উত্তর : ﴿قَالُوا لَقَدْ عَلِمْتَ مَا لَنَا فِي بَنَاتِكَ مِنْ حَقٍّ وَإِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا نُرِيدُ﴾
( সুরা হুদ: ৭৯) তারা জবাব দিলঃ “তুমি তো জানোই, তোমার মেয়েদের দিয়ে আমাদের কোন কাজ নেই ৮৮ এবং আমরা কি চাই তাও তুমি জানো৷”
(টিাকা : ৮৮). এ বাক্যটি তাদের মানসিক অবস্থার পূর্ণচিত্র এঁকে দেয়৷ বুঝা যায় লাম্পট্যের ক্ষেত্রে তারা কত নিচে নেমে গিয়েছিল৷ তারা স্বভাব-প্রকৃতি ও পবিত্রতার পথ পরিহার করে একটি পূতিগন্ধময় প্রকৃতি বিরোধী পথে চলতে শুরু করেছিল, ব্যাপার শুধুমাত্র এতটুকুই ছিল না বরং অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিল যে, এখন শুধুমাত্র এ একটি নোংরা পথের প্রতিই ছিল তাদের সমস্ত ঝোঁক-প্রবণতা, আকর্ষণ ও অনুরাগ৷ তাদের প্রবৃত্তি এখন শুধুমাত্র এ নোংরামিরই অনুসন্ধান করে ফিরছিল৷ প্রকৃতি ও পবিত্রতার পথ তো আমাদের জন্য তৈরীই হয়নি একথা বলতে তারা কোন লজ্জা অনুভব করতো না৷ এটা হচ্ছে নৈতিক অধপতন ও চারিত্রিক বিকৃতির চূড়ান্ত পর্যায়৷ এর চেয়ে বেশী নিম্নগামিতার কথা কল্পনাই করা যেতে পারে না৷ যে ব্যক্তি নিছক নফস ও প্রবৃত্তির দুর্বলতার কারণে হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে যায়, এ সত্ত্বেও হালালকে কাংখিত এবং হারামকে পরিত্যাজ্য মনে করে, তার বিষয়টি খুবই হালকা৷ এমন ব্যক্তি কখনো সংশোধিত হয়ে যেতে পারে৷ আর সংশোধিত হয়ে না গেলেও তার সম্পর্কে বড় জোর এতটুকু বলা যেতে পারে যে, সে একজন বিকৃত চরিত্রসম্পন্ন ব্যক্তি৷ কিন্তু যখন কোন ব্যক্তির সমস্ত আগ্রহ হারামের মধ্যেই কেন্দ্রীভূত হয়ে যায় এবং সে মনে করতে থাকে হালাল তার জন্য তৈরীই হয়নি তখন তাকে মানুষের মধ্যেই গণ্য করা যেতে পারে না৷ সে আসলে একটি নোংরা কীট৷ মুলমূত্র ও দুর্গুন্ধের মধ্যেই সে প্রতিপালিত হয় এবং পাক-পবিত্রতার সাথে তার প্রকৃতিগত কোন সম্পর্কেই নেই৷ এ ধরনের কীট যদি কোন পরিচ্ছন্নতার প্রিয় মানুষের ঘরে জন্ম নেয় তাহেল প্রথম সুযোগেই সে ফিনাইল ঢেলে দিয়ে তার অস্তিত্ব থেকে নিজের গৃহকে মুক্ত করে নেয়৷ তাহলে আল্লাহ তার যমীনে এ ধরনের নোংরা কীটদের সামবেশকে কতদিন বরদাশত করতে পারতেন৷
ইবনে আল-জাওজি (১১১৪-১২০০) ১২-শতাব্দীতে লিখিত তার বইয়ে দাবি করেছে যে মুহাম্মদ সা: বেশ কয়েকটি হাদীসে "লুতি"দেরকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং সমকামী আচরণে উভয় সক্রিয় ব্যক্তির জন্য মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করেছেন।[৫০]
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে: "নবী (সাঃ) বলেছেন:" ...লূতের সম্প্রদায়ের কাজ যে করে সে অভিশপ্ত। "
— Musnad Ahmad:1878
আহমদ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী (সাঃ) বলেছেন: "যে ব্যক্তি লূতের সম্প্রদায়কে আমল করে, আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করুন, যিনি লূতের সম্প্রদায়ের ক্রিয়া করেন, আল্লাহ তাকে অভিশাপ দিন" তিনি তিনবার অভিশাপ দিয়েছিলেন।
— মুসনাদে আহ্মাদ: ২৯১৫
