তাফহীমুল কুরআন থেকে :
( বিস্তারিত : ৩৩ নং সুরা আহযাব এর ভূমিকায় বিস্তারিত দেখুন.... ) :
......আহ্যাবের যুদ্ধ ........
এ অবস্থায় আহ্যাব যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। এটি ছিল আসলে মদীনার এ শক্তিটিকে গুঁড়িয়ে দেবার জন্য আরবের বহুসংখ্যক গোত্রের একটি সম্মিলিত হামলা। এর উদ্যোগ গ্রহণ করে বনী নযীরের মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়ে খয়বরে বসতি স্থাপনকারী নেতারা। তারা বিভিন্ন এলাকা সফর করে কুরাইশ, গাতফান, হুযাইল ও অন্যান্য বহু গোত্রকে একত্র হয়ে সম্মিলিতভাবে বিরাট বাহিনী নিয়ে মদীনার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। এভাবে তাদের প্রচেষ্টায় ৫ হিজরীর শাওয়াল মাসে আরবের বিভিন্ন গোত্রের এক বিরাট বিশাল সম্মিলিত বাহিনী এ ক্ষুদ্র জনপদ আক্রমণ করে। এতবড় বাহিনী আরবে ইতিপূর্বে আর কখনো একত্র হয়নি। এতে যোগ দেয় উত্তর থেকে বনী নযীর ও বনী কাইনুকার ইহুদিরা। এরা মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়ে খয়বর ও ওয়াদিউল কুরায় বসতি স্থাপন করেছিল। পূর্ব থেকে যোগ দেয় গাত্ফানের গোত্রগুলো (বনু সালীম, ফাযারাহ, মুর্রাহা, আশজা’, সা’আদ ও আসাদ ইত্যাদি)। দক্ষিণ থেকে এগিয়ে আসে কুরাইশ তাদের বন্ধু গোত্রগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বিশাল বাহিনী সহকারে। এদের সবার সম্মিলিত সংখ্যা দশ বারো হাজারের কম হবে না।
এটা যদি অতর্কিত আক্রমণ হতো তাহলে তা হতো ভয়াবহ ধ্বংসকর। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা তাইয়েবায় নির্লিপ্ত ও নিষ্ক্রিয় বসে ছিলেন না। বরং সংবাদদাতারা এবং সমস্ত গোত্রের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা ইসলামী আন্দোলনের সহযোগী ও প্রভাবিত লোকেরা তাঁকে দুশমনদের চলাফেরা ও প্রত্যেকটি গতিবিধি সম্পর্কে সর্বক্ষণ খবরাখবর সরবরাহ করে আসছিলেন।* এ বিশাল বাহিনী তাঁর শহরে পৌঁছবার আগেই ছ’দিনের মধ্যেই তিনি মদীনার উত্তর পশ্চিম দিকে পরিখা খনন করে ফেলেন এবং সাল্’আ পর্বতকে পেছনে রেখে তিন হাজার সৈন্য নিয়ে পরিখার আশ্রয়ে প্রতিরক্ষা যুদ্ধ পরিচালনা করতে প্রস্তুত হন। মদীনার দক্ষিণে বাগান ও গাছপালার পরিমাণ ছিল এত বেশী (এবং এখনো আছে) যে, সেদিক থেকে কোন আক্রমণ চলানো সম্ভব ছিল না। পূর্বদিকে ছিল লাভার পর্বতমালা। তার উপর সম্মিলিত সৈন্য পরিচালনা করা কোন সহজ কাজ ছিল না। পশ্চিম-দক্ষিণ কোণের অবস্থাও এ একই ধরনের ছিল। তাই আক্রমণ হতে পারতো একমাত্র ওহোদের পূর্ব ও পশ্চিম কোণগুলো থেকে। নবী করীম (সা.) এদিকেই পরিখা খনন করে নগরীকে সংরক্ষিত করে নেন। আসলে মদীনার বাইরে পরিখার মুখোমুখি হতে হবে, এটা কাফেররা ভাবতেই পারেনি। তাদের যুদ্ধের নীল নক্শায় আদতে এ জিনিসটি ছিলই না। কারণ আরববাসীরা এ ধরনের প্রতিরক্ষার সাথে পরিচিত ছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই সেই শীতকালে তাদেরকে একটি দীর্ঘ স্থায়ী অবরোধের জন্য তৈরি হতে হয়। অথচ এজন্য তারা গৃহ ত্যাগ করার সময় প্রস্তুতি নিয়ে আসেনি।
এরপর কাফেরদের জন্য শুধুমাত্র একটা পথই খোলা ছিল। তারা ইহুদি গোত্র বনী কুরাইযাকে বিশ্বাসঘাতকতায় উদ্বুদ্ধ করতে পারতো। এ গোত্রটির বসতি ছিল মদীনার দক্ষিণ পূর্ব কোণে। যেহেতু এ গোত্রটির সাথে মুসলমানদের যথারীতি মৈত্রী চুক্তি ছিল এবং এ চুক্তি অনুযায়ী মদীনা আক্রান্ত হলে তারা মুসলমানদের সাথে মিলে প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত হতে বাধ্য, তাই মুসলমানরা এদিক থেকে নিশ্চিত হয়ে নিজেদের পরিবার ছেলে মেয়েদেরকে বনী কুরাইযার সন্নিহিত এলাকায় পাঠিয়ে দেয় এবং সেদিকে প্রতিরক্ষার কোন ব্যবস্থা