাসের বিধান:

চল্লিশ দিনের আগে যদি রক্ত বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যেদিন বন্ধ হবে, সেদিন গোসল করে নামাজ পড়া শুরু করে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে স্বামী সহবাসও তার জন্য বৈধ হয়ে যাবে এবং সকল ধরণের বিধি নিষেধ রোহিত হয়ে যাবে। আর যদি চল্লিশ দিনেও বন্ধ না হয়, তাহলে একে ইস্তেহাজার রক্ত মনে করে নামাজ রোজা শুরু করে দিতে হবে। তখন নামাজ রোজা ফরজ। নামাজ কাযা করা যাবে না। এ অবস্থায় স্বামী সহবাসও বৈধ।

একটি ভুল ধারণা:

একটি ভুল ধারণা আছে যে, সন্তান প্রসবের পর চল্লিশ দিন পর্যন্ত নামাজ পড়া যায় না। কথাটি সঠিক নয়। যার রক্ত বন্ধ না হয়, তার জন্য সর্বোচ্চ মেয়াদ হলো চল্লিশ দিন। অর্থাৎ যদি আগে বন্ধ না হয়, লাগাতার ঝরতে থাকে, তাহলে সর্বোচ্চ মেয়াদকাল চল্লিশ দিন পর্যন্ত। কিন্তু যদি এর আগেই বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এর আগ থেকে নামাজ পড়া শুরু করতে হবে।

নেফাস অবস্থায় যা বর্জনীয় যা করণীয়:

নেফাস অবস্থায় নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে না। পবিত্র কোরআন শরীফ বা কোনো আয়াত স্পর্শ করতে বা মুখস্ত পড়তে পারবে না। তবে পবিত্র কোরআন শরীফ গিলাফে জড়ানো থাকলে গিলাফের ওপর দিয়ে স্পর্শ করা জায়েজ আছে। অনেকে নাপাক অবস্থায় পরনের শাড়ি, দোপাট্রা বা কামিজের আচল দ্বারা পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করে। এটাও জায়েজ নয়। পরিধানের কাপড় ছাড়া আলাদা কোনো পবিত্র কাপড়ের সাহায্যে স্পর্শ করলে জায়েজ হবে।

যে টাকা-পয়সা বা বরতনে বা তাবীজে পবিত্র কোরআনের কোনো আয়াত লেখা আছে সেই টাকা পয়সা, তাবীজ এবং বরতনও স্পর্শ করতে পারবে না। হ্যাঁ, কোনো থলি বা পাত্রে রাখলে সে থলি বা পাত্র স্পর্শ করতে পারবে এবং থলি বা পাত্রের গায়ে ধরেও উঠাতে পারবে।
 
নিজের নেফাস অবস্থায় যে নারী ছাত্র-ছাত্রীদের পবিত্র কোরআন শরীফ পড়ান, তারা শুধু বানান পড়াতে পারবেন। তেলাওয়াত পড়ানো যাবে না। অর্থাৎ শব্দ শব্দ ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ানোর অনুমতি রয়েছে। আর যদি তেলাওয়াতও পড়াতে হয় তবে প্রত্যেক আয়াতকে আলাদা আলাদা অংশ করে দুই এক শব্দের পরপর নি:শ্বাস ছেড়ে পড়াবেন যেন প্রতিটি অংশ পবিত্র কোরআন শরীফের ক্ষুদ্রতম আয়াত অপেক্ষা ছোট থাকে। ছোট আয়াতের সমান হয়ে গেলে গুনাহগার হবেন।

তবে সূরা ফাতেহা কিংবা পবিত্র কোরআন শরীফে উল্লেখিত কোনো দোয়ার আয়াত যেমন রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও অথবা রাব্বানা জালামনা আনফুসানা ইত্যাদি দোয়ার নিয়তে পড়িলে গুনাহগার হবে না। তেলাওয়াতের নিয়তে পড়িলে গুনাহগার হবে।