আল-নুয়ায়রি (১২৭২–১৩৩২) তার নিহায়া গ্রন্থে উদ্ধৃত করেন যে মুহাম্মাদ সা: বলেছেন তিনি তার সম্প্রদায়ের জন্য লুতের জণগণের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ভয় করেন (মদ ও নারীর ছলনার ব্যাপারে তিনি সমতুল্য ধারণা পোষণ করেছেন বলে মনে করা হয়।)।[৫]
আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আকীল হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, জাবিরকে আমি বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি যে কুকর্মটি আমার উম্মাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সর্বাধিক ভয় করি তা হল লুত সম্প্রদায়ের কুকর্ম।
আবু মুসা আল আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন: "যদি কোন মহিলার উপর কোন মহিলার উপবিষ্ট হয়, তবে তারা উভয়ই ব্যভিচারীনী, যদি কোনও পুরুষ কোন পুরুষের উপরে উপবিষ্ট হয় তবে তারা উভয়ই ব্যভিচারী।"
— আল-তাবারানী (আল-মু‘আযাম আল-আওয়াত): ৪১৫৭, আল-বায়হাকী, সু‘আব আল-ইমান: ৫০৭৫
আবু-ইসা মুহাম্মদ ইবনে ইস-আত-তিরমিযী (৮৮৪ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে [[[সুনান আল-তিরমিযী]]তে সংকলিত) লিখেছেন যে, মুহাম্মদ সা: সমলিংগীয় সংগমকারীদের উভয় সঙ্গীর জন্য মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিধান দিয়েছেন।:
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন: মুহাম্মদ বলেছেন: তোমরা যদি লূতের সম্প্রদায়ের কর্মে লিপ্ত কাওকে খুঁজে পাও,[৪৯] হত্যা কর তাকে যে এটি করে, এবং তাকে যার উপর এটি করা হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, মুহাম্মদ বলেছেন: কোন অবিবাহিত পুরুষ যদি লিওয়াত/সডোমিতে (পায়ুমৈথুনে/পুংমৈথুনে) লিপ্ত অবস্থায় ধরা পড়ে, তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে।
— সুনান আবু দাউদ, ৩৮:৪৪৪৮ (ইংরেজি)
ইসলামে সমকাম ব্যভিচারের চেয়েও জঘন্য পাপ। মহাঅপরাধ। জঘন্য পাপ। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যাদেরকে তোমরা লুতের সম্প্রদায়ের কাজে (সমকামে) লিপ্ত দেখবে তাদের উভয়কেই হত্যা করো। (তিরমিজি: ৪/৫৭; আবু দাউদ: ৪/২৬৯; ইবনে মাজা: ২/৮৫৬)।
হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে পুরুষ পুরুষের সাথে নোংরা কাজে লিপ্ত হয়, উভয়ে ব্যভিচারকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তেমনি যে নারী আরেক নারীর সঙ্গে কুকর্মে লিপ্ত হয় উভয়ে ব্যভিচারকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। (শুয়াবুল ঈমান)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা যদি কাউকে পাও যে লুতের সম্প্রদায় যা করত তা করছে, তবে হত্যা করো। যে করছে তাঁকে আর যাকে করা হচ্ছে তাকেও। (আবু দাউদ ৩৮:৪৪৪৭)
"ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, আলী (রা) তাঁর সময়ে ২ জন সমকামীকে পুড়িয়ে দেন। আর আবু বকর(রা) তাদের উপর দেয়াল ধ্বসিয়ে দেন।" (মিশকাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭৬৫, প্রস্তাবিত শাস্তি)
No comments:
Post a Comment