করেনি। কাফেররা মুসলমানদের প্রতিরক্ষার এ দুর্বল দিকটি আঁচ করতে পারে। তাদের পক্ষ থেকে বনী নযীরের ইহুদি সরদার হুয়াই ইবনে আখ্তাব বনী কুরাইযার কাছে পাঠানো হয়। বনী কুরাইযাকে চুক্তি ভংগ করে দ্রুত যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করানোই ছিল তার কাজ। প্রথমদিকে তারা অস্বীকার করে এবং তাদেরকে পরিষ্কার বলে দেয়, মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে আমরা চুক্তিবদ্ধ এবং আজ পর্যন্ত তিনি আমাদের সাথে এমন কোন ব্যবহার করেননি যার ফলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনতে পারি। কিন্তু যখন ইবনে আখ্তাব তাদেরকে বললো, “দেখো, আমি এখন সারা আরবের সম্মিলিত শক্তিকে এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছি। একে খতম করে দেবার এটি একটি অপূর্ব সুযোগ। এ সুযোগ হাতছাড়া করলে এরপর আর কোন সুযোগ পাবে না” তখন ইহুদি জাতির চিরাচরিত ইসলাম বৈরী মানসিকতা নৈতিকতার মর্যাদা রক্ষার ওপর প্রাধান্য লাভ করে এবং বনী কুরাইযা চুক্তি ভংগ করতে প্রস্তুত হয়ে যায়।
* জীতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর মোকাবিলায় একটি আদর্শবাদী আন্দোলনের প্রাধান্যের এটি হয় একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। জাতীয়তাবাদীরা শুধুমাত্র নিজেদের জাতির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমর্থন ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল হয়। কিন্তু একটি আদর্শবাদী ও নীতিবাদী আন্দোলন নিজের দাওয়াতের মাধ্যমে সবদিকে এগিয়ে চলে এবং স্বয়ং ঐ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্য থেকেও তার সমর্থক বের করে আনে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারেও বেখবর ছিলেন না। তিনি যথা সময়ে এ খবর পেয়ে যান। সংগে সংগেই তিনি আনসার সরদারদেরকে (সা’দ ইবনে উবাদাহ, সা’দ ইবনে মু’আয, আবদুল্লাহ ইবনে রওয়াহ ও খাওয়াত ইবনে জুবাইর) ঘটনা তদন্ত করার এবং এ সংগে তাদের বুঝাবার জন্য পাঠান। যাবার সময় তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন, যদি বনী কুরাইযা চুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তাহলে ফিরে এসে সমগ্র সেনাদলকে সুস্পষ্ট ভাষায় এ খবর জানিয়ে দেবে। কিন্তু যদি তারা চুক্তি ভংগ করতে বদ্ধপরিকর হয় তাহলে শুধুমাত্র আমাকে ইঙ্গিতে এ খবরটি দেবে যাতে এ খবর শুনে সাধারণ মুসলমানরা হিম্মতহারা হয়ে না পড়ে। এ সরদারগণ সেখানে পৌঁছে দেখেন বনি কুরাইযা তাদের নোংরা চক্রান্ত বাস্তবায়নে পুরোপুরি প্রস্তুত। তারা প্রকাশ্যে তাঁদেরকে জানিয়ে দেয় لاعقد بيننا وبين محمد ولا عهد “আমাদের ও মুহাম্মাদের মধ্যে কোন অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি নেই।” এ জবাব শুনে তারা মুসলিম সেনাদলের মধ্যে ফিরে আসেন এবং ইঙ্গিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানান عضل وقاره অর্থাৎ ‘আদল ও কারাহ ইসলাম প্রচারক দলের সাথে রাজী’ নামক স্থানে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বনী কুরাইযা এখন তাই করছে। এ খবরটি অতি দ্রুত মদীনার মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়। কারণ এখন তারা দু’দিক থেকেই ঘেরাও হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের শহরের যে অংশে তারা কোন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়নি সে অংশটি বিপদের সম্মুখীন হয়ে গিয়েছিল। তাদের সন্তান ও পরিবারের লোকেরা সে অংশেই ছিল। এর ফলে মুনাফিকদের তৎপরতা অনেক বেশী বেড়ে যায়। মু’মিনদের উৎসাহ-উদ্যম নিস্তেজ করে দেবার জন্য তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মনস্তাত্বিক