নেফাসের সময়ে নামাজ, রোজা, কাবা শরীফের তাওয়াফ নিষিদ্ধ। হায়েজের সময়ে যে নামাজগুলো পড়া যায়নি তা পাক হওয়ার পর কাজা করতে হবে না। কিন্তু রোজা মাফ নেই। রোজা কাজা করতে হবে।
 
নেফাস চলাকালে নামাজের সময় হলে ওজু করে কোনো পাক জায়গায় কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে আল্লাহ আল্লাহ করবে। নামাজ পড়বে না। এমন করা মুস্তাহাব।

নেফাস কালে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গম হারাম এবং এই সময়ে স্ত্রীর হাটু থেকে নাভি পর্যন্ত স্থানের প্রতি দৃষ্টি দেওয়াও মাকরূহে তাহরিমী। নেফাসের সময়ে সহবাস করলে কবীরা গুনাহ হবে। তবে স্ত্রীর হাটু থেকে নাভী ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গ স্পর্শ করা, একত্রে আহার করা ও একত্রে শয়ন করা জায়েয রয়েছে। তবে হায়েজের দোহাই দিয়ে স্ত্রী থেকে একেবারেই দূরে সরে যাওয়া যাবে না।
 
স্ত্রীর নাপাক অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গমের সুযোগ না পাওয়ায় স্বামী যদি যৌবনের উম্মদনায় ও কামরিপুর তাড়নায় এমন অস্থির হয়ে পড়ে যে অন্যত্র পাপ করে ফেলতে পারে তবে স্ত্রীর রাণে ঘষে অথবা তার দ্বারা হস্তমৈথুন করিয়ে কামোত্তজনা দমন করা যেতে পারে।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেফাসওয়ালী মহিলাদের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৪৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩১১, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৮৫২, সুনানে কুবরালিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৬১৯)

সিজারে সন্তান হলে পরবর্তী স্রাব হায়েজ হিসেবে গন্য হবে নাকি নেফাস হিসেবে?

সন্তান স্বাভাবিক নিয়মে ভূমিষ্ট হোক বা সিজারের মাধ্যমে হোক, ভূমিষ্ট হওয়ার পর মহিলার যে রক্তস্রাব আসে তা নেফাস বলেই গণ্য হবে। হায়েজ হিসেবে নয়। তাই চল্লিশ দিনের ভেতরে স্রাব বন্ধ না হলে স্ত্রী সহবাস হরাম এবং তার নামাজ পড়তে বন্ধ থাকবে। তবে চল্লিশ দিনের ভেতরে যেদিন-ই স্রাব বন্ধ হবে সেদিন থেকে গোসল করার পর সবকিছু বৈধ হবে। সূত্র: আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭)

ডেইলি বাংলাদেশ/আরএজে


=================

নিফাসের সর্বাধিক সময় চল্লিশ দিন, যার সূচনা হয় প্রসব থেকে অথবা তার দুই বা তিনদিন পূর্ব থেকে । উম্মে সালামা [রা]-এর হাদীসে এসেছে- নবী [সা]-এর যুগে নিফাসের নারীরা চল্লিশ দিন বিরতি নিত। নিফাসের সর্বোচ্চ মেয়াদ চল্লিশ দিন। এ বিষয়ে সকল আহলে ইলম একমত। ইমাম তিরমিযী [রহ] প্রমুখগণ আলেমদের এরূপ ঐকমত্য নকল করেছেন। তবে যে নারী চল্লিশ দিনের পূর্বে পবিত্র হয়ে যাবে, যেমন তার রক্ত বন্ধ হলো, সে গোসল করবে ও নামাজ আদায় করবে। নিফাসের সর্বনিম্ন কোনো মেয়াদ নেই। কারণ তার নির্দিষ্ট মেয়াদ নবী [সা] থেকে বর্ণিত হয় নি। যদি চল্লিশ দিন পূর্ণ হওয়ার পরও রক্ত বন্ধ না হয়, তাহলে সেটা যদি হায়েযের সময় হয় হায়েয গণ্য হবে, যদি হায়েযের সময় না হয় ইস্তেহাযাহ গণ্য হবে, তাই চল্লিশ দিন পার হলে ইবাদত ত্যাগ করবে না। মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক


======================


প্রশ্ন: জনাব, সমত্মান প্রসবের পর মহিলাদের যে ওযর দেখা দেয়, (যাকে নেফাস বলা হয়) আমি যতটুকু জানি আলেমদের মতে তার সর্বোচ্চ সময়সীমা চল্লিশ দিন। আমার জানা মতে অধিকাংশ আলেমের মাযহাব এটাই যে, চল্লিশ দিনের আগে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে পবিত্র হয়ে যাবে, এরপর স্বাভাবিকভাবে নামায-রোযা আদায় করতে পারবে। আর চল্লিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও রক্ত বন্ধ না হলে অতিরিক্ত দিনগুলোর রক্ত ইস্তেহাযার রক্ত বলে গণ্য হবে।  এ ক্ষেত্রে সে নামায আদায় করা শুরু করে দিবে।

আমার প্রশ্ন হল, এই মাসআলার দলীল কী? হাদীসে তো চল্লিশ দিন পর্যন্ত ‘বসে থাকার’ কথা এসেছে। চল্লিশ দিনের পূর্বে রক্ত বন্ধ হলে পবিত্র হয়ে যাবে- এমন কথা আমি কোনো সহীহ হাদীসে পাইনি। হাঁ, কিছু যয়ীফ রেওয়ায়েতে إلا إلا أن ترى الطهر قبل ذلك   (তবে যদি চল্লিশ দিনের পূর্বেই পবিত্রতা দেখতে পায়) বাক্যটি এসেছে। কিন্তু সহীহ হাদীসে আমি এ কথা পাইনি।

এ কথা বলা কঠিন যে, ইমামগণের সবাই এ হাদীসের এই উদ্দেশ্যই বুঝেছেন যে, চল্লিশ দিন হল সর্বোচ্চ সময়সীমা, (নির্দিষ্ট সময়সীমা নয়) কেননা ইবনুল জারুদের ‘আল মুন্তাকায়’ সাহাবী হযরত উসমান ইবনে আবিল আস রা.-এর আমল বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি চল্লিশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে স্ত্রী সহবাস করতেন না। বোঝা গেল, হাদীসের এই অর্থ অর্থাৎ চল্লিশ দিন নির্দিষ্ট সময়সীমা না হয়ে সর্বোচ্চ সময়সীমা হওয়া- এটি সর্বসম্মত মত নয়। তাহলে এই হুকুমের সূত্র কী? জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

-আব্দুল্লাহ, মিরপুর, ঢাকা

 

উত্তর: আপনাকে মোবারকবাদ, মাশাআল্লাহ একটি মাসআলা বোঝার জন্য আপনি অনেক মেহনত করেছেন।   إلا أن ترى الطهر قبل ذلك স্পষ্টভাবে না পেয়ে আপনি চিন্তিত হয়েছেন। বস্তুত إلا أن ترى الطهر قبل ذلك অংশটি যে রেওয়ায়েতগুলোতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ হয়নি ঐ রেওয়ায়েতগুলোতেও এ অংশটি ধর্তব্য। হাদীসের শব্দ- كانت النفساء تجلس على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم أربعين يوما (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নেফাসগ্রস্ত মহিলাগণ চল্লিশ দিন পর্যন্ত ‘বসে থাকতেন’।) এখানে ‘বসে থাকা’র অর্থ হল, ‘অপেক্ষা করা’। অর্থাৎ তারা এই অপেক্ষায় থাকবে যে, কখন রক্ত বন্ধ হয়ে যায়, যেন নামায শুরু করা যায়। রক্ত বন্ধ হলে (গোসল করে) নামায শুরু করে দিবে। তবে এই অপেক্ষার সময়সীমা বলে দেওয়া হয়েছে চল্লিশ দিন। অর্থাৎ চল্লিশ দিনের অধিক অপেক্ষা করবে না। যদি তারপরও রক্ত বন্ধ না হয় তবুও (গোসল করে) নামায শুরু করে দিবে।