হামলা শুরু করে দেয়। কেউ বলে, “আমাদের সাথে অঙ্গীকার করা হয়েছিল পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্য জয় করা হবে কিন্তু এখন অবস্থা এমন যে আমরা পেসাব পায়খানা করার জন্যও বের হতে পারছি না।” কেউ একথা বলে খন্দক যুদ্ধের ময়দান থেকে ছুটি চাইতে থাকে যে, এখন তো আমাদের গৃহও বিপদাপন্ন, সেখানে গিয়ে সেগুলো রক্ষা করতে হবে। কেউ এমন ধরনের গোপন প্রচারণাও শুরু করে দেয় যে, আক্রমণকারীদের সাথে আপোষ রফা করে নাও এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাদের হাতে তুলে দাও। এটা এমন একটা কঠিন পরীক্ষার সময় ছিল যার মধ্যে পড়ে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির মুখোস উন্মোচিত হয়ে গেছে যার অন্তরে সামান্য পরিমাণও মুনাফিকি ছিল। একমাত্র সাচ্চা ও আন্তরিকতা সম্পন্ন ঈমানদাররাই এ কঠিন সময়েও আত্মোৎসর্গের সংকল্পের ওপর অটল থাকে।
এহেন নাজুক সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গাত্ফানদের সাথে সন্ধির কথাবার্তা চালাতে থাকেন এবং তাদেরকে মদীনায় উৎপাদিত ফলের এক তৃতীয়াংশ নিয়ে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। কিন্তু যখন আনসার সরদার বৃন্দের (সা’দ ইবনে উবাদাহ ও সা’দ ইবনে মু’আয) সাথে তিনি চুক্তির এ শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করেন তখন তাঁরা বলেন, “হে আল্লাহর রসূল! আমরা এমনটি করবো এটা কি আপনার ইচ্ছা? অথবা এটা আল্লাহর হুকুম, যার ফলে আমাদের এটা করা ছাড়া আর কোন পথ নেই? না কি নিছক আমাদেরকে বাঁচাবার একটি ব্যবস্থা হিসেবে আপনি এ প্রস্তাব দিচ্ছেন?” জবাবে তিনি বলেন, “আমি কেবল তোমাদের বাঁচাবার জন্য এ ব্যবস্থা অবলম্বন করছি। কারণ আমি দেখছি সমগ্র আরব একজোট হয়ে তোমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমি তাদের এক দলকে অন্য দলের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত করে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চাই।” একথায় উভয় সরদার এক কন্ঠে বলেন, “যদি আপনি আমাদের জন্য এ চুক্তি করতে এগিয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে তা খতম করে দিন। যখন আমরা মুশরিক ছিলাম তখনও এ গোত্রগুলো আমাদের কাছ থেকে একটি শস্যদানাও কর হিসেবে আদায় করতে পারেনি, আর আজ তো আমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার গৌরবের অধিকারী। এ অবস্থায় তারা কি এখন আমাদের থেকে কর উসূল করবে? আমাদের ও তাদের মাঝখানে এখন আছে শুধুমাত্র তলোয়ার যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ আমাদের ও তাদের মধ্যে ফায়সালা না করে দেন।” একথা বলে তাঁরা চুক্তিপত্রের খসড়াটি ছিঁড়ে ফেলে দেন, যার ওপর তখনো স্বাক্ষর করা হয়নি।
এ সময় গাত্ফান গোত্রের আশ্জা’ শাখার না’ঈম ইবনে মাস’উদ নামক এক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে আসেন। তিনি বলেন, এখনো কেউ আমার ইসলাম গ্রহনের খবর জানে না। আপনি আমাকে দিয়ে যে কোন কাজ করাতে চান আমি তা করতে প্রস্তুত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি গিয়ে শত্রুদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করো।