উল্লেখিত হুকুম বর্ণনা করার সময় অনেক সাহাবা ও তাবেঈগণ تجلس শব্দের স্থানে تنتظر বা تربص শব্দ ব্যবহার করেছেন। যার অর্থ ‘অপেক্ষা করবে’। এটা (‘অপেক্ষা করবে’) মূলত ঐ হাদীসেরই ব্যাখ্যা যাতে ‘বসে থাকবে’ শব্দ এসেছে। উদাহরণত, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযিআল্লাহু আনহু, আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিআল্লাহু আনহু, আনাস রাযিআল্লাহু আনহু প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম এবং হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহ, আতা ইবনে আবি রাবাহ রাহিমাহুল্লাহ, ও যাহহাক ইবনে মুযাহিম রাহিমাহুল্লাহ প্রমুখ তাবেঈনদের আছার ও উক্তিসমূহ হাদীসের কিতাবগুলোতে تنتظر বা تربص শব্দে বর্ণিত হয়েছে। দেখুন: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ১/৩১২-৩১৩ (১১৯৭-১২০০); মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৯/৪১৭ (১৭৭৪১); আল আওসাত, ইবনুল মুনযির, ২/৩৭৬-৩৭৭ (৮২৪-৮২৮);  মুসনাদে দারেমী ৫/১৯১ (১০৪৪, ১০৪৫) (ফতহুল মান্নানসহ)

দ্বিতীয়ত আল মুন্তাকা ইবনুল জারুদের উদ্ধৃতিতে হযরত উসমান ইবনে আবিল আস রা.-এর যে রেওয়ায়েতের কথা আপনি বলেছেন তাতে যদিও চল্লিশ দিনের পূর্বে রক্ত বন্ধ হওয়ার হুকুম উলেস্নখ নেই কিন্তু মুসনাদে দারেমী ৫/১৮৫ (১০৩৭) ও ইবনুল মুনযির রচিত আল আওসাতে ২/৩৭৬ (৮২৫) হযরত উসমান ইবনে আবিল আস রা.- এরই একটি উক্তি বর্ণিত হয়েছে, যাতে এ  বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মুসনাদে দারেমীর রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

 أخبرنا جعفر بن عون أنا إسماعيل بن مسلم، عن الحسن عن عثمان بن أبي العاص، قال: وقت النفساء أربعين يوما، فإن طهرت وإلا فلا تجاوزه حتى تصلي.

 ‘‘উসমান ইবনে আবুল আস রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, নেফাসগ্রস্ত মহিলাদের সময়সীমা চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগেই পবিত্র হয়ে যায়, (তাহলে  পবিত্রতার বিধান শুরু হয়ে যাবে।) অন্যথায় চল্লিশ দিন পর নামায শুরু করতে বিলম্ব করবে না।’’

এই রেওয়ায়েতের বর্ণনাকারীগণ সবাই নির্ভরযোগ্য।

ইবনুল মুনযিরের রেওয়ায়েতের আরবী পাঠ এই-

حدثنا يحيى (ابن محمد) ، ثنا أحمد بن يونس، ثنا زائدة، عن هشام عن الحسن عثمان ابن أبي العاص قال: تمكث النفساء أربعين ليلة إلا أن ترى الطهر قبل ذلك.

‘‘উসমান ইবনে আবুল আস রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, নেফাসগ্রস্ত মহিলাগণ চল্লিশ রাত অবস্থান করবে। তবে যদি এর আগে পবিত্রতা দেখে।’’

এর বর্ণনাকারীগণও সবাই  নির্ভরযোগ্য।

অতএব জুমহুর ফুকাহায়ে কেরামের যে মাযহাব আপনি প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন তা দলীলের দৃষ্টিকোণ থেকে যথেষ্ট শক্তিশালী।


(মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক)

মূল লিংক

No comments:

Post a Comment

Featured Post

প্রশ্নোত্তর পর্বসমূহ

আস সালামু আলাইকুম । আপনারা তাফহীমুল কুরআন এ্যাপের মাধ্যমে যে প্রশ্নগুলো করেছেন এখানে সেগুলোর উত্তর তালিকা আকারে দেওয়া হয়েছে।  বিগত দিনের ...