* একথায় তিনি প্রথমে যান বনী কুরাইযার কাছে। তাদের সাথে তাঁর মেলামেশা ছিল খুব বেশী। তাদেরকে গিয়ে বলেন, কুরাইশ ও গাতফান তো অবরোধে বিরক্ত হয়ে এক সময় ফিরে যেতেও পারে। এতে তাদের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু তোমাদের তো মুসলমানদের সাথে এখানে বসবাস করতে হবে। তারা চলে গেলে তখন তোমাদের কি অবস্থা হবে? আমার মতে তোমরা ততক্ষণ যুদ্ধে অংশ নিয়ো না যতক্ষণ বাইর থেকে আগত গোত্রগুলোর মধ্য থেকে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ লোককে তোমাদের কাছে যিম্মী হিসেবে না রাখে। একথা বনী কুরাইযার মনে ধরলো। তারা গোত্রসমূহের সংযুক্ত ফ্রন্টের কাছে যিম্মী চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। এরপর তিনি কুরাইশ ও গাতফানের সরদারদের কাছে যান। তাদেরকে বলেন, বনী কুরাইযা কিছুটা শিথিল হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তারা তোমাদের কাছে যদি যিম্মী হিসেবে কিছু লোক চায় তাহলে আশ্চর্য হবার কিছু নেই এবং তাদেরকে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতে সোপর্দ করে আপোষ রফা করে নিতে পারে। কাজেই তাদের সাথে সতকর্তার সাথে কাজ করা উচিত। এর ফলে সম্মিলিত জোটের লোকেরা বনী কুরাইযার ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে পড়ে। তারা কুরাইযার নেতৃবৃন্দের কাছে বার্তা পাঠায় যে, দীর্ঘ অবরোধে আমাদের জন্য বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। এখন আমরা চাই একটি চূড়ান্ত যুদ্ধ। আগামীকাল তোমরা ওদিক থেকে আক্রমণ করো, আমরা একই সংগে এদিক থেকে মুসলমানদের ওপর আক্রমণ চালাবো। বনী কোরাইযা জবাবে বলে পাঠায়, আপনারা যতক্ষণ যিম্মী স্বরূপ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমাদের হাওয়ালা করে না দেন ততক্ষণ আমরা যুদ্ধের বিপদের সম্মুখীন হতে পারি না। এ জবাব শুনে সম্মিলিত জোটের নেতারা না’ঈমের কথা সঠিক ছিল বলে বিশ্বাস করে। তারা যিম্মী দিতে অস্বীকার করে। ফলে বনী কুরাইযা বিশ্বাস করে না’ঈম আমাদের সঠিক পরামর্শ দিয়েছিল। এভাবে এ যুদ্ধ কৌশল বড়ই সফল প্রমাণিত হয়। এর ফলে শত্রু শিবিরে ফাটল সৃষ্টি হয়।
*এ সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেনالحرب خدعة অর্থাৎ যুদ্ধে প্রতারণা করা বৈধ।
।এখন অবরোধ কাল ২৫ দিন থেকেও দীর্ঘ হতে চলছিল। শীতের মওসুম চলছিল। এত বড় সেনাদলের জন্য পানি, আহার্যদ্রব্য ও পশুখাদ্য সংগ্রহ করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে চলছিল, অন্যদিকে বিভেদ সৃষ্টি হওয়ার কারণে অবরোধকারীদের উৎসাহেও ভাটা পড়েছিল। এ অবস্থায় এক রাতে হঠাৎ ভয়াবহ ধূলিঝড় শুরু হয়। এ ঝড়ের মধ্যে ছিল শৈত, বজ্রপাত ও বিজলী চমক এবং অন্ধকার ছিল এত গভীর যে নিজের হাত পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল না। প্রবল ঝড়ে শত্রুদের তাঁবুগুলো তছনছ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ভীষণ হৈ-হাংগামা সৃষ্টি হয়। আল্লাহর কুদরাতের এ জবরদস্ত আঘাত তারা সহ্য করতে পারেনি। রাতের অন্ধকারেই প্রত্যেকে নিজ নিজ গৃহের পথ ধরে। সকালে মুসলমানরা জেগে ওঠে ময়দানে একজন শত্রুকেও দেখতে পায়নি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ময়দান শত্রুশূন্য দেখে সংগে সংগেই বলেন:
। لن تغزوكم قريش بعد عامكم هذا ولكنكم تغزونهم
। “এরপর কুরাইশরা আর কখনো তোমাদের ওপর আক্রমণ চালাবে না, এখন তোমরা তাদের ওপর আক্রমণ চালাবে।” এটি ছিল অবস্থার একেবারে সঠিক বিশ্লেষণ। কেবল কুরাইশ নয়, সমস্ত শত্রু গোত্রগুলো একত্র হয়ে সম্মিলিতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে নিজেদের শেষ অস্ত্র হেনেছিল। এতে হেরে যাওয়ার পরে এখন আর তাদের মদীনার ওপর আক্রমণ করার সাধ্য ছিল না। এখন আক্রমণাত্মক শক্তি (Offensive) শত্রুদের হাত থেকে মুসলমানদের হাতে স্থানান্তরিত হয়ে গিয়েছিল। ............
...........তাবুক অভিযান : মক্কা বিজয়ের আগেই রোম সাম্রাজ্যের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়ে গিয়েছিল..............
মাশা-আল্লাহ
ReplyDeleteMasha Allah
ReplyDeleteমাশাল্লাহ
ReplyDelete